banner

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 561 বার পঠিত

 

তাওবার নিয়ামত অফুরন্ত

আল্লাহর কাছে তাওবা এক মহান ইবাদত। কুরআনের অনেক জায়গায় তাওবা সম্পর্কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একজন গোনাহগার বান্দা খাঁটি তাওবার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই আল্লাহর একান্ত আপনজনে পরিণত হন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যাভিচারের অপরাধে তাওবা-সম্পর্কিত একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-

Hadith

হজরত আবি নুজাইদ ইমরান ইবনে হোসাইন আল-খুযাঈ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা ব্যাভিচারের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি ব্যাভিচারের (জিনা) অপরাধ করেছি; আমাকে শাস্তি দিন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার অভিভাবককে ডেকে বললেন, এর সঙ্গে সদাচরণ করবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমার কাছে নিয়ে আসবে। লোকটি (অভিভাবক) তা-ই করলো।

অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে (ওই মহিলাকে) ব্যাভিচারের শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দিলেন। তার শরীরে ভালোভাবে কাপড় বেঁধে দেয়া হলো এবং নির্দেশমোতাবেক তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জানাজা নামাজও পড়ালেন।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ মেয়েটি তো ব্যাভিচার (জিনা) করেছে। তবু আপনি এর জানাজার নামাজ পড়াচ্ছেন।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ মেয়েটি এমন তাওবা করেছে যে, তা ৪০ জন মদিনাবাসীর মধ্যে বণ্টন করে দিলেও সবার জন্য পর্যাপ্ত হয়ে যেতো।

যে মেয়েটি নিজের জীবনকে মহান আল্লাহর জন্য স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিতে পারে; তার এ তাওবার চেয়ে ভালো কোনো কাজ তোমার জানা আছে কি? (মুসলিম)।

অপরাধ যতো কঠিনই হোক না কেন; বান্দা যদি আল্লাহ তাআলার দরবারে একনিষ্ঠ মনে তাওবা করে তাঁর দিকে ফিরে আসে, আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। আর তাওবার ফলে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অফুরন্ত নিয়ামত দান করেন। যা তিনি ৪০ জন মদিনাবাসীকে দিয়েও শেষ করা যাবে না বলে উল্লেখ করে তাওবার অফুরন্ত নিয়ামতের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন।

পরিশেষে…
যেহেতু মানুষ তাওবার মাধ্যমে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়; তাই তাওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেছেন।

হাদিসটি হজরত আবু মুসা আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন- ‘পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত (কিয়ামত না আসা পর্যন্ত) মহান আল্লাহ প্রতি রাতে তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করতে থাকেন; যাতে দিনের গোনাহগার লোকেরা তাওবা করে নিতে পারে। আবার তিনি দিনের বেলা তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করে থাকেন; যাতে করে রাতের গোনাহগার লোকেরা তাওবা করে নিতে পারে।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে খাঁটি তাওবা করে তাঁর পথে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের পরিপূর্ণ কল্যাণ দান করুন। আমিন।

Facebook Comments