banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 4, 2025

 

চুল ও দাঁত সুস্থ রাখে কিসমিস!

সেমাই কিংবা ক্ষীর সাজাতে কিসমিস ব্যবহার করা হয়। তবে জানেন কি কিসমিসের নিজস্ব বেশকিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে? নিয়মিত কিসমিস খেলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে।

জেনে নিন কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

  • নিয়মিত কিসমিস খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। কিসমিসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে।
  • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।
  • দাঁত ও মাড়ি শক্তিশালী রাখে কিসমিস। এতে থাকা ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এছাড়া কিসমিসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায় কিসমিস। এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ত্বকের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
  • অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে কিসমিস। কিসমিসে থাকা ভিটামিন সি, আয়রন ও বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান চুল প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর ও কালো রাখে।

তথ্য: বোল্ডস্কাই

 

কেওক্রাডং ও বগা লেকে ভ্রমণ প্যাকেজ

অপরূপ বাংলাদেশের চমৎকার সব ভ্রমণ স্থানের মাঝে বগা লেক, কেওক্রাডং এখন বেশ জনপ্রিয়। যারা পাহাড় ভালোবাসেন, ভালোবাসেন মেঘ আর অবারিত সবুজ তারা বার বারই ছুটে যান এখানে। বাংলার অভিযাত্রী নামক ফেসবুক গ্রুপের আয়োজনে আবারও বেড়িয়ে আসতে পারেন এখানে। শীতের সময়ে পাহাড়ের আনন্দই আলাদা।

বগা লেক থেকে দার্জিলিং পাড়া হয়ে যেতে হয় কেওক্রাডং। এটি এক সময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত ছিলো। কেওক্রাডং-এ দাঁড়িয়ে যে অনুভূতি হয় তা কখনো ভোলার নয়। আর কেওক্রাডং এর সুর্যোদয়, সে তো এক মোহনীয় জাদুকরী মুহূর্ত।

 

তাজমহলের ছায়ায় নান্দনিক আগ্রা ফোর্ট

আগ্রার তাজমহল দেখে মুগ্ধ মাতোয়ারা যখন সবাই তখন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল মুগ্ধতার আরেক খনি আগ্রা ফোর্ট। অপূর্ব এই দূর্গের গল্প শুনেছি অনেক। অনেক বলেন তাজকেও নাকি হার মানায় এটি। একবার আগ্রা ফোর্ট দেখলে আর ভালো লাগে না কোন কিছুই। মনের মাঝে অদম্য কৌতুহল। ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের আহবানে বাংলাদেশ থেকে শত যুবার যে দলটি ভারত ভ্রমণে যায় আমি ছিলাম তাদের একজন। আগ্রা ফোর্ট ভ্রমণ ছিল আমার জন্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইচ্ছাপূরণ।

লাল ইটে মোড়ানো পথ বেয়ে লাল উঁচু প্রাচীরে ঘেরা প্রাসাদে প্রবেশ করলাম আমরা। তাজে যে সম্রাট-সম্রাজ্ঞীর সমাধি দেখে এলাম তাদের বাস ছিল এই প্রাসাদে। নাটকে, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, ইতিহাসের বইয়ে কতবার কতভাবে জেনেছি তাদের কথা। এ যেন সেই সময়ের সংস্পর্শে আসা, সময়কে দেখা খুব কাছ থেকে।

আগ্রা ফোর্টের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজ। আবাসনের পাশাপাশি রাজ পরিবারের বিনোদন, গান-নাচের আসর, রাজকার্যের জন্য দরবার হল কী নেই এখানে। তবে এই প্রাসাদের নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। যদিও তাজমহল আর আগ্রা ফোর্টের নাম একই সাথে শোনা যায় তবে এর নির্মাণ হয়েছে আরও অনেক আগে। প্রকৃত অর্থেই, আগ্রা দূর্গ ছিল একটি দূর্গ। এর ইতিহাস বদলেছে সেই ইব্রাহিম লোদী থেকে শুরু করে বাবর, হুমায়ূন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের হাত ধরে। একে দূর্গের জটিল অবয়ব দেন সম্রাট আকবর।  তবে এর গঠন সর্বোচ্চ নান্দনিকতা পায় শাহজাহানের হাতে। সেনাদের দূর্গকে তিনি পরিণত করেন রাজপ্রাসাদে।

attr_1617

আগ্রা ফোর্টের ভেতরের একাংশ। ছবি- সংগৃহীত।

যমুনার তীরে নির্মিত দূর্গটির চারদিকে এমনভাবে দেয়াল তোলা হয়েছে যাতে বোঝা না যায় কোনটা ঠিক এর প্রবেশ পথ। দেয়ালের গঠন আর নকশার চাতুর্যই এর কারণ। রাজা মানসিং এর রাজপুত ফোর্টের নির্মাণ শৈলীর সাথে এর মিল রয়েছে। পরে আবার আগ্রা ফোর্টের আদলে তৈরি হয় দিল্লীর লাল দূর্গ। আকবর যখন শাসনভার নেন তখন তিনি পেয়েছিলেন এর ধ্বংসাবশেষ। তার ইতিহাসবিদ আবুল ফজল জানান এর নাম ছিল বাদলগর। এরপর রাজস্থান থেকে লাল বেলেপাথর এনে তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এটি।

তবে শাহজাহানের ভালবাসা ছিল সাদা মার্বেলের প্রতি। তাই দূর্গের ভেতরে ভবন নির্মাণে তিনি ব্যবহার করেছেন শ্বেতপাথর।

সম্রাজ্ঞী যোধা বাই এর ভবনটি লাল, কারণ এর নির্মাতা আকবর। অন্যান্য ভবনগুলোর নাম জাহাঙ্গীর-ই মহল, খাস মহল, দরবারই খাস, আর শীষ মহল।

Sheesh_mahal

শিষ মহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে এর শিষ মহল। হাম্মাম অর্থাৎ রাজ গোসলখানায় অসাধারণ ওয়াটার ইঞ্জিয়ারিং করা হয়েছে। সম্ভবত পানি গরম করার জন্য ল্যাম্প ব্যবহার করা হত এখানে। মার্বেলের চেয়েও দামী আয়না দিয়ে খচিত শিষ মহলের দেয়াল। শতকোটি প্রতিবিম্ব চোখ ধাঁধিয়ে দেবে আপনার।

আগ্রা ফোর্টের নিচে আছে ফাঁপা সুড়ঙ্গ, যার মধ্য দিয়ে যমুনার পানি বয়ে যেত। ফলে সমগ্র মহলটি থাকত ঠান্ডা। বিশাল এলাকা জুড়ে দূর্গের বিস্তার। রানীরা থাকতেন নিচের দিকের ঘরগুলোতে, যাতে ঠান্ডা আবহাওয়া পেতে পারেন সবসময়। দূর্গের ছাদে বসত গান নাচের আসর। সম্রাটের এবং শিল্পীর জন্য বাঁধানো মঞ্চ দেখতে পাবেন এখনো।

site

আগ্রা ফোর্ট থেকে তাজমহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন শাহজাহান, সন্তান আওরঙ্গজেব বন্দী করে রেখেছিলেন তাকে। নিজ প্রাসাদ থেকে তিনি দেখতে পেতেন যমুনার ওপারে তাজমহলকে। স্মৃতিচারণ করতেন প্রিয় সহধর্মিনী মমতাজকে। যোধা বাই এর মহল থেকেও তাজকে দেখা যায়। তবে কালের বিবর্তনে যমুনার জল আর নেই তেমন।

আগ্রা ফোর্টের নির্মাণ শৈলীতে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির ছাপ রয়েছে সুস্পষ্ট। হাতি, পাখি, ড্রাগনের প্রতিমূর্তি বা ছবি ইসলাম স্থাপত্যে দেখা যায় না। কিন্তু আগ্রা ফোর্টে আপনি পাবেন তার দেখা।

আগ্রা ফোর্টের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটির মাঝে শুধু নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা মসজিদ আছে। এর নাম নাগিনা মসজিদ।

আগ্রা ফোর্টে সানন্দ্যে ঘুরে বেড়ায় কাঠবিড়ালী। খুবই বন্ধুবাৎসল এরা। একটু সময় দিলেই চলে আসে হাতে। সব মিলিয়ে আগ্রা ফোর্টে একদিন একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

Save

Save

Save

 

সেলাই মেশিনে সাফল্যের বুনন

২০০৩ সালের কথা। স্বামী মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা বেতনের চাকরি করেন। সংসারের আয় বাড়াতে হবে। এমন তাড়না থেকে ওই বছরই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অর্জন করে পান একটি সেলাই মেশিন। পারবেন, নাকি পারবেন না, এমন উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা নিয়ে একটি সেলাই মেশিন নিয়েই শুরু করেন কাজ। ক্রমেই বাড়তে থাকে কাজের ব্যাপ্তি। ১৩ বছর পর এখন সফল নারী উদ্যোক্তা তিনি। তাঁর নাম আইনুন্নাহার। দীর্ঘ ১৩ বছরে অর্জনের ঝুলিতে জমা হয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা। গত বছরের ১ নভেম্বর নারী কোটায় পেয়েছেন জাতীয় যুব পুরস্কার। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল ও অনুকরণীয় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।
আইনুন্নাহারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ শহরের একটা ভাড়া বাড়িতে যখন সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন, তখন পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের পোশাক তৈরি করে দিতেন। উপার্জন কেমন হবে, তা নিয়ে ছিল না কোনো চাহিদা। চিন্তা ছিল একটাই—সফল হতেই হবে। কাজের শেষে গ্রাহকেরা যা দিতেন, তাতেই সন্তুষ্ট হতেন। কাজের গুণে দ্রুতই নিজের ও আশপাশের পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে আইনুন্নাহারের কাজের কথা। ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন এলাকার নারীরা নিজের পোশাক বানাতে তাঁর কাছে আসতে শুরু করেন। বাড়তে থাকে কাজের ফরমাশ ও ব্যাপ্তি।

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই একা কাজ করে কুলাতে পারছিলেন না। আইনুন্নাহার কর্মী নিয়োগ না নিয়ে ২০ জন নারীকে নিজের বাড়িতেই প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। তিন মাসের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে পাঁচজনকে নিয়োগ দেন নিজের উদ্যোগে। ওই পাঁচজনকে নিয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি শুরু হয়। ক্রমে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। নারী ও শিশুদের জন্য পোশাক তৈরি করে প্রথমে ময়মনসিংহের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক তৈরির কাজ পেয়ে যান। বেড়ে যায় তাঁর কাজ ও কর্মীর সংখ্যাও।
ময়মনসিংহের আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আবদুর রশিদ একদিন আইনুন্নাহারের কাজ দেখে মুগ্ধ হন। সেটা ২০০৯ সাল। আসপাডা থেকে আইনুন্নাহার ঋণ নেন ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তিনি মন দেন দক্ষ কর্মী তৈরিতে। আয়োজন করেন প্রশিক্ষণের। প্রতিবছর চলতে থাকে চারটি করে ব্যাচের প্রশিক্ষণ। প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে নারী বিনা মূল্যে সেলাই ও বুটিকের কাজের প্রশিক্ষণ নেন।

২০১৩ সালে নারী উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে আইনুন্নাহার প্রতিষ্ঠা করেন তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতি। বর্তমানে এই সমিতির মাধ্যমে নিয়মিত চলে নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিবছর বের হয়ে আসছেন দক্ষ কর্মী। তাঁদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়েছেন।

আইনুন্নাহারের রয়েছে তৃণমূল কারুপণ্য নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে তৈরি হয় ব্লকপ্রিন্ট ও বুটিকের পোশাক। দেড় বছর ধরে নিজের প্রতিষ্ঠানে তৈরি করছেন পাটের ব্যাগ ও অফিস ফাইল। ঢাকার রাপা প্লাজায় জয়িতাতেও ছিল তাঁর পোশাক বিক্রির জায়গা। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চালু করেছেন তৃণমূল কারুপণ্য দোকান।

দেশের বিভিন্ন মেলায় উদ্যোক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। দেশের বাইরে ভারতে দুবার, নেপালে একবার মেলায় স্টল নিয়েছে আইনুন্নাহারের তৃণমূল কারুপণ্য। সম্প্রতি চীনের একটি মেলায় অংশ নেয় এই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে আইনুন্নাহারের অধীনে কাজ করছেন ১৬০ জন নারী ও পুরুষ।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমার কাজের সেরা স্বীকৃতি ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নারী জাতীয় যুব পুরস্কার পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক নেওয়া আমার জীবনে স্মরণীয় এক ঘটনা।’ কাজের ব্যাপারে স্বামী খোন্দকার ফারুক আহমেদের কাছ থেকে সব সময় সহযোগিতা পেয়েছেন। বললেন, ‘কাজের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অকৃত্রিম বন্ধু ও সহযোগীর ভূমিকায় থেকেছেন আমার স্বামী। তাঁর সহযোগিতা না পেলে এত দূর আসতে পারতাম কি না, সন্দেহ।’

২০১০ সালে সফল উদ্যোক্তা হিসেবেও আইনুন্নাহার পুরস্কার পেয়েছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে। ২০১৩ সালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, ময়মনসিংহ জেলা ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘জয়িতা’ পুরস্কার ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কারের স্বীকৃতি। নারীদের দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নারী উন্নয়ন ফোরাম। বর্তমানে এটির নিবন্ধন-প্রক্রিয়া চলছে।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে ইচ্ছা ছিল চাকরি না করে নিজে কিছু করব। পাশাপাশি আমাদের সমাজের নারীদের কর্মী হিসেবে স্বাবলম্বী করা যায়, এমন ভাবনা ছিল। সেই ভাবনা নিয়ে আস্তে আস্তে আমি এগিয়েছি। প্রয়োজনই মানুষকে অনেক কিছু করতে সাহসী করে।’ সেই সাহস থেকেই আজ একজন সফল উদ্যোক্তা আইনুন্নাহার।

 

বিশেষ কৌশলে ভালো রাখুন দাম্পত্যের সম্পর্ক

একটি সম্পর্কে জড়ানো যতটা সহজ, সেটাকে টিকিয়ে রাখা তারচেয়ে অনেক বেশি কঠিন। সম্পর্ক থাকলে  খুনসুটি, ভুল বোঝবুঝি, ঝগড়া থাকবে। তা সে যে সম্পর্কই হোক না কেন। আপনাকে এই বিষয়গুলো কিছুটা কৌশলে সামলে নিতে হবে। সম্পর্ককে সুন্দর করে তুলবে কিছু কৌশল। আসুন জেনে নিই সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তোলার সেই গোপন কৌশলগুলো।

১। খোলাখুলিভাবে কথা বলুন

প্রতিটি সম্পর্কে ঝগড়া, খুনসুটি, মান-অভিমান হয়। কিন্তু একটি সুখী দম্পতি জানেন এই বিষয়গুলোকে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে। যে বিষয়ে মতে অমিলে হবে সে বিষয়ে খোলাখুলিভাবে একে অপরের সাথে কথা বলুন। যখনই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে দেখবেন আর আপনাদের মধ্যে মতের অমিল হচ্ছে না। ফোন বা ইন্টারনেট এই মাধ্যমগুলোতে কথা না বলে সরাসরি কথা বলুন।

২। ছোট বিষয়গুলোকে অবহেলা করবেন না

আমরা আমাদের সঙ্গীর সাথে কথা বলার সময় ধন্যবাদ, প্লিজ এই শব্দগুলো ব্যবহার করি না। আমরা মনে করি প্রিয় মানুষের সাথে কেন এই সৌজন্যতা! অথচ এই ছোট বিষয়গুলো আপনাদের সম্পর্কে আরও মজবুত করে দিবে। সঙ্গীর কাজকে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করুন। ধন্যবার জানানে সবকিছুর জন্য যা সে আপনার জন্য করছে।

৩। নিজেকে পরিবর্তন করুন, সঙ্গীকে নয়

আপনি যদি সত্যি কাউকে ভালবাসেন তবে তাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করুন তার জন্য। আপনি যদি তার কোন অভ্যাস অপছন্দ করেন, তবে সরাসরি তার সাথে কথা বলুন। কিন্তু তাকে জোর করবেন না। বুঝিয়ে বলুন দেখবেন সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

৪। একসাথে রাতের খাবার খান

প্রচলিত আছে একসাথে খাবার খান, আর থাকুন একসাথে। খাবার টেবিলে সবাই একসাথে হন, নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মত  যা সম্পর্কগুলোকের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে। সারাদিনে একে অন্যের কাজের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় এই সময়ে।

৫। একসাথে সময় কাটান

নিজেরা একসাথে সময় কাটান। কাজ, অফিস বাদে নিজেদেরকে সময় দিন। বছরে একবার দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। একসাথে সময় কাটানোর সুযোগে নিজেদের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে  ভুল বুঝাবুঝি থাকলে তা দূর হয়ে যাবে।

৬। রাগ কম করুন

রাগ করে কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না। এটি শুধু সময় এবং সম্পর্ক নষ্ট করে। সঙ্গীর ভূল ধরা বাদ দিন। তার খারাপ দিকগুলো না দেখে ভাল দিকগুল দেখুন। রাগ না করে তার ভূলগুলো তাকে বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন সে তার ভূল বুঝতে পেরেছে।

৭। বন্ধু হোন

শুনতে কিছুটা অদ্ভূত শোনালেও,এটি সত্য। সম্পর্কে বন্ধুত্ব  থাকাটা অনেক বেশি জরুরি। এতে সম্পর্কটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে বোঝাপোড়াটি ভাল হয়।

ছোট একটি ভূল বা ঝগড়ার কারণে একটি সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নিজেদেরকে সময় দিন, বোঝার চেষ্টা করুন। হঠাৎ কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

 

গান থামিয়ে তরুণীর ইজ্জত বাঁচালেন আতিফ

কনসার্ট চলছিল পুরোদমে। এমন সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে গায়ক আতিফ আসলাম খেয়াল করলেন দর্শক আসনে এক তরুণীকে হেনস্তা করছে কয়েকজন যুবক। সেই পরিস্থিতিতেই দারুণ সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

মাঝপথে গান থামিয়ে দিয়ে ওই তরুণীর বাঁচালেন তিনি। গায়ক আতিফ আসলামের এই কাজকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা বিশ্ব।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, ঘটনা গত শনিবারের (১৪ জানুয়ারি)। করাচিতে একটি অনুষ্ঠানে গান করছিলেন পাকিস্তানি এই গায়ক। অনুষ্ঠান চলাকালীন দর্শকদের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক বিষয় তার নজরে আসে। খেয়াল করে দেখেন কয়েকজন যুবক মিলে এক তরুণীকে উত্যক্ত করছে। তখনই তিনি তার সহ-শিল্পীদের থামিয়ে দেন। নিজেও গান থামিয়ে সোজা ওই যুবকদের কাছে চলে যান।

প্রচণ্ড ধমক দিয়ে জানতে চান, ‘কখনও মেয়ে দেখোনি? তোমাদের ঘরে মা-বোন নেই?’  গায়কের এই চিৎকারে স্তম্ভিত হয়ে যান উপস্থিত শ্রোতারা। চলে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। এরপরই ওই তরুণীকে তারা নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।

ঘটনা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ উদ্যোক্তাদের। তবে সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। বাহবা পাচ্ছেন আতিফ আসলামও।

 

নামাজের শারীরিক উপকারিতা

নামাজ ফরজ ইবাদাত। আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন সব মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। এ নামাজ পরকালের মুক্তি লাভের অন্যতম মাধ্যম। কারণ পরকালে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবে, তার পরবর্তী হিসাব সহজ হয়ে যাবে।

আবার নামাজ দুনিয়ায় সব ধরনের অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। শুধু তাই নয়, নামাজের মাধ্যমে নামাজি ব্যক্তি অনেক শারীরিক উপকার লাভ করে। যার কিছু তুলে ধরা হলো-

দাঁড়ানো
মানুষ যখন নামাজে দাঁড়ায়; তখন সব চোখ সিজদার স্থানে স্থির থাকে। ফলে মানুষের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

রুকু
নামাজি ব্যক্তি যখন রুকু করে এবং রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখন মানুষের কোমর ও হাঁটুর ভারসাম্য রক্ষা হয়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে কোমর ও হাটু ব্যাথা উপশম হয়।

সিজদা
নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন নামাজি ব্যক্তির মস্তিস্কে দ্রুত রক্ত প্রবাহিত হয়। ফলে তার স্মৃতি শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আবার সিজদা থেকে ওঠে যখন দুই সিজদার মাঝখানে বসে এতে তার পায়ের উরু ও হাঁট সংকোচন এবং প্রসরণ ঘটে। এতে করে মানুষের হাঁটু ও কোমরের ব্যথা উপশম হয়।

ওঠা বসা
নামাজের সময় নামাজি ব্যক্তিকে দাঁড়ানো, রুকুতে যাওয়া, রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে স্থির দাঁড়ানো, আবার সিজদায় যাওয়া, সিজদা থেকে ওঠে স্থিরভাবে বসা, আবার সিজদা দিয়ে দাঁড়ানো বা বসা। এ সবই মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। এতে মানুষের শারীরিক বহুবিদ উপকার সাধিত হয়।

মানসিকতার পরিবর্তন
নামাজের মাধ্যমে মানুষের মন ও মানসিকতায় অসাধারণ পরিবর্তন আসে। গোনাহ, ভয়, নীচুতা, হতাশা, অস্থিরতা, পেরেশানি ইত্যাদি দূরভীত হয়। ফলে বিশুদ্ধ মন নিয়ে সব কাজে সম্পৃক্ত হওয়া যায়।

দেহের কাঠামোগত উন্নতি
নামাজ মানুষের দেহের কাঠামোগত ভারসাম্যতা বজায় রাখে। ফলে স্থুলতা ও বিকলঙ্গতা হার কমে যায়। মানুষ যখন নামাজে নড়াচড়া করে তখন অঙ্গগুলো স্থানভেদে সংবর্ধিত, সংকুচিত হয়ে বিশেষ কাজ করে থাকে। অঙ্গ ও জোড়াগুলোর বর্ধন ও উন্নতি এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।

পরিচ্ছন্ন রাখে
নামাজের জন্য মানুষকে প্রতিদিন পাঁচবার অজু করতে হয়। আর এতে মানুষের ত্বক পরিষ্কার থাকে। ওজুর সময় মানুষের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার হয় য দ্বারা বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে মানুষ সুরক্ষিত থাকি।

চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি
নামাজের জন্য মানুষ যতবার অজু করে, ততবারই মানুষের মুখমণ্ডল ম্যাসেস হয়ে থাকে। যাতে মুখমণ্ডলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষের চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়, মুখের বলিরেখা ও মুখের দাগ কমে যায়।

বিশেষ করে…
নামাজ মানুষের মানসিক, স্নায়ুবিক, মনস্তাত্ত্বিক, অস্থিরতা, হতাশা-দুশ্চিন্তা, হার্ট অ্যাটাক, হাড়ের জোড়ার ব্যাথা, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর আলসার, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিস মেলিটাস,  চোখ এবং গলা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

হার্টের রোগীদের প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত,নামাজ মানুষকে সব সময় সতেজ রাখে, অলসতা এবং অবসাদগ্রস্ততাকে শরীরে বাড়তে দেয় না।

পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মধ্যে নামাজের মতো এমন সামগ্রিক ইবাদত আর নেই। নামাজির জন্য এটা একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, এটা একান্তই সামগ্রিক ব্যায়াম। যার প্রভাব মানুষের সব অঙ্গগুলোতে পড়ে এবং মানুষের প্রতিটি অঙ্গ নড়াচড়ার ফলে শক্তি সৃষ্টি হয় এবং সুস্বাস্থ্য অটুট থাকে।

পরিশেষে…
নামাজের উপকারিতায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ শুধু তাই নয়, নামাজ মানুষের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতা সাধনের অনন্য হাতিয়ার।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সময়মতো নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

হতাশা ভুলে বদলে দিন জীবনের পথ

জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকতে ভালবাসি আমরা সবাই। তবু জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সবকিছু অর্থহীন মনে হয়! ক্যারিয়ারের ব্যর্থতা মানসিকভাবে দূর্বল করে দিতে পারে আপনাকে। মনে হতে পারে আর কোন আশা নেই, আলো নেই। যখন আপনি ডুবে আছেন হতাশার অন্ধকারে তখনো পৃথিবীতে বিরাজ করছে সম্ভাবনা। তাই মুখ তুলে তাকান। জীবনকে সাজান আবার নতুন করে। অবলম্বন করুন এই কৌশলগুলো-

আগামীকাল বলে কিছু নেই, এমনভাবে ঘুমান 
আপনার শরীর একটি যন্ত্র। চমৎকার জটিল একটি যন্ত্র। আপনার কম্পিউটারটি যেমন সারাক্ষণ চালু রাখা যায় না, একে বিশ্রাম দিতে হয়, ঠিক তেমনি আপনার শরীরেরও প্রয়োজন বিশ্রামের। প্রতিরাতে নিজেকে নির্বিঘ্ন একটি ঘুম দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের সুন্দর ঘুম মস্তিষ্কে সারাদিনের জমে থাকা সকল টক্সিন দূর করে দেয়। এজন্যই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম আপনাকে তৈরি করে পরেরদিনের জন্য, আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি খুব প্রয়োজন। প্রতিদিনের ঘুমের সময়ের সাথে আরও ৩০ মিনিট যোগ করুন। দেখবেন, আপনার কাজের গতি বেড়ে গেছে, কাজ করতে ভাল লাগছে, ফ্রেশ মস্তিষ্ক থেকে নতুন নতুন আইডিয়া আসছে।

মনোযোগ দিয়ে খাবার গ্রহণ করুন
খাওয়ার সময় শুধু খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া একটি অনুশীলনের বিষয়। বিশেষ করে তখন যখন আপনি এক হাতে খাবার গ্রহণ এবং অন্য হাতে ইমেইল বা ম্যাসেঞ্জারে উত্তর দিতে ব্যস্ত থাকেন। আপনি মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছেন মানে হল, আপনি প্রতিটি খাদ্য উপাদানের স্বাদ গ্রহণ করছেন। এতে আপনি কী গ্রহণ করছেন আর কী বাদ রয়ে গেল প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা থেকে সে বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে। গবেষণায় দেখা গেছে, মনোযোগ দিয়ে খাওয়া আপনার মন ভাল রাখে, স্ট্রেস কমায়, বাড়তি ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করে।

ক্যাফেইন ত্যাগ করুন
ক্যাফেইন সরাসরি আপনার নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই কফি পান করলে আপনি তরতাজা অনুভব করেন, মস্তিষ্ক কাজ করছে বলে মনে হয়। কিন্তু আপনি যদি চরম হতাশাগ্রস্থ একজন মানুষ হোন এবং জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এই সাময়িক সমাধান আপনার জন্য নয়। প্রাকৃতিক এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান গ্রহণ করুন। শরীরচর্চা করুন, ধ্যান করুন। সকালে এক মগ কফি আপনাকে যতটা সতেজতা দেবে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরি হবে।

 

কর্মমূখী হোন

মনকে আবার জাগ্রত করুন, ফিরিয়ে আনুন কাজে। আপনি যখন হতাশাগ্রস্থ তখন কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যার্থতার সময়গুলোকে মনে করার কোন মানে নেই। এরচেয়ে বরং কাজ করুন। যখন আপনার চাকরি হচ্ছে না বা ব্যবসায় আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না তখন এই সময়টাকে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজে লাগান। আবার নতুন করে নির্ধারণ করুন আপনার লক্ষ্য। ফোকাস করুন। সকাল শুরু করুন শরীরচর্চা দিয়ে। সফল মানুষেরা নিজেকে কর্মমূখী করেছেন সকাল থেকেই। ধীরে কাজ করা আপনার মস্তিষ্ককে ঝিমিয়ে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট বেশী কাজ করতে শুরু করুন।

 

নীরবতার শান্তিকে গ্রহণ করুন
মনকে শান্ত করতে আমরা কত কি না করি। আপনার নানান দিকে খরচ করা টাকা এবং সময় উভয়ই বেঁচে যাবে আপনি যদি শান্তির জন্য সঠিক পথটি বেছে নিতে পারেন। মনের ক্ষত দূর করা, শান্ত-পরিশুদ্ধ করা, আবারও উজ্জ্বীবিত করার চাবি আছে আপনারই হাতে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় মেডিটেশন করেন তারা খুজে পান নিজের মাঝেই শান্তি বা ইনার পিস। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট মেডিটেশন আপনার পুরো দিনটিকেই ঝরঝরে উজ্জ্বল করে দেবে। রাতে ভাল ঘুম হবে, কমে যাবে উদ্বিগ্নতা, হতাশা। মস্তিষ্ক কাজ করবে আরও চমৎকারভাবে।

স্বাস্থ্যকর ত্বকের রুটিন
ত্বক ভাল থাকলে মনও ভাল থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অনেক সময় প্রয়োজন। একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অন্তত ২১ দিন সময় লাগে। আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে চান তাহলে কষ্ট করে নির্দিষ্ট সময়টিতে ২১ দিন উঠুন। এরপর আর কষ্ট হবে না। এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যাবে আপনার। একইভাবে শরীরের সুস্থতা, ত্বকের যত্ন পরিণত হতে পারে একটি অভ্যাসে। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করুন। ত্বকের ধরণ বুঝে মনোযোগের সাথে এর যত্ন নিন।

 

অহমের জন্য নয় আত্মার শান্তির জন্য কাজ করুন
কাজ সেটাই করুন যেটা করতে আপনার ভাল লাগে। কোন কাজ করে আপনি সফলতার শিরোপা জয় করতে পারবেন বা বিখ্যাত হবেন সেই তৃষ্ণা থেকে কাজ না করে আত্মার তুষ্টির জন্য কাজ করুন। আপনার কাজ যখন আপনার মনে যোগ করবে শান্তি, আনন্দ তখন আপনি এমনিই ভাল থাকবেন। সফল হওয়া মানেই কোটিপতি হওয়া নয়। আপনি তখনি সফল যখন আপনি সন্তুষ্ট।

মনের কথা শুনুন
আমরা অনেক সময় টের পাই না আমাদের কী প্রয়োজন, কিন্তু টের পায় আমাদের শরীর। খুব ঘুম পাচ্ছে? ছোট একটি ন্যাপ নিন। দৈনন্দিন জীবন অসহ্য লাগছে? কোথাও ঘুরে আসুন। যখনই মনে হচ্ছে কিছু ঠিক নেই, তখনই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন কী চাই! জীবন হোক উপভোগের, টিকে থাকার লড়াই নয়।

জীবনের হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে জীবনকে দিন একটি নতুন শুরু। জেগে উঠুন। সবার আগে গুছিয়ে নিন আপনাকে। নিজেকে ভালোবেসে শুরু করুন আবার। গড়ে তুলুন সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মানুষটিকে যাকে হারাতে পারবে না কেউ।

সূত্র: ব্রাইটসাইড

 

পানির অপর নাম আনুরার জীবন

ক্লান্ত শহরটি নীরব-নিঝুম, সবাই তখন ঘুমের ঘোরে। এ রকম একটি সময়ে জেগে ওঠেন একজন নারী। সময়-সংসার তাঁকে যেন তাড়া করে। ঘুমিয়ে থাকলে চলে না তাঁর। তিনি মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজার এলাকার আনুরা বেগম। বয়স কত! এটা বলা তাঁর কাছে কঠিন। তবু জানান পঞ্চাশ, হয়তোবা তার কাছাকাছি।

আনুরার শুধু এটুকু মনে আছে, ১৩ কি ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল একজন ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারীর সঙ্গে। মূল বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তবে বিয়ের পর থেকে মৌলভীবাজারেই বসবাস। সংসার চলছিল ভালোই। সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়েও এসে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ছেদ পড়ে। প্রায় ১৯ বছর আগে মারা যান স্বামী। এর এক-দুই বছর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্বামী শিক্ষক ছিলেন। এই সংসারে এল দুই কন্যা। কোনোভাবে ঠেলেঠুলে সন্তানদের নিয়ে সংসার চলছিল। ছেলেমেয়েরাও বড় হচ্ছিল। দ্বিতীয় স্বামীও একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এত দিন দুজনের শ্রমে, আয়-উপার্জনে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে যে সংসার চলছিল, সেই সংসারের পুরোটাই ঝুপ করে আনুরার কাঁধে এসে পড়ে।

ছেলেমেয়েদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করা। ছোট মেয়ে দুটোকে লেখাপড়া করানো। কী করবেন, ভেবে কোনো দিশা মিলছিল না। একসময় চার দেয়ালের ভেতর আর তাঁর থাকা সম্ভব হলো না। দেয়াল তাঁকে ভাঙতেই হলো। হাতের কাছে যা পেলেন, তাই মনে হলো আকাশের চাঁদ। এটা প্রায় সাত বছর আগের কথা। শুরু করলেন মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার এলাকার কাঁচাবাজারের শাকসবজির দোকান ও আশপাশের ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁয় পানি বিক্রি।

প্রথম দিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি এনে বিক্রি করতেন। পরে অনেকেই আর বিনি পয়সায় পানি দিতে চাইল না। এক জায়গা থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকার পানি কিনতেন। সেই পানি ড্রামে করে দোকানে দোকানে পৌঁছে দিতেন। প্রতিদিন রোজগারের ১০০ টাকা চলে যাওয়ায় মনটা খচখচ করে। টাকাটা বাঁচানো গেলে সংসারের কাজে আসত। একদিন এলাকার কাউন্সিলর অলিউর রহমানকে বিষয়টি জানালেন। কাউন্সিলর দুই হাজার টাকা দিলে নিজের মতো করে পানি নেওয়ার একটা ব্যবস্থা করলেন।

প্রতিদিন রাত তিনটায় ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা তখনো ঘুমে। পানির লাইনের কাছে ছুটে যান। দু-একজন নৈশপ্রহরী ছাড়া আর কোনো জনমানুষ তখন থাকে না। এরপর একটা একটা করে ছোট-বড় ড্রাম ভরে তা রিকশাভ্যানে সাজিয়ে তোলেন। ড্রামগুলো পানিতে ভরে গেলে ভ্যান ঠেলে নিয়ে আসেন বাজারের কাছে। তখনো দোকানিরা আসেন না। আনুরা বেগম নির্দিষ্ট স্থানে রাখা পানির পাত্র ভরে রাখেন। সকাল নয়টা পর্যন্ত তাঁর এই পানি সরবরাহের কাজ চলে। সব কটি স্থানে পানি ভরা শেষ হলে তাঁর দিনের ছুটি। পানির পাত্র অনুযায়ী মেলে দাম। নিচে ৫ টাকা এবং ওপরে ৪০ টাকা। এতে প্রতিদিন তাঁর ৫০০ টাকার মতো আয় হয়। এই পানি বেঁচেই এখন তাঁর সংসার চলে। দুই মেয়ের একজন পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, একজন সপ্তম শ্রেণিতে। এ থেকেই তাদের পড়ালেখার খরচ জোগান। বড় ছেলেটি অসুস্থ। তার ছেলেমেয়েকেও দেখাশোনা করতে হচ্ছে। দুই কাঁধে অনেক দায় তাঁর।

আনুরা বেগম বলেন, ‘সাত বছর ধরি এই কাজ করছি। মানুষের ছুটিছাটা আছে। আমার ঈদে-চান্দেও রেস্ট নাই। জীবনে তো কিচ্ছু নাই। কষ্ট করি বাইচ্চাইনতোরে পাড়াইতেছি। বাইচ্চাইনতর লাগিই এই কষ্ট কররাম। তবে এখন ব্যবসা নাই। দোকান কমে গেছে। আয়টাও তাই বাড়ছে না।’

রাতজাগা আর জলভেজা শীত-বর্ষার এই জীবন তাঁর চেহারায় ক্লান্তির ছাপ ফেলেই রেখেছে। কিন্তু কথা বলেন হেসেখেলেই। হয়তো তিনি ধরেই নিয়েছেন পানি চক্রের এই জীবন থেকে তাঁর বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এই পথ ধরেই যে তাঁকে বাকি জীবনের অনেকটা পথ যেতে হবে।

 

সহজেই রাঁধুন দরবারি মোরগ পোলাও

মোরগ পোলাও মানেই রাজকীয় একটা ভাব। বিয়েবাড়িতে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে মোরগ পোলাও না হলে যেন চলেই না। তবে সবসময় অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেই তৈরি করতে পারেন মজাদার এই খাবারটি। রেসিপি জানা নেই? রইলো রেসিপি-

উপকরণ : মোরগ অথবা মুরগি একটি, বাসমতি চাল ৫০০ গ্রাম, ঘি এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা এক টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, কিসমিস এক টেবিল চামচ, কাজুবাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা এক টেবিল চামচ, শাহী জিরা এক চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, জাফরান এক চিমটি, লবণ স্বাদমতো, ঘন দুধ এক কাপ, চিনি সামান্য, বেরেস্তা আধা কাপ, গোলাপ জল এক চা চামচ।

প্রণালি : মোরগ/মুরগির সঙ্গে সব মশলা মেখে এক ঘণ্টা রেখে দিন। প্যানে ঘি দিয়ে মোরগ/মুরগিটা রান্না করুন। অন্য একটা পাত্রে পোলাও রান্না করে নিন। অর্ধেকটা পোলাও তুলে এর ভেতরে মোরগ/মুরগিটা দিন। এবার বেরেস্তা, ঘি, কিসমিস, পোলাও, দুধ ও ঘি উপরে জাফরান, গোলাপজল দিয়ে মুখ ঢেকে ১৫ মিনিট দমে রাখুন।

 

শীতের দিনের পার্টি সাজ

শীত মানেই নানা রকম পার্টি আর দাওয়াত। যারা সাজতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত সময়। শীতের সময়ে ঘেমে যাওয়ার ভয় থাকে না বলেই মনের মতো সাজগোজ করা যায়। তবে দিনের আলোতে একটু হালকা আর রাতের কৃত্রিম আলোতে একটু ঝলমলে সাজেই আপনাকে বেশি সুন্দর লাগবে। দিনের বেলা সাজের ক্ষেত্রে হালকা ধরনের মেকআপই আপনাকে অনন্য সাধারণ করে তুলবে।

মুখটা ভালো করে পরিষ্কার করে হালকা ফেস পাউডার বুলিয়ে নিন। পার্টির আমেজ আনতে চিরচেনা কাজলই একটু গাঢ় করে চোখের কোলে বুলিয়ে নিন। আপনার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে নানা রঙের পেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সবার আগে লক্ষ্য রাখবেন কোন রঙ আপনাকে মানায়। চোখের বাইরে কাজল দিলে মাশকারা ও আইলাইনার না দিলেও চলবে।

আপনার পোশাকের রঙের আইশ্যাডো ব্লেন্ড করেও দিতে পারেন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে প্রথমে একই রঙের লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট সুন্দর করে এঁকে নিয়ে লিপস্টিক দিয়ে ভরাট করে দিন। আপনি যদি গ্লসি পছন্দ করেন তবে এর উপরে নরমাল কালারের লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। চুলের স্টাইল নির্ভর করবে আপনার পোশাকের ওপর।

যদি শাড়ি পরেন তাহলে হাত খোঁপা করে চুলে ফুল লাগাতে পারেন। যা আপনাকে স্নিগ্ধতা এনে দেবে। আর আপনার চুল যদি ছোট হয় তাহলে ছেড়ে দিতে পারেন। এখন চলছে চুল রিবন্ডিং করার ট্রেন্ড। তাই অনুষ্ঠানের আগে ভালো হেয়ার আয়রন দিয়ে চুলটা সোজা করে নিতে পারেন।

ভারী গহনা বাদ দিয়ে পরতে পারেন মেটাল, এন্টিক, রূপার গহনা। অন্যরকম লুকের জন্য মাটির গহনাও দারুণ। শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরুন চুড়ি অথবা ব্রেসলেট।

 

সুখ খুঁজে নেয়ার উপায়

সুখ খুঁজে পাবার জন্য দূরে কোথাও যেতে হয় না। এর জন্য প্রয়োজন কিছুটা নিজের জন্য সময় আর আশেপাশের সুন্দর পরিবেশ। আপনি হয়তো কখনো মনের অজান্তেই নিজের সুখকে দুঃখতে পরিণত করে দেন। আর এই ব্যস্ত জীবনে নিজেকে সুখী রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। কাজটি কঠিন হলেও খুব সহজ কিছু পদ্ধতিতে আপনি হাসিখুশি থাকতে পারবেন। তাই নিজেকে সুখী রাখতে সুখ সুখ করে সুখের পেছনে না ঘুরে একটু সময় নিয়ে ভাবুন। আপনি ঠিক কোন কাজটি দিয়ে দুঃখ পাচ্ছেন।

উপায়
উপায় হচ্ছে সেই শব্দ যা দিয়ে আপনি আপনার সুখের সন্ধান পেতে পারেন। আপনি যখন কোনো কিছুর জন্য পথ খুঁজে না পান তখন এই উপায় শব্দটি হয়ে থাকে আপনার একমাত্র অবলম্বন। তাই যখন আপনি অনুভব করবেন যে আপনি সুখে নেই ঠিক সেই সময়েই তার কারণ খুঁজে বের করুন। কারণ খুঁজে বের করার পরের যে কাজটি আপনি করবেন তা হচ্ছে তাকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করা। যদিও কাজটি এত সহজ না, এরপরেও আপনাকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের মাঝে মন খারাপ হলে একটি ব্যাপার কাজ করে আর তা হচ্ছে মন খারাপ নিয়ে বসে থাকা। এটি কোনো উপায় হতে পারেন না। তাই মন ভালো করার উপায় আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে।

স্রোতে গা না ভাসনো
কারো মুখে আপনার প্রশংসা শুনলেন, এতেই আপনি বিমোহত হয়ে যাবেন না। কারণ যে মানুষটি আপনাকে প্রশংসার সাগরে ভাসাতে পারে সে পরক্ষণেই পারে আপনাকে সমস্যা এবং দুঃখের সাগরে ফেলতে। তাই কারো কথার মাঝে সুখকে খুঁজে ফিরবেন না। আপনিই আপনার সুখের মালিক। তাই যতো খারাপ অবস্থাই যাক আপনার মাঝে এতটুকু শক্তি রাখুন যে আপনাকে দিয়ে সুখের মুখ দেখা সম্ভব।

মন্ত্র
যে কাজগুলো করতে ভালোবাসেন তা করতে থাকুন। কখনো কারো জন্য নিজের সুখের কারণ থেকে দূরে সরে আসবেন না। মন দিয়ে নিজের কাজটাই করুন তবে খেয়াল রাখবেন তা যেন কারো ক্ষতির কারণ না হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটি আপনাকে যেমন সুস্বাস্থ্যর অধিকারী করে রাখবে তেমনই আপনাকে সুখে থাকতেও সাহায্য করবে নানা ভাবে।

 

ঘরের ভেতরকার পরিবেশ ভালো রাখবেন যেভাবে

আপনি সারাদিন যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, দিন শেষে আপনার ঘরটাই হয়ে থাকে আপনার ক্লান্ত দিনের শেষ আশ্রয়। তবে সেই আশ্রয়টি যদি সুন্দরভাবে না থাকে তবে তাতে যারা বসবাস করে কিংবা একটা লম্বা সময় ধরে থাকে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া ঘরের কিংবা বাড়ির অভ্যান্তরীণ আবহাওয়া ভালো না থাকলে তা সরাসরি মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনার ভালো মনকে খারাপ করে দিতে ঘরের গুমোট আবহাওয়াই যথেষ্ট।

ভ্যান্টিলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন
আবহাওয়া চলাচলের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে জানালা কিংবা ভ্যান্টিলেটর। এসব জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে এবং বাড়ির জানালা বড় না থাকলে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস ঘরে প্রবেশ করে না। এর ফলে ঘরে বাসা বাঁধে অসুখ। তাই প্রতি সপ্তাহে সময় করে একটি নির্দিষ্ট দিনে ভ্যান্টেলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন। এতে আপনার আশেপাশের পরিবেশ এবং আপনার ঘরের ভেতরের পরিবেশ থাকবে সুন্দর।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন
ধূমপানের কারণে ঘরের ভেতরের আবহাওয়াতে পরিবর্তন আসে। এর নিকোটিন এবং ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শিশুদের মানসিক অবস্থার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এছাড়া ঘরের ভেতরে একটি বাজে পরিবেশ সৃষ্টি করে। এমন আবহাওয়াতে ছোট শিশুরা এবং গর্ভবতী মায়েরা থাকে তাদের স্বাস্থ্যর সাথে সাথে মানসিক অবস্থাতেও মারাত্মক হানি ঘটে। তাই ঘরের ভেতরে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

ময়লা আবর্জনা
ময়লা আবর্জনা যাতে ঘরে জমে না থাকে তার প্রতি খেয়াল রাখুন। এটি আপনার ঘরের সৌন্দর্যের যেমন বারোটা বাজাবে তেমনই আপনার ঘরের অভ্যান্তরীণ আবহাওয়ারও। আর এই অপরিষ্কার আবহাওয়াতে যাদের শরীর সবার আগে খারাপ হয় তারা হচ্ছে বয়স্ক এবং শিশুরা। তাই ঘরের আবহাওয়ার পাশাপাশি পরিষ্কারের দিকেও নজর দিন।

প্রতিদিনের যত্ন
অনেকেই মনে করেন সপ্তাহে কিংবা মাসে একটু ঝেরে মুছে রাখলেই ঘরের পরিবেশ সুন্দর থাকবে। যা মোটেও ঠিক নয়। তাই প্রতিদিন আপনার খাবার টেবিল, চেয়ার, ফ্যান, জানাল এবং পর্দা ঝেরে মুছে রাখুন। এতে আপনি যেমন ভালো থাকবেন ঠিক তেমনই ভালো থাকবে আপনার আশেপাশের মানুষগুলো।

 

শাহী কোপ্তা কোরমা তৈরির রেসিপি

অতিথি আপ্যায়নে কিংবা বিভিন্ন উৎসবে রান্না হয়ে থাকে নানা সুস্বাদু খাবার। তেমনই একটি পদ হলো শাহী কোপ্তা কোরমা। রেসিপি জানা থাকলে খুব সহজেই তৈরি করা যায় এটি। তাই বাড়িতে অতিথি এলেও আপ্যায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। চলুন শিখে নেই-

উপকরণ :
কোপ্তার জন্য : গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, পাউরুটি দুই পিস, আদা ও রসুন বাটা দুই চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিজ আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, মরিচ কুচি ৫টি।

গ্রেভির জন্য : টকদই আধা কাপ, ঘন দুধ এক কাপ, জাফরান একটি, ঘি এক টেবিল চামচ, ফ্রেশ ক্রিম আধা কাপ, বাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, কিসমিস বাটা এক টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, আদা বাটা এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, এলাচ ৪টি, দারুচিনি দুটি।

প্রণালি :
কোপ্তার সব উপকরণ দিয়ে মেখে বল করে ভেতরে চিজ দিয়ে ভেজে নিন। কড়াইতে ঘি, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজ ভেজে অন্যসব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে তরল দুধ দিন। ফুটে উঠলে কোপ্তা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। দুধে ভেজানো জাফরান দিন। ফ্রেশ ক্রিম দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

মেঝে ঝকঝকে রাখার উপায়

দিনশেষে ঘরই আমাদের ঠিকানা। হাজারটা ব্যস্ততার পরে একটুকরো অবসরে সবাই চায় নিজের ঘরটিতে বিশ্রাম নিতে। আর সেই ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও থাকে ফুরফুরে। নানা কারণেই ঘরের মেঝে নোংরা হতে পারে। সুন্দর ঘরের প্রথম শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার মেঝে। মেঝে ঝকঝকে না হলে ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। চলুন জেনে নিই ঘরের মেঝে পরিষ্কার রাখার কিছু সহজ উপায়-

মোছার সময় হালকা গরম পানিতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল জাতীয় লিক্যুইড ব্যবহার করুন। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের এ লিকুইড ক্লিনার পাওয়া যাচ্ছে। আর এ লিকুইড ব্যবহার করলে আরশোলা, মশা এবং মাছির উপদ্রব কমে যাবে।

প্রতিদিন ক্লিনার দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। এরপর নরম কাপড় বা দিয়ে ভালো করে মুছে নিন। কারণ খসখসে কাপড় ব্যবহার করলে মেঝেতে অ্যাচ পড়ে যেতে পারে।

অনেক সময় মার্বেলের মেঝেতে অসাবধানতার কারণে চা-কফি পড়ে গিয়ে দাগ বসে যায়। চিন্তার কারণ নেই। আমাদের প্রায় সবার ঘরেই ভিনেগার থাকে। তাই এক ভাগ সাদা ভিনেগারের সঙ্গে দু’ভাগ পানি মিশিয় স্প্রে বোতলে ভরে দাগের ওপর স্প্রে করুন। কিছুক্ষণ পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চা বা কফির দাগ চলে যাবে।

দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পর সাদা মার্বেলের মেঝে হলুদ হয়ে যায়। তাই তারপিন তেলে অল্প লবণ মিশিয়ে ভালো করে মার্বেলের ওপর মুছে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, দেখবেন সাদা রং আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

টাইলসের মেঝেতে অনেক সময় দাগ বসে গিয়ে আঠালো হয়ে যায়। এরকম অবস্থায় দাগ তোলার জন্য হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে টাইলসের মেঝে মুছে নিন। লবণ ও পানি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। দেখুন আপনার মেঝে কেমন ঝকঝক করছে।

 

চুল পড়া রোধ করবে যে তেল

সুস্থ ও সুন্দর চুলের আকাঙ্ক্ষা থাকে সবারই। আর তাই নানা উপায়ে নেয়া হয় চুলের যত্ন। চুলের যত্নে সাধারণত বাজারের নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চুল পড়া রোধ করতে বেশ কার্যকর আমলকীর তেল। চুল পড়া প্রতিরোধে এই তেলটি ব্যবহার করতে পারেন।

যারা সময়ের অভাবে চুলের যত্ন নিতে পারছেন না, তারাও ব্যবহার করতে পারেন আমলকির তেল। খুব সহজে মাত্র দুটি উপাদান দিয়ে এই তেলটি তৈরি করা সম্ভব।

এক কাপ নারকেল তেল ৪-৫ মিনিট জ্বাল দিন। এর সাথে শুকনো আমলকী দিয়ে দিন। আমলকীসহ এই তেল জ্বাল দিতে থাকুন। বাদামী রং হয়ে আসলে চুলা থেকে এটি নামিয়ে ফেলুন। এরপর তেলটি ছেঁকে আমলকী থেকে আলাদা করে নিন।

তেলটি মাথায় কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করে লাগান। সারা রাত রাখুন, পরের দিন শ্যাম্পু করে ফেলুন।

আমলকির তেল শুধু নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না। মাথার তালুতে রক্ত চলাচলও বৃদ্ধি করে থাকে। আমলকী চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন।