banner

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

গণধর্ষণের শিকার কিশোরী


নারী সংবাদ


পরিবারের সাথে অভিমান করে ঘর থেকে বের হওয়াই যেন কাল হলো এক কিশোরীর। একদল লম্পটের হাতে ধর্ষণের শিকার হলো।  চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই কিশোরীর বাবা তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। বাঁশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম মজুমদার এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের ওই কিশোরি গত সোমবার পরিবারের সাথে অভিমান করে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ে এবং পাশের বৈলছড়ি ইউনিয়নের এক নারীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে রাতে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে একটি পুকুর পারে নিয়ে ওই তিন লম্পট পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় ওই কিশোরীর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম মজুমদার জানান, মামলা দায়ের করার পরেই পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান শুরু করেছেন। বুধবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত

 

রোজা রেখে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পাঠ করি

লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” পাঠ করি


নাজমুন নাহের নাজু


আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “তোমাকে জান্নাতের অন্যতম ধনভাণ্ডারের কথা বলে দেব না কি?” আমি বললাম, ‘অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ (লা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) (বুখারী ও মুসলিম) [1]

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনসমূহের একটির সন্ধান দিবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বলেনঃ ‘‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’’।[2] হাযিম ইবনে হারমালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেনঃ হে হাযিম! তুমি অধিক সংখ্যায় ‘‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন [3] মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রহঃ) ………

আবু উছমান আল্-নাহ্দী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু মূসা আল্-আশ্আরী (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সাথে এক সফরে ছিলাম। অতঃপর তাঁরা মদীনার নিকটবর্তী হলে লোকেরা উচ্চস্বরে আক্বীর ধ্বনি (আল্লাহু আকবার) দেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমরা তো কোন বধীর এবং অনুপস্থিত ব্যক্তিকে আহবান করছ না, বরং তোমরা (ঐ মহান আল্লাহকে) স্মরণ করছ, যিনি তোমাদের শাহ্ রগেরও নিকটবর্তী। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ হে আবূ মূসা! আমি কি তোমাকে এমন একটি জিনিসের কথা অবহিত করব, যা জান্নাতের ভান্ডার (খাজানাহ) স্বরূপ? তখন আমি বলিঃ সেটা কি? তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।[4] কাইস ইবনু সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তার বাবা তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সেবার জন্য তার কাছে অর্পণ করেন। তিনি বলেন, আমি নামাযরত থাকা অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছ দিয়ে গমন করলেন। তিনি নিজের পা দিয়ে আমাকে আঘাত (ইশারা) করে বললেনঃ আমি তোমাকে কি জান্নাতের দরজাগুলোর একটি দরজা সম্পর্কে জানাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” (আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোন শক্তি কারো নেই)।[5] সাফওয়ান ইবনু সুলাইম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন ফেরেশতাই “লা- হাওলা ওয়ালা কু-ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” পাঠ না করে উর্ধ্বাকাশের দিকে গমন করেন না।[6]

আবূ মূসা মুহাম্মাদ ইবন মুছান্না (রহঃ) …… কায়স ইবন সা’দ ইবন উবাদা (রাঃ) থেকে বর্ণীত যে তাঁর পিতা (সা’দ ইবন উবাদা) তাঁকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর খিদমতের জন্য সমর্পণ করেছিলেন।

কায়স (রাঃ) বলেনঃ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তখন মাত্র সালাত শেষ করেছি। তিনি আমাকে তাঁর কদম মুবারক দ্বারা আঘাত করলেন। বললেনঃ জান্নাতের দ্বারসমূহের একটি দ্বারের আমি তোমাকে বলব কি? আমি বললামঃ অবশ্যই। তিনি বললেনঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। [7]

মুহাম্মাদ ইবন সুলায়মান (রহঃ) ………. আবু যুবায়ের (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ . আবদুল্লাহ ইবন যুবায়ের (রাঃ) নামায শেষে তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ …) পাঠ করতেন। অতঃপর উপরোক্ত দুআর অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে এবং তার সাথে “ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, লা না’বুদু ইল্লা ইয়্যাহু লাহুন-নি’মাহ … অতিরিক্ত বর্ণনা করে পরে উপরোক্ত হাদীছের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।[8]

ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) ….. উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুওয়াযযিন যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লা-হু আকবার” বলে তখন তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার জবাবে বলেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। যখন মুওয়াযযিন বলে “আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সেও বলেঃ “আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “হাইয়্যা আলাস সলা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা-হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “হাইয়্যা ‘আলাল লাফা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়াৰ্যযিন বলেঃ “আল্লা-হু আকবার, আল্লাহু আকবার” এর জবাবে সে বলেঃ “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে বেহেশতে যাবে।[9] [1] সহীহুল বুখারী ২৯৯২, ৪২০৫, ৬৩৮৪, ৬৪০৯,
হাদিসের মানঃ সহিহ [2]আহমাদ ২০৮২৯, ২০৮৪ [3]বুখারী ৪২০৪, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৭৩৮৬, হাদিসের মানঃ সহিহ [4]বুখারি ইফা ১৫২৬ হাদিসের মানঃ সহিহ [5]সূনান আত তিরমিজী ৩৫৮১ সহীহঃ সহীহাহ (১৭৪৬)। হাদিসের মানঃ সহিহ [6]সূনান আত তিরমিজী৩৫৮২ হাদিসের মানঃ সহিহ [7] সহিহাহ ১৭৪৬ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ),৩৫৮১,৩৪৬১ হাদিসের মানঃ সহিহ [8]সূনান আবু দাউদ, ১৫০৭ হাদিসের মানঃ সহিহ [9]সহীহ মুসলিমঃ৭৩৬,,

 

ডাল আলুর চচ্চড়ি

ডাল আলুর চচ্চড়ি


ঘরকন্যা


উপকরণঃ ডাল হাফ কাপ, আলু কুচি এক কাপ, পিয়াজ হাফ কাপ, কাঁচামরিচ ২-৩ টা, গরম মসলার গুড়ো এক চা চামচ, একটা তেজপাতা, হাফ চা চামচ পাঁচফোড়ন, এক চিমটি হিং( অপশনাল), লবণ স্বাদমতো, ধনেপাতা কুচি, ঘি এক টেবিল চামচ।

প্রস্তুত প্রণালীঃ প্যানে দুই টেবিল চামচ তেল দিয়ে পাঁচফোড়ন ও হিং ফোড়ন দিয়ে পিয়াজ, কাঁচামরিচ কুচি দিতে হবে। পিয়াজ লালচে হয়ে এলে আলু কুচি আর ডাল দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ডাল দুই কাপ পানি দিতে হবে। স্বাদমতো লবণ দিয়ে মিডিয়াম আঁচে ঢেকে ডাল, আলু সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করতে হবে। এরপর ঢাকনা তুলে গরম মসলার গুড়ো ছড়িয়ে দিয়ে আঁচ বাড়িয়ে পানি টানিয়ে নিতে হবে।

পরিবেশনঃ নামানোর আগে ধনেপাতা কুচি আর এক টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে নিতে হবে।

 

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েট

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েট


নাজমিন নাহার


১.প্রথমেই আপনার শারিরীক অবস্থা অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ, ইনসুলিনের পরিমাণ ঠিক করে নিতে হবে।
২. খাদ্যাভাস এমনভাবে নির্ধারন করতে হবে যেন কোনো অবস্থাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া না হয়।
৩.এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে যেন বডি ডিহাইড্রেটেড না হয়।
যেমনঃ
*সেহরিতে (আটা বা চালের রুটি/দুই তিন প্রকারের ডাল ও ওটসের মিক্সড খিচুরি/দুই তিন টেবিল চামচ ওটস দুধ দিয়ে রান্না / সামান্য ভাত + ডিম/ মাছ+ শাকসবজি + শসা/টমেটো/তরমুজ/খরমুজ+ প্রচুর পরিমাণে পানি।
*ইফতারি- সারাদিন রোযা রাখার ফলে শরীরের মেটাবলিক প্রসেসের অনেক পরিবর্তন হয়,এজন্য মেটাবলিক প্রসেস নরমাল রাখতে প্রচুর পানি,ডাবের পানি, বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস( তরমুজ,কাচা আম,কমলা,মালটা),লেবুর শরবত খেতে হবে।শরবত অথবা জুসের সাথে তুকমা বা ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে, কিন্তু কোন অবস্থাতেই চিনি,গুড়,মিস্টি খাওয়া যাবেনা।এছাড়াও ইফতারিতে এক কাপ হালিম/এক কাপ ছোলা/ ছোট একটা স্যানডুইচ + খেজুর দুই-তিনটি/ মিক্সড ফল এক কাপ/ একটা আপেল/ একটা নাশপাতি + সালাদ।
মনে রাখতে ইফতারের খাবারের পরিমাণ হবে অন্যান্য সময়ের রাতের খাবারের সমান।
*রাতের খাবারঃ এবং রাতের খাবার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্যালরির চেয়ে বেশি না হয়।
এসময়ে ভাত/রুটি/খিচুড়ি/ওটস+মাছ/মাংস/ ডিম+শাকসব্জি+সালাদ খেতে হবে।

মনে রাখতে হবে-
১.কোন অবস্থাতেই সেহেরি না খেয়ে রোযা রাখা যাবেনা।
২.রাতের খাবার বাদ দেওয়া যাবেনা।
৩.খাবারের পাশাপাশি ইন্সুলিন এবং অষুধের ডোজ ঠিক রাখতে হবে।
৪. ডায়াবেটিস রোগিদের রোযার সময় আলাদা করে ব্যায়াম করার দরকার নেই,তবে কেও চাইলে রাতের খাবারের পরে ১০/১৫ মিনিট হাটতে পারে।
৫. রোযা রাখা অবস্থায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া/হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষন দেখা দিলে রোজা ভাঙতে হবে।
৬. তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মাছ/মাংসের পরিবর্তে ২/৩ প্রকার ডাল মিক্স করে খাওয়া যাবে।
৭. আলাদা করে করোনা প্রতিরোধ অতিরিক্ত ভিটামিন-সি, কমলা, মাল্টা খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
কারণ সব ধরনের শাকসবজিতে ভিটামিন সি আছে এবং সবধরনের ভিটামিন ইমিউনিটি বুস্ট করে।

৮. ভাজা- পোড়া না খাওয়াই ভাল, তবে খুব বেশি খেতে ইচ্ছে করলে ১/২ পিস খেতে পারেন।

-নাজমিন নাহার
#ঘরে_থাকুন_সুস্হ_থাকুন
সুত্রঃ বাঁচাও হেলথ।

 

আসুন রমজানের হক আদায় করি-

আসুন রমজানের হক আদায় করি


আকলিমা ফেরদৌস আখি


এ মাসের প্রস্তুতির জন্য যা করা যেতে পারে তা হলো-

১) ঈমান ও এহতেসাবের সাথে রোজার নিয়ত করা।

২) ইচ্ছা শক্তি দৃঢ় করে নেওয়া যে,‘ ইনশাল্লাহ রমজান মাসে আল্লাহর ক্ষমা ও নাজাত হাসিল করে নিবোই।’

৩) রমজানের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল জানা ও দোয়া গুলো মুখস্ত করে নেওয়া।

৪) রমজান মাসে কি কি নেক আমল করা যায় তার একটা তালিকা তৈরি করে রাখা। যেমন-

-কোরআন অধ্যায়ন করা (অধ্যায়ন বলতে কোরআনের তাফসীর সহ পড়াকে বুঝায়) তিন/চারটি সূরা ঠিক করে নেওয়া এবং পুরো মাসে এই তিনটি/চারটি সূরা সর্ম্পকে একটি পরিপূর্ণ ধারনা নেবার চেষ্টা করা।

-কোরআন তেলওয়াত করা। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পরে চার পৃষ্ঠা কোরআন তেলওয়াত করলে মাসে একবার কোরআন খতম দেওয়া যায়।

-কয়েক টি ইসলামী ও হাদিস বই ঠিক করে রাখা এবং সারা মাস ধরে পড়া।

-ওয়াক্তের শুরুতেই নামাজ আদায়ের চেষ্টা করা এবং সুন্নত ও নফল নামাজ আদায়ে মনোযোগী হওয়া।

-নিয়মিত সালাতুল দুহা, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।

-তাহাজ্জুদ নামাজের আগে আকাশের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকু তেলাওয়াত করা।

-দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি কাজে রাসুল(সা:) এর শিখিয়ে দেওয়া দোয়াগুলো পড়া।

-সহীহ করে কোরআন তেলওয়াত শেখার চেষ্টা করা।

-প্রতিদিন অন্তত: একজন ব্যক্তিকে ইফতার করানো।

-প্রতিদিন অন্ত:ত একজন ব্যক্তিকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া।

৫) নিজের কমপক্ষে দশটি দোষ চিহ্নিত করে তার তালিকা তৈরী করা এবং এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যে রমজানে এ দোষগুলো থেকে নিজেকে বাচিঁয়ে রাখার চেষ্টা করা এবং পরির্পূণভাবে দোষগুলি থেকে নিজেকে মুক্ত করা।

৬) পরিবারের সদস্যদের রমজানের হক আদায়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করা।

৭) রমজানের প্রতিটি দিন ঠিক ভাবে কাজে লাগানো জন্য একটি রুটিন করে রাখা।

৮) শেষের দশদিন পরিপূর্ণভাবে হক আদায়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতি রাতে ইবাদতের একটি পরিকল্পনা ঠিক করে নেওয়া।

৯) যাকাতের হিসাব করে রাখা।

১০) অভাবীদের মধ্যে ঈদের উপহার বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করা।

এবারে আসুন একজন রোজাদার হিসাবে নিজের কাজগুলি গুছিয়ে নিয়ে কিভাবে প্রতিটি সময়কে ইবাদতে পরিণত করে নেওয়া যায় তার একটা নমুনা দেখে নেয়া যাক-

রাতের শেষাংশে

সালাতুল তাহাজ্জুদ-২:৩০-৩:১৫

(তাহাজ্জুদ নামাজের আগে আকাশের দিকে তাকিয়ে রাসূল সা: সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকু তেলওয়াত করতেন। এই আমলটির অভ্যাস করা যেতে পারে।)

সেহেরী গ্রহন-৩:১৫-৩:৫০মি:

(সালাতুল ফজর ও সকালবেলার আযকার পাঠ)

৩:৫০মি:-৪:৩০মি:

(হিসনূল মুসলিম অথবা কতিপয় প্রয়োজনীয় দোয়া বই গুলোর সাহায্য নেয়া যেতে পারে) বাংলা অনুবাদসহ কোরআন তেলওয়াত

(চার পৃষ্ঠা)-৪:৩০-৬:০০টা

সালাতুল দুহা বা ইশরাক-৬:০০টা থেকে-৬:১৫মি:

বিশ্রাম ও ঘুম-৬:২০-৮:৩০মি:

সকাল বেলা

ঘুম থেকে উঠা-৮:৩০ থেকে ৯:৩০টা

দৈনিন্দন কাজ শেষ করা-৯:৩০টা থেকে-১১:৩০

(এ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের জন্য সারাদিনের খাবার রেডি করা, ইফতার কি হবে, রাতের খাবার ও সেহেরী কি হবে তা রেডি করে রাখা। মাছ, সবজি কেটে ধুয়ে রাখা যেতে পারে)

১১:৩০ থেকে ১২:৩০ কোরআন অধ্যায়ন, তেলওয়াত, ইসলামী বই পড়া, হাদিস পড়া ইত্যাদি।

দুপুর বেলা

১২:৩০-১:৩০
বিশ্রাম ও সালাতুল জহুরের প্রস্তুতি, জহুরের সারাত আদায় এবং সালাত পরবর্তী মুস্তাহাব তাসবীহ ও যিকির পাঠ।

কোরআন তেলওয়াত

(চার পৃষ্ঠা)-১:৩০-২:৩০মি:

২:৩০-৪:০০ সন্তানদের নিয়ে রমজান স্কুল

(প্রতিবেশীর সন্তানদেরও সাথে নেওয়া যেতে পারে) কোরআন পড়ানো, হাদিসের গল্প বলা, ইসলামী বই পড়িয়ে শুনানো, সাথে নিয়ে ইউটিউবে মটিভেশন মূলক ভিড়িও গুলো দেখা, স্কুলের পড়া ইত্যাদি।

বিশ্রাম-৪:০০-৪:৩০

বিকেল বেলা ব্যস্ত সময়

৪:৩০-৬:০০
যে কাজ গুলো করবেন বা আপনারা সাধারণত করেই থাকেন তা একটু গুছিয়ে নিলেই হবে। যেমন-
সালাতুল আসর, সালাত পরবর্তী মুস্তাহাব তাসবীহ ও যিকির, রাতের খাবার, ইফতার ও সেহেরীর জন্য প্রস্তুতি এবং রান্না শেষ করে ফেলা ইত্যাদি।

এ সময় মায়েরা যেহেতু রান্না বা ইফতারের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত থাকেন তাই বাবারা সন্তানদেরকে কিছুটা সময় দিতে পারেন।গল্পের বই পড়ে শুনানো, হাতের লেখা প্রেকটিস করানো, টিভিতি ভালো কোন অনুষ্ঠান দেখানো, আল্লাহর নিরানব্বইটা নাম থেকে প্রতিদিন পাচঁটি করে শিখানো, সৃজনশীল লিখা ইত্যাদি।

ইফতার ও সন্ধ্যা বেলা

অন্তত: ৬;১০মি: এর মধ্যে ইফতারের প্রস্তুতি ও রান্না শেষ করে টেবিলে বা ইফতার সাজিয়ে বসে যাওয়া।

এ সময় পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে কেউ কোরআনের কয়েকটি আয়াত পড়ে শুনাতে পারে। একটি/দুইটি হাদিস পড়ে শোনানো এবং সবশেষে সবাই মিলে বা ব্যক্তিগত ভাবে দোয়ার পরিবেশ তৈরী করা যেতে পারে এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা যেতে পারে।

ইফতার গ্রহন-
৬:২৫(ইফতারের সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সময়টা মিলেয়ে নিতে হবে।)

সালাতুল মাগরীব ও সন্ধ্যাকালীন আযকার পাঠ
৭:০০-৭:৩০{মাগ

 

বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন!

বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন!


ফারহানা মিতু


বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন! রক্তের সম্পর্ক নেই, অথচ একটা নারী আরেক ভিন্ন পরিবারেরয পুরুষের জন্য মা বাবাকে ছেড়ে আসছে।নিজের সবকিছু বিলিয়ে দিচ্ছে।সন্তানের মা হচ্ছে।নেক কাজের সহযোগী হচ্ছে।অপরদিকে যে যুগে কেউ কাউকে বিনা কারণে একটা পয়সা দিতেও রাজি নয় সেই যুগে একটা লোক বাবার দায়িত্ব টাকে কাঁধে নিয়ে নিচ্ছে।নারীর সার্বিক ভরনপোষণ দিচ্ছে।তার সন্তানদের মুখে হালাল রিযিক তুলে দিতে দিন রাত একাকার করে দিচ্ছে।কখনো ভেবে দেখেছেন,এটা কি করে সম্ভব???
এটা আসলে আল্লাহর নিয়ামত।বিয়ে এমনই এক বন্ধন যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা একটা অন্তরের সাথে আরেক অন্তর কে জুড়ে দেন।
আমরা যারা এই নিয়ামত লাভ করেছি তাদের উচিৎ বেশি বেশি শুকরগুজার হওয়া।আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।কেননা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে নিয়ামত আরো বাড়িয়ে দেয়া হয়।আর যারা এখনো অবিবাহিত তাদের উচিৎ আল্লাহর শেখানো পদ্ধতিতে ই দুয়া করা।
তারা প্রার্থনা করে থাকে, “হে আমাদের রব! আমাদের নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম।”
(.২৫-ফুরকান:৭৪.)

লকডাউনের এই সময়ে দাম্পত্য কলহ যে অনেক ক্ষেত্রে বেড়ে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।প্রায়ই আশেপাশের বিল্ডিং এর ঝগড়া কলহের আওয়াজ জানালা ভেদ করে ঘরে ঢুকে পড়ে।কিছু ক্ষেত্রে পুরুষরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে।কিছু ক্ষেত্রে নারীরা অসহনশীল হয়ে পড়ছে।অর্থাৎ অন্তরের প্রশান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।এর মূল কারণ নারী বা পুরুষ নয়ন শীতল করতে পারছেনা।

এবারে আসি নয়ন শীতলকারী স্ত্রী হওয়া বা জীবনসঙ্গী পাওয়ার কিছু শর্তেঃ
#আমি যাকে পাচ্ছি সে আমার জীবনসঙ্গী। কুরআন তার নাম দিয়েছে পোষাক। এবং পরস্পরের সহযোগী।কাজেই তাকে উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সম্পত্তির মত মনে করা উচিৎ না। তার কিছু নিজস্বতা থাকবে,আমারও কিছু নিজস্বতা থাকবে।তাকে পুরো আমার মত হয়ে যেতে হবে,বা আমাকে পুরো তার মতন হতে হবে এই জটিল চিন্তায় যাওয়াই যাবেনা।প্রত্যেকের স্বকীয়তা ঠিক রেখেই পাশাপাশি চলা যায়।
#দাম্পত্য সংসার টা একটা গাড়ির মত।গাড়ির ড্রাইভার হতে হবে স্বামীকে। স্ত্রীকে হতে হবে অনুগত। এটা সমাজের ভারসাম্য ঠিক রাখবে।স্ত্রী পরামর্শ দিতেই পারে। সেই অনুপাতে ডান বাম হতেই পারে।কিন্তু চালকের আসনে শক্ত হয়ে বসতে হবে স্বামীকেই।নতুবা এই গাড়ি দূর্ঘটনার কবলে পড়তেই পারে।
পুরুষ নারীর কর্তা। এ জন্য যে, আল্লাহ‌ তাদের একজনকে অন্য জনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, পুরুষ নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে। কাজেই সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা আনুগত্যপরায়ণ হয় এবং পুরুষদের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হেফাজত ও তত্বাবধানে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে।
(নিসা:৩৪.)

#সম্পর্কে সহনশীলতা র কোন বিকল্প নেই।দুজনকেই দুজনের দূর্বলতা,অক্ষমতা,ফিতরাতের ব্যপারে সহনশীল আচরণ করতে হবে।
#বাস্তব জীবনে শুধু শিশুরা নয় আমরা বড়রাও অনুকরণ প্রিয়।প্রত্যেকে তার মা বাবার মত হতে চায়।কথা বার্তা,চালচলন এমনকি দায়িত্ব বা কর্তব্য পালনের পদ্ধতিও একইভাবে অনুসরনীয় হয়।তাই মা বাবা হয়ে সেই আদর্শ ই স্থাপন করা উচিৎ যা আমার ছেলে মেয়ে আমার সাথে করলে কোন ক্ষতি হবেনা,বা তখন তাকে সংশোধন করা দরকার হবেনা।
# অধিকার সচেতন হওয়ার চেয়ে স্বামী স্ত্রী দুজনের ই কর্তব্য সচেতন হওয়া ভাল।
# অধিকাংশ দাম্পত্য কলহের মূল কারণ অন্যের সাথে নিজের স্ত্রী বা স্বামীকে তুলনা করা,পরশ্রীকাতর হওয়া অতঃপর মনের মধ্যে অতৃপ্তি রাখা যে আমি অনেক কষ্টে আছি।সব ছেলে একরকম হয়না,সব মেয়েও একরকম না।কিন্তু যেহেতু এই জুটি টা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুমোদিত তাই আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে আমাদের শান্তির মূল চাবিকাঠি টা আমাদের জীবনসঙ্গীর কাছেই আছে।অন্য চাবি স্বর্ণে তৈরি হলেও আমার ঘরের শান্তির দরজা খুলবেনা।আমার নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করতে হবে যে আমি সঠিক জীবনসঙ্গী পেয়েছি।নিজের সর্বোচ্চ মেধা আর শ্রম দিয়ে তাকেও প্রমাণ করে দিতে হবে যে আমিই তার জন্যে সবচেয়ে প্রশান্তি দায়ক ব্যক্তি।
# সবশেষ মূলনীতি, দুনিয়া আমার লক্ষ্যবস্তু নয়,দুনিয়ার সাফল্য ব্যার্থতা আমার জীবনের সাফল্যের মাপকাঠি নয়।তাই তাকাসুর বা বেশি বেশি পাওয়ার লোভ যেন আমাকে বা তাকে গ্রাস করতে না পারে তাই নিজেদের চাহিদা কে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। সন্তান কেও সেইভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন পাওয়া যাবে বলেই চাইতে হবে এই প্রবনতা তৈরি না হয়।
আল্লাহ স্বামী স্ত্রী কে জুটি বেধে দিয়েছেন একসাথে জান্নাতের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য।সারাজীবন সুখে থেকে বিলাসিতায় কাটিয়ে কোন লাভ নেই যদি জান্নাতে আপনি এক ঘরে,আপনার জীবনসঙ্গী অন্য জান্নাতের অন্য ঘরে থাকেন।অনন্ত জীবনে যেন একসাথে এক ঘরে থাকা যায় তাই আমাদের উচিৎ নেক কাজে সহযোগী হওয়া,দুনিয়া বিমুখ হয়ে পরকাল মুখী কাজ বেশি বেশি করা,দুইজন দুইজনকে হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক আদায়ে সহযোগিতা করা। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেকটি পরিবারকে কবুল করুন।আমীন।

 

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে Psycho-Immunity কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে Psycho-Immunity কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।


অধ্যাপক ডঃ এম. এস. কবীর জুয়েল


আজ পবিএ শব-ই-মেরাজের রাত্রি, যারা কালে ভদ্রে ধর্মকর্ম করে থাকেন, তারাও নিশ্চয়ই পবিত্র কোরানের শেষাংশের ১১৩-তম সুরা ‘ফালাক’ টি জানেন, সুরা ফালাকের ২য় আয়াতটি ব্যক্তিগতভাবে আমি অত্যন্ত গুরুত্ববহ মনে করছি, বর্তমান প্রেক্ষিতঃ বিবেচনায় আমার কাছে এ আয়াত ও সমগ্র সুরাটিকে অত্যন্ত তৎপর্য্যপূর্ণ মনে হয়েছে, এ অনুজীব (Covid-19)-টি সরাসরি আল্লাহর সৃষ্টি হলেও মহান আল্লাহ-ই রক্ষা করবেন, কিংবা চীন-মার্কিন রেষারেষি উদ্ভুত কোন ‘Biological Weapon’ হলেও নিঃসন্দেহে আল্লাহ-ই বাঁচাবেন, প্রথম আয়াত থেকেই আশ্রয় চাওয়া শুরু হচ্ছে—
‘আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার’,

২য় আয়াতেই বলা হচ্ছে
“(হে আল্লাহ)তোমার যে কোন প্রকার

সৃষ্ট জীবের অনিষ্ট হতে”
2nd verse –যা আরবীতে–“Min Sharri Ma Khalaq” ইংরেজিতে –“From Anything Harmful in Creation”
তারপর ৩য় আয়াতে সুস্পষ্টভাবে কোন এক অজ্ঞাত অন্ধকারের প্রভাব নিয়ে বলা হচ্ছে, এখানে আমরা অন্ধকার অর্থে যা এখনো মানুষের বোধগম্য নয়, অথচ তা ছড়িয়ে পড়ছে তা বলতে পারি —
3rd Verse– “From the Evil of Darkness as it Spreads ‘অন্ধকার-এর অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয় বা পরিব্যাপ্তি লাভ করে।
একটু খেয়াল করুন, Covid-19 আজ হতে প্রায় চার মাস আগে পৃথিবীতে এসছে, কিন্তু সারা দুনিয়ার তাবৎ
রাঘব বোয়ালদের অনুগত সকল অনুজীব বিজ্ঞানী,ভাইরোলজীস্ট, সংক্রামক ব্যাধী বিশেষজ্ঞগণ(Epidemiologists)এখনো পুরোপুরি অন্ধকারে নিমজ্জিত, কোন কিছুই তাদের নিকট পরিস্কার নয়, কারণ ইতিমধ্যেই প্রায় চারশত বার পরিস্রাবিত হয়ে ইহা নতুনরুপে আরো অধিক বিধংসী আক্রমণের উপযোগী হয়ে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে,যা ইতিপূর্বেকার বৈশ্বিক সংক্রমণ (Pandemic)১৯২০ এর Spanish ফ্লু-এর ক্ষেত্রে ঘটে নাই।
তাই অক্ষমতার লজ্জা ভেংগে নির্দিধায় বিজ্ঞানীরা আত্মসমর্পণ করেছেন,মার্কিণ চিকিৎসকগণ তাদের রোগীর Psych-immunity বাড়াতে স্রষ্টাকে ডাকতে
বলছেন, যা আমেরিকান টিভিতে প্রচারিত হয়েছে, এবং কিভাবে একজন ষাটোর্ধ কৃষাংগ বেঁচে উঠলো তা দেখানো হয়েছে; স্পেন ও ইতালীর প্রধানমন্ত্রী সরাসরি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্রষ্টাকে ডাকতে বলছেন।
প্রশ্ন উঠতে পারে, চারিদিকে তো বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে ইহার ঔষধও আবিস্কার করে ফেলেছে, তাহলে কেন তারা এতো ভয় পাচ্ছে,কেন এভাবে সারেন্ডার করছে, এ পর্যন্ত দু রকমের বিন্যাসিত ঔষধ দিয়ে করোনার এ প্রজাতির ভাইরাসের চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে — ১) ম্যলেরিয়া নাশক ঔষধ Hydroxy Chloroquine phosphate (400mg) সাথে পরিচিত এন্টিবায়োটিক Azithromycin(500mg),এমন কি ইহার কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও দেয়া হয়েছে, কিন্তু সার্বজনীন ভাবে মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি, অপরটি ২) Favilavir, যা আগে Fapiliavir নামক Anti-viral হিসেবে পরিচিত ছিলো, দুটির আবিস্কারক দেশ থেকে ইতালী ও স্পেন অনেক আগেই তা জেনেছে, ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োগ ও করেছে কিন্তু ফলাফল Hypothetical হওয়ায় সবাই হতাশ, FDA মোটেও এ ঔষধ গুলোকে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে দেবার মতো যোগ্য মনে করেনি।
এখন আসা যাক, যদি ইহা জীবানু অস্ত্র-ই হয়ে থাকে এবং চীন ইচ্ছে বা অনিচ্ছেয় তার হুবেই প্রদেশের জৈব গবেষণাগার থেকে ইহা বের করে দিয়ে থাকে অথবা মার্কিণ মহাকাশ স্যটেলাইট কতৃক দূর-নিয়ন্ত্রিত অদৃশ্য ড্রোন নিক্ষেপে ইহা ইরানমুখী করতে যেয়ে অন্যান্য দেশসহ নিজ দেশেও আমেরিকা সংক্রমিত করে থাকে, এ ক্ষেত্রে করোনাকে আমরা ওঁদের সৃষ্ট এক ভয়ানক যাদুকরী ক্ষমতারুপি অনুজীব মনে করবো কিনা?
দেখা যাক, সুরা ফালাক এ বিষয়ে কিভাবে কার্যকর–
মনোযোগ সহকারে নিম্নের আয়াত দুটি অনুধাবন করুন — ৪র্থ আয়াত–“গ্রন্থিতে ফুঁৎকার(Air Borne) দিয়ে জাদুকারিণী(Covid-19 as a Biological Weapon)দের অনিষ্ট থেকে” এবং ৫ম আয়াতে সরাসরি সেইসব ইসলাম বিদ্দেষী মানুষ ও জাতির বিষয়ে বলা হচ্ছে—
“হিংসুক(China-US etc)-এর অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে(তাদের অপবিজ্ঞান প্রমোট করে)।
আজ হোক কাল হোক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদগণ মহান আল্লাহর কৃপায় এ ভয়াবহ রোগের টিকাসহ যুগোপযোগী চিকিৎসা অবশ্যই আবিস্কার করে ফেলবে, কিন্তু ততোদিনে সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসের কল্পবিজ্ঞানে একটি কালো অধ্যায় সূচিত হবে।
স্রষ্টার এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র(Apparently Invisible) সৃষ্টির কাছে মহান দাপুটে মানবজাতি কতোটা অসহায় তা চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে।
কেবল ধর্মপ্রাণ মুসলিমের নিকট এ শক্তিশালী মরনাস্ত্র(Covid-19)নিগ্রহের বস্তু, কারণ সে নিজেকে সচেতনভাবে ইহা থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করেছে,
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করে নিচ্ছে, মেসওয়াক করছে, ঘরে নামাজ আদায় করছে,অন্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে; একই সাথে মনে প্রাণে ইহাকে নিছক আল্লাহর এক অভিনব সৃষ্টি মনে করেছে,যা আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো ভেতরে সংক্রমিত হতে পারে না।

 

তরমুজের সাদা অংশের মোরব্বা

তরমুজের সাদা অংশের মোরব্বা


ঘরকন্যা


তরমুজটার একটা অংশ খাবেন বাকী সাদা অংশটা ফেলে দিবেন কেনো। আসুন চটপট ছোট ছোট করে কেটে বানিয়ে ফেলি মোরব্বা।

উপকরণ

১. তরমুজের ফেলে দেওয়া সাদা অংশ
২. দারচিনি
৩. এলাচি
৪. তেজপাতা
৫. চিনি
৬. সামান্য লবণ

প্রস্তুত প্রণালী

তরমুজ খাচ্ছিলাম। তো, খেতে খেতে সাদা অংশটি ফেলে দিব। ঠিক তখন মাথায় আসলো যে, সাদা অংশটি যদি ছোট ছোট করে বর্গাকারভাবে কাটা যায়। তাহলে কেমন হয়। যেই চিন্তা সেই কাজ শুরু করে দিলাম। সাদা অংশটি ছোট ছোট কাটলাম। কাটার পর গরম পানিতে কিছুটা লবণ আর চিনি আর দারচিনি দিয়ে তরমুজ সাদা অংশটা ফেলে দিলাম। এরপর যখন তরমুজের সাদা অংশটি হালকা সিদ্ধ হল তখন সেটাকে নামিয়ে পানিটা শুকিয়ে নিলাম।

চিনির সিরা

চিনির সিরা করার জন্য এক কাপ চিনি সাথে হাফ কাপ পানি নিলাম। পানিতে কিছুটা দারচিনি, এলাচি & তেজপাতা কিছুটা অংশ দিলাম এরপর যখন চিনির শিরা হয়ে গেল,
এবার শিরার মধ্যে তরমুজের সিদ্ধ করা সাদা অংশটি দিয়ে দিলাম। খুব হালকা আগুনের আঁচে যতক্ষণ পর্যন্ত না চিনিতে সাথে ছোট ছোট তরমুজ লেপটে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত চুলায় রাখলাম। হালকা বাদামী বর্ণধারণ করবে। হয়ে গেল মজাদার তরমুজের সাদা অংশের মোরব্বা।

খেতেও বেশ মজা। বাসায় সহজে আপনিও বানিয়ে ফেলতে পারেন।

 

রাগ সামলাতে কচ্ছপ কৌশল!

রাগ সামলাতে কচ্ছপ কৌশল!


রাউফুন নাহার


ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে কি আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে? অল্পতেই রেগে যাচ্ছি? ভয় পাচ্ছি? কষ্ট পাচ্ছি? দেখি তো কষ্টকর আবেগগুলো সামলে নেওয়ার জন্য কচ্ছপ কৌশলটি কোনো কাজে আসে কি-না!

বিপদের আভাস পেলে কচ্ছপ নিজের খোলসের ভেতরে আশ্রয় নেয়। তেমনি যেকোনো ঘটনা থেকে আমরা রাগ বা অন্যান্য যেসব কষ্টকর অনুভূতি অনুভব করি, তা সামলে নেওয়ার জন্য বাহিরের জগৎ থেকে কিছুটা বিরতি নিয়ে নিজের ভেতরেই আশ্রয় নিতে পারি৷ তারপর শরীর-মন শান্ত হলে আবার বাইরে বেরিয়ে সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দিতে পারি।

কচ্ছপ কৌশলের ধাপগুলো হলো-
প্রথম ধাপঃ বুঝতে পারছি, অপ্রীতিকর একটি ঘটনা ঘটার ফলে আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে বা কষ্ট হচ্ছে বা ভয় লাগছে।

দ্বিতীয় ধাপঃ আমি নিজেকে বলছি, “থামো”। এই মুহুর্তে কোনোকিছু করা থেকে আমি নিজেকে থামাচ্ছি। শুধু কেমন অনুভব করছি তা মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করছি।

তৃতীয় ধাপঃ আমি নিজের ভেতরে ঢুকছি। অর্থাৎ নিজের জন্য সময় নিচ্ছি। কমপক্ষে ৩ বার গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছি। নিজেকে বলছি, “আমি নিজেকে শান্ত করতে পারি”, “আমি সমস্যা সমাধান করতে পারি”। শান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি নিজের ভেতরে, নিজের সাথেই থাকবো। নিজের যত্ন নেবো।

চতুর্থ ধাপঃ এখন আমি অনেকটাই আরাম বোধ করছি। তাই নিজের ভেতর থেকে আমি বাইরে বেরিয়ে আসছি। শান্তভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য আমি এখন প্রস্তুত।

আবেগ-অনুভূতি আমাদের শত্রু নয়। বরং গবেষণায় দেখা গেছে যারা বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভব করে এবং সময়মত তা সামলে নিতে পারে, তাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে৷
আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। এসময় বিভিন্ন ধরনের কষ্টকর অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাওটাই স্বাভাবিক। আবেগকে অস্বীকার না করে বা শত্রু না ভেবে যথাযথ উপায়ে নিজেকে শান্ত করা ও যৌক্তিক আচরণ করাই এসময় আমাদের জন্য সহায়ক হবে।

রাউফুন নাহার
শিক্ষক
এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

জঙ্গলে ফেলে যাওয়া সেই মা করোনায় আক্রান্ত নন

জঙ্গলে ফেলে যাওয়া সেই মা করোনায় আক্রান্ত নন


নারী সংবাদ


টাঙ্গাইলের সখীপুরের জঙ্গলে ফেলে যাওয়া নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তিনি প্রাণঘাতি করোনায় আক্রান্ত নন। ঢাকায় নমুনা পরীক্ষার পর বুধবার সন্ধ্যায় জানা গেল তার রিপোর্ট নেগেটিভ। অসহায় এই নারীর নাম সাজেদা (৫০)। বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায়।

করোনা সন্দেহে তারই সন্তানেরা সোমবার সখীপুর উপজেলার ইছামতি গ্রামের একটি জঙ্গলে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। সোমবার রাতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো হয়।

সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস সোবহান নয়া দিগন্তকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় ওই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নমুনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ডা. মো. আব্দুস সোবহান বলেন, একটি মেডিক্যাল টিম নিয়ে সোমবার রাত ২টা নাগাদ জঙ্গল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করি এবং রাতেই ব্যক্তিগত খরচে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করি। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উদ্ধারের সময় তাকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। এছাড়া জ্বর, সর্দি ও গলা ব্যাথাও ছিল।

উল্লেখ্য, ওই নারীর বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায়। এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে গাজীপুরের সালনায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সন্তানেরা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। আর সবার জন্য রান্না করার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। কয়েকদিন ধরে তার জ্বর, সর্দি, কাশি শুরু হলে আশেপাশের বাসার লোকজন তাদের তাড়িয়ে দেন। ওই অবস্থায় সোমবার মাকে সাথে নিয়ে একটি পিকআপভ্যান ভাড়া করে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন সন্তানেরা। পথিমধ্যে সখীপুর জঙ্গলে মাকে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

ফ্রি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে মাইন্ড-ব্লোয়িং সাইকোলজিক্যাল টিম

ফ্রি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে মাইন্ড-ব্লোয়িং সাইকোলজিক্যাল টিম


স্বাস্থ্যকথা


“করোনা ভাইরাস” আতঙ্কে পুরো বিশ্ব স্তব্ধ। বাংলাদেশেও ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৯ জন। আর আক্রান্ত প্রায় ৮০৩ বেশি মানুষ। দিনে দিনে এই ভাইরাস মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের শহর, গ্রাম, পাড়া এবং মহল্লায়। এই অবস্থায় দেশের প্রায় অধিকাংশ মানুষই মানসিকভাবে আতঙ্কিত। আতঙ্কিত হওয়াটাই স্বাভাবিক, তবে অতিরিক্ত আতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
“মাইন্ড-ব্লোয়িং সাইকোলজিক্যাল টিম” এর সদস্যরা, এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ২৪ ঘন্টা মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে এই সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি বহুদিন ধরে।

চারদিকে অদৃশ্য করোনা আতঙ্ক, অনেক দুঃসংবাদ, মৃত্যুর মিছিল, গুজব, বন্দী জীবন, এসবের মাঝেও কিভাবে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়ে ভালো থাকা যায়, এই বিষয়ে ফোনে এবং ই-মেইলে পরামর্শ দিচ্ছেন আমাদের মাইন্ড-ব্লোয়িং সাইকোলজিক্যাল টিমের মনোবিজ্ঞানীগণ।

Mohiuddin Mahi.
Counselor, ICDDR,B.
Phone:01681454852

Raihan Uddin Melon
Psycho-Social Counselor, TAI.
Phone:01997646802

Md. Ashraful Islam
Assistant counselling psychologist
Phone: 01828196981

Rakib Hasan
Counselor, ICDDRB
Phone: 01538-270288

Salma M S
Psycho-social Counselor, RTMI
Phone: 01860444904

Fatema Shahrin
Trainee Counselling Psychologist ( DMCH)
E-mail: zummi093824@gmail.com

Wahidul Arif.
Trainee Counselling Psychologist,
Intern Salimullah Medical College Hospital
Phone: 01737902520

Md.Khairul Akanda Nijhum
Part-time Counselor at TSC
University of Dhaka
Phone:01688701606 ,01704966020

Ashiq Al Nahian
Trainee Counselling Psychologist at TSC, Dhaka University.
Phone:01614682424

Shariful Islam
Trainee Counselling Psychologist ( DMCH)
01768955971

Rukiya akter
Trainee School Psychologist
phone : 01307303393

Sharmin Parsa
Trainee Counselling Psychologist(Audiology Bangladesh)
E-mail: sharminparsaparsa@gmail.com
Phone: 01773222144
Md. Shahidul Islam
M.Sc industrial Psychology
Phone: 01751514536

Md. Meraz Hossain
Intern Counselor at Monosheba BD
M.Sc in Clinical & Counselling Psychology
Phone: 01521318125

mindb470@gmail.com

 

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় হৃদরোগীরা মেনে চলুন কিছু পরামর্শ

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় হৃদরোগীরা মেনে চলুন কিছু পরামর্শ


ডা. মারুফ রায়হান খান


করোনা’ শব্দটির চেয়ে বড় আতঙ্কের নাম পৃথিবীতে এখন আর কিছু নেই। বিশ্ব এমন মারাত্মক মহামারী খুব কমই দেখেছে৷ ইতিমধ্যে লাখ ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। আমাদের দেশে হু হু করে বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। কোভিড-১৯ রোগটি যে কারোরই হতে পারে। তবে কিছু কিছু রোগীদের আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি রয়েই যায় এবং আক্রান্ত হলে জটিলতার আশংকা বেশি থাকে। যেমন :

১. হৃদরোগ

২. বয়স ৭০ বছরের বেশি

৩. উচ্চ রক্তচাপ

৪. গর্ভকালীন সময়

৫. ডায়াবেটিস

৬. ফুসফুসের রোগ

৭. দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ

৮. স্ট্রোক

৯. ধূমপায়ী

চীনের গবেষণায় প্রমাণিত কোভিড-১৯-এর সঙ্গে যাদের আগে থেকে হার্টের রোগ ছিল তাদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। তবে আশার কথা হচ্ছে বেশিরভাগ মানুষই করোনা রোগ থেকে সুস্থ হয়েই বাড়ি ফেরেন। আতঙ্কিত না হয়ে এ সময়ে হৃদরোগীরা কিছু পরামর্শ মেনে চললে সুফল পাবেন।

১. অবশ্যই ঘরে থাকুন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাসার বাইরে যাবেন না। ওষুধপত্র বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজনে অন্যদের সহায়তা নিন। যদি একান্তই বাইরে বের হতে হয় তবে অবশ্যই ভালোমানের মাস্ক পরে নিন।

২. চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই নতুন করে হৃদরোগের উপসর্গ যেমন : তীব্র বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় জাতীয় সমস্যা না হলে চিকিৎসকের কাছে এসময়ে না যাওয়াই শ্রেয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে ফোনে/অনলাইনে পরামর্শ নিন। বেশিরভাগ চিকিৎসকই এখন তাদের ফোন নাম্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

৩. অন্তত ২০-৩০ সেকেণ্ড সময় নিয়ে হাত ধৌত করুন। এমনভাবে ধৌত করুন যেন সাবানের ফেনা দেখা যায়। প্রথমেই পানি দিয়ে হাত ভিজিয়ে নিন এবং হাতে সাবান মেখে নিন। দুহাতের তালু ভালোভাবে ঘষুন। প্রতিটি আঙুল ও দুআঙুলের মধ্যবর্তী স্থান ভালোভাবে ঘষুন। নখ ও হাতের তালু ভালোভাবে ঘষুন। হাতের পৃষ্ঠদেশ ও দুআঙুলের মধ্যবর্তী স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর টিস্যু বা পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে ফেলুন।

৪. যেকোনো গণজমায়েত অবশ্যই পরিহার করুন। করমর্দন বা কোলাকুলি পরিহার করুন।

৫. চোখে, মুখে, নাকে যতো কম সম্ভব স্পর্শ করুন।

৬. হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা রুমাল চেপে ধরুন। নইলে কনুই দিয়ে চেপে ধরুন।

৭. হৃদরোগের চিকিৎসা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়। ওষুধ নিয়মিত না খেলে বা বন্ধ করে দিলে সমূহ বিপদের আশঙ্কা থাকে। তাই পূর্বের ওষুধগুলো চালিয়ে যান। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। তবে যদি কোনো রক্তপাত দেখা দেয় তখন এসপিরিন/ওয়ারফেরিন জাতীয় ওষুধ বন্ধ রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৮. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। সেটা কাঁচা লবণ হোক বা ভাজা লবণ। চিনিযুক্ত খাবার, ডিমের কুসুম, কলিজা, মাছের ডিম, গরু-খাসির চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগির চামড়া, হাড়ের মজ্জা, ঘি, ডালডা, মাখন, নারকেল জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। যেসব শক্ত খাবার খেতে বেশি কষ্ট হয় সেসব খাবার না খাওয়াই ভালো।

৯. বেশি বেশি ফলমূল, শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছ, মাছের তেল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।

১০. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান। যেমন : লেবু, কমলা, জাম্বুরা, আমলকি, পেয়ারা ইত্যাদি।

১১. প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাচলা/ব্যায়াম করতে হবে। প্রয়োজনে ছাদে হাঁটুন৷ বাসায় ব্যায়ামের জন্য একটা জায়গা আলাদা করে নেয়া যেতে পারে। তবে যতোটা হাঁটলে/ব্যায়াম করলে বুকে ব্যথা শুরু হয়ে যায় অতোটা হাঁটা/ব্যায়াম করা যাবে না। এ বিষয়টি সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে।

১২. ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এটি হৃদপিণ্ডের অত্যধিক ক্ষতি যেমন করে সেই সাথে করোনার ঝুঁকিও অনেক বাড়িয়ে দেয়।

১৩. মদ্যপান করা যাবে না।

১৪. বাসায় নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন। ডায়াবেটিস থাকলে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত চেক করুন এবং নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

১৫. শেষে যে পরামর্শটি না দিলেই নয়, যতো কম সম্ভব টেলিভিশনে/পত্রিকায়/সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনার নিউজ আপডেট দেখুন। বেশি বেশি এসব সংবাদ শুনলে অতিরিক্ত উত্তেজনা এবং আতঙ্ক তৈরি হতে পারে। যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই সারাক্ষণ সংবাদ না দেখে সৃষ্টিশীল কাজে বা পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করুন। গড়ে তুলতে পারেন নতুন কোনো ভালো অভ্যেস। প্রার্থনা বা মেডিটেশানে সময় দেওয়া যেতে পারে।

এই প্রতিকূল সময়ে ভালো থাকুক প্রতিটি হৃদরোগী। ভালো থাকুক প্রতিটি মানুষ।

লেখক: ডা. মারুফ রায়হান খান

হৃদরোগ বিষয়ে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ

মুল সুত্রঃ যুগান্তর।

 

করোনায় ঘরবন্দি জীবনে বয়সন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীরা কি করবে?

করোনা-১৯ ঘরবন্দি জীবনে বয়সন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীরা কি করবে?


তানিয়া ইসলাম ইতি


আসলেই কি আমরা ঘরবন্দি থাকতে পারছি? উত্তর জানা নেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি। আমরা যারা ঘরে থাকছি, আমাদের মধ্যে পাঁচ শ্রেণীর মানুষ আছে। যেমনঃ

১. শিশু , ২. কিশোর, ৩. যুবক , ৪. মধ্যবয়স্ক এবং ৫. বয়স্ক ।

এদের মধ্যে আবার দুই ভাগ আছে। ১। ছেলে এবং ২। মেয়ে।

জাতিগত ভাবে আমাদের দেশের মেয়েরা ঘরের বাহিরে কম যায়। ঘরের কাজকর্ম করে দিন অতিবাহিত করে। তাদের তেমন কোন সমস্যা হবার কথা না ঘরে থাকাটা। কিন্তু বর্তমানে অনেক মেয়ে চাকরি করছে অথবা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আছে। বাহিরের সব কাজ এখন বন্ধ , অফিস বন্ধ , অনেকেই অফিসের কাজ বাসায় বসে করতে হচ্ছে। যারা অফিস এর কাজ বাসায় করছেন, তাদের ছেলে মেয়ে স্বামী সংসার যাবতীয় ঘরের কাজ করে অফিসের কাজ করে দিন রাত কিভাবে যাচ্ছে তারা তা বুঝতে পারছেনা।

এই গেল একশ্রেণীর কথা….।

আরেক শ্রেণী যাদেরকে আমরা ছেলে বা পুরুষ বলে থাকি।
জাতিগতভাবে তারা ছোটবেলা থেকেই ঘরের বাইরে থাকে বেশিরভাগ সময়। দিনে রাতে যেকোনো সময় তারা বাড়ির বাইরে যেতে পারে, আসতে পারে। তাদের তেমন কোন সমস্যা হয় না। এই দিক থেকে ছেলেদের ঘরবন্দি থাকাটা একটু কষ্টকর। তাদেরকে ও মেয়েদের মত অফিসের কাজ গুলো বাসায় করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ অফিস ভার্চুয়ালি খোলা। তবে এখন দিন পাল্টেছে, সময়ের সাথে সাথে ছেলেরাও বাসায় অনেক ছোট ছোট কাজ করে যেমন: ঘর মোছা ,ঘর ঝাড়ু দেয়া, রান্না করা, সন্তানকে সময় দেয়া, ছোট ভাইবোনদের সময় দেয়া। এই কাজগুলো গ্রাম কিংবা শহরে সব জায়গায় ছেলেদেরকে এখন করতে দেখা যায়। ছেলেদের ঘরবন্দি থাকাটা একটু কষ্ট হলেও খারাপ যাচ্ছে না দিন পার হয়ে যাচ্ছে।

আমরা তো সবাই যে যার মতো করে ঘরেবন্দি জীবন পার করছি ।এসবের মধ্যে একটা শ্রেণি আছে তাদের কথা কি আমরা ভেবে দেখেছি !!

তারা কিভাবে দিন পার করছে। আমরা কি তাদের মানসিক অবস্থার কথা চিন্তা করেছি। শারীরিক বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে যে শ্রেণীটি নিজেদেরকে শিশুও বলতে পারছেনা যুবকও বলতে পারছেনা।

কোনো ড্রেস পড়লে বারংবার আয়নার দিকে তাকায় তাকে মোটা লাগছে, বেশি বেশি শুকনো লাগছে কেমন লাগছে ? বেশি খাবার খেতে চায় না মোটা হয়ে যাবে ভেবে বা অতিমাত্রায় খাবার খায়। যারা বাবা মা পরিবারের সাথে থেকেও নিজেকে একা মনে করে। নিজের ভেতরের মানুষটাকে খোঁজার চেষ্টা করে, সে কে ?

তার কি জানে? কেন হচ্ছে তাদের শরীর ও মনে এরকম পরিবর্তন হচ্ছে? যারা নিজেদেরকে খুব অসহায় অনুভব করে। যারা মানুষের সাথে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে তাদের এই শারীরিক পরিবর্তনের কারণে। এ সময় যাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু তার সমবয়সীরা। যাদের সারাদিন কাটতো বিভিন্ন কাজ কর্মের মধ্যে, সুন্দর একটা রুটিন লাইফ এর মধ্যে দিয়ে ।

হুম আমি তাদের কথাই বলছি যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৬ এর মধ্যে আমি সেই কিশোর-কিশোরীদের কথাই বলছি। আমি বয়ঃসন্ধিকালের তরুন-তরুনীদের কথাই বলছি।

আমার জানতে খুব ইচ্ছে করছে তারা কিভাবে ঘরবন্দি জীবন পার করছে? তারা কি তাদের হাতের মোবাইল বা বাবা-মামার মোবাইল টাকে সবচেয়ে আপন বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়েছে!! তখন কি তাদের সারাটা দিন কাটছে মোবাইলের মধ্যে। তারা কি মানসিকভাবে ভালো আছে ? আমরা তো আমাদের ভালোলাগা-মন্দলাগা প্রকাশ করতে পারছি। আবার শিশুরা যেমন বাবা মায়ের সাথে বলতে পারছে। হাসবেন্ড ওয়াইফ কে বলতে পারছে। ভালো না লাগার কথা গুলো। এই বয়সে ছেলে মেয়েগুলো তারা কি তাদের বাবা-মাকে বলতে পারছে তাদের ঘরে থাকতে খারাপ লাগছে। হয়তো বা হ্যাঁ হয়তোবা না । আমরা যারা তাদের আশেপাশে আছি। যারা বাবা- মা , ভাই- বোন আছি আমরা তাদেরকে এই কিশোর-কিশোরীদেরকে। এ অবস্থায় আমরা মানসিকভাবে সাহায্য করতে পারি।

মানসিক শক্তি দিয়ে তাদেরকে মোবাইলের মধ্যে ঠেলে না দিয়ে বাস্তবের সাথে সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করতে পারি

কিছু ভাবনা শেয়ার করলামঃ

১. তারা যখন পড়তে বসে তাদের সাথে বসে একই রুমে অফিসের কাজগুলো করতে পারি।

২. মোবাইলের মাধ্যমেও অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ করা যায়। সেই কাজগুলো করতে উৎসাহ দেয়া। যেমনঃ ভিডিও এডিটিং। অথবা সচেতন মুলক ভিডিও তৈরি করতে।

৩. একই সাথে বসে ভালো ভালো মুভি দেখতে পারি।

৪. বাসার ছোট ছোট কাজে তাদেরকে ইনভলভ করা। সেটা হতে পারে রান্নার কাজ, সবজি কাটা হতে পারে, কাজ করার পরে অবশ্যই তাদেরকে খুব বেশি প্রশংসা করা।

৫. ধর্মীয় কাজে বাসার সবার সাথে তাদেরকেও করতে উৎসাহ দেয়া ।

৬. ছোট ছোট শারীরিক ব্যায়াম প্রতিদিন সবাই মিলে একসাথে তাদেরকে নিয়ে করা।

৮. ছোট ভাই বোনদের সাহায্য করতে তাদেরকে উৎসাহ দেয়া

৯. তাদেরকে হুকুম না দিয়ে একটু অন্য ভাবে দরদ দিয়ে বলে কাজে ইনভলভ করা ।

সর্বোপরি বলব ঘরে থাকি, নিজে বাঁচি, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাঁচি। সবাই সবার প্রতি যত্নশীল হই। পরিবারকে নিয়ে একসাথে থাকার এরকম সময় হয়ত আর পাবেন না।

 

শিশুর আত্মহত্যা ‘খাবারের অভাবে’

শিশুর আত্মহত্যা ‘খাবারের অভাবে’


নারী সংবাদ


সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকায় আফরোজা খাতুন (১০) নামে এক শিশু আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার বিকেলে গলায় ফাঁস নিয়ে নিজ বাড়িতে সে আত্মহত্যা করে। স্বজনরা দাবি করেছেন, কয়েকদিন ধরে অনাহারে পরিবারটি। খাবারের জন্য কান্নাকাটি করায় পিতা থমক দেন আফরোজাকে। তারপরই ঘটে আত্মহত্যার ঘটনা। খাবারের অভাবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা এলাকায় প্রতিক্রিয়া তৈরী করেছে।

সূত্র জানায়, আফরোজার পিতা আলম শেখ পেশায় তাঁত শ্রমিক। থাকেন কামারপাড়া ওয়াপদা বাঁধে। দুস্থ এ পরিবারটির সন্তান আফরোজা আত্মহত্যা করেছে মূলত ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে। শুক্রবার বিকেলে সে কয়েক দফা খাবার চেয়েছে বাবার কাছে। কিন্তু খাবারের বদলে ধমক শুনতে হয়েছে শিশুকে।

স্বজনরা দাবি করেছেন, তাঁত শ্রমিক আলম শেখের কারখানা বন্ধ দশদিন। জমা টাকায় ৪/৫দিন সংসার চললেও গত কয়েকদিন কার্যত অনাহারে ছিলেন শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা। এ সময়ে আলম পাননি সরকারি অথবা বেসরকারি সহায়তা। কেউই খোঁজ নেননি। আফরোজার মৃত্যুর পর অনেকে এসেছেন বাড়িতে। পৌর মেয়র শনিবার খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। ওয়াপদা বাঁধে প্রায় ৫ ‘শ পরিবারের বাস।  জন প্রতিনিধিরা তাদের অনেকের আইডি কার্ড নিয়ে গেলেও ত্রাণ সহায়তা মেলেনি।

বাবা আলম শেখ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রশাসন কড়াকড়ি করছে। তাই দশদিন ধরে কাজ করতে পারছিনা। ঘরেই শুয়ে বসে দিন কাটাচ্ছি। হাতে নগদ টাকা নাই,তাই চালডাল কিনতে পারিনি। ঘরে খাবার নেই বলে মেয়ে কান্নাকাটি করছিল। আমি তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে।’

বেলকুচি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূর-এ-আলম বলেন,’শিশুর পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’

বেলকুচি পৌরসভার মেয়র আশানূর বিশ্বাস বলেন, ‘কর্মহীন দুস্থ মানুষের জন্য সরকারি সাহায্য অপর্যাপ্ত। সে কারণে সকল মানুষকে একসাথে ত্রাণ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। খাদ্য সহায়তা আরো বাড়ানো দরকার।’

বেলকুচির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান বলেন, ‘প্রথম দফায় পরিবারটিকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও কেন এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবার আবারও পরিবারটিকে ১০ কেজি চাল, ডাল, তেল,পেঁয়াজ, লবণ ও আলু দেওয়া হয়েছে।’

সুত্রঃ কালের কন্ঠ।

 

মানুষ কেন মানুষকে ছেড়ে যায়? যায়ই? কেন?

মানুষ কেন মানুষকে ছেড়ে যায়? যায়ই? কেন?


সানজিদা সিদ্দিকী কথা


আমি হয়তোবা তখন সতেরো বছরের হবো। স্বপ্ন নিয়ে অস্থির হয়ে যাবো এমন বয়স আমার না।কিন্তু একটা অদ্ভুত স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম,ভেতরটা ওলটপালট করে দেবার মত স্বপ্ন। আমি একটা মসজিদে বসে, হঠাত কোথা থেকে একটা ছোট মেয়ে হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে ছুটে আসলো। এইটা কোন অদ্ভুত ব্যাপার না তবে যে প্রশ্নটা করেছিলো সেটাতে আমি হকচকিয়ে গেলাম।
“মানুষ কেন মানুষকে ছেড়ে যায়? ছেড়ে যায়ই? কেন? কেন?

প্রশ্নটা অবশ্যই খুব ব্যক্তিগত ছিল কিন্তু সাথে সাথেই আমি বুঝে গেলাম, এই প্রশ্নের জন্য আমিই কেন আসলে।
সত্যি বলতে কি, আমি মানুষটা এমন যে সবকিছুতেই বড় বেশি মাত্রায় জড়িয়ে যায়।

সেই ছোটবেলা থেকেই আমি কেমন জানি। প্রিস্কুলে আমার সাথের বাচ্চাদের বাবা মা যখন ওদের স্কুলে দিয়ে যেতো কিভাবে জানি ওরা সহজভাবেই নিতো। নিতে পারতাম না আমি। আমি কান্নাকাটি করে হুলুস্থুল বাধিয়ে ফেলতাম, কি বেইজ্জতি ব্যাপার।কিন্তু আমার কান্না থামায় সাধ্য কার?
বড় হতে হতেই আরেক আলামত শুরু করলাম। আমার আশেপাশের যা কিছু আছে সবকিছুর প্রতিই প্রবল মায়া আমার। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে, আমি ভালো বন্ধু খুঁজে বেড়াতাম আর মনে মনে তার কাছেই সুখের চাবিটা দিয়ে রাখতাম। বড় হতে হতে বন্ধুদের সাথে কিছু হলেই দুঃখের পশরা সাজিয়ে বসে যেতাম, ভাবভঙ্গী এমন আমার থেকে দুঃখি মানুষ জগতসংসারে নাই। সুন্দর জায়গা, সুন্দর ঘটনা, পুরাতন ছবি, প্রিয় সময়গুলো আর বন্ধুরা — সব কিছুর সাথে মনটাকে একেবারে সুপারগ্লুর মত জুড়ে রেখে দিতাম। এইসব কিছুর বাইরে নিজেকে কল্পনা করতেও আমার বুক কাঁপতে থাকতো। নিজেকে নিঃস্ব মনে হতো।
একটু ওদিক হলে যেই অনুভূতিটা আমার হতো সেটাকে সাধারণ দুঃখ কিংবা হতাশা ঠিক বলা চলে না, ব্যাপারটা আমাকে একেবারে ভেতরে ভেতরে গ্রাস করে ফেলতো খেয়ে ফেলতো। আর একেকটা দুঃখ থেকে আমি কখনো পুরোপুরি উঠে দাঁড়াতে পেরেছিলাম এরকম আমার মনে পড়ে না। অনেকটা যে ফুলদানীটা আমি টেবলের কোনায় রেখেছিলাম, একটু টোকা লাগলো আর ভেঙে খানখান, ভাঙা ফুলদানিটা যেমন কখনোই ঠিক করে জোড়া লাগে নি, তেমন।

দোষটা কাচের ফুলদানির ও না, আবার পড়ে ভেঙে গিয়েছিলো সেটাতেও না বরং আমি কাচের মত একটা জিনিসকে টেবলের একেবারের কোনায় রেখে দিয়েছিলাম।

আমি আমার মনের মত একটা স্পর্শকাতর জিনিসের সাথেই সবচেয়ে বড় অন্যায়টা করেছিলাম। আমি আমার জীবনে আসা প্রত্যেকটা মানুষকে, প্রত্যেকটা সম্পর্ককে এমন এক দানবীয় ক্ষমতা দিয়ে রেখেছিলাম যে এরা চাইলে আমাকে হাসাতে পারে, চাইলে কাঁদাতে পারে আর চাইলে একেবারে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারে। আমি সবকিছুর উপর নিজেকে নির্ভরশীল করে নিজেকে এতটাই অপমান করতাম যে, হতাশা, নিরাশা, একের পর এক নিজেকে চূর্ণবিচূর্ণ করবার জন্য সব কিছুকে কার্ড হাতে দাওয়াত দিয়ে আসতাম।

আমার এইসব কষ্টের কারন হিসেবে অন্য মানুষকে দোষারোপ করা অনেকটা ফুলদানি ভেঙে ফেলবার জন্য মাধ্যাকর্ষণকেই শাপশাপান্ত করবার মত হাস্যকর। আমরা কখনই শুকনা পাটখড়ি কে অভিযুক্ত করতে পারি না, এতে ভর করে পাহাড় বাইতে গিয়ে কেন ভেঙে পড়েছে, এই বলে!

আমাদের ওজন তো একজন ই নেয়ার যোগ্য। আমার রব।

…………নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।

(-Sura Al-Baqarah, Ayah 256)

এই নিরীহ আয়াতটাতে একটা কঠিন শিক্ষা আছে। পৃথিবীতে একটি মাত্র হাতই আছে যা কখনো ছেড়ে যাবে না। একটি মাত্র জায়গাই আছে ভরসা করবার মত। নিজের আত্মসম্মান, আনন্দ, নিরাপত্তা শুধু এই একটা সম্পর্কেই পাওয়া যাবে। আর কোথাও না, একেবারে কোথাওই না।

যদিও পৃথিবী এমন এক জায়গা যেখানে মানুষ এইসবগুলো নিজের রব বাদে আর সবখানে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ক্যারিয়ার, টাকা, ক্ষমতাতে কেউ খুঁজছে।আবার আমার মত কিছু উচ্চপর্যায়ের গাধা আরো ভয়ংকর জিনিসে সুখটাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিসে?
সম্পর্কে।একে অপরের সাথে সম্পর্কে।
এলিজাবেথ গিলবার্ট তার বইতে খাবার,প্রার্থনা, ভালোবাসাতে আনন্দ খুঁজবার কথা বলেছেন, বিশ্ব চষে বেড়ানোর কথা বলেছেন পূর্নতা পেতে। উনি বলেছেন ভালোবাসা, সম্পর্ক, ধ্যান কিংবা খাবারে তার পূর্নতা খুঁজতে খুঁজতে সফলভাবে অসফল হবার গল্প।

আর ঠিক এই কাজটাই আমি করেছি জীবনভর। ভুলভাল জিনিসে মধ্যে নিজের ভেতরকার শুন্যতা পূরন করতে গিয়ে আরো বেশি শূন্যতায় হারিয়ে গেছি বারবার।
এতে কোন সন্দেহই নাই, ছোট্ট মেয়েটা যে প্রশ্নটা আমাকে স্বপ্নে করেছিল সেটার উৎপত্তি ক্ষতি থেকে, হতাশা থেকে, হারানোর বেদনা থেকে, কোন কিছু প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে খুঁজতে গিয়ে শুন্য হাতে ফেরত আসার গল্প থেকে।
ব্যাপারটা ঠিক তখনই ঘটে যখন মানুষ খালি হাতে ক্রংকিটের দেয়াল খুঁড়ে কিছু বের করতে যায়।

সে তখন শুধু খালি হাতেই ফেরত আসে না বরং রক্তাক্ত, ভাঙা হাতে ফেরত আসে। এগুলো আমি শুধু পড়ে আর শুনে শিখে ফেলেছি এমন ভাববার কোন কারন নেই। খুব কষ্ট পেয়ে,খুব চেষ্টা করে, বারেবারে, এরপরেই বুঝতে পেরেছি।

আর তাই ছোট মেয়েটার প্রশ্নটা আমার নিজের প্রতি ছুড়ে দেয়া নিজেরই প্রশ্ন ছিল।

প্রশ্নটা ছিলো আসলে দুনিয়ার ধরন নিয়েই। দৌড়াতে থাকা সময়ের সাথে অযথা নৈকট্য নিয়ে। যেই দুনিয়ার মানুষগুলো ছেড়ে যেতে পারে, মরে যেতে পারে তাদেরই সাথে কেন নিজেকে এই শক্তভাবে জুড়ে দেয়া? এটা নিজের গর্ত নিজে খোঁড়ারই নামান্তর।

অথচ এটা খুবই প্রকৃতি বিরুদ্ধাচরণ। মানুষের গড়নই এমন, আমরা ভালোবাসা খুঁজতে থাকি, একেবারে নিখুঁত কিছুর সন্ধানে থাকি যেটা কিনা চিরস্থায়ী ই না। হাস্যকর। আমরা স্থায়ী কিছু চাই। কেন চাই?

কারন আমাদের এই দুনিয়ার জন্যই প্রস্তুত করা হয় নি। আমাদের বাড়িগুলো তো জান্নাতে রয়ে গেছে, যে বাড়ি চিরস্থায়ী আর নিখুঁত। তাই স্থায়ী কিছুর আকাঙ্ক্ষা আমাদের ভেতর মজ্জাগত ভাবে রয়ে গেছে।

বিপত্তিটা বাধে যখন সেই জিনিসটা আমরা এইখানে খুঁজতে যাই। আমরা তৈরি করে ফেলি যৌবন ধরে রাখবার প্রসাধনী, প্লাস্টিক সার্জারি করি। কিন্তু ফলাফল?

শুধুমাত্র শুন্য।আর কিছুই না।

তাই আমরা যদি এই দুনিয়াকে খুব ভালোবেসে ফেলি এটা আমাদের কষ্ট ছাড়া আর কিছুই দিবে না। কিচ্ছু না।

কারন দুনিয়ার সংগা….. নশ্বরতা। মরীচিকা।

কেউ যদি আগুন থেকে পানি বের করবার চেষ্টা করে পুড়ে ছাড়খাড় হওয়া ছাড়া কি থাকবে তার জীবনে? কিচ্ছু না।

যখনই দুনিয়া থেকে স্থায়ী আর নিখুঁত কিছু খোঁজা বন্ধ করতে পারবো তখনই দুনিয়াও আমাদের কষ্ট দেয়া বন্ধ করে দিবে।

আরো একটা জিনিস এসবের বাইরেও মনে রাখা খুব জরুরী, কারন ছাড়া কিচ্ছু ঘটে না এখানে। ভাঙাচোরা হৃদয়ও কারনেই ভাঙে। ক্লেশে জর্জরিতা মন আর তার ভেতরে ফুটতে থাকা ব্যথাগুলো শিক্ষা আর সাথে আরেকটা জিনিস। আরেকটা জিনিসের চিহ্ন। এটা ইংগিত করে কিছু তো গড়বড় আছে! কিছু তো বদলানো দরকার। অনেকটা আগুনে জ্বলতে থাকা হাত জানান দেয়, হাত সরাও বাছা, পুড়ে যাচ্ছে।

এই কষ্টগুলো আমরা যে দুনিয়ার সাথে সেঁটে আছি সেটা বোঝায়, এই কষ্ট টা সেঁটে থাকা আমাদের জোর করে উপড়ে ফেলার চিহ্ন। ভালোবাসার মানুষটা যখন বারেবারে কষ্ট দিয়ে রক্তাক্ত করে, তখন একপর্যায়ে আমরা সরে যাই। দুনিয়াও রবের প্রিয় মানুষগুলোকে কষ্ট দিয়ে দিয়ে নিজের থাকে সজোরে ছুড়ে ফেলে দেয়।

#ভাবানুবাদ

#Sanjida_Kotha

#Reclaim_Your_Heart_by_YasminMogahed

#repost

 

করোনার এই মহামারীর সময় শিশুদের জন্য কি করবেন পর্ব-২

করোনার এই মহামারীর সময় শিশুদের জন্য কি করবেন পর্ব-২


স্বাস্থ্যকথা


শিশুদেরকে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর গল্প বলুন যেমন এখন কোন বিজ্ঞানী করোনার ঔষধ আবিষ্কার করতো তাহলে পরিস্থিতি কি রকম হতো? আমরা কিভাবে বিজ্ঞানী হতে পারি। চারপাশে ডাক্তাররা কিভাবে মানুষের সেবা করছে?

আসুন আরো কিছু বিষয় খেয়াল করিঃ

সতর্ক থাকুন
সর্তক থাকুন। করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনি ঘরে অবস্থান করুন এবং শিশুদের প্রতিও সর্তকা অবলম্বন করুন। অতিরিক্ত দায়িত্বশীল হতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মিডিয়া আসক্তি বন্ধ করুন। শিশুদের ইউটিউব এবং অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহার করাও কমিয়ে আনুন। এছাড়া তাদেরকে টিভি ও কম্পিউটারে গেম খেলা থেকে সময় কমিয়ে দিন। পাশাপাশি কেন সময় কমিয়ে নিয়ে আসছেন তা বুঝিয়ে বলুন। এই সময়টি বাচ্চাদের বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত রাখুন। আপনিও বাচ্চাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা অংশ নিন। তাদেরকে প্রতিদিন কয়েকবার ২০ সেকেন্ড করে হাত ধোয়ানো। নিয়মিত ভাবে নখ এবং তাদের চুলগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। আপনি বাসায় থাকাকালীন এই মূল্যবান সময়গুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনার সন্তানকে আর্দশ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।

সঠিক তথ্য দিয়ে বুঝিয়ে বলুন
শিশুদের কোন কাজ হুট করে চাপিয়ে না দিয়ে বরং কেন কাজটি করবে তা সঠিক তথ্য এবং সুত্র ধরে ধরে বুঝিয়ে বলুন। উদাহরণসরূপঃ সত্য কথা বলা। কেন সত্য কথা বলতে হবে? সত্য কথা না বললে কি কি ক্ষতি হয়? আবার আমরা এখন কেন বাসা থেকে হুটহাট ঘুরতে বের হতে পারব না। করোনা কি? কেন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়?

অভ্যাস গড়ে তুলুন
অভ্যাস গড়ে তোলার সবচেয়ে সুন্দর সুযোগ। বর্তমানে আপনি বাসায় আছেন আপনার ছোট্ট শিশুকে, বই পড়া, সালাম দেওয়া, বড়দের সাথে কথা বলা, ছোটদের স্নেহ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। করোনা পরিস্থিতির কারণে, শিশুদেরকে বারবার হাত ধোয়া। হাঁচি ও কাশির সময় রুমাল বা কনুই দিয়ে মুখ ঢাকা শিখানো। তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা কিভাবে দিনের পর দিন কষ্ট করছেন। তারা সকালে উঠে কিভাবে আমাদের চারপাশে পরিচ্ছন্ন রাখছেন। তাদের সাথে আমাদের আচরণ শিখান। সুন্দরভাবে সবার সাথে কথা বলা বিষয়গুলো ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিনত করুন।

রুটিন মেনে চলুন
একটা সুন্দর রুটিন তৈরি করে ফেলুন। শিশুদের জন্য প্রতিটি সময়ই যেহেতু শিক্ষণীয়। তাই এই সময়টায় শিশুদের রুটিনের আওতায় নিয়ে আসুন। কখন ঘুম থেকে উঠবে। কখন নাস্তা করবে। পড়তে বসা, ছোট ছোট কিছু শারীরিক ব্যায়াম করানো যেতে পারে। শিশুরা খেলতে খেলতে অনেক কিছু শিখতে পারে তাই আপনিও খেলাধুলায় অংশ নিতে পারেন।

সুত্রঃ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট মেন্টাল হেলথ (BACAM)

 

ডাক্তারদের এসব কি কাহিনী !!!

ডাক্তারদের এসব কি কাহিনী !!!


ডা. মারুফ রায়হান খান


১. “আমার প্রতিবন্ধী বড় ছেলেটা রাতে আমার সাথে ঘুমাতো। এখন ঘুমায় না তিন সপ্তাহ হলো। আমি বাইরে কাজ করি, ভয়ে ওকে রাতে কাছে রাখি না। ওর ছবিটা আমার কাভার ছবি, সেটা দেখি সারাদিন।

মেয়েটা ঘরে ঢুকলে দৌড়িয়ে চুমু খেতো। আসতে দিই না।
আমি শক্ত মানুষ তারপরও কালকে কাঁদলাম অনেকক্ষণ।”

– জনৈক চিকিৎসক বাবা।

২. “বাবা মারা যান গত বছর। এখন আমার দোয়া চাওয়ার ভান্ডার আমার মমতাময়ী মা। মা-এর কাছে যাব বলে ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সবার ছুটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। মা-কে নিজের কাছেও নিয়ে আসতে পারছিনা। সারাদিন হাসপাতালে নানা রকমের রোগী দেখা লাগে। মা বয়স্ক মানুষ বাসায় আবার আমার থেকে যদি মায়ের কোন ক্ষতি হয়, তাই। জানি না মায়ের সাথে আবার কবে দেখা হবে।

– জনৈক চিকিৎসক সন্তান।

৩. “দরজা খুলে যোয়ানা যখন দৌড়ে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়তে নিলো তখন চারপাশ থেকে এক সাথে সবাই বলে উঠলো, “এটা করা যাবে না,যোয়ানা।”
এমনকি তার দৌড় দেখে আমি নিজেও ভয়ে কয়েক পা পিছিয়ে গেলাম।
যোয়ানা তখন আমাকে বলে উঠলো,

– কোথা থেকে আসছো, আব্বু?
– হসপিটাল থেকে আসছি, বাবা।
– হসপিটালে কি করছো, ইনজিকশন দিছো?
– হুম ইনজিকশন দিছি।
– তুমি আমার সাথে ঘুমতে আসছো আব্বু?
– না বাবা।আমি থাকবো না।

মেয়েটা বার বার তখন মন খারাপ করে আমাকে বলছিলো, “আমাকে আদর করো, এখানে থাকে যাও।” এমনকি যখন চলে আসার জন্য বের হয়ে যাচ্ছিলাম তখন এই একই কথা বলতে বলতে ও গেইট পর্যন্ত চলে আসলো।

এমনকি যখন লিফটেও উঠছিলাম তখনও ও দরজা ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। আর যেনো ভাবছিল কীভাবে তার পাষণ্ড বাবা ছোট্ট মনটা ভেঙে লিফটের দরজার ওপাশে হারিয়ে যায়।

শুধু একটা কথাই মনে হলো, ডাক্তার না হলে হয়তো এই খারাপ সময়ে ছোট্ট যোয়ানার ছোট্ট মনটা আমার ভাঙা লাগতো না।
অন্য সবার মত বাসায় বসে বসে ডাক্তারকে গাল মন্দ করে ফেসবুক গরম করে ফেলা যেতো।”

– জনৈক চিকিৎসক বাবা।

৪. “আমার মায়ের মুখে প্রথমবারের মতো শুনলাম যে তোকে ডাক্তারি পড়ানো ঠিক হয়নি। তাহলে তুইও আমাদের সাথে আজ ঘরে থাকতে পারতি।”

– জনৈক চিকিৎসক সন্তান।

একজন করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক আইসিইউতে।

 

করোনার পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য কি করবেন পর্ব-১

করোনার পরিস্থিতিতে শিশুদের জন্য কি করবেন পর্ব-১


স্বাস্থ্যকথা


শিশুদের পরিচর্চার প্রয়োজন, যে কোন দূর্যোগ বা মহামারীর মতো খারাপ সময়। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি, এর ব্যতিক্রম নয়। এ সময় বয়স্কদের পাশাপাশি ছোটদেরও প্রয়োজন বাড়তি খেয়াল। শিশুদের সঠিক তথ্য বুঝিয়ে বলার পাশাপাশি তাদের অবসর এই সময়কে ভালো কাজে অতিবাহিত করা শিখানো। শিশুদের আদব-কায়দা শেখানো।

যে বিষয়গুলোর উপর আমরা গুরুত্ব দিব-

১. অভয় দেওয়া
করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও আতঙ্কিত হয়ে যাচ্ছে। তাদের অভয় দিন। সঠিক তথ্য বাচ্চাদেরকে, বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী বুঝিয়ে বলুন। তাদেরকে বুঝিয়ে আরো বলতে পারেন যে, বাচ্চাদের জন্য করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামুলক কম। তবে বয়স্ক আত্মীয়রা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

২. শিশুর দায়িত্ব
শিশুদেরকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন। কাজ করার সুযোগ দিন। যাতে করে তারা বুঝতে পারে অন্যদের সেবা করার গুরুত্ব। বয়স্ক আত্মীয়-স্বজনদের ফোন করে খোঁজ-খবর নেওয়ার ব্যাপারে শিশুদেরকে আগ্রহী করে তুলুন। ঘরের ছোটখাট কাজে শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন। তাদের কাছে পরামর্শ চান এবং তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা দিন। এটায় মুলত শিশুর ক্ষমতায়ন।

৩. শিশুদেরকে ব্যস্ত রাখুন
স্কুলে যাওয়া বাচ্চাও যেহেতু এই সময় বাসায় অবস্থান করছে তাই বাচ্চাদের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখুন। তাদেরকে ছোট ছোট কাজ করতে উৎসাহ দিন। বিভিন্ন জিনিস বানানো শিখান। আপনিও তাদের সাথে কাজ করুন। খেলুন, রান্নাতে তাদের সাথে নিন। ঘর গুছানো, ঘর পরিষ্কার রাখার বিষয়টিও তাদের সাথে করতে পারেন। বাচ্চাদেরকে ছোট ছোট কাজ দিন। তাদের সহযোগিতা নিন। গাছের যত্ন নিতে তাদের সহযোগিতা নিন। এবং তাদের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছোট করে গল্প করুন।

. নিজে শান্ত থাকুন
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখুন। নিজের যত্ন নিন। মনে রাখবেন, শিশু কিন্তু আপনান আচরণ অনুকরণ করছে।

৫. শিশুদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ
শিশুদের এই সময় ঘরে বসে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা শিখান। শিশুদেরকে তাদের আবেগ সম্পর্কে ধারণা দিন। তাদরে বলুন কোন আবেগটি রাগ, কোনটি অভিমান, কোনটি জেদ & কোনটি ভয় এ সম্পর্কে তাদেরকে আলাদা ভাবে বুঝিয়ে বলুন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিস্থিতি আবেগের পরির্বতন হয় তা বুঝিয়ে বলুন।
এই বিূষয়গুলো নিয়ে বাচ্চাদের সাথে অল্প অল্প করে বাচ্চাদের বুঝার ভাষা ব্যবহার করে বুঝিয়ে বলুন। এবং শিশুদেরকে রাগ হলে তাদের কি কি ক্ষতি হতে পারে? অতিরিক্ত জেদের কারণে তাদের কি সমস্যা হয় তাও বুঝিয়ে বলুন। শিশুদেরকে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, নিঃশ্বাসের ব্যায়াম, ঠান্ডা পানি খাওয়া এবং যে জায়গাতে রাগ হয়েছে ওখান থেকে সরে গিয়ে, অন্য জায়গায় সরে আসার বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন। তাদের পাশে বসে তাদেরকে বিষয়টা ধীর স্থিরভাবে বুঝান।

সুত্রঃ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট মেন্টাল হেলথ (BACAM)

চলবে….

 

করোনায় আক্রান্ত মা কি সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারবেন?

করোনায় আক্রান্ত মা কি সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারবেন?


স্বাস্থ্যকথা


প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয়েছে চীনকে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক নিয়েও গবেষণা করেছে দেশটি। সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে গর্ভবতী নারীদের ওপর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছে চীন। এসব গবেষণার পর চীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে গর্ভবতী কোনো নারী করোনায় আক্রান্ত হলেও তার গর্ভ সুরক্ষিত। চীনে এ বিষয়ে ঠিক কী ধরনের পরীক্ষা হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।

দেশটির উহান প্রদেশে সর্বপ্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এই আক্রমণের প্রভাব থেকে বাঁচতে কী উপায় বের করা যায় তা নিয়েও চীনই প্রথম থেকে লাগাতার গবেষণা করে। সেই গবেষণার ফল তারা প্রকাশও করেছে একাধিক জার্নালে। সম্প্রতি আমরাও যেহেতু এই ভাইরাসের কবলে পড়েছি, সে জন্য মরণব্যাধি এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সেসব জার্নালই প্রধান ভরসা।

মোটামুটি তিন থেকে চাররকমের পরীক্ষা চীনে করা হয়। গর্ভবতী নারীদের থেকে তার ভ্রূণে অনবরত যে খাদ্যরস বাহিত হচ্ছে সেই রসের পরীক্ষা করে, শিশুর জন্মের পর তার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে, শিশু ও তার মায়ের মধ্যে সংযোগকারী নাড়ির থেকে রক্ত নিয়ে এবং গর্ভে ভ্রূণ যেখানে থাকে তার চারপাশে একরকম জলীয় পদার্থ থাকে। এই সব কিছু পরীক্ষা করে দেখা গেছে করোনা আক্রান্ত কোনো মায়ের শরীর থেকে গর্ভস্থ ভ্রূণ বা শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করতে পারেনি।

এরপর খুব স্বাভাবিকভাবেই এরপর প্রশ্ন ওঠে জন্মের পর ওই শিশু কি তার মায়ের কাছে থাকবে? তার মায়ের দুধ খেতে পারবে? জবাব দিতে গিয়ে ডাক্তারদের কিছু অংশ মায়ের দ্রুত আরোগ্য এবং শিশুর সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে বলেছেন, শিশু এবং তার মাকে অন্তত ১৪ দিন আইসোলেশনে রাখতেই হবে। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসকই এর বিরুদ্ধে। তারা জানিয়েছেন, শিশু তার মায়ের কাছ থেকে জন্মের পর ১৪ থেকে ১৫ দিন আলাদা হয়ে থাকলে তাদের সারা জীবনের সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হবে না। তাতে দু-জনেরই ক্ষতি।

অধিকাংশ চিকিৎসকই জোর দিয়ে বলছেন, শিশুকে মা তার বুকের দুধ খাওয়াবেন। তবে শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে ভালোভাবে নিজের হাত স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিবেন। আর দুধ খাওয়ানোর আগে স্তন অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

এরপর মুখে মাস্ক পরে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বুকের দুধ বের করে তা সন্তানকে দিবেন। তাতে কোনও ক্ষতি নেই। তবে সন্তানসম্ভবা নারীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবেন। প্রত্যেকেই এমন সময় চিন্তায় থাকেন। তাতে এমন একটা পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা হওয়ারই কথা। যদি নিজের সন্দেহ হয়, সামান্য কাশি জ্বর হয় তবে নিজেই নিজেকে পরিবারের আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে রাখুন। ১৫ পর দেখুন কেমন আছেন।

বর্তমানে আমাদের দেশে এখন ঋতু পরিবর্তনের সময়। এই সময় স্বাভাবিক নিয়মেই জ্বর হয়ে থাকে। তবু ভয় না পেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন যা কিনা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা বারবার বলে আসছেন। তবে নির্দিষ্ট সময়ের পরও জ্বর না কমলে লালা পরীক্ষা করান। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে আর দুশ্চিন্তার কিছু থাকবে না। আর যদি পজিটিভ হয় তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন।

সুত্রঃ অধিকার।

 

শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার সু-সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

শিশুর বেড়ে ওঠায় মা-বাবার সু-সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ


স্বাস্থ্যকথা


দশ বছর বয়সী রাইয়ান মাঠের এক কোনে বসে আছে। তার সমবয়সী বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকলেও খেলায় কোন মন নেই তার। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। কী যেন দেখছে। এরমধ্যে তার কয়েকজন বন্ধু তাকে খেলার জন্য ডাকতে আসলেও যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল রাইয়ানের বাবা আর মায়ের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া হয় তাদের মধ্যে। এমনকি মাঝে মাঝে মারধরও চলে। সবই হয় রাইয়ানের সামনে। এসব দেখে সে অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছে। সে এখন কারো সাথে কথা বলতে ভয় পায়। আর তাই এই অল্প বয়সেই এত উদাসীন থাকে রাইয়ান।
মাইশার বর্তমান অবস্থা ঠিক রাইয়ানের মত। পনের বছর বয়সী মাইশা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। কিন্তু কোনভাবেই সে পড়ায় মন বসাতে পারছে না। স্কুলের মডেল টেস্ট’র রেজাল্টও খুব ভালো করেনি। কিন্তু ক্লাস নাইন পর্যন্ত তার রোল নাম্বার এক থেকে তিনের মধ্যে ছিল সব সময়। সবার কাছেই খুব আদরের ছিল মাইশা। টেষ্টের রেজাল্টের পর স্কুলের ক্লাস টিচার তাকে একলা ডেকে নিয়ে তার কাছ থেকে জানতে চান- কেন এমন হচ্ছে? অনেকক্ষণ তার সাথে কথা বলার পর ক্লাস শিক্ষক জানতে পারেন, মাইশার বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না গত কয়েক মাস ধরে। বাসায় প্রতিনিয়তই ঝগড়া লেগে থাকে। তাই সে মনযোগ দিতে পারছে না পড়াশোনায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত জরুরী। শিশুর বিকাশ নিয়ে অধিকাংশ বাবা-মা’ই এখন বেশ সচেতন। তাদের সার্বক্ষনিক চেষ্টা থাকে তাদের বাচ্চাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মাদের নিজেদের মধ্যকার সমস্যা এত বেড়ে যায় যে, তারা আর বাচ্চাদের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন না। আর এই অমনোযোগীতার কারনেই অনেক বাচ্চা অবসাদে ভোগে, খারাপ পথে চলে যায়।
তাদের মতে বাচ্চাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য। বাচ্চাদের বুঝাতে হবে যে, তারাই বাবা-মায়ের অমূল্য সম্পদ। অত্যন্ত যতœ দিয়ে তাদের বড় করে তুলতে হবে। জীবনের প্রতিটি নিয়ম-কানুন তাদের শেখাতে হবে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মুরাদ হোসেন মোল্লা বলেন, প্রায় সব বাচ্চাই দুষ্টুমি করে। কিন্তু অতিরিক্ত দুষ্টুমির জন্য বাচ্চাদের ভয় দেখালে বা তাদের মারধর করলে সমস্যার সমাধান হয় না। বরং এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। শিশুরা সব সময় একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকে। এবং এসব শিশুদের অত্মবিশ্বাষ কমে যায়। তাদেরকে বারবার করে বুঝাতে হবেÑ কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। শিশুর কথাও খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে।
তিনি বলেন, শিশুদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ বাড়িয়ে তুলতে হবে। তাদের সাথে সব সময় আলোচনা করতে হবে। তার চাহিদার কথা, তার ইচ্ছার কথা শুনতে হবে। পাশাপাশি শিশুর ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে। তাদের পছন্দের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
ডা. মুরাদ বলেন, অনেক বাবা-মা’ই সন্তানদের বাইরে খেলাধুলা করতে দিতে চান না। এটা সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অত্যন্ত বড় বাধা। শিশুরা খেলাধুলা করলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। অন্য বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী হয়। এতে তার যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ে। শিশু মানসিকভাবেও সুস্থ থাকে।
এছাড়াও সন্তানদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও মনোযোগী হতে হবে। তাদেরকে এ বিষয়ে জ্ঞান দিতে হবে। নিজের বিছানা সব সময় পরিষ্কার রাখার শিক্ষা, বইপত্র গুছিয়ে রাখার শিক্ষা তাকে ছোটকাল থেকে দিতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের সামনে বড়দের কথা বলার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সব ধরনের আলোচনা শিশুদের সামনে না করাই ভালো। কারণ এতে করে বাচ্চাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে শিশুদের সামনে বড়দের ঝগড়া-বিবাদ করা যাবে না। বিশেষ করে বাবা-মা’র মধ্যকার ঝগড়া বাচ্চাদের মনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরী করে। অনেক সময় বাচ্চারা অবসাদে ভুগতে থাকে।

সুত্রঃ বাসস।

 

সবজি পেয়াজু

সবজি পেয়াজু


রেসিপি


সাধারণত বাচ্চারা কিছুতেই সবজি খেতে চায় না। সবজির জায়গায় যায়গা করে নিয়েছে বর্তমানে অলিতে গলিতে গড়ে উঠা ফাস্টফুডের দোকানগুলো।

উপকরণ
১. মসুর ডাল এক কাপ,
২. মুগডাল এক কাপ,
৩. মটর ডাল এক কাপ,
৪. পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ,
৫. গাজর কুচি এক কাপ,
৬. বাঁধাকপি কুচি এক কাপ,
৭. মটরশুঁটি কুচি সিকি কাপ,
৮. আলু কুচি এক কাপ,
৯. ধনিয়াপাতা কুচি সিকি কাপ,
১০. কাঁচা মরিচ কুচি ২ টেবিল-চামচ,
১১. লবণ পরিমাণমতো,
১. বেসন ২ টেবিল-চামচ,
১৩. পুঁইপাতা কুচি এক কাপ।

প্রণালি
> সব ডাল ধুয়ে ৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে বেটে নিতে হবে। সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে ডুবো তেলে ভাজতে হবে। গরম গরম পেঁয়াজু পরিবেশন করুন।

রেসিপি: নিউজপেজ ২৪

 

লকডাউনে দিনলিপি

লকডাউনে দিনলিপি-৩০শে মার্চ


হাসনিন চৌধুরী


লকডাউনে অলরেডি দম বন্ধ লাগা শুরু হয়েছে। ইচ্ছে হচ্ছে একটা রিকশা নিয়ে ছোট ভাই এর সাথে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াই, সেই আগের দিনগুলোর মতো।

যদিও লকডাউন তো সবে শুরু হলো… গুনে দেখলাম, মাত্র পাঁচ দিন গেছে। আদৌ কতদিনে শেষ হবে এই বন্দী বন্দী খেলা? সপ্তাহ, মাসে, বছরে?

মাঝে মাঝে ভাবি, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, কাশ্মিরের মানুষেরা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস যখন গৃহবন্দী হয়ে থাকে, তাদের কেমন লাগে? বুক ফেটে গেলেও আপন জনদের দেখতে পায় না৷ খাবার ও ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। সাধারণ জ্বর, কাশির জন্যও ওষুধ পায় না?

কেমন লাগে, যখন বছরের পর বছর সে দেশে কোন উৎসব, আনন্দ উদযাপিত হয় না, তারাবী হয় না, হজ্জে যেতে পারে না বা অল্প কিছু লোক একত্র হয়ে ঈদের সালাত পরে?

দম বন্ধ লাগে না?

নাকি অভ্যেস হয়ে গেছে দম আটকে রাখার? বহু বছর তারা বুক ভয়ে শ্বাস নেয় না, হৃদয় থেকে শুধু দীর্ঘশ্বাস দেয়ায় অভ্যস্ত এরা।

এই নিরস্ত্র, অসহায় মানবসন্তানেরা কয়েক যুগ ধরে কেবল দীর্ঘশ্বাসই ফেলেছে, তাদের ভারী নিঃশ্বাসগুলো জমতে জমতে আজ আকাশ ছুঁয়েছে।

মনে আছে, সমুদ্রে ভেসে আসা দেড়/ দু বছরের আয়লান কুর্দির কথা?

সেই যুবকের কথা, যে বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো অন্তসত্ত্বা স্ত্রীকে কবরে শুইয়ে দিয়েছিলো, স্ত্রীর সাথে সেদিন মাটি চাপা দিয়েছিলো জীবনের সকল আনন্দ আর স্বপ্নও।

সেই বাবাটার কথা ভুলে গেছেন, মৃত শিশুদের কোলে নিয়ে যিনি পাথরের মতোন বসে ছিলেন?

নিশ্চয় ভুলেন নি ঐ শিশুটির কথা? যে কিনা ছোট্ট জীবনে পৃথিবীবাসীর নিদারুণ নিষ্ঠুরতায় আশ্চর্য ও ব্যাথাতুর হয়ে, মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছিলো, “আমি সব বলে দেবো আল্লাহর কাছে!”

হায়, আফসোস….শিশুটি নিশ্চয় সব বলে দিয়েছে। তার সাথে সুর মিলিয়েছে জুলুমে জুলুমে কেঁপে ওঠা রুহের আর্তনাদ।

আমরাই শুধু ভুলে গিয়েছ, মজলুমের বদদুয়া আর আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই!

ভুলে গিয়েছি, কাবা ধ্বংস করতে আসা আবরাহার হস্তীবাহিনীকে কিভাবে সর্বশক্তিমান মালিক, তাঁর অতি ক্ষুদ্র সৃষ্টি, এক ঝাঁক পক্ষীবাহিনী দিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন।

কিভাবে তিনি অহংকারী নমরুদকে হারিয়ে দিয়েছিলেন মশার কাছে।

এ যুগের পরাশক্তিরা যখন অন্যায় ভাবে হামলা করেছিলো একের পর এক দেশ, বাধা দেয় নি কেউ। তাবত পৃথিবী জুলুমকারীদের সাথী হয়েছিল।

হয় সরাসরি পক্ষ নিয়েছিলো, নতুবা মজলুমের চিতকার না শোনার জন্য কানে তুলো দিয়ে ডুবে গিয়েছিলো বিলাসে, ভোগে, অসাড় আনন্দ ও স্বার্থপরতায়।

আল্লাহ রশি ছেড়ে দিয়েছিলেন, এবার তার প্রায় অদৃশ্য এক সৃষ্টিকে পাঠালেন৷ চোখে দেখা যায়না এমন অস্তিত্বের ভয়ে কেঁপে উঠলো পুরো দুনিয়া।

এতদিন ধরে চলে আসা অন্যায়,ব্যভিচারিতা, সমকামীতা, মজলুমকে নিপীড়ন ইত্যাদি ছাপিয়ে, মৃত্যু ভয় আচ্ছন্ন করে ফেললো, ভোগবাদী জগতকে।

যে অভাব, মৃত্যু আতংক, লকডাউন দিয়ে শায়েস্তা করা হয়েছিলো অসহায়দের, আজ সেই একই ভয়াবহতা গ্রাস করেছে সমগ্র পৃথিবীকে।

চোখে দেখা যায় না এমন জীবানুর আঘাতে ধরাশায়ী হয়ে গেলো সকল পরাশক্তি ও বিশ্ব অর্থনীতি।

সিরিয়া আফগানিস্তানের মতো লাশের মিছিল লেগে গেলো দেশে দেশে।

দিল্লীর দাংগার সময়েও কি ভাবতে পেরেছিলাম, বিশ্ব রাজনীতির পট পরিবর্তন হতে বেশি দিন বাকি নেই? অচিরেই আমরা বুঝতে পারবো মহাপরাক্রমশালী স্বত্ত্বা কেবল একজনই!

তিনিই সেই রব, যিনি ‘হও’ বললেই, সব হয়ে যায়। পৃথিবীর প্রতি, এর মানুষের প্রতি এতোদিন যে অন্যায় হয়ে এসেছে, তার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিশোধ শুরু হয়ে গেছে।

দিল্লীতে মুসলিমদের যখন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছিলো, একটি কবিতার জজবায়, তখন তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল অনলাইন দুনিয়া।

চলমান অন্যায়ের প্রতিবাদে আবৃত্তিকার দৃপ্ত কণ্ঠে গজরে উঠেছিলেন,

তিনি বলেছিলেন, ” আসমান পে ইনকিলাব লিখ্যা যায়েগা।”

সেই কবিকে খুঁজে পেলে, বলতাম, আসমান পে ইনকিলাব লিখ্যা হো গ্যায়া…সাব বাদ দুয়া জামিন কি লোগো পে লাগ গ্যায়া..

দুনিয়াতে যা হচ্ছে… তা কি আমাদেরই হাতের উপার্জন নয়?

 

মোরা জোনাকি হতে চাই……৫

মোরা জোনাকি হতে চাই……৫


আফরোজা হাসান


মাঝে মাঝে মুখে বলা হাজারো শব্দরাও যা করতে পারে না, মৃদুমন্দ স্পর্শ তারচেয়ে অনেক বেশি কাজ করে যায়। উদভ্রান্তের মত সামনে বসে থাকা ছেলেটিকে দেখে যায়েদের এই কথাটিই মনেহলো, এখন ওর কোন মৌখিক স্বান্তনার নয়, বরং আত্মিক অবলম্বন প্রয়োজন। ‘আমি আছি তোমার পাশে সর্বাবস্থায়’ অত্যাধিক শক্তিশালী একটি অ্যান্টিডোট হাল ছেড়ে দেয়া মানুষের জন্য। যার উপর ভর করে তারা বেড়িয়ে আসতে পারে গর্ত থেকে। সেই গর্ত যেটা কোন না কোন ভাবে তারা নিজেরাই খোঁড়ে নিজের জন্য। এই ছেলেটা যেমন জেনে বুঝে এমন একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল যার চরিত্রে ছিল জাহিলিয়াতের ছায়া। ছেলেটির বিশ্বাস ছিল ভালোবাসা দিয়ে মেয়েটিকে বদলে দেবে। ভেতরে অট্টহাসি পাক দিয়ে উঠলো যায়েদের। নাটক-সিনেমা-গল্প-উপন্যাসই বর্তমান জেনারেশনের চিন্তা-ভাবনাগুলোকে মনিটর করছে। ভালোবাসা দিয়ে বিশ্ব জয় করার বিভ্রান্তিকর স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে এরা। যে স্বপ্নে এদেরকে টেনে নিয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। তবে এটা ঠিক যে ভালোবাসা দিয়েই জয় করা সম্ভব জগতটাকে। তবে সেটা মানুষকে ঘিরে মানুষের ভালোবাসা নয়। স্রষ্টাকে ঘিরে আবর্তিত ভালোবাসার দ্বারা।

আমি বাঁচতে চাইনা ডক্টর। প্লিজ আমাকে মরে যেতে দিন। বেঁচে থেকে কি লাভ আমার?

মরে গিয়ে কি লাভ তোমার? প্রশ্ন করলো যায়েদ।

প্রশ্নটা শুনে স্থির দৃষ্টিতে যায়েদের দিকে তাকালো সোহান।

যায়েদ সোহানের হাতে হাত রেখে খুব স্নেহ মাখা স্বরে বলল, হাল ছেড়ে দেবার জন্য, জীবনের উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার জন্য, মৃত্যুকে বরণ করে নেবার জন্য অনেক কারণ হয়তো তোমার কাছে আছে। কিন্তু তুমি কি জানো ঘুরে দাঁড়াবার জন্য, জীবনকে উপভোগ করার জন্য, বেঁচে থাকাটাকে কাজে লাগানোর জন্য শুধু একটা কারণই যথেষ্ট? জানতে চাও সেই কারণটা কি?

হ্যা ডক্টর আমি জানতে চাই।

এটাই সেই কারণ। এই যে তুমি জানার ইচ্ছে পোষণ করলে। এই ইচ্ছেটাই সেই কারণ। যা কিছু তোমার জীবনে ঘটেছে এটাই শেষ নয়। আরো অনেক কিছু বাকি আছে তোমার জীবনে। সেসব কি জাস্ট সেটা জানার ইচ্ছেটা ধরে রাখতে হবে তোমাকে। ইচ্ছে কিভাবে ধরে রাখবে সেটার পেছনেও কারণ আছে।

কি কারণ?

হাত দিয়ে ঈশারায় কিছুটা দূরে দাড়িঁয়ে থাকা মাশরুফকে দেখিয়ে যায়েদ বলল, গতরাতে তোমাকে হসপিটালে নিয়ে আসার পর থেকে এক মূহুর্তের জন্যও স্থির হয়ে বসেনি মাশরুফ। ওর ডিউটি টাইম অনেক আগেই শেষ। তবুও বসে আছে শুধু তোমাকে ভালোবাসে, তোমার কেয়ার করে সেজন্য। তোমার বাবা সারারাত হসপিটালের ওয়েটিং হলে পায়চারী করে কাটিয়েছেন। তোমার মা জায়নামাজে বসে এখনো চোখের পানি ফেলছেন। তোমার ফ্যামেলির মানুষেরা একটু পর পর মাশরুফকে ফোন দিয়ে জানতে চাইছে এখন তোমার কি অবস্থা! আর যার জন্য তুমি জীবন দিতে যাচ্ছিলে সে অন্য কারো হাত ধরে সুখের সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে। এখন তুমি ভেবে দেখো জীবনের কাছে তোমার প্রাপ্তি বেশি নাকি অপ্রাপ্তি? তোমার ভালোবাসার ভান্ডার ভারি নাকি শূন্যতার? তুমি এমন একজনের জন্য জীবন দিতে যাচ্ছিলে যার কাছে তোমার থাকা, না থাকা কোন স্পেশাল তো দূরে থাক নূন্যতম গুরুত্বও রাখে না। তাহলে তুমি সেই মানুষগুলোর জন্য কেন বেঁচে থাকতে পারবে না, তোমার চলে যাওয়া যাদের জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার তৈরি করে যাবে?

দু’চোখের কোন বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে শুরু করলো সোহানের। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, আমি কখনো এভাবে ভেবে দেখিনি ডক্টর।

যায়েদ হেসে বলল, চারপাশের সবকিছু মিলিয়ে ভেবে দেখে না বলেই তো মানুষ এতটা অসহায় ফিল করে যে, নিজেই নিজেকে মৃত্যুর মুখে ছুঁড়ে দেয় নির্দ্বিধায়। সমস্যাটা কি জানো? আমার ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু বেশির ভাগ সময়ই আমরা যা চাই, যা পছন্দ করি সেটার মধ্যে নিবদ্ধ থাকে। তাই সে জিনিসটা যখন আমরা না পাই তখন খুব অসহায় ফিল করি। মনেকরি বেঁচে থাকার জন্য আমার কাছে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। অথচ কেন্দ্রবিন্দু থেকে দৃষ্টিটাকে একটু খানি সরালেই জগতের আনন্দযজ্ঞের ভরপুর আয়োজনের দেখা মিলে। চলো আমার সাথে তোমাকে দেখাচ্ছি।

হাত বাড়িয়ে সোহানকে বেড থেকে নামতে সাহায্য করলো যায়েদ। এরপর ধরে ধরে নিয়ে এলো হসপিটালের লম্বা বারান্দায়। সামনেই হসপিটাল সংলগ্ন বিশাল পার্ক। হসপিটালের ইনফান্টিল সেকশনটাও ঐদিকেই। ফলে পার্ক জুড়ে ছড়ানো ছিটানো ছিল জীবন্ত, চলন্ত, ছুটন্ত নানা বয়সী, নানান রঙের ফুলে। হাত উঁচু করে ছোট্ট একটা শিশুকে দেখিয়ে যায়েদ হাসি মুখে বলল, দেখো ঐ বেবীটাকে। মেবি মাত্র এক পা দু পা করে চলতে শিখেছে। হাঁটতে গিয়ে যাতে পড়ে না যায়, ভারসাম্য যাতে ঠিক থাকে সেজন্য দু’হাত কিভাবে দু’পাশে ছড়িয়ে দিয়েছো দেখেছো? ওকে কিন্তু এটা কেউ শেখায়নি। নিজেকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিজেই এটা উদ্ভাবন করে নিয়েছে। ঠিক তেমনি প্রতিটি মানুষের মধ্যেই নিজেকে সামলে নেয়ার, নিজেকে বোঝানোর, নিজেকে আনন্দ দেবার ক্ষমতা থাকে। কিন্তু যত আমরা বড় হতে থাকি নিজের ক্ষমতাগুলোকে অবমূল্যায়ন করতে থাকি। অন্যের উপর নির্ভরশীলতা বাড়তে থাকে আমাদের। একটা সময় আমাদের অবস্থা এতই নাজুক হয়ে দাঁড়ায় যে অন্যেকে অবলম্বন না করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটাই অসম্ভব হয়ে যায় আমাদের জন্য। জন্মের সময় প্রতিটি মানব মনে এক টুকরো স্বর্ণলতা আর একটি বটবৃক্ষের চারা থাকে। আমাদের মন বটবৃক্ষ হবে নাকি স্বর্ণলতা এটা নির্ভর করে কোনটিকে বেড়ে উঠার অনুকূল পরিবেশ দেয়া হচ্ছে সেটার উপর। আফসোস হচ্ছে, বেশির ভাগ সময়ই আমাদের মন স্বর্ণলতা রূপে বেড়ে ওঠার পরিবেশ পায়। তাই যেই বৃক্ষকে আঁকড়ে ধরে সেটা সরে গেলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

সোহানের মনের অন্ধকার আবেগের ঘরে সূর্য কিরণ মতোই স্পর্শ রাখলো যায়েদের কথাগুলো। বেশ অনেকক্ষণ নীরবতার পর বলল, আমি বুঝতে শুরু করেছি ডক্টর। আসলে কোনদিন কেউ এমন করে ভাবতে শেখায়নি।

যায়েদ হেসে বলল, এখন তো শিখলে ভাবতে। আর কখনোই এমন বোকামী করবে না। মনে রাখবে তোমার জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পৃথিবীতে আর কিছুই নেই তোমার কাছে। জীবন নেই মানে তুমি নেই। আর তুমি নেই মানে জগত থাকা আর না থাকার মাঝে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু তুমি থাকলে জগতের অস্তিত্ব যেমন থাকবে। ঠিক তেমনি নিয়ম মেনে বদলেও যাবে পরিবেশ-পরিস্থিতি সবকিছু। তাই সবসময় নিজের জন্য বাঁচতে চেষ্টা করবে। কারণ তোমার বেঁচে থাকাটাকে সৌন্দর্যময় করার জন্যই আসলে নানান উপকরণের প্রয়োজন। এখন উপকরণের যেই প্যাকেজ তুমি নিজের জন্য পছন্দ করেছো। সেই প্যাকেজ না পাওয়ার অর্থ এটা নয় যে, জীবনটাই বৃথা। খুব পছন্দের বীফ কারি না পেলে চিকেন কারি দিয়েও তো খাবারের চাহিদা মেটানো যায়। তাই না?

জ্বি ডক্টর।

সো টিনা চলে গিয়েছে যাক না। তুমি ইনা না মিনা কাউকে খুঁজে নিলেই তো হয়ে যাচ্ছে।

এই প্রথম হাসি ফুটে উঠলো সোহানের মুখে। বেশ শব্দ করেই হেসে ফেললো।

যায়েদও হেসে বলল, তোমার হাসি অনেক সুন্দর মাশাআল্লাহ। এই হাসিকে কারো মোহতাজ করো না। সময় লাগলে নিজেকে উজাড় করে সময় দাও। তারপর নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে নাও। তবে এবার শুধু দৈহিক সৌন্দর্য দেখে জীবনসাথী নির্ধারণ করো না। মানসিক সৌন্দর্য বিবর্জিত দৈহিক সৌন্দর্যটা অ্যাসিডের মতো ভয়ঙ্কর। যা অন্যের সাথে সাথে ব্যক্তির নিজ আত্মাকেও জ্বালিয়ে বিকৃত করে দেয়। তাই বিকৃত মন থেকে সদা সাবধান থাকবে। আর সবসময় মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করবে তোমার প্রতি ভালোবাসা পুর্ণ মনগুলোকে। তাকিয়ে দেখো তোমার পেছনে।

ঘুরে তাকিয়ে বাবাকে আসতে দেখে এক মূহুর্তের জন্য থমকে গেলো সোহান। তারপর সমস্ত দুর্বলতা ভুলে গিয়ে ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো। একে অন্যেকে বুকে জড়িয়ে ধরে পিতা-পুত্রের সম্মিলিত অশ্রু দেখে জ্বালা করে উঠলো যায়েদের চোখও। আলতো করে চোখের ভেজা কোন মুছে নিয়ে মূহুর্তেই সামলে নিলো নিজেকে। পেশেন্টদের আনন্দ-বেদনা সবসময়ই সিক্ত করে দেয় তার মনকে।

নিজের কেবিনে ফিরে যাবার উদ্দেশ্যে ঘুরে দাঁড়াতেই থমকে গেলো যায়েদ। দেখতে পেলো করিডোরের দেয়াল ঘেঁষে দাড়িয়ে মুখে হাসি কিন্তু চোখ ভরা অশ্রু নিয়ে সোহান আর ওর বাবার দিকে তাকিয়ে আছে একটি মেয়ে। অদ্ভুত এক মায়ালোয় ছোঁয়া অভিব্যক্তি খেলা করছিল মেয়েটির চেহারা জুড়ে। কয়েকটি মূহুর্তের জন্য নিজের দৃষ্টিকে সংযত করার কথা ভুলে গেলো যায়েদ। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে ছিল হাসি-কান্নার সংমিশ্রণে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির দিকে। কিন্তু যায়েদের দিকে চোখ পড়তেই নিজেকে সামলে নিলো মেয়েটি। চোখের কোনে জমে থাকা অশ্রু মুছে নিতে নিতে ঝট করে পেছন ফিরে ঘুরে দাঁড়ালো যায়েদের দিকে।

একরাশ লজ্জা ঘিরে ধরলো যায়েদকে। আর এক মূহুর্তও না দাঁড়িয়ে হাঁটতে শুরু করলো কেবিনের দিকে। এই রকম একটা আচরণ কেমন করে ঘটলো তার দ্বারা? ভাবতেই তিক্ত অপরাধবোধ ঘিরে ধরলো মনকে। মেয়েটি কি ভাবছে তার সম্পর্কে? নিশ্চয়ই খুব নেতিবাচক কিছুই ভাবছে? পরমূহুর্তেই আবার নিজেকে সামলে নিলো যায়েদ। নিজেই নিজেকে বলল, মেয়েটির কথা ভেবে একই ভুল তুমি পুনঃপুনঃ করছো। শয়তানকে সুযোগ করে দিচ্ছো অসচেতনার ভুলের ক্ষনটিকে সচেতন পদস্ফলনে রূপান্তরিত করার। কোন জিনিসের কথা বার বার মনে করিয়ে দিয়ে সেটার প্রতি মনকে দুর্বল করে পাপের পথে মানুষকে পরিচালিত করা শয়তানের একটি কৌশল। পেশেন্টদেরকে প্রায়ই এই কথাটা বলে যায়েদ। আজ নিজেই সেই পথে চলতে যাচ্ছিলো। নিজেকে সামলে নিয়ে আল্লাহর ক্ষমা এবং সঠিক পথে অবিচল রাখার হেদায়াত প্রার্থনা করতে করতে দ্রুত পায়ে কেবিনের দিকে ছুটলো।

চলবে—
পর্ব-৬

 

‘করোনা’ সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখছেন তো

 

‘করোনা’ সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখছেন তো


স্বাস্থকথা


করোনার মাঝে আপনার সন্তানের বাড়তি যত্ন নিন।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে ছোট শিশুরা সাধারণত আক্রান্ত হয় না বা শিশুরা ঝুঁকিমুক্ত— এমন ধারণা অনেকের আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে ভিন্ন কথা। এসব গবেষণায় জানা গেছে, শিশুরাও করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। তবে তাদের ক্ষেত্রে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়, যার সঙ্গে সাধারণ ফ্লুর পার্থক্য করা যায় না। শিশুদের যদি অন্য শারীরিক জটিলতা থাকে (যেমন— হৃদযন্ত্রের সমস্যা, টাইপ-১ ডায়াবেটিস, হাঁপানি ইত্যাদি), তবে করোনা–আক্রান্ত হলে তাদের অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই শিশুদের বিষয়েও সতর্ক হওয়া দরকার।

এ ক্ষেত্রে এই কাজগুলো অনুসরণ করে আপনার সন্তানকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পারেন:

 সতর্ক

করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত শিশু নিজেরা তেমন অসুস্থ না হলেও তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়। কাজেই তাদের মাধ্যমে পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য (দাদা-দাদি, নানা-নানি) এবং ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা সংক্রমিত হতে পারেন। এজন্য শিশুদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে। তবে এতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে তাদের বাড়িতে রেখেই শুশ্রূষা করতে হবে। কারণ, শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত সংক্রমণের উপসর্গ থাকে মৃদু। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তাদের মাধ্যমে যেন ভাইরাসটি না ছড়ায়।

শিষ্টাচার শেখানো

শিশুদের হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার শেখাতে হবে। তবে তা ধমক দিয়ে নয়, বুঝিয়ে বলতে হবে। এই সময় শিশুদের বাড়ির বাইরে বের হতে দেওয়া উচিত হবে না। বাইরে থেকে আসা কারও সংস্পর্শ থেকেও তাদের দূরে রাখতে হবে।

পুরোপুরি আলাদা রাখা জরুরী

বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের পুরোপুরি আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুরা যদি কোনো কারণে সামান্য অসুস্থও হয়, তারপরও তাদের বয়স্ক আত্মীয়ের কাছে যেতে দেওয়া যাবে না। শিশুদের নিয়ে বয়োবৃদ্ধ মা-বাবাকে দেখতে যাওয়ারও এড়িয়ে চলুন। তবে আলাদা করে ফেলার বিষয়টি শিশুদের মনের ওপর চাপ ফেলতে পারে। তারা অসহায় বোধ করতে পারে, ক্ষুব্ধ হতে পারে। তাই তাদের টেলিফোন, স্কাইপে, হোয়াটস অ্যাপ বা মেসেঞ্জারের মাধ্যমে দাদা-দাদি, নানা-নানির সঙ্গে কথা বলার ও সময় কাটানোর সুযোগ করে দিন।

সন্তানকে বুঝিয়ে বলা

কেন প্রিয়জনদের আলাদা করে রাখতে হচ্ছে, তা সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। এমনকি প্রয়োজনে মা-বাবাকেও যে যখন-তখন আলাদা হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, সে বিষয়েও আগেভাগেই জানিয়ে রাখুন।

শিশু ঝুঁকিপূর্ণ আছে কিনা জানা

যেসব শিশু ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন যাদের ছোটবেলা থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা, হাঁপানি আছে কিংবা যারা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ভুগছে, যারা কিডনি বা কোনো রোগের কারণে স্টেরয়েড ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমায়— এমন অন্য ওষুধ সেবন করে, তাদের জ্বর-কাশিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিন। অসুস্থ হওয়ামাত্র চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।

অধ্যাপক মো. সেলিম শাকুর, কনসালট্যান্ট, শিশু ও নবজাতক বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল

সুত্রঃ দৈনিক অধিকার।