banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

গর্ভবতী মায়ের রোজা : ইসলাম কী বলে ?

এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬) যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৭)

গর্ভবতী মায়ের দুইটি অবস্থা হতে পারে : ১. রোজা রাখার দ্বারা তার স্বাস্থ্যের উপর কোন প্রভাব না পড়া। অর্থাৎ তার জন্য রোজা রাখাটা কষ্টকর না হওয়া এবং তার সন্তানের জন্যেও আশংকাজনক না হওয়া। এমন নারীর উপর রোজা রাখা ফরজ; তার জন্য রোজা ভাঙ্গা নাজায়েয।

২. রোজা রাখলে তার নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশংকা করা এবং তার জন্যে রোজা রাখাটা কষ্টকর হওয়া। এমন নারীর জন্য রোজা না-রাখা জায়েয আছে; তিনি এ রোজাগুলো পরবর্তীতে কাযা পালন করবেন।

তিনি উত্তরে বলেন, “গর্ভবতী ও দুগ্ধপানকারিনী নারীর জন্য কোন ওজর ছাড়া রমজান মাসের রোজা না-রাখা জায়েয নয়। যদি ওজরের কারণে রোজা না-রাখে তাহলে রোজা কাযা করতে হবে। দলিল হচ্ছে- আল্লাহর বাণী: “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্যদিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫] আর এ দুই শ্রেণীর নারী অসুস্থ ব্যক্তির পর্যায়ভুক্ত। যদি এ দুই শ্রেণীর নারীর ওজর হয় ‘তাদের সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশংকা’ তাহলে কোন কোন আলেমের মতে, এরা রোজাগুলোর কাযা পালনের সাথে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে গম, চাল, খেজুর বা স্থানীয় প্রধান কোন খাদ্য সদকা করবে। আর কোন কোন আলেমের মতে, কোন অবস্থাতে তাদেরকে কাযা পালন ছাড়া আর কিছু করতে হবে না। কারণ খাদ্য প্রদানের পক্ষে কিতাব ও সুন্নাহর কোন দলিল নেই। আর দলিল সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তি যে কোন প্রকার দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকা- মৌলিক বিধান। এটি ইমাম আবু হানিফার মাযহাব ও মজবুত অভিমত।”

যেসব কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে তবে পরে কাজা করতে হয় তা হচ্ছে; ১. মুসাফির অবস্থায়। ২. রোগ বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে। ৩. গর্ভের সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে। ৪. এমন তৃষ্ণা বা ক্ষুধা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে। ৫. শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে। ৬. কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে। ৭. মেয়েদের হায়েজ-নেফাসকালীন সময় রোজা ভঙ্গ করা যায়।

রোজার ফিদইয়া : রোজা রাখা দুঃসাধ্য হলে একটা রোজার পরিবর্তে একজন দরিদ্রকে অন্নদান করা কর্তব্য। শরিয়ত মোতাবেক রোজা রাখার সামর্থ্যহীন হলে প্রতিটি রোজার জন্য একটি করে ‘সাদাকাতুল ফিতর’-এর সমপরিমাণ গম বা তার মূল্য গরিবদের দান করাই হলো রোজার ‘ফিদইয়া’ তথা বিনিময় বা মুক্তিপণ। অতিশয় বৃদ্ধ বা গুরুতর রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, যার সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই অথবা রোজা রাখলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে, তারা রোজার বদলে ফিদইয়া আদায় করবে। পরবর্তী সময়ে ওই ব্যক্তি যদি সুস্থ হয়ে রোজা রাখার মতো শক্তি ও সাহস পায়, তাহলে তার আগের রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তখন আগে আদায়কৃত ফিদইয়া সাদকা হিসেবে গণ্য হবে।

ফিদইয়া হলো, একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দেয়া। এক সদকা ফিতরও দেয়া যায়। অর্থাত্ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন— ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। (সূরা বাকারা ২ : ১৮৪)

এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬) যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৭)

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

ভ্রমণের ব্যাগে চাই প্রয়োজনীয় জিনিস

চাকরি বা ব্যবসা সূত্রে অনেকেই অবস্থান করেন দূরে। বাইরে থাকার এই অভ্যাসটা তাদের কাছে বাড়িকে করেছে অতি আপন। নাড়ীর টানে সেখানে বারবার মন ছুটে যায়। সে চাওয়ার পূর্ণতা মেলে ঈদ বা যেকোনো উৎসবে পাওয়া ছুটিতে। তাই যে যেখানেই থাকুন ছুটির আগে তল্পিতল্পা নিয়ে বাড়িতে যাওয়াটা চাই-ই। এসময় আগে দরকার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা।

বেড়াতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রয়োজনীয় জিনিস গোছানো নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। অনেকেই বেড়াতে যাওয়ার সময় কি নেবো কি রেখে যাবো সেটা নিয়ে মহা ঝামেলায় পড়েন। যারা চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী তাদের ব্যস্ততার মুহূর্তে এটা আরও বেশি যন্ত্রণাদায়ক। তাই দরকার আগেভাগে সব গুছিয়ে রাখা।

এবারের ঈদটা রোদ-বৃষ্টির দোলাচলে দুলছে। কখনো ভ্যাপসা গরম আবার কখনো বৃষ্টিতে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। তারওপর আবার লম্বা ভ্রমণে আপনি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। এদিকে মাসজুড়ে রোজা করে খাওয়ার অভ্যাসটাও কিছুটা নাজুক হয়েছে। হঠাৎ করে বেশি খাবারের চাপে গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে আপনার পেটে। সামান্য সর্দি-জ্বরেও ভুগতে পারেন। তাই সব ধরনের প্রতিকূলতার বিপরীতে নিজের শরীর-মন ফুরফুরে রাখতে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সঙ্গে রাখতে পারেন ওরস্যালাইন, পারাসিটামল, এন্টিসেপ্টিক ক্রিম যেমন- সেভলন ক্রিম ( শেভ করার পরও ব্যাবহার করা যাবে ), ব্যান্ড – এইড, ডাক্তারি তত্ত্ববধানে থাকলে আপনার প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।

উৎসবের এই সময়টাতে সাজগোজ খুব বড় একাটা ব্যাপার সৌন্দর্য প্রেমি সবার কাছে। তাই মেয়েরা প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা গহনা ও সাজগোজের জিনিস নিতে ভুলবেন না। কারণ, আপনার ব্যবহৃত এসব অনুষঙ্গ মিলিয়ে অন্য কারো কাছে নাও পেতে পারেন। আর উল্টো-পালটা কিছু ব্যবহার করে ত্বকের বারোটা বাজানোর কোনো মানে হয় না।

ছেলেরা সঙ্গে রাখতে পারেন শেভিং জেল (ট্রাভেল সাইজ), রেজার, আফটার শেভ( স্যাভলন ক্রীম ও ব্যাব হার করা যাবে), হেয়ার জেল, সুগন্ধি।

তবে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য যেসব জিনিস একান্ত প্রয়োজন তাহল, অল ইন ওয়ান ময়েশ্চারাইজার ও ভ্যাসলিন, সানস্ক্রিন (২৫-৫০ এস পি এফ), চিরুনি, টুথপেষ্ট, টুথব্রাশ, মিনিপ্যাক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার, শাওয়ার জেল (ট্রাভল সাইজ), সানগ্লাস, ফোল্ডিং ছাতা( প্রয়োজন অনুযায়ী), হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু পেপার ও ওয়েট টিস্যু, ডিওডোরেন্ট ও পারফিউম।

সবথেকে বড় বিষয় হলো পরিধেয় পোশাক। তাই প্রয়োজনীয় পোশাক, শোবার পোশাকের সঙ্গে জুতা-স্যান্ডেল নিয়ে নিন লাগেজে। সঙ্গে হাতমুখ মোছার জন্য ছোট্ট তোয়ালে নিতে ভুলবেন না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকা মানে আপনার অবকাশ যাপন উঠবে তুঙ্গে। এরই মধ্যে অনেকেই ব্যস্ত শহর ছেড়ে ছুটি চলেছেন গন্তব্যে। অনেকেই দুয়েকদিনের মধ্যেই যাবেন। তাই আনন্দের ঈদ উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করে তুলতে সময় নিয়ে গুছিয়ে নিন নিজের লাগেজটি।

 

রোজা মানুষ মানুষকে ফাঁকি দেয়াও ভুলিয়ে দেয়

রোজা হচ্ছে ‘তাকওয়া’ অর্জনের সর্বোত্তম ট্রেনিংকোর্স। একজন মানুষ যতবড় পাপিষ্ঠ কিংবা যেমনই হোক না কেন রোজা রাখার পর তার অবস্থা এমন হয় যে, প্রচণ্ড গরমের দিনে পিপাসায় কাতর সে, একাকী কক্ষে, অন্য কেউ সাথে নেই, দরজা-জানালা বন্ধ, কক্ষে রয়েছে ফ্রিজ, ফ্রিজে রয়েছে শীতল পানি-এমনি মুহূর্তে তার তীব্র চাহিদা হচ্ছে, এ প্রচণ্ড গরমে এক ঢোক ঠাণ্ডা পানি পান করার। তবুও কি এ রোজাদার লোকটি ফ্রিজ থেকে শীতল পানি বের করে পান করে নিবে? না, কখনোই না। অথচ লোকটি যদি পান করে, জগতের কেউই জানবে না। তাকে কেউ অভিশাপ কিংবা গালমন্দও করবে না। জগতবাসীর কাছে সে রোজাদার হিসেবেই গণ্য হবে। সন্ধ্যায় বের হয়ে সে লোকজনের সাথে ইফতারও করতে পারবে। কেউই জানবে না তার রোজা ভঙ্গের কথা। কিন্তু সে পান করবে না। কারণ, সে ভাবে যে, অন্য কেউ না দেখলেও আমার মালিক যার জন্য রোজা রেখেছি তিনি তো আমায় দেখছেন। তাছাড়া আর কোনো কারণ নেই।

রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকওয়া অর্জন করতে বলেছেন। অর্থাৎ রোজার মাধ্যমে তিনি অন্তরের মাঝে তাকওয়া বা আল্লাহভীতির আলোক প্রজ্জ্বলিত করতে বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘রোজা আমার জন্যই, সুতরাং আমিই এর প্রতিদান নিজ হাতেই দেবো।’

আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার এবং জবাবদিহিতার ভয়ের অনুভূতি হৃদয়ে জাগ্রত হওয়াকেই বলে ‘তাকওয়া’। এজন্যই শাহ আশরাফ আলী থানভী (রহ.) বলেছেন, ‘রোজা দ্বারা শুধুমাত্র পশুসুলভ চরিত্রের মৃত্যু ঘটবে এমন নয়, বরং বিশুদ্ধ রোজা মানেই তাকওয়ার উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সিঁড়ি।’

ইমাম গাযযালী (রহঃ) তার স্বভাবসুলভ দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সিয়ামের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আখলাকে ইলাহী তথা আল্লাহর গুণে মানুষকে গুণান্বিত করে তোলাই হচ্ছে সিয়ামের উদ্দেশ্য। সিয়াম মানুষকে ফেরেশতাদের অনুকরণের মাধ্যমে যতদূর সম্ভব নিজেকে প্রবৃত্তির গোলামী থেকে মুক্ত হওয়ার শিক্ষা দেয়। কেননা ফিরিশতাগণ সকল চাহিদা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং মানুষের মর্যাদাও হচ্ছে পশুর চেয়ে বহু ঊর্ধ্বে। জৈবিক চাহিদা মুকাবিলা করার জন্য তাকে দান করা হয়েছে বিবেক ও বুদ্ধির আলো। অবশ্য এক দিক দিয়ে তার স্থান ফেরেশতাদের নীচে। জৈবিক চাহিদা ও পাশবিক কামনা অনেক সময় তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে সক্ষম হয় এবং তার ভেতরের এ পশুত্ব দমন করতে তাকে কঠোর সাধনা করতে হয়। তাই মানুষ যখন পাশবিক ইচ্ছার সুতীব্র স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দেয়, তখন সে নেমে আসে অধঃপতনের নিম্নতম স্থানে। অরণ্যের পশু আর লোকালয়ের মানুষে কোনো প্রভেদ থাকে না তখন। আর যখন সে তার পাশবিকতা দমন করতে সক্ষম হয়, তখন তার স্থান হয় নূরের ফেরেশতাদেরও ওপরে।’ (এহয়াউল উলুম, খণ্ড-১, পৃষ্টা ২১৬)

রোজার আরেকটি মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- আল্লাহ তা’আলার হুকুম পালন। এমনকি পুরো দ্বীনের মূল কথাই হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম পালন করা। যখন বলবেন, খাও তখন খাওয়াটাই ‘দ্বীন’। যখন বলবেন খেও না- তখন না খাওয়াটাই ‘দ্বীন’। আল্লাহ তা’আলার দাসত্ব স্বীকার আর আনুগত্যের এক বিস্ময়কর পদ্ধতি তিনি রোজার মাধ্যমে বান্দাকে দিয়েছেন। তিনি দিনব্যাপী রোজা রাখার হুকুম দিলেন, তার জন্য বহু সওয়াব বা প্রতিদান রাখলেন। অন্যদিকে সূর্যাস্তের সাথে সাথে তাঁর নির্দেশ- ‘তাড়াতাড়ি ইফতার করে নাও।’ ইফতারে তাড়াতাড়ি করাটা আবার মুস্তাহাব হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। বিনাকারণে ইফতারে বিলম্ব করাকে মাকরুহ হিসেবে আখ্যায়িত করলেন।

কেন মাকরুহ? যেহেতু সূর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তা’আলার হুকুম হচ্ছে ইফতার করে নেয়ার। যেহেতু এখন যদি না খাওয়া হয়, যদি ক্ষুধার্ত থাকা হয়, তবে এ ক্ষুধার্ত অবস্থা আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় নয়। কারণ, সকল কিছুর মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর আনুগত্য-দাসত্ব প্রকাশ করা, নিজ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা নয়।

আবার সেহরির সময় বিলম্ব করে খাওয়া উত্তম। তাড়াতাড়ি খাওয়া সুন্নত পরিপন্থি। অনেকে রাত ১২টার সময় সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়ে, এটা সুন্নতের পরিপন্থি। সাহাবায়ে কেরামের এ অভ্যাস ছিল যে, তাঁরা সাহরি শেষ সময় পর্যন্ত খেতেন। কারণ, সাহরি শেষ সময়ে খাওয়া শুধুমাত্র অনুমতিই নয়; বরং হুকুমও। আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য তো এরই মাঝে নিহিত।

তাই হাকীমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানভী (রহ) বলেছেন, ‘যখনই আল্লাহ তা’আলা খাওয়ার নির্দেশ দেন, তখন বান্দা যদি বলে- খাবো না কিংবা বলে -আমি কম খাই, তাহলে এটা তো আনুগত্যের প্রকাশ হলো না। আরে ভাই! খাওয়ার আর না খাওয়ার মাঝে কিছু নেই। সকল কিছুই হচ্ছে তাঁর আনুগত্যের মাঝে। অতএব, যখন তিনি বলেন -খাও, তখন খাওয়াটাই ইবাদাত। তখন না খেয়ে নিজের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আনুগত্য প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই।’

 

ঈদের দুপুরে নবাবি বিরিয়ানি

ঈদ মানেই বিশেষ আয়োজনের সমাহার। সাজগোজ, পোশাক আর খাবারে থাকে নবাবি আয়োজন। মনের মাঝে উৎসবের হাওয়া আর অতিথি আগমন পুরো পরিবেশকে করে আরও বেশি জাকজমকপূর্ণ। তাইতো এমন দিনে দুপুরের আয়োজনে নবাবি বিরিয়ানি থাকতেই পারে। আপনার পরিবারও কেন বাদ যাবে নবাবি বিরিয়ানির স্বাদ নেয়া থেকে। আজ দেখে নিতে পারেন নবাবি বিরিয়ানির রেসিপি।

যা যা লাগবে

বাসমতি চাল ১ কেজি, খাসির মাংস টুকরো করে কাটা ২ কেজি, পেঁয়াজ কুঁচি ৭টি, আদা রসুন বাটা ২ চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়া ১ চা চামচ, শুকনা মরিচ ৫টি, দারুচিনি ৩ টুকরো, দই ২ কাপ (ফেটানো), এলাচ ৫টি, গোল মরিচ ৮টি, লবঙ্গ ৮টি, শাহীজিরা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, জাফরান সামান্য সঙ্গে আধা কাপ দুধ, ধনে বা পুদিনাপাতা কুঁচি ১ চা চামচ, আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল, ঘি, লবণ স্বাদ মতো।

যেভাবে করবেন

পাত্রে ঘি গরম করে আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল একটু লবণ দিয়ে ভেজে তুলুন। এবার পেঁয়াজ বেরেস্তা করে নিতে হবে। দই, আদা-পেঁয়াজ-রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে মাংস মেরিনেট করে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। এবার একটি পাত্রে ঘি গরম করে মাংস দিয়ে রান্না করুন। এবার অপর একটি পাত্রে ঘি গরম করে গোটা মসলাগুলো কিছুক্ষণ ভেজে চাল দিন। এখন লবণ দিয়ে পরিমাণ মতো গরম পানি দিয়ে পোলাও রান্না করুন। লক্ষ রাখবেন যেন পোলাও কিছুটা কম সেদ্ধ হয়। বড় একটি পাত্রে প্রথমে কিছু পোলাও তারপর মাংস দিয়ে একটু একটু গরম মসলার গুঁড়া দিন, এভাবে কয়েকটি লেয়ার করুন। জাফরান ভেজানো দুধ দিয়ে দিন। সবশেষে ভাজা আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল দিন এবার ২০ মিনিটের জন্য চুলার আচঁ কমিয়ে পাত্রের মুখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। তারপর নবাবি বিরিয়ানি সার্ভিং ডিশে তুলে ওপরে ধনে বা পুদিনাপাতা কুঁচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

চোখের আকার বুঝে সাজ

তরঙ্গময় উচ্ছ্বলতা প্রকাশে নারীর চোখই যথেষ্ট। তাই চোখের সাজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চোখ সাজাতে চাই কাজল বা আইলাইনার। কিন্তু সমস্যা হয় তখন, যখন চোখের সঙ্গে মানানসই কাজল দিতে যাওয়া হয়। চেহারার সঙ্গে মানাতে মোটা করে চোখ আঁকলে ভালো লাগবে নাকি চিকন করে অথবা একটু টেনে দিলে ভালো লাগবে- তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। জেনে নিতে পারেন, কেমন আকারের চোখে কোন সাজ বেশি মানাবে।

বাঁকা চোখ

বাঁকা আকৃতি অর্থাৎ সামনে একটু চোখা এবং শেষ কিনারার আগে একটু মোটা গড়নের চোখের আকৃতি হলে ভেতরের দিক থেকে কাজল দেয়া শুরু করতে হবে। চোখের শেষ কিনারায় গিয়ে একটু বেশি মোটা করে টেনে কাজল দিলে ভালো লাগবে। চোখের ওপর এবং নিচের পাতায় কাজল দিয়ে দুই লাইনের মাথা ঠিক রাখুন, এতেই বেশ ভালো মানাবে।

গোলাকার চোখ

বেশ বড় আকারের গোল চোখের গড়নটা বেশ আকর্ষণীয়। এইধরনের চোখে ওপরের পাতায় একেবারে কর্নার থেকে শুরু না করে একটু সরে এসে কাজল দেয়ার পদ্ধতিটি বেশি মানায়। চোখের বাইরের কিনারায় এসে কাজল মোটা করে এঁকে দেবেন। চোখের নিচের পাতার মাঝামাঝি থেকে কাজল দিয়ে চোখের শেষ কিনারায় এসে মিলিয়ে দিন।

কোটরের গভীরের চোখ

চোখের কোটর একটু গভীরে হলে এমনিতেই চোখ ছোট দেখায়। তাই অনেক মোটা করে কাজল বা আইলাইনার দেয়া থেকে বিরত থাকুন। চোখের ওপরের পাতার মাঝামাঝি থেকে যতোটা সম্ভব চিকন করে আইলাইনার টানুন। চোখের নিচের পাতার পাপড়ির নিচ দিয়ে চিকন করে আইলাইনার টেনে নিন। এতে চোখ খোলা ও বড় মনে হবে।

চোখের ওপরের পাতা ফোলা হলে

চাইনিজ, জাপানিজ কিংবা আমাদের দেশের উপজাতি যারা আছেন তাদের চোখের গড়ন মূলত এই ধরণের হয়ে থাকে। এমন চোখের উপরের পাতার কিনার থেকে চিকন করে আইলাইনার টেনে চোখের পাতার শেষ কিনারে মোটা করে আইলাইনার দিন। চোখের নিচের পাতায় একেবারেই লাইনার দেবেন না। চোখের পাপড়ি কার্ল করে দিন।

চোখ মুখের তুলনায় ছোট হলে নাক ও মুখের তুলনায় চোখের আকৃতি ছোট হলে ওপরের পাতায় চিকন থেকে মোটা করে আইলাইন দিয়ে টেনে দিন। চোখের নিচের পাতার মাঝামাঝি থেকে আইলাইনার শুরু করে শেষ কর্নারে উপরের পাতার আইলাইনারের সঙ্গে মিলিয়ে দিন। চোখের ভেতরের কর্নারে নিচের পাতায় সাদা আইশ্যাডো, কাজল বা হাইলাইটার দিয়ে নিন।

মুখের তুলনায় চোখ বড় হলে নাক ও মুখের তুলনায় চোখের আকৃতি বড় হলে উপরের পাতায় মোটা করে আইলাইন দিয়ে টেনে দিন। নিচের পাতায় পাপড়ির ভেতরের দিকে অর্থাৎ ওয়াটার লাইনে গাঢ় করে কাজল দিয়ে নিন। এতে চোখের আকৃতি একটু ছোটো দেখাবে যা মুখের সঙ্গে মানানসই হবে।

 

ধর্মান্ধতা দূর করে নারীকে এগিয়ে যেতে হবে

সমাজ থেকে সব ধরনের কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতা দূর করে নারী সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘নারী সমাজ পিছিয়ে থাকার মূল কারণ ধর্মান্ধতা। এ থেকে নারীদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে কুড়িগ্রাম রুরাল ওমেন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার আয়োজিত “অবহেলিত নারীর সংগ্রামী জীবন এবং কিছু কথা” শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সমাজে নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়। এমনকি শিক্ষিত নারীরাও বেশকিছু সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা কোন না কোনভাবে অবহেলিত। যার মূলে রয়েছে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা। সমাজ থেকে এসব ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার দূর করতে হবে।’

নারীকে ক্ষমতাহীন ও মর্যাদাহীন রেখে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র ভোটের অধিকার দিলেই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। ভোটের পাশাপাশি নারীর সম্পদ-শিক্ষা-কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি বিউটি রানীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, আওয়ামী সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান দূর্জয় প্রমুখ।