banner

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 104 বার পঠিত

 

শীতে রান্নাঘরের কাজ সহজ করার কয়েকটি টিপস

 

শীতের সময়টা খুব অলস লাগে কাজ করতে সবারই। এই সময়টায় আমার মতো আপনারও রান্নাঘরের কাজ করা কঠিন মনে হতে পারে। বিশেষ করে ঠান্ডা জলে হাত দিয়ে কাজ, রান্না, ঘন্টার পর ঘন্টা রান্নাঘরে থাকা, বাসনপত্র ধোয়া, পরিষ্কার করা সহজ নয়। মাঝে মাঝে মনে হয় সারাদিন কম্বল মুড়ি দিয়ে দিনটা কেটে যাক। কিন্
কাজ তো করতেই হবে, কিন্তু যদি শীতকালে যদি দ্রুত রান্নাবান্নার কাজ সেরে ফেলা যায় তাহলে মন্দ হয় না। চলুন আজ আপনাদের সাথে শীতকালে রান্নাঘরের কাজ সহজ করার টিপস শেয়ার করে নেওয়া যাক। এই ছোট্ট হ্যাকগুলো আমাদের কাজকে অনেক সহজ করে দিতে পারে এবং এগুলোর সাহায্যে আমরা শীতে আমাদের সময় বাঁচাতে পারি।

১. ঠাণ্ডা জলের হাত থেকে বাঁচাঃ
শীতের সকালে সবচেয়ে আলস্য লাগে বাসনপত্র ধুতে। ঠাণ্ডা জলে হাত দেওয়ার ভয়ে সকালে আমার মত যাদের কান্না পায়, তারা এই সহজ উপায় অবলম্বন করে দেখতে পারেন। সকালে উঠে চা ও জলখাবারের জন্য যেটুকু বাসন ধুতে লাগবে তা জল একটু গরম করে ধুয়ে নিন। বাকি বাসন একটু বেলার দিকে পরিষ্কার করুন। ততক্ষণে রোদের জন্য পাইপের জল যথেষ্ট গরম হয়ে যায়। যাতে হাত দিতে কোন অসুবিধা হয় না।

২. আলু সেদ্ধ হতে অর্ধেক সময় লাগবেঃ
আলু সেদ্ধ করার আগে কাঁটা চামচের সাহায্যে কিছু গর্ত করে নিন। এই পদক্ষেপটি আপনার কাছে ছোট মনে হতে পারে, তবে এই একটি পদক্ষেপটি আলু সেদ্ধ করার সময়কে অর্ধেক করে দেবে। আলুতে দুপাশ থেকে গর্ত করে নিন, এতে আলু ভিতর থেকে ভালোভাবে সেদ্ধ হবে এবং রান্নার গ্যাসের সাথে সাথে আলু সেদ্ধ করার সময়ও বাঁচবে।

৩. রসুন এবং পেঁয়াজ পিলিং ট্রিকঃ
শীতকালে রসুন-পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোও বড় কাজের থেকে কম মনে হয় না। শীতকালে, হাত এমনিতেই ঠান্ডা থাকে এবং একে একে খোসা ছাড়ানো একটি ঝামেলার কাজ বলে মনে হয়। এই পরিস্থিতিতে, আপনি একটি ছোট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। গরম জলে রসুন এবং পেঁয়াজ ৩-৪ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এর দুটি সুবিধা হবে, প্রথমত, এটি খুব সহজে খোসা ছাড়বে এবং দ্বিতীয়ত, এটি একটু নরম হয়ে থাকবে এবং এর কারণে রান্নার সময় অনেকটাই কমে যাবে।

৪. আগাম সবজি মসলা তৈরি করুনঃ
আপনি সহজেই সবজি মসলা আগে থেকে প্রস্তুত করতে পারেন, যা প্রতিদিন সবজি মসলা ভাজার জন্য সময় বাঁচাবে। আপনার যখনই সময় থাকবে তখনই এটি তৈরি করুন এবং তারপরে ১০-১৫ দিনের জন্য প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন।

৪-৫টি টমেটো
৪টি পেঁয়াজ
৩-৪টি কাঁচা লঙ্কা
১০-১২টি রসুনের কোয়া
১/২ ইঞ্চি আদা টুকরো (আপনার স্বাদ অনুযায়ী বাড়াতে পারেন)
বড় লাল লঙ্কা (ঐচ্ছিক)
এই সব জিনিস ভাল করে পিষে নিন প্রথমে। তারপর এতে তেল যোগ করুন। একটি প্যানে ২০-২৫ মিনিটের জন্য ভাজুন। এই মুহুর্তে আপনার মনে হতে পারে যে ২০-২৫ মিনিট অনেক, কিন্তু ১০-১২ দিনের রান্নার সময় বিবেচনা করলে তা খুব কম। মনে রাখবেন তেল বেশি লাগে কারণ অনেক দিন চালাতে হয়। ঠাণ্ডা হলে তা বয়ামে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন রান্নার আগে বের করে এর থেকে ব্যবহার করুন।

৫. দুধ ফুটাতে ব্যবহৃত পাত্র নোংরা হবে নাঃ
শীতকালে দেখা যায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হল থালা-বাসন ধোয়ার ক্ষেত্রে অলসতা। এমন অবস্থায় যদি পাত্রে ময়লা বেশি থাকে তাহলে দেখতে খুব খারাপ লাগবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুধের পাত্রের নীচে দুধের ক্রিমের মতো কিছু জমে থাকে। এটি ঘষা নিজেই একটি বড় কাজ এবং অনেক সময় এটি পরিষ্কার করা একটি ঝামেলা হয়ে দাঁড়ায়।এটি যাতে জমে না যায় সেজন্য, প্রথমে দুধের পাত্রে কিছু জল রেখে তার উপর দুধ ঢেলেফোটান। এইটুকুই আপনাকে করতে হবে আর কিছুই নয়। এতে করে দুধ গরম করার পাত্র বেশি নোংরা হবে না।

অনেক সময় এমন হয় যে দুধ গ্যাসে রাখতে ভুলে গেলে তা ফুটে যায় এবং নিচে পড়ে যায়। এটি একটি খুব ঝামেলার কাজ এবং এটি পরিষ্কার করাও খুব কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে, শুধুমাত্র একটি ছোট কৌশল দিয়ে এটি বন্ধ করা যেতে পারে যাতে আপনাকে শীতে অতিরিক্ত কাজ করতে না হয়। দুধের পাত্রের উপরে একটি হাতা রাখুন। কাঠের হাতা রাখতে পারেন বা স্টিলের। এটি আপনার দুধকে উথলে পড়ে যাওয়ার থেকে আটকাবে।

৬. কুকারে ডাল এভাবে রান্না করুনঃ
শীতকালে কুকার পরিষ্কার করা একটি কঠিন কাজ বলে মনে হতে পারে। মসুর ডাল কুকারের ঢাকনায় লেগে থাকলে আরও কঠিন হবে। এমন পরিস্থিতিতে ডাল সিদ্ধ করার সময় দুই থেকে তিন ফোঁটা উদ্ভিজ্জ তেল যোগ করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। এতে করে আপনার ডাল কুকারের ঢাকনা থেকে বের হবে না। এই পদ্ধতিটিও সহজ এবং সাথে সাথে আপনার কাজ হয়ে যাবে।

৭. দ্রুত ৫ মিনিটের ব্রেকফাস্ট রেসিপিঃ
শীতকালে সকালের নাস্তা করা খুব কঠিন। তাহলে কেন নাস্তা তৈরিতে ডিম পোচ ব্যবহার করবেন না। আপনি নিশ্চয়ই হাফ ফ্রাই ডিম বা অমলেট বানিয়েছেন অনেকবার, কিন্তু আপনি যদি মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে নিখুঁত স্টিমড ডিম চান তবে এই রেসিপিটি আপনার জন্য খুব কার্যকর হবে।

একটি মাইক্রোওয়েভ সেফ কাপ বা মাফিন ট্রেতে ১ চা চামচ জল ঢেলে তার উপর একটি ডিম ফাটিয়ে দিন। আপনি চাইলে এর উপরে লবণ ও গোলমরিচ যোগ করতে পারেন অথবা রান্নার পর যোগ করতে পারেন। এবার মাইক্রোওয়েভে ৫ মিনিট বেক করুন। মনে রাখবেন মাইক্রোওয়েভ প্রিহিটেড রাখুন এবং এর তাপমাত্রাও যেন বেশি থাকে।

৮. একবারে দুবেলার রান্না করে রাখুনঃ
শীতের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল খাবার নস্ত হয় না। আর এক দু দিনের জন্য বেশি রান্না করলে তা ফ্রিজেও রাখতে হয় না। তাই রোজ সকালে এবেলা আর ওবেলার রান্না সেরে নিন। এতে করে সময় বাঁচবে আর ঠাণ্ডায় দুবার জল ঘাটার চান্স থাকবে না বেশি। ভাত বা রুটি বাদে বাকি রান্না একবারে করে রেখে দিন। চাইলে ভাত রুটি করে রাখতে পারেন। খাওয়ার আগে সব গরম করে নিলেই ঝামেলা শেষ।

Facebook Comments