banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

প্যারেন্টিং নিয়ে বইপড়া

প্যারেন্টিং নিয়ে বইপড়া


খালেদা সুলতানা সুইটি


প্যারেন্টিং নিয়ে কিছু বই পড়তে যেয়ে একটা বই বেশ ভালো লাগলো। আমরা পিতামাতা রা চাই সন্তান যেন একজন আদর্শ মুসলিম হয় কিন্তু আমরা নিজেরা কতটা ইসলাম প্র্যাকটিস করছি বা কতটা জানি সেটা নিয়ে ভাবিনা। সন্তানরা পরিবারের মানুষদেরকে বিশেষ করে মাবাবাকে অনুকরন করে। মা বাবার কাছ থেকেই প্রথম জ্ঞানার্জন করে। সেই মা বাবা নিজেরাই যদি না জানে না মানে তবে সন্তানকে শেখাবে কিভাবে বা সন্তানই বা মানবে কেন।

তাই সন্তানকে শেখানোর জন্য মানানোর জন্য সর্বোপরি সন্তানকে গড়ে তোলার জন্য এবং নিজেও পরিপূর্ণ ভাবে ইসলাম প্র্যাকটিসের জন্য যে ধরনের রুটিন ফলো করা দরকার, যা যা জানা দরকার, দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি, জীবন চলার পথে ইসলামের দিক নির্দেশনা, কুরআন এবং হাদীসের রেফারেন্সসহ সাবলীলভাবে বর্ননা দিয়েছেন বইটিতে লেখক জাবেদ মুহাম্মদ। দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা লাভের জন্য আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা’আলার নির্দেশিত কুরআন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত সুন্নাহ উল্লেখ করে লেখক সন্তান প্রতিপালনের নানাবিষয়ে আলোকপাত করেছেন।

বইটির নাম ” প্যারেন্টিং : এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন।”
– আহসান পাবলিকেশন্স

** শুধু মা বাবারাই নয়, অন্য যে কেউ বইটি পড়ে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে ইসলাম নির্দেশিত পন্থা, কুরআন হাদীসে সে সকল বিষয়ে যে দিক নির্দেশনা আছে তা জানার মাধ্যমে উপকৃত হবে বলে মনে করছি ।

** বইটি পড়ে ভালো লাগলে আমার জন্য দুআ করতে ভুলবেননা যেন।

 

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর


নারী সংবাদ


ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় আগামী ২৪ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক মো: মামুনুর রশিদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ। বাদীপক্ষের আইনজীবী আক্রামুজ্জামান ও এম. শাহজাহান সাজু আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক খন্ডন করে নিজেদের স্বপক্ষে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। তারা আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

এর আগে এগার কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুখ আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ নান্নু, আহসান কবির বেঙ্গল ও কামরুল হাসান।

গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফিকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গাঁয়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওইদিনই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো: শাহ আলম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহআলম তদন্ত শেষে ২৯ মে আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করলে আদালত তা অনুমোদন করেন।

২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাত রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ মামলায় গ্রেফতারকৃত মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

সুত্রঃ নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় – নয়া দিগন্ত।

 

ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করি

ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করি


ঘরকন্যা


ঘরের পর্দার ধরন, রঙ, ডিজাইন নির্বাচন করা ঘরের দেয়ালের রং, ঘরের সাইজের উপর নির্ভর করে।

পর্দা নির্বাচনে অবহেলার কারনে আপনার অনেক সুন্দর সাজানো ঘরটি তেমন সুন্দর নাও লাগতে পারে। তাই একটু সময় করে, বুদ্ধি খাটিয়ে মানানসই পর্দা নির্বাচন করা দরকার।

পর্দা নির্বাচনে যা খেয়াল রাখবো,

১. ধুতে সুবিধা হয় এমন পর্দা নির্বাচন করা।

২. বয়সভেদে পর্দার রং ভিন্ন হবে।

৩. বেশি কুচি থাকলে পর্দা দেখতে ভালো লাগে।

৪. হালকা রঙের দেয়ালে গাড় রঙের পর্দা বেশি মানায় আর গাড় রঙের দেয়ালের ক্ষেত্রে হালকা রঙের পর্দা মানানসই।

৫. ঘরে শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশ বজায় রাখতে হালকা রঙের পর্দা বাছাই করুন।

৬. হালকা পর্দা ছোট ঘরকে বড় দেখায়।

৭. লম্বা পর্দা এবং একটু খাটো পর্দা কেনার সময় ঘরের সাইজ মনে রাখবেন।

৮. ছোট ঘর হলে লম্বা লম্বি প্রিন্টের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন এতে ঘর বড় লাগবে।

৯. শীতকালের জন্য একটু মোটা কাপড়ের পর্দা নির্বাচন করুন।

১০. গ্রীষ্মকালের পর্দা সুতি হলে ভালো হয়।

১১. বসার ঘরের জন্য গাড় রঙের বাহারি ডিজাইনের পর্দা ব্যবহার করুন।

কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনিও হতে পারেন পর্দা বাছাইয়ের ব্যাপারে পারদর্শী। আপনার একটু বুদ্ধিমত্তায় ‘সঠিক পর্দা নির্বাচন’ আপনার ঘরের সৌন্দর্য বহু গুন বাড়িয়ে তুলবে।

 

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড


নারী সংবাদ


যৌতুক দাবিতে বরগুনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী সিদ্দিককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা এবং শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও দেবরের বন্ধুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রোববার বিকেল ৪টার দিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার পূর্ব রাণীপুর গ্রামের হাসেম গাজী, তার ছেলে বেবীর স্বামী সিদ্দিক, খোকন, সিদ্দিকের মা পারুল বেগম ও খোকনের বন্ধু লিটন। রায় ঘোষণার সময় পারুল বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলার মীর্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর উরবুনিয়া গ্রামের আবদুল আজিজের মেয়ে সাজেদা বেগম বেবীকে ২০০২ সালের জুন মাসে সিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর সিদ্দিক ঢাকায় চলে যায়। এই ফাঁকে সিদ্দিকের ভাই খোকন ও লিটন বেবীকে কুপ্রস্তাব দেয়। বেবী ক্ষিপ্ত হয়ে খোকনকে জুতাপেটা করে। এতে খোকন ও লিটন ক্ষুব্দ হয়।

খোকন ও লিটন সিদ্দিককে জানায় তার স্ত্রী খারাপ। কিছুদিন পর সিদ্দিকের জ্বর হলে সে বাড়িতে চলে আসে। ওই সময় বেবীর বাবা আবদুল আজিজ মেয়েকেসহ সিদ্দিকের বাড়িতে একটি সনি টিভি নিয়ে যান। সিদ্দিক তার শ্বশুরের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। আবদুল আজিজ যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে সিদ্দিক ও অন্য আসামিরা তাকে ও তার মেয়েকে নোংরা ভাষায় গালি দেয়। আবদুল আজিজ তার মেয়েকে সিদ্দিকের বাড়িতে রেখে চলে আসেন।

২০০২ সালের ২০ জুলাই রাত অনুমান তিনটার সময়ন সিদ্দিকের বসতঘরে বসে ওই আসামিরা যৌতুকের দাবি ও চরিত্রহীন বলে বেধড়ক মারধর করেন বেবীকে। ২১ জুলাই সকালে আবদুল আজিজ খবর পেয়ে সিদ্দিকের বাড়ি গিয়ে তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।

বাদী বলেন, আমার মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় সিদ্দিকের বাড়িতে রেখে আসি। সকালে খবর পাই সে মারা গেছে। পরে জানতে পারলাম আসামিরা আমার মেয়ের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি বেবীর সুরাতহাল ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করে বেতাগী থানায় মামলা দায়ের করি। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১( ক) ও ৩০ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী কমল কান্তি দাস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান।

(সুত্রঃ নয়াদিগন্ত)

 

হেঁচকি কেন উঠে

হেঁচকি কেন উঠে, থামাবেন কীভাবে?


স্বাস্থ্যকথা


খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়। এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে।

মানুষের হেঁচকি আসে কেন?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়। ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

হেঁচকি ওঠার একশো’র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।

ওষুধ নির্মাতা সংস্থা অ্যাকমে’র সিনিয়র ম্যানেজার ও চিকিৎসক আফরোজা আখতার বলেন, “হেঁচকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা।”

দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সাথে সাথে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়। চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।

মিজ. আখতার বলেন, “কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি তৈরি হতে পারে।”

কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।

হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হেঁচকির উদাহরণও কিন্তু রয়েছে।

যেমন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে হেঁচকি ওঠার বিশ্ব রেকর্ডের উদাহরণ হিসেবে মনে করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস অসবোর্নের ঘটনাকে। ১৯২২ সালে হেঁচকি তোলা শুরু করেন তিনি, কথিত আছে সেসময় তিনি একটি শূকর ওজন করার চেষ্টা করছিলেন। মি. অসবোর্ন হেঁচকি তোলা থামান ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে – মোট ৬৮ বছর পর।

হেঁচকি থামানোর উপায়

ঘরোয়াভাবে হেঁচকি থামানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে মূলত দুইটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়। একটি হলো রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া যেন শ্বাসনালীতে খিঁচুনি বন্ধ হয়। আরেকটি হলো শ্বাসপ্রশ্বাস ও গলধকরণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ‘ভ্যাগাস’ স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী কয়েকটি পদ্ধতিতে হেঁচকি থামানো যায়।

১. কাগজের ব্যাগে নিশ্বাস ফেলা (ব্যাগ মাথা দিয়ে ঢুকাবেন না)

২. দুই হাঁটু বুক পর্যন্ত টেনে ধরে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়া

৩. বরফ ঠাণ্ডা পানি খাওয়া

৪. কিছু দানাদার চিনি খাওয়া

৫. লেবুতে কামড় দেয়া বা একটু ভিনেগারের স্বাদ নেয়া

৬. স্বল্প সময়ের জন্য দম বন্ধ করে রাখা

কখন চিকিৎসার পরামর্শ নিতে হবে

হেঁচকি সাধারণত আপনা থেকেই ভাল হয়ে যায়, তবে যদি অতি দীর্ঘসময় ধরে হেঁচকি উঠতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

মিজ. আখতার বলেন, “হেঁচকি নিরাময়ে ঘরোয়া চিকিৎসা যদি কাজ না করে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”

হেঁচকির তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন মিজ. আখতার। এছাড়া নিয়মিত হেঁচকিতে দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম ব্যহত হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার উপদেশ দেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : বিবিসি।

 

কালো মেয়ের কিছু কথা

কালো মেয়ের কিছু কথা


আঞ্জুমান আরা


ছোটবেলার কথা। গায়ের রঙ কালো ছিল বলে অনেকেই অনেক কিছু বলত যেমন, তোর বাপের অনেক যৌতুক দিতে হবে । তুই সেজে কি করবি। তুইতো কালো।
মনের মধ্যে একটা চাপা কষ্ট নিয়ে দিন কাটত। নিজেকে খুব ছোট ও মূল্যহীন মন হত। সেজন্য সাজতে লজ্জা হত। লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদেছি অনেক।

বলে রাখি আমি ছোটবেলাটা বেশী কাটিয়েছি গ্রামে। মাাথার মধ্যে শুধু বিয়ে যৌতূক এসব ঢুকোনো হয়েছিল। শুধু আব্বা বলতেন ভালো করে পড়াশুনা করো।
বাঙ্গালী মেয়ে হিসেবে আরো কিছু নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। যেমন; মেয়ে মানুষের বুদ্ধি কম। মেয়েদের কথা বাদ দাও। মেয়েদের চাকরি করার দরকার নাই। মেয়েলি কান্না থামাও। মেয়েলি স্বভাব বদলাও। মেয়েটি কালো আরেকটি দেখ। মেয়েটি মাল ইত্যাদি।
এসমস্ত কথা কিন্তু শিক্ষিত ব্যক্তিদের মুখেও শুনেছি। যাদেরকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ও জানি।
ছোটবেলায় আমি মানুষের ওসব নেগেটিভ কথা বিশ্বাস করতাম আবার আব্বার কথাও শুনতাম। এজন্য মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনার ফাঁকেফাঁকে গায়ে হলুদ মাখতাম। তখন বাজারে কাঁচা হলুদ পাওয়া যেত।
কাঁচা হলুদে গায়ের বর্নের কোন উন্নতি না হলেও পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হওয়া শুরু করল।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করার পর দেখলাম আমার স্কুল, কলেজ, আনার্স, মাস্টার্স সহ চারটা ফাস্ট ক্লাস হয়ে গেছে।। তারমধ্যে একটাতে আবার ফার্সক্লাস ফার্স্ট। নিজের বায়োডাটায় নিজেই মুগ্ধ।
চারদিক থেকে চাকরির অফার আসা শুরু করল। দরখাস্ত করা ছাড়াই। কোনটা ছেড়ে কোনটা ধরি আবস্থা। বিসিএস টাও পাশ করে ফেললাম।

বিয়ে? সেটা থেকে বাঁচতে মিথ্যা কথা বলতে হয়েছে আমাকে। বলেছি এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। আসলে হয়নি। কারন বিয়ের বাজারেও আমার কদর বেড়ে গিয়েছিল।
একসময় যারা আমার গায়ের বর্ন নিয়ে কানাঘুষা করত তাদের সুরও বদলে যেতে থাকল। আমিও আমার জীবন উপভোগ করতে শুরু করলাম। সুদর্শন মেধাবী আর্মি অফিসার স্বামী সন্তানসহ আমার চাকরি জীবন।

আসলে মেয়েদের গায়ের বর্ণই কি সব? আমার কাছে জীবনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, প্রবল ইচ্ছাশক্তি সেইলক্ষে কঠোর পরিশ্রম আর সাথে প্রচন্ড আত্ববিশ্বাসই নারীর আসল বর্ণ। যা নারীর মর্যাদা বাড়ায়। এই শক্তি যৌতুক কেউ হার মানায়। নারীর নির্যাতন কমায়। মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখায়। নিন্দুকের মাথানত করতে শেখায়।
এখন দেখছি ফর্সা মেয়েদের অনেকেই ঘরের চৌকাঠ পেরুতে পারেনি আর আমি পৃথিবীর আনাচে কানাচে চষে বেড়াই। আর সেই সুন্দরীরা অনেকেই আবার শশুড় শাশুড়ি ও স্বামী দ্বারাও নির্যাতিত হতে শুনি। যা সত্যি কষ্টকর।
এখন মনে হয় নারীর প্রতি এসব নেগেটিভ ধারণা আসলে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পুরুষরা বেশি করে কারন সে যা দেখে এসেছে তার পিতামাতার কাছ থেকে তাই তার জীবনে প্রয়োগ করে। এরা নারী জাতিকে সন্মান করতে শেখে নি, শিখেছে কিভাবে প্রভু হতে হয়।
সে ভুলে যায় সে কোন মায়ের গর্ভে জন্ম গ্রহন করেছিল। সে নির্যাতক খাতায় নাম লেখায় নিজের অজান্তেই। সমাজ যদি পুরুষ শাসিত না হয়ে নারী শাসিত হত তাহলে কিন্তু নারীরাও একি খাতায় নাম লিখাতো। নারী হত তখন নির্যাতক।
কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো অনেক নারী নিকৃষ্ট জীবনযাপন করে। শুধুমাত্র ভক্তি ও দায়বদ্ধতার কারনে। বিনিময়ে সে কিছুই পায় না। তারপরেও সে মাটি আঁকড়ে পরে থাকে। কারণ তার তো যাওয়ার কোন জায়গা নেই। কারন সে পরনির্ভরশীল। সেইসাথে যোগ হয় মানসিক নির্যাতন।
নারীর মুক্তি তখনই যখন সে আত্বনির্ভরশীল হবে। নিজের আত্ববিশ্বাস বাড়িয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবে। নিজের অধিকারর আদায় করতে পারবে। দেশ তার লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে সঠিক আইন প্রয়োগ করবে। আর যতদিন তা না হয় ততদিন নারী প্রভুভক্ত হয়ে থাকবে পুরুষের কাছে।
আপনি যদি বাবা মা হন তাহলে আপনার সন্তানকে কি শিক্ষা দিচ্ছেন তা ভেবে দেখুন।
আপনার দেয়া সঠিক শিক্ষার উপরই নির্ভর করবে আপনার সন্তান কি ধরণের ধারণা ও আচরণ করবে অন্যের প্রতি। তাকে ছেলেমানুষ মেয়েমানুষ নাকি মানুষ বানাবেন, তার দায়িত্ব কিন্তু আপনার আমার সকলের।
সকলের মঙ্গল কামনায়

আঞ্জু, লন্ডন।

 

কানাডায় হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হলেন বাংলাদেশী ফাতিমা

কানাডায় হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হলেন বাংলাদেশী ফাতিমা


আন্তর্জাতিক নারী


ফাতিমা কানাডার সংসদের বিরুদ্ধে প্রায় একাই লড়ে বিজয়ী হওয়া ঈমানোদ্দীপ্ত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কিশোরীর নাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন একে একে হিজাব ও নিকাব নিষিদ্ধ হচ্ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় কানাডাতেও কয়েকমাস আগে প্রকাশ্যে নিকাব নিষিদ্ধ করে একটা আইন পাস হয়। যার নাম বিল-৬২।

এর আইন অনুযায়ী কানাডায় প্রকাশ্যে কেউ নিকাব পড়তে পারবে না। ইউরোপবার্তা ফাতিমার জন্ম ও বেড়ে উঠা কানাডাতে হলেও অন্য আর দশটা মেয়ের মতো সে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে বরণ করে নেয় নি। বরং সে ইসলামী অনুশাসনকে আরও গভীরভাবে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে থাকে।

নিকাব পরেই সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করা সহ কানাডিয়ান মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে থাকে। তার স্বপ্ন, সে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে স্কুলে শিক্ষকতা করবে, ছোট ছেলে-মেয়েদের দ্বীনের শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। কিন্তু তার স্বপ্নের পৃথিবীতে কালো মেঘ হিসেবে আবির্ভূত হয় নিকাব নিষিদ্ধ করা সেই কালো আইন, বিল-৬২।

এই বিল পাসের পর কানাডার বিপুল সংখ্যক হিজাবি নারী যখন অন্ধকার দেখছিল, তখনই আলোর ঝাণ্ডা হাতে লড়াইয়ে নেমে পরে কিশোরী ফাতিমা। সে তার এক শুভাকাঙ্ক্ষীকে সাথে নিয়ে কানাডার আদালতে রিট করে। আইনি লড়াইয়ের সাথে চলতে থাকে বিল-৬২ এর বিপক্ষে জনমত গঠন।

লক্ষ্য পূরণের জন্য ফাতিমা তার কয়েকজন মুসলিম বান্ধবীকে নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে অনেক বাঁধা ও উসকানি সহ্য করেও নিকাব পরেই তার সব কার্যক্রম চালাতে থাকে। কানাডার প্রথম সারির টিভি চ্যানেলগুলিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে জনমত গঠনে বড় ভূমিকা পালন করে। তার হিজাবি জীবন নিয়ে একটা ডকুমেন্টারিও প্রচার হয় একটা চ্যানেলে।

দীর্ঘ এক অসম লড়াই শেষে গতকাল সেই ঐতিহাসিক দিনটির সূর্য যেন নতুন আলোর বারতা নিয়ে উদিত হয়েছে। কানাডার আদালত নিকাব নিষিদ্ধ করা সেই কালো আইন বিল-৬২ বাতিল করে দিয়েছে। ফাতিমা আজ বিজয়ী হয়েছে।

এই বিজয় শুধু তার নয়, এই বিজয় পুরা মুসলিম উম্মাহর, এই বিজয়ের গর্ব ১২ হাজার কিলোমিটার দূরের একজন মুসলিম হিসেবে আমাদেরও স্পর্শ করেছে। ফাতিমার এই সংগ্রাম আমাদের শিক্ষা দেয় শত প্রতিকূলতার মাঝেও অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার। তার বিজয় তো আমাদের সেই বাণীর কথাই মনে করিয়ে দেয়- “তোমরা হতাশ হয়ো না, মনমরা হয়ো না। তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হও।

সুত্রঃ ডেইলি মনিং

 

ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যায়!

ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যায়!


ডা. তামান্না কবীর


ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যেতে পারে।গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি এক মহিলার স্বামী বেশকিছুদিন হলেই ঘুরছে

“ম্যাডাম আমার ঔষুধ কেনার টাকা নাই,আপনি যদি একটু হাসপাতাল থেকে সব ঔষুধের ব্যবস্থা করে দিতেন”

এমন কথা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ রোগীই বলে,তবুও সিস্টারদের বলা হলো যেনো সাপ্লাই ঔষুধগুলো উনাকে দেয়া হয়।

আজ evening ডিউটিতে আমি যখন ডিউটি Doctor রুমে বসে আছি লোকটা এসে অবলীলায় ইংরেজীতে কথা বলে যাচ্ছে অথচ তার Appearance,, dress up কোনকিছুই তার এই আচরনের সাথে বিন্দু মাত্র ও মিলছে না,,,কৌতুহলের সীমা ছাড়িয়ে গেলে জিজ্ঞেস করলাম আপনি মনে হচ্ছে অনেকদূর লেখাপড়া করেছেন?

তার উত্তর, সে ঢাকা ভার্সিটি থেকে ইংরেজীতে মাস্টার্স করেছে,স্কলার্শীপ নিয়ে কলকাতা ইউনিভার্সিটিতেও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো তার…।একটা job করত,কোন একটা কারনে job টা তার থাকেনা,,পরে অন্য job গুলোতে ঘুষ না দিলে হচ্ছিলো না তাই সে এখন অটো ড্রাইভার. job এরও আর বয়স নাই….বৌয়ের অসুস্থতায় অটো চালানো বন্ধ তাই ইনকাম ও নাই…

সে যে DU এর English এ মাস্টার্স করা, এখন সেটা বলতেও লজ্জা পায়…এই সবগুলো কথা সে ইংরেজীতে fluently বলে গেলো…

এমন অনেক ঘটনা গল্পে পড়েছি,কখনও কারও মুখে শুনেছি কিন্তু নিজের চোখে এই প্রথম দেখলাম…
এদেশে প্রকৃত শিক্ষার মূল্য কোথায়…!!

 

বড়লেখায় কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে, পরে হত্যা

বড়লেখায় কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে, পরে হত্যা


নারী সংবাদ


বড়লেখায় এক কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে এক বখাটে। বিয়ের সাড়ে পাঁচ মাস পর ওই ছাত্রীকে হত্যা করে তা আত্মহত্যা বলে চালায় তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে কলেজছাত্রীর বাবা আদালতে মেয়ের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মামলার প্রতিবেদন ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, কলেজছাত্রী মাধবী রানী বিশ্বাসকে (১৮) কলেজে যাওয়া-আসার পথে এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। ৭ মার্চ কলেজের সরস্বতী পূজা শেষে বাড়ি ফেরার সময় মাধবীকে জুড়ী উপজেলার সায়পুর গ্রামের করুণা বিশ্বাসের ছেলে অরকুমার বিশ্বাস নামের ওই যুবক জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেয়ার ২৬ দিন পর অরকুমার বিশ্বাস কলেজছাত্রী মাধবীকে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে। কিন্তু তার বাবা-মা এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় বাড়িতে তুলছিল না মাধবীকে। পরে দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

মাধবীর বাবা অকিল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, সামাজিকভাবে বিয়ের পর মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। বিয়ের সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে একটিবারের জন্যও মাধবীকে তার বাবার বাড়িতে যেতে দেয়া হয়নি। ১৮ আগস্ট রাতে স্বামী অরকুমারসহ তার পরিবারের সদস্যরা মাধবীকে মারধর করে। একপর্যায়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর তারা আত্মহত্যার নাটক সাজায়। মাধবী আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচারণা চালালেও বাবার বাড়িতে কোনো খবর দেয়া হয়নি। প্রতিবেশী মারফত খবর পেয়ে পরদিন সকালে মাধবীর বাবা ও মা জুড়ী থানায় গেলে পুলিশ তাদেরকে মেয়ের লাশ দেখতে না দিয়েই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়। মেয়ের গলায় দায়ের কোপ ও দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়টি জেনে অভিযোগ দিতে চাইলে পুলিশ উল্টো হুমকি-ধামকি দেয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে আসার পরও স্বামীর বাড়ির লোকজন তাদেরকে লাশ দেখতে দেয়নি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মাধবীর পরিবারকে না জানিয়ে লাশ দাহ করে। অবশেষে ২৫ আগস্ট মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আমলি আদালতে স্বামী অরকুমার বিশ্বাসকে প্রধান করে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মাধবীর বাবা।

জুড়ী থানার ওসি মো. জাহাঙ্গির হোসেন সরদার জানান, আদালতের নির্দেশে মাধবী রানীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার প্রতিবেদন ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সুত্রঃ যুগান্তর।

 

ফরিদপুর অজ্ঞাত যুবতীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


ফরিদপুরের এক যুবতীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের তালতলা বাজার এলাকায় গোয়ালন্দ-তারাইল আঞ্চলিক বেড়িবাধ সড়কের পাশে থেকে পরিচয় না জানা লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো: এনায়েত হোসেন জানান, সকালে অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বারী চৌধুরীর কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

যুবতিটির বয়স আনুমানিক ২৬ বছরের মতো বলে তিনি জানান।

এনায়েত হোসেন জানান, লাশের মাথায় জখমের চিহ্ন এবং গায়ে থাকা ওড়নায় প্রচুর রক্তের দাগ রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আবার কোনো সড়ক দুর্ঘটনায়ও তার মৃত্যু হতে পারে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে হত্যার কারণ জানা যাবে।

 

গরমে লাচ্ছি বানিয়ে ফেলুন বাসায়


রেসিপি


গরমের তৃষ্ণা মেটাতে মানেই লাচ্ছি। কম বেশী আমরা সবাই খুব পছন্দ করে থাকি।আর তাই আজ কয়েক প্রকারের লাচ্ছি তৈরি করে দেখাবো।

মিষ্টি লাচ্ছিঃ

উপকরণ :
মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

মিষ্টি দই লাচ্ছি তৈরি করুন খুব সহজে

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

কলার লাচ্ছিঃ

মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
কলা – ২ টা
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

টক মিষ্টি লাচ্ছিঃ

টক দই – ১ কাপ
মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

ম্যাংগো লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • ম্যাঙ্গো স্লাইস- ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

লেবুর লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • লেবুর রস – ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

বাদামের লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
  • বাদাম কুচি কয়েক প্রকার-  (এক কাপ)
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।
সুত্রঃ https://nahidarecipe.com।

 

আত্মহত্যা ঠেকাতে কীটনাশক নিষিদ্ধ


স্বাস্থ্যকথা


প্রতি বছর আনুমানিক দেড় লাখের মতো মানুষ আত্মহত্যা করে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পান করে। জাতিসঙ্ঘ এইসব পণ্যের সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা কমাতে কঠোর নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে।

প্রায় দুই দশক ধরে শ্রীলঙ্কা ধীরে ধীরে বেশকিছু কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে এবং দেখা গেছে আত্মহত্যায় মৃত্যুর পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে সেখানে। তবে অন্যান্য দেশে আত্মহত্যায় ব্যবহার করা হয় এমন বেশিরভাগ বিষাক্ত কীটনাশক এখনো সহজলভ্য।

১৯৯০ এর সময় থেকে সারা বিশ্বে কীটনাশক পানে আত্মহত্যার সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এলেও এশিয়ার দারিদ্রপীড়িত গ্রামাঞ্চলে এখনও এটি মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

১৯৮০ এবং ৯০-এর দশকে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি আত্মহত্যার হার ছিল শ্রীলঙ্কায়। আর তার মধ্যে কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশই ছিল কীটনাশক পান করে।

তবে, এসব পণ্য নিষিদ্ধকরণে দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশটির সরকারের নেয়া পদক্ষেপের ফলে সামগ্রিক আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে ৭০%।

কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করা মানুষের সংখ্যা এখনো কমেনি, বরং হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষের সংখ্যা কমেনি, তবে সেসব কীটনাশক কম বিষাক্ত ছিল।

কৃষিক্ষেত্রের জন্যে কীটনাশকের প্রতিস্থাপনে এসেছে কম বিষাক্ত কীটনাশক।

অত্যন্ত বিপদজনক কীটনাশকের নিরাপদ বিকল্পের ব্যবহারে কৃষির ফলন কম হয়েছে এমন প্রমাণ বেশি পাওয়া যায়নি, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।

এই সময়ে অবশ্য স্বাস্থ্য সেবার মানও উন্নত হয়েছে।

ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করে মারা গেছেন ১,৩৪,০০০ জন মানুষ। যার মধ্যে কীটনাশকের কারণে মারা গেছেন ২৪ হাজার। যদিও এই মৃত্যুগুলো দেশটিতে সেভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

ভারতের চন্ডীগড় মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিচার্স ইন্সটিটিউটের ডা. আশীষ ভাল্লা বলছেন, সাধারণ মানুষ প্রায়শই আত্মহত্যার বিষয়টিকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করার ভয়ে লুকিয়ে রাখে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিশ্লেষক দেখেছেনে যে, ভারতে নিবন্ধিত কীটনাশকের মধ্যে কমপক্ষে দশটি অত্যন্ত বিষাক্ত। আর সেগুলোই অধিকাংশক্ষেত্রে আত্মহত্যায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসবের অনেকগুলোই ভারত সরকার নিষিদ্ধ করছে বা ২০২০ সালের মধ্যে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার নির্দেশিকা অনুযায়ী এখনো এক ডজনেরও বেশি অত্যন্ত বিপজ্জনক কীটনাশক সহজলভ্য রয়ে গেছে।

এশিয়ার অন্য অঞ্চলগুলোর কী অবস্থা?
২০০০ সালের পর থেকে একই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বাংলাদেশেও। এর ফলে হ্রাস পেতে শুরু করেছে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার। তবে কীটনাশক-বিষক্রিয়ায় হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১২ সালে একধরনের অত্যন্ত বিষাক্ত আগাছানাশক নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে কীটনাশক-বিষক্রিয়াজনিত আত্মহত্যার সংখ্যা হ্রাস পায় তাৎক্ষণিকভাবেই। আর সামগ্রিক মৃত্যুহার হ্রাসেও এটি প্রভাব ফেলে।

২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত চীনে চালানো এক সমীক্ষায় দেখা যায়, সেখানে আত্মহত্যার সংখ্যা কমেছে এবং কীটনাশক পানে মৃত্যুর হার অত্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়- এ বিষয়ে দেশটিতে কঠোর বিধি নিষেধ প্রয়োগ, কৃষিতে কমসংখ্যক মানুষের সংশ্লিষ্টতা, নগরায়ন বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন এবং বিশেষ করে জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন।

২০০১ সাল থেকে পাঁচ বছরে ২১টি কীটনাশককে নিষিদ্ধ করেছে চীন।

দেশটির কীটনাশক ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের প্রধান ডা. দিল্লী শর্মা বলেন, এর মধ্যে কয়েকটি স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তবে কয়েকটি বর্জন করা হয় বিশেষ করে আত্মহত্যায় ব্যবহারের কারণে।

– বিবিসি

 

স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়ায় ‘স্বামী’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়ায় ‘স্বামী’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা


নারী সংবাদ


জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী একেএম নজমুল হাসানের নামে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা এক মহিলা বাদী হয়ে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি দায়ের করেন ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদরের সুত্রাপুর এলাকার রিয়াজকাজী লেনের মৃত নজিব উদ্দিন আহম্মেদের পুত্র জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম নজমুল হাসান (৬০) ওরফে জামান ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা দুই সন্তানের জননীর পরিচয় হয়। সেই সুবাদে প্রেম থেকে ২ নভেম্বর ২০১১ নজমুল হাসানের ভাড়া বাড়ি বগুড়া সদরের কালিতলায় জনৈক কাজীর মাধ্যমে ইজাব কবুলে বিবাহ হয়।

তারপর থেকে নজমুল হাসান ও সেই নারী স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে ঘর সংসার করে। সংসারকালীন সময়ে প্রায়ই ওই মহিলা নজমুল হাসানকে রেজিস্ট্রি কাবিননামা করতে চাপ প্রয়োগ করতো। কিন্তু নজমুল হাসান বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।

গত ফেব্রয়ারি মাসের ১২ তারিখে শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার মোজাম্মেল হকের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা রানীর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসকালে লিপি রেজিস্ট্রি কাবিননামা করার জন্য নজমুল হাসানকে ফের চাপ প্রয়োগ করে। এতে নজমুল হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাতে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশা করে। ঘটনাস্থল থেকে চলে যাবার পর নজমুল হাসান ওই মহিলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

মহিলা ভরণ পোষণ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে আগস্ট মাসের ২ তারিখে নজমুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে দেখা করে। তখন নজমুল হাসান সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে লিপিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়। উপায়ান্তর না পেয়ে বিচার ও স্ত্রীর মর্যাদার দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নেওয়ায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়াকে তদন্তের আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নজমুল হাসানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি ওই স্বামী পরিত্যাক্তা মহিলার সাথে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে বলেন, ব্ল্যাক মেইলের চেষ্টা করে মহিলাটি মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে।

তবে বাদী বলেছেন, আমি ইমামের মাধ্যমে বিয়ের পর দীর্ঘদিন এক সাথে ঘর সংসার করেছি। এ সময়ে উনি (স্বামী) সংসারের আসবাপত্রসহ সবকিছু কিনে দিয়েছেন এবং পুরো খরচ দিয়েছেন। কিন্তু কাবিনের জন্য চাপ দেয়ার কারণে তিনি আর খরচ দেন না। স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে ঘরসংসারের অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে যা আইনজীবীকে দিয়েছি।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

অতিমাত্রায় ভালোবাসেন?

অতিমাত্রায় ভালোবাসেন?


ডা. মারুফ রায়হান খান


গতকালের অভিজ্ঞতাটা বলতে চাই৷

অতিরিক্ত ভালোবাসা জিনিসটা বোধহয় কখনও কখনও খারাপ ফল নিয়ে আসে। শুধু খারাপ না, বেশ খারাপ। গতকালের অভিজ্ঞতা বলি।

মধ্যবয়স্ক রোগী। প্রচণ্ডমাত্রার বুকে ব্যথা। বুক ধড়ফড়। ঘাম। পেশেন্ট শকে। অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যাচ্ছে সম্ভবত রোগীর হার্ট এটাক হয়েছে। ইসিজিতে চলে এলো ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া। মনিটরে দেখাচ্ছে হার্ট রেইট ২৪৩ বিটস পার মিনিট! এটা এমনই এক খারাপ অবস্থা যে কার্ডিওলজিতে কাজ করে এমন কোনো চিকিৎসক আমি দেখিনি যিনি বিশেষভাবে এলার্ট না হয়ে যান এমন রোগী এলে। ব্রেইনের মাঝে অটোমেটিক্যালি ‘স্পেশাল ইমার্জেন্সি এটেনশান’-এর সাইরেন বেজে ওঠে। পেশেন্টের যা অবস্থা তা হৃদরোগ শাস্ত্র অনুযায়ী ডিসি শক দিয়ে তার হার্টের রিদম স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করতে হবে অনতিবিলম্বে। ডিসি শক দেওয়ার আগে আমরা পেশেন্ট পার্টিকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলি। পরে আবার অভিযোগ না যায় ডাক্তার শক দিয়ে আমার ভালো রোগী মেরে ফেলেছে। কে-ই বা চায় অনলাইন পত্রিকার “এ কী করলেন লোভী ডাক্তার : কারেন্টের শক দিয়ে কথা বলতে থাকা রোগীকে খুন (দেখুন ভিডিওসহ)” শিরোনাম হতে?

বুঝিয়ে বলা হলো বিস্তারিত। শক না দিলে মৃত্যুর সম্ভাবনা যে প্রবল তাও জানালাম। রোগীর স্ত্রী অসম্মতি জানালেন এবং যুক্তি হিসেবে যা দাঁড় করালেন তা আমাকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। বললেন উনি ‘নরম’, শক দেবেন না৷ পেশেন্ট পার্টি পারমিশান না চাইলে আমরা শক দিই না। ভাবলাম ওষুধ দিয়ে চেষ্টা করে দেখা যাক। প্রোটোকোল ম্যানেজমেন্টের সব ওষুধ দেওয়া হলো। এমিওডারোন (এ রোগের প্রধান ওষুধ) নামক ওষুধটি সাপ্লাই নেই। লিখে দিলাম বাইরে ফার্মেসি থেকে ৮ এম্পুল নিয়ে আসতে। রোগীর সাথের লোক গেলেন। এই যে গেলেন তার আর দেখা মেলে না৷ আমি আরও আড়াইশো রোগীর ব্যস্ততার মাঝেও চিন্তিতবদনে রোগীর কাছে যাই। সেই ওষুধ তো আর আসে না। রোগীর স্ত্রী বসে বসে পান খায়। মেজাজ চরমে উঠে গেলো। কিছু বললে বলবে রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করলেন ডাক্তার। ঘণ্টা যায় দুঘণ্টা যায় তিন ঘণ্টা যায়… সে তো আসে না। রোগীর অবস্থা খারাপ থেকে খারাপ হতে থাকে। এরমধ্যে একবার এসে বলে রোগীর এখানে অস্থির লাগছে, বাসায় চলে যেতে চায়, ছুটি দিতে! আক্কেল দেখলে! দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর তারা ওষুধ নিয়ে এসেছেন। ততোক্ষণে রোগী মৃতপ্রায়। শুরু করা হলো ওষুধ। কী ভাবছেন? বেঁচে গেলো? নাহ ডাক্তাররা ম্যাজিশিয়ান না। এই রোগী বাঁচানো যায় না। কোনো চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব না। মনিটরে প্রায় যখন স্ট্রেইট লাইন চলে এসেছে তখন রোগীর ওয়াইফ বলে আপনারা রোগী বাঁচাতে যেভাবে ভালো হয় করেন শক দিতে চাইলে দিন!! এই কথাটা সাড়ে ৪ ঘণ্টা আগে যদি বলতেন তিনি!

এই মৃত্যুর দায়টা আসলে কার? এই রোগের চিকিৎসা আমি জানি, আমার কাছে মেশিন ছিল আমি কেন দিতে পারলাম না? আমার চোখের সামনে কেন রোগী মারা গেলো? আপনি আপনার স্বজনকে অতিমাত্রায় ভালোবাসেন মানলাম, আমিও আমার রোগীকে কম ভালোবাসি না। জানপ্রাণ এক করে আমার রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে আপনার ‘আলগা আজাইরা দরদ’-এর জন্য পারি না। লোকটা শুধু তড়পাচ্ছিল–এই স্মৃতি আমাকে দংশন করে। এটা তো শুধু একটা রোগীর কথা… গতকাল ডিউটিতে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ ছিল না এমন অবস্থা ছিল। তবুও এক রোগীর লোক প্রায় তেড়ে এসেছিল তার সিরিয়াস রোগীর জন্যে আরেক রুমে অন্য ডাক্তারকে ডাকতে বলায়। আমি আর ইন্টার্ন–কয়জনকে একসাথে দেখা সম্ভব? …রাত সাড়ে এগারোটায় যখন ফিরলাম তীব্র মাথাব্যথা, ঘুমের ওষুধ খেয়েই আমাকে ঘুমাতে হয়েছে। আমি বিনা বেতনে কাজ করি।

#পোস্টগ্রেজুয়েশানের_দিনগুলো -১০

 

প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী ধর্ষণ

প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী ধর্ষণ


নারী সংবাদ


বগুড়ার শেরপুরে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রণবীরবালা গ্রামে। উক্ত ঘটনায় রোববার দুপুরে ওই কিশোরীর বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক ফটিক মিয়া ওরফে ফছিকে (৪৫) গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের এমদাদ হোসেনের ছেলে।

শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ফটিক মিয়া স্থানীয় রণবীরবালা বাজারে নৈশপ্রহরীর চাকরি করতেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরীর বাবার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এরই সূত্রধরে ঐ বাড়িতেও যাতায়াত ছিল ফটিকের। নিয়মিত আসা-যাওয়ার সুযোগে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে সে। এমনকি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফটিক ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানার পর ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

এরপর পুলিশ রণবীরবালা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ঘরে বানাতে পারি

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ঘরে বানাতে পারি


ঘরকন্যা


রেস্টুরেন্টে গিয়ে কিংবা ফাস্টফুডের দোকান মানেই বাচ্চাদের পছন্দ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বেশ মজার একটি খাবার। ঘরেই তৈরি করতে পারেন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। রেসিপি হলো

উপকরণঃ
১. আধা কেজি মাঝারি সাইজের আলু,
২. হলুদ,
৩. সামান্য লবণ,
৪. ২৫০ গ্রাম তেল।

প্রণালিঃ
ভালো মানের বড় আকারের আলু, খোসা ছাড়ানো আলুকে আংগুলের সাইজে ফালি ফালি করে কেটে নেই। এরপর ফালি করা আলুগুলো ঠান্ডা পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১০-১৫ মিনিট পর আলুর ফালিগুলো লবণ পানি থেকে ছেঁকে নিতে হবে। ভালোভাবে আলুর ফালি থেকে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। পানি ঝরানো হলে আলুর ফালিগুলোকে সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে। এরপর কড়াই বা ফ্রাই প্যানে ডুবো তেল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। তেল গরম হলে অল্প অল্প করে মাখানো আলুর ফালিগুলো তেলে দিয়ে আস্তে আস্তে ভাজতে হবে।

পরিবেশনঃ
লালচে আর মুচমুচে হয়ে এলে ছাঁকনি ছেঁকে তেল থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তুলে নিতে হবে। এভাবে খুব সহজে অল্প সময়ে তৈরি হয়ে যাবে মজার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……৩

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……৩


আফরোজা হাসান


হ্যা বাবা আল্লাহ সত্যি এমন বলেছেন।
আল্লাহ আর কি কি বলেছেন আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন প্রতিবেশীদেরকে সাহায্য করতে। প্রতিবেশী হচ্ছে তারা যারা আমাদের আশেপাশে থাকে। যেমন ধরো, আমাদের পাশের বাসায় তাসনিয়া আর তাহসান। ওরা হচ্ছে তোমার প্রতিবেশী। ওরা যদি কখনো তোমার কাছে কিছু চায় বা ওদের কিছু প্রয়োজন হয় তাহলে তোমাকে ওদেরকে সেটা দিতে হবে। কেন দিতে হবে? কারণ আল্লাহ দিতে বলেছেন। আর তুমি যদি আল্লাহর কথা মেনে চলো তাহলে কি হবে বলো তো?
আয়াত বলল, তাহলে মারা যাবার পর আমরা যখন নতুন আরেকটা জগতে যাবো যাবো তখন আল্লাহ আমাকে জান্নাত দিবেন। যেখানে আমার যা ইচ্ছে আমি করতে পারবো। যা চাইবো তাই পাবো।
তানিয়া হেসে বলল, একদম ঠিক বলেছো। এবার আম্মুর একটা প্রশ্নের জবাব দাও। এই যে তুমি আমাকে সবসময় বলো তুমি বিজ্ঞানী হতে চাও। এখন বিজ্ঞানী হবার জন্য তোমাকে অনেক অনেক পড়াশোনা করতে হবে। কিন্তু তুমি যদি একটুও পড়াশোনা না করে শুধু মুখেই বলো আমি বিজ্ঞানী হবো, আমি বিজ্ঞানী হবো। তাহলে কি আম্মু তোমার কথা বিশ্বাস করবো?
পড়াশোনা না করলে তুমি আমার কথা বিশ্বাস করবে কেন?
সেটাই তো! ঠিক তেমনি এই যে তুমি বললে মারা যাবার পর আমরা নতুন আরেকটা জগতে যাবো। এখন তুমি যদি এই কাজগুলো সুন্দর মত করো তাহলেই আল্লাহ বুঝবেন তুমি সত্যিই এই কথা বিশ্বাস করো।
শুধু এই কাজ গুলো ঠিকমতো করলেই আমি জান্নাতে যেতে পারবো আম্মু?
তানিয়া হেসে বলল, আমাদেরকে এই কাজগুলো তো করতেই হবে সাথে সাথে আল্লাহ আমাদেরকে এছাড়াও যা যা করতে বলেছেন তা করতে হবে। এবং যা যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ আমাদেরকে সেই কাজগুলোই করতে বলেছেন যেগুলো ভালো কাজ। আর যেগুলো পচা কাজ সেগুলো করতেই নিষেধ করেছেন। এখন বলো আমরা যদি জান্নাতে যেতে চাই এবং সেখানে যাবার পর যদি সবকিছু মনের ইচ্ছা মত পেতে চাই তাহলে আমাদেরকে কি করতে হবে?
আয়াত বলল, আল্লাহর কথা মেনে চলতে হবে।
মাশাআল্লাহ এই তো তুমি বুঝতে পেরেছো। এখন যাও পড়তে বসো।
কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর আয়াত বলল, আম্মু আমি তাসনিয়া আর তাহসানকে খেলনা দিয়ে আসি?
কেন?
আল্লাহ দিতে বলেছেন যে! আমি দিয়ে আসি আম্মু প্লিজ নয়তো আল্লাহ আমাকে জান্নাত দেবেন না।
তানিয়া ছেলেকে আদর করে হেসে বলল, আচ্ছা ঠিকআছে যাও দিয়ে এসো।
আয়াত উঠে তার রুম থেকে খেলনা নিয়ে তাসনিয়া আর তাহসানকে ডাকতে ডাকতে পাশের বাসায় উদ্দেশ্যে ছুট লাগালো।

তানিয়াও হেসে আলহামদুলিল্লাহ বলে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়লো।

চলবে…

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……২

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……২


আফরোজা হাসান


দুহাতে খেলনা গাড়ি বুকে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রান্নাঘরে রওনা করলো তানিয়া। প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে কিন্তু আট বছর বয়সি বাচ্চা ছেলের উপর রাগ দেখানো অর্থহীন। নতুন খেলনা কেনার পর পুরনো খেলনা আর ধরে না আয়াত। তাই পাশের বাসার ভাবীকে বলেছিলো এসে কিছু খেলনা নিয়ে যেতে উনার বাচ্চাদের জন্য। ছোট চাকরি করেন বিধায় সংসার সামলাতেই হিমশিম খেতে হয় পরিবারটিকে। বাচ্চাদের জন্য খেলনা কেনা তেমন করে হয়ে উঠে না। একগাদা খেলনা স্টোররুমে পড়ে ছিল তাই এসে নিয়ে যেতে বলেছিল তানিয়া। আয়াতকে আগেই সেটা জানিয়েছিল কিন্তু যেই বাচ্চাদেরকে নিয়ে পাশের বাসায় ভাবী এলেন অমনি বেঁকে বসলো আয়াত। কিছুতেই দেবে না তার খেলনা। ঐ বাচ্চারাও শুরু করলো কান্না। শেষ মেশ অনেক বুঝিয়ে পছন্দের কিছু খেলনা বের করে রেখে বাকীগুলো দেয়ার জন্য আয়াতকে রাজী করে উভয় দিক সামাল দিয়েছে তানিয়া। বাচ্চারা মাঝে মাঝে এত বেশি অপ্রস্তুত করে। উফফ…!
আযান শুনে মনের সব বিরক্তি ঝেড়ে ফেলে ছেলেকে ডেকে নামাজ আদায় করে নিলো তানিয়া। নামাজ সেরেই নিজের কাজে ছুট দেয় আয়াত। ছুট দেবার আগেই ধরে ফেললো তানিয়া ছেলেকে। আদর করে কাছে বসিয়ে বলল, বাবা তোমাকে না সেদিন বুঝিয়ে বললাম নামাজের সময় নড়াচড়া করতে নেই, এদিক সেদিক তাকাতে নেই। কিন্তু তুমি তো আজও নামাজের মধ্যে অনেক নড়াচড়া করেছো।
আয়াত অপরাধী কণ্ঠে বলল, আই এম সরি আম্মু। আর এমন হবে না দেখো।
তানিয়া ছেলেকে আরো কাছে টেনে নিয়ে বলল, আম্মুকে এখন সূরা মাউন তেলাওয়াত করে শোনাবে বাবা?
সাথে সাথেই সূরা মাউন তিলাওয়াত করে শোনালো আয়াত।
তানিয়া ছেলেকে আদর করে হেসে বলল, মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর হয়েছে তোমার তিলাওয়াত। সূরা মাউনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে কি বলেছেন জানো বাবা?
আয়াত আগ্রহ ভরা কণ্ঠে বলল, কি বলেছে আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন, আমাদেরকে খুব সুন্দর করে নামাজ পড়তে হবে। নামাজের সময় নড়াচড়া করা যাবে না, এদিক সেদিক তাকানো যাবে না। তুমি যেমন বাবার সাথে নামাজ পড়ার সময় খুব সুন্দর করে নামাজ পড়ো, যাতে বাবা তোমাকে গুড বয় বলেন। তেমনটিও করা যাবে না। বাবা, আম্মু বা অন্যকাউকে দেখানোর জন্য না তোমাকে সুন্দর করে নামাজ পড়তে হবে কারণ আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। তোমাকে গুড বয় হতে হবে আল্লাহর কাছে। বুঝতে পেরেছো বাবা?
জ্বি আম্মু আমি বুঝতে পেরেছি। আমি এখন থেকে আল্লাহর কাছে গুড বয় হবো।
ইনশাআলাহ। সূরা মাউনে আল্লাহ আরো কি বলেছেন জানো?
কি বলেছেন আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন, আমাদেরকে গরীব-দুঃখী-অভাবী ও অসহায়দেরকে সাহায্য করতে হবে। যাদের খাবার নেই তাদেরকে খাবার দিয়ে সাহায্য করতে হবে, যাদের পোশাক নেই তাদেরকে পোশাক দিয়ে সাহায্য করতে হবে। যাদের খেলনা নেই তাদেরকে খেলনা দিয়ে সাহায্য করতে হবে।
সাথে সাথে আম্মুর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালো আয়াত। সূক্ষ্ম অপরাধ বোধের ছায়া ভেসে উঠলো চেহারাতে।
তানিয়া সেটা দেখেও না দেখার ভান করে বলল, আরো কি করতে হবে জানো সোনামণি? নিজের সাথে সাথে অন্যকেও উৎসাহিত করতে হবে গরীব-দুঃখী-অভাবী ও অসহায়দেরকে সাহায্য করতে। যেমন ধরো আম্মু কাউকে তোমার পুরনো পোশাক বা খেলনা দিতে চাইলাম। তখন তোমাকেও হাসি মুখে আনন্দের সাথে আম্মুকে সেসব দিতে উৎসাহিত করতে হবে।
আয়াত চিন্তিত কণ্ঠে বলল, আল্লাহ সত্যি এমন বলেছেন আম্মু?

চলবে…

 

সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায় 

সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায়


শামসুন নাহার মলি


সমবয়সী এক ভাবি প্রায়ই অনেক কিছু জানতে চান দেখা হলে,
সে দিন বল্লেন,
“আচ্ছা মলি ভাবি সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায়?”

এক চোট ভেবে নিয়ে বল্লাম,
“ভালবাসা কমে না,বরং আমার বেড়েছে।সন্তান হবার পর বুঝেছি বাবা মা কি জিনিস,কি নিয়ামত,কত টুকো নি:স্বার্থ ভাবে তারা ভালবাসেন,কতটা ভালো চান,প্রয়োজন মেটান,বোঝেন।এটাও বুঝেছি বাবা মা সন্তানের জন্য কতটা ভাবেন,রক্ত ঘাম ঝরিয়ে মানুষ করেন।ভালোবাসা কমেনি,শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে,নিজেকে দিয়ে বুঝেছি কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছেন,এখনো করে যাচ্ছেন আমাদের জন্য।
তবে হ্যা,সন্তান হবার পর দায়িত্ব বোধ বেড়েছে।

ভাবি কিছু বাস্তব উদাহরণ চাইলেন,
বল্লেন,”দেশে গিয়ে যখন বাবা মা আর সন্তান কে দেখা শুনা করেন কোনটা বেশি গুরুত্ব দিয়ে করেন?”

একটু চমকে গেলাম,আসলেই তো আমরা এমন এক বিন্দুতে বসা যার এক মেরুতে সন্তান আরেক মেরুতে বাবা মা।সন্তান ছোট মানুষ,বাবা মা ছাড়া অচল,কর্তব্যের খাতিরেই তো আগেই সন্তানের প্রয়োজন বা কাঁন্না থামাই।তার মানে কি এই যে বাবা মাকে ভালোবাসিনা?

আসলে একজন বাচ্চার পাশে অনেক কেই পাওয়া যায়।ক্ষুধা লাগলে কতজন খাবার দেয়,কাঁদলে খেলনা দেয়,ললিপপ দেয়,ঘুরতে নিয়ে যায়।এমন কি পটি ক্লিন ও করে আপন কতজন ই।কিন্তু ঠিক অপর মেরুর আরেক জোড়া ভালোবাসার মানুষ দের জন্য কজন এমন করে?একজন বাবা মা ৮/১০ টা সন্তান কে হেসে হেসেই লালন পালন করে,অনুভব করে প্রতিটা প্রয়োজন,সমস্যা কে।
কই ৮/১০ জন সন্তান তো পারেনা ২ জন বাবা মায়ের বৃদ্ধকালে ঠিক ওভাবে ছোট বেলার মত করে পাশে থাকতে,ভালোবাসতে,প্রয়োজন মেটাতে?

কেন পারেনা?

কারণ হলো ঐ পিছুটান,সংসার সন্তানের দায়িত্ব বোধ।কোন কোন সন্তান এত টাই উদাসিন হয়ে যান যে বাবা মার সাথে ঠিক মত কথা বলা,সময় দেয়া,খোঁজ নেয়ার ও সময় পান না।

ভাবি,আপনার কি মনে হয় ভালোবাসা কমে গেছে বাবা মায়ের প্রতি?

না ভালোবাসা আসলে কমে না,কোন কোন সন্তান ব্যালেন্স করতে পারেনা।তাদের ভালোবাসার যায়গা অনেক।কোনটাকে কত টুকো গুরুত্ব দিতে হবে,প্রাধান্য দিতে হবে তারা খেয়াল করার সময় পান না।

আমি দেশে গেলে চেষ্টা করি বাবা মা আর সন্তানের জন্য সমান ভাবে করতে।বাচ্চাদের কিছু কাজ কমিয়ে বাবা মা কে সময় দিই।

আমার বড় ভাই আর বোন সেদিন বল্লেন,
“প্রতিবেশি,দীনি ভাই বোন এর জন্য আমরা যত টুকো করি বাবা মা,শ্বশুর,শাশুড়ির জন্যও করবো।দাওয়াতে তাদের মুখে মজার মজার খাবার তুলে দিই,বাবা মা,শ্বশুর-শাশুড়ী ও মাঝে মাঝে এরকম খাবার খাচ্ছে কিনা,পরিবেশ তৈরি করতে পারছেনা খোঁজ নিবো।এটাও আমাদের কর্তব্য তাদের জন্য সেরকম বা তার চেয়ে বেশি বেশি এরকম পরিবেশ তৈরী করা।”

মেইন থিম টা হলো,আমাদের বুঝতে হবে সন্তানের জন্য,প্রতিবেশির জন্য,দ্বীনি ভাই বোন দের জন্য করতে করতে আমাদের আসল নেয়ামাত যাদের জন্য দুনিয়াতে এসেছি তাদের বঞ্চিত করছি কিনা।কোনটার প্রায়োরিটি আগে সেটা বুঝতে হবে।সন্তান দের অভুক্ত রেখে মেহমান দের জন্য জান মাল উজাড় করে দিচ্ছি কিনা কিংবা বাবা মা কে অভুক্ত রেখে সংসার বা বাইরের জগৎ নিয়ে বেশি মাতামাতি করছি কিনা।

ভাবি,একটা সময় সব থাকবে,সব হবে কিন্তু বাবা মা থাকবে না,তাই তারা যতদিন আছেন তাদের সম্মান করি,ভালোবাসি।কারণ একজন বাচ্চার পেছনে কতজন খাটে,কিন্তু একজন মুরুব্বীর ডাকে কেউ সাড়া দেয়না।বিছানা নোংরা করলে ও পরিস্কার করার কেউ থাকেনা।যে সব সন্তান রা এত বড় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে হয়তো তারাই আশাবাদী যে তাদের বার্ধক্যেও তাদের সন্তানরা পাশে থাকবে।কিন্তু বাকিরা?

দুনিয়ার সব কিছু করার সময় হয়,বাবা মায়ের সাথে কথা বলার সময় হয়না,কিসের এত ব্যস্ততা?আমি বুঝিনা।

আমার ডক্টর বলেছিলেন,তোমার সাথে কাউন্সিলিং এর জন্য নার্স পাঠাবো?
গল্প করলে তোমার স্ট্রেস কমবে,ডিপ্রেশন কমবে।
আমি না করেছিলাম।আমার স্ট্রেস কমে আমার ২ জোড়া বাবা মার সাথে কথা বল্লে।আমার বড় ভাই বোনের সাথে কথা বল্লে।যারা আমাকে দ্বীন আর দুনিয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়,প্যারেন্টিং শেখায়।এদের চেয়ে বড় আর ভালো ডক্টর আমার জীবনে আসেনি।

সেজন্যই তো শত ব্যস্ততার ভিতর ও নিজের খবর দেই তাদের,আমিও খোঁজ নিই।খেয়াল করে দেখলাম এতেই আমি ভালো থাকি। আর ভালো থাকি ইবাদাহ বাড়াতে পারলে আর পরোপকার করলে।আরো কিছু মানুষের সাথে কথা বল্লে আমার স্ট্রেস কমে,শান্তি লাগে।কিন্তু ডমিনেটিং ক্যারেক্টার,অহংকারী মানুষ,কঠোর,জটিল স্বভাবের মানুষ,বদ রাগী,অগোছালো,ঝগড়াটে,কম প্রাক্টেজিং দের সাথে মিশলে,কথা বল্লে শান্তি লাগেনা।
তাই নিজের মানুষিক সুস্থতার জন্য এসব মানুষ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে।কম কথা বলি।

আমি বোকা হলেও এত টুকো বুঝে চলি কোনটা গুরুত্বপূর্ণ।কোনটা আমার দরকার।আগে আমার দ্বীন,তার পর বাবা মা সন্তান পরিবার তারপর সমাজ।

ভালোবাসা কমছে না বাড়ছে এটার চেয়ে দায়িত্ব পালনে আমি সফল না বিফল এটা আমায় ভাবায়।

ধন্যবাদ ভাবিকে,যার এই মুল্যবান প্রশ্নের উত্তর খুৃঁজতে গিয়ে আমার এই লম্বা ভাবনার সুজোগ হলো।

#এন্টিডিপ্রেশন

 

হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ 

হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ 


স্বাস্থ্যকথা


“যদি সুস্থ থাকতে চান

নিজের মনকে সুস্থ রাখুন”

আজ ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’। প্রায় প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর ‘হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামের সংগঠন দিবসটি পালন করছেন এবং সারা মাসব্যাপী আত্মহত্যা প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে নানা কর্মকাণ্ডের আয়োজনও রেখেছেন। ২০১৯ এ বছরে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করা’।

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দিনটিকে সামনে রেখে আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নতুন এই রিপোর্ট বলছে, প্রতি ৯ মিনিটে ৯ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন আত্মহত্যায়। যদিও বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতিবছর ৮ লাখ মানুষ মারা যান শুধু আত্মহত্যায়, যা ম্যালেরিয়া, স্তন ক্যান্সার বা যুদ্ধ এমনকি হত্যাযজ্ঞের কারণে মারা যাওয়ার চেয়েও বেশি।

দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীতে সাইক্লিনিং মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করেছে হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। ভোরে সাইকেল র‍্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হল আত্মহত্যা প্রতিরোধ সচেতনতার  প্রচারনা। সংসদ ভবন থেকে চাকায় চাকায় মাইল পাড়ি দিয়ে রমনা পার্কের কুসুম চত্বর ঘুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য –এর সামনে এসে শেষ হয়। ছেলে মেয়ে একসাথে সাইকেল র‍্যালিতে যোগদান করেন।

সাইকেল র‍্যালিতে আত্মহত্যাকে না বলে সবার মধ্যে আত্মবল নিয়ে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতা তৈরির কথা বলা হয়। আত্মহত্যার চিন্তা না করে সমস্যা সমাধানে সবাইকে মনোযোগী করে তোলার আহ্বান জানায় অংশগ্রহণকারী সবাই।

আজকের দিনই বেলা তিনটায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যত্নশীল যৌথ সহায়ক মঞ্চ গঠন অনুষ্ঠান। আত্মহত্যার ঝুকি ও পূর্বাভাস চিনতে খোলামেলা আলাপচারিতায় যুক্ত হবে সবাই। সংকোচ কাটিয়ে মনের গোপন কষ্ট, আত্মহত্যার চিন্তার কথা প্রকাশ করা জন্য জরুরী নিরাপদ ও সম্ভব স্বচ্ছন্দের জায়গা সুনিশ্চিত করা হবে। অন্ধকার ঘর থেকে নিজে বের হয়ে এসে অন্যকে বের করতে উৎসাহি হাত একসাথে কাজ করার জন্য যুক্ত হবে বেইলি রোডে।

পরবর্তিতে ২০ শে সেপ্টেম্বর আয়োজন করা হবে মনোসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি জন্য বিশেষায়িত কর্মশালা।
এরই ধারাবাহিকতায় ২১শে সেপ্টেম্বর সকাল থেকে সাড়া দিন লালমাটিয়ায় এনজিও ফোরামে আয়োজন করা হবে তিনটা পৃথক মনোশালা। আত্নহত্যার প্রতিপক্ষে আশা জাগানোর জন্য সুস্থ মনের চর্চা করা হবে।

সবাই এই উন্মুক্ত মঙ্গলশালায় হাটতে হাটতে চলে এসে যোগ দিতে পারবে।

 

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……১

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……১


আফরোজা হাসান


আজ মিহিরের মনে অনেক আনন্দ কারণ দেড়মাস পর দাদুভাই আর দাদুমনিকে আবার কাছে পেয়েছে। দুজনই হজ্জ করতে সৌদিআরব গিয়েছিলেন। মিহিরের জন্য অনেক উপহার নিয়ে এসেছেন তারা। সব উপহারের মধ্যে থেকে কাবা ঘরের শোপিস হাতে নিয়ে মিহির বলল, এটা দিয়ে আমি কি করবো দাদুভাই? দাদুভাই মিহিরকে কাছে টেনে হেসে বললেন, তুমি জানো এটা কি?

হুম জানি তো এটা হচ্ছে আল্লাহর কাবা ঘর। এখানেই তো তোমরা গিয়েছিলে হজ্জ করতে। আচ্ছা দাদুভাই আল্লাহই কি এই ঘর বানিয়েছেন?

হেসে, না দাদুভাই। তবে আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহীম(আ)তাঁর ছেলে ইসমাইল(আ)কে নিয়ে কাবা ঘর বানিয়েছিলেন। সে এখন থেকে বহু বহু বছর আগের কথা। একবার কি হয়েছিলো জান?

কি হয়েছিলো দাদুভাই?

আবরাহা নামে এক দুষ্টু রাজা ছিল। সে ঠিক করেছিল সেই কাবাটা সে ভেঙে ফেলবে। কারণ তার ছিল অনেক শক্তি। ইবরাহীম(আ) আর ইসমাইল(আ) আল্লাহর কথা মত কাবা বানানোর পর থেকে অনেক দূর থেকে মানুষরা আল্লাহর ইবাদত করার জন্য কাবায় আসতো। তাই তার মনে কাবাকে ঘিরে খুব হিংসার সৃষ্টি হলো। সে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে দামি দামি জিনিসপত্র দিয়ে ভীষণ সুন্দর একটা উপাসনালয় বানালো। তারপরে মানুষকে দাওয়াত দিলো যাতে সবাই তার উপাসনালয়ে আসে। কিন্তু কেউ এলো না বরং সবাই আগের মতোই কাবা ঘরেই যাচ্ছিল ইবাদতের করতে। তাই সে ভীষণ রেগে ঠিক করলো কাবা ঘর ধ্বংস করে দিবে।

দুষ্টু রাজাটা তখন কি করলো দাদুভাই?

সে তখন অনেক সৈন্য সামন্ত আর বিশাল এক হাতির বহর নিয়ে কাবা ধ্বংসের উদ্দেশ্যে রওনা করলো।

তারপর কি হলো দাদুভাই?

আবরাহা তার সৈন্য বাহিনী আর বিশাল এক হাতির বহর নিয়ে কাবা ধ্বংস করতে আসছে শুনে তো মক্কার মানুষেরা অনেক ভয় পেয়ে গেল। তাদের তো অস্ত্র বলতে ছিল শুধু ঢাল, তলোয়ার আর বর্ষা। এত বিশাল সেনাবাহিনীর সাথে কিভাবে লড়াই করবে তারা ভেবে পাচ্ছিলো না। তাই তারা দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের কোন বাঁধা দিতে চেষ্টা করলো না।

মিহির ভীত কণ্ঠে বলল,তাহলে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যরা কাবা ঘর ভেঙ্গে ফেলেছিল?

না দাদুভাই দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের সেই ক্ষমতা কোথায় যে তারা আল্লাহর ঘর ভেঙ্গে ফেলবে। আল্লাহ তো সর্ব শক্তিমান। নিজের ঘরকে দুষ্টুদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট ছোট আবাবীল পাখী পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

হাসি ফুটে উঠলো মিহিরের চেহারাতে। উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে বলল,আবাবীল পাখীরা দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের সাথে লড়াই করেছিল?

হেসে, তা বলতে পারো।পাখীদের প্রত্যেকের কাছে ছিল তিনটি করে পাথর। যা তারা সেনা বাহিনীর উপরে ছুড়ে দিয়েছিল। সেই ছোট্ট ছোট্ট নূরী পাথর বৃষ্টির ফোঁটার ঝরে পড়েছিল দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের উপর। যারফলে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

আনন্দে লাফিয়ে উঠে হাততালি দিয়ে মিহির বলল, খুব ভালো হয়েছে। কত্তো বোকা আল্লাহর ঘর ভাঙতে এসেছিল। উচিত শিক্ষা হয়েছে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের।

হেসে নাতীকে কোলে টেনে নিয়ে, ঠিক বলেছো দাদুভাই দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যরা ভীষণ বোকা ছিল। এমন অনেক বোকা মানুষ আছে যারা ক্ষমতা ও সম্পদের কারণে নিজেদেরকে অনেক বিশাল কিছু মনে করে। যারফলে তারা আল্লাহ্‌র সাথে লড়াই করতে চায়। কিন্তু…

দাদার মুখ থেকে কথা ছিনিয়ে নিয়ে বলল,আল্লাহ তো সর্বশক্তিমান তাই কেউ জিততে পারে না লড়াইতে।

হেসে,একদম ঠিক বলেছো। আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যারা লড়াই করতে আসে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের মতই করুণ অবস্থা হয় তাদের।

চোখের সামনে কাবাঘরের শোপিসটা তুলে ধরলো মিহির। কিছুক্ষণ দেখে বলল, আমি আল্লাহর ঘরকে কোথায় রাখবো দাদাভাই?

তুমি কোথায় রাখতে চাও?

একটু চিন্তা করে মিহির বলল, আমার পড়ার টেবিলের উপর। এক্ষুনি রেখে আসি আমি। দাদার কোল থেকে নেমে নিজের ঘরের দিকে ছুট লাগালো মিহির।

চলবে…

 

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি!

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি


ফাতেমা শাহরিন


“চিন্তাকে সুন্দরভাবে প্রকাশ না করতে পারলে
সুন্দরভাবে চিন্তাও করা যায় না।”
ফাতেমা শাহরিন
আমি এখন আমার সংসারের কথা বলব। DECP আমার বাড়ি, আমার স্বপ্ন ও সুখের অঙ্গন।
আসুন নতুন এক যাত্রার গল্প শুরু করি…

“নিয়ন আলোর রাজপথে
টিএসসির মোড়ে চায়ের দোকানে
বুলেট কিংবা কবিতায়, যদি ফেরার পথে ভুল হয়ে যায়…”

TSC যাচ্ছি। আগেও যেতাম। কখন গিয়েছি PGT একজন সদস্য, একটু ক্লান্তি কাটাতে চুমুক দিতে চায়ের কাপে। কখনও গিয়েছি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করতে। কখনবা একটু রাহাত আপুর সাথে সময় কাটাতে। সেদিন গিয়েছিলাম স্টুডেন্ট হয়ে। জেনে নিচ্ছিলাম, কিভাবে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের স্টুডেন্টদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে সহযোগিতা করব। আর আজকে যাচ্ছি একজন ট্রেনিং কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট হয়ে। স্টুডেন্টদের সেবা দিতে।

একেকবার যাওয়ার অনুভূতি একেক রকম। কখনও বুকে চিনচিন করে ব্যথা হতো, আমি কেন ঢাবিতে পড়াশুনা করলাম না। আবার কখন উদাস হাজার স্টুডেন্ট মাঝে মিশে যাওয়ার স্বাদ। আর এখন কর্মরত একজন পার্ট টাইম জব মেম্বার। আমাদের প্রতি মাসে একটি বেতন দেওয়া হবে। সুতরাং ‘জব’ করছি।

এখনকার গল্পটা একটু সচেতনতা।

মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদাসীনতা আমার ছিল না, তা কিন্তু বলব না। নিজের মনের যে নিজস্ব একটি রাজ্য আছে। সেখানেও যে সভা- সমাবেশ হরতাল এবং প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়। মনের চোখ না থাকলে দেখতে পারবেন না আপনি। আবার কেউ যদি বলে নাহ, না ‘আমার কোন মনের চোখ নেই’ একটু অবাক হবেন। কিছু বলবেন না, কারণ সবার মনের চোখ আছে।

এবার আসুন কেন DECP?

এডুকেশন & কাউন্সেলিং ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে, সবচেয়ে আর্দশ উর্বর জমি। আর আমরা হলাম ‘বীজ’। জমি বলাতে মন খারাপ হচ্ছে? করবেন না। আমরা তো মাটি দিয়ে তৈরি সুতরাং জমির সাথে আমাদের গভীর সম্পর্ক।

* পড়তে ইচ্ছে করে না।
* প্রেজেন্টেশনে প্রচন্ড ভয়।
* প্রিয় মানুষটি হুট করে বিট্টে করল।
* সামনে ফাইনাল পরীক্ষা কোন পড়া হয়নি।
* এতো কষ্ট আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না।
* কেন একটি কাজ বার বার করি?
* কেন এতো চিন্তা বার বার আসে?
* ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজে নিজে কষ্ট তৈরি করি কেন?
* আব্বু কেন বুঝতে পারছে না, আমার সাবজেক্টটি ভালো লাগছে না।
* প্রিয় বন্ধুটি এতো ভুল বুঝলো কেন আমাকে।
* আমারকে দিয়ে কোন কাজই হবে না।
* কোন কাজেই কেন কোন আনন্দ পাই না।
* আমি কি ওকে ভালো বাসব?
* বাবুটাকে নিব নাকি অ্যাবশন করব?
* কেন বাবা মা আমাকে জোর করে বিয়ে দিবেন?
* আমার পছন্দের কি কোন দাম নাই?
* চুল গুলো টেনে টেনে না ছিঁড়লে অস্বস্থি লাগে কেন?
* আমি কেন ঠিকভাবে ঘুমাতে পারছি না?
* কেন এখনও বিয়ে হচ্ছে না আমার বয়স তো থেমে নেই?
* আমি কি বিয়েটা করব?
* এতো রাগ আর আমার আচরণ কেউ এখন আমাকে ভালো বাসে না?
* আমি ওকে এতো সন্দেহ করি কেন?
* সংসারটি আর করা সম্ভব হবে না ওতো পরকীয়া করে?
* এভাবে কেন শশুড় বাড়ির সবাই আমাকে ভুল বুঝে আচরণ করে?
* আমি কেন আমার সন্তানের সাথে সুন্দরভাবে আচরণ করতে পারছি না?
* ছোট বেলায় যে পাশের বাড়ির আংকেল আমাকে সেক্সচুয়াল অ্যাবিউজ করেছিলেন তাই কি আমি স্বাভাবিক সম্পর্কে জড়াতে ভয় পাচ্ছি?
* আমাকে কেন কেউ ভালোবাসে না?
* আত্মহত্যার চিন্তে এতো তীব্র আসে বার বার?
* আমি তো কয়েকবার অ্যাটেম নিয়েছি, ঘুমের ঔষধ খেয়েছি, ছাদেও উঠেছিলাম, একবার ট্রেন লাইন ধরে হেটেছি।
* বেঁচে থাকতে আর কেন একটুও ভালো লাগে না?
* মা আমাকে কেন ভালো বাসে না?
* জবটা কেন পাচ্ছি না?
* এতো প্রেসার

এ রকম নানান সমস্যায় আমরা অনেকেই আছি। কেউ বা সচেতন বা কেউবা অবচেতন মনে। খেলছি নিজের সাথে রোজ। বেঁচে আছি, বাঁচতে হয় তাই।
অজস্র চিন্তার জাল। মাকড়সাও ঘর ছেড়েছে ভয়ে।

আমরূ, একটু একটু করে কাউন্সেলিং নলেজকে ঘষে মেঝে আলো ঢুকাচ্ছি প্রতিনিহত আমাদের টিচার রা কঠোর পরিশ্রম করছেন। আমরা প্রতিনিহত জ্ঞানের আলোর সমুদ্রে হাবুডুবু, সাতার কাটছি। বই এর পাতায় পাতায় আলো। এই আলো গুলো একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট চেয়ে কোন অংশে কম শক্তিশালী নয়।

মানসিক প্রশান্তির দুয়ার খুলতে শত শত কাউন্সিলর কাজ করছেন বাংলাদেশ জুড়ে।

জ্বর যেমন কোন রোগ নয়, নানান রোগের সিনটম। কখনও মরণঘাতি ক্যান্সারও হয়। তেমনি, মন খারাপও তাই। ড় মন খারাপ হলেই মরতে মন চাচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত মন খারাপ পুষে পুষে জীবনটাকে আর জীবন মনে হবে না। জীবন্ত পাথর মনে হবে একদিন।

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি, পাথর হয়ে নয়।

ফাতেমা শাহরিন
স্টুডেন্টঃ এডুকেশন & কাউন্সেলিং সাইকোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

১৩ বছরের কিশোরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা

১৩ বছরের কিশোরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা


নারী সংবাদ


মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সুলেমান (১৩) নামক এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ নারীসহ একই পরিবারের ৩ জনকে আটক করেছে।

এ ঘটনায় নিহত কিশোরের বড় ভাই রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ৫ জনের নামে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব ফটিগুলি গ্রামের মৃত বাজিদ আলীর পুত্র কিশোর সুলেমান গত ৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ির উত্তর পাশে একটা বটগাছের নিচে বসা ছিলো। এসময় লোক মারফত একই গ্রামের আনু মিয়ার বাড়িতে ডেকে নেয়া হয় নিহত সুলেমানকে।

বাড়িতে যাওয়ার পর আনু মিয়ার ছেলে রেদোয়ান মিয়ার নেতৃত্বে সুলেমানকে তাদের ঘরের ভেতরে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে মারপিট করা হয়। এসময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মাসুক মিয়াসহ আরও লোকজন এসে সুলেমানকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

ঘটনার পরদিন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলেমানের মৃত্যু হয়। এদিকে রোববার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কুলাউড়া থানা পুলিশ আনু মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৪০) ও মেয়ে আসলিমা বেগম (১৮) কে আটক করেছে।

কর্মধা ইউনিয়নের মেম্বার মো. মাসুক মিয়া জানান, পূর্ব শত্রুতা থাকতে পারে। আমি ছেলেকে উদ্ধার করে দ্রুত মৌলভীবাজার হাসপাতালে ভর্তি করি। এরপর সেখান থেকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, ঘটনার সাথে জড়িত ৩ আসামীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

বখাটের এসিডের ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না মেঘলা

বখাটের এসিডের ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না মেঘলা


নারী সংবাদ


টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বখাটের এসিডের নিক্ষেপের ভয়ে প্রায় একমাস যাবৎ বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না স্কুলছাত্রী মেঘলা আক্তার। প্রেমের ডাকে সাড়া না দেয়ায় পৌরসভার গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ফাস্টগার্ল মেঘলাকে এসিড মেরে মুখ জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে পাশের বান্দ্রা গ্রামের ফজল মিয়ার মাদকাসক্ত বখাটে ছেলে মানিক (১৫) ও নুর মোহাম্মদের বখাটে ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২০)। মেঘলা বন্দটাকুরিয়া গ্রামের মো: মফিজুর রহমানের একমাত্র মেয়ে। এ ব্যাপরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবার।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত বখাটে সাখাওয়াত ও মানিক দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে স্কুলছাত্রী মেঘলাকে উত্যক্ত করে আসছিল। এরই জেরে ধরে গত জুলাই মাসে ধনবাড়ী নবাব ইনস্টিটিউডে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে মেঘলাকে এসিডের বোতল ও চাকু দেখিয়ে ছবি তোলে সাখাওয়াত, মানিক ও তার বন্ধুরা। মেঘলার বাবা-মা এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ১৫ আগস্ট মধুপুর আসার পথে মানিদের বাড়ির কাছে মেঘলার বাবা-মাকে মারধর করে মানিক ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনা প্রথমে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়াকে জানালে তিনি সালিসী মীমাংসার করে দিতে চাইলে টালবাহানা করতে শুরু করে অভিযুক্ত বখাটে সাখাওয়াত ও মানিকের পরিবার।

মেঘলা জানায়, বখাটে মানিক প্রথমে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে সে সাড়া না দিলে মানিকের বন্ধু সাখাওয়াতও তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। উভয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর মানিক ও সাখাওয়াত উভয়ে মিলে এখন মেঘলাকে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখাচ্ছে। ফলে গত ১৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে মেঘলা। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে চায় বলেও আকুতি জানায় মেঘলা।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী মেঘলার বাবা মো: মফিজুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বেনু সম্পর্কে বখাটে মানিকের চাচাতো ভাই হওয়ায় এবং মানিকের বাবা ধনবাড়ী থানার ওসির বাসার কেয়ারটেকার হওয়ার কারণে তার মেয়েকে উত্যক্তের ঘটনার কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযুক্ত বখাটে মানিকের বাবা ফজল জানান, জোর করে মেঘলার ছবি তুলে আমার ছেলে ভুল করেছে। সেজন্য তো মেয়ের বাবা মফিজ আমার ছেলেকে ‘মারধর’ করেছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি।

পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়া জানান, ফেনীর নুসরাতের ঘটনা আমরা সবাই জানি। আমরা দ্বিতীয় নুসরাত দেখতে চাই না। ওসির সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (বেনু) জানান, বখাটেদের হাতে উত্যক্তের শিকার হওয়ার ঘটনাটি মেয়েটি (মেঘলা) আমাকে মুখে বলেছে। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু দেয়নি। ছেলেটি যেহেতু বহিরাগত, তাই অভিযোগ পেলে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেলে ওসির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার এসআই নূরে আলম জানান, উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসে মীমাংসা করে দেয়া হবে। এটাতে কাজ না হলে মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত উক্তত্যকারীদের গ্রেফতার করা হবে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

গর্ভেই নির্ধারিত হয়ে যায় সন্তানের ব্যক্তিত্ব

গর্ভেই নির্ধারিত হয়ে যায় সন্তানের ব্যক্তিত্ব


স্বাস্থ্যকথা


নতুন এক গবেষণা বলছে, কোনো নারী যদি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন, ঐ সন্তান ৩০ বছর বয়সের পৌঁছুনোর আগেই সে ‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্যে আক্রান্ত হতে পারে। ঐ ঝুঁকি স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ গুণ বেশি হতে পারে। এমনকি গর্ভাবস্থায় মাঝারি মাত্রার মানসিক চাপ যদি দীর্ঘমেয়াদী হয়, তাহলেও সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

ফিনল্যান্ডে ৩,৬০০ গর্ভবতী নারী তাদের সন্তানদের ওপর ঔ গবেষণাটি চালানো হয়। গর্ভাবস্থায় ঐ নারীদের মানসিক চাপ নিরূপণ করা হয়। পরে তাদের সন্তান জন্ম নেওয়ার পর, ঐ সন্তানদের মানসিক বিকাশের ওপর নজর রাখা হয়।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভবতী নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ। কীভাবে সন্তানকে বড় করা হয়, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা কী, শিশু বয়সে সে কোনো সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হয়েছিল কিনা – এগুলোও ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব ফেলে।

তবে ঐ গবেষণায় জড়িত মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাবও সন্তানের ব্যক্তিত্বে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্য কী

‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ এমন একটি মানসিক অবস্থা যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের জীবন তো বটেই, অন্যের জীবনেও বড় ধরণের সঙ্কট তৈরি করে। এরা অনর্থক এবং অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন হতে পারে, আবেগের ওঠানামার পেছনে কোনো যুক্তি থাকে না, অতিমাত্রায় সন্দেহ-প্রবণ হয়ে পড়ে। এমনকী অনেক সময় সমাজ-বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এ ধরনের মানুষ প্রায়শই মানসিক চাপে ভোগে। অনেক সময় এরা মাদক এবং মদাসক্ত হয়ে পড়ে।

কীভাবে হয়েছিল এই গবেষণা

এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে মনোবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকিয়াট্রি’তে। গবেষণায় ৩,৬০০ গর্ভবতী নারীকে তাদের গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক মাসে কিছু প্রশ্ন করে তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে মানসিক চাপের মাত্রা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়।

এই নারীরা ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কি এবং আশেপাশে থাকতেন। তারা ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সালে সন্তানের জন্ম দেন। ঐ সন্তানদের বয়স তিরিশে পৌঁছুনোর পর দেখা যায় তাদের ৪০ জনের মধ্যে মারাত্মক ব্যক্তিত্বের সংকট তৈরি হয়েছে । তাদের মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

গবেষণায় ফলাফল

গবেষণায় দেখা যায় যে সব মায়েরা গর্ভাবস্থায় দীর্ঘদিন বড়রকম মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ছিলেন, প্রধানত তাদের সন্তানরাই মানসিক সংকটে পড়েছে। যে সব মায়েদের গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ কম ছিল, তাদের সন্তানদের চেয়ে চাপে থাকা মায়েদের সন্তানদের ব্যক্তিত্ব বৈকল্য হয়েছে অনেক বেশি – প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। মায়েদের চাপের কারণগুলোর মধ্যে ছিল – সম্পর্কের সংকট, সামাজিক বা মনস্তাত্ত্বিক সঙ্কট।

কী করা যেতে পারে?

ব্রিটেনের রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের অধ্যাপক ড. ট্রুডি সিনিভারত্নে বলছেন, গর্ভধারণ করলে অনেক নারী মানসিক চাপে পড়েন। তাদের জন্য সাহায্য খুবই জরুরী। তিনি বলছেন – যদি এই মানসিক চাপ ঠিকমতো নিরসন না করা হয়, তার পরিণতি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে, তাদের জন্য এবং সন্তানদের জন্য।

“আমরা চাই না যে বাবা-মার মনে এমন কোনো অপরাধ-বোধ তৈরি হোক যে তারা তাদের সন্তানদের ক্ষতি করছেন- কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী এবং উঁচু মাত্রার মানসিক চাপ সন্তানদের ক্ষতি করে।”

কীভাবে গর্ভাবস্থায় মাসনিক চাপ কমানো সম্ভব

ড. সিনিভারত্নে বলছেন, গর্ভবতী নারীদের অবশ্যই বাড়িতে এবং কাজের জায়গায় সাহায্য করতে হবে। চাপ তৈরি হলে, কীভাবে সে তা সামলাতে পারে – সে ধ তাকে পরামর্শ দিতে হবে।

“সতাদেরকে জানতে হবে কীভাবে বিশ্রাম নিতে হয়, মানসিক চাপে পড়লে অন্যের কাছ থেকে কীভাবে সাহায্য চাইতে হয়।”

গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ এবং যথেষ্ট ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

সূত্র : বিবিসি।

 

সম্পর্কে যত্নশীল হয়ে উঠি

সম্পর্কে যত্নশীল হয়ে উঠি


নিশাত জাহান নিশা


Effort and Expectation

দুটো শব্দই ইংরেজি অক্ষর E দিয়ে……. এই মিল টুকু ছাড়াও শব্দ দুটি একে অন্যের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
আজকাল Discorded Relationship (সম্পর্ক কলহ) একটি কমন সমস্যা। আর এই সম্পর্কগুলো হতে পারে, বাবা-মা ও সন্তান, ভাই-ভাই, ভাই-বোন, বন্ধু, প্রেমিক-প্রেমিকা অথবা স্বামী-স্ত্রী….

আর এই কমন সমস্যার মূল কারণ Effort & Expectation এর অসমতা…
আর এই অসমতাই দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যকার সম্পর্ক গুলো অতি দ্রুত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।।।

বিনা expectation এ যেমন কেউ effort করতে চায় না তেমনি effort ছাড়া expectation গুলোও কখনো পূর্ণতা পায়না। একটা সুষ্ঠু সম্পর্কের মধ্যে effort ও expectation দুটোই সমানতালে সমান ভাবে থাকতে হবে।

সম্পর্কে Effort ছাড়া Expectation হলো এক ধরনের ফুটো কলসির মত, effort না থাকলে আপনার expectation এর সেই কলস কখনোই পূর্ণ হবে না।।।
আজকাল সম্পর্ক গুলো কেন এত দ্রুত ভেঙে যায়, জানেন, কারন আজ কাল কার বেশিরভাগ সম্পর্কের মধ্যে এক পক্ষে effort দেয় আরেক পক্ষ expect করে, আর ভুলটা এই জায়গাতেই হয় সম্পর্ক যেহেতু দুটি মানুষের মধ্যে, তাই দুজনের মনের মধ্যেই থাকতে হবে একে অপরের প্রতি সম্মান দেওয়ার প্রচেষ্টা ও নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রত্যাশা, তবেই একটা সম্পর্কের মধ্যে ব্যালেন্স বজায় থাকে।
এবার চলুন জেনে নিই সম্পর্কের এক্সপেক্টেশন (প্রত্যাশা) গুলো কি কি।।।।
আমরা কমবেশি সবাই আমাদের সম্পর্কের মধ্যে যে এক্সপেক্টগুলো করি :

১) আমাকে বুঝতে হবে, কারন আমি আমি অভিজ্ঞ

২) আমার কথা শুনতে হবে, কারণ আমি ভাল চাই

৩) আমার ক্ষেত্রে ধৈর্যশীল হতে হবে

৪) ভালবাসলে সেক্রিফাইস মাইন্ডেড হতে হবে

৫) আমাকে অন্ধ বিশ্বাস করতে হবে, কখনো রিয়্যাক্ট করা যাবেনা

৬) আমার পছন্দ অপছন্দ কে মূল্যায়ন করতে হবে

৭) আমার ডিসিশন কে চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে হবে

৮) আমার প্রতি 100% loyal থাকবে

৯) আমার মত করেই তাকে ভাবতে হবে (my choice is your choice)।।।

১০) আমার কথাকে অধিকতর সম্মান দিতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি……

অথচ আমরা খুব কম ব্যক্তিই আছি এই expect গুলো করার আগে, নিজেরা সম্পর্কের মধ্যে effort দেই।।।

এবার চলুন এফোর্ড (প্রচেষ্টা) গুলো কি জেনে নেই।

১) আপনার সম্পর্কের মানুষটির ধরন গড়ণ চলন সর্বোপরি সে যেই প্যাটার্নের তাকে সেভাবে গ্রহণ করা, অর্থাৎ যদি না সে গুরুতর সমাজ বিরোধী হয় তাকে পরিবর্তন করার আগে এটুকু বোঝা যে, আপনার সৃষ্টিকর্তা আপনাকে যেভাবে তৈরি করেছেন, সেই একই সৃষ্টিকর্তা তাকে তৈরি করেছেন তার মত করে।।।। অর্থাৎ প্রত্যেকটা ব্যক্তি যে স্বতন্ত্র সত্তার অধিকারী এতটুকু বিবেক বোধ রাখা।।।

২) আপনার যা ভালো লাগে তার কাছে সেটা ভালো নাও লাগতে পারে এই ছোট বিষয় টাকে শুধু জানা নয় মানতেও হয়।।।

৩) নিজের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত দাবি করার আগে, তার সিদ্ধান্তটির পক্ষের যুক্তি গুলো বুঝতে চেষ্টা করা।

৪) পরিপূর্ণ ভালোবাসা ও মর্যাদা দেওয়ার আগেই সেক্রিফাইস, ধৈর্য এগুলো আশা না করা।।।

৫) অপর মানুষটি নিজের অবস্থানে কতটুকু সমঝোতা করে, আপনাদের দুজনার সম্পর্কের মধ্যে সেক্রিফাইস মনোভাব গড়ে তুলতে হচ্ছে, সেটার সমীকরন তৈরি করা।।।

৬) নিজের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস প্রত্যাশা করার পূর্বে, নিজেকে তার কাছে আস্থাশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

৭)সম্পর্কের মধ্যে loyalty & liability দুটোই নিশ্চিত করা।

৮) সম্পর্কের মানুষটির প্রতি যত্নশীল হওয়া।

৯) সম্পর্কের মানুষটির self esteem, emotion, patience এগুলোর threshold লেভেল সম্পর্কে অবগত থাকা।

১০) আপনার সম্মান নিশ্চিত করার সাথে সাথে, তার সম্মান সুনিশ্চিত করা।

এই basic effort গুলো থাকলেই সম্পর্কগুলো মোটামুটি ব্যালেন্সে থাকে।।।

*সম্পর্কের মাঝে যখন আপনার expectation হবে ‘

‘feel to be comfort with him/her’

এর আগে আপনার effort হতে হবে

‘I have to make sure his/ her comfort with me’ কারণ আপনার effort এর ওপর ভিত্তি করেই আপনার expectation গুলোর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে*

*Effort ছাড়া সম্পর্ক হলো হলো মাটি (ভিত্তি) ছাড়া গাছ, আর Expectation হলো সেই গাছের মধ্যে আবার ফলন চিন্তা করা।*

তোমার চেয়ে আমার Social Value/Network বেশি, তোমার কম… সম্পর্কটাকে এরকম competitive না করে complementary করে তুলুন “তোমার এটা আছে আমার ওটা আছে” একে অন্যের পরিপূরক। ব্যাস…

আজকাল আমাদের সম্পর্ক গুলোর মধ্যে এক ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছে সেটা হলো: এক তরফা প্রচেষ্টা (effort) আর না হয় এক তরফা প্রত্যাশা (expectation)……আমরা যখন আমাদের সম্পর্কের মানুষের সাথে বাকবিতণ্ডা বা তর্কে জড়াই বা যেকোন বিষয়ে অমত হই, তখন কটু কথা বা কাজের মাধ্যমে তাকে ছোট করার সকল প্রচেষ্টা চালানো হয়, সে human being হিসেবে নূন্যতম যতটুকু মর্যাদা পাওয়ার কথা, (টাকা বা সম্পদের খোটা দিয়ে) সেটাও তাকে দেয়া হয় না…..
অথচ তার কাছ থেকে সেক্রিফাইস আশা করার বেলায় আমরা তাকে মহামানব বা দেবীর স্থানে বসিয়ে দেই, আর অকপটে বলে ফেলি আমার জন্য তুমি এতোটুকু সেক্রিফাইস করতে পারলে না…..

আচ্ছা বলুনতো সেক্রিফাইস কারা চায়? সেক্রিফাইস কাদের দরকার?
সেক্রিফাইস কাদের করা হয়?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কি?
উত্তর একটাই, যারা দুর্বল, অপারগ, নিজ দায়িত্বে বা ক্ষমতায় কায়েম থাকতে পারে না, তাদের জন্যই সেক্রিফাইস করা হয়।।‌। আর সেক্রিফাইস হলো একটি মোহ পেতে থাকলে, শুধু পেতেই ইচ্ছা করবে।
আপনাকে কেউ স্বেচ্ছায় সেক্রিফাইস করলো আপনি সেটা গ্রহণ করলেন, it’s ok এটা আপনার ব্যাপার।।।। কিন্তু আপনি কারো কাছ থেকে আগ বাড়িয়ে sacrifice আশা করবেন, it’s not ok। এটা শুধুই আপনার দুর্বলতার পরিচয় দিচ্ছেন।।।

উদাহরণস্বরূপ, একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি যার দায়িত্ব নেয়ার সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যদি সমাজ তাকে দায়িত্ব মুক্ত করে দেয়, সেটা কি তার জন্য উপকার বা সেক্রিফাইস? বলতে পারেন, সেটা ব্যাক্তির potentiality/ প্রতিভা নষ্ট করার মতো উপকার, আর এই উপকারের মধ্যে কোথাও না কোথাও তাকে demean/ অদক্ষ দাবি করার সূক্ষ একটা ঘ্রান ও পাওয়া যায়।।।

নিজের সম্মান নষ্ট করে sacrifice পেতে কে চায়? অন্যের টা জানিনা, তবে আমি তো অবশ্যই এই ধরনের সেক্রিফাইস পাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতেই পছন্দ করি।।। তাই sacrifice এর মোড়কে, নিজেকে অদক্ষ দাবি না করে বরং নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার মধ্যেই সম্পর্কের সার্থকতা।।

সর্বোপরি, আমরা আমাদের জীবনের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, সবধরনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এর প্রতি দায়িত্ববান বা যত্নশীল হয়ে উঠি।। আপনার জন্য কেউ সুখ ত্যাগ বা জীবন দেওয়ার নাম sacrifice নয় বরং এই অস্থিতিশীল, প্রতিকূল পৃথিবীতে আপনার সাথে একত্রে স্বর্গের সুখ অনুভব করার অক্লান্ত প্রচেষ্টার নাম sacrifice…

আপনার জীবনের সম্পর্কের মানুষটি বেঁচে থাকতে তার গুরুত্ব বুঝুন।
তার নামে বড় বড় ইমারত তৈরী করে অর্থের সেক্রিফাইস না দেখিয়ে, তার মনে ভালোবাসার অখন্ড পাহাড় তৈরি করুন।।।।

*তাজমহল’কে দুনিয়া দেখছে, মমতাজ কিন্তু দেখেনি*

 

নিশাত জাহান নিশা 

অ্যাসিস্টেন্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট

 

এসআই ও সোর্স মিলে ধর্ষণ করল আসামির স্ত্রীকে!

এসআই ও সোর্স মিলে ধর্ষণ করল আসামির স্ত্রীকে!


নারী সংবাদ


যশোরে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। যশোরের শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুলসহ সোর্সের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন একই উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামে আসাদুজ্জামান আশার স্ত্রী।

পুলিশ সুপার এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছেন। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই মহিলাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযুক্ত এসআই খায়রুল জানান, এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের জানান, শার্শার লক্ষণপুর গ্রামে তার স্বামী আসাদুজ্জামান আশাকে গত ২৫ আগস্ট রাতে শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুল বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন ২৬ আগস্ট আশার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে তাকে আদালতে চালান দেয়।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত ২ টার দিকে এসআই খায়রুল সোর্সদের নিয়ে আশার বাড়িতে যায় এবং তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। আশাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এসআই খায়রুল তার স্ত্রীর নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে খায়রুল ও সোর্স কামারুল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

পরে ঘরের ভেতরে গিয়ে আশার স্ত্রীকে প্রথমে এসআই খায়রুল ও পরে পুলিশের সোর্স কামারুল ধর্ষণ করে। এসময় সোর্স লতিফ ও কাদের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকেও মামলা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আশার স্ত্রী যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিসে যান এবং সাংবাদিকদের কাছে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ধরেন।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে যান এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদের অনুমতি নিয়ে ওই মহিলাকে নিয়ে পুলিশ সুপার মঈনুল হকের অফিসে নিয়ে যান।

এসময় ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তিনি শুনে এসেছেন। তাকে নিয়ে এসপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোন কিছু বলা সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই খায়রুল বলেন, এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পিক্ততা নেই। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এসপি স্যার তদন্ত শুরু করেছেন।

যশোর পুলিশ সুপার মঈনুল হক সাংবাদিকদের জানান, ওই নারীর অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। তাকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ সঠিক হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

By: dailynayadiganta

 

“বাবা”

বাবা


তানিয়া ইসলাম ইতি


বাবা শব্দ টা আমার মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সবচেয়ে স্বচ্ছ সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ।

আর বাবা নামের মানুষ, মানুষগুলো আরো বেশি শক্তিশালী আরো বেশি স্বচ্ছ, নির্ভীক, পৃথিবীর সবচেয়ে অনুপ্রেরণার জায়গা, আদর্শ আর কষ্ট লালিত এক পুরুষ। নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া এক সংগ্রামি যোদ্ধা ……….।

গত এক সপ্তাহ ধরে এই বাবা নামের শব্দটির সাথে হারিয়ে গেছি। নতুনভাবে আবিষ্কার করার চেষ্টা করছি এত কেন স্বচ্ছ এত কেন নির্ভেজাল বাবা নামের মানুষটা। খুজেও পেলাম অনেক কিছু……….।

১. সন্ধ্যার পরে হাঁটছি একজন বাবা আর সন্তান বাসায় ফিরছেন হয়তোবা সন্তানের পেন্সিল পরে গেছে । বাবা এমন ভাবে রাস্তায় পেন্সিল খুঁজছেন যেন পৃথিবীর সব চাইতে মূল্যবান সম্পদ হারিয়ে ফেলেছেন। শুধুমাত্র সন্তানের একটা কথায় বাবা আমি পেন্সিল হারিয়ে ফেলেছি। হয়তো বাস এক্সিডেন্ট হতে পারতো। কারণ রাস্তায় এত গাড়ি যাচ্ছে বাস প্রাইভেট কার সেগুলো উপেক্ষা করে বাবা নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে পেন্সিল খুঁজে দেয়ার চিন্তা করছে এটা শুধু এই মানুষটার পক্ষেই সম্ভব …….।

২. গত দুইদিন আগে বাংলা টিভি চ্যানেল দুরন্ত চ্যানেল সিসিমপুরে এক চাইনিজ বাবার গল্প বলছিল তার সন্তান। আমার বাবা বেহালা বাজাতে পারে। আমার বাবা ঘোড়ার ডাকার শব্দ, ঘোড়ার দৌড়ানোর শক্ত, হাঁটার শব্দ বেহালায় তুলতে পারে ।এমন ভাবে বাবাকে রিপ্রেজেন্ট করছিল একজন সন্তান ৭ বছরের সন্তান। মনে হলো পৃথিবীর সবচাইতে আদর্শবান বাবার গল্প সে সবার কাছে বলছে। তখন মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচাইতে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক হচ্ছে বাবা আর সন্তানের সম্পর্ক……….।

৩. আজকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড দিচ্ছিলাম। তখন ঐ দোকানের মালিকের সাথে কথা হচ্ছিল। আমি প্রায়ই মাঝেমাঝে উনার সাথে কথা বলি। কথা বলতে বলতে একটা সময় একটা পিচ্চি ছেলে এসে বলতেছে আঙ্কেল কিছু টাকা দেন ভাত খাবো। পকেট থেকে ২০০ টাকা বের করে দিল আমি বললাম ভাই আপনি টাকা দিয়েছেন ওই টাকা দিয়ে ভাত খাবে না। তখন উনি বলল আপা আমি ছোটবেলা থেকেই খাবারের জন্য কেউ কোন কিছু চাইলে আমি কখনো নিষেধ করি না। কারণ এটা আমার বাবার কথা, বাবা বলেছিল কখনো খাবারের উদ্দেশ্যে কেউ কিছু চাইলে তুমি খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না। তখন আমি বললাম তাহলে তো আপনার বাবা অনেক ভালো মানুষ। উনি বললেন, হ্যাঁ আমার বাবা পৃথিবীর সবচাইতে ভালো মানুষ ছিলেন। উনি এখন নেই মারা গেছে। আমার বাবার একটা কথা বলি আপনাকে, আমরা চার ভাই বোন প্রত্যেকেই অনেক অনেক ভালো জায়গায় আছি । সবাই অনেক ভালো জায়গা থেকে পড়াশোনা করেছি। আমি যখন খুব ছোট স্কুলে পড়তাম কখনো আমার বাবাকে সকালে দেখতাম না। উনি টিচার ছিলেন উনি প্রতিদিন কখন যে বের হয়ে যেতেন আসতেন সন্ধ্যার একটু আগে আর আমাদের পড়তে বসাতেন। তখন খুব রাগ হতো বাবার প্রতি সারাদিন থাকে না বাসায় আমাদের কোনো খোঁজখবর নেন না অথচ পড়ার সময় কোথা থেকে যেন চলে আসতেন। স্কুলে একবার করে প্রতিমাসে যেতেন আমাদের পড়াশোনার কি অবস্থা জানার জন্য। আর কোন মতে কোন কিছু শুনলে মার একটাও মাটিতে পড়তো না। কতবার যে মনে মনে বাবাকে বকেছি সেটার হিসাব নেই। কিন্তু যখন বড় হচ্ছি বুঝতে শিখছি দুনিয়ার সবকিছু। তখন প্রথম জানতে পারলাম আমার বাবা সকাল পাঁচটায় বের হয়ে যায় বাসা থেকে জমিতে। উনি কৃষি কাজ করতো তার পরে স্কুলে যেতো স্কুলের ক্লাস নিয়ে বাসায় ফিরে খাবার খেয়ে আবার জমিতে চলে যেতো কাজের উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যায় ঠিকই বাসায় এসে হাজির হতো আমার বাবা। আমার এখনো মনে আছে আমি যখন ক্লাস টেইনে পড়ি তখন আমার বড় ভাই বুয়েটে পড়ে। উনার স্কলারশিপ হয়েছিল তার তখন কিছু টাকা দরকার ছিল আমার বাবার তখন খাদ্যনালীতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। আমাদের জমানো টাকা দিয়ে বাবাকে চিকিৎসা করালে বাবা সুস্থ হয়ে যেতেন । কারণ ক্যান্সারের এক্কেবারে প্রাইমারি অবস্থায় ছিল বাবার । কিন্তু বাবা আমাদের কাউকে জানায়নি না জানাই আমার ভাইকে টাকা দিয়ে কানাডাতে পাঠান। আর তখন বাবার ক্যান্সার পুরা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ……।

পৃথিবীর প্রত্যেকটা বাবাই মনে হয় নিঃস্বার্থ বান একজন মানুষ। যারা সারা জীবন দিয়ে যায় পাওয়ার বিন্দু পরিমান চিন্তা করেন না।

বেঁচে থাকুক এই বাবারা পৃথিবীতে প্রত্যেক আদর্শবান সন্তানের মাঝে, বেঁচে থাকুক। পৃথিবীর প্রত্যেক সন্তানের ভালো কাজের মাঝে প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে আর বাবা সম্পর্কে যত যত বলবো শেষ হবে না। শুধু বলবো ভালো থাকুক সব বাবারা।

 

দেশ বরিশাল উত্যক্তের শিকার স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা : বখাটে তামিম ৭দিনের রিমান্ডে


নারী সংবাদ


পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় বখাটের উৎপাতে অতীষ্ট হয়ে স্কুলছাত্রী রুকাইয়া আক্তার রূপার আত্মহত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামী তামিম খানকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার পিরোজপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযুক্ত বখাটে তামিম খানের ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

জানা যায়, রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাণ্ডারিয়া থানার এসআই মোঃ কাইয়ুম আসামী তামিমকে পিরোজপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে ভাণ্ডারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান।

এর আগে গত শনিবার রাতে স্থানীয় মঞ্জু খানের বখাটে ছেলে তামিম খানকে (১৯) প্রধান আসামী করে ৫ জনকে চিহ্নিত এবং অপর ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় ভাণ্ডারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রূপার বাবা মোঃ রুহুল আমিন মুন্সী। মামলার অন্য আসামীরা হচ্ছে- আঃ মালেক হাওলাদারের ছেলে রাইয়ান, ইরিন (পিতা-অজ্ঞাত), আলম জোমাদ্দারের ছেলে ওয়ালিদ, মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে সাজিদ।

মামলা দায়েরের পর পিরোজপুর ডিবি পুলিশ ও ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ গত শনিবার সন্ধ্যায় যৌথ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় জমাদ্দার বাড়ী থেকে (বখাটের বাড়ী থেকে) মামলার প্রধান আসামী তামিম খানকে গ্রেফতার করে। পরে রোববার তাকে বিচারিক আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকী আসামীদের আটক করতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান।

উল্লেখ্য, জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার বখাটে তামিম খান স্কুলছাত্রী রূপাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রূপা তা প্রত্যাখ্যান করায় এবং এর প্রতিবাদ করলে ওই বখাটে একটি নগ্ন ছবির সঙ্গে রূপার ছবি এডিট করে জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় স্কুলছাত্রী রূপা ও তার পরিবার চরম বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েন। একপর্যায়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে ক্ষোভ ও লজ্জায় ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যা করে রূপা। সে স্থানীয় বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

স্মৃতির জোনাকি… ৬

স্মৃতির জোনাকি… ৬


আফরোজা হাসান


স্মৃতির জোনাকি… ৬

নাবিহা একবার ভেবেছিলো মামণি আর ফুপির কথায় কান পাতবে কিন্তু পরমূহুর্তেই এই দুষ্টু চিন্তাকে মন থকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে আদীব্বার রুমের দিকে রওনা দিলো। যে ক’টি চেহারা না দেখলে নাবিহার মনের ভুবনে সূর্যোদয় হয়না পরিপূর্ণ রূপে তারমধ্যে অন্যতম একজন আদীব্বা। আদীব্বার রুমের দিকে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ পথ বদলে রান্নাঘরে পৌঁছে গেলো নাবিহা। ইচ্ছে ছিল গ্রীনটি বানিয়ে আদীব্বার জন্য নিয়ে যাবে। কিন্তু গ্রীনটি বানাতে বানাতে যার জন্য বানাচ্ছিলো তিনি এসে হাজির হলেন রান্নাঘরে। আদীকে ঢুকতে দেখে সালাম দিয়ে নাবিহা বলল, আদীব্বা আমি তোমার কাছেই যাবো ভাবছিলাম।

সালামের জবাব দিয়ে আদী হাসি মুখে বললেন, মা স্মরণ করেছে আর পুত্র হাজির হয়ে গিয়েছে। একেই বলে মাতা পুত্রের বন্ধনের ম্যাজিক। বুঝেছেন আম্মাজান!

নাবিহা হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ। গ্রীনটি বানিয়েছি তোমার জন্য। সাথে আর কিছু দেবো?

আদী হেসে বললেন, কিছুক্ষণ আগে নাস্তা করেছি পেট একদম ভরা। তবে কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে মনের ক্ষুধা মেটাতে পারো। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি কি জানো আমাদের নেতাজ্বি কোথায় আছেন এই মূহুর্তে?

নাবিহা হেসে বলল, হসপিটাল থেকে ফোন এসেছিল এ বি নেগেটিভ রক্ত প্রয়োজন। পাপা, জিহাদ ভাইয়া রক্ত দান করতে গিয়েছেন।

জিহাদও গিয়েছে রক্ত দান করতে?

হ্যা, আজকে ভাইয়ার প্রথম রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। পাপা অবশ্য প্রথমে নিতে চাননি ভাইয়াকে। কিন্তু ভাইয়া খুঁটি আঁকড়ে ধরে থাকা টাইপের জেদ ধরে বসে ছিল। পাপা তখন বিরক্ত কন্ঠে বলেছেন, একদম মায়ের মতো অবাধ্য প্রতিটা বাচ্চা। এরপর নিয়ে গিয়েছেন ভাইয়াকে। হাসতে হাসতে বললো নাবিহা।

আদী হেসে বললেন, আচ্ছা এবার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দাও। আনন্দবাড়ির বাতাসে একটা নিউজ ভাসছে, তোমাদের কন্যা গ্রুপের সদস্যারা মিলে নাকি বিজনেস প্ল্যান করছো? ঘটনা কি সত্যি?

নাবিহা চোখ বড় বড় করে বললো, হায় আল্লাহ! তোমার কাছে এই তথ্য পৌঁছে গিয়েছে? আমরা তো সারপ্রাইজ দেবো ভেবেছিলাম।

আদী হেসে বললেন, কিসের সারপ্রাইজ?

নাবিহা হেসে বলল, আচ্ছা চলো তোমাকে পুরো ঘটনা খুলে বলি। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় আড়াই মাস আগে। আমাদের ফ্রেন্ডদের একটা প্রোগ্রাম ছিল। সবসময় তো প্রোগ্রাম আমাদের বাড়িতেই হয়। কিন্তু ঐদিন প্রোগ্রাম আমরা হিবাদের বাসায় করেছিলাম। নানুমণি আমাদের সবার জন্য রসগোল্লা, কালোজাম মিষ্টি বানিয়ে দিয়েছিলেন। মামণি পেস্ট্রি কেক বানিয়ে দিয়েছিলেন। অনেক বেশি করে বানিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা সবাই খাওয়ার পরেও অনেক রয়ে গিয়েছিল। সবাই তখন ভাগ করে নিজ নিজ বাসায় নিয়ে গিয়েছিল মিষ্টি আর কেক। ওদের বাসা থেকে আবার ওদের রিলেটিভদের কেউ কেউ খেয়েছে সেই কেক মিষ্টি। মোটকথা, কেক, মিষ্টি ছড়িয়ে পড়েছিল দিকে দিকে, ঘরে থেকে ঘরে।

আদী হেসে ফেললেন। নাবিহাও হাসতে হাসতে বলল, হিবা, ফারিহা, মেহরিন তিনজনই পরদিন ফোন করেছিল কেক, মিষ্টির জন্য। আমি বলেছিলাম মামণি, নানুমণিকে বানিয়ে দিতে বলবো। কিন্তু ওরা যেহেতু পরিমাণে বেশি চাচ্ছিলো তাই হাদিয়া স্বরূপ নিতে চাচ্ছিলো না। কিনে নিতে চাচ্ছিলো। এই কথা শুনে আমি খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু জিহাদ ভাইয়া বললো, এমনটা হলে কিন্তু মন্দ হয়না। পাপা , চাচ্চুদের স্টুডন্ট লাইফের কথা ভেবে দেখো। স্টুডেন্ট লাইফে পাপা, চাচ্চুরাও তো পার্টটাইম জব করেছেন। এবং হোম কিচেন সার্ভিসই করেছেন উনারা। পাপা, চাচ্চুরা সবসময় কতো কনফিডেন্টের সাথে বলেন উনারা সেলফ মেড পারসন। আমরা যদি এই সুযোগটা কাজে লাগাই তাহলে হয়তো আমরাও একসময় বলতে পারবো আমরা সেলফ মেড পারসন। ভাইয়ার কথাটা আমাদের সবার পছন্দ হয়েছিল।

আদী হেসে বললেন, মাশাআল্লাহ! পছন্দ করার মতো কথাই বলেছে জিহাদ। আমরা যখন হোম কিচেন সার্ভিস শুরু করেছিলাম তোমাদের বয়সীই ছিলাম।

আবারো শুনতে চাই তোমাদের কিচেন সার্ভিস শুরু গল্পটা। বলো না আদীব্বা প্লিজ।

আদী হেসে বললেন, একবার ছুটিতে দেশে গিয়েছিলাম আমরা। ফেরার সময় মা, মামণি, আম্মি সবাই মিলে ভাপের পুলি পিঠা, মালপোয়া, নাড়ু আরো অনেক কিছু দিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের ফ্রেন্ডদের জন্য। বিকেলে ফ্রেন্ডদেরকে যখন দিচ্ছিলাম তখন আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের ডেভিডকে দেখে ওকেও দিয়েছিলাম। ডেভিডের বাসায় তখন ওর কিছু ফ্রেন্ড এসেছিল। ওরা মালপোয়া আর ভাপা পুলিপিঠা খেয়ে এতই মজা পেয়েছিল আবারও নিতে চলে এসেছিল ডেভিড। যা ছিল দিয়ে দিয়েছিলাম তখন। এর পরের উইকএন্ডে ডেভিড অনুরোধ করেছিল ওর এক ফ্রেন্ডের পার্টির জন্য দেড়শো মালপোয়া আর ভাপের পুলিপিঠা এনে দিতে পারবো কিনা। ডেভিড কে বলা হয়নি ওগুলো যে মা দেশ থেকে পাঠিয়েছিলেন। তাই ভেবেছিল আমরা হয়তো আশেপাশের কোন ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট থেকে এনেছি। আমরা হ্যা বা না কিছু বলার আগেই ডেভিড হান্ডেড ডলার হাতে গুঁজে দিয়ে বলেছিল, এতে হয়ে যাবে নাকি আরো লাগবে? ঐ সময় টাকায় বেশ প্রয়োজনও ছিল আমাদের। তাই বললাম, এরমধ্যেই হয়ে যাবে। এরপর ওকে বিদায় দিয়ে তোমার পাপা, আমি আর হুজাইফা মিলেই বানিয়ে ফেলেছিলাম মালপোয়া আর ভাপের পুলিপিঠা। মামণিকে ফোন করে জেনে নিয়েছিলাম সবকিছু। আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি ভালোই হয়েছিল। পার্টির সবাইও খুব পছন্দ করেছিল । পরের ইউকএন্ডে তিনটা পার্টি থেকে প্রায় এক চারশো পিসের অর্ডার পেয়েছিলাম।ডেভিড এরমধ্যে একদিন এসে যেখান থেকে খাবার আনি সেই রেস্টুরেন্ট এর ঠিকানা চাইলো। তখন ওকে জানালাম আমরা নিজেরাই বানিয়ে দিয়েছি। ডেভিড ব্যবসায়ী মানুষ তাই ব্যবসার বুদ্ধি দিলো আমাদেরকে। পরের উইকএন্ডে নিজের বাসায় পার্টি দিয়েছিল। এবং ওর সাথে কথা পরামর্শ অনুযায়ী আমরা নতুন কিছু খাবার বানিয়ে দিয়েছিলাম সেদিন। বীফ টিকিয়া কাবাব, বুন্দিয়ার লাড্ডু, চিকেন রোল এন্ড ভেজিটেবল পাকোড়া। প্রতিটা আইটেমই সবার ভীষণ পছন্দ হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ। এরপর থেকে এত অর্ডার আসতে শুরু করেছিল যে রীতিমত হিমশিম খেতে হতো আমাদেরকে। পাবলিসিটির কাজে ডেভিডই সবকিছু করেছে। ডেভিড পরামর্শ দিয়েছিল ফার্স্টফুড রেস্টুরেন্ট দেবার। কারণ আমাদের স্যান্ডুইচ, বার্গারও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু প্রথমেই আমরা রেস্টুরেন্ট নেবার সাহস করতে পারিনি। তাছাড়া আমরা সবাই স্টুডেন্ট ছিলাম অতটা সময়ও ছিল না আমাদের। প্রায় দেড় বছর আমরা হোম কিচেন সার্ভিসই চালিয়েছি। এরপর পাবলিক প্লেসে একটা পুরনো রেস্টুরেন্টের খোঁজ এনে দিয়েছিল ডেভিড আমাদেরকে।

সেটাই ছিল তোমাদের প্রথম রেস্টুরেন্ট, তাই না? উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বললো নাবিহা।

আদী হেসে বললেন, হ্যা, আলহামদুলিল্লাহ। সেই রেস্টুরেন্টটাই ছিল আমাদের রেস্টুরেন্ট বিজনেস শুরুর প্রথম রেস্টুরেন্ট। ডেভিডের উৎসাহ ও পরামর্শে আমরা রেস্টুরেন্ট তো নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু যেহেতু আমরা সবাই স্টুডেন্ট ছিলাম। পড়াশোনা ঠিক রেখে ফুল টাইম রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করার মতো কেউ ছিল না আমাদের। তাই আমরা ডেভিডের সাথে কন্টাক্ট এভাবে করেছিলাম যে ইনভেস্ট আমরা করবো, কি কি খাবার থাকবে সেই মেন্যু আমরা নির্ধারণ করবো। কিন্তু দেখাশোনা থেকে নিয়ে শুরু করে অন্যান্য অফিশিয়াল সব কাজ ডেভিড করবে। এজন্য সেলারি ছাড়াও প্রফিটের টুয়েন্টি পার্সেন্ট ওকে দেয়া হবে। ডেভিড রাজী হয়ে গিয়েছিল বলার সাথে সাথেই। এরপর কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। পুরো রেস্টুরেন্টই নতুন করে ডেকোরেশন করেছিলাম। কোয়ালিটির দিকে খুব বেশি কেয়ারফুল ছিলাম আমরা। যাতে কেউ একবার আমাদের রেস্টুরেন্টে এসে খেয়ে যাবার পর, পরবর্তীতে আবারো আসার সময় সাথে করে নতুন কাউকে নিয়ে আসে খাবার টেষ্ট করানোর জন্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিভিন্ন ফ্লেবারের জ্যুস, আইসক্রিম, চা-কফি, স্যুপ এসব আমরা রেখেছিলাম অ্যালকোহলের চাহিদা দূর করার লক্ষ্য। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এই আইটেমগুলোই আমাদের রেস্টুরেন্টের মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছিল। অনেক দূর থেকেও লোকজন আসতো আমাদের রেস্টুরেন্টে। ধীরে ধীরে আমাদের অভিজ্ঞতা যত বেড়েছে, খাবারের মান তত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই সাথে খাদ্য প্রেমী মানুষও। এক পর্যায়ে গিয়ে রেস্টুরেন্টের সংখ্যা।

নাবিহা হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আসলেই যখন মানুষ কল্যাণের পথে চলতে চেষ্টা করে, আল্লাহ সেটা সহজ করে দেন। কল্যাণের পথকে আমরাই কঠিন মনে করে এড়িয়ে যাই। নিজেদেরকে বঞ্চিত করি আল্লাহর করুণাধারায় সিক্ত হওয়া থেকে।

আদী হেসে বললেন, একথাটাই বেশির ভাগ মানুষ বুঝতে পারে না বা বোঝার চেষ্টা করে না। আল্লাহর উপর ভরসা করে বলে কিন্তু সেই ভরসা থেকে উদ্যোগ নেবার সাহস করে না। অথচ সেই ভরসার ভীত কতই না দুর্বল যা আমাদের কদমকে সামনে এগুবার সাহস পর্যন্ত দিতে পারে না। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের মনে এক মূহুর্তের জন্যও দ্বিধা কাজ করেনি। কারণ আমাদের লক্ষ্য ক্লিয়ার ছিল আমাদের কাছে। আমরা জানতাম কি করতে যাচ্ছি, কেন করতে যাচ্ছি। ব্যর্থতা আসতে পারে এই চিন্তাটাকেও আমরা মনের কাছে ভিড়তে দেইনি। হয়তো তখন সবে মাত্র আমরা টিনএজের গন্ডি থেকে বের হয়েছিলাম বলেই অন্যরকম উত্তেজনা ছিল মনে। রিক্স নিতে ভালো লাগতো। অ্যাডভেঞ্চার ভালো লাগতো। চিন্তার করার সাথে সাথেই অ্যাকশনে নেমে পড়তাম সবাই মিলে। ঐসময় একটাই ভাবনা ছিল আমাদের মনে, “ আমাদের উদ্দেশ্য যদি সুন্দর ও সঠিক থাকে তাহলে ব্যর্থতা আমাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না কিছুতেই।“ এই বিশ্বাস আর ভরসাকে আমরা সবসময় ইতিবাচক রুপেই ফিরে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। তাই হয়তো প্রথম রেস্টুরেন্টটা দেবার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে আমাদের রেস্টুরেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৩ টিতে। এবং সেই বছরই আমরা প্রথম সুপার স্টোর দিয়েছিলাম সমস্ত হারাম ফুড অ্যাভয়েড করে শুধুমাত্র হালাল ফুডের। এমনকি আমরা সন্দেহযুক্ত ই-কোড আছে এমন খাবারও অ্যভয়েড করেছি। উইলি দাদু তখন বিশাল বড় সাহায্য করেছিলেন আমাদেরকে। আমাদের নানাভাইয়ের এক আমেরিকান ফ্রেন্ড ছিলেন।

উইলি দাদু, তাই না আদীব্বা?

আদী হেসে বললেন, হ্যা উইলি দাদু। উইলি দাদুদের পারিবারিক বন্ধ পরে থাকা ফ্যাক্টরিটা আমাদেরকে উপহার স্বরূপ দিয়েছিলেন। যারফলে, আমাদের সুপার মার্কেট আমরা নিজস্ব প্রোডাক্ট দ্বারা সাজানোর সুযোগ পেয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। আমাদেরকে পার্টটাইম জবের জন্য তখন আর অন্য কোথাও যেতে হতো না। নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই আমরা নিজেরা কাজ করেছি, আমাদের যেসব ক্লাসমেটদের জবের দরকার ছিল তাদেরকে কাজ দিয়েছি। এছাড়া অসংখ্য নীডি মানুষেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল এরফলে আলহামদুলিল্লাহ।

নাবিহা বলল, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু পড়াশোনা সামলে এইসব কিছু দেখাশোনা নিশ্চয়ই অনেক বেশি কঠিন হয়েছিল তোমাদের জন্য।

আদী হেসে বললেন, কঠিন হতো যদি আমরা সংঘবদ্ধ না থাকতাম তাহলে। কিন্তু আমরা তো সর্বদা, সর্বাবস্থায় পরস্পরের হাত আঁকড়ে ধরে পথ চলেছি। আমাদের কারো জীবনে এমন কোন সফলতা নেই, যেটাকে ঘিরে বলতে পারি এটা আমার একার অর্জন। আমাদের একার কোন অর্জন নেই। যা কিছুই আছে সব আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফল আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের প্রতিটা কাজের পেছনে পরিষ্কার পরিকল্পনা ছিল। নিয়ম ছিল, রুটিন ছিল প্রতিটা কাজের। কেউ যাতে ভুলেও রুটিনে বা নিয়মে কোন উল্টা পাল্টা করতে না পারে সেজন্য আমাদের চারজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের কাজ ছিল একাউন্ট দেখা আর সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া। যদিও মনেহতো ওরা হয়তো কম কাজ করছে, আরামে আছে। কিন্তু ওদের কাজই ছিল সবচেয়ে কঠিন। সাথীদের পিছনে অতন্দ্রপ্রহরীর মতো লেগে থাকতো ওরা চারজন। আলহামদুলিল্লাহ ওদের এই ধৈর্য্য, অধ্যবসায় ও ত্যাগের মূলধন যদি না থাকতো আমরা কখনোই হয়তো পারফেকশনিস্ট হতে পারতাম না কথা, কাজ ও আচরণে।

নাবিহা হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমার সেই চারটা সোনার টুকরো ছেলে যেন কে কে?

আদী হেসে বললেন, কুতায়বা, হুজায়ফা, হামজা আর মাহমুদ। তবে আম্মাজান আপনার এই সোনার টুকরোরা আপনার পাপার আত্মার একেকটা টুকরো।

নাবিহা হেসে বলল, হ্যা পাপা সবসময় বলেন, ‘আমার সাথীদের ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। আমার জীবনের সবকিছু অসম্পূর্ণ। ওরা আছে বলেই আমি আছি। ওদের একজনও যদি আমাকে ছেড়ে সরে যায় আমার ভীত হেলে যাবে। আমার প্রতিজন সাথী আমার অস্তিত্বর অত্যাবশ্যকীয় অংশ।’ তোমাদের সবার বন্ধন অদ্ভুত সুন্দর আদীব্বা। কত বছর হয়ে গিয়েছে তাও তোমাদের বন্ধন আগের মতোই আন্তরিক, সুদৃঢ়। মত পার্থক্য অনেক হয় তোমাদের কিন্তু তোমাদের মন সবসময়, সর্বাবস্থায় একত্রিত থাকে। এর কারণ তোমাদের বন্ধনের কেন্দ্রবিন্দু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি ভালোবাসা। ইনশাআল্লাহ আমরাও নিজেদেরকে এভাবেই গড়বো। এখন তাহলে আমি যাই আদীব্বা।

আদী বললেন, যাবে মানে? তোমাদের হোম কিচেন সার্ভিসের ঘটনা বলবে না?

নাবিহা হেসে বলল, অবশ্যই বলবো তবে এমন একা একা না। এটা আমাদের সবার অর্জন তাই সবাই মিলে একসাথে বলবো ইনশাআল্লাহ।

আদী তখন হাসি মুখে নাবিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। নাবিহাও হাসতে হাসতে চলে গেলো।

চলবে…

পর্ব-৫