banner

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 442 বার পঠিত

 

ফাইটিং ফোর্সের প্রথম ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক হলেন চার নারী


নারী সংবাদ


সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে গতকাল পদোন্নতিপ্রাপ্ত দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের মেজর সানজিদা হোসেন, আর্টিলারি; মেজর সৈয়দা নাজিয়া রায়হান, আর্টিলারি; মেজর ফারহানা আফরীন, আর্টিলারি এবং মেজর সারাহ্ আমির, ইঞ্জিনিয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদের র্যাংক ব্যাজ পরিধান শেষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের সঙ্গে এক ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন। ছবি : আইএসপিআর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আরেকটি অধ্যায়ের সূচনা হলো। চারজন নারী সেনা কর্মকর্তা প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর আর্টিলারি এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পেলেন।

সেনাবাহিনীতে পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শনে সফল এই চার নারী কর্মকর্তাকে মেজর থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের এত দূর পথ হাঁটার গল্পের শুরু ১৯ বছর আগে অর্থাত্ ২০০০ সালে। ওই বছর ৪৭ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে প্রথমে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় শুধু পুরুষ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য। পরে এ কোর্সে নারী কর্মকর্তা নিয়োগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই কোর্সের জন্য পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মনোনীত হন তাঁরা। পরের বছর জানুয়ারি থেকে তাঁদের দুই বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা নিয়মিত কমিশন লাভ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, অধ্যায়টিকে স্মরণীয় রাখতে গতকাল বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে পদোন্নতিপ্রাপ্ত এই চারজন নারী কর্মকর্তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত চারজন নারী কর্মকর্তা হলেন আর্টিলারির সানজিদা হোসেন, সৈয়দা নাজিয়া রায়হান ও আর্টিলারির ফারহানা আফরীন এবং ইঞ্জিনিয়ার্সের সারাহ্ আমির।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রীর নারীর ক্ষমতায়নের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নিয়মিতভাবে নারী অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। ৪৭তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্স থেকে শুরু হওয়া এই নারী অফিসাররা এরই মধ্যে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শনে সফল হয়েছেন। তাঁদের এই সক্ষমতার অংশ হিসেবে চারজন নারী অফিসারকে মেজর থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। ’

জানা যায়, ৪৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানের মেয়েও ছিলেন। ওই কোর্সে মোট ৩০ জন মনোনীত

হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম ২০ জন তরুণী নিয়মিত কমিশন লাভ করেন। ওই কোর্সের বাকি ১০ জনের মধ্যে কয়েকজন ৪৮তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ শেষ করার সুযোগ পান। দ্বিতীয় এ কোর্স শেষে ২০০৩ সালের জুলাইয়ে আরো ২১ জন নারী কমিশন লাভ করেন। এরপর ৪৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স শেষে ২২ জন এবং ৫০তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স শেষে আরো ১৩ জন নারী কমিশন লাভ করেন। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপরই সেনাবাহিনীতে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেনাবাহিনী ছাড়াও নারী কর্মকর্তাদের সংখ্যা বাড়ছে নৌ ও বিমানবাহিনীতেও।

সশস্ত্র বাহিনীতে নারীদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হয়ে রয়েছে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি। এদিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথম সংযোজিত ৮৭৯ জন নারী সৈনিকের মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে শপথ গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীতে মেডিক্যাল কোরে সর্বোচ্চ মেজর জেনারেল পদে রয়েছেন একজন নারী কর্মকর্তা। তিনি হলেন ডা. সুসানে গীতি।

আইএসপিআরের গত বছর ৬ মার্চের তথ্য অনুসারে, সেনাবাহিনীতে ওই সময় নারী কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল চিকিৎসকসহ এক হাজার ২৮০ জনের কাছাকাছি। এ ছাড়া নারী সৈনিকের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৬০ জনের কাছাকাছি। ) সুত্র: কালের কন্ঠ।

Facebook Comments