banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 13, 2025

 

আব্বার ঈদ

মনির মোহাম্মদ


আমার পিতা শিক্ষক মানুষ। একজন আদর্শ শিক্ষক বলতে আমরা যা বুঝি উনি ঠিক তাই। সুযোগ পেলেই সন্তানদের বই কিনে দিতেন। আর কিছুদিন পর পর বলতেন ঐ গল্পের সেই কথাটা মনে আছে। আমরা মনে না থাকলেও বলতাম হ্যা হ্যা হ্যা মনে আছে। আব্বা সব সময় বলেন শুধু পড়লে হবে না, বুঝে পড়তে হবে। তবেই দেশ আলোকিত হবে। মুখস্ততো ময়না পাখিও করে।
আমরা ভাই বোনরা বই পড়া শিখেছি পিতার কাছ থেকে। আমার পিতা একজন বোদ্ধা পাঠক। আমার প্রথম গল্পের বই নীলাদ্রির সবচেয়ে বড় সমালোচক আব্বা । আব্বা নাকি আমার বই পড়ে মুগ্ধ হয়েছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর নেই আমার জীবনে। এবার আসুন মূল গল্পে যাই।
প্রতি ঈদেই আব্বাকে কিছু দিলে কেন জানি তার সাইজ মিলেনা, সাইজ মিললে আম্মা বোনদের কাররই পছন্দ্র হয়না। অবশেষে ঈদের শপিং এর দায়িত্ব নিল আম্মা আর আমার বোনরা এবং আমারটা সহ, আমি এখন চিন্তা মুক্ত সাইজ আর পছন্দ্র নিয়ে ঝামেলা নেই ,আমি আমার শব্দ খুঁজায় ব্যাস্থ থাকতে পারি।
গতকাল রাত্রে একটা মেসেজ দিল আব্বা আমার মোবাইলে, তখন প্রায় দু’টো বাজে। মেসেজে একটা লিস্ট। লিস্ট দেখে আমি অবাক, একটা বিরাট বইয়ের লিস্ট। এত বই একদিনে কোথায় পাব? তার উপর কিছু উপহার এর বইও আছে। হাতে সময়ও কম। বিকালেই ছুটলাম বই এর খুঁজে। অবশেষে সারা ঢাকা শহর তন্নতন্ন করে খুঁজে অবশেষে সবগুলো বই কিনে আব্বাকে মেসেঞ্জারে ছবি পাঠালাম। আব্বা খুশি এবং বিরাট খুশি! এবার ঈদ কাটবে আমাদের বাপ-বেটার বই পড়ে ইনশাআল্লাহ্‌!
সবাই ভাল থাকবেন,
ধন্যবাদ,

ম নি র মো হা ম্ম দ
তরুন কথা সাহিত্যিক।

 

“আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়”

দিবা রুমি


★ সকালে উঠেই মনে পড়ে গেল চিরচেনা এবং ভীষণ প্রিয় এ গানটার কথা। কেন মনে পড়লো? হঠাৎ নিউজ পেলাম আজ বাবা দিবস, সেজন্যই কি গানটা মনে পড়লো? কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দিনেই শুধু বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে হবে কেন? যিনি জন্মদাতা তার প্রতি ভালোবাসা যদি প্রদর্শন করতেই হয় তাতো প্রতিটা ক্ষণ প্রতিটা দিন করতে হবে।

★ এই যে এতো বড় হলাম কার আদর্শে, ভালোবাসায়, সহযোগীতায়, আত্মবলিদানে? অবশ্যই বাবা- মা এর যৌথ উদ্যোগ আর রব্বুল আলামিন এর অপার করুণায়।

এবার লেখার একটু ভিতরে ঢুকি

★ আদর্শ সন্তান গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন বাবা-মা উভয়ের যৌথ উদ্যোগ।

★ কিন্তু “আদর্শ কি” এই বিষয় সম্পর্কিত জ্ঞান যদি বাবা- মা এর না থাকে বা জানার আগ্রহ না থাকে বরং নিজের চিন্তাধারা ও কর্মপন্থাকে সঠিক বলে বিবেচনা করে তাহলে সেই সন্তান কখনোই আদর্শবান হবেনা।

★ খুব কম ক্ষেত্রেই আছে যারা মায়ের ছায়াতলে থাকলেও গড়ে ওঠে বাবার আদর্শ নিয়ে। তবে বেশির ভাগ সন্তানই মাকে অনুসরণ করতে পছন্দ করে। মায়ের আচরন যেমন হবে সন্তান তেমনটাই শিখবে। তেমনি বাবার আচরনেরও প্রতিফলন ঘটবে সন্তানের আচরনে। তাই সন্তানের মন্দ আচরনের জন্য সন্তানকে দায়ী করা যায়না।

যেহেতু বাবা দিবসে লেখতে বসলাম তাই বাবাকেই একটু হাইলাইট করি

★ আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনের জ্যামঘটিত টানা হেঁচড়ায় বাবা মানুষটা কতটুকু সময়ইবা পায় সন্তানকে সময় দেবার? যেহেতু অধিকাংশ পরিবারই চলে বাবার উপার্জনে। আর এই সময় না দেয়ার কারনে সন্তানের মূল্যবোধ সঠিকভাবে গড়ে উঠে না।

★ একটা মজার ঘটনা না বলে পারছিনা। এক ব্যাক্তি তার কলিগকে জিজ্ঞেস করলেন-
৩ বছরতো হয়ে গেলো আপনার বাচ্চা কত বড় হলো?
– তিনি দু’হাত দু’দিকে প্রসারিত করে বললেন ‘এইটুকু।’
– তিন বছর আগেওতো এটুকুই দেখালেন।
– কি ভাবে বলব? আমি যখন বাসায় যাই তখন বাবু ঘুমায়, আবার যখন অফিসে আসি তখনো বাবু ঘুমায়।

★ এই হচ্ছে আমাদের বাবাদের দায়িত্ব! হাজার কষ্ট হলেও বাবাদের উচিত বাবা হওয়ার চেষ্টা করা, প্রয়োজনে বাবা হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ কারণ শুধু জন্মদান এ অংশগ্রহনই সমাপ্তি নয়। তেমনি- যে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত সেই মায়েরও আদর্শ মা হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, যেহেতু মায়ের ভূমিকাই মুখ্য।

(আমার এই পোস্ট এর কথাগুলো পারিপার্শ্বিক সমাজ জীবন থেকে নেয়া কিছু যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতির সামান্য বহিঃপ্রকাশ মাত্র।)

★ আজ মহান বাবা দিবস; আমার নিজের বাবা এবং সব বাবাদের প্রতি রইলো অকৃত্রিম ভালোবাসা।