banner

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: November 2024

 

ডেঙ্গুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের স্ত্রীর মৃত্যু

ডেঙ্গুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের স্ত্রীর মৃত্যু


স্বাস্থ্যকথা


ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফারজানা (৪২) নামে আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ বছর ঢামেকে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৮ জনে দাঁড়াল। সোমবার দিবাগত রাতে ঢামেক হাসপাতালের জেনারেল আইসিইউতে মারা যান ফারজানা। রাজধানীর নিউ ইস্কাটন এলাকায় থাকতেন তিনি।

ঢামেকের সহকারী পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফারজানা আগেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। সোমবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আইসিইউতে নেয়া হয়। রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ ইকোনিক্স ইউনিটের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) ড. নুরুল আমিনের স্ত্রী তিনি।

ঢামেকে ডেঙ্গু রোগে মৃত ৮ জনের ৬ জনই নারী। মৃত অপর সাতজন হলেন- ফরিদপুরের রাবেয়া (৫০), আজমপুরের ফাতেমা (৪৩), এলিফ্যান্ট রোডের নাসিমা (৩৩), কামরাঙ্গীরচরের হাফিজা (৬১), ডেমরার রাজু (২০), লালবাগের ফরহাদ (৪৪) ও গাজীপুরের রিতা।

নাসির উদ্দীন আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢামেকে ৫৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে ভর্তি হয়েছে মোট ২০১১ জন; যার মধ্যে শুধু জুলাইয়ে ১৮৫৮ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও এ বছরের জানুয়ারিতে তিনজন, (ফেব্রুয়ারি শূন্য) মার্চে চারজন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৮ জন, জুনে ১৩৫ ভর্তি হন। তবে জুলাইয়ের ২৮ দিনে একলাফে এ সংখ্যা ১৮৫৮ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

বিতর্কের ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া সেই ‘বিরল মেধাবীর’ গল্প

বিতর্কের ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া সেই ‘বিরল মেধাবীর’ গল্প


অন্যান্য


বক্তব্যটা একটা বিতর্ক অনুষ্ঠানের। চিকন মুখে লেগেই আছে মায়াবী হাসি। কণ্ঠে যেন ভায়োলিনের সুর। কী বলছেন ক্ষণিকের জন্য তা ভুলে যেতে হয়; কীভাবে তিনি বলছেন বরং সেটি প্লাবিত হয় হৃদয়ে। দুই দিন ধরে এমনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বক্তার খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল নাম তার রেবেকা শফী।-দেশ রুপান্তর

ঢাকার ধানমন্ডিতে জন্ম এবং সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাকে বলছেন ‘বিরল মেধাবী’। বিতর্ক অনুষ্ঠানের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ছিল মূলত বিটিভি আয়োজিত স্কুলভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল। ১৯৯৩-৯৪ সালের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

রেবেকার গোটা পরিবারই পদার্থ বিজ্ঞানের চর্চায় নিয়োজিত। তার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা অধ্যাপক আহমেদ শফি। মা প্রফেসর সুলতানা শফি। আহমেদ শফির বাবাও রীতিমতো বিখ্যাত এক নাম, আবদুস সালাম, ছিলেন ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক। রেবেকার বড় বোন ফারিয়াল শফিও পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী।

রেবেকা জেনেটিকসের একজন রিসার্চ ফেলো। ঘরে আছে এনডিমিয়া নামের এক ফুটফুটে সন্তান।

ঢাকার হলিক্রসের পাঠ চুকিয়ে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানে লেখাপড়া করতে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের পর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে অ্যাস্ট্রোফিজিকস নিয়ে পিএইচডি করেন।

সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা শাব্বির আহসান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সেদিন পুরোনো এক টিভি ডিবেটের ভিডিও কে যেন পোস্ট করেছিল! এতই ভালো লাগল যে ভাবলাম ইনি কী করেন বা কোথায় আছেন দেখি!’

Physics Undergrad (GPA 4.00) – Cal Tech
Master’s Astrophysics – Harvard
PhD – Harvard (On Black hole Spin!)
Teaching Assistant, Post Doc RA, Swartz Fellow in Comp Neuroscience – Harvard Center of Brain Science
Post Doc Fellow – Broad Inst at MIT and Harvard
Post Doc Fellow – Harvard Med School
Winner of US$ 200,000 grant to study “Measure of Black hole Spin”
Best TV Debater – Bangladesh Television (I just saw her debate in a video, one of the best!)

পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত লিঙ্কডইন থেকে রেবেকা শফী সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জানা গেছে। নিজের পরিচয় তিনি এভাবে দিয়েছেন, ‘আমি ফিজিকস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। কিন্তু সম্প্রতি বায়োলজিতে প্যাশন আবিষ্কার করেছি। এখন জেনেটিকস এবং নিউরোসায়েন্সের ইন্টারসেকশন নিয়ে কাজ করছি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে।’

ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপে শুধু রেবেকাকে দেখা গেছে। কিন্তু বিতর্ক প্রতিযোগিতার ওই পর্বে আরও যারা ছিলেন, তারাও তুখোড় বিতার্কিক। সবাই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে এখন প্রতিষ্ঠিত।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ওই সময় নিয়মিত এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো। এখনো কালেভদ্রে হয়। তবে হতাশার কথা হল আগের সেই জৌলুস এখন আর নেই। বাংলাদেশের বিতর্ক চর্চায়ও পড়েছে ভাটা। ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন (এনডিএফ) এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির মতো কয়েকটি সংগঠন নিজেদের লড়াইটা অবশ্য ধরে রেখেছে। তবে এই অঙ্গনের মানুষেরা সেটিকে যথেষ্ট বলে মনে করেন না।

সুত্রঃ আমাদের সময়।

 

দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে পলাতক স্ত্রীর আইনি লড়াই

দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে পলাতক স্ত্রীর আইনি লড়াই


নারী সংবাদ


দুবাইর শাসক শেখ মোহাম্মদ আল-মাখতুম ও তার পালিয়ে যাওয়া এক স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের মধ্যে এক আইনি লড়াই লন্ডনের এক আদালতে শুরু হয়েছে।

শেখ মোহাম্মদ আল-মাখতুম মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী নেতাদের একজন। অন্যদিকে প্রিন্সেস হায়া জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সৎ বোন। তিনি পড়াশোনা করেছেন ব্রিটেনের প্রাইভেট স্কুলে এবং ঘোড়দৌড়ে অলিম্পিকে অংশ নেয়া প্রতিযোগী।

প্রিন্সেস হায়া কয়েক মাস আগে দুবাই থেকে পালিয়ে আসেন। বলা হচ্ছে, প্রাণনাশের আশঙ্কায় তিনি এখন লন্ডনে লুকিয়ে আছেন।

মূলত সন্তানরা কার কাছে থাকবে, তা নিয়েই লন্ডনের আদালতে এই দুজনের মধ্যে আইনি লড়াই হচ্ছে।

প্রিন্সেস হায়া ২০০৪ সালে শেখ মোহাম্মদকে বিয়ে করেন। তিনি হচ্ছেন শেখ মাখতুমের ছয় নম্বর স্ত্রী। শেখ মোহাম্মদের বয়স এখন ৭০। বিভিন্ন স্ত্রীর গর্ভে তার মোট ২৩ জন সন্তান।

শেখ মোহাম্মদেরও ঘোড় দৌড় নিয়ে আগ্রহ আছে। তিনি ব্রিটেনের নামকরা একটি ঘোড়ার আস্তাবল গোডোলফিন হর্স রেসিং স্ট্যাবলের মালিক।

প্রিন্সেস হায়া প্রথমে দুবাই থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন জার্মানিতে। সেখানে তিনি নাকি রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু এ মাসে জানা গেল যে তিনি এখন লন্ডনের কেনসিংটনে তার ১০ কোটি ডলারের বেশি দামের এক বাড়িতে থাকছেন ।

প্রিন্সেস হায়া এখন ব্রিটেনেই থাকতে চান বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দুবাইর শাসক যদি এখন তার স্ত্রীকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান, সেটা ব্রিটেনের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

শেখ মোহাম্মদ তার স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর ক্রুদ্ধ হয়ে একটি কবিতা লেখেন। সেখানে তিনি নাম উল্লেখ না করে একজন নারীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করেন। এই কবিতা তিনি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন।

প্রিন্সেস হায়া কেন পালিয়ে গেলেন
প্রিন্সেস হায়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো দাবি করছে, তিনি সম্প্রতি শেখ মোহাম্মদের এক কন্যা শেখ লতিফাকে রহস্যজনকভাবে যেভাবে দুবাই ফিরিয়ে আনা হয়, সে ব্যাপারে কিছু বিচলিত হওয়ার মতো তথ্য জানতে পেরেছেন। তারপরই তিনি নিজে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শেখ লতিফা এক ফরাসী পুরুষের সাহায্য নিয়ে দুবাই থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন সমুদ্রপথে। কিন্তু ভারতের সশস্ত্র রক্ষীরা তাদের আটক করে আবার দুবাইর হাতে তুলে দেয়।

সেসময় এই ঘটনার সমালোচনা হলে প্রিন্সেস হায়া দুবাইর শাসকের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, শেখ লতিফা দুবাইতেই নিরাপদ। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো তখন বলেছিল, শেখ লতিফাকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অপহরণ করে দুবাইতে ফিরিয়ে নেয়া হয়।

কিন্তু প্রিন্সেস হায়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এখন দাবি করছে, এঘটনার ব্যাপারে তিনি এখন নতুন কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। আর এ কারণে তিনি তার স্বামীর পরিবারের দিকে থেকে প্রচন্ড চাপের মুখে ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি

 

নুডলস এর রেসিপি

নুডলস এর রেসিপি


ঘরকন্যা


নুডলস পাকোড়াঃ

উপকরণঃ
রান্না করা নুডলস
ডিম ২টি
ময়দা/কর্ণ ফ্লাওয়ার
বিট লবন-১ চিমটি
ভাজার জন্য তেল

প্রস্তুত প্রণালীঃ
আপনার পছন্দ মত নুডলস রান্না করে নিন,চাইলে প্রণ বা চিকেন কিউবও দিতে পারেন । এবার একটু ঠান্ডা করে ফেটানো ডিম,সামান্য ময়দা/কর্ণ ফ্লাওয়ার,এক চিমটি বিট লবন দিয়ে মেখে নিন,আলতো করে মাখবেন নুডলস যেন চটকে পেস্ট না হয়ে যায়… ঝাল খেতে চাইলে একটু কাঁচা মরিচ কুচি দিতে পারেন । এবার গরম ডুবো তেলে ইচ্ছে মত আকারে লালচে করে ভেজে তুলে নিন । চা বা কফির সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন।

চিকেন ম্যাগি নুডলসঃ

উপকরণঃ
সিদ্ধ করা ম্যাগি নুডলস ১ প্যাকেট
রসুন এর পেস্ট ২ চাচামচ
সিদ্ধ হাড় ছাড়া মুরগির পিস ১ কাপ বড়
লবন স্বাদমত
সর্ষের তেল ছোট ১ কাপ
ধনে পাতা অল্প।

প্রস্তুত প্রণালীঃ
এটা বানাতে আমরা আগে টমেটো পেস্ট করে নেব । টমেটো পেস্ট দিয়ে তাতে ১চা চামচ রসুন এর পেস্ট, অল্প সর্ষের তেল, ধনে পাতা দিয়ে ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে নিন, রেডি হয়ে গেল বেসিক পেস্ট। এরপর নন স্টিক ফ্রাইং প্যানে খানিকটা তেল দিয়ে তাতে বাকি রসুন পেস্টটা দিন ও লাল করে ভাজুন। এবার ব্লেন্ড করা টমেটোর বেসিক পেস্ট টা দিয়ে দিন।সাথে সিদ্ধ মুরগির ছোট ছোট পিস গুলো দিন । ৩ মিনিট রান্না করুন যখন এটা ফুটে উঠবে তখন সিদ্ধ করে রাখা ম্যাগি নুডলস দিন, শেষে পরিমান মত লবন দিয়ে রান্না করুন আরো ৩ মিনিট। খেয়াল রাখেবন নুডলস যেন ড্রাই হয়ে না যায় এবং কিছুটা গ্রেভি যেন অবশ্যি থাকে । পরিবেশন করার আগে ধনে পাতা উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

 

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…২

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…২


আফরোজা হাসান


মামণি বড় ফ্লাক্সে করে চা/কফি দুটাই দিয়ে দিয়েছিলেন। নিজে চা নেবার সময় এক কাপ আরভের সামনেও রাখলো। ওমা সাথে সাথে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ উঠিয়ে নিলো আরভ। একেই মনেহয় বলে জাতে মাতাল তালে ঠিক। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে মোবাইল নিয়ে ম্যাসেজ করলো স্বাতি। “হ্যাপিনেস ব্যান্ডের চশমা দিলাম তোমায় উপহার। নাকের ডগায় বসিয়ে দেখো ছড়ানো আনন্দের বাহার। আনন্দকে খুঁজে পেতে যদিও দরকার হয় না দৃষ্টি। আনন্দ তো মনের ঘরে ঝুমঝুমান্তি রহমতের বৃষ্টি। আনন্দের সবচেয়ে বড় ম্যাজিকটা কি জানো? খুঁজে না পেলেও আনন্দকে মনেতে যায় জন্মানো।”

ম্যাসেজ দেখে সময় আরভের চেহারাতে চাপা হাসি ঝলকে উঠতে দেখলো স্বাতি। কিছুটা সাহস পেলো মনে। আবারো লিখলো, আচ্ছা আমরা কি অপরিচিতদের মত কথা বলতে পারি? সাথে সাথেই জবাব এলো, হুম! আনন্দে হুরররে… বলে চিৎকার দিতে ইচ্ছে করলেও চিৎকারটা গরম চায়ের সাথে গিলে ফেললো স্বাতি। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, আচ্ছা তো আপনি লেখক?

চোখ তুলে তাকালো আরভ। মুখে হাসি টেনে বলল, শখের লেখক বলতে পারেন। জীবনে ঘটমান হৃদয়াস্পর্শিত কথাগুলোকে মনের সাথে সাথে ডায়েরীর পাতাতেও টুকে রাখার চেষ্টা করি।

এর সার্থকতা কি?

সার্থকতা কি সেটা তো ভেবে দেখনি। তবে কখনো যদি মন ভুলে যায় কোন সুন্দর মুহুর্ত। ডায়েরীর পাতার ভাঁজ থেকে সেটিকে সযতনে তুলে নেয়া যাবে।

এটাই তাহলে আপনার লেখক হবার পেছনের কারণ?

ইন্টারভিউ নিচ্ছেন নাকি?

নাহয় হলোই ইন্টারভিউ!

আমার আসলে লাভ স্টোরি পড়ার হবি আছে।

তো? এরসাথে লেখার কি সম্পর্ক?

আমি প্রথম লাভ স্টোরি পড়েছিলাম যখন আমার বয়স সাড়ে সাত বছর।

স্বাতি চোখ বড় বড় করে বলল, সত্যি?

অবশ্যই সত্যি। বানান করে করে পুরো লাভ স্টোরি পড়ে ফেলেছিলাম। এরপর থেকে নিয়মিত পড়তাম।

আপনার বাবা-মা ধোলাই দেয়নি?

উনারা আসলে বুঝতেনই না যে আমি কঠিন সব বই পড়তে পারছি। তাই উনাদের চোখের সামনে বসেই জীবনের প্রথম আট দশটা লাভ স্টোরি পড়ে ফেলেছিলাম।

স্বাতি হাসতে হাসতে বলল, শুধুই কি পড়েছিলেন নাকি কিছু মিছু বুঝেও ছিলেন?

আরভ ঠোঁট টিপে হাসি চেপে বলল, সিরিয়াসলি লাভ স্টোরি পড়া শুরু করেছিলাম হাই স্কুলে উঠার পর। তখন কিছু মিছু না বেশ ভালোই বুঝতাম। কিন্তু বেশির ভাগ লাভ স্টোরিই আমার পছন্দ হতো না। কিছু অংশ খুবই বাজে লাগতো। একটা লাভ স্টোরি খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু শেষে গিয়ে নায়িকা মারা যায়। আমি এটা কিছুতেই মানতে পারছিলাম না। খুব কান্না করেছিলাম। একটা সময় মনে হলো যে, আমি বোকার মতো কান্না করছি কেন? তারচেয়ে গল্পের এন্ডিংটা বদলে দেই। সেদিন থেকে শুরু আমার গল্পের অপছন্দনীয় অংশগুলোকে নিজের মনের পছন্দ মত লেখার। এরপর থেকে যদি একটা লাইনও আমার অপছন্দ হতো কোন বইয়ের আমি সেটা কেটে দিয়ে নিজের পছন্দের লাইন বসিয়ে দিতাম নীচে।

স্বাতি হেসে বলল, শুনতেই অদ্ভুত রকম ভালো লাগছে। আমারো অবশ্য লেখার অভ্যাস আছে। আমার বয়স যখন সাত বছর তখন জীবনের প্রথম ডায়েরীটি উপহার পেয়েছিলাম। নতুন গল্পের বই মনেকরে মহা আনন্দে প্যাকেট খুলে যখন অক্ষর বিহীন সাদা পৃষ্ঠাতে ভরা ডায়েরীটা দেখেছিলাম বিস্ময় ভরা চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম,এটাতে তো কিছুই লিখা নেই। কি পড়বো আমি? বাবা কাছে টেনে নিয়ে হেসে বলেছিলেন,এটাতে কিছু লেখা নেই কেন জানো মা? প্রশ্ন ভরা চোখে তাকালে বাবা বললেন, কারণ এটাতে তুমি লিখবে। অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিলাম,আমি কি লিখবো এটাতে? বাবা জবাব দিয়েছিলেন,তোমার যা মন চাইবে তাই লিখবে মা। যেমন ধরো,আজ ঘুম থেকে উঠে তুমি সবার প্রথমে কি করলে, মামণির তোমাকে কতটা আদর করলো,বাবা অফিস থেকে ফেরার সময় তোমার জন্য কি নিয়ে এলো, ভাইয়াদের কাছে কি কি শিখলে,তোমার ভাইবোনদের সাথে কি কি দুষ্টুমি করলে, স্কুলে কি কি হয়েছে এইসব কিছু লিখবে। কিছুক্ষণ চিন্তা করে জানতে চাইলাম,বাবা আমি এসব কেন লিখবো? বাবা হেসে বলল,কারণ এটা হবে তোমার জীবন গ্রন্থ। এটাতে তাই তোমাকেই লিখতে হবে। যাতে বড় হয়ে তুমি জানতে পারো কেমন ছিল তোমার ছোটবেলা। কেমন ছিলে তুমি জীবনের প্রতিটি ধাপে।

আপনার বাবার কনসেপ্ট সত্যিই মুগ্ধকর। স্যালুট উনাকে।

স্বাতি হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর থেকে গত দশ বছরে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সব কথা লিপিবদ্ধ আছে আমার ডায়েরীতে। জীবনের সব খুঁটিনাটি লিখতে গিয়ে আমার বর্তমান ডায়েরীর সংখ্যা তেইশটা। জীবন যখন যে রূপে আমার সামনে এসেছে চেষ্টা করেছি ফুটিয়ে তুলতে সেই প্রতিচ্ছবি। যখন যে রঙে আমার ভুবন সেজেছে,সেই রঙের একটি করে আঁচড় আমার গ্রন্থেও পড়ছে। জীবন সেতো আনন্দ-বেদনার কাব্য। আমার গ্রন্থখানিতেও তাই খুঁজে পাই জীবনের নানান রূপ, নানান রঙ। কখনো মনকে বিষণ্ণ করে ঘন কুয়াশার রঙহীন কাব্য, কখনো বা আনন্দে রিমঝিম ধ্বনি তোলে ঠাস বুনোটের ছন্দ। জীবন গ্রন্থের কিছু পাতা আছে যা শোনায় কল্পনার রংয়ে ভালোবাসার তুলিতে বোনা তুলিতে বোনা স্বপ্নকথন,কিছু পাতা জুড়ে বিরাজমান ধূসর বিবর্ণ নিয়তির অমোঘ লিখন। আছে জীবনের প্রতি বাঁকে বাঁকে মোড়ে মোড়ে স্পর্শ রেখে যাওয়া বর্ণিল সব স্মৃতির সমাহার। দেখতে পাই ক্ষুদ্র এই জীবনে প্রাপ্তির বিশাল সম্ভার। নানা পরীক্ষায় যখনই টালমাটাল হয় মন,প্রবৃত্তি সুযোগে করে দেয় অসন্তোষের বীজ বপন। নজর পড়লে গ্রন্থে কৃতজ্ঞতার অশ্রু হয় বর্ষণ,তখন অনুভব করি নেয়ামতে ঘেরা আমার ভুবন।

আলহামদুলিল্লাহ এবার তো আপনি আমার মনকে মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ করে দিলেন। লাইক ফাদার লাইক ডটার। মাশাআল্লাহ।

চলবে

পর্ব-১

 

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা


মুসলিমা খাতুন


গভীর রাত। সবাই ঘুমে অচেতন। হঠাৎ পাশের বাড়ির তিনতলা থেকে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে ওঠে মধ্য বয়সী এক নারী। তাঁর চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে ওঠে অনেকেই। মুহূর্তের মধ্যেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে, মধ্যরাতে ঘরে ফিরে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রহার করছে। এক পর্যায়ে ঐব্যক্তি চিৎকার করে কাটা চামচ দিয়ে তার স্ত্রীর চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দিলে, ঘরের বাইরে এসে আক্রান্ত নারী তার সর্ব শক্তি দিয়ে বলে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করতে থাকে। ওই মহিলার স্বামী মাঝে মধ্যেই তাকে এই ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করে। অসহায় স্ত্রী মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বলে নীরবে সব যন্ত্রণা সহ্য করে যায়।
আমাদের দেশে নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, পাচার, খুন বা হত্যার মতো নানান ঘটনার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যদিও দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন জঘন্য একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। বৈষম্যমুলক সমাজ কাঠামোর ভেতরে দেশের নারীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তারা কর্মস্থলে বৈষম্য ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে, ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে কিশোরীদের কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। নারী ও কিশোরীদের অপহরণ করে সীমান্ত পার করে বিদেশে পাঁচার করা হচ্ছে।
এ ধরনের নির্যাতনের ফলে নারীর যেমন শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয় তেমনি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়।
দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতম কারণ হচ্ছে ‘যৌতুক’। সমাজে যৌতুক প্রথা একটি বড় অভিশাপ। আমাদের দেশে যৌতুক প্রথা যে সব কারণে এখন পর্যন্ত টিকে আছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, অর্থনৈতিক পরনির্ভরশীলতা, সামাজিক কুসংস্কার, বাল্য বিয়ে, রেজিষ্ট্রিবিহীন বিয়ে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা প্রভৃতি।
অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)-এর তথ্য অনুযায়ী গত ১৯ বছরে প্রায় দেড় হাজার নারী ও শিশু অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। এই অপরাধের দায়ে সাজা হয়েছে মাত্র ৩৪৩ জনের। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী অ্যাসিডের মামলায় গত ১৬ বছরে ১৪ আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কারও সাজা কার্যকর করা হয়নি। অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ অনুযায়ী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বলা আছে।
জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে নারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত কোটি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে গত এক দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। গত এক দশকে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হয়েছে, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে নারীর প্রবেশ ঘটেছে।
তবে, দুর্ভাগ্যক্রমে এই অগ্রগতির যাত্রার মধ্যেও এদেশের নারীরা নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১১ এর প্রতিবেদন দেখা যায়, এ দেশের ৮৭ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু সহিংসতার শিকার হচ্ছে। লিঙ্গভিত্তিক অসমতার সূচকে ১৮৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬তম।
বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রণীত হয় নারী নির্যাতন (ন্যূনতম শাস্তি) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ (১৯৮৩ সালের ৬০ নম্বর অধ্যাদেশ)। অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য দিয়ে প্রণীত এই আইনটিতে মোট নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিতকরণ ও এর শাস্তি নির্ধারণ করার বিধান আছে এবং ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ছাড়াও বখাটেদের উৎপাতের জন্য দন্ডবিধি আইন প্রচলিত আছে। প্রচলিত আইনে বখাটেদের যে শাস্তির বিধান আছে তা হলো- ঢাকা মহানগর পুলিশ আইনের ৭৬ ধারা ও দ-বিধির ৫০৯ ধারা অনুযায়ী এ অপরাধের জন্য এক বছরের কারাদ-সহ ২ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ নম্বর ধারায় যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানীর জন্য ১০ বছরের কারাদ- দেয়ার বিধান আছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এই নির্যাতন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজে বসবাসরত সকল শ্রেণীর মানুষকে সচেতন করতে হবে।
নারীর প্রতি সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ তার সাড়ে সাত কোটি নারী ও কন্যা শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশে সৃষ্টি করতে পারে, যাতে তারা দেশের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
সুত্রঃ বাসস.

 

কখন বুঝবো বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে?

কখন বুঝবো বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে?


শিশুর স্বাস্থ্যসেবা


ডেঙ্গু জ্বরের প্রকটতা বেড়েছে বহুগুণ। যেকোনো রোগীর চেয়ে শিশুদের ভোগান্তি একটু বেশিই। শিশুরা সহজে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। গতকাল ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এক দিনের রেকর্ড সংখ্যক ৪৭৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬৯ জন।

শিশুদের মধ্যে যে যে লক্ষণ দেখলে ডেঙ্গু টেস্ট করাবেন,

১. বাচ্চাগুলো একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পরে
২. পালস খুব কম
৩. পানি শূন্যতা
৪. কোন কোন বাচ্চার শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসে
৫. বুকে পানি জমা
৬. রক্তচাপটা খুব কমে যাওয়া।
৭. জ্বরের মাত্রা ১০২ ও ১০৩ বা এর থেকেও বেশি থাকতে পারে। এভাবে জ্বরটা তিন থেকে পাঁচ দিন থাকে।
৮. মাথাব্যথা,
৯. চোখব্যথা,
১০. বমি, পেটেব্যথা সঙ্গে পাতলা পায়খানা থাকতে পারে।
১১. শরীরে দানা দানা র্যাশের মতো দেখা দিতে পারে।

মুলত প্লেটিলেট কমে গণনা করি, তখন দেখি খুবই কম। দেখা যায়, আগের দিন রাতে প্লেটিলেট গণনা খুব ভালো থাকলেও পরের দিনই প্লেটিলেট গণনা তিন লাখ থেকে চল্লিশ হাজারে নেমে যেতে পারে।

590 total views, no views today

 

বাড্ডায় তরুণীকে ধর্ষণ যুবক গ্রেফতার

বাড্ডায় তরুণীকে ধর্ষণ যুবক গ্রেফতার


নারী সংবাদ


রাজধানীর বাড্ডায় বিয়ের প্রলোভনে এক তরুণীকে (২৪) ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল আহম্মেদ (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড্ডার আলিফ নগরের বৈঠাখালীতে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার যুবককে গতকাল জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বাড্ডায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করেন, আলিফ নগরের বৈঠাখালী ঢালীবাড়ি মোড় এলাকায় তাদের বাসা। একই এলাকার বাসিন্দা খলিলুর রহমানের ছেলে সোহেল আহম্মেদের সাথে তার তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহেল পূর্ব বাড্ডায় কৃষি ব্যাংক রোডে হলি ভিশন স্কুলের পাশে দলিল লেখার কাজ করেন। জমির দলিলসংক্রান্ত কাজ করাতে গিয়ে ওই তরুণীর সাথে সোহেলের সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সোহেল তরুণীকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে। তরুণী তাকে বিয়ের জন্য তাগিদ দিলে সোহেল নানা অজুহাতে সময় নিতে থাকে এবং বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। এভাবে গত তিন বছর ধরে তাদের মধ্যে এই সম্পর্ক চলে। সম্প্রতি ওই তরুণী সোহেলকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে অস্বীকৃতি জানায় এবং নানা হুমকি দিতে থাকে। তরুণী বিষয়টি তার অভিভাবকদের জানান এবং আইনের আশ্রয় নেন।
এ ব্যাপারে বাড্ডা থানার ওসি জানান, ওই তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারের পর সোহেলকে গতকাল কোর্টে প্রেরণ করা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর….১

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…১


আফরোজা হাসান


বার বার চেষ্টা করেও বইয়ের দিকে মনোযোগ দিতে পারছিল না আরভ। চোখ চলে যাচ্ছিলো সামনের সীটে বসে থাকা স্বাতির উপর। ট্রেন ছাড়ার পর থেকে গত দেড় ঘন্টায় এক মূহুর্তেও জন্য কথা বলায় বিরতি দেয়নি মেয়েটি। ক্রমাগত একজনের পর আরেকজনের সাথে ফোনে কথা বলেই যাচ্ছে। এই হাসছে, এই কাঁদছে, এই অভিমান করছে, শঙ্কিত হচ্ছে আবার পর মূহুর্তেই নিজেই কাউকে আশ্বস্ত করছে। চোখের সামনে এইসব কর্মকান্ড চলতে দেখলে বইয়ের দিকে মন দেয়াটা কষ্টকরই বটে। হাতের বই বন্ধ করে সীটে একটু হেলান দিয়ে বসে ভালো মত তাকালো স্বাতির দিকে। খুবই সাধারণ একটি সুতির থ্রিপিস পড়েছে। দু’হাতে মেহেদির আল্পনা ছাড়া আর কোন গহনা বা প্রসাধনীর চিহ্ন নেই কোথাও। তবে লাল টুকটুকে ওড়নাটা মাথায় তুলে দেয়ার কারণে নববধূর মত লাগছে মেয়েটিকে। কার সাথে যেন কথা বলতে বলতে হেসে ফেললো স্বাতি। সাথে সাথে আরভের মনেহলো এমন হাসি যাকে আল্লাহ দিয়েছেন কোন কৃত্রিম প্রসাধনীর প্রয়োজন তার নেই! আরভের সাথে চোখাচোখি হলে ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে তুললো স্বাতি। আরভ চোখ ঘুরিয়ে জানালা দিয়ে বাইরের তাকালো। ছুটে চলছে ট্রেন গন্তব্য পানে! অসুস্থতার কারণে বড় ফুপি আরভ ও স্বাতির বিয়েতে অংশগ্রহণ করতে পারেনেনি। এখনো ভীষণ অসুস্থ ফুপি। তাই পরিবারের অন্যান্যরা সবাই ঢাকা রওনা দিলেও স্বাতি আর আরভ চিটাগাং যাচ্ছে বড় ফুপির বাড়িতে। স্বাতি ট্রেনে যাবার বায়না ধরাতে আরভ আর আপত্তি করেনি।

দৃষ্টি বাইরে থাকলেও তার সহযাত্রীনি এত কি কথা বলছে সেটা শোনার চেষ্টা করলো আরভ। ফোনে বাবাকে বলছে, শোন নিয়মিত মেডিসিন নিতে যেন ভুল না হয়। মেডিসিন নেয়ার পর আমাকে ম্যাসেজ লিখে জানিয়ে দেবে মেডিসিন নিয়েছো। আর কোন কাজেই যেন অনিয়ম না হয় বলে দিচ্ছি। উল্টো পাল্টা হলে কিন্তু আমি ফিরে এসে তোমাকে কঠিন শাস্তি দেব সেটাও বলে রাখছি। আরেকটা কথা মামণির দিকেও কিন্তু খেয়াল রাখবে। দুজন মিলে কান্নাকাটি করবে না একদম। যদি আমি টের পাই তোমরা কান্না করেছো! তাহলে কিন্তু আমিও কান্না করবো বলে রাখছি। বলো তুমি চাও আমি কান্না করি? হুম! এমন আমিও চাই না তোমরা দুজন কান্না করো বুঝেছো?! আর তুমি এতক্ষণ ওয়াশরুমে কি করছিলে? যদি আমার সেলফোনের চার্জ শেষ হয়ে যেত তাহলে তোমার সাথে কথা বলতাম কিভাবে? সময়ের মূল্য ওয়াশরুমে গিয়ে ভুলে গেলে চলবে? আবার হাসো কেন তুমি? সেলফোনের চার্জ নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। আমি তিনটা মোবাইল ভর্তি করে চার্জ নিয়ে এসেছি। একটার চার্জ শেষ হলে আরেকটা দিয়ে কথা বললো। আরভের একবার বলতে ইচ্ছে করলো, তিনটা মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেলেও চিন্তার কিছু নেই। আমার কাছে যেটা আছে সেটা লোন দিতে কোনই আপত্তি নেই আমার। কিন্তু ইচ্ছেটা গোপন করে আবারো কথা শোনাতে মন দিলো। এখনো বাবাকে ধমকাচ্ছে তার স্বাতি কেন ওয়াশরুমে এতক্ষণ ছিল। বলে দিচ্ছে সর্বোচ্চ বিশ মিনিট থাকা যাবে ওয়াশরুমে।

কেমন যেন একটা সুখ সুখ আবেশ ছেয়ে গেলো আরভের মনের মাঝে। সব মেয়েরাই কি এমন অদ্ভুত রকমের আদুরে হয়?! আল্লাহ চাইলে তার নিজের যদি কখনো মেয়ে হয় সেই মেয়েটি কি স্বাতির মতোই আদুরে হবে? এমন ধমকের সুরে ওয়াশরুমে কতক্ষণ থাকবে সেটাও নির্ধারণ করে দেবে?!

বাড়ির সবার সাথে ফোনে কথা বলা শেষ করে আরভের দিকে তাকালো স্বাতি। গভীর মনোযোগ দিয়ে লিখছে কি যেন। একদম মুখোমুখি বসেছে সে তাই দেখার উপায় নেই কি লিখছেন উনি। এত মনোযোগ দিয়ে কি লিখছে? লেখা দেখতে ব্যর্থ হয়ে লেখকের দিকেই তাকালো! চেহারার মধ্যে কি অদ্ভুত আত্মনিমগ্নতা ছড়িয়ে গিয়েছে মানুষটার! মুগ্ধ না হয়ে পারলো না। খুব ইচ্ছে করতে লাগলো পাশে গিয়ে বসতে। কিন্তু নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে সে। অকারণেই তর্ক জুড়ে দিয়েছিল ট্রেনে উঠার পর। দুষ্টুমির ছলে সেটা যে সিরিয়াস পর্যায়ে চলে যাবে মোটেই বুঝতে পারেনি। কথায় কথায় আরভকে বলে ফেলেছিল, তোমাকে বিয়ে করাই আমার ঠিক হয়নি। বাক্যেটি শোনা মাত্র দপ করে নিভে গিয়েছিল আরভের চেহারার আলো। শক্ত হয়ে গিয়েছিল চোখ মুখ। স্বাতি কিছু বলার আগেই কঠিন স্বরে বলেছিল, পুরো জার্নিতে তুমি আমার সাথে কোন কথা বলবে না। না আমি তোমাকে চিনি, না তুমি আমাকে চেনো। এরপর হাজারটা কথা বলেছে, অসংখ্যবার সরি বলেছে কিন্তু আরভের মুখ দিয়ে একটি শব্দও বের করাতে পারেনি। এজন্যই ফোনে কথা বলে কান ঝালাপালা করে দেবার চেষ্টা করেছে। যাতে বিরক্ত হয়ে কিছু বলে আরভ। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বই পড়ছে, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকছে, এখন লিখতে বসেছে। কিন্তু কথা তো দূরে থাক একটা শব্দ পর্যন্ত বের করছে না মুখ দিয়ে বান্দাহ। এত কঠোর মানুষ হয়? কিভাবে এই লোকের সাথে সারাজীবন কাটাবে ভেবে কিছুটা শঙ্কিত বোধ করলো স্বাতি।

চলবে….

 

জিনের ভয় দেখিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ : গ্রেফতার এক (মসজিদের ইমাম)

জিনের ভয় দেখিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ : গ্রেফতার এক (মসজিদের ইমাম)


নারী সংবাদ 


মসজিদের ইমাম তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষকও। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে স্থানীয় অনেকের অসুস্থতায় তিনি ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজ দিতেন। ঝাড়ফুঁঁক নেয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে ঝাড়ফুঁঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে সুন্দরীদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিলেন তিনি। বাদ যায়নি মাদরাসা ও মসজিদে আসা শিশুরাও। এমন অভিযোগে গত রোববার রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। তার নাম ইমাম ইদ্রিস আহাম্মেদ (৪২)।

এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ সময় তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ার পর রোববার মধ্যরাতে র‌্যাব-১ এর একটি দল দক্ষিণখান সৈয়দনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার মোবাইল জব্দ করা হয়। ওই মোবাইলে ধর্ষণ ও বলাৎকারের অনেক ভিডিও ও ছবি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম। তিনি বলেন, দক্ষিণখানের স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি ও মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং দীর্ঘ দিন দক্ষিণখান এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিশেষ প্রভাব বলয় তৈরি করেন ইদ্রিস আহাম্মেদ। প্রভাবকে পুঁজি করে দীর্ঘ দিন ধরে কৌশলে ধর্ষণ ও বলাৎকারের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলেন তিনি। এ ব্যাপারে সম্প্রতি ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ছায়াতদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব-১। অনুসন্ধানের পর উঠে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, অভিযুক্ত ইদ্রিস আহাম্মেদের বাড়ি সিলেট জেলায়। তিনি সিলেটের একটি মাদরাসা থেকে ১৯৯৮ সালে টাইটেল পাস করেন। এরপর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০২ সালে ঢাকায় এসে দক্ষিণখানের ওই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় ঝাড়ফুঁঁক এবং তাবিজ-কবজ বিক্রি করেন। তার সাথে জিন আছে মর্মে প্রচার ও কুকর্মের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি সুন্দরী নারীদের মিথ্যা ঝাড়ফুঁঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে অনেক নারীই আত্মসম্মান এবং কুসংস্কারের কারণে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকে বলেননি।
তিনি বলেন, ইদ্রিস মসজিদে তার কক্ষে খেদমতের অজুহাতে কিশোরদের জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। এ ছাড়া তিনি যে মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন সেখানকার ছাত্রদের মসজিদে ডেকে এনে বলাৎকার করে কৌশলে মোবাইলে অপকর্মের ভিডিও ধারণ করেন। জিন ও তাবিজ করার ভয় দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে পুনরায় ভিকটিমকে ধর্ষণে বাধ্য করেন। কোনো ভিকটিম অনৈতিক কাজে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখানো হয়। এতে বাধ্য হয়ে ভিকটিম অনিচ্ছা সত্তে¡ও বারবার বলাৎকারের শিকার হয়েছে।
প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, মসজিদের একটি বিশেষ কক্ষে তিনি ঘুমাতেন। তার সব অপকর্ম ওই কক্ষেই সম্পন্ন হতো এবং তার এই অপকর্মের ভিডিওগুলো সে তার খাদেমদের দিয়ে ধারণ করাতে বাধ্য করতেন। এ পর্যন্ত ইদ্রিস একাধিক নারীর সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মাকে হারালো অবুঝ শিশু তুবা

নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মাকে হারালো অবুঝ শিশু তুবা


নারী সংবাদ(রুহুল চৌধুরী) 


কিন্তু তারপর একটি গুজব পাল্টে দিলো সব হিসেব-নিকেশ, গণপিটুনিতে প্রাণ গেলো এক মায়ের।

ছেলেধরা গুজবে কিছু মানুষের নিষ্ঠুরতা রক্তাক্ত করেছে স্নেহের আঁচল।
কিন্তু কেন এই পাশবিকতা? কেইবা রেনু? সে কি সত্যিই ছেলেধরা, নাকি মমতাময়ী এক মা ? কী বলছে স্বজন-প্রতিবেশীরা?
যদিও ছোট্ট তুবা এখনও জানেই না যে মা নেই, মা আর ফিরে আসবে না কখনই। আর কখনোই জাপটে ধরবে না বুকের ভেতর,কিনে দেবে না রঙিন জামা ও হরেক খেলনা।

আটষট্টি হাজার গ্রামের প্রতিটি মাঠ থেকে খুঁজে নিয়ে আসা, সবচেয়ে সুন্দর সরিষা ফুলের সবটুকু রেণু দিয়েও আর ফিরিয়ে আনা যাবে না মমতাময়ী এক রেনুকে তবে চাইলেই তো ফেরানো যায় মনুষ্যত্ববোধ।

তাসলিমা বেগম রেনু ৪০ বছরের সুন্দর নারী। পরিপাটি কাপড় পড়তেন, সুন্দর করে গুচিয়ে মানুষের সাথে কথা বলতে পারতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। মাস্টার্স করার পর বিয়ে হয়ে এক ব্যবসায়ীর সাথে। প্রথম কিছুদিন বেশ ভালোই চলছিলো সংসার। একবছরের মাথায় কোল আলো করে আসে এক ছেলে। ছেলে পেটে থাকা অবস্থায় স্বামীর আর তর সইলো না। জড়িয়ে গেলেন পরকীয়ার। বিষয়টি প্রথমে গোপনই ছিলো। কিছুদিন পর রেনু বুঝে পারে তার স্বামী আর তার নাই। তার প্রতি আর আগের আকর্ষণ নাই। তার দুঃখের জীবন তখনই শুরু । স্বামী ইচ্ছা মতো আচরণ করেন। এর মাঝেই আবার সন্তানসম্ভবা হয়ে যান আচমকা । স্বামী ততদিনে পুরোপুরি অন্য দিকে মজে গেছে। এবার একটা ফুটফুটে মেয়েও আসলো । মেয়ে জন্মানোর কিছু দিনের মধ্যেই সাংসারিক অশান্তি চরমে উঠলো। রেনুকে বাধ্য হয়ে ডিভোর্সের পথে হাঁটতে হলো । সেই থেকে সে একা তার একলা জীবন তরী। কতোবার ভেবেছেন আত্মহত্যার করবে । করতে পারেনি, মরতেও পারেনি। মরার মথা মনে হলেই সামনে ভেসে উঠে ছেলেমেয়ের মুখ। আহা এই ছেলেমেয়ে গুলোর যে আল্লাহ আর মা ছাড়া কেউ নেই।

বাবার বাসায় ভাইয়ের সংসারে কষ্ট করে মানিয়ে চলছে সে। ছোটখাটো একটা চাকরি যোগাড় করেছে। দেখতে দেখতে ছেলে কেজিতে পড়ছে । আর মেয়ের বয়স চার পূর্ণ হলো জুন মাসে। হঠাৎ একদিন মনে হলো মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে দিলে কেমন হয়..? বছরের মাঝামাঝি সময় কোথায় ভর্তি করানো যায় ভাবছিলেন। বাড্ডার একটা প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ হতে পারে ভেবে সে এক দুপুরে ঐ স্কুলের গেটে দাঁড়ায়। ভিতরে ঢুকতে চাইলে আয়া ভিতরে ঢুকতে দেয় নি। তখন ভাবে ছুটি হলেই সে ভিতরে ঢুকবে। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলো একা-একা। এক ভদ্রলোক তাকে দেখে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কে ? তখন সে তার নাম বললো “আমি রেনু”। আবার প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন এখানে কেনো আসছেন ? আপনি কি করেন? আপনার বাসা কোথায়? তার প্রশ্ন করার সময় আরো বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়ে গেলো। এতো মানুষ দেখে রেনু ভয় পেয়ে গেলো। সহজ প্রশ্নগুলোর ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারলো না। অবশ্য ডিভোর্স হওয়ার পর থেকেই কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলো রেনু। কোথায় যেনো হারিয়ে গিয়েছিলো তার সমস্ত স্বতঃস্ফূর্ততা।

তার উত্তর শুনে উপস্থিত পাব্লিক তাকে ছেলে ধরা আখ্যা দিয়ে মুহুর্তেই তার প্রতি চড়াও হয়ে গেলো, সে সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করলো “আমি ছেলে ধরা না”। তাও কিছু উশৃংখল যুবক তার উপর হামলে পড়লো।

সে বললো, ” আমি বাসায় রেখে আমার দুইটা ছোট ছেলে-মেয়ে, দয়া করে আমাকে মারবেন না, আমি ভালো ঘরের মেয়ে”। কে শুনে কার কথা?

অতিউৎসাহীরা কোনভাবেই ছাড়তে রাজি নয়। হাকডাক দিয়ে জড়ো করে ফেলা হলো শতাধিক মানুষ। সবার উদ্দেশ্য একটাই একজন নারী ছেলে ধরাকে জীবনের মতো শায়েস্তা করবে । শুরু হলো বেধড়ক পেটানো । সে দৌড়ে পালাতে চেয়ে ছিলো তখন উশৃংখল জনগণ তাকে ধরে এনে উপর্যুপরি কিল ঘুষি, লাত্থি মারতে শুরু করলো। কিছু লোক লাটি দিয়ে বেধড়ক পেটালো, সে আর্তচিৎকার করতে লাগলো। কাউকেই থামাতে পারলো না । কেউ একজ এসে এই উশৃংখল উন্মাদ জনতাকে থামাবে ভাবছিলো সে। কেউ থামাতে চেষ্টা করলেও বাকীরা কর্ণপাত করেনি।

একের পর এক আঘাতে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছিলো। একটা ছেলে লাফ দিয়ে বুকের উপর উঠে গেলো। তাখন হৃদপিণ্ডটা থমকে গেছে। আরেকটা ছেলে লাফ দিয়ে বুক আর গলার মাঝখানে আছড়ে পরলো। মাথায় আঘাতের পর আঘাতে সে পুরোপুরি বোধ শক্তি হারিয়ে ফেললো ততক্ষণে , এখন তাকে যতোই আঘাত করা হচ্ছে তার কোথায় কোন ব্যথা অনুভূত হচ্ছেনা। সে ক্ষীণ চোখ মেলে দেখতে পারছে তার উপর পাষণ্ডরা আঘাতের পর আঘাত করছে। তার কোনই কষ্ট হচ্ছে না। সে ততক্ষণে কষ্ট বেদনার অনুভূতি শূন্য হয়ে গেছে।

তার শুধু মনে পড়লো তার ছেলেকে স্কুলে রেখে এসেছে, মেয়েকে খেলনা দিয়ে খেলতে বসিয়ে এসেছে। ছেলেটা কিভাবে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরবে ? মেয়েটা মাকে ছাড়া এক রাত কারো সাথে ঘুমায়নি। আহা ফুটফুটে মেয়েটার কি হবে..?? কিছুক্ষণ পর সে আর জনতার হৈ-হুল্লোড় শুনতে পাচ্ছে না। অনুভব করছে শক্ত কোন ফ্লোরে শুয়ে আছে, রাস্তার ঝাঁকুনি তার মৃদু অনুভূত হচ্ছে। পৃথিবীর সমস্ত আলো নিভে গেছে। চোখ অন্ধকার ঘিরে ধরেছে । চোখ খোলার সামর্থ্য তার নেই । অস্তে অস্তে হৃদপিণ্ডের গ্রাফ নিচে নেমে যাচ্ছে, চোখ বেয়ে অনর্গল পানি পড়ছে। সে বুঝতে পারছে হায় দুনিয়া তাকে দূরে ঠেলে দিলো । কি হবে তার ছেলে মেয়ের ?

সারা শরীরে একটুও রক্তক্ষরণ নেই, ঠোঁটে দাঁতের আঘাতে সামান্য রক্ত বেড়িয়েছিলো তাও শুকিয়ে গেছে। তবে সারা শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। সাদা শরীর কালো হয়ে গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ নেই। গুলিতেও শরীর ঝাঁজরা হয়নি। তবুও আস্তে আস্তে হৃদপিণ্ডের গ্রাফ নিচে নেমে যাচ্ছে , ধমনিতে স্থবিরতা নেমেছে। অস্তে আস্তে শরীর শীতল হয়ে যাচ্ছে। হাত-পা কিছুই নাড়ানো যাচ্ছে না। কেউ একজন পরম যত্নে তাকে ডাকছে। বলছে তার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য আবে যমযম প্রস্তুত….

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার ঘোষণা দিলেন রেনু আর বেঁচে নেই।

ময়নাতদন্তে দেখা গেলো রেনুর কষ্টে ভরা বুকের হাড় ভেঙ্গে হৃদপিণ্ডে ঢুকে গেছে, এ যেনো কষ্টের চির অবসান, মাথার মগজ নাক অবধি চলে এসেছে….

হায় দুনিয়া, হায় মানুষ, হায় জীবন । হায় সমাজ, হায় মানবতা, হায় মানবাধিকার, হায় অনুভূতি।
বাঙ্গাল তোমরা বেঁচে থাকো মানুষ নয় পশু হয়ে….!!!!

সুত্রঃ নিউজ দুইন্টিফোর & ফেসবুক।

 

সেই রুশ সুন্দরীকে তালাক দিয়েছেন মালয়েশিয়ার রাজা!

সেই রুশ সুন্দরীকে তালাক দিয়েছেন মালয়েশিয়ার রাজা!


নারী সংবাদ


মাত্র এক বছর আগেই তাদের বিয়ে হয়ে ছিল। রুশ সুন্দরীর সঙ্গে বিয়ের খবর দেশে ছড়াতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু সুন্দরীর রূপের ছটাই বিভোর রাজা সমালোচনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে সিংহাসন ছেড়ে ছিলেন। কিন্তু এক বছর কাটতে না কাটতেই এবার সেই সুন্দরী স্ত্রী রিহানা ওকসানা ভোয়েভোদিনাকে তালাক দিলেন মালয়েশিয়ার রাজা পঞ্চম সুলতান মুহাম্মদ।

কিন্তু হঠাৎ এমন কঠিন সিদ্ধান্ত কেন নিলেন তিনি? সে ব্যাপারে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে সূত্র বলছে, রিহানার সঙ্গে এক অন্য পুরুষের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরেই স্ত্রীকে ত্যাগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন সুলতান মুহাম্মদ।মুসলিম শরীয়া আইন অনুযায়ী, রিহানাকে তালাক দিয়েছেন সুলতান। এখন দুজনে আলাদা জায়গায় থাকছেন।

জানা গেছে, রিহানার প্রেমে পড়ে তাকে হঠাৎই বিয়ে করে ফেলেছিলেন সুলতান মুহাম্মদ। রিহার বয়স তখন ২৬ আর সুলতানের বয়স তার প্রায় দ্বিগুণ ৪৯ বছর। বিয়ে করার জন্য রুশ সুন্দরী ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। তিনি নাম বদলিয়ে রেখেছিলেন রিহানা ওকসানা পেত্রা। তাদের এই অসম বয়সের বিয়ে নিয়ে কম পানিঘোলা হয়নি। বিতর্কের অবসান ঘটাতে সুলতান মুহাম্মদ রাজ সিংহাসন পর্যন্ত ত্যাগ করেন।

গত বছর ৭ জুন তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু তাদের দাম্পত্যজীবন সূদুর-প্রসারী হলো না। এক বছর হতে না হতে ঘটে গেল বিচ্ছেদ। সূত্রের খবর, গত ১ জুলাই তাদের তালাকের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। বিচ্ছেদ চেয়ে সিঙ্গাপুর শরীয়া কোর্টে ২২জুন আবেদন করার পর বিচারক ওই দিনই চূড়ান্ত রায় দিয়ে দেন। তবে মালয়েশিয়ার রাজপরিবার থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

জানা গেছে, তালাক নামার একটি কপি রিহানার কাছে পাঠিয়েছেন সুলতান মুহাম্মদ। তাদের একটি দু’মাসে শিশুসন্তান রয়েছে। ছেলের জন্মের পর ইনস্টাগ্রামে তার ছবি দিয়ে পোস্ট দেন রিহানা।

বিয়ের পর সুলতান ও রিহানার সংসার ভালোই কাটছিল। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরু থেকে তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। রাশিয়ার একটি টেলিভিশন রিয়ালিটি শো ‘ সেক্স ইন দ্য পুল’ -এ এক ব্যক্তির সঙ্গে রিহানাকে অন্তরঙ্গ দৃশ্যতে দেখা যায়।
তবে রিহানার সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তাদের ঘর এখনো ভাঙেনি। রিহানার এক ঘনিষ্ঠজনের উদ্ধৃতি দিয়ে টেলিগ্রাফ অবশ্য বিয়ে ভাঙার বিষয়টিই নিশ্চিত করেছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।
সেই রুশ সুন্দরীকে তালাক দিয়েছেন মালয়েশিয়ার রাজা! – ছবি : সংগৃহীত

 

সাজানোর সহজ নিয়ম “ঘর”


ঘরকন্যা


ঘর সাজানো শখ। অনেক কিছু থাকলে ঘর সাজানো সুন্দর হয় তা কিন্ত না। কিনতে পারা যায় না চাইলেও অনেক কিছু। কিন্তু চাইলেই একটু বুদ্ধি খাটিয়ে খুব কম জিনিস দিয়ে ঘর সাজানো যায়। জেনে নেই সস্তায় চমৎকার ভাবে ঘর সাজানোর কৌশলগুলোঃ

বই সাজানো
বই ঘরে থাকবেই তাই বইয়ে যত্ন নেওয়া হয় দরকার। ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে একই রঙের বইগুলোকে একসাথে করে সাজিয়ে নিন।

পর্দা পরিষ্কার রাখুন
অবশ্যই সারা ঘরের পর্দা পরিষ্কার রাখলে সেটাই ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে।

ছবি দেওয়ালে লাগান
পছন্দের মত ছবি আপনি দেওয়া লাগাতে পারেন। এতে আপনার ঘর এর সুন্দর প্রশান্তির জায়গা মনে হবে।

গাছ ও ফুল
অন্যান্য ঘর সাজানোর জিনিসের তুলনায় ফুল এবং গাছ বেশ সস্তা। এই গাছ দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার বাসাটি। গাছ ঘরকে রঙিন ও জীবন্ত করে তুলবে। জানালার ধার ঘেঁষে লতানো গাছ লাগানো যেতে পারে আর ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস না থাকলে গাছের বদলে রেখে দিতে পারেন একগুচ্ছ তাজা ফুল। ঘরের এক কোণে কয়েকটি তাজা ফুল রেখে দিলে নিমিষেই ঘর উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

একটি সাজানো পরিপাটি ঘর নিমিষেই আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। বাড়িতে যারা থাকেন প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকার জায়গাটি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। ঘর গোছানোর সময় খেয়াল রাখবেন যার ঘর গোছাচ্ছেন তার রুচি এবং পছন্দ সম্পর্কে। প্রতিদিন একটু একটু করে গোছানো যদি আপনার পক্ষে সম্ভব

 

একের পর এক ছাত্রী অপহরণে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা


দেশে একের পর এক ঘটছে ছাত্রী অপহরণের ঘটনা। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে মাদরাসার ছাত্রী অপহরণের ঘটনাও ঘটছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেও ছাত্রী অপহরণের চেষ্টা হয়েছে সম্প্রতি। দেশে অপহরণের ঘটনা আগেও কমবেশি ঘটছে। কিন্তু সম্প্রতি ছাত্রী অপহরণের কয়েকটি ঘটনা কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে অভিভাবকদের মনে।

বিশেষ করে গত ২৯ জুন রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে সবার সামনে থেকে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া ১৩ জুলাই কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদারাসাছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। এ দুই ছাত্রীই গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে অপহরণকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ দুই শিক্ষার্থীই জানিয়েছে, গাড়িতে তারা আরো মেয়ে ও শিশু দেখেছে, যাদের অপহরণ করা হয়েছে।
এ খবর অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক দিন ধরে দেশে একের পর এক ধর্ষণ ও গণধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে মেয়ে সন্তানদের মা-বাবা ও অন্য অভিভাবকদের মনে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের ছাত্রী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অনেক ঘটনাও প্রকাশিত হচ্ছে অনেক দিন থেকে। একই সাথে বাড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী অপহরণের ঘটনা। সব মিলিয়ে সার্বিক নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করেছে অভিভাবকদের।

মেয়ে সন্তান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বাইরে কোথাও গেলে বাসায় না ফেরা পর্যন্ত দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতার মধ্যে কাটাতে হয় মা-বাবাকে। এমনকি মা-বাবা সাথে করে মেয়েকে স্কুল-কলেজে পৌঁছে দেয়া আর নিয়ে আসার সময়ও অনিরাপদ বোধ করেন। কারণ অপহরণকারীরা সবার সামনে থেকে ছো মেরে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে মেয়েদের। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছেও সন্তানকে নিরাপদ মনে করতে পারছেন না অনেকে।
অসহায় অনেক অভিভাবক পত্রিকা অফিসে ফোন দিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা লেখার অনুরোধ করেছেন। একজন অভিভাবক জানান, আমার মেয়েও রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের মুগদা শাখায় পড়ে। এ স্কুলের সামনে থেকেই যেভাবে একটি মেয়েকে অপহরণ করা হলো তাতে আমিও আমার মেয়েকে নিয়ে ভীষণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দয়া করে আমাদের জন্য কিছু একটা করেন। আমাদের কথা লেখেন। এসব যাতে বন্ধ হয় সেভাবে লেখেন। আমরা কোথাও আর নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারছি না।
গত ২৯ জুন দুপুরে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মুগদা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রী ফারাবি স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বাসায় ফেরার জন্য। এ সময় একদল দুর্র্বৃত্ত আচমকা তাকে মাইক্রোবাসে তুলে সবার সামনে থেকে গাড়ি চালিয়ে চলে যায়। গাড়িতে তোলার পরই অচেতন করা হয় তাকে। এরপর গাড়ি কেরানীগঞ্জ পৌঁছার পর ফারাবি চেতনা ফিরে পেলে সুযোগ বুঝে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা পায়। ফারাবি জানায়, গাড়িতে তার মতো আরো কয়েকটি মেয়েকে দেখেছে সে, যাদের অপহরণ করা হয়েছে।

১৩ জুলাই প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে কুমিল্লার লালমাইয়ে। স্থানীয় ফয়েজগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তাসলিমা ভোর ৬টায় নানার বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়ক সংলগ্ন খলিলপুর-বাইতুন নূর জামে মসজিদ মক্তবে যাচ্ছিল। এ সময় বোরকা পরিহিত এক মহিলা মুখে রুমাল দিয়ে চেপে ধরে তাকে মাইক্রোবাসে তোলে। সকাল ৭টার দিকে জামতলী এলাকায় পৌঁছলে মাইক্রোবাস থামিয়ে অপহরণকারীদের একজন (পুরুষ) রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল। এ সুযোগে মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে তাসলিমা মাইক্রো থেকে লাফিয়ে দৌড় দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন। তাসলিমাও জানিয়েছে, গাড়িতে সে দুইজন শিশুর কান্না শুনেছে।
গত ২৯ জুন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় অপহরণ করা হয় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে। অপহরণের চার দিনের মাথায় ২ জুলাই মঙ্গলবার মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে মেয়েটির পরিবার। পুলিশ ও মেয়েটির পরিবার গণমাধ্যমকে জানায়, উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের পেড়ি গ্রামের সোহেল (২৮) ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত ২৯ জুন সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সান্দিকোনা-সাহিতপুর সড়কের পটুয়াপাড়া এলাকা থেকে মেয়েটিকে সোহেল ও তার সহযোগীরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়।

হবিগঞ্জের মাধবপুর থানায় গত ১২ এপ্রিল এক ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ করা হয়। অপহরণের শিকার মেয়েটি লোকনাথ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ১২ এপ্রিল দায়ের করা অভিযোগে মেয়েটির মা জানান, ৯ এপ্রিল বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদল দুর্বৃত্ত তাকে অপহরণ করে। এর পর থেকে তার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মনি আক্তার (১২) নামে এক মাদরাসাছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। মাদরাসায় যাওয়ার পথে বাগবাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। সে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের চারিগাঁও গ্রামের ইদ্রিছ আলীর মেয়ে এবং রসুলপুর মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী।

সুত্র ঃ নয়াদিগন্ত

 

শিক্ষা-২


মনের জানালা 


পাকিস্তানে আজও যারা ১৯৭১ এ সঙ্ঘটিত যুদ্ধ বিষয়ে হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের ব্যপারে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে আমি তাদের একজন’। বাকহারা হয়ে গেলাম। শুধু বলতে পারলাম, ‘আপনার তো তখনোও জন্ম হয়নি, হলেও হয়ত মায়ের কোলে দোল খাচ্ছিলেন। আপনি কেন নিজেকে দায়ী করছেন?’ কিন্তু আসলে আমি অনেক বেশি আপ্লুত বোধ করছিলাম। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরবর্তী প্রজন্ম, আমাদের দাদাদাদী নানানানীরা আমাদের রূপকথার পরিবর্তে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতেন। আমাদের আত্মীয়স্বজন মুক্তিযুদ্ধে তাদের অংশগ্রহণের জন্য প্রশংসিত হতেন, অহংকার করে নিজেদের আহত হবার কাহিনী বলতেন, নিহত বন্ধুজনের গল্প করতেন। আজ ৪৭ বছর পর এই নিয়ে অনেক আলোচনা গবেষণা তর্ক বিতর্ক অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় গণমানুষের মনের অনুভূতিগুলোকে আমাদের মত করে আর কেউ উপলব্ধি করার সুযোগ পায়নি। আমার ছোট ভাইরাও নয়। মনে হল, আমার দাদা দাদী নানা নানী উপস্থিত থাকলে মনে প্রশান্তি অনুভব করতেন। মনে হল, সৎ চিন্তার ধারণকারী বাবামা সৎ চিন্তার বাহক সন্তান গড়ে তুলতে পারেন। তাঁরা যেমন ইসরাইলের অন্যায়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের সন্তান পাকিস্তানের অন্যায়ের বিরোধিতা করেছেন। আমরা কি আমাদের সন্তানদের এভাবে গড়ে তুলতে পারব?
সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যপার হল, আরব ক্রিশ্চানরা যেমন সালাম বিনিময় করে; ‘ইনশা আল্লাহ’, ‘মাশা আল্লাহ’ ইত্যাদি শব্দাবলী স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহার করে; তিনিও দেখলাম স্বাভাবিকভাবেই সালাম দিলেন, ‘আবার দেখা হবে ইনশা আল্লাহ’ বলে বিদায় নিলেন। দুঃখ হল তাঁরা সত্যের এতটা কাছাকাছি থেকে কেবলমাত্র আভিজাত্যের অহমিকাবোধের কারণে সত্যকে গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক। তিনি নিজের নামটি পর্যন্ত বলেননি, কিন্তু তাঁর পরিচিতির দ্বিতীয় অংশটিই ছিল তাঁর ধর্মীয় পরিচয়। অথচ ক্যনাডায় প্রচুর বাংলাদেশীদের দেখেছি বাঙ্গালীত্ব এবং ইসলামের সকল চিহ্ন মিলিয়ে দেয়ার জন্য সে কি আপ্রাণ প্রচেষ্টা!
এজন্যই পশ্চিমে অবস্থানরত ইসলামিক স্কলাররা বলেন, ‘যারা এসব দেশে থাকতে আগ্রহী, সেসব মুসলিমদের উচিত এসব দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া। তাদেরই এসকল দেশে থাকা উচিত যারা এসকল দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়’। কারণ প্রথম শ্রেণীর লোকজন দুই এক প্রজন্মের পর ইসলাম থেকে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমার এক ঈজিপশিয়ান-ক্যানাডিয়ান সহকর্মী ছিল। আপনারা হয়ত জানেন এদের অনেকেই দেখতে পুরোপুরি শ্বেতাঙ্গদের মত। শুভ্র ত্বক, সোনালী চুল। সে বিয়ে করেছিল এক শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে। সুখে সংসার করছে দুই বাচ্চা নিয়ে। বসের সাথে, বন্ধুদের সাথে নিয়মিত পানশালায় যাতায়াত, মদ্যপান। একদিন কথাটা এক মিটিংয়ে আমার সামনে প্রকাশ হয়ে গেলে সে কেন যেন প্রচণ্ড লজ্জা পেল, লজ্জায় গাল গলা লাল হয়ে গেল। পরে কিচেনে কফি বানাতে গিয়ে দেখা হলে সে হঠাত অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলল, ‘আমার মা কিন্তু জুমায় যায়’। আমি বললাম, ‘বেশ, ভাল কথা। তুমি নামাজ পড় কিনা’। সে বেশ লজ্জা লজ্জা চেহারা করে বলল, ‘আমি নামাজ পড়তে জানিনা’। তারপর আর কথা খুঁজে না পেয়ে বলল, ‘তোমাদের তো কদিন আগে ঈদ গেল, হ্যাপি ঈদ’। কোনক্রমে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে গেল কিচেন থেকে। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলাম, ‘আহা, ছেলেটা ঈদে কি বলতে হয় সেটাও শেখেনি। এই দায় কার?’

 

শিক্ষা-১


মনের জানালা


ক্যানাডায় বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম এবং সংবাদ দেখেছিলাম। ইসরাইলে ইহুদীদের দুটি শ্রেণী রয়েছে। এদের একাংশ ধার্মিক এবং একাংশ রাজনৈতিক। যারা ধার্মিক তাঁরা বিবেকবান এবং ইসরাইলের রাজনৈতিক সম্প্রসারণবাদের বিরোধী।
তাঁরা শুধু মৌখিকভাবে বিরোধিতা করেই কর্মসম্পাদন করেন না বরং এই বিষয়ে সোচ্চার। এদের সন্তানদের মধ্য থেকে এক হাজার পাইলট সরকারের নির্দেশ সত্ত্বেও কোনপ্রকার ফিলিস্তিনি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানবেনা ঘোষনা করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। তাদের অভিভাবকরা তাদের সমর্থনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইসরাইলের ফিলিস্তিন বিষয়ক নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছে। এসব খবর দেখেছি আর ভেবেছি আমরা তো প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও রাখিনা! জেনেছি অনেক ইহুদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের স্বপ্নপূরণ হয়নি এই দুঃখে ঐ ভূখন্ড ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন অন্যত্র। তাঁরা এই অন্যায়ের কোন ভাগ চাননা। তাদের একজনের দেখা পেয়ে যাব ভাবিনি কোনদিন।
ক্যানাডায় দেখেছি ইহুদী সহকর্মীদের মাঝে যারা ধার্মিক ছিলেন তাঁরা কখনো মহিলাদের সাথে হ্যান্ডশেক করতেন না, হালালের ব্যপারে আমাদের অনেক মুসলিম কলিগদের চেয়ে ছিলেন অনেক বেশি সাবধান। এরা কাজের ব্যপারে অত্যন্ত আন্তরিক হতেন এবং লেখাপড়ার ব্যপারে অগ্রসর। অবশ্য যারা অধার্মিক ছিলেন তাদের কাহিনী পুরোই আলাদা।
কথাপ্রসঙ্গে বললাম বাবা ছোটবেলায় পাকিস্তানে পড়াশোনা করেছে, তারপর তো দেশবিভাগ হয়ে গেল। তিনি সাথে সাথে বলে উঠলেন, ‘পাকিস্তান বাংলাদেশের সাথে যা করেছে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি। এমনটা হওয়া কিছুতেই কাম্য ছিলো না।
চলবে…

 

প্রবাসীর স্ত্রীকে নিজের বাসায় নিয়ে রাতভর ধর্ষণ


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। খড়িয়া মাদরাসার ছাত্রী ওই কিশোরীকে রাতভর একটি ঘরে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার মা ২২ জুন একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ধর্ষক রাকিবকে আটক করেছে।

পুলিশ জানায়, তার স্বামী প্রবাসে থাকেন এবং মেয়ে খড়িয়া মাদরাসার ছাত্রী। তারা আড়াইহাজার নাগেরচরে ভাড়া বাসায় থাকেন। একই বাড়ীতে ভাড়া থাকে ধর্ষক রাকিব (১৯) ও তার পরিবার। রাকিব প্রায় সময় ছাত্রীটিকে মাদরাসায় যাতায়তের পথে উত্যক্ত করতো।

২১ জুন রাতে ধর্ষক রাকিব মেয়েটিকে ফুসলিয়ে তার ঘরে নিয়ে যায়। তার বাসা সেদিন ফাঁকা ছিল। ওই বাসায় রাতভর তাকে আটকে রেখে তাকে জোরপূর্বক কয়েকবার ধর্ষণ করে। ভোর বেলা ধর্ষিতা কৌশলে রাকিবের ঘর থেকে বের হয়ে বাসায় গিয়ে তার মাকে সব খুলে বলে।

পরে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে রাকিবকে একমাত্র আসামী করে শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন।

নয়া দিগন্ত

 

সন্তান যতদিন ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে না পারবে- ততদিন তার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে

সন্তান যতদিন ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে না পারবে- ততদিন তার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে


প্যারেন্টিং


চৌদ্দ বছর বয়সী সাইম এবারই ক্লাস নাইনে ভর্তি হল। বরাবরই ভালো ছাত্র ছিল সে। কিন্তু ক্লাস নাইনে উঠার পর থেকেই তার আচার আচরণে কেমন যেন পরিবর্তন দেখা দিচ্ছিল। বিষয়টি বাবা-মা দু’জনেই বুঝতে পারলেও শুরুতে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। ভেবেছিল ছেলে বড় হচ্ছে, তাই হয়ত একটু রিজার্ভ থাকতে চাইছে।
সাইম বাসায় যতক্ষণ থাকতো, খুব কম কথাই বলতো অন্যদের সাথে। স্কুল থেকে এসেই সোজা নিজের রুমে ঢুকে যেত। আবার সন্ধ্যায় বের হয়ে যেত। প্রথম কয়েকদিন ঘন্টা খানেকের মধ্যে বাসায় চলে আসলেও এরপর রাত ৮টা/৯টার আগে বাসায় আসত না। এমনভাবেই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন অভিভাবকদের ডাক আসে সাইমের স্কুল থেকে। পরদিনই দু’জনই হাজির হন স্কুলে। সেখানে স্কুলের হেড মাস্টারের কথা শুনে যেন তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। স্কুলের হেড মাস্টার জানান, সাইম প্রায় দিনই স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। ক্লাস শিক্ষক জানান, সাপ্তাহিক পরীক্ষার সব কটিতেই তার মার্কস একেবারে কম।
বাসায় ফিরেই প্রথমে সাইমের রুমে ঢুকে সব কিছু ভালো করে দেখলেন তারা। পেলেন বেশ কয়েকটি সিগারেটের প্যাকেট। আর ফেনসিডিলের তিনটি খালি বোতল। তাদের আর বুঝতে বাকি রইল না যে, তাদের আদরের সন্তান মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
বাবা-মার বড় আদরের সন্তান রুপা। বড় চার ভাইয়েরও খুব আদরের একমাত্র বোন সে। স্কুল পাশ করে এবার কলেজে উঠেছে। ভাইদের সাথে বয়সের ব্যবধান একটু বেশিই। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনজন বিয়ে করে সংসারও করছেন। আর একজন করছেন চাকরি। সবাই এক সাথেই থাকেন। কিন্তু এর মধ্যেই রুপার মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যায়। খুব চঞ্চল আর ভাইদের সাথে সারাক্ষণ ঝগড়া করা মেয়েটি কেন যেন হঠাৎ একেবারে চুপচাপ হয়ে যায়। বাসায় যতক্ষণ থাকে সারাক্ষণই রুমের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে। কেমন যেন শুকিয়েও যাচ্ছে মেয়েটি।
একদিন রুপার সেজ ভাই তেজগাঁও গেলেন অফিসের কাজে। সেখানে তিনি দেখলেন রুপা বেশ কয়েকজন বন্ধুর সাথে একটি গলিতে আড্ডা দিচ্ছে। বিষয়টি কেমন লাগল তার। কারণ, এখন রুপার থাকার কথা ছিল কলেজে। আর রুপার কলেজও এখানে না, মিরপুরে। আবার বন্ধুদের চেহারা দেখেও ভালো লাগল না। তিনি দূরে দাঁিড়য়ে দেখলেন রুপা কি করে। হঠাৎ দেখলেন কী একটা প্যাকেট নিয়েই সে তাড়াতাড়ি ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলছে। আবার বেশ কিছু টাকা বের করে দিচ্ছে।
রুপার সাথে কথা না বলেই তিনি কাজে চলে গেলেন। সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখেন রুপা আবার বেড়িয়েছে। তখন তিনি রুপার রুমে গিয়ে পড়ার টেবিলের ড্রয়ার খুলে দেখলেন ওই প্যাকট। খুলে দেখেন, সেখানে গাঁজা। বুঝতে বাকি থাকলো না যে রুপা কেন দিন দিন এমন আচরণ করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে সন্তানের শারীরিক আর মানসিক বিকাশে বাবা-মায়ের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। সব বাবা-মা’ই চান তাদের সন্তান যেন সুস্থ ভাবে বেড়ে উঠে এবং তাদের মঙ্গল হয়। কিন্তু তাদের অজান্তেই কোন কোন সন্তান বিপথে চলে যায়। হয়ে যায় মাদকাসক্ত। মূলত সন্তান যখন ছোট থাকে তখন বাবা-মায়ের চিন্তা-ভাবনা থকে সন্তানের স্বাস্থ্য এবং যতœ-আত্তির দিকে। কিন্তু সেই সন্তান যখন বড় হয় তখন সেই সন্তানকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনার পরিধিও বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্য এবং পড়ালেখার পাশাপাশি বাবা-মাকে সন্তানের বন্ধু, স্কুল, খেলা সবকিছু নিয়েই ভাবতে হয়। স্কুলে কাদের সঙ্গে মিশছে? বন্ধুরা কেমন? স্কুলের বাইরে কোন বন্ধু আছে কিনা? যদি থাকে, তবে তারা কেমন? পাড়ার বন্ধুরা কেমন? বন্ধুদের মধ্যে কেউ নেশা করে কিনা? অথবা তাদের সন্তান নেশার খপ্পড়ে পড়লো কিনা? সবদিকেই নজর রাখতে হয় বাবা-মাকে।
মনোবিজ্ঞানী ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে আমরা অনেক বিষয় এড়িয়ে চলি। কিন্তু ভালো বাবা-মা হতে হলে সন্তান যতদিন বুঝতে না পারবে- কোনটাতে তার ভালো আর কোনটাতে তার খারাপ ততদিন সন্তানের প্রতি তীক্ষè নজর রাখতে হবে । তিনি বলেন, আমরা অনেক সময় সন্তানের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনি না। এতে তাদের মনে এক ধরনের দাগ লেগে যায়। প্রতিটি বাবা-মার উচিত সন্তানের সব কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা। সন্তানের সাথে যত বেশি সময় কাটানো যায় ততই ভালো। তারপরও যতক্ষণ তার সাথে থাকা যায় ততক্ষণই তার সাথে কথা বলুন। তার ইচ্ছে-অনিচ্ছে, তার বন্ধু-বান্ধবদের খবর, টিচারের খবর, তার ভালো মন্দলাগা ইত্যাদি সব বিষয় নিয়ে কথা বলুন।
ডা. সোহাগ বলেন, সন্তানকে যে আপনি ভালোবাসেন তা সরাসরি প্রকাশ করুন। এতে সন্তান বাবা-মার প্রতি আরো বেশি নির্ভরশীল হবে এবং সব বিষয় তাদের সাথে শেয়ার করবে।
তার মতে সন্তানের সামনে কখনোই কোন অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। এজন্য কেউ যদি অপরাধ বা অন্যায় করে থাকে তবে তার পক্ষ নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া বাবা-মা নিজেরা যেন সন্তানের সামনে কোন মিথ্যে কথা না বলে। সন্তানকেও বুঝাতে হবে সে যেন মিথ্যে কথা না বলে।

সুত্রঃ বাসস।

 

কিভাবে অটিজম শনাক্ত করবেন?

কিভাবে অটিজম শনাক্ত করবেন?


শিশুর স্বাস্থ্যসেবা


অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে
অটিজম, এই শব্দটি বলতে অনেকে মানসিক রোগ বুঝলেও এটি মূলত এক ধরণের স্নায়ুবিক বিকাশজনিত সমস্যা। অটিজম আক্রান্তদের অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকে।
যে কারো মধ্যে এই সমস্যাগুলো কম বা বেশি মাত্রায় থাকতে পারে। অটিজমের সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য কোন চিকিৎসা নেই। তবে দ্রুত অটিজম শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে আক্রান্তদের অনেকটা ঠিক করে তোলা সম্ভব বলে মত চিকিৎসকদের। এবার জেনে নেবো অটিজমের প্রধান ৯টি লক্ষণ।
১. ছয় মাস বা তার বেশি বয়সে স্বতঃস্ফূর্ত হাসি বা যে কোন আবেগ প্রকাশ করতে পারেনা।
২. ১২ মাস বয়সের মধ্যে আধো আধো কথা না বলা সেইসঙ্গে ইশারা বা হাত বাড়িয়ে কিছু চাইতে বা ধরতে পারেনা।।
৩. চোখে চোখ রেখে তাকাতে পারেনা।
৪. ভীড় এড়িয়ে একা থাকতে পছন্দ করে।
৫. অন্যের অনুভূতি বুঝতে পারেনা।
৬. একই নিয়মে চলতে পছন্দ করে। কোন পরিবর্তন এলেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়।
৭.একই শব্দ বারবার বলতে থাকে বা একই আচরণ বারবার করে যেমন: একইভাবে হাত বা মাথা নাড়ানো।
৮. বিশেষ রং, শব্দ, গন্ধ, স্পর্শ বা স্বাদের প্রতি কম বা বেশি মাত্রায় সংবেদনশীল হয়।
৯. কোন বিষয় বা বস্তুর প্রতি অতিমাত্রায় আগ্রহ দেখায়।
চিকিৎসকদের মতে সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে, বিশেষ করে স্কুলশিক্ষা বা প্রশিক্ষণ দিয়ে সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে আক্রান্তকে দক্ষ করে তোলা সম্ভব।

সুত্রঃ বিবিসি।

 

কই মাছ রান্নার সহজ ধাপ

কই মাছ রান্নার সহজ ধাপ


রেসিপি


কই মাছ আমাদের দেশীয় মাছ। বাজারে অবশ্য থাইল্যান্ডের কইও পাওয়া যায়। অনেকে দেশীয় কই ভালবাসেন আবার কেউ বা থাই কই কিন্তু কই মাছ যে স্বাদে অতুলনীয় সেটা সবাই স্বীকার করে। এখানে কই মাছের একটি সুস্বাদু রেসিপি দেওয়া হল।

কি কি লাগবে

কই মাছ ৪-৫ টি (৫০০ গ্রাম)
হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ
মরিচ গুঁড়ো ১.৫ (দেড়) চা চামচ
পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ
কাঁচামরিচ ফালি ৪-৫ টি
ধনেপাতা কুচি ২ টেঃ চামচ
লবণ ১ চা চামচ
তেল ৪ টেবিল চামচ
পানি ১/২ কাপ

কয়েকটা ধাপ

ধাপ-১
প্রথমে কই মাছ ধুয়ে নিন।

ধাপ-২
মাছ আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো আধা চা চামচ লবণে ভালো করে মেখে হালকা বাদামি করে ভাজুন।

ধাপ-৩
ভাজা হয়ে গেলে মাছগুলি তুলে রাখুন।

ধাপ-৪
এবার মাছ ভাজা তেলে হালকা করে পেঁয়াজ ভেজে নিন।

ধাপ-৫
বাকি হলুদ, মরিচ গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে অল্প পানি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভাজা মাছ দিয়ে দিন।

ধাপ-৬
লবণ দিন।

ধাপ-৭
১/২ কাপ পানি দিয়ে ঢেকে ৩-৪ মিনিট রান্না করুন।

ধাপ-৮
কাঁচামরিচ, ধনেপাতা কুচি দিয়ে ২-৩ মিনিট পর নামিয়ে নিন।

পরিবেশন
ব্যস হয়ে গেল প্রিয় স্বাদের কই মাছ রান্না শেষ। এখন সুন্দর করে পরিবেশন করি পরিস্কার বাটিতে।

 

স্বাতীর রঙধনু

স্বাতীর রঙধনু


আফরোজা হাসান


বাচ্চা পালন নয়তো সহজ। এই বিষয়বস্তু কে কেন্দ্র করে একটা ধারাবাহিক আলোচনা সভার আয়োজন করা উচিত।
বাচ্চাদের জ্যুস বানানোর জন্য বাগান থেকে কমলা নিতে এসেছিল স্বাতী। পেছন থেকে বাক্যটা ভেসে এলে ঘুরে তাকিয়ে ননদ আজরা কে দেখতে পেয়ে হেসে বলল, হঠাৎ এমন ইচ্ছে উদ্রেক হবার পেছনে কারণ কি?
স্বাতীর পাশে এসে দাঁড়িয়ে আজরা বলল, তুমি তো জানোই আমার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই যা হয় তা হচ্ছে, চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। নতুন কোন পরিস্থিতি যখন সম্মুখে এসে দাঁড়ায় আমি হিমশিম খাই সেটা সামলাতে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে সেই পরিস্থিতিটা কত সুন্দর ভাবে হান্ডেল করা যেত তার শত শত আইডিয়া মাথায় কিলবিল করতে শুরু করে। এরচেয়েও বড় একটা সমস্যা হচ্ছে, কোন সংজ্ঞা বা উদাহরণের ভুল প্রয়োগ। এই যেমন একদিন খেলতে গিয়ে মুয়াজ প্রচন্ড জোরে আছড়ে পড়লো। আমি বিকট এক চিৎকার দিয়ে ছুটে যাচ্ছিলাম আরভ ভাইয়া আমাকে ধরে ফেলে বললেন, ওকে একাই উঠতে দে। জীবনের উত্থান পতনে সর্বদা যেহেতু তুই ওর সাথে সাথে থাকতে পারবি না। সেহেতু এখন থেকেই একা একা উঠে দাঁড়ানোর অভ্যাস হয়ে যাক।
স্বাতী হেসে বলল, এই কথাটা উনি বাচ্চাদেরকেও বলেন। বলেন, তোমরা যখন আছড়ে পরবে আমিও তোমাদের সাথে পরবো। কিন্তু উঠে তোমাদেরকে একাই দাঁড়াতে হবে। বাচ্চাদেরকে স্বনির্ভর বানানোর ব্যাপারে একদম হামাগুড়ি দেয়া যখন শুরু করে তখন থেকেই উনি ট্রেনিং দেয়ানো শুরু করেন। একটা ঘটনা মনে পরলে এখনো হাসি পায়। নাযীব তখন মাত্র নড়াচড়া শুরু করে। হাত বাড়িয়ে এটা সেটা ধরতে চেষ্টা করতো। একদিন ওর হাত থেকে খেলনা ছুটে দূরে গিয়ে পরেছিল। নাযীব হাত বাড়িয়ে ধরার চেষ্টা করছিল কিন্তু পারছিল না। উনি পাশেই বসেছিলেন কিন্তু খেলনাটা এগিয়ে দিচ্ছিলেন না। কত রকমের কসরত করে সাড়ে সাত মিনিট লাগিয়ে নাযীব শেষ পর্যন্ত ওর খেলনাটা ধরতে পেরেছিল।
আজরা হেসে বলল, আমিও তো ভাইয়ার মতোই করতে চাই সবকিছু কিন্তু হয়ে যায় সব উল্টাপাল্টা। এই যেমন পরশু বিকেলে মুয়াজ কমলা গাছ থেকে কমলা পারার চেষ্টা করছিল। দেখছোই তো এই গাছের কমলাগুলো বেশ নিচুতেই ঝুলছে। কিন্তু তবুও মুয়াজের ধরাছোঁয়ার একটু বাইরেই। মুয়াজ বার বার লাফ দিয়ে চেষ্টা করছিল ধরার। আমিও পাশে বসে মনে মনে বলছিলাম, চেষ্টা চালিয়ে যাও সোনা আমার। কিন্তু অনেকবার চেষ্টা করার পরেও যখন ধরতে পারছিল না ধীরে ধীরে আঁধারে ঢেকে যাচ্ছিলো মুয়াজের চেহারা। এমন সময় ভাইয়া এসে পেছন থেকে মুয়াজকে ধরে সামান্য উঁচু করে ধরতেই মুয়াজ দুহাতে টেনে দুটা কমলা ছিঁড়ে নিলো। উফফ, সেকি খুশি বাচ্চার। আনন্দে লাফাতে লাফাতে ছুটে গেলো ভাইবোনদেরকে তার নিজ হাতে ছেঁড়া কমলা দেখাতে। ভাইয়া তখন আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুই বাচ্চাকে সাহায্য না করে চুপচাপ বসে আছিস কেন? দেখতেই তো পাচ্ছিলি মুয়াজ ধরতে পারছে না কমলা। এবং যতটূকুন উঁচুতে রয়েছে ওর পক্ষে ধরা সম্ভবও ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে বাচ্চারা কয়েকবার চেষ্টা করার পর ওদেরকে সাহায্য করতে হয়। তা না হলে চেষ্টা করে নিরাশ হবার কারণে চেষ্টা করার প্রতিই অনীহা চলে আসে মনে। আমি বললাম, তুমিই তো বলো বাচ্চাদেরকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করতে দেয়া উচিত। ভাইয়া তখন হাসতে হাসতে বললেন, কিন্তু বাচ্চা কোন একটা কিছু করার চেষ্টা করছে। বেশ খানিকটা সফলও হয়েছে। কিন্তু তারপক্ষে একা সফল হওয়া সম্ভব নয় এমন পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে সাহায্য করতে হবে যাতে সে কাজটা করতে পারে। তা না হলে এমন ধরণের ব্যর্থতা বাচ্চার মনে চেষ্টা করার ব্যাপারে উৎসাহকে হ্রাস করে দেয়। কথা শেষ করে ভাইজান হাসতে হাসতে চলে গেলেন। আমি আর কি বলবো তখন। বোকার মতো দাঁড়িয়ে নিজের বোকামোর কথা ভাবতে লাগলাম। এখন তুমি হেসে আর আহত করো না আমাকে। পরামর্শ দাও কিভাবে তোমার মতো মা হবো।
কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিলো স্বাতী মাহিরাকে ছুটে আসতে দেখে বলল, কি হয়েছে? তুমি এমন করে ছুটছো কেন?
তোমরা এখানে দাঁড়িয়ে গল্প করছো? ঐদিকে তো বিরাট কান্ড ঘটে গিয়েছে। হাঁপাতে হাঁপাতে বললো মাহিরা।
কি কান্ড ঘটেছে? প্রশ্ন করলো আজরা।
মাহিরা বলল,বাচ্চারা যাতে খাবার নিয়ে ঝামেলা করতে না পারে সেজন্য ওদেরকে সাথে নিয়েই তো ওদের প্রতি বেলার খাবারের মেন্যু ঠিক করে দিয়েছিলেন আরভ ভাইয়া। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। আজ লেগে গিয়েছে যুদ্ধ।

 

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা


নারী সংবাদ


গভীর রাত। সবাই ঘুমে অচেতন। হঠাৎ পাশের বাড়ির তিনতলা থেকে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে ওঠে মধ্য বয়সী এক নারী। তাঁর চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে ওঠে অনেকেই। মুহূর্তের মধ্যেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে, মধ্যরাতে ঘরে ফিরে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রহার করছে। এক পর্যায়ে ঐব্যক্তি চিৎকার করে কাটা চামচ দিয়ে তার স্ত্রীর চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দিলে, ঘরের বাইরে এসে আক্রান্ত নারী তার সর্ব শক্তি দিয়ে বলে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করতে থাকে। ওই মহিলার স্বামী মাঝে মধ্যেই তাকে এই ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করে। অসহায় স্ত্রী মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বলে নীরবে সব যন্ত্রণা সহ্য করে যায়।
আমাদের দেশে নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, পাচার, খুন বা হত্যার মতো নানান ঘটনার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যদিও দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন জঘন্য একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। বৈষম্যমুলক সমাজ কাঠামোর ভেতরে দেশের নারীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তারা কর্মস্থলে বৈষম্য ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে, ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে কিশোরীদের কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। নারী ও কিশোরীদের অপহরণ করে সীমান্ত পার করে বিদেশে পাঁচার করা হচ্ছে।
এ ধরনের নির্যাতনের ফলে নারীর যেমন শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয় তেমনি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়।
দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতম কারণ হচ্ছে ‘যৌতুক’। সমাজে যৌতুক প্রথা একটি বড় অভিশাপ। আমাদের দেশে যৌতুক প্রথা যে সব কারণে এখন পর্যন্ত টিকে আছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, অর্থনৈতিক পরনির্ভরশীলতা, সামাজিক কুসংস্কার, বাল্য বিয়ে, রেজিষ্ট্রিবিহীন বিয়ে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা প্রভৃতি।
অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)-এর তথ্য অনুযায়ী গত ১৯ বছরে প্রায় দেড় হাজার নারী ও শিশু অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। এই অপরাধের দায়ে সাজা হয়েছে মাত্র ৩৪৩ জনের। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী অ্যাসিডের মামলায় গত ১৬ বছরে ১৪ আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কারও সাজা কার্যকর করা হয়নি। অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ অনুযায়ী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বলা আছে।
জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে নারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত কোটি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে গত এক দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। গত এক দশকে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হয়েছে, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে নারীর প্রবেশ ঘটেছে।
তবে, দুর্ভাগ্যক্রমে এই অগ্রগতির যাত্রার মধ্যেও এদেশের নারীরা নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১১ এর প্রতিবেদন দেখা যায়, এ দেশের ৮৭ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু সহিংসতার শিকার হচ্ছে। লিঙ্গভিত্তিক অসমতার সূচকে ১৮৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬তম।
বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রণীত হয় নারী নির্যাতন (ন্যূনতম শাস্তি) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ (১৯৮৩ সালের ৬০ নম্বর অধ্যাদেশ)। অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য দিয়ে প্রণীত এই আইনটিতে মোট নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিতকরণ ও এর শাস্তি নির্ধারণ করার বিধান আছে এবং ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ছাড়াও বখাটেদের উৎপাতের জন্য দন্ডবিধি আইন প্রচলিত আছে। প্রচলিত আইনে বখাটেদের যে শাস্তির বিধান আছে তা হলো- ঢাকা মহানগর পুলিশ আইনের ৭৬ ধারা ও দ-বিধির ৫০৯ ধারা অনুযায়ী এ অপরাধের জন্য এক বছরের কারাদ-সহ ২ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ নম্বর ধারায় যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানীর জন্য ১০ বছরের কারাদ- দেয়ার বিধান আছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এই নির্যাতন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজে বসবাসরত সকল শ্রেণীর মানুষকে সচেতন করতে হবে।
নারীর প্রতি সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ তার সাড়ে সাত কোটি নারী ও কন্যা শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশে সৃষ্টি করতে পারে, যাতে তারা দেশের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
সুত্রঃ বাসস

 

মাতৃকথন_১০

মাতৃকথন_১০


ফারিনা মাহমুদ


নিছক নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিতে লেখা শুরু করেছিলাম মাতৃকথন । খুব অবাক হয়ে খেয়াল করলাম ধীরে ধীরে বেশ অনেকেই আমাকে ইনবক্সে কমেন্টে প্রশ্ন করা শুরু করেছেন বাচ্চার ব্যাপারে । তাঁরা সবাই জানেন আমি ডাক্তার নই, শিশু বিশেষজ্ঞও নই। তাহলে আমার কাছে ক্যানো ? আমার মনে হয়েছে আমার কথাগুলো হয়ত খুব সাধারণ, আটপৌরে বলেই অনেকের সাথে মিলে গেছে । কাছের মানুষ ভেবেই তাঁরা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, চাইছেন । এ এক পরম পাওয়া আমার জন্য । শুরু থেকে ব্যাপারগুলো এলোমেলো ছিলো । এখন ভাবছি একটু গুছিয়ে শুরু করবো । যদি একজনেরও একটু উপকার হয়, আমি ধন্য ।

#পৃথিবী_বদলে_গেছে…. যা দেখি নতুন লাগে !

দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোলে যখন শিশুটা আসে,সে একা আসে না । নতুন মা বাবার জন্য নিয়ে আসে একরাশ আনন্দের বিপরীতে কিছু দুশ্চিন্তা, পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশন, নির্ঘুম রাত আর কি করবো কি করবো না এই দ্বিধার দোলাচল । এই নতুন পরিস্থিতিতে কিভাবে খাপ খাওয়াবেন বাবা মা ? কিভাবে কি করবেন দিশা পাওয়ার আগেই আরো কিছু সমস্যা হাজির হয় । মা আর বোনেরা এই করতে বলছেন তো শ্বাশুড়ি ননদ ঠোঁট উল্টে বললেন – যত্ত সব ঢং ! এইভাবে বাচ্চা পালে নাকি ? স্বামী বেচারা অটো হয়ে যান দু পক্ষের কথা শুনতে শুনতে । ফলাফল – সম্পর্কের অবনতি, রাগারাগি ঝগড়াঝাটি !

ব্যাপারগুলো ক্যানো ঘটে ?

ঘটে মূলত আমাদের অজ্ঞতা ও মানসিক প্রস্তুতির অভাবে । বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাবা মায়েরা নতুন বাচ্চা এবং প্রসুতি মায়ের ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানেন না । ভাবেন নানী দাদী তো আছেই ! কিন্তু মনে রাখতে হবে, দিনশেষে বাচ্চাটা যেহেতু আমার, তাই আমারই দায়িত্ব বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া । আমার মতে বাচ্চার জিনিসপত্র, নাম আর ঘর সাজানো নিয়ে মাথা ঘামানোর পাশাপাশি কিছু দরকারী বিষয় জেনে নেয়া জরুরি ।এতে করে সন্তান জন্ম পরবর্তী চ্যালেঞ্জ গুলো মোকাবেলা করা সহজ হয় ।

১) মায়ের পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশন :
প্রসব পরবর্তী ম্যাসিভ হরমোনাল চেঞ্জের কারণে নিজের ইমোশনের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না । প্রচন্ড রাগ, জিদ, অকারণে কান্না এই ধরনের কিছু অদ্ভূত উপসর্গ দেখা দেয় । মা নিজেও মোটামুটি তব্দা খেয়ে যায় তার নিজের আচরণে। অসম্ভব অসহায় লাগে নিজেকে । মনে হয় কেউ আমাকে বুঝতে পারছে না ।
অদ্ভূত ব্যাপার হছে, একটা সমময় নিজেকে খুব উপেক্ষিত আর বঞ্চিত মনে হয় । মনে হয় সবাই শুধু বাচ্চা বাচ্চা করে যাচ্ছে ক্যানো, আমি কি একটা মানুষ, না মানুষের ছায়া ! বিশেষত গর্ভাবস্থায় সবার আদর যত্ন পেয়ে এসে এই নতুন পরিস্থিতিতে হঠাত খুব খটকা লাগে ! ক্লান্ত অবসন্ন আপনার মাথায় আবার সারাক্ষণ সেই বাচ্চাকে নিয়েই টেনশন, বাচ্চাটাকে কারো হাতে দিয়ে শান্তি পাওয়া যায়না । মনে হয় চারপাশের সবাই ভুল, আমি ই শুধু ঠিক ।
কি করবেন : এই করনীয়র তালিকাটা মূলত অন্যদের জন্য, আরো আলাদা করে বললে বাবা দের জন্য । সাপোর্টিং পার্সন হসাবে তাদেরকে যথেষ্ট সংগ্রাম করতে হবে এই পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে, এইটা স্বীকার করে নিয়েই বলছি, আপনাদের দায়িত্ব মা কে সময় দেয়া, কাজ ভাগ করে নিয়ে বিশ্রামে সহায়তা করা । তাকে আঘাত করে বা দোষ দিয়ে কথা না বলা এবং কেউ যাতে বলতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া । তার রাগ জিদ ধরে আপনিও তার সাথে বাক বিতন্ডায় জড়াবেন না যেনো । তর্ক বাড়ছে বুঝলে ব্রেক নিন । কিছুক্ষণ বাইরে থেকে হেঁটে ফিরে আসুন । তাকেও কুল ডাউন টাইম দিন, নিজেও নিন । অবস্থা বেশি খারাপ হলে অবশ্যই চিকিত্সা সেবা নেবেন । তবে অবশ্যই আত্মীয়ও স্বজন, শ্বশুর বাড়ি বাপের বাড়ি এক করে বিচার সালিশ বসিয়ে আরো বড় বিপদ ডাকবেন না ।

২) ঘুম স্বল্পতা :
সদ্যজাত বাচ্চার পিছনে দিন রাত এক হয়ে যায় । বাচা খাওয়ানো, ঘুম পড়ানো, কাঁথা পাল্টানো, কান্না সামলানো এই লুপের মধ্যে পড়ে যায় মা । আমি নিজেই মাথায় চিরুনি দিয়েছিলাম ১৯ দিন পরে, এমনও দিন গেছে যখন ২৪ ঘন্টায় একবার খাবার সময় পেয়েছিলাম ! ভোজবাজীর মতো পাল্টে যাওয়া এই নিদ্রাহীন কান্ত জীবন ভীষণ প্রভাব ফেলে বাবা মায়ের উপরে, প্রভাব ফেলে সম্পর্কের উপরেও । মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে থাকে । বাবাদের জন্য অফিসে কাজে মন বসানো খুব কষ্টকর হয়ে যেতে পারে ।
কি করবেন : ঘুমাবেন । সোজা হিসাব হচ্ছে যখন ই একটু সুযোগ পাবেন, ঘুমিয়ে নেবেন । প্রথম ৬ সপ্তাহ বাচ্চার রুটিনের সাথে নিজে মানিয়ে নেয়া ছাড়া গতি নেই । বাচ্চা ঘুমালে এই করবো সেই করবো না করে নিজেও শুয়ে পড়বেন । হালকা তন্দ্রা বা বিশ্রামও আপনাকে অনেক ঝরঝরে করে তুলতে পারে । ২৪ ঘন্টায় কয়েকটা ছোট ন্যাপ নিলেও দেখবেন বাকি সময়টা অনেক ভালো কাটবে ।

৩) ক্ল্যাশিং প্যারেন্টিং স্টাইল :
ওই যে শুরুতে বললাম,বাবার বাড়ি থেকে বলেছে তেল ডলতে শ্বশুর বাড়ি বলছে না … এই ধরনের ক্ল্যাশ খুব কমন । এক একজনের বাচ্চা পালার তরিকা ও অভিজ্ঞতা এক এক রকম হয় । সবাই ভাবে সে ঠিক । এতে করে তৈরী হয় একটা সংঘাতময় অবস্থা । এর স্বীকার অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা । যেন মা ছাড়া দুনিয়ার সবাই সব জানে !
কি করনীয় : নিজেকে জানতে হবে কি করবো, কেন করবো । কনফিডেন্স রাখতে হবে নিজের উপরে । মানুষের বাচ্চা কোনো নতুন মডেলের গাড়ি না যে ম্যানুয়াল সাথে নিয়ে পৃথিবীতে আসবে । তবে হ্যা, সব গাড়ির কমন মেকানিজম থাকে । সেইটা জেনে রাখলে অন্যের কথা খুব বেশি আমল দেয়ার প্রয়োজন নেই যদি না যুক্তি যুক্ত মনে হয় । সবকিছুতে উদ্বিগ্ন হবেন না । তবে উদ্বিগ্ন কখন হতে হয় সেই বেসিক পয়েন্ট গুলো জানতে হবে।

৪) একান্ত সময় থেকে বঞ্চিত :
বাচ্চা হবার আগে প্রতি সপ্তাহে দুজনে রিক্সার হুড ফেলে ঘুরতে যেতেন? রাত জেগে মুভি দেখতেন ? আড্ডা দিতেন বন্ধুদের সাথে? আর এখন? নিজেদের বসে দুটো কথা বলার সময়ও নেই ! আর কি কোনদিন জীবন স্বাভাবিক হবে ?
কি করনীয় : জীবন স্বাভাবিক হবে আবার, তবে তার জন্য চেষ্টা করতে হবে দুজনকেই । বাচ্চার কাজগুলো দুজন মিলেই করুন । বাবা যখন বাচ্চার কাজ করতে চাচ্ছেন, মা তখন তাকে খবরদারি করা থেকে বিরত থাকুন, তাকে বুঝিয়ে দেখিয়ে দিন কি করলে ভালো হয় । তিনি একবারে না পারলেই গলা চড়াবেন না । আর একেবারে আপনার মতো করেই তাকে পারতে হবে এমন কথা নেই । একটু উনিশ বিশ হলে দুনিয়া উল্টে যায় না । ধৈর্য রাখুন, বাচ্চাকে একটা রুটিনে আনতে পারলে সব ই সম্ভব হবে । নিজেরা নিজেদের জন্য সময় বের করুন । সমঝোতা শক্ত করুন । একে অপরের পাশে থাকুন । একটু একটু করে প্রিয় জিনিসগুলো ফিরিয়ে আনুন ।
এই চাল্যেঞ্জ গুলো প্রথম ৬ সপাহে যদি ভালো মতো হ্যান্ডেল করতে পারেন, বিশ্বাস রাখেন, ৬ সপ্তাহের পর থেকে পরিস্থিতি অনেক অনেক ভালো হবে !
ফিরে আসবো পরের পর্বে, নবজাতকের যত্ন নিয়ে !

 

“ফ্রীল্যানসিং ফ্রি প্রশিক্ষণ” শুধুমাত্র নারীদের জন্য!

“ফ্রীল্যানসিং ফ্রি প্রশিক্ষণ” শুধুমাত্র নারীদের জন্য!


নারী সংবাদ


এগিয়ে যাচ্ছে যুগ ও প্রযুক্তি, এবং বর্তমান যুগে একজন নারীর জন্য আয় করার সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য উপায়ের একটি হচ্ছে ফ্রীল্যানসিং। অবিশ্বাস্য নয় সত্যি। শুধুমাত্র নারীদের জন্য। ফ্রি প্রশিক্ষণ দিবে CodersTrust সাথে চাকরীর সুযোগ বাড়বে আপনার।

দেরি না করে এখনই আবেদন করে ফেলুন ।

Course Name: Digital Marketing
Course Duration: 4 Months
Class Time: 3 Days/Week (9am-1pm) or (2pm-6pm)

এই প্রজেক্ট কাদের জন্য?

– শুধুমাত্র নারীদের জন্য (Students, Housewife, Job Seeker, Mothers, Unemployed)
– সর্বনিম্ন SSC পাস
– ঢাকায় অবস্থিত
– যাদের আর্থিক প্রয়োজন আছে, তারা অগ্রাধিকার পাবে
– বেসিক ইংলিশ ও কম্পিউটার জানা থাকতে হবে
– বয়স ১৮ – ৩৫

গত ৫ বছরে CodersTrust প্রশিক্ষণ দিয়েছে হাজারো মানুষদের, কিন্তু আমরা চাই আমাদের দেশের নারীরাও এর অংশ হোক, হয়ে যাক স্বাবলম্বী।

তাই এই প্রজেক্ট, যেন যেই নারীর ইচ্ছা আছে স্বাবলম্বী হওয়ার, সে যেন নির্ভয়ে, কোনো খরচের চিন্তা ছাড়াই, ফ্রি আমাদের প্রজেক্টের অংশ হতে পারবে।

৩টি রাউন্ডে বাছাই করা হবে, ১ম রাউন্ডে আবেদন করার জন্য নিম্নোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

***বনানীতে ফ্রি কোর্সে অংশগ্রহণ করতে যোগাযোগ করুন,
ঠিকানাঃ

কোডার্সট্রাস্ট মেইন ক্যাম্পাস (বনানী ক্যাম্পাস) বাড়িঃ৮২ রোডঃ১৯/এ, ব্লক- ই বনানী ঢাকা।

ওয়েব সাইট ঠিকানাঃ
https://coderstrustbd.com/all-courses/

 

সফররত বান কি মুনের স্ত্রীর প্রয়াস স্কুল পরিদর্শন

সফররত বান কি মুনের স্ত্রীর প্রয়াস স্কুল পরিদর্শন


নারী সংবাদ


সফররত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের স্ত্রী ইও শুন তায়েক আজ বুধবার সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় প্রয়াস স্কুল পরিদর্শন করেছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ, পররাষ্ট্র্রমন্ত্রীর স্ত্রী বেগম সেলিনা মোমেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রয়াস স্কুলে এসে পৌঁছলে কেন্দ্রীয় প্রয়াসের নির্বাহী পরিচালক ও অধ্যক্ষ কর্নেল মোঃ নুরুল হুদা তাঁদেরকে স্বাগত জানান এবং প্রয়াসের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। ইও শুন তায়েক প্রয়াসের আর্লি চাইন্ডহুড ডেভেলপমেন্ট (ইসিডিপি) প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে আন্তরিক সময় কাটান।
উল্লেখ্য, প্রয়াসের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অতি অল্প সময়ের মধ্যেই প্রয়াস একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
পরে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বিশেষ শিশুদের পরিবেশিত মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সুত্রঃ (বাসস)।

 

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না! (পর্ব-৩)

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না!
(পর্ব-৩)


রাহনুমা সিদ্দিকা


নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিশুকে শেখান-

আপনার শিশুকে/ কিশোর সন্তানকে ধীরে ধীরে তার বয়স উপযোগী sexual education আপনাকেই দিতে হবে, নাহলে কেউ তাকে বিকৃত ধারণা দিয়ে তাকে নির্যাতন করার সুযোগ নিতে পারে। একদিনে সব শেখানোর চেষ্টা করবেন না।

১) শিশুকে তার প্রত্যেকটি গোপন অঙ্গের নাম জানান। কোন অঙ্গগুলো প্রকাশ করা যাবে কোনগুলো গোপন রাখতে হবে তার পুরোপুরি জ্ঞান তাকে দিতে হবে। আপনার শিশুকে বোঝান- কোনটি ‘ভালো আদর’ কোনটি ‘মন্দ আদর’। কেউ তাকে ‘ভালো আদর’ করলে কোন সমস্যা নেই। ‘মন্দ আদর’ করলেই সাথে সাথে বাবা/ মা/ বাসার বড় কাউকে জানাতে হবে।

২) তাকে দু’হাত ছড়িয়ে দাঁড়াতে বলুন। সে যাদের পছন্দ করবে না তাদেরকে যেন কখনো এই ত্রিভূজের মধ্যে আসতে না দেয়। (ছবিটি ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স এর ওয়েবসাইট থেকে নেয়া হয়েছে।)

৩) তাকে আরো বলতে পারেন- তোমার শরীরের তিনটি জায়গা (নিচের ছবিতে চিহ্নিত) আছে, অনেক বড় বিপদ ঘটতে পারে যদি কেউ এগুলো মন্দভাবে ধরে। তাকে এ-ও বুঝিয়ে বলতে পারেন- কখনো কখনো গোসল করিয়ে দেয়ার সময় মা হয়তো ধরতে পারে। অসুখ হলে বাবামায়ের উপস্থিতিতে ডাক্তার ধরতে পারে। ‘ভালো আদর’ করার জন্য কখনো কেউ জড়িয়ে ধরতে পারে। কিন্তু তুমি যখনই বুঝবে কেউ ‘মন্দ আদর’ করবার জন্য ধরেছে তাকে জোরে ‘না’ বলতে হবে। যদি সে না শোনে তাহলে চিৎকার দিতে হবে, সে যে-ই হোক না কেন আর তাকে তুমি যতই ভালোবাসো না কেন। সেই জায়গা থেকে সরে নিরাপদ কোন জায়গায় চলে আসতে হবে। অবশ্যই মা কিংবা বাবা যাকে তুমি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করো তাকে বলে দিতে হবে। (আইডিয়াটি ‘সত্যমেভ জয়তে’র চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ’ নিয়ে করা এপিসোডের ওয়ার্কশপ থেকে নেয়া হয়েছে।)

৪) আপনার শিশুকে শেখান- যে সিক্রেটের সাথে খারাপ কাজ জড়িয়ে থাকে সে ‘সিক্রেট’ বলে দিতে হয় নাহলে বিপদ হয়।

৫) তাকে বলুন, যারা ‘মন্দ আদর’/ ‘খারাপ আদর’ করবে তারা কখনো ভালো মানুষ নয়, তাদের ভালোবাসা যাবে না।

৬) অনলাইনে সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ নিয়ে শিশুদের উপযোগী ভালো ভালো সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপের ভিডিও পাবেন, শিশুকে সাথে নিয়ে সেগুলো দেখান। আপনার শহরে কোন ওয়ার্কশপ হলে সেগুলোতে শিশুকে নিয়ে যেতে পারেন।

আপনার শিশুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু হন। যেন সে তার সব কথা আপনার সাথে নিঃসঙ্কোচে শেয়ার করতে পারে। তাকে একথা জানান যে, তাকে আপনি ভালোবাসেন ও বিশ্বাস করেন, আপনি সবসময় তাকে সাহায্য করবেন। শিশুর স্কুলের শিক্ষকদের সাথে পরিচিত হবেন। কোন শিক্ষক কেমন, কে তাকে আদর করে, তাকে কী কী দেয়, সে স্কুলে কী কী করে- গল্পচ্ছলে শিশুর কাছ থেকে জেনে নিন।

ধরুন, আপনার শিশু কারো দ্বারা সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজড হলো,

এখন আপনার করণীয় কী?

১) আপনার শিশু যদি কারো নামে আপনার কাছে নালিশ করে, শিশুকে বিশ্বাস করুন। শিশুরা সাধারণত এই ব্যাপারে মিথ্যা বলে না। আপনি অবিশ্বাস করলে ভবিষ্যতে হয়তো আর কখনোই শিশুটি আপনার সাথে শেয়ার করবে না।

২) আপনার শিশুকে এটা বুঝতে দেয়া যাবে না তার সাথে খুব ভয়ংকর কিছু ঘটে গেছে। আপনি আপনার শিশুর সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার করুন, অস্থির হয়ে যাবেন না।

৩) নিয়মিত একজন ভালো শিশুমনোবিজ্ঞানীকে দিয়ে কাউনসেলিং করান।

৪) শিশুটি যদি খুব গুরুতর নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন। কখনোই শিশুটিকে বকাবকি করা যাবে না। বরং তাকে আশ্বস্ত করতে হবে যা হয়েছে তা কোনভাবেই তার অপরাধ নয়, অপরাধ ওই ব্যক্তির। ব্যাপারটি যদি আদালত পর্যন্ত যায়, বিশেষ ব্যবস্থায় মনোবিজ্ঞানীর মাধ্যমে শিশুর জবানবন্দী নিতে হবে, কখনোই শিশুকে জনসমক্ষে ‘তার সাথে কী হয়েছে’ এর বর্ণনা দিতে বলা যাবে না। এসব শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

৫) ভিকটিম শিশুটি যদি খুব অল্প বয়েসী হয়- তাহলে হয়তো সে আপনাকে নির্যাতনকারীর কথা বলতে পারবে না। আপনাকে আগেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে একাকী যার-তার কোলে দেবেন না। নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে সাবধান হোন, প্রয়োজন হলে ডাক্তার দেখান।

তবে এগুলো অন্য কারণেও হতে পারে,

• শিশুর গোপনাঙ্গে কোন ক্ষত বা অস্বাভাবিক ফোলা ভাব,
• মুখে ক্ষত,
• পেট খারাপ,
• খাওয়ায় অরুচি,
• বিশেষ কোন ব্যক্তিকে দেখে ভয় পাওয়া,
• হঠাৎ চমকে ওঠা ইত্যাদি।

নির্যাতনকারী কদাচিৎ অচেনা মানুষ হন, অধিকাংশ সময় সে নিকট বা দুরসম্পর্কের আত্মীয়, শিক্ষক, পরিবারের লোক, পারিবারিক বন্ধু, প্রতিবেশী, কাজের লোক ইত্যাদি হন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে- কেবল সন্দেহ করে অহেতুক কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না, এতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। আবার, নিশ্চিত হলে লজ্জায় চুপ করে থাকবেন না, সে আপনার যত ঘনিষ্ট বা সম্মানিত জনই হোক না কেন। পারিবারিকভাবে শালিস করা গেলে ভালো কিংবা আইনি সহায়তা নেবার প্রয়োজন হলে নিন।

আমরা তো এখন আধুনিকতার দোহাই দিয়ে অনেক বিকৃতিকেই স্বাভাবিকভাবে নেয়া শুরু করেছি। ভাবলে ভেতরটা হিম হয়ে আসে- একসময় হয়তো আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ, পেডোফিলিয়া এবং ‘অজাচার’ (ইনসেস্ট) এর মতো জঘন্যতম বিকৃতিগুলোকেও স্বাভাবিক ভাবে নিতে শুরু করবো।

আপনার আমার নীরবতাই হাজারো শিশুর নির্যাতিত হওয়ার পথ সুগম করে দেবে। আসুন, এদের মুখোশ খুলে দিই সভ্য সমাজে, ধিক্কার দিই, কঠোর আইন প্রণয়ন করি, আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করি। সুস্থ-স্বাভাবিক-নিরাপদ শৈশব- প্রতিটি শিশুর অধিকার! আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠুক নিবিড় পবিত্রতায়… আল্লাহর কাছে সে দোয়া রইলো।

লেখায় ব্যবহৃত তথ্যের রেফারেন্স ও গুরুত্বপূর্ণ আরো কিছু লিঙ্ক:

১) শিশু যৌন নির্যাতনরোধে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন ও সহায়তা কেন্দ্রসমূহ সম্পর্কে জানতে এই লেখাটি পড়ুন।

২) Child Sexual Abuse – উইকিপিডিয়া

৩) ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট

৪) যেভাবে একজন পেডোফাইলকে চিহ্নিত করবেন

৫)নিকটজনের কাছেই শিশুরা বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার (প্রথম আলো)

৬) নিজ ঘরেই যৌন নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের যে শিশু মেয়েরা (বিবিসি বাংলা)

৭) সত্যমেভ জয়তে’র পুরো এপিসোডটি

৮ ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ (সংশোধিত)

ফুটনোট[১]
সম্রাট বাবুরের আত্মজীবনী ‘বাবুরনামা’ পড়ছিলাম।ভাবি নি সেখানেও পেডোফাইলদের দেখা পেয়ে যাবো। বাবুর লিখেছেন, “এ কুৎসিত প্রথা দেশময় এভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো যে প্রত্যেক সমর্থ পুরুষই ছেলে রাখতো। এমন কি এরূপ ছেলে রাখাকে গর্বের কাজ মনে করা হতো এবং না রাখাকে লোকে অপৌরুষের চিহ্ন বলে বিবেচনা করতো।”
এমনকি, বাবুর নিজেও স্বীকার করেছেন এক কিশোরের প্রতি তার আসক্তির কথা। তবে তার ওই ‘আসক্তি’ কোনো ‘সম্পর্কে’ রূপান্তরিত হয় নি বলেই মনে হলো। তেমন কোন বর্ণনা নেই।
ফুটনোট[২]
হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ছবিতে আমরা শিশু-পতিতাদের কীভাবে ব্যবহার করা হতো দেখেছি। দেখেছি-ইমতিয়াজ আলীর ‘হাইওয়ে’ চলচ্চিত্রে , যেখানে নায়িকাটির শৈশবে তার ‘আঙ্কেল’ কর্তৃক শারীরিকভাবে বারবার লাঞ্ছিত হওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে, সেই যন্ত্রণা কীভাবে তাকে জীবনভর তাড়িত করেছে তাও দেখানো হয়েছে। অনেকদিন আগে দেখা আরো একটি চলচ্চিত্র ‘মিসটিক রিভার’ এ দেখেছিলাম পেডোফাইলরা কীভাবে শিশুদের ব্যবহার করে। ‘ফরেস্ট গাম্প’ মুভিতেও দেখা যায় শৈশবে মেয়েটি তার পিতার দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন শৈশবে তার চাচা ও মামা কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা।
ফুটনোট[৩]
আমাদের তথাকথিত আধুনিক পরিবারগুলোতে হরহামেশা রগরগে দৃশ্য সম্বলিত হিন্দি/ ইংরেজি চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও চলছে। শিশুর সামনেই। কেউ কিছু মনে করেন না। তো, যে পরিবার শিশুকে ইমপ্লিসিটলি এই শিক্ষাই দিচ্ছে- ‘এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার’ সে পরিবারের শিশুকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা খুবই সহজ। এমনও হতে পারে, শিশুটি পুরো ব্যাপারটাকে খুব স্বাভাবিকভাবে নেবে, পরিবারকে জানানোর প্রয়োজনও বোধ করবে না। নৈতিকতার শিক্ষা শিশু পরিবার থেকেই পাবে, না?

*****[পড়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রাসঙ্গিক আলোচনা একান্তভাবে কাম্য। নিজে সচেতন হন, অপরকে সচেতন করুন। একমত হলে শেয়ার করুন।]*****

লিখেছেন-রাহনুমা সিদ্দিকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না! (পর্ব-২)

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না!
(পর্ব-২)


রাহনুমা সিদ্দিকা


কীভাবে একজন নির্যাতনকারীকে চিনবেন?

কেন কিছু মানুষ- এই ঘৃণ্য আচরণটি করে?

বয়স, চেহারা, লিঙ্গ, পেশা ভেদে একজন শিশু-যৌননির্যাতনকারী যে কেউই হতে পারে। সুতরাং তাকে চেনা তত সহজ নয়। এরা শিশুদের সাথে খুব সহজে মিশে যেতে পারে। সাধারণত গল্প বলে ও উপহার দিয়ে প্রথমে এরা শিশুদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করে নেয়, এরপর নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করে। খুব পরিকল্পিতভাবে এগোয়।

আমরা পেডোফিলিয়ার কথা জানি। এটা একটা সেক্সুয়াল ডিজঅর্ডার। পেডোফিলিয়ার রোগীরা কেবল শিশুদের (যারা এখনো বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছোয় নি) প্রতি আসক্ত থাকে। কেন কিছু মানুষ- এই ঘৃণ্য আচরণটি করে- এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যেসব শিশু শৈশবে দীর্ঘসময় ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলো এদের কেউ কেউ যৌবনে পেডোফাইলে পরিণত হয়।

পেডোফাইলদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেমনঃ এরা প্রধাণত হয় পুরুষ (তবে কদাচিৎ নারীও হতে পারে), সমকামীদের মধ্যেও পেডোফিলিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে এদের তেমন সখ্য থাকে না বরং এদের সখ্য থাকে শিশুদের সাথে, এরা শিশুদের সাথে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ করে।

এখানে, স্মর্তব্য যে, সব পেডোফাইল শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন করে না এবং সব শিশু যৌন নির্যাতনকারীই পেডোফাইল নয়।

নির্যাতনকারী শিশুকে সাধারণত যে কথাগুলো বলে

এটা তোমার আমার মাঝে একটা ‘সিক্রেট’, কাউকে বলা যাবে না। (বাচ্চারা এতে মনে করে তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।)
আসো আমরা বর-বউ খেলি/ বা, ওই মজার খেলাটা খেলি।
তুমি যদি এটা তোমার মাকে/বাবাকে বলে দাও আমি তোমাকে/ তাদেরকে মেরে ফেলবো।
তুমি বলে দিলেও তোমার কথা কেউ বিশ্বাস করবে না।
সবাই তোমাকেই খারাপ ভাববে, সবাই তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে।
তুমি যদি আমার কথা মতো কাজ না করো আর কোনদিন আমি তোমাকে ভালোবাসবো না।

আপনার শিশুকে রক্ষার্থে আপনার করণীয়

কখনো যদি দেখেন/ নিশ্চিতভাবে জানতে পারেন কোন প্রাপ্তবয়স্ক লোক/মহিলা আপনার শিশুকে ‘আমার বউ’/ ‘আমার বর’ বলে সম্বোধন করছে, কঠোরভাবে তাকে নিষেধ করে দেবেন।
আপনার শিশুকে কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতি অস্বাভাবিকভাবে আকৃষ্ট দেখলে তার ব্যাপারে সাবধান হোন।
কখনো আপনার শিশুকে কারো বাসায় যেতে/ কারো কোলে বসতে/ কারো পাশে বসতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাধ্য করবেন না। বরং তার কাছ থেকে অনীহার কারণ জেনে নিন আদর করে। শপিং মলে দোকানের স্টাফদের বদলে নিজেই শিশুকে পোশাক পরা/ ট্রায়াল দেয়ায় সহায়তা করুন।
আপনার শিশু যদি মাঠে খেলতে যায়, খেয়াল রাখুন সে কাদের সাথে খেলে। মাঠে বড় ছেলেরাও খেলতে যায়, এদের দ্বারাও নির্যাতিত হতে পারে আপনার শিশু। (আমরা হয়তো কল্পনাও করতে পারবো না- বর্তমানে CSA এর প্রণোদনা যোগানোর জন্য ইন্টারনেটে কত জিনিস ছড়িয়ে আছে। ‘শিশুপর্নোগ্রাফি’ খুব অপ্রচলিত কিছু নয় বাংলাদেশে। সমাজে আরো অনেক ‘টিপু কিবরিয়া’ আছে।)
আপনার শিশুকে যদি দেখেন সে তার বয়সের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ sexual behavior জানে, এবং তার বিভিন্ন গোপনাঙ্গকে বিকৃত/অদ্ভুত নামে (কোনো স্ল্যাং) চিহ্নিত করছে, তাহলে তার কাছ থেকে জেনে নিন সে এগুলো কোথা থেকে শিখেছে। রেগে গিয়ে নয়, ধৈর্যের সাথে জানুন। যদি জানার উৎস টিভি/ ইন্টারনেট হয়, দ্রুত উৎসমুখ বন্ধ করুন। যদি জানার উৎস কোন ব্যক্তি হয়, তার সম্পর্কে সাবধান থাকুন। তার সাথে শিশুকে কখনো মিশতে দেবেন না।
গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেলে/ কোন আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গেলে রাতে ঘুমানোর সময় শিশুকে আত্মীয়/কাজিন এমনকারো সাথে একা একা ঘুমতে দেবেন না। নিজের কাছে রাখুন।

চলবে—-

পর্ব-১

 

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না! (পর্ব-১)

চুপ করে থাকো,কাউকে বলো না!
(পর্ব-১)


রাহনুমা সিদ্দিকা 


নিষ্পাপ শৈশবে- যখন উড়ে যাওয়া এরোপ্লেন দেখে পাইলট হতে ইচ্ছে করে, ফেরিওয়ালার ঝুড়িতে রঙবেরঙের পসরা দেখে পথে পথে ঘুরে ফেরি করতে ইচ্ছে করে, দাদার রেডিওর সমস্ত পার্টস খুলে- আর না লাগাতে পেরে স্টোর রুমে লুকিয়ে রেখে ভবিষৎ সায়েন্টিস্ট প্রস্তুতি নিচ্ছে দুনিয়া জয়ের, স্কুল ম্যাগাজিনে নিজের প্রথম প্রকাশিত লেখা ভবিষৎ সাহিত্যিকের ক্ষুদে বুকটা ভরিয়ে তুলছে- সেই সময়ই কিছু শিশুকে মুখোমুখি হতে কুৎসিত অন্ধকারের, বিনা অপরাধে রঙিন নিষ্পাপ স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় দুঃস্বপ্নের ভীড়ে, জীবনটা হয়ে ওঠে বিভীষিকা।

ক্লাস ওয়ান পড়ুয়া মেয়েটি টিচারের কাছে পড়তে যেতে চাচ্ছে না। তার অভিযোগ টিচার তাকে ব্যথা দেয়। বাবা-মা ধমক দিয়ে পাঠালেন। তারা বললেন, ‘এসব তোমার ফাঁকি দেওয়ার ছল!’ চোখ মুছে শিশুটি টিচারের কাছে পড়তে বসলো। সে জানে না কেন স্যার তাকে কিছু জায়গায় এভাবে ছোঁয়।

গৃহকর্ত্রীর দূর-সম্পর্কের ভাই এসেছে বাসায়। দুপুরবেলা তারই হেফাযতে দশ বছরের কাজের মেয়েটিকে রেখে গৃহকর্ত্রী গেছেন শপিংয়ে। …… লোকটা মেয়েটিকে হুমকি দিলো কাউকে কিছু বললে মেরে লাশ বানিয়ে ফেলবে।

সাত বছরের ফুটফুটে ছেলেটাও বুঝতে পারলো না চাচ্চু তার সাথে বারবার এমন করছে কেন। চাচ্চু বলেছে এটা একটা সিক্রেট মজার খেলা- কাউকে বলা যাবে না। কিন্তু তার খুব কষ্ট হচ্ছে, ব্যথা লাগছে। আম্মু-আব্বুকে কি তার বলা উচিত? যদি তারা বিশ্বাস না করে? ওকেই পঁচা ভাবে? আচ্ছা, চাচা তো খুব ভালো, তাকে কত কি মজার খেলনা দেয়- কত গল্প করে! বলে দিলে কি চাচা আর কখনো ওকে আদর করবে না? সে কীভাবে বলবে আম্মু-আব্বুকে?

মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে মায়াবতী কন্যাশিশুটি যখন বলে উঠলো গ্রামের বাড়ি বেড়াতে এসে তার সাথে কী নির্মম ঘটনাটা ঘটে গেছে, হতভম্ব মা মেয়ের চোখের জল মুছে বললেন, ‘চুপ করে থাকো, কাউকে বোলো না!’

কাকে আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ বলছি?

চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ (CSA) কে বলা যায়, “the imposition of sexual acts, or acts with sexual overtones, by one or more persons on a child (under 18)”– Save the children, CSA Draft Policy.

• শিশুর গোপন অঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ,
• শিশুকে কারো গোপনাঙ্গ ধরতে বলা,
•penetration of a child’s mouth with a penis,
• শিশুর পর্ন ছবি তোলা,
• শিশুকে পর্নোগ্রাফি দেখানো এবং শিশুর সামনে নগ্ন হওয়া,
• শিশুদের পতিতাবৃত্তিতে ঢোকানো, বাল্যবিবাহ,
• শিশুর সাথে বয়স অনুপযোগী sexual behavior নিয়ে আলোচনা,
• শিশুকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করা (যা ছেলে বা মেয়ে শিশু যে কারো ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে)
ইত্যাদি। সুতরাং, কেবল ধর্ষণ নয়, শিশু-যৌননির্যাতন একটি ব্যাপক পরিসরের শব্দ।

শিশুর উপর প্রভাব

মানসিক
বিষণ্নতা, সহিংস আচরণ, আত্মপীড়নমূলক কার্যকলাপ (নিজেকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দেওয়া), আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ও হীনমন্যতা, দুঃস্বপ্ন, অসামাজিক আচরণ, সমবয়সীদের সাথে মিশতে না পারা, হঠাৎ হঠাৎ চমকে ওঠা, আত্মহত্যার প্রবণতা (কিশোর বয়েসীদের ক্ষেত্রে), স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে বাধা।

শারীরিক
শিশু গুরুতরভাবে আহত হতে পারে, কোন কোন ক্ষেত্রে চিরতরে প্রজনন ক্ষমতা হারাতে পারে, নিউরোল্যজিকাল ড্যামেজ, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, রাতে বিছানা ভেজানো ইত্যাদি।

কিছু তথ্য-উপাত্ত

১৯০টি দেশের উপাত্ত নিয়ে তৈরি এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের তরফ থেকে বলা হয়েছে বিশ্বে প্রতি দশ জনে একজন মেয়েশিশু ধর্ষিত অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। WHO এর হিসেব মতে প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৪০ মিলিয়ন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ২০০৭ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতে ৫৩ভাগ শিশু শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।

ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স- নামে একটি বেসরকারি সংস্থার একজন কর্মকতা রোকসানা সুলতানা বলেন, ‘বাংলাদেশের শতকরা নব্বইভাগ শিশু পারিবারিক গন্ডিতেই ধর্ষণ থেকে শুরু করে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক স্পর্শসহ কোন না কোন যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।’ ১৯৯৭ সালে তারা শৈশবে যৌন নির্যাতনের শিকার ৫০ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেন, যার মধ্যে ৪৬ জনই পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, পরিচিত মানুষদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন। অর্থাৎ মাত্র ৪ জন শিশুর নির্যাতনকারী ছিলেন অপরিচিত ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত পাঁচ বছরের কম বয়েসী ২৮৬ জন শিশু সেক্সুয়াল অ্যাবিউজের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৯৯ ভাগ শিশু ধর্ষণের শিকার।

২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যে ৩৯৬ জন শিশু (অনূর্ধ্ব ১৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের কাউনসেলিংয়ের আওতায় আসে তাদের ৮৬ ছেলেশিশু। ছেলেশিশুরাও শংকার বাইরে নয়।

দুঃখজনক যে, বাংলাদেশে এই নিয়ে এখনো সরকারীভাবে পূর্ণাঙ্গ কোনো সমীক্ষা করা হয় নি। সামান্য নথিভূক্ত তথ্য-উপাত্ত যা পাওয়া যায় তা মোটেই প্রকৃত অবস্থাকে প্রতিফলিত করছে না। কারণ, এ ঘটনাগুলোর অধিকাংশই হয় অভিভাবকদের অসচেতনতায় অজানা থেকে যায় অথবা লোকলজ্জার ভয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়।

চলবে—

(অপরাজিতা প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে লিখেছেন রাহনুমা সিদ্দিকা। বাচ্চাদেরকে ধর্ষকের হাত থেকে বাঁচাতে সহযোগিতা করতে পারে এই সামান্য প্রচেষ্টা ধন্যবাদ)

 

ছাদ দেখাতে নিয়ে ৭ বছরের সায়মাকে ধর্ষণের পরে হত্যা

ছাদ দেখাতে নিয়ে ৭ বছরের সায়মাকে ধর্ষণের পরে হত্যা


নারী সংবাদ


ছোট্ট শিশু সায়মা। বয়স সবে মাত্র সাত বছর। বড় একটি পুতুলের মতো দেখতে মেয়েটি। ছোট্ট পায়ে ছোটাছুটি করে সারা ঘর মাথায় করে রাখত। সারাক্ষণ হাসি-খেলায় মাতিয়ে রাখত পুরো পরিবারকে। স্কুলেও যাওয়া শুরু করেছিল শিশুটি। তার খাতার পাতায় এখনো জ্বলজ্বল করছে সদ্য লিখতে শেখা গোটা গোটা হাতের লেখা। তার পানি খাওয়ার মগ, ভাত খাওয়ার থালা, স্কুলের ব্যাগ, পড়ার বইগুলো সবই আছে। নেই শুধু আদরের সন্তান সায়মা। তার পোশাক, বই ও ছবি এখন বাবা-মায়ের কাছে শুধুই স্মৃতি। শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। ছোট্ট শিশুটি যে কিনা এখনো জীবনকে চিনতেই শুরু করেনি, অথচ তাকে কি না মেনে নিতে হলো মৃত্যুর মতো করুণ উপসংহারকে! আর মৃত্যুর আগে সহ্য করতে হলো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম অত্যাচারকে! একটা নরপশু, একটা বিকৃত রুচির পাষণ্ড শিশুটিকে বাঁচতে দিলো না। ছোট্ট সায়মার বাবার কাঁধে সন্তানের লাশের যে বোঝা আমরা চাপিয়ে দিয়েছি, সেই ভার সইতে পারবে তো! হয়তো পারবে! এর আগেও তো তনু, রিশা, মিতু, বিশ্বজিৎ, নুসরাত, রিফাতদের ভার সয়ে নিয়েছে তাদের স্বজনেরা। সয়ে নিয়েছে সেই সব হতভাগ্যের লাশ যারা শুধু মৃত্যুই পেয়েছে, বিচারটুকুও পায়নি! আজ বিচার চেয়ে কাঁদছে সায়মার বাবা আব্দুস সালাম। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে মেয়ে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, তার মেয়েকে দুইভাবে নির্যাতিত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আসামির ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ওয়ারীর বনগ্রামের স্কুলছাত্রী সাত বছরের শিশু সামিয়া আক্তার সায়মাকে ধর্ষণের পরে হত্যার অভিযোগে হারুন অর রশিদ নামে এক যুবককে কুমিল্লার ডাবরডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। হারুন তার খালাতো ভাই পারভেজের রঙের দোকানে কাজ করত।
শিশুটিকে ছাদ ঘুরিয়ে দেখানোর কথা বলে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করে এই পাষণ্ড। হাত দিয়ে মুখ চেপে ধর্ষণের সময় সামিয়া নিস্তেজ হয়ে যায়। মৃত ভেবে গলায় রশি পেঁচিয়ে রান্না ঘরে রেখে হারুন পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল বাতেন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ৬টার দিকে সায়মা তার মাকে বলে আট তলায় যাবে। সেখানে ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের একটি বাচ্চা আছে তার সাথে একটু খেলেই চলে আসবে। প্রায় সময়ই ওই বাসায় গিয়ে বাচ্চার সাথে সায়মা খেলত। সেখানে গেলে পারভেজের স্ত্রী জানায়, তার মেয়ে ঘুমাচ্ছে। সেখান থেকে বাসায় ফেরার উদ্দেশে লিফটে ওঠে সায়মা। লিফটে সায়মার সাথে দেখা হয় পারভেজের খালাতো ভাই হারুনের। হারুন সায়মাকে লিফট থেকে ছাদ দেখানোর নাম করে ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে সায়মাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সায়মা চিৎকার করলে সায়মার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। ধস্তাধস্তিতে সামিয়া নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সায়মা নিস্তেজ দেখে গলায় রশি পেঁচিয়ে সামিয়াকে টেনে রান্না ঘরে সিঙ্কের নিচে রাখে। এরপর পারভেজের বাসায় না ফিরে হারুন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গায় পালিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে হারুন।
আব্দুল বাতেন বলেন, পারভেজের খালাতো ভাই হারুন। পারভেজের বাসায় থেকে গত দুই মাস ধরে তার রঙয়ের দোকানে কাজ করে আসছিল। পারভেজ জুলাই মাস থেকে হারুনকে তার দোকানে কাজ করতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন। কারণ সে প্রতি সপ্তাহে কাউকে না বলে বাড়িতে চলে যেত। তারপরও খালাতো ভাই হওয়ায় কয়েকদিন ওই বাসায় ছিল। এরপর ধর্ষণ করে শুক্রবার সন্ধ্যায়ই পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত আছে কি না আদালত হারুনকে রিমান্ডে দিলে জানা যাবে।
পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সামিয়া হত্যার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে পেতে ওই বাসার সব নারী-পুরুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া যায় হারুনই ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। রাতেই ডিবির টিম ঢাকা থেকে কুমিল্লায় চলে যায়। পরে তাকে গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিকে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ধর্ষণে অভিযুক্ত হারুনকে মিডিয়া সেন্টারের সামনে দিয়ে আদালতে নেয়ার জন্য গাড়িতে তুলতে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল ডিবি পুলিশের একটি দল। তখন সাধারণ জনতা হারুনকে উদ্দেশ তরে গালিগালাজ করে। বিক্ষুব্ধ কয়েকজন এই নরপিশাচকে মারতে যায়। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে মৃত সায়মাকে উদ্ধার করা হয়। ওই ভবনের ছয় তলায় বাবা-মায়ের সাথে থাকত সামিয়া। বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরের একজন হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সায়মা। সে ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলে নার্সারিতে পড়ত।
সংবাদ সম্মেলনে সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ১০ মিনিট খেলেই বাসায় এসে পড়তে বসতে চেয়েছিল মেয়ে। মেয়েটি আর ফিরে এলো না। সায়মার মৃত্যুর পর বাসার কেউ খাবার খায়নি। সবাই সায়মার জামাকাপড় আর বই জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। আমার পরীর মতো মেয়েকে যে কষ্ট দিয়ে মেরেছে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে তার ফাঁসি চাই।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, যাদের সন্তান আছে তারা এসব কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তির কাছ থেকে কিভাবে আপনার সন্তানদের দূরে রাখবেন, বিষয়টি ভেবে দেখবেন। আমি আমার মেয়েকে দেখে রাখতে পারিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মেয়েটা আমার স্ত্রীকে বলে ১০ মিনিটের জন্য বাইরে গেল। এরপর আমার মেয়েটা আর ফিরল না, তাকে নৃশংসভাবে খুন করা হলো। গত ২ দিন ধরে আমি একফোঁটা পানিও খাইতে পারিনি। ঘরে গেলে মেয়ের কাপড়চোপড়, ছবি দেখে আর ঠিক থাকতে পারি না। আমার পুরো পরিবারটা বিধ্বস্ত হয়ে গেল।
কান্নাভেজা গলায় মেয়ের স্মৃতিচারণ করে আব্দুস সালাম বলেন, আজকের পর যেন ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে না যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০


নারীর জন্য আইন


নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন৷ যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল,

সূচী
ধারাসমূহ

১৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনামা
২৷ সংজ্ঞা
৩৷ আইনের প্রাধান্য
৪৷ দহনকারী, ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শাস্তি
৫। [রহিত]
৬। [রহিত]
৭৷ নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তি
৮৷ মুক্তিপণ আদায়ের শাস্তি
৯৷ ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি
৯ক৷ নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ইত্যাদির শাস্তি
১০৷ যৌন পীড়ন, ইত্যাদির দণ্ড
১১৷ যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ইত্যাদির শাস্তি
১২৷ ভিক্ষাবৃত্তি, ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি করার শাস্তি
১৩৷ ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান
১৪৷ সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ
১৫৷ ভবিষ্যত্ সম্পত্তি হইতে অর্থদণ্ড আদায়
১৬৷ অর্থদণ্ড বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি
১৭৷ মিথ্যা মামলা, অভিযোগ দায়ের ইত্যাদির শাস্তি
১৮৷ অপরাধের তদন্ত
১৯৷ অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, ইত্যাদি
২০৷ বিচার পদ্ধতি
২১৷ আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার
২২৷ ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক যে কোন স্থানে জবানবন্দি গ্রহণের ক্ষমতা
২৩৷ রাসায়নিক পরীক্ষক, রক্ত পরীক্ষক, ইত্যাদির সাক্ষ্য
২৪৷ সাক্ষীর উপস্থিতি
২৫৷ ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ, ইত্যাদি
২৬৷ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
২৭৷ ট্রাইব্যুনালের এখ্‌তিয়ার
২৮৷ আপীল
২৯৷ মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন
৩০৷ অপরাধে প্ররোচনা বা সহায়তার শাস্তি
৩১৷ নিরাপত্তামূলক হেফাজত
৩১ক৷ ট্রাইব্যুনাল, ইত্যাদির জবাবদিহিতা
৩২৷ অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিক্যাল পরীক্ষা
৩৩৷ বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৪৷ ১৯৯৫ সনের ১৮ নং আইনের রহিতকরণ ও হেফাজত।

সূত্রঃ http://bdlaws.minlaw.gov.bd/bangla_pdf_part.php?id=835

 

বাঁধাকপির পাকোড়া রেসিপি

  • উপকরণ
    • বাঁধাকপির – দেড় কাপ
    • ময়দা বা কর্ণ ফ্লাওয়ার- প্রয়োজন মত
    • ডিম- ১ টি
    • ধনে পাতা কুচি- ইচ্ছা মত
    • কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি- ইচ্ছা মত
    • লবণ- স্বাদ মত
    • ভাজা জিরার গুঁড়ো- ১/২ চ চামচ
    • টেস্টিং সল্ট (ইচ্ছা)- ১/২ চা চামচ
    • বাড়তি স্বাদের জন্য ম্যাগি নুডুলস এর মশলা দিতে পারেন এক প্যাকেট
    • বেকিং পাউডার- ১/২ চা চামচ
  • প্রণালী
    * বাঁধাকপিরকুচি কুচি করে কাটি। তারপরতিহাত দিয়ে ভালো করে ঘষে মিহি ঝুরি করে নিন।
    * বাঁধাকপি কুচি কুচি গুলো খুব ভালো করে পানিতে ধুয়ে চিপে চিপে বাড়তি পানি ফেলে দিন।
    * কর্ণ ফ্লাওয়ার ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মেখে নিন।
    * এবার একটু একটু করে কর্ণ ফ্লাওয়ার মেশান। হাত দিয়ে মিশ্রণটি দেখে নিবেন বড়ার আকার করা যায় এমন হলেই আর দিবেন না। যতটা কম দেয়া যায়। দেড় কাপ পাতাকপিতে ৪/৫ চামচ লাগতে পারে।
    * তেল মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। পিঁয়াজুর আকারে পাকোরা ছেড়ে দিন তেলে।
    * লালচে সোনালি করে ভেজে তুলুন। বেশি আঁচে ভাজবেন না, তাতে পাকোরা মাঝে কাঁচা থেকে যাবে। ৫/৬ মিনিট ভাজলেই যথেষ্ট।

পরিবেশন

  • সসের সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন বাঁধাকপির পাকোড়া।

 

টিনএজ বয়সে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ

টিনএজ বয়সে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ


মাসুদ শরীফ


নবি ﷺ যেভাবে যৌনতা-বিষয়ক পাঠ দিতেন

টিনএজ বয়সটা ছেলে-মেয়ে দুজনের জন্যই বেশ অস্থির একটা সময়৷ নিজের শরীর এবং বিপরীত লিঙ্গের শরীর প্রতি এ-বয়সে প্রথম তারা আকর্ষণ বোধ করে৷ এগুলোকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায় না৷ আপনার সুবোধ-সুশীলা ছেলে বা মেয়েকে এখনো ছোট্টটি মনে করার কারণ নেই৷ করলে পরে পস্তাবেন আপনিই৷
নবিজির সময়েও এ-বয়সী ছেলেমেয়েরা ছিল৷ তারা সবসময় নিজেদের দৃষ্টি সংযত করতে পারেনি৷ এটা মানুষের সহজাত স্বভাব৷ কিন্তু নবিজি এ-রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন৷ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছেন৷

একবার হাজ্জের সময় নবিজি আর তার চাচাতো ভাই ফাদ্‌ল বিন আব্বাস যাচ্ছিলেন এক সওয়ারিতে চড়ে৷ ফাদ্‌ল ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ বিন আব্বাসের ছোট ভাই৷ আমরা ধারণা করতে পারি, নবিজির চাচাতো ভাই যেহেতু, তারা দুজনই সুদর্শন ছিলেন৷ বিশেষ করে নবিজির দাদার বংশের সব চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা সুন্দর সুঠাম হয়ে থাকবেন৷

তো পথে খাসাম গোত্রের এক তরুণী নবিজির সামনে এসে দাঁড়ালেন৷ তরুণী তাকিয়ে আছেন ফাদ্‌লের দিকে৷ ফাদ্‌ল তাকিয়ে আছেন তরুণীর দিকে৷ এর ফাঁকেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আমার বাবার উপর হাজ্জ করার বাধ্যবাধকতা চেপেছে৷ কিন্তু তিনি খুবই বয়স্ক৷ কোনো কিছুতে সওয়ার হতে পারেন না৷ আমি কি তার হয়ে হাজ্জ করতে পারব?”
“হ্যাঁ৷” নবিজি বললেন৷ (বুখারি)

আপনি-আমি হলে তো আমাদের মূল নজর থাকত প্রশ্নকর্তার দিকে৷ কিন্তু নবিজির একটা চোখ কিন্তু ছিল ফাদ্‌লের উপরও৷ তিনি জানতেন, ওদের যা বয়স, একজন আরেকজনের দিকে তাকাবেই৷ আর সেজন্য প্রশ্ন-উত্তর সময়টাতে বার তিনেক ফাদ্‌লের মুখ তিনি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তরুণীটিকে উত্তর দেয়া শেষ হলে নবিজি তার চাচাতো ভাইকে বললেন, “আজ এমন এক দিন, যে-তার দৃষ্টি সংযত রাখবে, লজ্জাস্থান ও জবান সুরক্ষিত রাখবে, তাকে মাফ করে দেয়া হবে৷” (ইবনু খুজাইমা)

ঘটনাটির আরও বেশ কিছু মজার দিক আছে৷

ঘটনাটি ঘটেছিল নবিজির বিদায় হাজ্জের সময় কাবা ঘরের আশেপাশে কোথাও৷ এ-থেকে বোঝা যায়, মানুষের চরিত্রের কিছু কিছু দিক সবসময় এক৷ মানুষ যেমন মরণশীল, মানুষ যেমন ভুল করে, তেমনি নারী-পুরুষের আকর্ষণ সহজ ও স্বাভাবিক বিষয়৷ একে অস্বীকার করা বোকামি৷ কথা হচ্ছে, কীভাবে সেই আকর্ষণ আমরা বৈধভাবে সামলাব সেটা৷
নবি ﷺ তাঁর চাচাতো ভাইকে ধমকের সুরে কিছু বলেননি৷ কিংবা শাস্তিমূলক কিছু বলেননি৷ সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছেন৷ প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছেন আগামীর জন্য৷ আজ হয়তো শাস্তির ভয়ে কিংবা নবিজির সামনে মুখ ফিরিয়ে থাকল৷ কিন্তু পরে যখন তিনি থাকবেন না, তখন কী হবে? এজন্য এমন সুন্দরভাবে কথাগুলো বললেন, যেন সেটা হৃদয়ের গভীরে দাগ কাটে৷ এর রেশ যেন থাকে আজীবন৷

ফাদ্‌ল তো শুধু তাকিয়েই ছিলেন কেবল৷ কিন্তু নবিজি তাকে লজ্জাস্থান সুরক্ষিত রাখার কথা বললেন কেন? আচ্ছা, তা নাহয় বললেন, কিন্তু জবান?
প্রথম দেখাতে আসলেই ভালোবাসা হয় কি না জানি না, তবে প্রথম দেখা থেকে ভালো লাগা, ভালো লাগা থেকে কথাবার্তা, ডেটিং, এরপর অনেক কিছু হয়ে যায়৷ নবিজি এজন্য শুরুতেই গোড়া কেটে দিয়ে আকর্ষণ বাড়ার পথ রোধ করে দিলেন৷ এটা ছিল যৌনতা বিষয়ে নবিজির শিক্ষা৷

আজকাল আমরা শুনি অবৈধ এবং বিয়ে-বহির্ভূত যৌন-সম্বন্ধ থেকে যদি গর্ভে বাচ্চা না আসে, তা হলে নাকি সব ঠিক৷ আজকাল যৌনশিক্ষা মানে ইমার্জেন্সি পিল, কনডম—যার পোশাকি নাম ‘নিরাপদ দৈহিক মিলন’৷ কিন্তু নবিজির শিক্ষা ছিল আদর্শমুখী৷ এর মূলে ছিল আল্লাহর প্রতি সচেতনতা৷ দৃষ্টি সংযত করো, লজ্জাস্থান ও মুখ সুরক্ষিত রাখো, আল্লাহর ক্ষমা অর্জন করো৷

ছোটবেলা থেকে যদি আপনি বাবা-মা’র ঘরে ঢোকার আগে অনুমতি নেন, আপনি ছেলে হন কি মেয়ে—ঘরের ভেতর যদি নিজের পর্দা রক্ষা করে চলেন, সালাতের সময়ে ঠিকঠাকভাবে পোশাক পড়েন, তা হলে ঘরের বাইরে আপনার পথ চলা সহজ হবে৷

[নবি ﷺ যেভাবে সন্তান মানুষ করেছেন, হিশাম আওয়াদির Children Around The Prophet অবলম্বনে…]

 

এবার ফতুল্লায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক

এবার ফতুল্লায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আটক


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পর এবার ফতুল্লা থানার ভূঁইগড়ের মাহমুদপুর এলাকায় ১২ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাওলানা মো. আল আমিন নামে এক মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে আটক করেছে র্যাব। যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে আল আমিন জানান, তিনি আগে এমন ছিলেন না, শয়তানের প্ররোচনায় এ কাজ করেছেন। এ জন্য নিজের মৃত্যুদণ্ড কামনা করছেন।

বায়তুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আটক করা হয়। তিনি এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি ফতুল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ইমামতিও করেন। আটকের সময় তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল আজিজ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া স্কুলশিক্ষকের ধর্ষণের ঘটনাটির প্রচারিত বিভিন্ন নিউজ ও ভিডিও আমরা আমাদের ফেসবুক পেজে আপলোড করেছিলাম। স্থানীয় একজন মহিলা যখন ফেসবুকে দেখছিলেন, তখন তার তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে এটি দেখে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে যে, ‘স্কুলের ওই শিক্ষকের শাস্তি হলে আমাদের হুজুরের কেন শাস্তি হবে না? আমাদের হুজুরও তো আমাদের সাথে এমন করে। পরে শিশুটি তার মাকে বিস্তারিত জানালে শিশুটির মা র্যাব অফিসে এসে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক একাধিক ছাত্রীকে তার বাসায় পড়তে গেলে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে।

তিনি জানান, এরপর র্যাব এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে। র্যাব অনুসন্ধানে জানতে পারে ২০১৮ সাল থেকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসার ১০ থেকে ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগও পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, শিক্ষক আল আমিন মাদ্রাসার একটি কক্ষে তার পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং একটি অফিস কক্ষসহ কয়েকটি ক্লাস কক্ষে ছেলেমেয়েদের পড়াতেন। তার স্ত্রী একজন পর্দানশীন মহিলা, তিনি ভেতরের দিকে থাকতেন, সামনে তেমন একটা আসতেন না। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময় পড়তে আসা ছাত্রীদেরকে আল আমিন ডেকে তার কক্ষ ঝাড়ু দেওয়া ও বিভিন্ন কৌশলে এনে তাদেরকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করে।

র্যাব-১১ অধিনায়ক জানান, এসব ঘটনার প্রমাণ স্বরূপ আমরা তার মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার তল্লাশি করে প্রচুর পর্নোগ্রাফি ভিডিও পেয়েছি। কিছু কিছু পর্নোগ্রাফি তিনি নিজেও তৈরি করেছেন। তিনি তার কাছে পড়তে আসা কোনো ছাত্রীর ছবির মাথার অংশ পর্নোগ্রাফি ভিডিওর সাথে সংযুক্ত করে ছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
সুত্রঃ ইত্তেফাক।

 

বিয়ে ভাঙার হার বাড়ছে নারী-পুরুষ পরস্পরের সহমর্মী হতে হবে

বিয়ে ভাঙার হার বাড়ছে
নারী-পুরুষ পরস্পরের সহমর্মী হতে হবে


দাম্পত্য


বিয়ে বা সংসার ভেঙে যাওয়ার ঘটনা রাজধানীসহ সারা দেশেই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ২০০৬ সালে যেখানে প্রতি হাজারে বিচ্ছেদের হার ছিল মাত্র দশমিক ছয় জন, সেটি বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ১-এ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সাত বছরে রাজধানীতে তালাক বেড়েছে অন্তত ৩৪ শতাংশ। তালাকের আবেদনকারীদের বেশির ভাগই নারী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিয়ে ভাঙার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সামাজিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক পটপরিবর্তন, ধর্মীয় অনুশাসনে শৈথিল্য ইত্যাদি বিষয়কে চিহ্নিত করছেন। পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হয়ে যাওয়াকেও বিচ্ছেদের পেছনে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, সারা দেশে গত সাত বছরে তালাকের প্রবণতা বেড়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তালাক হয়েছে বরিশালে। প্রতি হাজারে ২ দশমিক সাত জন। সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম ও সিলেটেÑ প্রতি হাজারে শূন্য দশমিক ছয় জন। শিক্ষিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাকের ঘটনা বেশি ঘটছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনেই স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে তালাক দেয়ার আবেদন বেড়েছে। তালাকের আবেদনের প্রায় ৭০ শতাংশই স্ত্রীর পক্ষ থেকে এসেছে। গুলশান ও বনানীর অভিজাত পরিবারের শিক্ষিত ও বিত্তবান নারীরা তালাকের জন্য আবেদন করছেন বেশি। স্ত্রীর করা আবেদনের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বামীর সন্দেহবাতিক মানসিকতা, পরকীয়া, স্বামী প্রবাসে থাকা, যৌতুক, মাদকাসক্তি, ফেসবুকে আসক্তি, ব্যক্তিত্বের সঙ্ঘাত ইত্যাদি। স্বামীর পক্ষে আবেদনের ক্ষেত্রেÑ স্বামীর ইচ্ছাকে প্রাধান্য না দিয়ে স্ত্রী নিজের ইচ্ছায় চলা, তার বদমেজাজ, সংসারের প্রতি কম মনোযোগ দেয়া, ধর্ম-কর্মে উদাসীনতা, বন্ধ্যত্বসহ বিভিন্ন কারণ প্রাধান্য পেয়েছে।
জানা যায়, এখন সামাজিক ও ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতা বাড়ায় মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে তার পরিবার এগিয়ে আসছে। মেয়েরা আগে তালাকপ্রাপ্ত হলে পরিবারে আশ্রয় তো পেতেনই না, বরং তাদের হেয় করা হতো। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। নারীর পেশাগত উন্নয়ন হয়েছে, আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে এবং সামাজিক মর্যাদা বেড়েছে। সেই সাথে তারা হয়ে উঠেছেন অধিকার সচেতন। তারা আর লোকলজ্জার ভয়ে পুরুষের কর্তৃত্ব ও আধিপত্যবাদী মনোভাবের সাথে সহজে আপস করছেন না, বরং অশান্তি এড়াতে বিয়ে ভাঙার ঝুঁকি নিচ্ছেন। এতে করে ভেঙে যাওয়া সংসারের স্বামী-স্ত্রীর মানসিক শান্তি বিঘিœত হচ্ছে। একধরনের বোবাকান্না অহরহ বুকে চেপে তাদেরকে নানা ধরনের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হচ্ছে ভেঙে যাওয়া পরিবারের শিশুরা। চরম অনিশ্চয়তার বোধে আক্রান্ত এসব শিশুর মানসিক স্থিতি নষ্ট হচ্ছে। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে তাদের বেড়ে ওঠা হয়ে পড়ছে সুদূরপরাহত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল করিম বলেছেন, আমাদের দেশের স্কুলগুলোতে যদি মূল্যবোধ চর্চার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে এটা কিছুটা কমবে। দাম্পত্য বিচ্ছেদের বিষয়ে বিশিষ্ট নারী সংগঠক ও মানবাধিকার প্রবক্তা ফরিদা আখতার মনে করেন, এ রকম ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে নৈতিকতার দিকটির প্রতিও নজর দেয়া দরকার। তা ছাড়া, এ রকম ভাঙা সংসারের শিশুদের বা সিঙ্গেল প্যারেন্ট শিশুদের লালন-পালন ও শিক্ষাদীক্ষার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব পালন করা উচিত। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, যে কারণেই তালাক বা বিচ্ছেদ হোক না কেন, এর কুফল পড়ে প্রধানত সন্তানের ওপর। একটি ভাঙা সংসারের শিশুরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় না; এক রকম প্রতিকূলতার মধ্যে মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বেড়ে ওঠে। ফলে পরবর্তীকালে তাদের মধ্যে নানা জটিলতা দেখা দেয়।
আমরা বলতে চাই, এক শ্রেণীর উগ্র নারীবাদীর প্রচারণার কারণে আমাদের অনেক সাধারণ নারী-পুরুষ পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করেছেন। কিন্তু সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবার গঠন করার জন্য নারী ও পুরুষকে যুদ্ধংদেহী অবস্থানে না গিয়ে সহমর্মী, সহযোগী বা বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্যে আসতে হবে। এ ছাড়া, পারিবারিক সুখের আর কোনো বিকল্প নেই।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

শিশুদের হাঁপানি : চাই সযত্ন সতর্কতা

শিশুদের হাঁপানি : চাই সযত্ন সতর্কতা


স্বাস্থ্যসেবা


মাত্র সাত মাস বয়স রাইফার। কয়েকদিন ধরেই সর্দি লেগে আছে। প্রায় সময়ই কান্নাকাটি করছে ছোট্ট মেয়েটি। কাঁদতে কাঁদতে অনেক সময় বমিও করছে। রাতে ঘুমানোর পর নাক ঘড়ঘড় করছে। বারবার নাকে নেজাল ড্রপ দিয়ে চলেছেন রাইফার মা। এভাবেই চলছিল। কয়েকদিন পর আর থাকতে না পেরে ডাক্তারের কাছে নিতে হলো রাইফাকে। ডাক্তার শিশুটিকে দেখেই বুঝতে পারলেন, তার অবস্থা ভালো না। তিনি কয়েকটি টেস্ট আর রাতের জন্য অল্প কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। বললেন টেস্ট গুলো করানোর পর কাল যেন অবশ্যই রিপোর্ট দেখিয়ে নিয়ে যান।
পরদিন রিপোর্ট দেখেই ডাক্তারের সন্দেহ সত্যি হয়ে গেল। রাইফা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত। বেশি ঠান্ডা লাগার কারণে নিউমোনিয়াও হয়েছে। দ্রুত রাইফাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিলেন ডাক্তার।
রাইফার মতই ঠা-া লেগেছিল দুই বছর বয়সী শিশু আজাদের। কয়েকদিন পরপরই ঠা-া লেগে থাকে তার। প্রতিবারই নাকের ড্রপ আর ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয় ওকে। এভাবেই চলছিল। কিন্তু এবারের সর্দি আর কাশি কিছুতেই যেন ভালোই হচ্ছে না আজাদের। শেষ পর্যন্ত মায়ের পীড়াপীড়িতে বাবা ওকে নিয়ে যান এক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, আজাদের হাঁপানি হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের মত নয়। যার ফলে অল্পতেই তাদের বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হয়। এজন্য দরকার বাড়তি যত্ন।
তিনি বলেন, শীতকালে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এরমধ্যে শিশুরা হাঁপানি রোগে কষ্ট পায় বেশি। তাপমাত্রা কমে গেলে তা শিশুদের শ্বাসতন্ত্র সহ্য করতে পারে না। এতে তাদের সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়াও ঘুমানোর পর তাদের নিঃশ্বাস ভারি হয়ে ওঠে। এমনকি ঘড়ঘড় করে আওয়াজও হয়। শিশুদের শ্বাসনালি খুবই সংবেদনশীল। একটু ঠান্ডা লাগলেই তাদের সর্দি বা কাশি হয়ে যেতে পারে। এরপর আস্তে আস্তে তা হাঁপানিতে রূপ নেয়।
এছাড়াও বাইরের ধুলো-বালিও এই হাঁপানি রোগের আরেকটি অন্যতম কারণ। অনেক শিশুই ধুলো-বালি সহ্য করতে পারে না তাদের সংবেদনশীল শ্বাসনালির কারণে। তাই দেখা যায়, সুস্থ স্বাভাবিক বাচ্চা ধুলা-বালিতে খেলাধুলা করতে পারলেও হাঁপানি আক্রান্ত শিশুরা সেটা করতে পারে না। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পরই তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, এই হাঁপানি আবার বংশগতও হতে পারে। তবে হাঁপানি হলে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে সচেতনভাবে চলার পরামর্শ দেন তিনি। তার মতে, এলার্জি হয় এমন বিষয় যেমন ধুলো-বালি যত সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ঠা-া, সর্দি এবং কাশি হলেই সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের সামনে ধূমপান একেবারেই করা যাবে না। কারণ সিগারেটের ধোঁয়া বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদের সামনে ধূমপান করলে তা ওদের শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়।
বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন এই শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। যাতে করে কোথাও ধুলো-বালি না জমে। এছাড়াও ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শীতকালে শিশুদের জন্য লোমযুক্ত কোনো কাপড়চোপড় বিশেষ করে কম্বল ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া এলার্জিযুক্ত খাবার বিশেষ করে যেসব খাবারে শিশুর এলার্জি হয় সেসব খাবার তাকে দেয়া যাবে না। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদেরকে সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লালন পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা.রহমত উল্ল্যাহ।

সুত্রঃ বাসস।

 

ইলহান ওমরই (১ম পর্ব)

ইলহান ওমরই (১ম পর্ব)


অপরাজিতা


ইলহান ওমরই মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের প্রথম আফ্রো-আমেরিকান মুসলিম নারী সদস্য।

যিনি সব বাঁধা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে মাথায় হিজাব বেঁধে তার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ পেয়েছেন। মুসলিম নারী হিসেবে হিজাব পড়ার অধিকার সমুন্নোত রাখার জন্যও ইলহানকে অনেক প্রতিবাদি কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে।
তবে সে সব বিতর্ক বিরোধিতার গ্যারাকল ডিঙ্গিয়ে ইলহান ওমর অনেক এগিয়ে গেছেন। মিনেসোটার ডেমোক্র্যাটিক
-কৃষক-শ্রমিক-পার্টির প্রার্থী ইলহান ওমর ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে ২০১৬ সালে মিনেসোটা ফিফথ ডিস্ট্রিক্ট কনস্টিটিউয়েন্সি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন ৩৫ বছর বয়েসী কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম তরুণী ইলহান ওমর। পুরো নাম ইলহান আব্দুল্লাহি ওমর।

১৯৮১ সালে সোমালিয়ার রাজধানী মুগাদিসুতে জন্মগ্রহনকারী ইলহান ওমর নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেন। সম্ভবত ইলহান ওমরই হচ্ছে প্রথম কোনো সোমালি-আমেরিকান নাগরিক যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারার রাজনীতিতে নজিরবিহিন সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত পরিচয় উইকিপিডিয়াঃ

ইলহান ওমর
ইউনাইটেড স্টেটস রিপ্রেজেন্টেটিভ

জন্মের তারিখ এবং স্থান: ৪ অক্টোবর, ১৯৮১ (বয়স ৩৭ বছর), মোগাদিসু, সোমালিয়া
দল: ডেমোক্র্যাটিক পার্টি
স্বামীঃ আহমেদ হিরসি (বিবাহ. ২০১৮), আহমেদ নুর সাইদ এলমি (বিবাহ. ২০০৯–২০১৭)
শিক্ষা: নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি (২০১১), Edison High School
শিশু: ইসরা হিরসি
ভাইবোন: সাহরা নুর

চলবে…

 

চট্টগ্রামে ঘরের ভেতরে মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ

চট্টগ্রামে ঘরের ভেতরে মা-মেয়ের ঝুলন্ত লাশ


নারী সংবাদ


চট্টগ্রামে একটি বাসা থেকে মা ও দুই বছর বয়সী মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর মসজিদ গলির লিচু বাগান এলাকা থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করা হয়। এদের একজন লক্ষ্মী রানী সরকার (২২) এবং অন্যজন তার দুই বছর বয়সী মেয়ে অনন্যা সরকার। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। স্বামীর সাথে চট্টগ্রামে থাকতেন লক্ষ্মী রানী। লক্ষ্মী রানীর স্বামী নন্দন সরকার নগরীতে ভ্রাম্যমাণ চা ও রুটি বিক্রি করেন। পাঁচলাইশ থানার এসআই ইমাম হোসেন বলেন, নন্দন সরকার বলেছেন, সকালে চা বিক্রি করতে বের হয়েছিলেন তিনি। দুপুরে তিনি বাসায় এসে ভগ্নিপতিকে নিয়ে আবার বের হন। স্ত্রীর ফোন পেয়ে বিকেল ৪টায় বাসায় আসেন। দরজা বন্ধ দেখে বাইরে থেকে লাঠি দিয়ে হুক খুলে ঘরে ঢুকে ফ্যানের সাথে স্ত্রী ও মেয়ের লাশ ঝুলন্ত দেখেন তিনি। থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত