banner

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 217 বার পঠিত

নারী ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে 'ওমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং'

image_104108অপরাজিতাবিডি ডটকম: ইঞ্জিনিয়ার হতে চাওয়া নারীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।পেশা বাছাইয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের নারীরা ডাক্তারিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কানাডা থেকে পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে তা ভালভাবে অনুভব করেন ড. সেলিয়া শাহনাজ। বাংলাদেশের নারীদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এবং আরো ভালো কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি করতে তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ওমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (ডব্লিউআইই), আইট্রিপলই বাংলাদেশ শাখা।

 

আইট্রিপলই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারদের সর্ববৃহত্ সংগঠন। বাংলাদেশে ওমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১০ সালে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ সংগঠন দেশের নারীদের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে, শিক্ষা, গবেষণা এবং কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে বেশকিছু নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ডব্লিউআইইয়ের কাজ সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ডব্লিউআইই বাংলাদেশ শাখার প্রধান ড. সেলিয়া শাহনাজ বলেন, ‘তরুণ ছাত্রীদের গবেষণার কাজে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমরা বিভিন্ন সময়ে রিসার্চ ওয়ার্কশপ করে থাকি। এতে বিভিন্ন রিসোর্স পারসন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। সব ধরনের রিসার্চ পেপার উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আরো বেশি দক্ষতা আনতে আমরা পোস্টার পেপার উপস্থাপনের ব্যবস্থা করে থাকি। কারিগরি লিখনীর ক্ষেত্রে লেটেক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বাংলাদেশে এটি বহুল প্রচলিত না হওয়ায় এ বিষয়ে ওয়ার্কশপ করে থাকি। ছাত্রী এবং তরুণ নারী প্রকৌশলীদের সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে আপডেটেড রাখতে নিয়মিত সেমিনারের আয়োজন করি। এতে আন্তর্জাতিক স্কলার পারসন সে প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। আমরা আমাদের সদস্যদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি এবং জ্ঞানের আদান-প্রদান করি। এসব যোগাযোগ সভা, সেমিনার, ইন্টারনেট, ফেসবুক, টেলিফোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হয়ে থাকে। প্রতিযোগিতা, গবেষণা এবং পেশাগত কাজে কেউ ভালো ফলাফল করলে তাকে পুরস্কার দিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্সাহ দেয়া হয়।’

 

কর্মক্ষেত্রে সদস্যদের জন্য আরো ভালো পরিবেশ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে ডব্লিউআইই। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কোনো সদস্য শিক্ষা, গবেষণা এবং কর্মক্ষেত্রে সমস্যায় পড়লে আমরা আলোচনা করে সমাধান করি। এভাবে নারী ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করতে ডব্লিউআইই কাজ করে যাচ্ছে।’

 

স্কুল এবং কলেজের ছাত্রীদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি আগ্রহী করতে নেয়া হচ্ছে ‘গো ইঞ্জিনিয়ারিং গার্ল’ কর্মসূচি। এ কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের স্কুল এবং কলেজভিত্তিক কর্মসূচি। ক্লাস ফাইভ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার গুরুত্ব বুঝানো হবে এবং এ পেশায় আসতে উত্সাহ দেয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞানমেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এভাবে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য বিশেষ করে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হতে সবাইকে আরো বেশি সচেতন করা যাবে।’ নারী ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠন ডব্লিউআইইয়ের বার্ষিক সদস্য ফি ২৫ ডলার। অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং জীবন সদস্যের জন্য কোনো ফি লাগে না।

 

বাংলাদেশে ডব্লিউআইই প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন ড. সেলিয়া শাহনাজ। এশিয়া প্যাসিফিক জোনে ডব্লিউআইইয়ের ২৫টি শাখা রয়েছে। ২০১৩ সালে এশিয়া প্যাসিফিক জোনে তিনি আইট্রিপলই রিজিয়ন— ১০ উইমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রফেশনাল ভলান্টিয়ার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ বছরের মার্চ মাসে মালয়েশিয়াকে পুরস্কার দেয়া হবে। দেশের সুষম উন্নয়নের জন্য নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ। বাংলাদেশে ডব্লিউআইইয়ের অগ্রযাত্রা আমাদের আশান্বিত করবে।

 

-প্রতিবেদক,অপরাজিতাবিডি ডটকম/২৭জানুয়ারী২০১৪

Facebook Comments