ঘর সাজানো শখ। অনেক কিছু থাকলে ঘর সাজানো সুন্দর হয় তা কিন্ত না। কিনতে পারা যায় না চাইলেও অনেক কিছু। কিন্তু চাইলেই একটু বুদ্ধি খাটিয়ে খুব কম জিনিস দিয়ে ঘর সাজানো যায়। জেনে নেই সস্তায় চমৎকার ভাবে ঘর সাজানোর কৌশলগুলোঃ
বই সাজানো
বই ঘরে থাকবেই তাই বইয়ে যত্ন নেওয়া হয় দরকার। ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে একই রঙের বইগুলোকে একসাথে করে সাজিয়ে নিন।
ছবি দেওয়ালে লাগান
পছন্দের মত ছবি আপনি দেওয়া লাগাতে পারেন। এতে আপনার ঘর এর সুন্দর প্রশান্তির জায়গা মনে হবে।
গাছ ও ফুল
অন্যান্য ঘর সাজানোর জিনিসের তুলনায় ফুল এবং গাছ বেশ সস্তা। এই গাছ দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার বাসাটি। গাছ ঘরকে রঙিন ও জীবন্ত করে তুলবে। জানালার ধার ঘেঁষে লতানো গাছ লাগানো যেতে পারে আর ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস না থাকলে গাছের বদলে রেখে দিতে পারেন একগুচ্ছ তাজা ফুল। ঘরের এক কোণে কয়েকটি তাজা ফুল রেখে দিলে নিমিষেই ঘর উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
একটি সাজানো পরিপাটি ঘর নিমিষেই আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। বাড়িতে যারা থাকেন প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকার জায়গাটি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। ঘর গোছানোর সময় খেয়াল রাখবেন যার ঘর গোছাচ্ছেন তার রুচি এবং পছন্দ সম্পর্কে। প্রতিদিন একটু একটু করে গোছানো যদি আপনার পক্ষে সম্ভব
দেশে একের পর এক ঘটছে ছাত্রী অপহরণের ঘটনা। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে মাদরাসার ছাত্রী অপহরণের ঘটনাও ঘটছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেও ছাত্রী অপহরণের চেষ্টা হয়েছে সম্প্রতি। দেশে অপহরণের ঘটনা আগেও কমবেশি ঘটছে। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্রী অপহরণের কয়েকটি ঘটনা কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে অভিভাবকদের মনে।
বিশেষ করে গত ২৯ জুন রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে সবার সামনে থেকে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া ১৩ জুলাই কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদারাসাছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। এ দুই ছাত্রীই গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে অপহরণকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ দুই শিক্ষার্থীই জানিয়েছে, গাড়িতে তারা আরো মেয়ে ও শিশু দেখেছে, যাদের অপহরণ করা হয়েছে।
এ খবর অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক দিন ধরে দেশে একের পর এক ধর্ষণ ও গণধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে মেয়ে সন্তানদের মা-বাবা ও অন্য অভিভাবকদের মনে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের ছাত্রী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অনেক ঘটনাও প্রকাশিত হচ্ছে অনেক দিন থেকে। একই সাথে বাড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী অপহরণের ঘটনা। সব মিলিয়ে সার্বিক নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করেছে অভিভাবকদের।
মেয়ে সন্তান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বাইরে কোথাও গেলে বাসায় না ফেরা পর্যন্ত দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতার মধ্যে কাটাতে হয় মা-বাবাকে। এমনকি মা-বাবা সাথে করে মেয়েকে স্কুল-কলেজে পৌঁছে দেয়া আর নিয়ে আসার সময়ও অনিরাপদ বোধ করেন। কারণ অপহরণকারীরা সবার সামনে থেকে ছো মেরে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে মেয়েদের। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছেও সন্তানকে নিরাপদ মনে করতে পারছেন না অনেকে।
অসহায় অনেক অভিভাবক পত্রিকা অফিসে ফোন দিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা লেখার অনুরোধ করেছেন। একজন অভিভাবক জানান, আমার মেয়েও রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের মুগদা শাখায় পড়ে। এ স্কুলের সামনে থেকেই যেভাবে একটি মেয়েকে অপহরণ করা হলো তাতে আমিও আমার মেয়েকে নিয়ে ভীষণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দয়া করে আমাদের জন্য কিছু একটা করেন। আমাদের কথা লেখেন। এসব যাতে বন্ধ হয় সেভাবে লেখেন। আমরা কোথাও আর নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছি না।
গত ২৯ জুন দুপুরে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মুগদা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রী ফারাবি স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বাসায় ফেরার জন্য। এ সময় একদল দুর্র্বৃত্ত আচমকা তাকে মাইক্রোবাসে তুলে সবার সামনে থেকে গাড়ি চালিয়ে চলে যায়। গাড়িতে তোলার পরই অচেতন করা হয় তাকে। এরপর গাড়ি কেরানীগঞ্জ পৌঁছার পর ফারাবি চেতনা ফিরে পেলে সুযোগ বুঝে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা পায়। ফারাবি জানায়, গাড়িতে তার মতো আরো কয়েকটি মেয়েকে দেখেছে সে, যাদের অপহরণ করা হয়েছে।
১৩ জুলাই প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে কুমিল্লার লালমাইয়ে। স্থানীয় ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তাসলিমা ভোর ৬টায় নানার বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়ক সংলগ্ন খলিলপুর-বাইতুন নূর জামে মসজিদ মক্তবে যাচ্ছিল। এ সময় বোরকা পরিহিত এক মহিলা মুখে রুমাল দিয়ে চেপে ধরে তাকে মাইক্রোবাসে তোলে। সকাল ৭টার দিকে জামতলী এলাকায় পৌঁছলে মাইক্রোবাস থামিয়ে অপহরণকারীদের একজন (পুরুষ) রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল। এ সুযোগে মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে তাসলিমা মাইক্রো থেকে লাফিয়ে দৌড় দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। তাসলিমাও জানিয়েছে, গাড়িতে সে দুইজন শিশুর কান্না শুনেছে।
গত ২৯ জুন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় অপহরণ করা হয় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে। অপহরণের চার দিনের মাথায় ২ জুলাই মঙ্গলবার মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে মেয়েটির পরিবার। পুলিশ ও মেয়েটির পরিবার গণমাধ্যমকে জানায়, উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের পেড়ি গ্রামের সোহেল (২৮) ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত ২৯ জুন সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সান্দিকোনা-সাহিতপুর সড়কের পটুয়াপাড়া এলাকা থেকে মেয়েটিকে সোহেল ও তার সহযোগীরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়।
হবিগঞ্জের মাধবপুর থানায় গত ১২ এপ্রিল এক ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ করা হয়। অপহরণের শিকার মেয়েটি লোকনাথ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ১২ এপ্রিল দায়ের করা অভিযোগে মেয়েটির মা জানান, ৯ এপ্রিল বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদল দুর্বৃত্ত তাকে অপহরণ করে। এর পর থেকে তার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মনি আক্তার (১২) নামে এক মাদরাসাছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। মাদরাসায় যাওয়ার পথে বাগবাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। সে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের চারিগাঁও গ্রামের ইদ্রিছ আলীর মেয়ে এবং রসুলপুর মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী।