banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

ইসলাম নারীকে যেভাবে সম্মানিত করেছে

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদযাপন করা হবে। ইতোমেধ্যে মহিলা এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ মানবাধিকার ও নারী সংগঠনগুলো দিবসটি উদযাপনের নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বছরের চাকা ঘুরে যখন ৮ মার্চ সমাগত তখন নারীদের অধিকার মর্যাদার কথাগুলো চিত্রায়িত হয় বিভিন্নভাবে। নারী দিবসের র‌্যালি, আলোচনা সভা, মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও টকশোর আয়োজনসহ বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুনও পোস্টারের মাধ্যমে দিবসটি সর্ম্পকে সচেতনতা সৃষ্টির নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রতি বছর ৮ মার্চে উদযাপিত হয়এ দিবসটি।সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ্য হিসেবে এই দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়। আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বছরে একবার নারী দিবস আসলে এই কথাগুলো বিশেষভাবে উচ্চারিত হয্ মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। নারীবাদীদের বক্তব্য হলো ‘নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান থেকে বঞ্চিত’। বিশেষ করে ইসলাম নারীদের অধিকার খর্ব করেছে। নারীর অগ্রযাত্রায় অনেক বাধা দিয়েছে, সৃষ্টি করেছে নানা প্রতিবন্ধকতা’। এসব কারণে ২০০৯ সালে নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে দরকার নারী পুরুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ট’। বিগত বছরগুলোতে প্রতিপাদ্য ছিল ‘নারী-পুরুষের অঙ্গীকারে গড়ে তুলি সমতার বিশ্ব শ্লোগানে ‘আমরাই পারি’, ‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান’। ‘নারীপক্ষ’ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে ‘উৎসবে পার্বণে, নারী থাকবে সবখানে’। মূলত এসব বুদ্ধিজীবীরা নারীর সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থানের ভুল ও বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দিয়ে নারীকে করে প্রতারিত, অপমানিত; সমাজকে করে কলুষিত। তাই নারীবাদীদের ষড়যন্ত্রের খপ্পর থেকে নিরীহ নারী জাতিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে নারীদের সঠিক সামাজিক অবস্থান নির্ণয় করা অপরিহার্য। বক্ষমান নিবন্ধে নারী দিবস বনাম ইসলামে নারীদের আধিকার-মর্যাদা বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করার প্রয়াস চালানো হলো। প্রথমে নারী দিবসের ইতিহাস প্রেক্ষাপট নিযে আলোচনা করবো। নারী দিবসের সূচনা ১৮৫৭ সালে। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সেলাই কারখানায় বিপদজনক ও অমানবিক কর্মপরিবেশ, স্বল্প মজুরী এবং দৈনিক ১২ ঘন্টা শ্রমের বিরুদ্ধে নারী শ্রমিকরা প্রতিবাদ করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে ৮ মার্চে উল্লেখযোগ্য আরো ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯১০ সালে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় অন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সন্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা ক্লারা জেটকিনের প্রস্তাবে ৮ মার্চকে আর্ন্তজাতিক নারী দিবস ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু করে। তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপন করা হয়। নারী দিবসটি বিশ্বে পালিত হচ্ছে ১৯৭৫সার থেকে। অথচ ১৫শ বছর আগেই ইসলাম নারী ও পুরুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।

জাহেলি যুগে নারী জাতির কোনো মর্যাদা ছিল না। সে সময় নারীরা ছিল নিপীড়িত-নির্যাতিত ও অবহেলিত। নারীদের সঙ্গে করা হতো পশুর মতো আচরণ। পুরো নারী সত্ত্বাকে পরিবার,সমাজ ও বংশের জন্য অভিশাপ মনে করা হত। কন্যা সন্তান জন্মকে অসম্মান ও অপমানকর মনে করা হতো। শুধু কি তাই? নারীর অধিকার বলতে কিছুই ছিল না সমাজে। নারীরা যেমন মর্যাদা ও সম্মান পেতো না, ঠিক তেমনি তাদের ন্যায্য অধিকার (মিরাস) উত্তরাধিকারী পেতো না। কোন সম্পদের মালিকানাও লাভ করতে পারতো না। এমনকি একজন মানুষ হিসেবে যে অধিকারগুলো লাভ, তার কোনটিই বলতে গেলে নারীদের দেওয়া হত না। তাদের ইজ্জত-আব্রæ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ছিল নৈমত্তিক ব্যাপার। সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রে নারীদের অবস্থান ছিল নিম্নে। ছিল না স্বীকৃতি। বৌদ্ধ সমাজে নারীদেরকে নিছক বিলাসিতার উপকরণ মনে করা হতো। এ ধর্মে নারী হচ্ছে ভোগের বস্তু এবং মানবতার নির্মাণ লাভের জন্য বিঘ্নস্বরূপ। ইয়াহুদি ধর্ম মতে নারীদেরকে সকল পাপের উৎসমূল মনে করা হত। সেই তিমিরাচ্ছন্ন কলুষিত সমাজকে নিষ্কলুষ করার জন্য বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা. সত্যের বাণী নিয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে এ ধরার বুকে আবির্ভূত হলেন। আল্লাহ ও তদীয় রাসুল সা. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হল নারীর অধিকার ও মর্যাদা। বিশ্বনবীর কল্যাণে মহিয়সী নারী মর্যাদা পেয়েছে মাতা হিসেবে। পিতা-মাতা ও স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বামীর সংসারে স্ত্রীর অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। নারী তার বৈবাহিক জীবনে খাদ্য উপার্জনের চিন্তা হতে মুক্ত হয়েছে। তেমনিভাবে সমাজের সসর্বস্তরের নারীর যথার্থ মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইসলাম সর্বক্ষেত্রে নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান ও যথাযথ অধিকার দিয়েছে। নারীর মর্যাদা বলতে কী বুঝায়? মর্যাদা মানে পদ ও সম্মান। কারও পদ বা মর্যাদার অর্থ হচ্ছে যথাযথভাবে তার প্রাপ্য প্রদান করা। আর প্রাপ্য বলতে তাদের অধিকার স্বীকার করা, কর্তব্যের যথাযথ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও সামাজিক জীবনে তার অবদানসমুহের মুল্যায়নকে বুঝায়। নারীর মর্যাদা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে তার ন্যায্য অধিকার সঠিকভাবে আদায় করা, তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের সঠিক ব্যাখ্যা ও তার অবদানের যথাযথ মুল্যায়ন করা।

ইসলাম মানব প্রকৃতির সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি জীবন বিধান। এখানে মানুষকে সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। নারী-পুরুষ সবাই মানুষ হিসেবে এই মর্যাদার অংশীদার। মানবকুল নারী-পুরুষ দ্বারা গঠিত। নারী থেকে পুরুষ, পুরুষ থেকে নারী কোনভাবেই আলাদা করার সুযোগ নেই। এই পৃথিবীতে মানব সমাজের অস্তিত্ব থাকতে হলে নারী-পুরুষের যৌথ উপস্থিতি অপরিহার্য। নারীর কাছে পুরুষ, আর পুরুষের কাছে নারী ঋণী। এই দুই এর কোন একজনকে বাদ দিয়ে মানব জীবনের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না। একদিকে যেমন একজনকে ছাড়া আরেকজনের অস্তিত্বই বিপন্ন, অন্যদিকে একজনের কাছে আরেকজন অপরিহার্যভাবে ঋণী। সুতরাং ব্যক্তি জীবন, সমাজ জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন, সব জীবনেই একজনের কাছে আরেকজন দায়বদ্ধ। মা-বাবা বিশেষ কোন দিবসের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে না। তারা তো প্রতিদিনের মত। মা চাঁদের আলোরমত আর বাবা সূর্যের আলোরমত দরকারী। মুসলিম সভ্যতায় পুরুষের চেয়ে নারীর মর্যাদা, মুল্যায়ন, অধিকার কোনক্রমেই কম নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে নারীর মর্যাদা পুরুষের চেয়েও বেশি। স্ত্রী হিসেবে একজন নারীর জন্য ইসলাম মানবিক অধিকার নিশ্চিত করেছে । পুরুষের জন্য অপরিহার্য করা হয়েছে স্ত্রীর মোহরানা আদায় । এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক এরশাদ করেন, তোমরা স্ত্রীদেরকে তার পারিবারিক জীবনে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশি মনে। সুরা নিসা: ৪। আল্লাহর রাসুল সা. এরশাদ করেন, যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান আছে যাদের সে লালন পালন করে এবং তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করে, তার জন্য অবশ্যই জান্নাত ওয়াজিব। সাহাবায়েকেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি দুটি মেয়ে থাকে? নবীজী বললেন, দুটি থাকলেও। বুখারি শরিফ। আল্লাহতায়ালা বলেন, আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যব্যহার করতে। তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করেছে বড় কষ্টের সঙ্গে এবং তাকে প্রসব করেছে খুব কষ্টের সঙ্গে। তাকে গর্ভধারণ করতে এবং প্রসবান্ত দুধ ছাড়াতে ত্রিশমাস সময় লেগেছে’। (আহকাফ: ১৫)

নারীর মর্যাদা ইজ্জত সতীত্ব সুরক্ষার জন্য আল্লাহতায়ালা পর্দার বিধান ফরজ করেছেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, হে নবী! মুমিনদেরকে বলে দিন, তারা যেন পরস্ত্রী থেকে তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং নিজ যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তেমনি মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, পুরুষের থেকে তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং স্বীয় যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষা করে। (সুরা নুর: ৩০)

নারীরা পুরুষ থেকে পর্দা করবে। তার রূপ-সৌন্দর্য পরপুরুষ থেকে আবৃত রাখবে। পর্দার অর্থ এই নয় যে, নারীকে অবরুদ্ধ করে রাখা বরং প্রয়োজনে পর্দার সঙ্গে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। পর্দার মাধ্যমে খাঁচার পাখির মত বন্দি করে রাখা নয় বরং নারীর ইজ্জত ও সম্মান রক্ষার জন্য ইসলামের এ বিধান। মুসলিম সমাজে সভ্যতায় মেয়ে অপেক্ষা ছেলের দায়দায়ত্বত্ব বেশি। নারী ও পুরুষ কার অধিকার বেশি? কার মর্যাদা বেশি? সামগ্রিক বিচার-বিশ্লেষণ শেষে জবাব হবে- নারী-পুরুষের অধিকার ও মর্যাদা কোনো ক্ষেত্রে সমান, আবার কোনো ক্ষেত্রে কমবেশি। ইসলাম ঢালাওভাবে সবাইকে সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার দেয়নি। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘উত্তম স্ত্রী সৌভাগ্যের পরিচায়ক’। (মুসলিম)

স্ত্রীদের সম্পর্কে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম’। (বুখারি) মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।’ (তিরমিজি)

শেষ কথা, শুধু বছরে একবার নারীদের প্রতি দরদী না হয়ে সারা বছর নারীদের যথাযথ প্রাপ্য আদায়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও আন্তরিক ও দায়িত্বশীল হওয়া প্রচেষ্টা জরুরি। ইসলাম নারীকে সমধিকার নয় পুরুষের চেয়ে বেশি অধিকার প্রদান করেছে। ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে তথাকথিত নারীবাদীরা নারীদেরকে ধর্ম সম্পর্কে ভুল ও ভ্রান্তিকর ব্যাখা প্রচারে লিপ্ত। কাজেই নারীবাদীদের ষড়যন্ত্রের খপ্পর থেকে নিরীহ নারী জাতিকে মুক্ত করার লক্ষে সবাইকে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভ’মিকা পালন করতে হবে।

সূত্রঃ মাওলানা এহসান বিন মুজাহির

লেখক: আলেম সাংবাদিক

 

কুলফি পছন্দ করেন? ঘরেই তৈরি করে ফেলুন দোকানের মত পারফেক্ট কুলফি !

গরমটা বেশ ভালভাবে পড়তে শুরু করেছে। এই গরমে স্বস্তি পেতে ঠান্ডা জাতীয় খাবারের জুড়ি নেই। আর আইসক্রিম বা কুলফি হলে তো কোন কথাই নেই! কুলফি এমন একটি খাবার যা যেকোন সময় খেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু সব সময় কি আর বাইরে যাওয়া হয়, কুলফি খাওয়ার জন্য। এই কুলফি ঘরে তৈরি করা গেলে দারুন হতো! দোকানের মত পারফেক্ট কুলফি খুব সহজে ঘরে তৈরি করে ফেলুন।

উপকরণ:

  • ১ লিটার দুধ
  • ৪ টেবিল চামচ মালাই বা ক্রিম
  • ১/২ কাপ চিনি
  • কয়েকটি জাফরান
  • ৪-৫ টি এলাচ
  • ১.৫ টেবিল চামচ পেস্তা কুচি
  • ১.৫ টেবিল চামচ কাঠবাদাম কুচি

প্রণালী:

১। একটি প্যানে দুধ জ্বাল দিতে দিন। বলক না আসা পর্যন্ত বার বার নাড়তে থাকুন।

২। দুধ গরম হয়ে এলে এক চামচ দুধ নিয়ে জাফরানের সাথে মিশিয়ে নিন।

৩। এরপর প্যানে ক্রিম বা মালাই দিয়ে দিন।

৪। ২০ মিনিট বা তার বেশি সময় ভালো করে নেড়ে নেড়ে দুধ ঘন করতে থাকুন। এরপর দুধ শুকিয়ে অর্ধেকটা হয়ে এলে, পেস্তা বাদাম কুচি, চিনি এবং বাদাম কুচি দিয়ে আরও ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে নিন।

৫। চুলা বন্ধ করে দিন। এবং এতে এলচির গুঁড়া দিয়ে সাধারণ তাপমাত্রায় ঠান্ডা হতে দিন।

৬। ঠান্ডা হয়ে এলে কুলফির ছাঁচে কুলফি ঢালুন। এরপর এটি ৫-৬ ঘন্টার জন্য ফ্রিজের রেখে দিন।

৭। ২-৩ ঘন্টার পর কুলফির মধ্যে কাঠি ঢুকিয়ে দিন এবং কাঠিটি পুরোপুরি সেট হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

৮। ব্যস তৈরি হয় গেল দারুন স্বাদের মজাদার কুলফি।

 

রেস্তরাঁর স্বাদের ছোলা ভাটোরা তৈরি হবে আপনার রসুই ঘরে।

রেস্তরাঁগুলোতে ভারতীয় যেসব চটকদার খাবার পাওয়া যায় সেগুলোর মাঝে অন্যতম হলো ছোলা ভাটোরা। বড় বড় ফুলকো রুটির সাথে পরিবেশন করা হয় দারুণ মশলাদার একটা ছোলার তরকারি। আপনি যদি ভেবে থাকেন এই খাবার শুধু রেস্তরাঁগুলোতেই তৈরি করা সম্ভব তাহলে আপনি ভুলে ভেবেছেন! শিখে নিন খুব সহজ একটা রেসিপি যাতে আপনি বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন দারুণ এই খাবারটি।
উপকরণ
ভাটোরার জন্য
  • – দেড় কাপ ময়দা
  • – ২ টেবিল চামচ সুজি
  • – সিকি চা চামচ বেকিং সোডা
  • – ১ চা চামচ চিনি
  • – আধা চা চামচ অথবা স্বাদমতো লবণ
  • – ১ চা চামচ তেল
  • – সিকি কাপ টক দই
  • – ডুবোতেলে ভাজার জন্য যথেষ্ট তেল
ছোলা মাসালার জন্য
  • – ১ কাপ ছোলা (ধুয়ে ৮ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা)
  • – ১/২টা টি ব্যাগ
  • – লবণ স্বাদমতো
  • – দেড় কাপ পানি
  • – ১টা মাঝারি পিঁয়াজ কুচি করা
  • – ৪ টেবিল চামচ তেল
  • – ১ চা চামচ জিরা
  • – ২ টেবিল চামচ আদা, লম্বা করে কাটা
  • – ৫টা কাঁচামরিচ লম্বালম্বি চেরা
  • – ২টা বড় টমেটো পিউরি করা
  • – ১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো
  • – ১ চা চামচ আমচুর গুঁড়ো
  • – ১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো
  • – ২ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
  • – ২ চা চামচ আনারদানা গুঁড়ো
  • – ১ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
  • – ২ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
  • – অর্ধেকটা লাল পিঁয়াজ কুচি
প্রণালী
১) একটি বড় পাত্রে ভাটোরার জন্য সব উপকরণ নিন। ভালো করে মাখিয়ে ডো তৈরি করে নিন। অল্প অল্প করে পানি দিতে পারেন। ডো তৈরি হয়ে গেলে ওপরে কয়েক ফোঁটা তেল মাখিয়ে নিন। এবার পাত্রটাকে প্লাস্টিক র্যা প দিয়ে মুড়ে পাশে রেখে দিন। আধা ঘন্টার মতো রাখতে হবে।
২) এবার ছোলা তৈরির পালা। ভেজানো ছোলা থেকে পানি ঝরিয়ে নিন। ছোলা দিয়ে দিন প্রেশার কুকারে। এতে দিন দেড় কাপ পানি, একটা টি ব্যাগ, দেড় চা চামচ লবণ। এবার মাঝারি আঁচে প্রেশার কুকার রাখুন। ৩-৫টা সিটি দিলেই সাধারণত ছোলা নরম হয়ে যায়। এরপর আঁচ কমিয়ে রান্না করতে হবে আরও ১০ মিনিট। এই সময়ে আপনি মাসালা তৈরি করে নিন।
৩) একটা ছড়ানো কড়াই চুলোয় দিন। এতে ৪ টেবিল চামচ তেল দিন। তেল গরম হয়ে এলে এতে দিন জিরা এবং পিঁয়াজ। পিঁয়াজটা ভাজা ভাজা হয়ে এলে এতে টমেটো পিউরি দিয়ে দিন। এরপর এতে গুরম মশলা বাদে সব গুঁড়ো মশলাগুলো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এটাকে ঢেকে রান্না হতে দিন ১০-১৫ মিনিট। রান্না হয়ে গেলে তেল ওপরে ভেসে উঠবে।
৪) টমেটো রান্না হতে দিয়ে আপনি ছোলাটাকে চেক করে নিতে পারেন। ছোলা রান্না হয়ে গেলে ভেতর থেকে টি ব্যাগটাকে বের করে ফেলে দিন। টমেটো মাসালা রেডি হয়ে গেলে এতে দিয়ে দিন ছোলাগুলোকে। ছোলার সাথে যে পানি থাকবে সেটা ফেলবেন না, এটাও দিয়ে দিন মশলায়। দরকার হলে আরও একটু পানি দিতে পারেন। ভালো করে মশলায় মাখিয়ে নিন ছোলা। ইচ্ছে হলে এ সময়ে আপনি কিছুটা লবণ দিতে পারেন। কাঁচামরিচ এবং আদা দিয়ে দিন। ঢেকে রান্না হতে দিন ৫ মিনিট। নামানোর আগে দিয়ে দিন লাল পিঁয়াজের কুচিগুলো। চুলো বন্ধ করে গরম মশলা দিয়ে দিন, ভালো করে মিশিয়ে নিন। ওপরে দিয়ে দিন ধনেপাতা কুচি।
৫) এবার ভাজতে হবে ভাটোরা। বড় কড়াইতে ডিপ ফ্রাই করার জন্য তেল গরম করে নিন মাঝারি আঁচে। ডোটা বের করে আরেকবার মাখিয়ে নিন। ছোট ছোট লেচী করে নিন, তবে এগুলোকে অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে যেন শুকিয়ে না যায়। একটা একটা করে রুটি বেলে নিন। রুটি বেলার জন্য অল্প করে তেল ব্যবহার করবেন, আটা বা ময়দা ছড়াবেন না। রুটি বেশি পাতলা করবেন না।
৬) তেল গরম হয়ে গেলে এতে ছেড়ে দিন একটা করে রুটি। দুপাশে লালচে সোনালি হলে তেল ঝরিয়ে ভাটোরা উঠিয়ে নিন।
ছোলা মাসালার সাথে পরিবেশন করুন গরম গরম মুচমুচে ভাটোরা।

 

জনপ্রিয় ভারতীয় খাবার ডাল পাকোয়ান রেঁধেছেন কি আগে?

রুটি কিংবা পরোটা অথবা চাপাতি সবকিছুর সাথে ডালের তৈরি খাবার খেতে দারুন লাগে। আর তা যদি হয় বুটের ডালের কোন খাবার, তবে তো কথা নেই। ভারতে বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার হল ডাল পাকয়োন। ডালের এই খাবারটি এক ধরণের পুরির সাথে পরিবেশন করা হয়, পুরিটিকে বলা হয় পাকোয়ান। আসুন তাহলে ডাল পাকোয়ানের রেসিপিটি জেনে নিই।

উপকরণ

১ কাপ বুটের ডাল

২টি কাঁচা মরিচ

১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো

১টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ জিরা

১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

২ টেবিল চামচ তেঁতুলের রস

১/২ চা চামচ গরম মশলা

১ চা চামচ আদার পেস্ট

লবণ স্বাদমত

ধনেপাতা কুচি

আমচূর পাউডার

পাকয়োন তৈরির জন্য

১ কাপ ময়দা

১ চা চামচ জিরা

২ টেবিল চামচ তেল

লবণ স্বাদমত

তেল

সাজানোর জন্য

১টি পেঁয়াজ কুচি

ধনেপাতা কুচি

লাল মরিচ গুঁড়ো

কাঁচা মরিচ কুচি

আমচূর পাউডার

জিরা গুঁড়ো

প্রণালী:

১। প্রথমে প্রেসার কুকারে তেল গরম করতে দিন।

২। তেল গরম হয়ে আসলে জিরা, পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি এবং বুটের ডাল দিয়ে দিন।

৩। এবার এতে আমচূর গুঁড়ো, গরম মশলা, হলুদ গুঁড়ো, লাল মরিচ গুঁড়ো, লবণ এবং পানি দিন। পানি এমনভাবে দেবেন যেন ডাল সম্পূর্ণ ডুবে যায়।

৪। এখন প্রেশার কুকার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে উচ্চ তাপে সিদ্ধ হতে দিন। দুটি শিস দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

৫। ডাল হয়ে গেলে ধনেপাতা কুচি মিশিয়ে নিন।

৬। পাকোয়ান তৈরির জন্য, ময়দা, তেল, জিরা, লবণ এবং পানি মিশিয়ে ডো করে নিন।

৭। এবার ডো দিয়ে ছোট ছোট লুচি তৈরি করে নিন। কাঁটা চামচ দিয়ে লুচির মাঝে কিছুটা ছিদ্র করুন।

৮। তেল গরম হয়ে এলে এতে লুচিগুলো দিয়ে দিন। বাদামী রং হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন।

৯। পরিবেশনের সময় লুচির উপরে ডাল পাকোয়ান, তার উপর তেঁতুলের সস, লাল মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

বিশ্ব নারী দিবসে শাহরুখের বার্তা

লিঙ্গ বৈষম্য থেকে বেরিয়ে আসার মত পদক্ষেপ বলিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম শুরু করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান। আগে সিনেমার শুরুতে নায়কের পরে নায়িকার নাম দেখানো হত। ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ সিনেমা থেকে সেই ফর্মুলা বদলে ফেলেন শাহরুখ। আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সেই স্মৃতি আরও এক বার শেয়ার করলেন বাদশাহ খান।

কিং খান শাহরুখ বলেন, ‘আমি প্রত্যেক নারীকে সম্মান করি। পৃথিবীতে নারীরা আরও বেশি সম্মান এবং স্বাধীনতা পাক সেটাই আমি চাই।’

তিনি আরও জানান, মা, বান্ধবী, সহ-অভিনেত্রী, স্ত্রী, মেয়ে— সকলের কাছ থেকেই কিছু না কিছু শিখেছেন তিনি। আর এই সুন্দরীরা ছিলেন বলেই তাঁর চলার পথ আজ এত মসৃণ।

 

শিক্ষার দিক থেকেও শীর্ষে ছয় বলিউড অভিনেত্রী

বলিউডের নায়িকারা যে শুধু নাচ-গানই পারে, এমন নয়। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পড়াশোনার যোগাযোগ নেই, এই ধারণা ভুল। সবাই না হলেও বেশ কিছু তারকার ঈর্ষণীয় একাডেমিক রেকর্ড চোখ কপালে তুলে দিতে বাধ্য। মিডিয়ায় না থাকলেও শুধু পড়াশোনার বদৌলতে তারা হয়তো আরও উচ্চ শিখরে পৌঁছুতে পারতেন।

েীিাীবিদ্যা বালান
ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পড়াশোনায় কোনদিন ফাঁকি দেন নি ‘কাহানি’খ্যাত অভিনেত্রী বিদ্যা বালান। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী পাওয়ার পর মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে সোশিওলজিতে স্নাতোকত্তর ডিগ্রী পান তিনি। অনুরাগ বসু একটি টিভি ধারাবাহিকের জন্য বিদ্যাকে একটা রোল অফার করেছিলেন। কিন্তু পড়াশোনার খাতিরে বিদ্যা তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।  পরে পড়াশোনা শেষ করে তবেই অভিনয় জগতে পা রাখেন তিনি।

েৈীপরিণীতি চোপড়া
হরিয়ানায় একটা পাঞ্জাবী পরিবারে জন্ম পরিণীতির। আম্বালার কনভেন্ট অব জেসাস অ্যান্ড মেরী স্কুলে পড়তেন তিনি। এরপর ১৭ বছর বয়েসে লন্ডনে পাড়ি দেন ইনভেস্টমেট ব্যাঙ্কার হওয়ার জন্য। তিনি ম্যানচেস্টার বিজনেস স্কুল থেকে তিনটি অনার্স ডিগ্রী পেয়েছেন বিজনেস‚ ফিন্যান্স এবং ইকোনমিক্স-এ। অভিনয় শুরু করার আগে তিনি যশরাজ ফিল্মসের জন্য পাবলিক রিলেশনস অফিসারের কাজ করতেন।

1প্রীতি জিনতা
বরাবরই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন প্রীতি। সিমলাতে সেন্ট এডেস কলেজ থেকে সাইকোলজিতে গ্রাজুয়েট। ক্রিমিনাল সাইকোলজির ওপর মাস্টার ডিগ্রীও রয়েছে তার।

ে্িশ্রুতি হাসান
অভিনেতা কমল হাসান কন্যা শ্রুতি হাসানের চেন্নাইতেই জন্ম এবং বড় হওয়া। শ্রুতি অ্যাবাকাস মন্টেসরি স্কুলে ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছেন। তারপর তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট অ্যানড্রুজ কলেজে সাইকোলজি পড়তে ঢোকেন। এরপর তিনি সঙ্গীত এবং অভিনয়ের দিকে নজর দেন। গান শেখার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার মিউজিশিয়ানস ইনস্টিটিউটে বেশ কিছুদিন ছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি রক ব্যান্ড ‘দ্য এক্সট্রামেন্টেলস’ এর একজন গায়িকাও শ্রুতি।

িেোাীসোহা আলী খান
২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রঙ দে বাসন্তি’ ছবির জন্য সোহা আলী খান পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জিতেছিলেন অসংখ্য পুরস্কার। তবে শুধু অভিনয়েই নয়, শিক্ষার জন্যও তার হাতে রয়েছে অসংখ্য অর্জন। অক্সফোর্ডের বেলিল কলেজে তিনি মডার্ন হিস্টোরি  নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগ থেকে।

্ি্রিচা চাড্ডা
২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা। এই ছবির জন্য ফিল্মফেয়ারের সমালোচক বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন তিনি। তবে তিনি শুধু একজন ভাল অভিনেত্রীই নন, একজন মেধাবী ছাত্রীও বটে। শিক্ষার দিক থেকেও অনেক এগিয়ে আছেন রিচা। ২০০২ সালে স্কুল পাশ করার পর দিল্লির সেইন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।

 

 

ফ্যাশন রোদচশমায়…

রোদচশমা পরার জন্য দিন ও তিথি লাগে না। চলতি ফ্যাশন হিসেবে সব ঋতুতেই থাকে এটি। শুধু রোদ থেকে বাঁচতেই রোদচশমা প্রয়োজন তা নয়। একই সঙ্গে এটি ফ্যাশন অনুষঙ্গও। কিন্তু যাঁদের চোখে পাওয়ারের চশমা পরতে হয়, তাঁরা কি কেতাদুরস্ত রোদচশমায় চোখ ঢাকবেন না! তাঁরাও চাইলে পরতে পারেন হাল ফ্যাশনের যেকোনো রোদচশমা। শুধু প্রয়োজন অনুসারে চোখের পাওয়ারের সঙ্গে মিল রেখে পরিবর্তন করে নিন রোদচশমার কাচটি। এতে রথ দেখাও হবে, সঙ্গে কলা বেচাও!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন আহমেদ জানালেন, ‘চোখের সুরক্ষার জন্য রোদচশমা ব্যবহার করতেই পারেন। এটি ক্ষতিকারক অিত বেগুনী রশ্মির প্রভাব থেকে চোখকে সুরক্ষা দেয়। নিয়মিত ব্যবহারে অনেক রোগও এড়ানো সম্ভব। এ ছাড়া মানসম্মত কাচের তৈরি চশমায় প্রয়োজনমতো পাওয়ার বসিয়ে নিতে পারেন। তবে সস্তা প্লাস্টিকের চশমা চোখের জন্য ক্ষতিকর এবং ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে। চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চশমা পরুন।

“চোখের যত্ন নিন, চোখ আপনার যত্ন নেবে”
গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রোদের তাপ। রোদচশমা শুধু তীব্র সূর্যালোক থেকেই চোখের সুরক্ষা দেয় না। সেই সঙ্গে ধুলা থেকেও চোখকে বাঁচায়। যাঁদের ধুলায় অ্যালার্জি, তাঁদের জন্য রোদচশমা শুধু ফ্যাশন নয়, অত্যাবশ্যকীয়ও বটে। চোখের সংক্রমণ এড়াতেও পরতে পারেন চশমা। চোখে যদি পাওয়ারের চশমা দরকার হয়, ব্যবস্থাপত্র নিয়ে হাজির হয়ে যান দোকানে। চোখের আরামও হবে, সঙ্গে ফ্যাশনও। বসুন্ধরা লেভেল-৫-এর লুক এক্সক্লুসিভের স্বত্বাধিকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম জানালেন, ‘চলতি ফ্যাশন হিসেবে এখন ছেলেদের ক্লাব মাস্টার আর মেয়েদের ক্যাটস আই, রিমলেস ফ্রেম বেশি চলছে। ফ্যাশনেবল রোদচশমায় প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমরা পাওয়ারও যুক্ত করে দিতে পারি।’
যাঁরা বাইকে ঘোরেন তাঁদের জন্য এই রোদচশমা অতি জরুরি। তীব্র গতিতে বাইক ছুটে চলার সময়, বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধুলা এসে চোখে আঘাত করে। এই অনাবশ্যক ক্ষতি এড়াতে পরে নিন রোদচশমা। আর যাঁরা সাইকেল কিংবা স্কেটিং করেন, চোখের সুরক্ষায় তাঁরাও পরতে পারেন হাল ফ্যাশনের রোদচশমা।
এখন রোদচশমায় গাঢ় রং খুব ট্রেন্ডি। নীল, সবুজ, লাল, কমলার মতো রঙের প্রাধান্য দেখা যায়। চাইলে কয়েকটা শেডেরও রোদচশমা মিলবে। অনুষ্ঠানভেদে রোদচশমায় বৈচিত্র্য আনতে পারেন। ক্লাব মাস্টার ফ্রেম ফরমাল কিংবা ঘরোয়া দুই ধরনের অনুষ্ঠানেই মানিয়ে যায়। আর এভিয়েটর ফ্রেম ফরমাল পোশাকেই বেশি মানানসই। মুখের গড়ন ও চুলের স্টাইলের সঙ্গে মিল রেখে বেছে নিন আপনার পছন্দের রোদচশমাটি। সঙ্গে দরকারমতো পাওয়ারটিও যুক্ত করে নিন।
ব্র্যান্ড ভেদে রোদচশমার দামের পার্থক্য হয়। বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর কপি পাওয়া যাবে ২৫০০ থেকে ১২০০০-এর মধ্যে। নন-ব্র্যান্ডের রোদচশমা সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যেই মিলবে।

 

নারী–পুরুষের অনুপাত হবে সমান সমান

বিশ্বজুড়ে প্রায় প্রতি তিনজন নারীর একজন (৩৩%) জীবনের কোনো না কোনো সময়ে নিজেদের স্বামী বা নিকটতম পুরুষসঙ্গীর মাধ্যমে শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন দেশের ওপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নারী নির্যাতননিষয়ক  একটি গবেষণা করে। তাতে দেখা যায়, নারীরা তাদের বিবাহিত জীবনে একবার না একবার তাদের স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। স্বামী বা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর মাধ্যমে যৌন বা শারীরিক কিংবা উভয় ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন এমন নারীর হার ১৫ থেকে ৭১ শতাংশ। এসব সহিংসতা সংঘটনের হার ও মাত্রা দেশভেদে ভিন্ন হলেও ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব সর্বজনীন এবং স্বাস্থ্যসমস্যার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। নারীর প্রতি সহিংসতা ব্যক্তি, পরিবার, সম্প্রদায় ও সরকারকে দুর্বল করে দেয় এবং একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ব্যাহত করে।

নারীর প্রতি সহিংসতার ওপর ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত ছিল না। তাই এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরসনের জন্য সরকা​ির এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নিতে পারেনি। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহায়তায় বাংলাদেশ জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো  নারীর প্রতি সহিংসতার ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। ২০১১ সালে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত পাওয়া যায়।

জরিপে দেখা যায়, ৮৭ শতাংশ বিবাহিত নারী তাঁদের স্বামী কর্তৃক কোনো না কোনো সহিংসতা বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৭৭ শতাংশ নারী গত ১২ মাসে তারা কোনো না কোনো নির্যাতনের ​শিকার হ​েয়ছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এসব নির্যাতিত নারীর মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ তাঁদের বর্তমান স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন এবং ৮ দশমিক ৯ শতাংশ নির্যাতিত নারী তাঁদের প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন।

বিডিএইচএস ১৯৯২ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৪ শতাংশ মাতৃমৃত্যুর জন্য নারীর প্রতি সহিংসতা দায়ী।  এইচডিঅারসি ও ইউএন উইমেনের ২০১৩ সালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ৭৬ শতাংশ ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে ওই প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট পুরুষেরাই ছাত্রীদের এসব হয়রানি করে থাকেন। নারীর প্রতি সহিংসতাকে সমাজ এখনো মেনে নেয়। এ ব্যাপারে ন্যায়বিচার চাওয়ার ও পাওয়ার বিষয়টি নারী এবং দরিদ্র মানুষের জন্য এখনো দুরূহ, জটিল, ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি। বিচারপ্রার্থী নারীরা নানাভাবে হেনস্তার শিকার হন।

সংঘটিত সহিংসতার ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত পাওয়া কঠিন। কারণ, এসব ঘটনার প্রামাণ্য দলিল সংরক্ষণে ঘাটতি রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার সমস্যা মোকাবিলায় অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করাটা  সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাসমূহের জন্য কঠিন ব্যাপার।

তাই ইউএনএফপিএ নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের জন্য ও সহিংসতার শিকার নারীদের সুরক্ষা সেবা আরও জোরদার করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধী​েন বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে  যৌথভাবে কাজ করছে। সহিংসতার ঘটনাগুলোর তথ্য-উপাত্তের ঘাটতির সমস্যাটি সমাধানের জন্য এসব ঘটনার তথ্য একত্র করে অপরাধ তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে (সিডিএমএস) যুক্ত করা হচ্ছে। পুলিশ সেগুলো ব্যবহার করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ করছে। নারীর প্রতি সহিংসতার  নতুন তথ্য বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে সরাসরি দেখা যাবে। তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রাথমিক উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও  পুলিশ অধিকতর সেবা প্রদান এবং নারীদের জন্য আরও বন্ধুসুলভ সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে।

নারীর প্রতি সহিংসতার তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণের পাশাপাশি তা ফলোআপের ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তারা বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। এসব প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে কীভাবে সহিংসতার ঘটনাগুলো নিয়ে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করা যায়, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য-বিষয়ক ধারণা এবং সহিংসতার পর মানবিক সংকটের ব্যাপারে কীভাবে সাড়া দেওয়া যায় প্রভৃতি। ঢাকা মহানগরসহ চার জেলার মোট ৪৪টি থানায় পুলিশ কর্মকর্তাদের এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। থানাগুলোয় পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য একটি আদর্শ পরিচালন প্রক্রিয়া (SOP) নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এটি ব্যবহার করে তাঁরা অতি সংবেদনশীল ঘটনা এবং সহিংসতার শিকার নারীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সকল পরিস্থিতিতে দিকনির্দেশনা পাচ্ছেন। ১৫টি থানায় নারীদের সহায়তার জন্য বিশেষ ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী পুলিশ কর্মকর্তারা নির্যাতিত নারীদের সেবা দিচ্ছেন এবং একটি সুরক্ষিত  ও গোপনীয় পরিবেশে তাঁদের মামলা নথিভুক্ত করছেন। নির্যাতনের শিকার নারীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে রেফার করার জন্যও পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটার   পরপরই তা মোকাবিলা করাটা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে এসব অপরাধ প্রতিরোধ করাটা আরও গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করার ব্যাপারেও বাংলাদেশ পুলিশ সহায়তা করছে বিশেষ করে তরুণ–তরুণী ও কিশোর–কিশোরীদের জন্য।

জেন্ডার বিষয়ে প্রচলিত রীতিনীতির ব্যাপারে আলোচনা করে সেগুলো পাল্টাতে হবে এবং নারী ও মেয়েদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের জন্য আইনি প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য দারিদ্র্য বিমোচনসহ উন্নয়নমূলক অন্যান্য ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। পারিবারিক নির্যাতনের সঙ্গে দারিদ্র্যের তাৎপর্যপূর্ণ সংযোগ রয়েছে। তরুণ বয়সী, বিশেষ করে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে অধিকতর অর্থনৈতিক সামর্থ্য ও সুযোগ তৈরি হলে পারিবারিক নির্যাতন কমে  আসবে। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। এতে বাল্যবিবাহ দূর করার চেষ্টাতেও সাফল্য আসবে। কারণ, মেয়েদের দেরিতে বিয়ে হলে তাদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়ে যায়। এভাবেও পারিবারিক আয় বাড়ে। সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, নারী ও কন্যাশিশুর সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করলে সহিংসতার শিকার নারীরা একটি উন্নততর ভবিষ্যতের আশা করতে পারেন।

ইউএনএফপিএর একটি প্রতিবেদন থেকে অনূদিত

নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতার ক্ষতি

ক্ষতির ধরন                                          টাকা           জিডিপির শতাংশ (%)

পরিবারপিছু ক্ষতি (মোট গড় মূল্য)        ১১,১৮০      –

উপার্জনের গড় ক্ষতি                      ৮,২২৮      –

মোট ব্যক্তিগত ক্ষতি                       ১৯,৪০৮     –

প্রত্যক্ষ জাতীয় ব্যয় (কোটি টাকায়)        ৮,১০৫      ১. ১৮

জাতীয় আয়ে লোকসান (কোটি টাকায়)    ৫,৯৬৬      ০. ৮৭

মোট ক্ষতি (কোটি টাকায়)                ১৪,০৭১      ২. ০৫

সূত্র: কেয়ার বাংলাদেশ ২০১৩

 

নারীদের মিলনমেলা

তরুণ প্রজন্মের নারীরা শোনালেন তাঁদের বিজয়ের কথা, জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার কথা। নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে এই নারীরা এগিয়ে চলেছেন তাঁদের নিজ গন্তব্যে। স্বপ্ন তাঁদের আরও বড়। যেতে চান বহুদূরে। এসব নারীর এগিয়ে চলার গল্পে আবেগাপ্লুত নানা শ্রেণি-পেশার সফল নারীরাও। তাঁরাও বললেন, এঁরাই আমাদের নায়িকা, এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন কিরণ চন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদারগতকাল সোমবার ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবন মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হয় নারী দিবসের অনুষ্ঠান। এবারের আয়োজনের বিষয় ছিল ‘আমার কাজ, আমাদের অর্জন’। সেই অনুষ্ঠানে কলসিন্দুরের মেয়েরা, সাফ গেমসে সোনা বিজয়ী দুই নারী আর ভারতে নির্যাতিত আয়শা সিদ্দিকা শোনালেন জীবনযুদ্ধের কথা, সফলতার কথা। সেখানে আরও এসেছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার সফল নারীরা। তারুণ্যের বিজয়ের কথা শুনে কখনো অতিথিরা হেসেছেন, কখনো কেঁদেছেন। হাসি-কান্না-আড্ডায় সফলতার গল্প শুনেছেন তাঁরা।
কলসিন্দুর গ্রামের দুই ফুটবলার সানজিদা ও মারিয়া জানাল তাদের কথা। কতটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে তারা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে, সেই বর্ণনা ছিল তাদের সহজ-সরল ভাষায়। তারা বলল, ভালো খেলে তারা দেশকে ও নিজেদের অনেক দূর নিয়ে যেতে চায়। তাদের স্কুলের শিক্ষক মিনতি রানী সাহা গ্রামের মেয়েদের জন্য সবার সহযোগিতা চান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়ানো ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের নারী ফুটবলাররাও এসেছিলেন। সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী সাহাভারোত্তোলনে সোনাজয়ী মাবিয়া আক্তার আর সাঁতারে দুটি সোনা বিজয়ী মাহফুজা খাতুন শোনালেন তাঁদের কথা, এগিয়ে যাওয়ার কথা। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সোনা বিজয়ী মাবিয়ার কান্নার সেই ভিডিও ফুটেজ বিমোহিত করে অনুষ্ঠানে আসা সবাইকে। সবাই দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান এই দুই নারীকে। জবাবে তাঁরা দুজনই ভবিষ্যতে অলিম্পিকসহ বড় আসরে বাংলাদেশের সম্মান আরও বাড়ানোর জন্য কাজ করবেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানে আসা বিভিন্ন ক্ষেত্রের সফল নারীরা বললেন, নারী-পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কেউই এগোতে পারবে না। কোনো উন্নয়নও স্থিতিশীল হবে না। নারী-পুরুষকে একসঙ্গে চলতে হবে। যার যা প্রতিভা, সেটা বিকশিত হতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। দুজনে সমান না হলে কেউই টিকে থাকতে পারবে না।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন ভাইবোন স্বাগতা, সভ্যতা আর সন্ধির গাওয়া ‘আমরা করব জয়’ গানটির সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন সবাই। সবাই মিলে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জয়ের প্রত্যয় নিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটির সমাপ্তিও হয় জয়ী হওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে।

সাবেক খাদ্যসচিব ও ট্যারিফ কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মুশফেকা ইকফাৎ​ বলেন, মেয়েদের অর্জনের পথটা সহজ ছিল না। তাঁদের ব্যাচের নারীরাই প্রথম জেলা প্রশাসক ও সচিব হয়েছেন। এখন তো অনেকেই বড় পদে যাচ্ছেন।

শাহলা খাতুন বললেন, নারীরা একা উঠে আসতে পারবে না। তাদের বাবা, ভাই ও বন্ধুদের সহযোগিতা লাগবে। একইভাবে পুরুষের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তাই নারী-পুরুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

মার্শা বার্নিকাট বলেন, নারী-পুরুষকে হাতে হাত রেখে এগোতে হবে। আলাদা করে কিছু হবে না। এখানে সবাই সবার গাইড।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন গানের কিছু অংশ গেয়ে শোনান। নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নাচ করার কারণে কোনো নারীকেই যেন নিগৃহীত হতে না হয়, সেটাই চাওয়া।

 নারীরা নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে। এমন অসংখ্য বাধা পেরোনোর ঘটনা নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানের শেষে গান গেয়ে শোনান কিরণ চন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদার। তাঁদের গানের মধ্য দিয়েই শেষ হয় নারী দিবসের অনুষ্ঠান।

Source Of: Prothom-alo

 

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে ৫ হাজার নারী

প্রতিষ্ঠানের ‘বস’ একজন নারী। পুরো প্রতিষ্ঠান চালানোর গুরুদায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এমন দৃশ্য বাংলাদেশে খুব একটা দেখা যায় না। পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনো নারীরা এ দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে যেতে পারছেন খুব কম। ব্যবসায় নেতৃত্বে নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নারী নেতৃত্বের খুব বেশি অগ্রগতি নেই।
বাংলাদেশে শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা নীতিনির্ধারণী উচ্চ পদে মাত্র ৪ হাজার ৯৮৫ জন নারী আছেন। শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা উচ্চ পদের মাত্র ১৩ দশমিক ৩ শতাংশে কাজ করছেন নারীরা।
এই হিসাব সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)। ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নারীর নেতৃত্বের এই চিত্র ফুটে ওঠে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাইডাস ফিন্যান্সিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান রোকিয়া আফজাল রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পৃথিবীর সব জায়গায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ বেশ কম। বাংলাদেশেও নারীর নেতৃত্বের হার কম। এর মানে এই নয় যে তাঁদের নেতৃত্বগুণ নেই। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দক্ষতা তাঁরা রাখেন। নেতৃত্বের পারদর্শিতাও তাঁদের রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এ দেশের নারীরা তা প্রমাণও করেছেন। তিনি মনে করেন, নারীদের উচ্চ পদে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া নেতৃত্বগুণের দক্ষতা বাড়ানোর সুবিধা সম্প্রসারিত করতে হবে।
কৃষি, সেবা ও শিল্প—এই তিনটি খাতের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কিংবা উচ্চ পদে কর্মরতদের হিসাব দেওয়া হয়েছে বিবিএসের ওই জরিপে। গ্রাম এলাকায় এসব খাতের কোনো প্রতিষ্ঠানেই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে নারী নেই। এমনকি উচ্চ পদে বা নীতিনির্ধারণী পদেও নেই। আবার শহর এলাকায় কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানেও নারীরা উচ্চ পদে নেই। শহর এলাকার শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানেই শুধু নারীরা উচ্চ পদে আছেন। সেই হিসাবে নারীরা এখন কেবল শহর এলাকার শিল্প ও সেবাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কিংবা উচ্চ পদে যেতে পেরেছেন। বিবিএসের হিসাবে, শিল্প খাতে প্রধান নির্বাহী কিংবা উচ্চ পদে আছেন ২ হাজার ২৪৩ জন। আর সেবা খাতে এর সংখ্যা ২ হাজার ৭৪১।
এবার দেখা যাক, পুরুষের চিত্রটি। বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, পুরুষেরাই দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ৮৬ দশমিক ৭ শতাংশ উচ্চ পদ দখল করে আছেন। দেশে ৩৭ হাজার ৩৮২ জন পুরুষ আছেন, যাঁরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কিংবা নীতিনির্ধারণী পদে আছেন। এমন উচ্চ পদে রয়েছেন কৃষি খাতে ১ হাজার ৫২৩ জন, শিল্পে ৯ হাজার ৮৮৮ এবং সেবা খাতে ২৫ হাজার ৯৭১ জন পুরুষ।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নারী নেতৃত্বের বৈশ্বিক চিত্রটি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো হলেও আশাবাদী হওয়ার মতো নয়। বিশ্বজুড়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার নেতৃত্বেও পুরুষেরা এগিয়ে আছেন। তবে অবশ্যই তা বাংলাদেশের চিত্র অপেক্ষা বেশ ভালো।
২০১৪ সালের গ্রান্ট থর্নন্টন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস সাময়িকী জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নারীর অংশগ্রহণ খুব একটা বাড়েনি। ২০০৭ সালে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নেতৃত্বদানকারী পদগুলোতে মাত্র ২৪ শতাংশ ছিলেন নারী। ২০১৩ সালের এসেও এই হারে পরিবর্তন হয়নি, ২৪ শতাংশই রয়ে গেছে। ২০১১-১২ সময়কালে এই হার বরং কিছুটা কমে গিয়েছিল।
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ক্যাটালিস্ট। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর (এসঅ্যান্ডপি) সূচকের ৫০০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ২০টির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন নারীরা। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম হলো জেনারেল মোটরস, পেপসিকো, ইয়াহু, ওরাকল, আইবিএম, হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি) প্রভৃতি। মোটা দাগে বলা যায়, বিশ্বের অন্যতম বড় এই স্টক এক্সচেঞ্জের এসঅ্যান্ডপি সূচকের ৫০০ কোম্পানির মাত্র ৪ শতাংশের প্রধান নারীরা।
ক্যাটালিস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আর এসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের মাত্র ১৯ দশমিক ২ শতাংশ পদে নারী রয়েছেন। তবে আশার কথা—এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশই নারী।

source: collected