banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: November 15, 2024

 

টিনএজ বয়সে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ

টিনএজ বয়সে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ


মাসুদ শরীফ


নবি ﷺ যেভাবে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ দিতেন

টিনএজ বয়সটা ছেলে-মেয়ে দুজনের জন্যই বেশ অস্থির একটা সময়৷ নিজের শরীর এবং বিপরীত লিঙ্গের শরীর প্রতি এ-বয়সে প্রথম তারা আকর্ষণ বোধ করে৷ এগুলোকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না৷ আপনার সুবোধ-সুশীলা ছেলে বা মেয়েকে এখনো ছোট্টটি মনে করার কারণ নেই৷ করলে পরে পস্তাবেন আপনিই৷
নবিজির সময়েও এ-বয়সী ছেলেমেয়েরা ছিল৷ তারা সবসময় নিজেদের দৃষ্টি সংযত করতে পারেনি৷ এটা মানুষের সহজাত স্বভাব৷ কিন্তু নবিজি এ-রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন৷ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছেন৷

একবার হাজ্জের সময় নবিজি আর তার চাচাতো ভাই ফাদ্‌ল বিন আব্বাস যাচ্ছিলেন এক সওয়ারিতে চড়ে৷ ফাদ্‌ল ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ বিন আব্বাসের ছোট ভাই৷ আমরা ধারণা করতে পারি, নবিজির চাচাতো ভাই যেহেতু, তারা দুজনই সুদর্শন ছিলেন৷ বিশেষ করে নবিজির দাদার বংশের সব চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা সুন্দর সুঠাম হয়ে থাকবেন৷

তো পথে খাসাম গোত্রের এক তরুণী নবিজির সামনে এসে দাঁড়ালেন৷ তরুণী তাকিয়ে আছেন ফাদ্‌লের দিকে৷ ফাদ্‌ল তাকিয়ে আছেন তরুণীর দিকে৷ এর ফাঁকেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আমার বাবার উপর হাজ্জ করার বাধ্যবাধকতা চেপেছে৷ কিন্তু তিনি খুবই বয়স্ক৷ কোনো কিছুতে সওয়ার হতে পারেন না৷ আমি কি তার হয়ে হাজ্জ করতে পারব?”
“হ্যাঁ৷” নবিজি বললেন৷ (বুখারি)

আপনি-আমি হলে তো আমাদের মূল নজর থাকত প্রশ্নকর্তার দিকে৷ কিন্তু নবিজির একটা চোখ কিন্তু ছিল ফাদ্‌লের উপরও৷ তিনি জানতেন, ওদের যা বয়স, একজন আরেকজনের দিকে তাকাবেই৷ আর সেজন্য প্রশ্ন-উত্তর সময়টাতে বার তিনেক ফাদ্‌লের মুখ তিনি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তরুণীটিকে উত্তর দেয়া শেষ হলে নবিজি তার চাচাতো ভাইকে বললেন, “আজ এমন এক দিন, যে-তার দৃষ্টি সংযত রাখবে, লজ্জাস্থান ও জবান সুরক্ষিত রাখবে, তাকে মাফ করে দেয়া হবে৷” (ইবনু খুজাইমা)

ঘটনাটির আরও বেশ কিছু মজার দিক আছে৷

ঘটনাটি ঘটেছিল নবিজির বিদায় হাজ্জের সময় কাবা ঘরের আশেপাশে কোথাও৷ এ-থেকে বোঝা যায়, মানুষের চরিত্রের কিছু কিছু দিক সবসময় এক৷ মানুষ যেমন মরণশীল, মানুষ যেমন ভুল করে, তেমনি নারী-পুরুষের আকর্ষণ সহজ ও স্বাভাবিক বিষয়৷ একে অস্বীকার করা বোকামি৷ কথা হচ্ছে, কীভাবে সেই আকর্ষণ আমরা বৈধভাবে সামলাব সেটা৷
নবি ﷺ তাঁর চাচাতো ভাইকে ধমকের সুরে কিছু বলেননি৷ কিংবা শাস্তিমূলক কিছু বলেননি৷ সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছেন৷ প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছেন আগামীর জন্য৷ আজ হয়তো শাস্তির ভয়ে কিংবা নবিজির সামনে মুখ ফিরিয়ে থাকল৷ কিন্তু পরে যখন তিনি থাকবেন না, তখন কী হবে? এজন্য এমন সুন্দরভাবে কথাগুলো বললেন, যেন সেটা হৃদয়ের গভীরে দাগ কাটে৷ এর রেশ যেন থাকে আজীবন৷

ফাদ্‌ল তো শুধু তাকিয়েই ছিলেন কেবল৷ কিন্তু নবিজি তাকে লজ্জাস্থান সুরক্ষিত রাখার কথা বললেন কেন? আচ্ছা, তা নাহয় বললেন, কিন্তু জবান?
প্রথম দেখাতে আসলেই ভালোবাসা হয় কি না জানি না, তবে প্রথম দেখা থেকে ভালো লাগা, ভালো লাগা থেকে কথাবার্তা, ডেটিং, এরপর অনেক কিছু হয়ে যায়৷ নবিজি এজন্য শুরুতেই গোড়া কেটে দিয়ে আকর্ষণ বাড়ার পথ রোধ করে দিলেন৷ এটা ছিল যৌনতা বিষয়ে নবিজির শিক্ষা৷

আজকাল আমরা শুনি অবৈধ এবং বিয়ে-বহির্ভূত যৌন-সম্বন্ধ থেকে যদি গর্ভে বাচ্চা না আসে, তা হলে নাকি সব ঠিক৷ আজকাল যৌনশিক্ষা মানে ইমার্জেন্সি পিল, কনডম—যার পোশাকি নাম ‘নিরাপদ দৈহিক মিলন’৷ কিন্তু নবিজির শিক্ষা ছিল আদর্শমুখী৷ এর মূলে ছিল আল্লাহর প্রতি সচেতনতা৷ দৃষ্টি সংযত করো, লজ্জাস্থান ও মুখ সুরক্ষিত রাখো, আল্লাহর ক্ষমা অর্জন করো৷

ছোটবেলা থেকে যদি আপনি বাবা-মা’র ঘরে ঢোকার আগে অনুমতি নেন, আপনি ছেলে হন কি মেয়ে—ঘরের ভেতর যদি নিজের পর্দা রক্ষা করে চলেন, সালাতের সময়ে ঠিকঠাকভাবে পোশাক পড়েন, তা হলে ঘরের বাইরে আপনার পথ চলা সহজ হবে৷

[নবি ﷺ যেভাবে সন্তান মানুষ করেছেন, হিশাম আওয়াদির Children Around The Prophet অবলম্বনে…]

 

এবার ফতুল্লায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক

এবার ফতুল্লায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পর এবার ফতুল্লা থানার ভূঁইগড়ের মাহমুদপুর এলাকায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাওলানা মো. আল আমিন নামে এক মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে আটক করেছে র্যাব। যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে আল আমিন জানান, তিনি আগে এমন ছিলেন না, শয়তানের প্ররোচনায় এ কাজ করেছেন। এ জন্য নিজের মৃত্যুদণ্ড কামনা করছেন।

বায়তুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আটক করা হয়। তিনি এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতিও করেন। আটকের সময় তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল আজিজ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া স্কুলশিক্ষকের ধর্ষণের ঘটনাটির প্রচারিত বিভিন্ন নিউজ ও ভিডিও আমরা আমাদের ফেসবুক পেজে আপলোড করেছিলাম। স্থানীয় একজন মহিলা যখন ফেসবুকে দেখছিলেন, তখন তার তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে এটি দেখে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে যে, ‘স্কুলের ওই শিক্ষকের শাস্তি হলে আমাদের হুজুরের কেন শাস্তি হবে না? আমাদের হুজুরও তো আমাদের সাথে এমন করে। পরে শিশুটি তার মাকে বিস্তারিত জানালে শিশুটির মা র্যাব অফিসে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক একাধিক ছাত্রীকে তার বাসায় পড়তে গেলে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে।

তিনি জানান, এরপর র্যাব এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে। র্যাব অনুসন্ধানে জানতে পারে ২০১৮ সাল থেকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসার ১০ থেকে ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, শিক্ষক আল আমিন মাদ্রাসার একটি কক্ষে তার পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং একটি অফিস কক্ষসহ কয়েকটি ক্লাস কক্ষে ছেলেমেয়েদের পড়াতেন। তার স্ত্রী একজন পর্দানশীন মহিলা, তিনি ভেতরের দিকে থাকতেন, সামনে তেমন একটা আসতেন না। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময় পড়তে আসা ছাত্রীদেরকে আল আমিন ডেকে তার কক্ষ ঝাড়ু দেওয়া ও বিভিন্ন কৌশলে এনে তাদেরকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।

র্যাব-১১ অধিনায়ক জানান, এসব ঘটনার প্রমাণ স্বরূপ আমরা তার মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার তল্লাশি করে প্রচুর পর্নোগ্রাফি ভিডিও পেয়েছি। কিছু কিছু পর্নোগ্রাফি তিনি নিজেও তৈরি করেছেন। তিনি তার কাছে পড়তে আসা কোনো ছাত্রীর ছবির মাথার অংশ পর্নোগ্রাফি ভিডিওর সাথে সংযুক্ত করে ছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
সুত্রঃ ইত্তেফাক।