banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

নখের পচন রোধের উপায়

বর্ষার এই মৌসুমে ইচ্ছা না থাকলেও নোংরা পানিতে হাঁটতে বাধ্য হন। এতে জুতার সঙ্গে পায়ের নখের অবস্থা হয় শোচনীয়। ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারে। তখন বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখটি স্বাভাবিকের চেয়ে মোটা হয়ে যায়। নখে পচন ধরে, কাটতে অসুবিধা হয়, হলুদ বা বাদামী বর্ণ ধারণ করে। নখের নিচের মাংস শুকিয়ে আলগা হয়ে সহজেই ভেঙে যায়।

নখ ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হলে দেখতে বিশ্রী লাগে এবং সারিয়ে তোলাও বেশ কঠিন। একে অনকোমাইকোসিস বলা হয়। হাতের নখে সমস্যাটি হতে পারে তবে পায়ের নখেই বেশি হয়ে থাকে। উপায় জানা থাকলে এই সমস্যা ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে সারিয়ে তোলা যায়। আসুন জেনে নেই সেই ঘরোয়া উপায় গুলো।

ভিনেগার ও বেকিং সোডা

বেকিং সোডা ছত্রাক নাশক না কিন্তু ছত্রাকের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করতে পারে। অপরদিকে ভিনেগার কিছুটা অ্যাসিডিক যা ত্বকের পিএইচ লেভেলের বিশেষ কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ছত্রাক ধ্বংস করতে পারে। একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ কাপ ভিনেগার ও এক লিটার পানি মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে আবার নতুন করে পানি ও কয়েক চামচ বেকিং সোডার মিশ্রণে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করতে হবে সপ্তাহ দুয়েক। কাঙ্ক্ষিত উপকার পাবেন।

নারিকেল তেল

ফ্যাটি অ্যাসিড খুব ভালো ছত্রাক নাশক। নারিকেল তেলে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা ছত্রাকের দেহের লিপিড স্তরে প্রবেশ করে ভেতর থেকে ছত্রাককে ধ্বংস করে। দিনে দুই তিনবার নারিকেল তেল লাগালে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন।

মাউথ ওয়াশ

মাউথ ওয়াশ যেভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারে ঠিক সেভাবে নখের ছত্রাকও নাশ করতে পারে। মাউথ ওয়াশের অ্যালকোহল শক্তিশালী অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। একটি বোলে মাউথ ওয়াশ নিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এভাবে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে পায়ের নখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর পানি মুছে শুকিয়ে নিন। দিনে ১ থেকে ২ বার এভাবে করুন যতদিন না ভালো হয়।

 

সন্তানকে অযথা অভিশাপ দিলে কী হয়?

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না।

মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। আমাদের পাড়ার রাকিবের মা পানিতে ডুবে মরা কিশোর সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে পাগলপারা হয়ে কাঁদছেন। মায়ের বাঁধভাঙ্গা কান্না আর বিলাপ শুনে উপস্থিত কারো পক্ষেই চোখের পানি সংবরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি কাঁদছেন আর বিলাপ করে বলছেন, ‘ও বাবুর আব্বু তুমি আমাকে মেরে ফেল। আমিই তোমার সন্তানকে হত্যা করেছি। গতকালই ওর জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আমি বলেছি, ‘তুই মরিস না; মরলে দশটা ফকিরকে খাওয়াতাম।’

হ্যা, সত্যিই তিনি আগেরদিন ছেলেটির দুরন্তপনায় অস্থির হয়ে এমন বলেছিলেন। তখন একজন পাগলেরও ভাবার অবকাশ ছিল না যে গর্ভধারিণী মা সত্যিই তার সন্তানের অমঙ্গল কামনা করছেন। কিন্তু অসচেতনভাবে কামনা করা দুর্ঘটনাও কখনো সত্য হয়ে দেখা দিতে পারে। রাকিবের মা গতকাল রাগের মাথায় যে কথা উচ্চারণ করেছিলেন কে জানত আজই তা বাস্তব হয়ে দেখা দেবে।

ঘটনা হলো, সেদিন দুপুরে ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল। তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে একরকম জিদ করেই সে মায়ের কাছ থেকে ছুটে গিয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজতে। বাড়ির বাইরে এসে সে আশপাশের সমবয়সী আরও কয়েকটি কিশোরকে পেয়ে যায়। সবাই মিলে কোন বুদ্ধিতে যেন দল বেঁধে যায় পাশের মহল্লার একটি নতুন পুকুরে গোসল করতে। সেখানে গিয়ে সবার আগে সে-ই লাফ দেই পুকুরে। অবুঝ কিশোর ঠিক বুঝতে পারেনি লাফ দিলে পুকুরের প্রায় গভীরে গিয়ে পৌঁছবে সে। যেখানে সাঁতার না জানা একটি কিশোরের জন্য অপেক্ষা করছে অবধারিত মৃত্যু। ঘটনা যা হবার তাই হল। বাচ্চাগুলোর চোখের সামনেই সে পানিতে ডুবল। ওরা ভাবল সে বুঝি তাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। কিছুক্ষণ পর তারা ওকে না পেয়ে ভয়ে আশপাশের লোকদের ডেকে আনল। ততক্ষণে অবশ্য তার ক্ষুদেকায় দেহ থেকে প্রাণপাখি উড়াল দিয়েছে।

মা তার সন্তানকে অবর্ণনীয় কষ্টে গর্ভে ধারণ করেন। অমানুষিক কষ্টে পৃথিবীর আলো-বাতাসে আনেন। তারপর নিজের ভালোবাসা আর ত্যাগের সবটুকু উজাড় করে অসহায় একটি শিশুকে যথাক্রমে সুস্থ, সবল, সজ্ঞান ও স্বাবলম্বী করে তোলেন। সন্তান মানুষ করতে গিয়ে বাবা-মাকে যে কতটুকু কষ্ট সহ্য করতে হয় তা শুধু বাবা-মায়েরাই জানেন। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে এ কষ্ট আরও বেশি। এখানে রোজ দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে লড়াই করে মানুষকে টিকে থাকতে হয়।

অভাবের কারণে একজন নবীন মাকেও একহাতে সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব আর অপরহাতে বুকের ধন সন্তানটিকে আগলাতে হয়। অনেক মা আছেন যারা সময়মত বাচ্চার খাবারটিও যোগাতে পারেন না রুচিমত। বিশেষত যেসব বাচ্চা জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ পায় না। দরিদ্র পরিবারে এসব শিশুকে যে কত কষ্টে মা জননী বড় করে তোলেন তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। এ সময় মায়েদের অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রয়োজন হয়।

অথচ প্রগলভ চরিত্রের অনেক মা’কে এ সময় ধৈর্যহারাও হতে দেখা যায়। অনেক মা সন্তানের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে অবলীলায় অভিশাপ দিয়ে দিয়ে বসেন। স্নেহময়ী জননী হয়তো তার জীবনের বিনিময়ে হলেও সন্তানের যে কোনো অনিষ্ট রোধ করতে চাইবেন। কিন্তু তিনিই আবার রাগের মাথায় অবচেতনে আদরের সন্তানটির অনিষ্ট কামনা করে বসেন। গ্রাম-বাংলায় প্রায়ই দেখা যায় সন্তানদের দুরন্তপনা বা দুষ্টুমিতে নাকাল হয়ে অনেক মা সরাসরি বাচ্চার মৃত্যু কামনা করে বসেন। ‘তুই মরিস না’, ‘তুই মরলে ফকিররে একবেলা ভরপেট খাওয়াতাম’, ‘আল্লাহ, আমি আর পারিনে’, ‘এর জ্বালা থেকে আমাকে নিস্তার দাও’- এ জাতীয় বাক্য আমরা অহরহই শুনতে পাই। বিশেষত কৈশোরে এসে গ্রাম-বাংলার শিশুদের দুরন্তপনা কখনো সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফলে কিশোর সন্তানকে উদ্দেশ করেই সাধারণত মায়েরা এমন অসহিষ্ণু বাক্যোচ্চারণ করে থাকেন। তাই এ সময় মাকে অনেক বেশি ত্যাগ ও ধৈর্যের পারাকাষ্ঠা দেখাতে হয়।

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না। জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى غَزْوَةِ بَطْنِ بُوَاطٍ وَهُوَ يَطْلُبُ الْمَجْدِىَّ بْنَ عَمْرٍو الْجُهَنِىَّ وَكَانَ النَّاضِحُ يَعْتَقِبُهُ مِنَّا الْخَمْسَةُ وَالسِّتَّةُ وَالسَّبْعَةُ فَدَارَتْ عُقْبَةُ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ عَلَى نَاضِحٍ لَهُ فَأَنَاخَهُ فَرَكِبَهُ ثُمَّ بَعَثَهُ فَتَلَدَّنَ عَلَيْهِ بَعْضَ التَّلَدُّنِ فَقَالَ لَهُ شَأْ لَعَنَكَ اللَّهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ هَذَا اللاَّعِنُ بَعِيرَهُ ». قَالَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ « انْزِلْ عَنْهُ فَلاَ تَصْحَبْنَا بِمَلْعُونٍ لاَ تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَوْلاَدِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَمْوَالِكُمْ لاَ تُوَافِقُوا مِنَ اللَّهِ سَاعَةً يُسْأَلُ فِيهَا عَطَاءٌ فَيَسْتَجِيبُ لَكُمْ ».

বাতনে বুওয়াত যুদ্ধের সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে পথ চলছিলাম। তিনি মাজদী ইবন ‘আমর জুহানীকে খুঁজছিলেন। পানি বহনকারী উটগুলোর পেছনে আমাদের মধ্য থেকে পাঁচজন, ছয়জন ও সাতজন করে পথ চলছিল। উকবা নামক এক আনসারী ব্যক্তি তাঁর উটের পাশ দিয়ে চক্কর দিল এবং তাকে থামাল। তারপর তার পিঠে উঠে আবার তাকে চলতে নির্দেশ দিল। উটটি তখন একেবারে নিশ্চয় হয়ে গেল। তিনি তখন বললেন ধুত্তুরি। তোর ওপর আল্লাহর অভিশাপ। এ শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিজের উটকে অভিশাপদাতা এই ব্যক্তিটা কে? তিনি বললেন, আমি হে আল্লাহর রাসূল। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘তুমি এর পিঠ থেকে নামো। তুমি আমাদের কোনো অভিশপ্তের সঙ্গী করো না। তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, তোমাদের সন্তান-সন্তুতির এবং তোমাদের সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করো না। তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন মুহূর্তের জ্ঞানপ্রাপ্ত নও, যখন যা কিছুই চাওয়া হয় তিনি তোমাদের তা দিয়ে দেবেন।’ [মুসলিম : ৭৭০৫]

হাদীসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, অর্থাৎ তোমরা কোনো মুহূর্তেই নিজের বিরুদ্ধে, নিজের সন্তান বা সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করো না। কারণ, হতে পারে যে সময় তুমি দু‘আ করছো, তা দিনের মধ্যে ওই সময় যখন যা-ই দু‘আ করা হোক না কেন তা কবুল করা হয়। তোমরা তো এ সময় সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান প্রাপ্ত নও। (মুবারকপুরী, মিরআতুল মাফাতীহ : ৭/৭০৩)

হাদীসটি বর্ণনা করে আরেক ব্যাখ্যাকার বলেন,

فالحديث يدل على النهي عن كون الإنسان يدعو على أهله وماله، وذلك عندما يحصل له غضب فيحصل منه الدعاء، وهو مشتمل أيضاً على بيان العلة والحكمة في ذلك، وأنه قد يكون هذا الدعاء يوافق ساعة إجابة فيستجاب للإنسان فيما سأل من الشر أو من الشيء الذي لا ينبغي لأهله وماله.

‘হাদীসটি রাগের মাথায় মানুষের তার পরিবার ও সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করার নিষিদ্ধতা প্রমাণ করে। হাদীসটি এর কারণও তুলে ধরে। আর তা হলো, এ দু‘আটি কবুলের বিশেষ মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে। ফলে মানুষের সবই কবুল হয়ে যায় চাই তা ভালো হোক বা মন্দ, যা সে তার পরিবার বা সম্পদের ক্ষেত্রে প্রত্যাশা করে না।’ [আবদুল মুহসিন, শারহু সুনান আবী দাউদ : ৮/২৮৮]

নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে দু‘আ করার অর্থ তো নিজেই নিজেকে হত্যার তথা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ

‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৯৫}

অতএব প্রতিটি মাকে ভেবে দেখতে হবে, আমার রাগের মাথায় উচ্চারণ করা বাক্য যদি সত্যে পরিণত তাহলে কেমন লাগবে? আমি কি তা সহ্য করতে পারব? এ জন্য রাগের মাথায়ও কখনো সন্তানের অমঙ্গল কামনা করা যাবে না। প্রসঙ্গত বলা দরকার যে শুধু মায়েদেরই নয়, আমাদের সবারই উচিত নিজের, নিজের সন্তান ও সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করা থেকে সংযত হওয়া। রাগের সময় সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেওয়া।

আর মেয়েদের সবিশেষভাবে বলতে চাই, মা, আপনি অনেক সয়েছেন, অনেক সবর করেছেন, আরেকটু সবর করুন। রাগের মাথায় সন্তানকে অভিশাপ দেয়া থেকে সংযত থাকুন। আল্লাহ আপনার সহায় হোন। আমীন।

আলী হাসান তৈয়ব
সহ-সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

শ্রাবন্তীর বাগদান সম্পন্ন

অবশেষে বাগদানটা সেরেই ফেললেন টালিগঞ্জের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। পাত্র সুপার মডেল কৃষাণ ব্রজ। রোববার বাগদানের মধ্য দিয়েই তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বাগদানে শ্রাবন্তীর ছেলে ঝিনুকসহ টালিগঞ্জের তারকা অভিনয়শিল্পী নির্মাতারা উপস্থিত ছিলেন। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েটা সেরে হানিমুনে ইউরোপ উড়াল দেবেন এ দম্পতি।

কৃষাণের সঙ্গে শ্রাবন্তীর পরিচয়টা অভিনয়ের সুবাদেই। সাক্ষাৎ হয়েছিল মুম্বাইয়ে, একটি বিজ্ঞাপনে জুটি বেঁধে কাজের সুবাদে। প্রেম জমতেও দেরি হয়নি। বেশ কিছুদিন আগে কৃষাণের সঙ্গে ফেসবুকে ছবিও পোস্ট করে শ্রাবন্তীই দুজনের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

এটি শ্রাবন্তীর দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে ২০০৩ সালেই প্রথম বিয়ে করেন পরিচালক রাজীব বিশ্বাসকে। তখন অবশ্য রাজীব সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন ইন্ডাস্ট্রিতে। শ্রাবন্তীর বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। বিয়ের পরই সিনেমার জগৎ থেকে সরে আসেন শ্রাবন্তী।

পাঁচ বছর পর শ্রাবন্তী রবি কিনাগির ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবি দিয়ে আবারো অভিনয়ে ফিরেন। তখন থেকেই শ্রাবন্তী এবং রাজীবের ডিভোর্স নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর কানাঘুষো শোনা যায়। অনেকে বলেন, দেবের সঙ্গে শ্রাবন্তীর বন্ধুত্ব নিয়েই নাকি দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। রাজীবও নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

শ্রাবন্তীর ডিভোর্সের পরই ব্যবসায়ী বিক্রম শর্মার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে শ্রাবন্তী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন বিক্রমের সঙ্গে তার সম্পর্ক বন্ধুত্বের এবং তাকে বিয়ে করা নিয়ে তিনি কিছু ভাবছেন না।  সত্যিই বলেছিলেন শ্রাবন্তী। কারণ কৃষ্ণকে নিয়েই তিনি বেশ আছেন। বয়ফ্রেন্ডের নামে নিজের হাতে ট্যাটুও করিয়েছেন শ্রাবন্তী। আবার কৃষ্ণর হাতেও রয়েছে শ্রাবন্তীর নাম লেখা।

শ্রাবন্তীর প্রথম ছবি স্বপন সাহার ‘মায়ের বাঁধন’ মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। সেই ছবিতে হেভিওয়েট নায়ক-নায়িকা ছিলেন প্রসেনজিৎ, শতাব্দী রায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শ্রাবন্তী। আর প্রথম সবচেয়ে হিট ২০০৩ সালের ‘চ্যাম্পিয়ন’। রবি কিনাগির এই ছবিটি ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’র বাংলা সংস্করণ। নায়ক ছিলেন জিৎ। এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে শ্রাবন্তী-শাকিবের বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজিত সিনেমা ‘শিকারি’।

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

 

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত ও নিয়ম

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে।

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে এই ছয় রোজার অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু আইয়ুব আনসারী রা. সূত্রে বর্ণিত, মহানবি সা. বলেন, যে ব্যক্তি রমজানে সিয়াম পালন করবে, অতঃপর শাওয়ালের আরও ছয়টি সিয়াম পালন করবে সে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। (মুসলিম : ১১৬৪)

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে। অর্থাৎ সারা বছরের রোজার সমতুল্য হবে। কোনো কোনো আলেম বলেন, রমজানের শেষে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখতে হবে, এমন কথা নেই একনাগাড়ে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, শাওয়াল মাসেই ছয়টি রোজা একনাগাড়ে রাখতে হবে এমন কথা নেই। শেষোক্ত মতামতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য।

একটি বর্ণানায় পাওয়া যায়, প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা শাওয়াল মাসের ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি ওই ৬ দিন রোজা রাখবে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক সৃষ্টি জীবের সংখ্যা হিসাবে তার আমলনামায় নেকি লিখে দেবেন, সমপরিমাণ বদি দূর করে নেবেন এবং পরকালে তার দরজা বুলন্দ করে দেবেন।

শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম : মাসের শুরুতে মধ্যে বা শেষে যে কোনো সময় আদায় করতে পারবে। রোজা ছয়টি ধারাবাহিকভাবে বা মাঝে মাঝে ফাঁকা রেখেও আদায় করতে পারবে। নারীরা পিড়িয়ডের কারণে কাজা হওয়া রমজানের রোজা আলাদাভাবে আদায় করতে হবে। শাওয়ালের ছয় রোজার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ত করতে পারবে না। বরং আগে কাজা শেষ করবে, পরে শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করবে।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

৫টি অভ্যাস পৌঁছে দেবে স্বপ্নের দোরগোড়ায়

রাতে সুন্দর একটা ঘুম মানেই তরতাজা দিনের শুরু। ঝলমলে দিনে ঝটপট কাজে নেমে পড়া আর সহজে ক্লান্ত না হওয়ার প্রধান চাবিকাঠি রাতের নির্বিঘ্ন ঘুম। কিন্তু প্রায়ই প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহার, স্ট্রেস, কাজের চাপ আমাদের ৮ ঘন্টার জরুরি ঘুমের রুটিনে ব্যাঘাত ঘটায়। আসুন জেনে নিই কয়েকটি সহজ কৌশল যা আপনার সকালকে উজ্জ্বল করবে, দিনকে করবে কর্মমূখী আর রাতের ঘুমকে করবে শান্তিময়।
ব্যায়াম
অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যায় করুন ব্যায়াম। ব্যায়াম মানেই এই নয় যে শারীরিক কসরত করতে হবে। হাটুন। প্রকৃতিকে অনুভব করুন। অনুভব করুন বাতাসের স্পন্দন, পাখির ঘরে ফেরা। মনকে মুক্ত করুন শান্ত। একই সাথে হাটা অথবা হালকা ব্যায়াম আপনার শরীরের জড়তা কাটিয়ে দেবে।
চিন্তাকে তুলে রাখুন
সারাদিনে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় নানান রকম চিন্তা, দুশ্চিন্তা, সাফল্যের স্বপ্ন আর না পাওয়ার ভয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঝটপট লিখে ফেলুন সেগুলো একটি জার্নালের মত করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এটি একজন মানুষের জন্য মানসিক থেরাপীর মত কাজ করে। একই সাথে মস্তিষ্কে জমা হওয়া অপয়োজনীয় জঞ্জাল পরিষ্কার করে এবং পরের দিন আপনার ফ্রেশ মনে সহজেই ভিড় করে নতুন নতুন আইডিয়া।
নিজেই হন নিজের গুরু
সবাই নিজের পার্ফর্মেন্স কোচ হতে পারে না। কিন্তু এই প্রাকটিস আপনার কাজের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে আপনার ৩ টি প্রধান কাজের তালিকা করুন কাজের গুরুত্ব অনুসারে। আপনি যদি জেনে থাকেন যে, আপনার ১৫টি কাজ রয়েছে টু ডু লিস্টে, তাহলেও সেটিকেও গুরুত্বের অনুসারে সাজান। এই একটি পরদিন আপনাকে সাহায্য করবে দ্রুত কাজ তুলে আনতে।
মনোযোগের অনুশীলন করুন
মনোযোগের অনুশীলন করা প্রয়োজন রোজ। মেডিটেশন করতে পারেন এজন্য। কিভাবে করবেন? আপনার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি-
ধীরে ধীরে কিন্তু গভীর শ্বাস নিন আপনার নাক দিয়ে এবং ছেড়ে দিন মুখ দিয়ে।
মনে অনেক রকম চিন্তা আসবে, সেগুলোকে স্বীকার করুন এবং ধীরে ধীরে চলে যেতে দিন।
নিজের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে সচেতন হোন। মাথার তালু থেকে শুরু করে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত অনুভব করার চেষ্টা করুন, রিল্যাক্স করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ না আপনি সহজ বোধ করেন।
একটি চমৎকার বই
আপনি যখন সফলতার কথা ভাবেন তখন কার কথা মনে পড়ে সবার আগে? কে আপনার সেই আদর্শ যাকে আপনি অনুসরণ করেন? বিজ্ঞানী কুদরাত-ই-খুদা? রাজনীতিবিদ শের-এ-বাংলা? নাকি অর্থনীতিবিদ ডা. মোহাম্মাদ ইউনুস? কার মত হতে চান আপনি? এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এদের সবার মাঝেই একটি গুণ রয়েছে সব সময়। প্রকৃতপক্ষে, সকল সফল ব্যক্তি মেনে চলেন এটি। ঘুমোতে যাওয়ার আগে তারা পড়েন বই। বই আপনার মনকে করবে ফ্রেশ, চিন্তাকে সরিয়ে নেবে ভিন্ন খাতে, কল্পনাকে নিয়ে যাবে ভিন্ন এক বাস্তবতার জগতে। তাই বই পড়ুন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

তাঁরা ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়

২৮ জুন। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগের দিন রাতে তা জানিয়ে দেওয়া হয় মহসিনা খাতুনকে। যথারীতি পরদিন প্রস্তুত হয়ে নেমে পড়েন কাজে। দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা ঠিক রাখা। কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাব্যবস্থায়। মহসিনার বিশেষ একটি পরিচয় আছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যে ২৮ জন নারী সার্জেন্ট নিয়োগ পান, তাঁদেরই একজন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগ দেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বর্তমানে কাজ করছেন রাজধানীর পল্লবী ট্রাফিক জোনে।

মহসিনা যখন ভিভিআইপি দায়িত্বে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রের সামনে থাকা পুলিশ বক্সে কথা হচ্ছিল আরেক নারী সার্জেন্ট শারমিন আক্তার জাহানের সঙ্গে। কিন্তু আলাপ শুরু হতেই টেবিলে রাখা ওয়াকিটকিতে একটি সংকেত এল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দৌড়ে ছুটে গেলেন রাস্তায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের বাড়তি সতর্কতা ও ট্রাফিক-ব্যবস্থা দেখে বোঝা গেল, ভিভিআইপি পদমর্যাদার কেউ আসছেন। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর রাস্তায় আবার যখন যান চলাচল শুরু হলো, তখন গাড়ির কাগজপত্র দেখছিলেন শারমিন। জানালেন, এসব নিয়মিত কাজেরই অংশ। ডিউটিতে কী কী কাজ করতে হয়? শারমিন বলেন, ‘সিগন্যাল ঠিক রাখা, মামলা দেওয়া, ভিভিআইপি ডিউটি—এসব দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হয়। একেক দিন একেক জায়গায় ডিউটি থাকে। সাধারণত সপ্তাহের শুরুতে জানা যায় ওই সপ্তাহের ডিউটি শিডিউল। তবে ভিভিআইপি ডিউটি থাকলে তা আগের দিন রাতে জানিয়ে দেন ফাঁড়ির মুনশি।

দৈনিক আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় গিয়ে আবার পড়ার টেবিলে বসেন শারমিন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিসিএস পরীক্ষার। ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করা শারমিনের স্বপ্ন পুলিশের বড় কর্তা হওয়া। জানালেন, নিজের কাজের পরিধি বাড়াতে চান আরও। তাই এ স্বপ্ন। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় এত দিনের কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? শারমিন বললেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র বেশির ভাগেরই ঠিক থাকে। ট্রাফিক আইন কড়াকড়ি হওয়ায় তাঁরা চেষ্টা করছেন নিয়ম মানার।
ঢাকার রাস্তায় যাঁদের নিয়মিত যাতায়াত আছে, তাঁদের নিশ্চয় চোখে পড়েছে মহসিনা, শারমিনদের। রাস্তায় শৃঙ্খলা রক্ষা করছেন তাঁরা। প্রতিরোধ করছেন আইন অমান্যকারীদের। ট্রাফিক আইন যাঁরা মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে এই নারীরা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে মামলা করছেন। আর পথচারীরা জানাচ্ছেন বাহবা। একই দিন শেওড়াপাড়ার পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট রেহানা পারভীন জানান, প্রথম দিকে তাঁরা যখন দায়িত্ব পালন করতেন, তখন পথচারীরা তাকিয়ে থাকত অবাক দৃষ্টিতে। আর এখন ধন্যবাদ জানায়। রাস্তার শৃঙ্খলা রাখতে সারাক্ষণই ছুটে বেড়ান বাগেরহাটের এই মেয়ে। জানালেন সড়কে যানজট, প্রতিবন্ধকতা দূর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তিনি এমন সেবা দিতে চান, যা কিনা মানুষ মনে রাখে। ইডেন কলেজ থেকে দর্শনে পড়াশোনা শেষ করে পুলিশে যোগ দেন এই নারী সার্জেন্ট।

আর মহসিনার গল্প? রংপুরের কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এই নারী সার্জেন্টের গল্প শুনতে হলে যেতে হবে মিরপুর-১০-এ। ভিভিআইপি ডিউটি শেষ করে মহসিনা ইসি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার আগেই ছুটতে চান নিজের কাজে। আর কাজ শেষে বলবেন কথা। বেলা দেড়টার দিকে মহসিনা মিরপুর-১০-এ যখন ফিরছিলেন, তখন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। তা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তায়। আর চেষ্টা করছেন তা দূর করার। কাজ শেষে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ইউনিফর্মের প্রতি ভালো লাগা থেকে যোগ  দিয়েছি পুলিশে। কাজে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা সহায়তা করায় সহজেই সেরে নিতে পারছি নিত্যদিনের দায়িত্ব।’ আগারগাঁও-মিরপুর সড়কের শৃঙ্খলা ঠিক করতে ২৮ জুন দায়িত্বে ছিলেন এই তিন নারী সার্জেন্ট।

পাঠক, মনে আছে কি আহমদ ছফার দূর্দানাকে? যে কিনা সাইকেল চালিয়ে ছুটে বেড়াত পুরো শহরে। মহসিনা খাতুন, শারমিন আক্তার জাহান, রেহানা পারভীনরাও ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়। কখনো ওয়াকিটকি হাতে, কখনো মোটরসাইকেল চালিয়ে আবার কখনো রাস্তায় সিগন্যাল ঠিক রাখতে। আর তাই তো বনে গেছেন রাস্তার দূর্দানা, যাঁদের ঘুম ভাঙে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে। তারপরই প্রস্তুত হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন সকাল সাড়ে ছয়টায়। থাকেন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

 

সুস্বাদু আলু চাট

ঈদের সময় একাধারে মাংসের বিভিন্ন রেসিপি খেতে খেতে মুখে অরুচি ধরাটা স্বাভাবিক। এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে চাই ভিন্ন কিছু। কিন্ত সে খাবারটিও হওয়া চাই মুখরোচক। তাই এই সময়ে ঝটপট রান্না করে নিতে পারেন আলু চাট। খাবারে তৃপ্তি আনতে আলু চাট হতে পারে অসাধারণ একটি খাবার। নিজেদের খাওয়ার সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নেও আলু চাট বেশ উপযোগী। তাই দেখে নিতে পারেন আলু চাটের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

আলু কিউব সেদ্ধ ৪ কাপ, তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনে পাতা কুচি আধা কাপ।

চাট মসলার জন্য

ভাজা জিরা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো সামান্য, আদা গুঁড়ো আধা চা চামচ, চিনি ২ চা চামচ, হিং সামান্য, বিটলবণ এক চিমটি, টেস্টিং সল্ট আধা চা চামচ।

যেভাবে করবেন

চাট মসলা তৈরির সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে আলাদা করে রাখতে হবে। এবার একটি ফ্রাই প্যান মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। এতে তেল দিয়ে গরম হলে সেদ্ধ করে রাখা আলু দিয়ে ভেজে নিন। উপরে কিছুটা লবণ ছিটিয়ে লালচে করে ভেজে নিতে হবে। এরপর চুলার আঁচ বন্ধ করে আদা কুচি, ধনে পাতা কুচি, লেবুর রস, মরিচ কুচি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হলে বানিয়ে রাখা চাট মসলা দেড় চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভাত, রুটি বা পরোটার সঙ্গে সুস্বাদু আলু চাটের জুড়ি মেলা দায়।

 

শাড়ি পরে ইয়াং এন্ড স্টাইলিস্ট ফ্যাশন

কলেজে ভর্তি শুরু হয়ে গেছে। শুরু হতে চলেছে নতুন জীবন। সেই নিয়ে উত্তেজনা প্রচুর, তাই না! ফ্রেশার্স পার্টিতে কোন শাড়ি পরলে ভালো মানাবে, এই নিয়ে বুঝি বন্ধুরা মিলে প্ল্যানিং চলেছে! তাহলে বলি, ট্রাই করতে হবে নতুন কিছু। পুরানো সাজগোজ আজকাল আর চলে না। আর নতুন স্কুল, কলেজে নিজের ইমপ্রেশনটাও তো জমাতে হবে নাকি! কথাতে আছে না, ফার্স্ট ইমপ্রেশন ইজ দা লাস্ট ইমপ্রেশন! তাই কেমন হবে শাড়ি, রইল তারই কিছু স্টাইলিশ টিপস –

রোম্যান্টিক ফ্লোরালস, শিমার অ্যান্ড নেট : ফ্রেশার্স পার্টি জমাতে করতে বেছে নেওয়া যেতে পারে পিওর নেটের হালকা রঙের শাড়ি। তার উপর ফ্লোরাল কারুকার্য দারুণ মানাবে। তার সঙ্গে ম্যাচ করে বেছে নিতে হবে সলিড কালারের ব্লাউজ। হালকা নীল রঙের শাড়ির সঙ্গে গোল্ডেন ব্লাউজ ভালো মানাবে। শাড়ির আঁচল খুলে, কানে একটা বড় দুল পরে নিলেই ব্যাস, বাজিমাত।

হালকা রং এবং শিফন : বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলেই যা শাড়ি পরার হিরিক। তাছাড়া শাড়ি আর তেমন একটা পরাই হয় না আজকাল। কিন্তু ওই বিশেষ দিনটি শাড়ি পরতে ইচ্ছে হলে সবচেয়ে ভালো মানাবে শিফনের শাড়ি। পরতেও সুবিধা আবার সামলাতেও পারবেন সহজে। হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে ভালো মানাবে স্লিভলেস ডিপ রঙের কারুকার্য করা ব্লাউজ।

স্যাটিন এবং সুতি : হাইনেক সুতির ব্লাউজের সঙ্গে একটা সুন্দর হালকা রঙের স্যাটিন বা সুতির শাড়ি দারুণ মানাবে। সকলের নজর কাড়বে।

শির ব্লাউজ অ্যান্ড শিফন : সাদামাটা ব্লাউজজের বদলে জমাট কারুকার্য করা শির ব্লাউজ খুব স্টাইলিশ। তার সঙ্গে শিফনের শাড়ি। ব্যাস, সঙ্গে কোনও জুয়েলারি না পরলেও ক্ষতি নেই। দারুণ দেখাবে।

এক রঙা শাড়ি: পরতে কোনও অসুবিধা না থাকলে একরঙা সুতির শাড়িও কিন্তু মন্দ দেখাবে না। তার সঙ্গে ফ্লোরাল হাইনেক ও কোয়ার্টার স্লিভ ব্লাউজ বেছে নিতে হবে আপনাকে। সঙ্গে অবশ্যই গাঢ রঙ এর শাড়ি বাছুন।