banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 15, 2025

 

“মেঘমাল্য” রূপদাতা ফারিয়া


ফাতেমা শাহরিন


ফারিয়া ইসলাম শশী-University of Liberal Arts Bangladesh থেকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় (Human Resource Management) এমবিএ শেষ করেছেন গত বছর। Summerfield International School এর সাথে যুক্ত আছেন প্রায় দুই বছর। বর্তমানে তার ব্যস্ততা নিজেরই প্রতিষ্ঠিত “মেঘমাল্য”র সাথে।

ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত ফারিয়ার মুল আকর্ষণ ছিল দেশীয় সংস্কৃতিতে লালিত গহনা , ছিমছাম হলেও তারা যেন স্বমহিমায় অনিন্দ্য সুন্দর। প্রত্যেকেই যেন নিজে থেকেই গল্প বলে। কিন্তু এমন গহনা মেলা ভার। তাই নিজের জন্য, সবার জন্য  নতুনভাবে কিছু নিয়ে আসা, হারিয়ে যাওয়া সেই হাজার বছরের সংস্কৃতিকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার অদম্য ইচ্ছা থেকেই জন্ম হল “মেঘমাল্য”র ।

ফারিয়ার ভাষ্যমতে,  “প্রায় বছরখানেক আগের কথা শুরুটা ছিল হুট করেই, মূলত চাকরির বাইরে নিজের আলাদা সত্ত্বা বানানোর জন্যই ছিল উদ্যোগটা নেওয়া। গহনা নিয়ে আমার উৎসাহের মূল কারণ ছিল আংটি- নানা ধরণের এন্টিক আংটির প্রতি ছিল আমার আকর্ষণ। সেই থেকে গহনা নিয়ে কাজ করার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠি। নিজের ছোট পুঁজি নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্পটা হয়তো সেই থেকেই শুরু। কাউকে না জানিয়েই হুট করে কিনে আনলাম বেশ কিছু গহনা। সেখান থেকেই কিভাবে জানি শুরু হয়ে গেল সবকিছু।”

তবে বর্তমানে তার লক্ষ্য “মেঘমাল্য”কে আরো সম্প্রসারিত করা। এজন্য অতি শীঘ্রই তিনি অলংকার তৈরিতে মন দিচ্ছেন। পাশাপাশি নিজস্ব আউটলেট বানানোর কাজ চলছে।

নারী হিসেবে উদ্যোক্তা হওয়াটাকে কতোটুকু চ্যালেঞ্জিং বলবেন ?

এ প্রসঙ্গে ফারিয়া বলেন , “যেকোনো নতুন কিছু তৈরিতে , স্রোতের বিপরীতে গিয়ে কোন কাজ করা কখনই মসৃণ নয়। তবে এর আনন্দ অতুলনীয়। নিজের ভালোবাসার কাজ করতে পারাটাই এর পারিশ্রমিক। তবে কখনই হাল ছাড়া যাবে না। আপনার সময় আসবেই। আসলে সবকিছুর মূলকথা হচ্ছে ইচ্ছা, পরিশ্রম এবং ভালবাসা। যেকোনো কিছুর মূলে থাকে ইচ্ছাশক্তি। সাথে অবশ্যই আপনার নিজের কাজকে ভালবাসা চাই , আর তারপর চাই এগিয়ে যাওয়ার জন্য একনিষ্ঠ একাগ্রতা ও পরিশ্রম। সফল আপনি হবেনই, সফল আপনিই হবেন। সকলের জন্য “মেঘমাল্য”র পক্ষ থেকে একরাশ শুভকামনা।

ফেসবুক লিংক:

https://m.facebook.com/meghmalya/

“মেঘমাল্য”র কিছু সামগ্রীর ছবি ১:

 

নারীর আকাশে উজ্জ্বল ‘শুকতারা’


তাসলিমা সুলতানা


ছোট থেকেই ভাবতেন ভিন্ন কিছু করার। সেই ভাবনা থেকেই বাবার অনুপ্রেরণায় এগিয়ে চলা। যার পরিচিতি এখন দেশ ছাড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। নারীরাও যে বিশ্ব দরবারে সমান তালে ব্যাট-বল হাতে ক্রিকেটবিশ্ব ‘শাসন’ করতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছেন শুকতারা। তিনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের আয়শা রহমান শুকতারা।
স্কুল জীবন থেকেই ভলিবল-হ্যান্ডবলে ছিল তার পারঙ্গমতা। স্কুলেরই এক শিক্ষিকার পরামর্শে হাতে তুলে নেন ব্যাট-বল। পরিবারকে রাজি করানোর ভারও নেন ওই শিক্ষক। তবে বাবারও স্বপ্ন ছিল, যদি বাংলাদেশে কখনো নারী ক্রিকেট দল হয়, তার মেয়ে সেখানে খেলবে। বাবার স্বপ্নের পথেই যেনো পা বাড়ালেন মেয়ে শুকতারা। শুরু হলো ক্রিকেটের পানে ছুটে চলা।
ভাগ্য এতটাই পক্ষে ছিল যে, কিছুদিনের মধ্যেই খুলনা বিভাগে নারী ক্রিকেটার হান্ট শুরু হলো। শুকতারার থেকে যেনো তার বাবাই বেশি রোমাঞ্চিত এই খবরে। ফুটবলার বাবার মেয়ে ক্রিকেটার হবেন, এই স্বপ্ন তিনি সফল হতে দেখছিলেন খোলা চোখেই। নিজেই মেয়েকে নিয়ে গেলেন বাছাই পর্বের জন্য। বাছাই পর্ব পার হয়ে গেলেন খুব সহজেই। জাতীয় দলের পথটা গেল সহজ হয়ে।
বাছাই পর্ব পার হওয়ার পর একটি ওপেন টুর্নামেন্টে অংশ নিলেন শুকতারা। এরপরই এলো জাতীয় দলে খেলার সুযোগ। ভালোবাসা থেকে যে ক্রিকেটের শুরু সেটিই হয়ে গেল শুকতারার পেশা। অন্য কিছু করার আর চিন্তাই আসেনি মাথায়। হয়ে উঠলেন পুরোদস্তুর ক্রিকেটার।
ডানহাতি ব্যাটসম্যান শুকতারা ক্রিকেট খেলাটা বেশ উপভোগ করে চলেছেন। বাংলাদেশ দলের সদস্য হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিদেশে জয় নিয়ে ঘরে ফিরছেন তিনি।
বললেন, খুলনাকে অনেকেই ক্রিকেটের আঁতুরঘর বলেন। এখানে জন্ম মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ বাংলাদেশের আরো অনেক তারকা ক্রিকেটারের। পারিবারিক উৎসাহ ও সামাজিক বাধা না থাকায় নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছি।
২০০৭ সালে জাতীয় দলের হয়ে শুরু করলেও পথ যেনো সামনে এগোচ্ছিলো না। খেলছেন ঠিকই কিন্তু বের হতে পারছিলেন না হারের বৃত্ত থেকে। নারী ক্রিকেট নিয়ে নেই তেমন কোনো আলোচনা, নেই কোনো পরিকল্পনাও। তবু দলের প্রতিটি সদস্যের মতোই হাল ছাড়েননি শুকতারাও।
তার ভাষায়, সবার মনেপ্রাণে বিশ্বাস ছিল, এক দিন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এমন কিছু করে দেখাবে যেখান থেকে শুধুই আলোই ছড়াবে, অন্ধকার আর ছুঁতে পারবে না তাদের।
আর সেই বিশ্বাস নিয়ে পথ চলার ফসল হিসেবেই যেনো পেয়েছেন এশিয়া কাপের শিরোপা, আয়ারল্যান্ড সিরিজ জয়, বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে হয়েছে সেরা দল । শুকতারা অন্তত এটাই মনে করেন, দলের প্রতিটি সদস্যের অখ- বিশ্বাস, একাগ্রতা ও পরিশ্রমই আজকের নারী দলের সাফল্যের মূলমন্ত্র।
দলের খারাপ সময়টা যেমন দেখেছেন তেমনি দেখছেন ভালো সময়টাও। নিজের জায়গা নড়বড়ে হওয়াটাও দেখেছেন। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে বাদ পড়েন দল থেকে। সে বছর জায়গা হয়নি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও। নিজেকে বুঝিয়েছেন। শক্ত থেকেছেন। পরিশ্রম করেছেন। আবারও ফিরেছেন দলে। নিজের দক্ষতা দেখিয়েছেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।
এখন পাল্টে গেছে অনেক কিছুই। দল ও ক্রিকেটারদের উন্নতির পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিন্তাধারায়ও এসেছে পরিবর্তন। বেড়েছে সুযোগ-সুবিধা। দেশের ও বিদেশে প্রিয় ক্রিকেটারের নাম জানতে চাইলে যেনো একটু দ্বন্দ্বেই পরে যান শুকতারা।
একটু ভেবে বললেন, ‘আসলে ফলো তেমন কাউকে করা হয় না তবে দেশের মধ্যে তামিম (ইকবাল) ভাইয়ের খেলা ভালো লাগে। দেশের বাইরে শচীন টেন্ডুলকার ও রিকি পন্টিং। দল হিসেবে তেমন কোনো দেশ প্রিয় নেই। আমি আসলে সব দেশের সব ধরনের ক্রিকেট দেখি। সেখান থেকেই অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করি।’
মারকুটে এই ব্যাটসম্যান দারুণ একজন ফিল্ডারও। একই সঙ্গে একজন নারী, একজন স্ত্রী। ক্রিকেটার শুকতারার স্বামীও জড়িয়ে আছেন ক্রিকেটেই। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের প্রশিক্ষক ইফতেখারুল ইসলাম। দু’জন মানুষ ক্রিকেট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত সময় কাটান যে নিজেদের দেওয়ার মতো সময়টা পান না।
তাই ভবিষ্যতে নিজেদের সময় দিতে চান শুকতারা। ক্যারিয়ার শেষে জীবনটা নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে চান এই সফল নারী।
॥ তাসলিমা সুলতানা ॥
ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : ছোট থেকেই ভাবতেন ভিন্ন কিছু করার। সেই ভাবনা থেকেই বাবার অনুপ্রেরণায় এগিয়ে চলা। যার পরিচিতি এখন দেশ ছাড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। নারীরাও যে বিশ্ব দরবারে সমান তালে ব্যাট-বল হাতে ক্রিকেটবিশ্ব ‘শাসন’ করতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছেন শুকতারা। তিনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের আয়শা রহমান শুকতারা।
স্কুল জীবন থেকেই ভলিবল-হ্যান্ডবলে ছিল তার পারঙ্গমতা। স্কুলেরই এক শিক্ষিকার পরামর্শে হাতে তুলে নেন ব্যাট-বল। পরিবারকে রাজি করানোর ভারও নেন ওই শিক্ষক। তবে বাবারও স্বপ্ন ছিল, যদি বাংলাদেশে কখনো নারী ক্রিকেট দল হয়, তার মেয়ে সেখানে খেলবে। বাবার স্বপ্নের পথেই যেনো পা বাড়ালেন মেয়ে শুকতারা। শুরু হলো ক্রিকেটের পানে ছুটে চলা।
ভাগ্য এতটাই পক্ষে ছিল যে, কিছুদিনের মধ্যেই খুলনা বিভাগে নারী ক্রিকেটার হান্ট শুরু হলো। শুকতারার থেকে যেনো তার বাবাই বেশি রোমাঞ্চিত এই খবরে। ফুটবলার বাবার মেয়ে ক্রিকেটার হবেন, এই স্বপ্ন তিনি সফল হতে দেখছিলেন খোলা চোখেই। নিজেই মেয়েকে নিয়ে গেলেন বাছাই পর্বের জন্য। বাছাই পর্ব পার হয়ে গেলেন খুব সহজেই। জাতীয় দলের পথটা গেল সহজ হয়ে।
বাছাই পর্ব পার হওয়ার পর একটি ওপেন টুর্নামেন্টে অংশ নিলেন শুকতারা। এরপরই এলো জাতীয় দলে খেলার সুযোগ। ভালোবাসা থেকে যে ক্রিকেটের শুরু সেটিই হয়ে গেল শুকতারার পেশা। অন্য কিছু করার আর চিন্তাই আসেনি মাথায়। হয়ে উঠলেন পুরোদস্তুর ক্রিকেটার।
ডানহাতি ব্যাটসম্যান শুকতারা ক্রিকেট খেলাটা বেশ উপভোগ করে চলেছেন। বাংলাদেশ দলের সদস্য হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিদেশে জয় নিয়ে ঘরে ফিরছেন তিনি।
বললেন, খুলনাকে অনেকেই ক্রিকেটের আঁতুরঘর বলেন। এখানে জন্ম মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ বাংলাদেশের আরো অনেক তারকা ক্রিকেটারের। পারিবারিক উৎসাহ ও সামাজিক বাধা না থাকায় নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছি।
২০০৭ সালে জাতীয় দলের হয়ে শুরু করলেও পথ যেনো সামনে এগোচ্ছিলো না। খেলছেন ঠিকই কিন্তু বের হতে পারছিলেন না হারের বৃত্ত থেকে। নারী ক্রিকেট নিয়ে নেই তেমন কোনো আলোচনা, নেই কোনো পরিকল্পনাও। তবু দলের প্রতিটি সদস্যের মতোই হাল ছাড়েননি শুকতারাও।
তার ভাষায়, সবার মনেপ্রাণে বিশ্বাস ছিল, এক দিন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এমন কিছু করে দেখাবে যেখান থেকে শুধুই আলোই ছড়াবে, অন্ধকার আর ছুঁতে পারবে না তাদের।
আর সেই বিশ্বাস নিয়ে পথ চলার ফসল হিসেবেই যেনো পেয়েছেন এশিয়া কাপের শিরোপা, আয়ারল্যান্ড সিরিজ জয়, বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে হয়েছে সেরা দল । শুকতারা অন্তত এটাই মনে করেন, দলের প্রতিটি সদস্যের অখ- বিশ্বাস, একাগ্রতা ও পরিশ্রমই আজকের নারী দলের সাফল্যের মূলমন্ত্র।
দলের খারাপ সময়টা যেমন দেখেছেন তেমনি দেখছেন ভালো সময়টাও। নিজের জায়গা নড়বড়ে হওয়াটাও দেখেছেন। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে বাদ পড়েন দল থেকে। সে বছর জায়গা হয়নি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও। নিজেকে বুঝিয়েছেন। শক্ত থেকেছেন। পরিশ্রম করেছেন। আবারও ফিরেছেন দলে। নিজের দক্ষতা দেখিয়েছেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।
এখন পাল্টে গেছে অনেক কিছুই। দল ও ক্রিকেটারদের উন্নতির পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিন্তাধারায়ও এসেছে পরিবর্তন। বেড়েছে সুযোগ-সুবিধা। দেশের ও বিদেশে প্রিয় ক্রিকেটারের নাম জানতে চাইলে যেনো একটু দ্বন্দ্বেই পরে যান শুকতারা।
একটু ভেবে বললেন, ‘আসলে ফলো তেমন কাউকে করা হয় না তবে দেশের মধ্যে তামিম (ইকবাল) ভাইয়ের খেলা ভালো লাগে। দেশের বাইরে শচীন টেন্ডুলকার ও রিকি পন্টিং। দল হিসেবে তেমন কোনো দেশ প্রিয় নেই। আমি আসলে সব দেশের সব ধরনের ক্রিকেট দেখি। সেখান থেকেই অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করি।’
মারকুটে এই ব্যাটসম্যান দারুণ একজন ফিল্ডারও। একই সঙ্গে একজন নারী, একজন স্ত্রী। ক্রিকেটার শুকতারার স্বামীও জড়িয়ে আছেন ক্রিকেটেই। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের প্রশিক্ষক ইফতেখারুল ইসলাম। দু’জন মানুষ ক্রিকেট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত সময় কাটান যে নিজেদের দেওয়ার মতো সময়টা পান না।
তাই ভবিষ্যতে নিজেদের সময় দিতে চান শুকতারা। ক্যারিয়ার শেষে জীবনটা নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে চান এই সফল নারী। সূত্র: বাসস।