banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

শীতে ত্বকের যত্নে জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ

শীতে ত্বককে দুটি জিনিসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। সেটি হল- তাপমাত্রা ও আদ্রতা। দুটোই কমে যায়। যার কারণে স্বাভাবিক ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক এবং শুষ্ক ত্বক হয়ে ওঠে সংবেদনশীল। তাই নিতে হবে বিশেষ যত্ন।

ক্লিনজার: ঠাণ্ডার ভয়ে অনেকেই গোসল করতে চান না। প্রতিদিন না করলেও অন্তত একদিন অন্তর গোসল করতে হবে। এক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। তবে মনে রাখবেন, খুব ঠাণ্ডা বা বেশি গরম পানি দুটোই ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। বেশি গরম পানি ত্বক থেকে অয়েল বা ময়েশ্চারকে ধুয়ে ফেলে। ত্বকের প্রোটিন ও ফ্যাটের জন্যও গরম পানি ক্ষতিকর। ফলে ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে ওঠে। দশ মিনিট বা তার কম সময় ধরে গোসল করুন। গোসলে সুগন্ধিবিহীন সাবান অথবা কোনো ক্লিনজার ব্যবহার করলে ভালো হয়।

ময়েশ্চারাইজার: গোসলের পর যত দ্রুত সম্ভব ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সেটি হতে পারে লোশন, ক্রিম বা কোনো অয়েল। কিন্তু এ জিনিসগুলো হতে হবে কোনো ধরনের সুগন্ধিবিহীন ও রঙবিহীন। অন্তত দিনে একবার ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার ব্যবহার করতে হবে।

সানব্লক: শীতে স্বভাবতই সবাই রোদে বসতে পছন্দ করেন। তাই ত্বকে রোদে পোড়া একটা ভাব কিন্তু অনেকেরই আসে। তাই সঠিক নিয়মে সানব্লক ব্যবহার খুবই প্রয়োজন। বাসা থেকে বের হওয়ার দশ মিনিট আগে এক চা চামচ আন্দাজ করে মুখে লাগাতে হবে। সানব্লক ব্যবহার করুন, যেটি SPF 50+ অথবা ন্যূনতম SPF 30+ হতে পারে।SPF containing moisturizer ব্যবহার করতে পারেন। একবার লাগালে দুই থেকে তিন ঘণ্টা কাজ করে। পরবর্তীতে যদি রোদে থাকা হয় পুনরায় লাগাতে পারলে ভালো হয়। ক্রিম, লোশনসহ বিভিন্ন রকমের সানব্লক পাওয়া যায়। তাই যাদের স্কিন শুষ্ক এবং শীতে আরও শুষ্ক হয়ে যায়, তারা ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন।

মেকআপ ক্লিনজার: মেকআপ তোলার ক্ষেত্রে খুব সচেতন হতে হবে। কোনো ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করা যাবে না। সেটি স্কিনকে অনেক বেশি শুষ্ক করে তুলে। এজন্য নারিকেলের তেল ব্যবহার করুন।

শুষ্ক ঠোঁট: ঠোঁট শুষ্ক হবে বলে বারবার জিহবা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো যাবে না। তাতে ঠোঁট আরও শুষ্ক হবে। রাতে মোটা করে ভ্যাসলিন লাগান। সকালে মুখ ধোয়ার সময় আলতো করে ঘষে শুকনো চামড়া তুলে ফেললেই ঠোঁট থাকবে সুন্দর। পাশাপাশি লিপ বাম অথবা ভ্যাসলিন লাগান; যা হবে কোনো রঙ ও সুগন্ধিবিহীন।

শুষ্ক হাত: একদিকে শীত অন্যদিকে করোনা। এ মহামারী পরিস্থিতিতে হাতে বারবার লাগাতে হয় স্যানিটাইজার বা হ্যাক্সিসল কিংবা হাত ধুতে হয়। সুতরাং যতবার এগুলো ব্যবহার করবেন ততবার ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগান।

শুষ্ক পা: শক্ত কোনো কিছু দিয়ে পা ঘষা যাবে না। খুব হালকাভাবে ঘষতে হবে। মরা কোষগুলোকে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে দুই দিন কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে নিয়ে হালকা করে ঘষে পরিষ্কার করুন এবং নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগান। অন্তত দিনে ও রাতে দুইবার ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। যাদের খুব বেশি পা ফাটে তারা রাতে ভ্যাসলিন লাগিয়ে মোজা ব্যবহার করুন। যুগান্তর

লেখক: ডা. তাসনীম খান, অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজিস্ট ও লেজার স্পেশালিস্ট

 

নিউজিল্যান্ডে যৌন হয়রানি মামলা জিতে ক্ষতিপূরণ পেলেন যৌনকর্মী

নিউজিল্যান্ডে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা জিতে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেলেন এক যৌনকর্মী। আইনি লড়াইয়ে তার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করা এক মানবাধিকার সংগঠন এ তথ্য জানিয়েছে। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) আদালতের এ সিদ্ধান্তকে যৌনকর্মীদের অধিকারের পক্ষে এক বড় মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে গোপনীয়তার কারণে মামলার সঙ্গে জড়িতদের নাম ও অন্যান্য বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। খবর বিবিসি।

নিউজিল্যান্ড-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যৌনকর্মীর যে ক্ষতি হয়েছে— তারই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগকারী যৌনকর্মী ছয় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছেন। তবে তিনি ঠিক কত টাকা পেতে যাচ্ছেন তা জানানো হয়নি।

সোমবার নিউজিল্যান্ডের হিউম্যান রাইটস প্রসেডিংস-এর পরিচালক মাইকেল টিমিনস বলেন, “যে কোনো পেশার কর্মী, তিনি যে ধরনের কাজই করুণ, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লড়াই করার অধিকার তার আছে। আমরা সব মালিক ও কর্মীদের উৎসাহিত করছি, তারা যেন এই অধিকারের বিষয়টি বুঝেন ও সম্মান করেন”।
বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডে যৌন পেশা আইনত বৈধ। যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষায় ২০০৩ সালে আইন পাশ হয়েছিল। ওই আইনে নিউজিল্যান্ডে যৌন পেশাকে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ড সেক্স ওয়ার্কার্স কালেক্টিভের জাতীয় সমন্বয়কারী ডেম ক্যাথরিন হিলি বলেন, “যৌন পেশার ক্ষেত্রে এরকম ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে, এটি অনেক বড় ব্যাপার। যে কোনো কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস প্রয়োজন”।

 

৫ সূচকে কর্মজীবী নারীর ওপর মহামারির অভিঘাতের চিত্র

মহামারি করোনাভাইরাসের আঘাতে এক সময়কার সবল চাকরি-বাজার লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। মহামারির অভিঘাতে চাকরিক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছেন নারীরা। যুক্তরাষ্ট্রে গত মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এর পরের এই সাত মাসে হারানো এসব চাকরির অর্ধেক অবশ্য আবার ফিরে এসেছে। তবে নভেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে— চাকরিক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে ব্যবধান বড় হয়েছে। মহামারির ফলে ৫৩ লাখ নারী চাকরিহারা হয়েছেন, যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৪৬ লাখ।
বিজ্ঞাপন

মহামারিটি চাকরি-বাজারে সবার আগে সেবা খাতে আঘাত হানে— বিশেষত যেসব চাকরিতে গ্রাহকের সঙ্গে সামনাসামনি সংযোগ প্রয়োজন— যেমন: রেস্টুরেন্ট, হোটেল, চিকিৎসা, সুপারশপ ইত্যাদি। যুক্তরাষ্ট্রে এসব চাকরির বেশিরভাগই নারীদের দখলে। তবে মহামারির শুরুতেই এসব শাখার কর্মী ছাটাই শুরু হয়, যার ধকল এখনও কাটেনি। এসব শাখায় হাজার হাজার পুরুষও চাকরি হারিয়েছেন— তবে নারীদের তুলনায় কম।

এই মহামারিকালেও যেসব নারীদের চাকরি টিকে আছে তাদের অবস্থাও এখন আর আগের মতো নেই। লক্ষ লক্ষ নারী করোনাভাইরাস দুর্যোগে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন। উদাহরণস্বরূপ— আমেরিকার হাসপাতালগুলোতে কর্মীদের শতকরা ৭৭ ভাগ নারী, এবং কিন্ডারগার্টেনের ৭৪ ভাগ কর্মীও নারী। তারা প্রবল মানসিক চাপ ও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও রোগীদের সেবা ও বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন।

কর্মজীবী মায়েদের জন্য সমস্যা আরও বাড়িয়েছে চাইল্ড কেয়ারের স্বল্পতা। যাদের বাচ্চা রয়েছে— এমন কর্মীরা বড় সমস্যায় পড়েছেন। মহামারি শুরুর প্রথম দুই মাসের মধ্যেই আমেরিকার চাইল্ড কেয়ার সেন্টারগুলো তাদের ৩৫ ভাগ স্টাফকে চাকরিচ্যুত করে। (উল্লেখ্য, এই চাইল্ড কেয়ার সেক্টরর সিংহভাগ কর্মী নারী: আমেরিকার চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে ৯৩ শতাংশ চাকরি নারীদের দখলে)। তবে সম্প্রতি এ সেক্টরে আবার কর্মী নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু গত নভেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ সেক্টরে এখন পর্যন্ত ১৭ ভাগ হারানো চাকরি ফিরে আসেনি। এর অর্থ হলো— কর্মজীবী মা-বাবার জন্য বাচ্চার লালন-পালনের বিকল্প আগের চেয়ে কমে এসেছে। দীর্ঘদিন চাকরিহারা থাকার পর এখন যারা চাকরি পাচ্ছেন তাদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা। এর উপর আরেক সমস্যা হলো— চাইল্ড কেয়ারে বাচ্চা ভর্তি করানোর খরচও বেড়ে গেছে।

মহামারির কারণে স্কুল ও চাইল্ড কেয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসায় বাচ্চাদের যত্ন ও লেখাপড়ার কাজে নারীদেরকেই বেশি সময় দিতে হচ্ছে। শুরুর দিকে করা কিছু সমীক্ষায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। বাড়িতে বাচ্চাদের পড়ানো, লালন-পালন ইত্যাদি কাজে পুরুষের চেয়ে নারীদেরকেই বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে— ফলে কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে পুরুষের চেয়ে নারীর দূরত্ব বাড়ছে।

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব ডালাসের অর্থনীতিবিদরা আমেরিকার শ্রম পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, মহামারিকালে শিশুদের যত্ন-আত্তি বনাম চাকরিতে মনোযোগের ব্যাপারে মা ও বাবার কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ১৩ বছরের কম বয়েসি বাচ্চার মায়েরা, বাচ্চা ছাড়া নারীদের চেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছেন। বিপরীতে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা আরও কম। বাচ্চার মায়েরা সর্বোচ্চ ৩ পার্সেন্টিজ পয়েন্টে হারে চাকরি হারালেও বাচ্চা ছাড়া নারীরা চাকরি হারিয়েছেন ১.৮ পার্সেন্টিজ পয়েন্ট হারে। এদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা যথাক্রমে ১.৪ ও ১.২।

ডালাস ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের অর্থনীতিবিদরা তাদের বিশ্লেষণে দেখান, কর্মজীবী মায়েদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারানোর হার কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনা নারীদের— সে তুলনায় শ্বেতাঙ্গ নারীদের চাকরি হারানোর হার কম। করোনা মহামারিতে ভুক্তভোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ কর্মজীবী মায়েরা। গত ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা চাকরি হারিয়েছেন ৬.৪ পার্সেন্টিজ পয়েন্ট হারে।

বর্তমানে চাকরির বাজার কিছুটা চাঙা হতে শুরু করেছে। তবে অগ্রগতির বর্তমান হার অনুযায়ী— চাকরির বাজার পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে যেতে অন্তত ৪০ মাস সময় লাগবে। অর্থনীতিবিদরা ইতিমধ্যে হুশিয়ার করেছেন— চাকরি থেকে দূরে থাকার সময় যত লম্বা হবে, তাদের চাকরিতে ফেরাও ততো কঠিন হবে। স্থায়ী চাকরি হারানো বা আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে কর্মক্ষেত্রে ও সমাজে লিঙ্গসমতার অগ্রগতির ধারায় বড় ছেদ পড়বে।
-সিএনএন অবলম্বনে