banner

সোমবার, ০৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

অন্যের সুখে অসুখী!

আগে প্রচুর ফেসবুকিং করতাম। ইদানীং কমিয়ে দিয়েছি। সেটা অন্য কারও ওপর রাগ করে নয়, নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে। বিরক্তির কারণ হলো, আমি লক্ষ করলাম যে সামাজিক মাধ্যমে এসে আমার ভেতর নানা ধরনের অসামাজিক চিন্তাভাবনার জন্ম হচ্ছে। তার মধ্যে একটা হলো অন্যের সুখ দেখে হিংসা করা। দেখলাম নিউজ ফিডে কেউ যদি নিজের ব্যাপারে ভালো কিছু বলে বা নিজের জীবন নিয়ে ভালো কিছু শেয়ার করে, তাহলে তাদের জন্য খুশি না হয়ে আমার তাদের প্রতি হিংসা হচ্ছে। নিজের ব্যাপারে এটা ভালো লাগল না। ভাবলাম থাক, তাহলে আমি কয়েক দিন সামাজিক মাধ্যমে চলাফেরা কমিয়ে দিই।
দেশ থেকে শুরু করে বিদেশে থাকা আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবের খবর আমরা পাই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টুইটার থেকে। কী খেলাম, কেমন আছি, কী পরব অথবা পড়ব, কোথায় যাচ্ছি, কোথায় যেতে ইচ্ছা করছে—সব জানাই ফেসবুকের মাধ্যমে। কেনাকাটা করি ফেসবুকে, সামাজিক দায়িত্ব পালন করি ফেসবুকে, এমনকি রক্তের প্রয়োজনে আশ্রয় নিই সামাজিক মাধ্যমের। ক্রমেই আমাদের একটা বড় জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক মাধ্যম আর শুধু বিনোদনের জায়গা নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং বিশেষ করে, ফেসবুক অনেকের জন্যই একধরনের সমান্তরাল জগতে পরিণত হয়েছে।
এখন ফেসবুক বা সামাজিক মাধ্যমে আচরণ এবং অনুভূতির সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের আচরণ ও অনুভূতি আলাদা করে দেখার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না। সাধারণ জীবনে যদি ঈর্ষাবোধ বেড়ে যায়, তাহলে আমরা স্বভাবতই চিন্তিত হয়ে পড়ব। চেষ্টা করব কীভাবে নিজের ভেতর থেকে এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করা যায়। তাহলে ফেসবুক ভিন্ন হবে কেন?
আমি চিন্তা করে দেখলাম, যেকোনো দাওয়াত বা যেকোনো জায়গায় গিয়ে যদি আমার আশপাশের মানুষের সুখ সহ্য না হয়, তাহলে আমি কী করব। প্রথমে হয়তো সেসব জায়গায় যাওয়া কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখব। এ জন্যই আপাতত আমার ফেসবুকে যাওয়া-আসা কম। তবে এটা কোনো ধরনের স্থায়ী সমাধান নয়। কেন আমার ভেতরে নেতিবাচক চিন্তা বা অনুভূতি হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে এবং সেই চিন্তা বা অনুভূতিগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে।
অন্যদের সুখে কেন খুশি হতে পারছি না? অনেক চিন্তা করে দেখলাম, এর কারণ হয়তো-বা আমি আমার নিজের জীবন নিয়েই অসন্তুষ্ট। এই অসন্তুষ্টির সমাধান কী? সমাধান অনেক স্তরের। প্রথমত, চিন্তা কম করে যেসব কাজ করে মন আর শরীর ভালো লাগে, সেগুলো করা। আমার জন্য এ ধরনের কাজ মানে দৌড়ানো, অর্থাৎ ব্যায়াম করা আর ছবি তোলা। দৌড়ানো শুরু করলাম নতুন উদ্যমে। সিদ্ধান্ত নিলাম, যা-ই হোক না কেন সপ্তাহে অন্তত দুই দিন আমি ছবি তুলব।
আরেকটা জিনিস, যেটা করলে আমার মন আর শরীর হালকা হয়, সেটা হলো ঘুরে বেড়ানো। ব্যস্ত জীবন আমার। সব সময় বড় ছুটি নেওয়ার সুযোগ হয় না। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে রাগ আর হিংসা পুষে রাখা ঠিক হবে না। ঠিক করলাম আর কোথাও না যেতে পারলে চিড়িয়াখানায় যাব। নিজের মতো আরও কয়েকটা বানর দেখব। ছবি তোলা, দৌড়ানো, ঘর থেকে বেরিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করা খুব জটিল কোনো কাজ নয়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে লক্ষ করলাম, এই সহজ জিনিসগুলো কাজে দিচ্ছে। মন ভালো লাগছে। অন্যদের সুখও আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। তবে এখানেই শেষ নয়।
ভেবে বের করলাম যে অসন্তুষ্টির আরেকটা কারণ হলো, নিজের যা আছে সেটার ব্যাপারে আমি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নই। অনেক সময় আমরা আমাদের জীবনের খারাপ দিকগুলো নিয়ে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ি। তখন নিজের জীবন দুর্বিষহ মনে হয়। অন্যদের সুখ দেখলে বিরক্ত লাগে। এই ফাঁদ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা সহজ উপায়, প্রতিদিন অনুশীলনে নিজের জীবনে ভালো জিনিসগুলো নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবা এবং ভালোর জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া। তখন নিজের অস্তিত্বের প্রতি মমতা বাড়ে। অন্যদের সুখের প্রতি সহানুভূতি আসে।
সামান্য ফেসবুকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়া নিয়ে এত চিন্তা কেন? কারণ আগে যেটা বললাম। ফেসবুকের অনুভূতি আর সাধারণ জীবনের অনুভূতি পৃথক করার কিছু নেই। নেতিবাচক চিন্তা যেখানেই আসুক, দূর করতে হবে। এবং দূর করা সম্ভব।
লেখক: অভিনেতা

 

বিষণ্নতা দূর করবেন যেভাবে

জীবনে চলতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা পার হতে হয় আমাদের। কখনো নিজের অজান্তেই হয় মন খারাপ। ভর করে বিষণ্নতা। আর এই বিষণ্নতা অল্প সময়ের জন্য হতেই পারে। কিন্তু সমস্য বাঁধে তখনই, যখন বিষণ্নতা দীর্ঘ সময়ের জন্য আসে। তবে বিষণ্নতায় ডুবে থাকা কোনো কাজের কথা নয়। বিষণ্নতা দূর করার জন্য সচেষ্ট হতে হবে আপনাকেই।

মন খারাপ হলে ভালো কোন স্যালোনে গিয়ে নিজের রেগুলার লুকটাকে কিছুটা পরিবর্তন করুন, হতে পারে সেটি হেয়ার কাট, হেয়ার কালার অথবা সেগুলো না চাইলে একটি ভালো ফেশিয়াল বা স্পা! অথবা চাইলে পরিবর্তন করতে পারেন পোশাকও। উজ্জ্বল রঙকে প্রাধান্য দিন, পছন্দের পোশাকটিকেও।

নিজে নিজেই কিছু তৈরি করুন, প্রিয়জনের জন্য কার্ড, ঘর সাজানোর জিনিস, পোস্টার, অরিগ্যামি করুন। দেখবেন কষ্ট অনেক কম লাগবে। কাছের মানুষগুলোকে বাইরে থেকে কিনে না দিয়ে নিজেই কিছু বানিয়ে দিন। যাকে দেবেন তিনিও প্রচুর খুশি হবেন,আপনার বিষণ্নতাও দূর হবে।

মন খারাপ হলে বৈরী কোনো পরিবেশে ঘুরতে যান, রোমাঞ্চকর কিছু করুন। দেখবেন যখন আপনি মজার কিছু নিয়ে উত্তেজিত থাকবেন, মন ভালো হয়ে যাবে।

মন খারাপের সময়টাতে নিজে ভিন্ন কিছু রান্না করুন অথবা চলে যান অপরিচিত কোনো খাবারের দোকানে, তাদের স্পেশাল বা আপনার জন্য নতুন এমন কোন একটি আইটেম ট্রাই করে দেখুন। দেখবেন ভালো খাবার আপনাকে অনেকখানি প্রশান্তি দিচ্ছে।

দূরে কোথাও যাওয়ার সময় অথবা সুযোগ না থাকলে কোনো পার্কেই না হয় কাটিয়ে আসুন সময়। রোলার কোস্টার রাইড খারাপ লাগবে না কোনভাবেই।

ছবি তুলুন বা আঁকুন, এমন না যে আপনাকে খুব সুন্দর পারতেই হবে, কিন্তু সুন্দর করার চেষ্টা করতে থাকুন, বিষণ্নতা কমবে।

 

এই গরমে হালকা সাজ

গরমের এই সময়ে সাজ নিয়ে সবাইকেই বেশ ঝামেলায় পরতে হয়। কোন সাজে আপনাকে সতেজ লাগবে আর আপনার ত্বকের সাথে মানিয়ে যাবে তা ভাবতে ভাবতেই পার্টিতে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। আর সাজের ক্ষেত্রে তা মন মতো না হলে আর তাতে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে না পারলে সারাটা দিনই খারাপ কাটে। এই গরমে সাজ ঠিক রাখতে আর নিজেকে সতেজ দেখাতেই অনেকটা সময় চলে যায়। কিন্তু ছোট ছোট কিছু বিষয় খেয়াল করলে এই গরমেও আপনার সাজ থাকবে পরিপাটি।
হালকা মেকআপ
গরমে সময় সাজের দিকে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মুখের মেকাপ। ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা ঠিক রেখে সাঁজের সব দিক ঠিক রাখা বেশ কঠিন। গরমের সময় যখনি মুখে মেখাপ লাগাতে যাবেন তার আগে মুখ ফেস ওয়াস দিয়ে দ্গুয়ে নিন। এর পরে  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপরই বিবি ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। এতে মেকাপ করলে মুখে তা খুব সহজে বসবে এবং উঠে যাবে না। আর ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ত্বকে যেন ভালোভাবে ব্লেন্ড হয় সেদিকেও লক্ষ রাখুন। এতে আপনাকে সারাদিন বেশ সতেজ আর প্রাণবন্ত লাগবে

ব্লাশন
গরমে ব্লাশন লাগাতে একটু ভুল হলে তা সাঁজের পরো বিষয়টিই নষ্ট করে দেয়। তাই এই গরমে ক্রিম বেইজ ব্লাশন বেছে নেওয়া উচিত এটি  দীর্ঘস্থায়ী হয়। আর এই আবহাওয়ায় উজ্জ্বল রং এড়িয়ে হালকা ব্লাশন বেছে নেওয়াই ভালো। যার মধ্যে আপনি বেঁছে নিতে পারেন অ্যাপ্রিকোট বা কোরাল, হালকা গোলাপি ইত্যাদি রংগুলো। বাড়তি উজ্জ্বলতা যুক্ত করতে ব্লাশনের উপর হালকা করে ব্রোঞ্জার বুলিয়ে নিতে পারেন।

চোখের সাজ
গরমে চোখে সাঁজের সাঁজের ক্ষেত্রে চকচকে শ্যাডো এড়িয়ে  চলুন। হালকা রংয়ের শ্যাডো দিয়ে পাপড়ি ঘেষে লাইনার টেনে নিন। চাইলে রঙিন লাইনারও ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের নিচে দিতে পারেন কাজল, এরপর হালকা করে স্মাজ করে নিন। উপরের ও নিচের পাপড়িতে ঘন করে মাস্কারা লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে তা ওয়াটার প্রুভ হলে সবচেয়ে ভালো হয় গরমের এই সময়ের সাঁজের ক্ষেত্রে।

লিপস্টিক
গরমের এই সময়ে হালকা রঙের আর ম্যাট লিপস্টিক আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হবে। মেজেন্টা, লাল, চড়া গোলাপি কিংবা বেগুনি রঙের ম্যাট লিপস্টিকেও আপনাকে দারুণ মানাবে আর সতেজ দেখাবে।

 

আম দিয়েই তৈরি করুন মজাদার ক্ষীর

আসছে আমের মৌসুম। বাজারে এখনই উঠতে শুরু করেছে পাকা আম। আম দিয়ে তৈরি করা যায় নানা উপাদেয় খাবার। দুধ দিয়ে ক্ষীর রান্না তো অহরহই করে থাকেন। এবার নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে যাক। আম দিয়েই তৈরি করে ফেলুন সুস্বাদু ক্ষীর। কীভাবে? রইলো রেসিপি-

উপকরণ :
দুধ ২ কেজি, পোলাও চাল / বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে), এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা কয়েকটা, আম এর পিউরি/টিন ম্যাঙ্গো পাল্প ১ টিন, ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি.।

প্রণালি :
হাড়িতে দুধ দিয়ে সাথে পোলাও চাল/বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে) এলাচ দারুচিনি তেজপাতা কয়েকটা মিশিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। আস্তে আস্তে ঘন হতে থাকবে। খেয়াল রাখবেন যেন নিচে না লাগে। ঘন হলে নামিয়ে নিন। এবার আমের পাল্পটা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে ক্ষীরের সাথে মিশিয়ে নিন। (সরাসরি চুলায় আমের মিশ্রণটা দিলে দুধ ফেটে যাবার সম্ভবনা থাকে তাই ক্ষীর ঠান্ডা হবার পর আমের মিশ্রণটা মেশাবেন) সাথে ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি. মিশিয়ে নিন। ক্ষীর এর উপর কিছুটা পাল্প সাজানোর জন্য দিতে পারেন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

 

স্বপ্ন দেখে ভয় পেলে যে দোয়া পড়বেন

মানুষ কর্ম ব্যস্ত জীবনে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রামে যায়। অনেক সময় ঘুমের ঘোরে দিনের ব্যস্ত সময়ের ভালো-মন্দ বিষয়গুলোর একটা প্রভাব তার মাঝে রয়ে যায়। মানুষ স্বপ্নে তা দেখে। অনেকে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে থাকে।

আবার আল্লাহ তাআলা মানুষকে সতর্কতামূলক অনেক বিষয় স্বপ্নের মাধ্যমে অবহিত করে থাকেন। এ স্বপ্নের মাঝে থাকে ভালো ও মন্দের অনেক ইঙ্গিত। ঘুমের মধ্যে মন্দ বা বিপদাপদের স্বপ্ন দেখে মানুষ অনেক সময় অস্থির হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকতে আল্লাহর নিকট দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আমর ইবনে শোয়াইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, তখন যেন সে বলে-

আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজ্বাবিহি ওয়া ইক্বাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ শায়াত্বিনি ওয়া আঁই ইয়াহদুরুন। (আবু দাউদ, তিরিমজি, মিশকাত)

অর্থ : আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্য সমূহের মাধ্যমে তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের অপকারিতা হতে, শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে এবং তাদের উপস্থিতি হতে।

সুতরাং ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে উক্ত দোয়া পড়া এবং স্বপ্নের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে আল্লাহ তাআলা নিকট প্রার্থনা করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঘুমে মধ্যে ভয় পেলে বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে এ দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্বামী-স্ত্রীর কল্যাণে কুরআনে জাহেলি রীতির অপসারণ

সুখ ও দুঃখের সমন্বয়ে গঠিত হয় দাম্পত্য জীবন। সব সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকবে; এটা অনেক কঠিন ব্যাপার। আবার বিভিন্ন সময় বহুবিধ কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কিন্তু আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াকে পছন্দ করেন না। তাই আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে কসমের সময় সীমা নির্ধারণ করে তাদের উভয়ের জন্য কল্যাণকর বিধান নাজিল করেছেন। যাকে ফিকহি ভাষায় ঈলা বলা হয়।

জাহেলি যুগে সময় নির্ধারণ করে আলাদা থাকার শপথ তথা ‘ঈলা’ ছিল স্ত্রীদের জন্য জঘন্য তালাক এবং অত্যাচার। আল্লাহ তাআলা এ আয়াতদ্বয়ে যার অবসান করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ

সুরা বাকারার ২২৬  নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক অটুট রাখার পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। আবার ২২৭ নং আয়াতে সম্পর্ক না রাখলে তালাকের বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ তাআলার পছন্দনীয় নয়।

ঈলা
স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস না করার জন্যে যে কসম করা হয় তাকে ঈলা বলা হয়। তবে ঈলার জন্য এ কসম হতে হবে চার মাস। এ কসম বা ঈলার দু’টি পর্যায় রয়েছে-
>> চার মাসের কম সময়ের জন্য কসম করা। যদি চার মাসের কম সময়ের জন্য কসম করে, তবে সে সময় পর্যন্ত স্ত্রী ধৈর্য ধরবে। উল্লেখিত সময় শেষ হওয়ার পর স্ত্রী তার স্বামীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য দাবি করতে পারবে।
>> চার মাসের অধিক সময় নির্ধারিত করে কসম করা। যদি চার মাসের অধিক সময়ের জন্য কসম করে থাকে তবে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্ত্রী তার স্বামীর কাছে এ দাবি করার অধিকার পাবে যে, হয় সে তার সঙ্গে মিলিত হবে; নয়তো তাকে তালাক দিবে। এ সময় বিচারক স্বামীকে যে কোনো একটি গ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারবেন। যাতে স্ত্রী জীবন-যাপনে ক্ষতি গ্রস্ত না হয়।

কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করবে না বলে শপথ করে তবে তার জন্য আল্লাহ তাআলা চার মাস অবসর মঞ্জুর করেছেন। যদি এ সময়ের মধ্যে স্বামী তার স্ত্রীর নিকট গমন করে তবে তার বিবাহ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু তাকে শপথ ভঙ্গ করে স্ত্রীর নিকট যাওয়ার কারণে কাফফারা আদায় করতে হবে।

পক্ষান্তরে যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এ চার মাসের মধ্যে মিলন না ঘটে এবং চার মাস অতিবাহিত হয় তবে তাদের বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে,
ঈলা হলো জাহেলি যুগের তালাক এবং অত্যাচার। যখন স্ত্রীর সঙ্গে কারো ভালবাসা থাকতো না এবং ওই সময় স্বামী চাইতো না যে, তার স্ত্রী তার সঙ্গে সংসার করুক আবার অন্য কেউ যেন তাকে বিবাহ না করে। তখন ওই সব লোক তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে এ ধরনের কসম করে বসতো।

ফলে স্ত্রীলোকটি স্বামীও পেত না এবং তালাক প্রাপ্তও হতো না। স্বামীবিহীন তার জীবন এভাবেই অতিবাহিত হতো।

ইসলামের প্রথমিক যুগেও এ নিয়মকে অনুসর করা হতো। অতঃপর ইসলাম এমন অবস্থায় সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে।

আলোচ্য আয়াত দুটি দ্বারা ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে আলাদা থাকার শপথের সময় নির্ধারনের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

যদি স্বামী-স্ত্রী চার মাস অতিবাহিত হওয়ার আগে মিলিত হয়; তবে তারা কাফফার দিবে এবং সংসার করবে। কারণ স্ত্রী সহবাস না করার কসম ভঙ্গের বিষয়ে কাফফার বিধান প্রবর্তন করেছেন। আল্লাহ আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদর কল্যাণে ক্ষমাশীল এবং দয়ালু।

আর যদি চার মাস কসম পূর্ণ করে। তবে জাহেলি যুগের রীতি অনুযায়ী স্ত্রীর জন্য সময় ক্ষেপন করতে হবে না। বরং সে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এতে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করার কোনো কারণ থাকবে না।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২২৫ নং আয়াত

পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনে ঘোষিত বিধান অনুযায়ী দাম্পত্য জীবনে শপথের বিধানগুলো যথাযথ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

নকশিকাঁথা নিয়ে স্পেনে সোনা রানী

দুমুখাডাঙ্গী গ্রামের একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল আটজন গৃহবধূ ঘরের মেঝেতে নকশিকাঁথা তৈরি করছেন। তাঁদের একজন সোনা রানী রায়। তাঁর হস্তশিল্প স্পেনে আন্তর্জাতিক হস্তশিল্প মেলায় ‘সেরা’ তালিকায় স্থান পেয়েছে। সোনা রানীর ‘হোয়াইট অন হোয়াইট ময়ূর’ নামে নকশিকাঁথাটি স্পেনের লোয়েভে ক্রাফট প্রাইজের জন্য মনোনীত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত লোয়েভে ফাউন্ডেশন–এর আয়োজক। তবে সোনা রানীর সহজ কথা—অত কিছু জানেন না তিনি। শুধু জানেন বড় পুরস্কারের জন্য নাম উঠেছে। ‘সবকিছু মিশায়েল ভাই জানেন।’

কেয়ারের রংপুর কার্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোডাকশন ম্যানেজার হোসনে মোবারক বলেন, মিশায়েল আজিজ আহমাদ কেয়ারের সামাজিক ব্যবসায় উদ্যোগ লিভিং ব্লুর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তাঁর সঙ্গে এর আগে সোনা রানী যুক্তরাষ্ট্রে সান্তাফে আন্তর্জাতিক ফোক আর্ট মার্কেট মেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
বিদেশি ক্রেতারা তাঁদের কাজ অনেক পছন্দ করেন। চাহিদাও দেখেছেন। এর জন্য সোনা রানী কেয়ারকে ধন্যবাদ দেন। কারণ, আগেও নকশিকাঁথা সেলাই করতেন। এ ধরনের নিখুঁত সেলাই করতেন না। মিশায়েল আজিজ ও তাঁর দলের কর্মীরা তাঁকে আরও দক্ষ করে তুলেছেন। সোনা রানী বলেন, ‘২০০৬ সালে কেয়ার বাংলাদেশের দুজন কর্মকর্তা প্রথম তাঁদের দুটি নকশিকাঁথা তৈরি করতে বলেন। ওই কর্মকর্তারাই নকশা দেন। আমি, তাপসী ও বিউটি রানী মিলে ওই দুটি কাঁথা তৈরি করে দিয়েছিলাম। আমাকে যা সম্মাননা দেওয়া হয়ে থাকে, সেই কৃতিত্ব আমার একার নয়। দলের সব সদস্যদের।’

নকশিকাঁথার নকশার মধ্যে আছে গ্রামে চারচালা ঘরের আদলে চৌয়ারি ঘর, ময়ূরের পাখা ইত্যাদি। চারটা করে বল পাশাপাশি এঁকে যে কাঁথা, তার নাম দেওয়া হয়েছে বল প্রিন্ট। ফুলের পাতার শিরার সমন্বয়ে আটটি অংশ নিয়ে তৈরি আটটি পাতা, পুঁটি মাছের ঝাঁক, মৌমাছির চাক ইত্যাদি নকশায় গৃহবধূরা কাঁথা তৈরি করছেন।

নকশিকাঁথা তৈরির সব উপকরণ, নকশা ও কাজ এনে দেয় কোম্পানি। সোনা রানী রায় কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেই কাজ ভাগ করে দেন সমিতির সদস্যদের মধে্য। কাজ শেষে পণ্য চলে যায় কোম্পানির অফিসে। বিক্রি হওয়ার পর কাঁথা তৈরির মজুরি দেওয়া হয়।

কী রকম মজুরি পান? জানতে চাইলে সূচিশিল্পীরা বলেন, ছয় ফুট প্রস্থ আর সাত ফুট দৈর্ঘ্যের একটা কাঁথা তৈরি করতে একজনের ২৫ দিন সময় লাগে। মজুরি পাওয়া যায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। ছোট-বড় একেক আকারের পণ্যের একেক রকম মজুরি দেওয়া হয়।

হোসনে মোবারক বলেন, ‘গ্রামীণ নারীদের জীবনমান উন্নয়ন ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে কেয়ার বাংলাদেশ এই উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে বিশ্ব পরিসরে তাঁদের কাজ তুলে ধরতে পারি আমরা।’

তাই তো আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই স্বীকৃতি পাচ্ছে সোনা রানী রায়দের কাজ।

 

কঠিনেরে করেছি সহজ

নিজের মেয়েকে কথাগুলো বলেছিলেন মো. আবদুল মালেক। কিন্তু মেয়ে মালিহা মালেক কাদির কঠিন কাজটাই করতে চান। নিতে চান চ্যালেঞ্জ। একেবারে ‘ব্র্যান্ড নিউ চ্যালেঞ্জ’। কাজ যতই কঠিন হোক, মালিহা তা করতে চান সহজ করেই। অন্যদের জন্য কাজগুলোকে সহজ করে দিতে চান। তাই তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘সহজ ডটকম’। নাগরিক জীবনে সহজ ডটকম বেশ পরিচিতও বটে। সহজ ডটকম বাস ও লঞ্চের টিকিট বিক্রি করে। তথ্যপ্রযুক্তির ভাষায় এটি ই-কমার্স উদ্যোগ।

‘শাড়ি, গয়না ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করেও ই-কমার্স শুরু করতে পারতাম। কিন্তু চেয়েছি নতুন ও চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে।’ মালিহার সঙ্গে কথা হচ্ছিল গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে সহজ ডটকমের অফিসে বসে। মালিহা মালেক কাদির সহজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সহজ ডটকম প্রতিষ্ঠার আগে আন্তর্জাতিক বেশ কটি প্রযুক্তি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে মালিহার।

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ঘোষিত ১০০ জন ইয়াং গ্লোবাল লিডারের (ওয়াইজিএল) তালিকায় স্থান পেয়েছে মালিহার নাম। প্রতিবছরই নানা ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ৪০ বছরের কম বয়সী ১০০ জন তরুণকে নিয়ে ওয়াইজিএল তালিকা বানায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ২০১৭ সালের তালিকায় নাম আছে নয়জনের। বাংলাদেশ থেকে শুধুই আছেন মালিহা। গত বছর এ তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ।

 সুইজারল্যান্ডভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে মালিহা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখা হয়েছে এমনটা—তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। যাঁর স্টার্টআপ (নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ) বাংলাদেশের পরিবহনশিল্পকে ডিজিটাইজ করে এর মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে।

সহজ ডটকমের জন্যই ইয়াং গ্লোবাল লিডারস তালিকায় স্থান পেলেন? মালিহার জবাব, ‘আমার মনে হয় শুধু এটা নয়। আমার সব কাজ মিলেই হয়তো ওঁরা নির্বাচন করেছেন।’ দুই মাস আগে ফোনে মালিহাকে এই খবর জানানো হয়েছিল। ডব্লিউইএফের এই তরুণ বিশ্বনেতাদের কী করতে হয়? ‘বছরজুড়ে বিশ্বব্যাপী নানা আয়োজন থাকে এই ফোরামের। প্রতিবছর যে ১০০ জন তরুণ নির্বাচিত হন, তাঁরা এই আয়োজনগুলোতে আমন্ত্রণ পান। নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময়, নিজের দেশের কথা তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হয়।’

ঢাকার সাউথ ব্রিজ ও স্কলাস্টিকায় পড়াশোনা করে মালিহা যান যুক্তরাষ্ট্রে। ২০০০ সালে স্মিড্‌থ কলেজ থেকে অর্থনীতি ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক হন। এরপর মরগ্যান স্ট্যানলিতে বিনিয়োগ ব্যাংকিং নিয়ে কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশের ব্র্যাকনেটেও কাজ করেন কিছুদিন। আবার ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে, পড়াশোনা করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৮ সালে। এরপর যোগ দেন মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান নকিয়া সিঙ্গাপুরে। সে সময় ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক হিসেবে ভারত, চীন, নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশে নকিয়ার ডিজিটাল কনটেন্ট সেবা নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। নকিয়ার পর সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভিস্তাপ্রিন্টে কাজ করেন।

নকিয়া আর ভিস্তাপ্রিন্টের অভিজ্ঞতার পরই সহজ ডটকমের ধারণা মাথায় আসে মালিহার। তিনি বললেন, ‘সব সময়ই দেশে ফিরে আসতে চাইছিলাম। আমার পড়াশোনা আর কাজে যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তি, অর্থনীতি আর বাণিজ্যের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাই নিজের ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করতে চাইলাম। আর তা অবশ্যই তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক।’

অনেক দেশেই পরিবহনের টিকিট এখন অনলাইনে ঘরে বসে কাটা যায়। ‘বাংলাদেশেও এটা করা যায়-এমনটাই আমার মনে হয়েছে। তাই পুরো পরিকল্পনা করে, বিনিয়োগ ঠিক করে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামি।’ ২০১৩ সালে দেশে ফিরে সহজ ডটকম চালু করেন মালিহা মালেক কাদির। প্রথমে বাসমালিকদের বোঝাতে হয়েছে, ক্রেতাদের বোঝাতে হয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ এখন অভ্যস্ত হচ্ছে, আস্থা পাচ্ছে অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যাপারে। ‘পরিবহন খাতে সব দেশেই কিছু অনিশ্চয়তা থাকে। বাংলাদেশেও একই চিত্র। তাই আমরা বাস ও লঞ্চের টিকিট বিক্রির প্রচলিত ধারা ধরে সফটওয়্যার বানিয়েছি।’

সহজ ডটকমে এখন কাজ করছেন ৮০ জন কর্মী। ‘ভবিষ্যতে আরও বড় হবে এই প্রতিষ্ঠান। আরও অনেক কিছু নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। তবে ই-কমার্স উদ্যোগকে লাভজনক করা অত্যন্ত দীর্ঘ এক প্রক্রিয়া। স্ট্রাগলটা করতে হয় অনেক দিন ধরে।’ বললেন মালিহা।

মালিহার বাবা মো. আবদুল মালেক আবাসনশিল্পে জড়িত। মা নার্গিস মালেক চাকরি করতেন জীবন বীমা করপোরেশনে। ২০০০ সালে মালিহা বিয়ে করেন খালিদ কাদিরকে। খালিদ কাদির এখন বাংলাদেশে ব্রামার অ্যান্ড ক্যাপিটাল পার্টনারস নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের অংশীদার। তাঁদের দুই মেয়ে আনুশকা ও সোফিয়া।

এমন এক ব্যবসায় উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেন মালিহা, যেখানে সব সময়ই সচেতন থাকতে হয়। যাত্রী মানে টিকিট ক্রেতা এবং পরিবহন কোম্পানির মধ্যে সমন্বয় চলতে থাকে সব সময়ই। অবসরে রান্নাবান্না করতে পছন্দ করেন। কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিভাজন করেন না। ‘যার মাথায় বুদ্ধি আছে, সেই ভালো করবে কর্মক্ষেত্রে। তবে মেয়েদের একটু বেশি পরিশ্রম আর নিজেকে একটু বেশি করে প্রমাণ করতে হয়।’

লক্ষ্য স্থির রাখার কথা বলেন মালিহা। ‘ছোটবেলাতেই ঠিক করেছিলাম হার্ভার্ডে পড়ব। কম্পিউটার বিজ্ঞান কঠিন মনে হতো, কিন্তু গণিতে ভালো ছিলাম। তাই ওই বিষয়েও পড়লাম।’ আর এখন তো মালিহা কঠিন একটা খাত বেছে নিয়েছেন নিজের ব্যবসায়ের জন্য। এই খাতের ভোক্তাদের দিতে চাইছেন সহজ সমাধান। নিজের উদ্যোগকে আরও বড় করে তোলাই মালিহার এখনকার লক্ষ্য।

 

কালোই ছড়াচ্ছে আলো!

এত বঞ্চনার পরও থেমে থাকেননি গোলাপী। নিজের পায়ে দাঁড়াতে স্বাবলম্বী হতেই হবে? স্বামীর সংসার হয়নি তাতে কী হয়েছে? মা-বাবা, ভাইবোনকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে। ছুটে চললেন কাজের সন্ধানে। সেলাই প্রশিক্ষণ নিলেন। একটি মেশিনও কিনলেন। বাড়িতেই শুরু করলেন মেয়েদের জামা বানানোর কাজ। বদলে যেতে শুরু হলো তাঁর জীবনচিত্র। এর পাশাপাশি রংপুরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় চাকরিও করছেন।

কালো হওয়ার ‘অপরাধে’ বিয়ের রাতেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর দমে যাননি। নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে অর্থ উপার্জন করছেন। পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করছেন এমন উদাহরণের ঘটনায় ২০১৫ সালের ‘নারী’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কার পেয়ে গেলেন গোলাপী আক্তার।

রংপুর শহরের দক্ষিণ কামারপাড়ায় ভ্যানচালক আবদুল গনির বড় মেয়ে গোলাপী আক্তার। অভাব-অনটনের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা এগোয়নি। মাত্র পঞ্চম শ্রেণিতেই পড়ালেখার পাট চুকে যায় তাঁর। এরপর ২০০৯ সালে রংপুর শহরের আদর্শপাড়া এলাকার আলী হোসেন নামের এক ভ্যানচালক তরুণের সঙ্গে ১৪ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। এ সময় যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। আর দেওয়া হয়েছিল নাকফুল ও কানের দুল। গোলাপী কি জানতেন, এক দিন পরই তাঁকে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে হবে?

একে তো বাল্যবিবাহ, তার ওপর যৌতুক, এই বিয়ের পরিণাম যা হওয়ার তা-ই হলো। সেই দিনের ঘটনা বলতে গিয়ে গোলাপী জানালেন, বিয়ের রাতেই (বাসর রাত) এলাকায় চোরের উপদ্রব রয়েছে, এমন অজুহাতে শাশুড়িসহ বাড়ির অন্যরা তাঁর শরীর থেকে খুলে নেন নাকফুল ও কানের দুল। শরীরের রং কালো হওয়ার গঞ্জনা শুনতে হয়েছে রাতভর। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে রাতটা কাটলেও পরদিন সকালে ফিরে যেতে হয় বাবার সেই চিরচেনা বাড়িতেই। আর ফিরে যাওয়া হয় না স্বামীর সংসারে।

এরপর গোলাপী এখানে-ওখানে ঘুরে ফিরেছেন। কী করবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএসের মানবাধিকার কর্মী বিলকিস বেগমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁর মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানে আলোকিত ভুবনে এক বছরের সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিলেন গোলাপী। এরপর নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করলেন। এরই মধ্যে বিয়ের সম্পর্কটা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

২০১০ সালে যোগ দেন রংপুর শহরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায়। প্রতি মাসের বেতন আর নিজের সেলাই মেশিন দিয়ে আয়ও হয় বেশ। ব্যাংকেও টাকা জমিয়েছেন। মা-বাবা, দুই ভাই, এক বোনসহ শহরের কামারপাড়ায় ভাড়া বাসায় থেকে জীবন ভালোই কাটছে তাঁদের। এক ভাই অষ্টম ও বোন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। আরেক ভাই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে বাবার ভ্যান চালান। মা বর্তমানে অসুস্থ। তেমন একটা চলাফেরা করতে পারেন না।

গোলাপী বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা নারী অন্বেষণে ২০১৫ সালে রংপুর সদর উপজেলা, জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত হই। পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ায় ইচ্ছে আছে অন্য সব ভাইবোনকে পড়ালেখা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার। আমার মতো অন্যদের জীবন যেন এ রকম না হয়।’ নিজেকেও প্রতিষ্ঠার অনেক দূরে নিয়ে যেতে চান। তাই মনেপ্রাণে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধের লড়াই।

অসুস্থ মা সামেনা বেগম বলেন, ‘কত কষ্ট করি টাকাপয়সা জোগাড় করি মেয়েটাক বিয়া দিছি। তখন মোর জানা আছিল না ছোটকালে বেটির বিয়া দেওয়া যায় না।  সেই সংসার দুই দিনও টিকিল না। কালো বলিয়া এমন দুর্দশা হইল। কিন্তু তারপরও মেয়েটা কাজকাম করিয়া সংসারের বোঝা বহন করিয়া যাইতাছে। বেটি হামার হারে নাই।’

 

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শহীদ মিনারে লাকী আখন্দকে শেষ শ্রদ্ধা

প্রকৃতিও তার শূন্যতাটা টের পেয়ে গেছে গতকাল থেকেই! না হয় কেন গতকাল থেকেই আকাশটা আপন মনেই কেঁদে যাবে? আর আজ ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখন্দকে শেষ শ্রদ্ধা জানাত কেন্দ্রী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেমেছে তারকা শিল্পী ও সাধারণ মানুষের ঢল।

এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাকী আখন্দকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে। সেখানেই তাঁকে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার দেয়। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে লাকী আখন্দের মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলা মাঠে লাকী আখন্দের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

লাকী আখন্দকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘তার গান এ দেশের মানুষ মনে রাখবে। এই বীরমুক্তিযোদ্ধা-শব্দসৈনিক আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। তার কন্যাকে বলতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে যা করণীয়, সেটা করবো। আপনাদের কোনও প্রত্যাশা থাকলেও জানাবেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আমার বন্ধু লাকীর জন্য যা করণীয় আমি করব। কথা দিলাম।’

এছাড়া শহীদ মিনারের মরদেহ রাখা হবে বেলা ১টা পর্যন্ত। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানেই লাকী আখন্দকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

টানা আড়াই মাস হাসপাতাল জীবন শেষে গত সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরেছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ। ২১ এপ্রিল দুপুর নাগাদ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সন্ধ্যার আগে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক লাকী আখন্দকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬১ বছর।

 

রঙের ছটায় বৈশাখী বসন

বর্ণিল পোশাকে হবে বর্ষবরণ, এটা এখন রীতি। এই একটা উৎসব, যা সবাই মিলে পালন করা হয়। উচ্ছ্বাস-আনন্দ তো থাকবেই। আর উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ পোশাক বৈচিত্র্যময় না হলে ষোলো আনা তৃপ্তি থাকে না। কথাটি হাড়ে হাড়ে বোঝেন ফ্যাশন ডিজাইনাররাও। তাই পোশাকের ক্যানভাসে বাঙালি নানা মোটিফে আনে বৈচিত্র্যময় নকশা।
সাত-আট বছর পেছনে গেলে দেখা যাবে পয়লা বৈশাখের পোশাকে মোটিফ বলতে মুখোশ, হাতপাখা আর আলপনা। ধীরে ধীরে সেই ধারা ভেঙে পোশাকে এল পটচিত্র, নকশিকাঁথার ফোঁড়, ফুল, পাখি, কলস। এবার পোশাকের জমিনে মিলছে সাপলুডু, শখের হাঁড়ি, সন্দেশ, তাস, লক্ষ্মীপ্যাচা, মাছ, ফুলেল ছাপের মোটিফ। এ ছাড়া মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও পাঞ্জাবির জমিনে দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইন। গামছা দিয়েও কয়েকটি ফ্যাশন হাউস পোশাক তৈরি করেছে। এসব পোশাক পরতে আরাম আবার বাঙালিয়ানাও ফুটে ওঠে। অনেকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে গামছার শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার–কামিজ ও পাঞ্জাবি।
আর রং? সে তো প্রতিবারই নিরীক্ষার টেবিলে। ডিজাইনাররা পোশাকে রীতিমতো রং নিয়ে খেলছেন। লাল-সাদার আবেদন চিরন্তন—এই প্রথা ভাঙে কার সাধ্য! তাই বলে অন্য রং আসবে না? এমন দোটানায় গেল কয়েক বছর নীল, হলুদ, বেগুনি, গোলাপি, হালকা আকাশি, ঘিয়ে রঙে করা পোশাকও চলেছে বেশ। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের পোশাকে নিরীক্ষাধর্মী কাজগুলো বেশি হয়েছে। তবে বরাবরের মতো উজ্জ্বল রং-ই রাজত্ব করছে এবার। এদিকে রং আর মোটিফে ভিন্নতা থাকলেও কাপড়ে চারদিকে সুতির জয়জয়কার। অবশ্য সংখ্যায় কম হলেও মসলিন, সিল্ক, পাতলা গরদও আছে।
চট্টগ্রামের ফ্যাশন হাউস শৈল্পিক, রওশনস, ডলস হাউস, আরিয়ন ফ্যাশন, শ্রেয়া, মুনমুনস, পিণন, ময়ূরাক্ষী, কৃষ্টি, মেঘ রোদ্দুর, মিয়াবিবি, মিরনস, ড্রিম ফ্যাশন হাউস, রমনীয়া, তুলিস ক্রিয়েশন প্রভৃতি বৈচিত্র্যময় বৈশাখী পোশাক নিয়ে এসেছে।
ডলস হাউসের কর্ণধার আইভি হাসান বলেন, ‘পোশাকে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার হয়েছে বেশি। নকশা হয়েছে লোকজ বিভিন্ন মোটিফে। আমি এবার শাড়িতে জীবনানন্দ দাশের কবিতা তুলে ধরেছি।’
এদিকে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের পোশাকেও নিত্য নতুন ডিজাইন আনা হয়েছে। মেয়েশিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, ফ্রক, পালাজ্জো ও শাড়ি। আর ছেলেদের জন্য নকশা করা পাঞ্জাবি, টি-শার্ট ও ফতুয়া। পোশাকের কাটছাঁটে তেমন পরিবর্তন হয়নি। বরাবরই মাথায় রাখা হয়েছে পোশাকটা যেন আরামদায়ক হয়।

 

ভ্রমণে সতেজ থাকবেন যেভাবে

মানুষের মনকে সতেজ করে তুলতে ভ্রমণের চেয়ে ভালো ঔষধ আর হতে পারে না। এটি আপনাকে যেমন কাজ থেকে ছুটি দেয় তেমনি আপনাকে আপনার নিজের মাঝে আবার নিয়েও আসে। দীর্ঘ সময়ের কাজের চাপ, স্ট্রেস আর নানা ঝামেলা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে এই ভ্রমণ। তবে এই ভ্রমণে যেতে যেতে আপনি হয়ে পরেন ক্লান্ত। কিন্তু কিছু ছোট ছোট টিপস আপনাকে হাজার ক্লান্তিতেও সতেজ রাখতে পারে আর সাথে সাথে আপনাকে সতেজতার সাথে সবার মাঝে উপস্থাপনও করতে পারে।

ভ্রমণে বের হবার আগে চাই ত্বকের যত্ন। তাই যেদিন ভ্রমণে বের হবেন তার ঠিক আগের দিন বেশি বেশি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।  এতে আগের দিন থেকেই ত্বকের হাইড্রেশন ঠিক অবস্থায় থাকবে। আপনার ত্বক বিশেষ করে হাত, পা কিংবা মুখের ত্বকে এটি আবরণ তৈরি করে রাখে, যাতে বাইরের তাপ বা এয়ার কন্ডিশনের আবহাওয়া আপনার ত্বককে রুক্ষ করতে পারে না।

আপনি যখন দূরে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন তখন মুখে ফাউন্ডেশন বা ব্লাশন ব্যবহার না করাই ভালো। এর পরিবর্তে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে আপনার ত্বকে থাকা ময়লা ধুয়ে যাবে আর ময়েশ্চারাইজার আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর করবে।

ভ্রমণে বের হবার আগে নিজেকে সুন্দরভাবে সাজাতে সবাই পছন্দ করে। তবে তা যদি হয় দূরের পথের তবে কিছু বিষয় আপনাকে মাথায় রাকতে হবে। ভ্রমণে যাবার সময় উজ্জ্বল রঙের নেইল পলিশ নখে ব্যবহার করবেন না। কারণ ভ্রমণের ঝক্কি ঝামেলায় এর সৌন্দর্য মলিন হয়ে যায়। যাতে তা সৌন্দর্য বাড়ানোর বদলে তা কমিয়ে দেয়। তবে এই ক্ষেত্রে আপনি চাইলে নেইল পলিশের পরিবর্তে ন্যাচারাল কালার ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি এক ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন, তবে তার সঙ্গে অবশ্যই ক্লিনজার নিয়ে নেবেন। ঘুরে আসার পর অবশ্যই ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকে এসিডের পরিমাণ কমাবে।

বাইরে থাকা অবস্থায় হাতের স্পর্শ থেকে মুখ দূরে রাখবেন। হাতে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা লেগে থাকে যা আপনার হাতের মাধ্যমে মুখ পর্যন্ত খুব সহজে পৌঁছায়। আর ভ্রমণের সময় বারবার মুখ যেকোনো কাপড় দিয়ে মুছবেন না। নরম কাপড়, টিস্যু কিংবা রুমাল ব্যবহার করুন।

মেকআপ ব্যবহারের আগে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। চোখ সাজানোর ক্ষেত্রে চোখে মাস্কারা আর ঠোঁটের ক্ষেত্রে  দীর্ঘক্ষণ থাকে এমন লিপস্টিক ব্যবহার করবেন না। দূরের পথে ভ্রমণের সময় অনেকেই হালকা ঘুম দিয়ে থাকেন। এতে মাস্কারা বা লিপস্টিক নষ্ট হয়ে যায়। তাই দূরের পথে এসব থেকে দূরেই থাকুন। লিপস্টিক ঠোঁটকে শুষ্ক করে দেয়। এর চেয়ে বরং লিপ গ্লোস ব্যবহার করতে পারেন। গ্লোস মুছে গেলেও তা আবারো খুব সহজে ব্যবহার করা যায়।

দূরের যাত্রা পথে সাথে অবশ্যই আয়না রাখুন। ছোট ছোট কাজ যেমন চোখের কাজল ঠিক করা কিংবা ঠোঁটের লিপিস্টিকের ঠিক করতে এটি কাজে লাগে। এর সাথে ব্যাগে অবশ্যই পানি রাখুন।

 

হিট স্ট্রোক হলে কী করবেন

গরমের বিভীষিকা যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ছেই। মূলত গরমের কারণেই এই হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, রোদে বেশিক্ষণ অবস্থান করা আর একটি জায়গায় গরমের মাঝে গুটিশুটি হয়ে বসে থাকলে এই সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কোন বয়সসীমা নেই। কোথায় কখন কিভাবে হিট স্ট্রোক হতে পারে তা আপনিও নিজে জানেন না। তাই জেনে রাখুন আপনার পাশের মানুষটির হিট স্ট্রোক হলে আপনি কি করবেন কিংবা কি করা উচিৎ।

শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে মূলত এই সমস্যাটি হয়। মূলত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে এই হিট স্ট্রোক হয়। যারা এই গরমে কায়িক শ্রম বেশি করেন যেমন রিক্সা চালক, কৃষক কিংবা শ্রমিক তাদের এই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। প্রচণ্ড গরমেও যে কারো হিট স্ট্রোক হতে পারে। অতিরিক্ত গরম আর তার উপর আঁটসাঁট করে পরা পোশাক আপনার হিট স্ট্রোকের অন্যতম কারণ।

আপনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন কি না তা বুঝতে পারবেন কিছু লক্ষণ দেখে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগে আপনার প্রচুর পানি পিপাসা পাবে, কথা বলতে কষ্ট হবে। হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসবে। আপনি চারিদিক অন্ধকার দেখতে শুরু করবেন। সাথে বমিভাব, মাথাব্যাথা, ঝিমঝিম করা ইত্যাদি লক্ষণগুলো চোখে পরবে। তার সাথে আপনার ঘাম বন্ধ হয়ে যাবে। ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যাবে, নিঃশ্বাস দ্রুত নিতে শুরু করবেন, নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত গতির হবে, রক্তচাপ কমে যাবে, খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্নতা লক্ষণ চোখে পড়বে। পাশাপাশি যুক্ত হতে পারে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া।

প্রতিকার
হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। কাপড় সাদা বা হালকা রঙের পোশাক হলে সবচেয়ে ভালো হয়। এই ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ের প্রাধান্য বেশি। যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন।

বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা সঙ্গে ছাতা ব্যবহার করুন। বাইরে যারা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন তারা মাথায় ছাতা বা মাথা ঢাকার জন্য কাপড়জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল যেমন স্যালাইন, শরবত পান করুন। চা ও কফি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বাইরের খাবার যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ, ঠান্ডা গোলা, পথের পাশের আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। সঙ্গে পানির বোতল আর স্যালাইন রাখুন।

 

স্নিগ্ধ সারা দিন

বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ। আর উৎসব মানেই তো সাজ-পোশাকে নতুনত্ব। বছরের প্রথম দিনটিতে নিজেকে একটু অনন্য দেখাক, এই বাসনা অনেক নারীরই। তবে আবহাওয়া ও খরতাপের কথা মাথায় রেখে ওই দিনটিতে সাজার পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞরা।

বিউটি পারলার নিউ লুকের স্বত্বাধিকারী নিগার সুলতানা মনে করেন, পয়লা বৈশাখের অন্তত দুদিন আগে থেকেই ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। কারণ ত্বক ঠিকমতো পরিষ্কার না থাকলে মেকআপে ভালো ফিনিশিং আসে না। আর চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়। অনেকেই যেহেতু সারা দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন সে ক্ষেত্রে সাজগোজটি ছিমছাম থাকাই ভালো। মুখ ঘেমে যাতে মেকআপ নষ্ট হয়ে না যায়, সে জন্য সাজগোজের উপকরণের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

নিগার সুলতানা বলেন, যাঁরা বাসায় মেকআপ করবেন, তাঁরা মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে প্রাইমার লাগাবেন। তাতে মেকআপের বেজটা ভালো হবে। এরপর ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। চোখের সাজে মোটা নয়, চিকন করে আইলাইনার টেনে দিতে হবে। চাইলে কেউ আইল্যাশ ব্যবহার করতে পারেন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে ত্বকের রং বুঝে তা বেছে নেওয়া উচিত। আর যাঁরা দক্ষ বিউটিশিয়ানের হাতে সাজতে চান, তাঁদের কিন্তু ছুটতে হবে বিউটি পারলারে।

বৈশাখ উপলক্ষে এখন চলছে সৌন্দর্যচর্চার নানান সেবার ওপর বিশেষ ছাড়। নগরের কয়েকটি বিউটি পারলারের আয়োজনের কথা জানা যাক।

পারসোনা: এপ্রিল মাসজুড়ে চুল রিবন্ডিং ও রং করার ওপর ১২ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পয়লা বৈশাখের দিনে থাকছে ১৭০০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ। প্যাকেজের আওতায় চুল বাঁধা, মেকআপ ও শাড়ি পরার সুযোগ পাবেন গ্রাহকেরা।

হাবিব তাজকিরাজ: পয়লা বৈশাখের দিন ৫৫৫ থেকে ২২২২ টাকার মধ্যে সাজের পাঁচটি বিশেষ প্যাকেজ রেখেছে হাবিব তাজকিরাজ। এ ছাড়া ১০ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সেবায় ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ২০ দিনের এই বিশেষ আয়োজনে নারীদের জন্য সৌন্দর্যচর্চার ওপর ১২৯৯ থেকে ১৯৯৯ টাকার মধ্যে তিনটি বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিউ লুক: ২০০০ টাকায় ত্বক, চুল ও ম্যানিকিওর-পেডিকিওরের বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে নিউ লুক। পয়লা বৈশাখে সাজের জন্য ১৫০০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ রাখা হয়েছে।

বিউটি বাফে: এপ্রিল মাসজুড়ে যেকোনো সেবার ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে বিউটি পারলারটি। পয়লা বৈশাখের দিনে ৯০০ টাকায় চুল, মেকআপ ও শাড়ি পরার বিশেষ প্যাকেজ রয়েছে।

ফেয়ার টাচ: পয়লা বৈশাখে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে তিনটি সাজের প্যাকেজ রেখেছে ফেয়ার টাচ। এ ছাড়া ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ত্বকের যত্ন, চুলের রং ও রিবন্ডিং করানোর ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ছাড় চলছে।

 

আনন্দে বেঁচে থাকার ২১ সূত্র

ঘুম, খাওয়া, বিনোদন—এটাই কি বেঁচে থাকা? এই মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর একটা ভবিষ্যতের জন্য কাজ করাই বেঁচে থাকা? নাকি ঘড়ির কাঁটা ধরে সকাল-সন্ধ্যার জীবনটাই বেঁচে থাকা? টাইম সাময়িকীর মতে, জীবনকে একটি বই না ভেবে, ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র শব্দে উপভোগ করাই বিচক্ষণতা। বেঁচে থাকার সংজ্ঞা ব্যক্তি, মননভেদে ভিন্ন হয়, কিন্তু আনন্দে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা-চেষ্টা কিন্তু সবারই থাকে। সেই আনন্দে ইতিবাচক উপায়ে বেঁচে থাকার উপায়গুলো জানা যাক।

১ পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
২ যদি আপনার কাউকে ভালো লাগে, আপনি যদি ভালোবাসতে চান, তাহলে নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক উপায়ে তাকে ভালোবাসার কথা জানান। ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে নিজের মনন, মানসিক অবস্থানকে বিবেচনা করুন প্রথমেই।
৩ আজকের জন্য বেঁচে থাকার অভ্যাস করুন। গতকাল আর কখনোই ফিরে আসবে না। আর আজকের দিনটা দারুণ হলে আগামীকালটাও রঙিন হবে।
৪ যদি কোনো কিছু না বোঝেন, তাহলে ব্যাখ্যা জানার চেষ্টা করুন। ধোঁয়াশাচ্ছন্ন বা ভাসা-ভাসা ধারণা নিয়ে বেঁচে থাকা ভবিষ্যতে মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
৫ আপনি যদি কারও বন্ধুত্ব চান, প্রথমেই আপনার কাছ থেকে ডাক পাঠান। উষ্ণ আর রাঙানো বন্ধুত্ব কে না চায় বলুন!
৬ আপনার দোষ কিংবা ত্রুটি থাকলে অকপটে স্বীকার করুন।
৭ কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকার অভ্যাস করুন। অন্যকে আপনি বদলাতে পারবেন না, কিন্তু নিজেকে নেতিবাচক চিন্তার মানুষের কাছ থেকে সরিয়ে আনতে পারবেন।
৮ প্রতিটি মুহূর্ত উদ্‌যাপন করাটাই জীবন। হতাশা, না পাওয়া নিয়ে টানাটানি বিষাদের সৃষ্টি করে। মনে রাখবেন, এই মুহূর্তকে নিয়েই অনেক মুহূর্তের যোগফলই আপনার আজ, গতকাল, আগামীকাল আর পুরো জীবন!
৯ গড়পড়তা সব সমস্যার শুরু আমাদের মাথা থেকে। নিজের মাথাকে সব সময় ইতিবাচক ধারণা তৈরি করার কাজে ব্যস্ত রাখুন।
১০ আপনি যেভাবে পৃথিবী দেখেন, পৃথিবী আসলে তা-ই! আয়নায় নিজের হতাশার চেহারা দেখলে যেমন হতাশ হয়ে যাই আমরা, পৃথিবীও তেমন। আপনি ইতিবাচক থাকলে পৃথিবী ইতিবাচক হবেই।
১১ সব সময় খেয়াল রাখুন, আর সুযোগ না-ও আসতে পারে। এক দিনের জন্য বেঁচে থাকাই রঙিন জীবন তৈরি করে।
১২ এমন কোনো কাজে নিজেকে যুক্ত করবেন না যা কিনা আপনার মস্তিষ্কে ও মননে চাপ তৈরি করে। বেশি চাপে সব ভেঙে পড়ে।
১৩ টেলিভিশন কিংবা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মধ্যে জীবনকে আটকে রাখবেন না।
১৪ কর্মক্ষেত্রে বিদ্বেষ কিংবা সহকর্মী বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়, এমন আচরণ পরিহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১৫ নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলার অভ্যাস করুন, দিন শেষে আপনার শেষ ভরসা কিন্তু আপনিই।
১৬ সব সময় ধৈর্যশীল থাকার অভ্যাস করুন। যার যা সম্মান তাকে তার চেয়ে বেশি সম্মান দেখান।
১৭ কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার আগে নিজেকে তার জায়গায় কল্পনা করুন।
১৮ ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক নেটওয়ার্কের লাইক কিংবা জনপ্রিয়তা সব সময় বাস্তব জীবনের নয়, তা খেয়াল রাখুন।
১৯ জীবনকে সুন্দর করতে বই পড়ার বিকল্প নেই।
২০ নিজেকে পরিবার কিংবা অফিসের কনিষ্ঠ সদস্যদের জন্য অনুসরণের যোগ্য করে তুলুন। আপনি যখন থাকবেন না, তখন তারাই কিন্তু আপনার জীবনদর্শন ধারণ করবে।
২১ ‘বেঁচে থাকাই আনন্দ’, না ভেবে ‘আনন্দে বেঁচে থাকার উপকরণ’ দিয়ে নিজের জীবন আর সময়কে রাঙিয়ে তুলুন।
গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান
ব্রাইটসাইড ডট কম

 

কোন ফলে কত ভিটামিন সি

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, কাটাছেঁড়া বা শল্যচিকিৎসার পর দ্রুত ঘা শুকাতে চিকিৎসকেরা বেশি করে ভিটামিন সি খেতে বলেন। ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস হলো নানা ধরনের ফল। বিশেষ করে টক ফল। গবেষকেরা বলেন, একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রাম ও পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। আসুন, জেনে নিই কোন ধরনের ফলে এই ভিটামিন সি বেশি আছে।

কমলা: একটা কমলায় প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে। গোটা কমলা বা কমলার রস ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস। কমলার মতো অন্যান্য ফল, যেমন মাল্টা বা জাম্বুরায়ও ভিটামিন সি অনেক। ১০০ গ্রাম মাল্টায় আছে ৩২ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম জাম্বুরায় আছে ৬১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

পেঁপে: পাকা পেঁপেতেও আছে বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ভিটামিন সি পাবেন।

পেয়ারা: পেয়ারা ভিটামিন সি-এর সবচেয়ে ভালো উৎস। একটা গোটা পেয়ারায় (৫৫ গ্রাম ওজনের) ১২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

আনারস: আনারসের প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ ৪৭ মিলিগ্রামের মতো।

লেবু: দেশি সবুজ লেবুতেও ভিটামিন সি অনেক। ১০০ গ্রাম লেবুতে ৫৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাবেন।

 

ঝাল ঝাল প্যান কেক

আমাদের প্রায় সবারই ধারণা প্যানকেক বুঝি শুধু মিষ্টি স্বাদেরই হয়। ঝালপ্রেমীদের জন্য সুখবর হচ্ছে, শুধু মিষ্টি স্বাদেরই নয়, প্যানকেক হতে পারে ঝাল স্বাদেরও। আর সেজন্য খুব বেশিকিছুর প্রয়োজনও নেই। হাতের কাছে থাকা অল্পকিছু উপাদান দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন মজাদার ঝাল ঝাল প্যানকেক।

উপকরণ:
১ কাপ সেদ্ধ আলু পিষে নেয়া, আধা কাপ ময়দা, ১ টি ডিম, আধা কাপ মাংস হাতে ঝুরি করে নেয়া (সেদ্ধ বা রান্না করা মাংস অনায়েসেই হাতে ঝুরি করে নিতে পারেন), ধনে পাতা কুচি প্রয়োজনমতো, ৩ টি পেঁয়াজ মিহি কুচি, ৪/৫ টি কাঁচামরিচ মিহি কুচি, ১ চা চামচ আদা রসুন বাটা (না দিলেও চলবে), আধা চা চামচ জিরা গুঁড়ো, লবণ স্বাদমতো, টেস্টিং সল্ট সামান্য, ১ টেবিল চামচ সয়াসস, পানি প্রয়োজনমতো, তেল ও বাটার ভাজার জন্য।

পদ্ধতি:
আলু ও ডিম একসাথে ভালো করে মেখে নিন যেন আলুতে কোনো গোটা বা দলা না থাকে। এরপর তেল ও বাটার বাদে একে একে সব উপকরণ দিয়ে দিন। এবং ভালো করে মেখে ঘন ব্যটার তৈরি করে নিন। পানির পরিমাণ অল্প করে দেবেন যাতে আন্দাজ ঠিক থাকে।
এরপর একটি ননস্টিক ফ্রাইংপ্যানে বাটার দিন এবং এর সাথে অল্প তেল দিয়ে গরম করে নিন। তারপর নিজের পছন্দমতো আকারের প্যানকেকের ব্যটার ঢালুন প্যানে।

মাঝারি আঁচে দুই পাশ লালচে করে ভেজে তুলুন। এরপর পরিবেশন করুন গরম গরম সুস্বাদু এই ঝাল প্যানকেক।