banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

শিশুদের রোজা পালনে অভ্যস্ত করার পন্থা

শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ৯ বছরের ছেলে সিয়াম পালনে মুকাল্লাফ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) নয়। কারণ সে এখনও সাবালক হয়নি। তবে আল্লাহ তা’আলা ইবাদতের ওপর সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব বাবা-মা’র ওপর অর্পণ করেছেন। ৭ বছর বয়সী সন্তানকে নামাজ শিক্ষা দেয়ার জন্য বাবা-মার প্রতি আদেশ জারি করেছেন। নামাজে অবহেলা করলে ১০ বছর বয়স থেকে বেত্রাঘাত করার নির্দেশও দিয়েছেন। সাহাবীরা তাদের সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রোজা রাখাতেন, যেন তারা এ মহান ইবাদত পালনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। এ আলোচনা থেকে সন্তান-সন্ততিকে উত্তম গুণাবলী ও ভালো কাজের ওপর গড়ে তোলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

রোজার ব্যাপারে এসেছে :

রুবাই বিনতে মুআওয়েজ ইবনে আফরা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার সকালে মদিনার আশেপাশে আনসারদের এলাকায় (এই ঘোষণা) পাঠালেন : ‘যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় সকাল শুরু করেছে, সে যেন তার রোজা পালন সম্পন্ন করে। আর যে ব্যক্তি বে-রোজদার হিসেবে সকাল করেছে সে যেন বাকি দিনটুকু রোজা পালন করে।’ এরপর থেকে আমরা আশুরার দিন রোজা পালন করতাম এবং আমাদের ছোট শিশুদেরও রোজা রাখাতাম।
আমরা শিশুদের নিয়ে মসজিদে যেতাম এবং তাদের জন্য উল দিয়ে খেলনা তৈরি করে রাখতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে সেই খেলনা দিয়ে ইফতারের সময় পর্যন্ত সান্ত্বনা দিয়ে রাখতাম। (হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারি। নং ১৯৬০ ও মুসলিম, নং ১১৩৬)

যে বয়সে শিশু রোজা পালনে সক্ষমতা লাভ করে সে বয়স থেকে বাবা-মা তাকে প্রশিক্ষণমূলক রোজা রাখাবেন। এটি শিশুর শারীরিক গঠনের ওপর নির্ভর করে। আলেমরা কেউ কেউ এ সময়কে ১০ বছর বয়স থেকে নির্ধারণ করেছেন।

 শিশুদের রোজা পালনে অভ্যস্ত করে তোলার কিছু পন্থা :

# শিশুদের কাছে রোজার ফজিলত সম্পর্কিত হাদিসগুলো তুলে ধরতে হবে। তাদের জানাতে হবে সিয়াম পালন জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম। জান্নাতের একটি দরজার নাম হচ্ছে ‘আর-রাইয়্যান’। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবে।

# রমজান আসার আগেই কিছু রোজা রাখানোর মাধ্যমে সিয়াম পালনে তাদের অভ্যস্ত করে তোলা। যেমন-শা’বান মাসে কয়েকটি রোজা রাখানো। যাতে তারা আকস্মিকভাবে রমজানের রোজার সম্মুখীন না হয়।

# প্রথমদিকে দিনের কিছু অংশে রোজা পালন করানো। ক্রমান্বয়ে সেই সময়কে বাড়িয়ে দেয়া।

# একেবারে শেষ সময়ে সেহেরি গ্রহণ করা। এতে করে তাদের জন্য দিনের বেলায় রোজা পালন সহজ হবে।

# প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে পুরস্কার দেয়ার মাধ্যমে তাদের রোজা পালনে উৎসাহিত করা।

# ইফতার ও সেহেরির সময় পরিবারের সকল সদস্যের সামনে তাদের প্রশংসা করা। যাতে তাদের মানসিক উন্নয়ন ঘটে।

# যার একাধিক শিশু রয়েছে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করা। তবে খুবই সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া শিশুটির প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করা না হয়।

# তাদের মধ্যে যাদের ক্ষুধা লাগবে তাদের ঘুম পাড়িয়ে অথবা বৈধ খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখা। এমন খেলনা যাতে পরিশ্রম করতে হয় না। যেভাবে মহান সাহাবীরা তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রে করতেন। নির্ভরযোগ্য ইসলামী চ্যানেলগুলোতে শিশুদের উপযোগী কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে এবং রক্ষণশীল কিছু কার্টুন সিরিজ রয়েছে। এগুলো দিয়ে তাদেরকে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে।

# ভালো হয় যদি বাবা তার ছেলেকে মসজিদে নিয়ে যান। বিশেষতঃ আসরের সময়। যাতে সে নামাজের জামাতে হাজির থাকতে পারে। বিভিন্ন দ্বীনি ক্লাসে অংশ নিতে পারে এবং মসজিদে অবস্থান করে কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহ তা’আলার জিকিরে রত থাকতে পারে।

# যেসব পরিবারের শিশুরা রোজা রাখে তাদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য দিনে বা রাতের কিছু সময় নির্দিষ্ট করে নেয়া। যাতে তারা সিয়াম পালন অব্যাহত রাখার প্রেরণা পায়।

# ইফতারের পর শরিয়ত অনুমোদিত ঘুরাফিরার সুযোগ দেয়া। অথবা তারা পছন্দ করে এমন খাবার, চকলেট, মিষ্টি, ফল-ফলাদি ও শরবত প্রস্তুত করা।

আমরা এ ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখতে বলছি যে, শিশুর যদি খুব বেশি কষ্ট হয় তবে রোজাটি পূর্ণ করতে তার ওপর অতিরিক্ত চাপ দেয়া উচিত নয়। যাতে তার মাঝে ইবাদতের প্রতি অনীহা না আসে অথবা তার মাঝে মিথ্যা বলার প্রবণতা তৈরি না করে অথবা তার অসুস্থতা বৃদ্ধির কারণ না ঘটায়। কেননা ইসলামী শরিয়তে সে মুকাল্লাফ (ভারার্পিত) নয়। তাই এ ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত এবং সিয়াম পালনে আদেশ করার ব্যাপারে কড়াকড়ি না করা উচিত।

 

চুল রঙ করা কি ইসলামে জায়েজ আছে?

অতএব উক্ত মহিলার জন্য চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। তবে মেহেদী রং করতে পারবেন। [শরহু মুসলিম, নববী ১৪/৮০; তাকমিলা, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; আলমুগনী ১/১২৭]

বয়সের কারণে চুল সাদা হলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। হাদীস শরীফে আছে, হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফা রা. (আবু বকর রা.-এর পিতা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলেন। তখন তার মাথার চুল ও দাঁড়ি ছিল ‘ছাগামা’ নামক উদ্ভিদের ফুলের মতো তীব্র সাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে বললেন,তোমার এই চুল ও দাঁড়ির শুভ্রতা কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে তোমরা কালো কলপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাক। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৪৬৬)\

অন্য হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আখেরি যামানায় কিছু লোক কবুতরের বুকের মতো কালো রংয়ের কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের খোশবুও পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২০৯)

অতএব উক্ত মহিলার জন্য চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। তবে মেহেদী রং করতে পারবেন। [শরহু মুসলিম, নববী ১৪/৮০; তাকমিলা, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; আলমুগনী ১/১২৭]

মেয়েদের জন্য সর্ব প্রকার সাজই জায়েজ আছে। যদি তা কোন খারাপ উদ্দেশ্য না হয় বা শরীয়তে নিষিদ্ধ সাজ না হয়। স্বামীকে খুশি করার জন্য চুলে মেহেদী দেয়া বা কালো ছাড়া অন্য রং করা মহিলাদের জন্য জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই। তবে যদি পর-পুরুষকে দেখানোর জন্য হয়,তাহলে জায়েজ নেই। চুলে দাড়িতে খেজাব দেয়া মুস্তাহাব। লাল ও হলুদ এবং এমন লাল খেজাব যা কিছুটা কালোর দিকে ধাবিত এমন খেজাব লাগানো জায়েজ পুরুষ মহিলা উভয়ের জন্য। তবে কালো খেজাব মুজাহিদ ব্যতিত অন্য কারো জন্য জায়েজ নয়।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

সৃজনশীল কাজের জন্যে সঠিক সময়!

সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি আগ্রহ? এমন কোন চাকরি করছেন যেখানে খানিকটা নিজস্বতা আর বৈচিত্র্য না থাকলেই নয়? কিংবা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সৃজনশীল কোন মাধ্যমকে? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্যেই। কারণ আপনার চাইতে আর কেউ ভালো জানেনা যে সৃজনশীল কাজ তৈরি করা যায়না। সেটা আপনা আপনিই তৈরি হয়। কিন্তু কোন সেই সময়টা যখন সৃজনশীল কাজে বেশি কার্যকরী হয়ে ওঠা যায়? পাওয়া যায় একটু বেশি সুফল? সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা খানিকটা গবেষণা করেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে। আর উত্তর? চলুন দেখে আসি।

অনেকে সকালবেলায় ঠিক ঠিক সময় মেনে ঘুম থেকে উঠে নির্দিষ্ট সময়ে প্রস্তুত হয়ে কাজের স্থানে পৌঁছে যান। চেষ্টা করেন নিজের ডেস্কের চারপাশের আলো, আবহাওয়া আর বাকী সবকিছু ঠিকঠাক রাখতে। যাতে করে আরো বেশি উত্পাদনশীল হতে পারেন তিনি। সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় আরো ভালোভাবে কাজ করতে পারে তার মাথা। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এরকম কোন কিছুতেই নয়, বরং একমাত্র ক্লান্তিই পারে মানসিকভাবে মানুষকে আরো বেশি সৃষ্টিশীল করে তুলতে।

গবেষকরা এক্ষেত্রে মানুষকে দিন ও রাতের কাজের ভিত্তিতে ভাগ করেন আর দেখতে পান যে মানুষের মস্তিষ্ক তখনই অত্যন্ত প্রখরভাবে কাজ করতে পারে যখন কিনা তার হাতে প্রচুর কাজ থাকে, অর্থাৎ দিনের বেলায়। এসময় প্রচুর পরিমাণ কাজের চাপে কর্মক্ষম হয়ে থাকে মানুষের শরীর আর মস্তিষ্ক হয়ে পড়ে প্রচন্ডভাবে কর্মঠ।

অন্যসময়, অর্থাৎ, দিনের শেষের ভাগে, যখন মানুষের কাজের চাপ কমে যায় তখন ধীরে ধীরে একটু একটু করে সারাদিনের কাজের ক্লান্তি চেপে বসতে থাকে তার মন ও মস্তিষ্কে। ফলে খুব বেশি কাজ করতে পারেনা মস্তিষ্ক। চিন্তার পরিসর, যুক্তির সীমা আস্তে আস্তে কমে আসতে থাকে আর সামনে যা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তার বাইরেও একটা বড় পরিসর মাথার ভেতরে খেলা করে মানুষের। ক্লান্ত মস্তিষ্ক নানারকম অদ্ভূত সব ভাবনা নিয়ে খেলতে থাকে। সৃষ্টিশীল হয়ে উঠতে থাকে মানুষ।

বেশ অদ্ভুত আর হাস্যকর শোনালেও এই ব্যাপারটি কিন্তু বেশ কার্যকরী। আর তাই নিজের ভেতরে সৃজনশীলতাকে বাড়িয়ে তুলতে বেশকিছু ব্যাপার মাথায় রাখুন।

প্রথমত, চেষ্টা করুন হাতের কাছেই একটা কলম আর খাতা রাখতে। এতে করে দিনের যেকোন সময়েই ক্লান্ত মস্তিষ্কের কাছ থেকে ভিন্ন কোন সৃজনশীল ধারণা পেতে পারেন আপনি।

এছাড়াও নিজেকে একটু সময় দিন। প্রতিদিন রাতে চেষ্টা করুন দু কলম লেখার। প্রচুর পরিমাণ কাজ করুন দিনের বেলায়। যাতে করে মস্তিষ্ক খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় আর মেতে ওঠে সৃষ্টিশীলতার খেলায়।

 

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

 

ইফতারে স্বাদ বদলে মজাদার চিকেন ব্রেড পিজ্জা

এই রোজায় ইফতারে কি খাচ্ছেন? সেই সবসময়ের মতো পিঁয়াজু-বেগুনি-আলুর চপ? একটু স্বাদ বদলে চমকপ্রদ কিছু তৈরি করতে চাইলে দেখে নিন আজকের চিকেন ব্রেড পিজ্জার রেসিপিটি। মাংস, পনির এবং ক্যাপসিকামের দারুণ স্বাদে ইফতারে আপনার মনটাই ভালো হয়ে যাবে। পেট ভরাতে সহায়ক এই স্ন্যাক্সটি ইফতার পার্টিতে পরিবেশন করতে পারেন, আবার প্রতিদিনের ইফতারেও রাখতে পারেন। চলুন দেখে নিই সহজ রেসিপিটি।
উপকরণ
– ২টা গ্রিলড চিকেন ব্রেস্ট, শ্রেড করা
– ৮টা পাউরুটির স্লাইস
– পিজ্জা সস প্রয়োজনমতো
– ২ টেবিল চামচ মাখন
– ১ চা চামচ রসুন কুচি
– আধা চা চামচ শুকনো মরিচ
– ৩/৪টা ফ্রেশ বেসিল পাতা
– ১ কাপ বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকামের লম্বা টুকরো
– ২০০ গ্রাম মোজারেলা চিজ, ছোট কিউব করে কাটা
– ফ্রেশ অরিগানো প্রয়োজনমতো
প্রণালী
১) ওভেন ১৮০ ডিগ্রিতে প্রিহিট হতে দিন।
২) একটি পাত্রে মাখন নিন। এতে শুকনো মরিচ ভেঙ্গে নিন। রসুন এবং বেসিল পাতা ছিঁড়ে দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন।
৩) মাখনের মিশ্রণ প্রতিটি রুটির স্লাইসের ওপরে মাখিয়ে নিন এবং একটি বেকিং ট্রেতে রাখুন। এবার প্রিহিটেড ওভেনে দিয়ে ৪-৬ মিনিট বা মুচমুচে হওয়া পর্যন্ত বেক করে নিন।
৪) মুচমুচে এই ব্রেড স্লাইসের ওপরে পিজ্জা সস দিয়ে নিন। এর ওপরে চিকেন, ক্যাপসিকামের টুকরো, মোজারেলার টুকরো এবং কিছু অরিগানো দিয়ে দিন। এবার প্রিহিটেড ওভেনে আবার দিয়ে দিন। চিজ গলে যাওয়া পর্যন্ত বেক করে নিন।

 

বিপ্লব সাহার এক ফ্রেমে বন্দি সিনিয়র তারকারা

এই ছবিটি নিয়ে একটি সুন্দর গল্প আছে। গিয়েছিলাম হায়াত আঙ্কেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে আঙ্কেলের সব নায়িকারা তখন এক সঙ্গে হায়াত আঙ্কেলের সঙ্গে ছবি তুলছে। আমি ভাবতে থাকি যে যদি উনাদের সবাইকে এক ফ্রেমে বাধা যায় তাহলে অনেক ভালো হবে।

আমি হায়াত আঙ্কেলকে পরে জানাই। তিনি রাজি হন। সবাইকে ফোন করতেই ভাগ্যবশত আমি তাদের সবার সময় পেয়ে যাই। সিনিয়র শিল্পীদের সবাইকে একত্র করা অনেক বড় কাজ। কারণ তারা অনেক ব্যস্ত থাকেন। আমি সত্যিই ভাগ্যবান।

শুটিংটা হয়েছিলো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। এক বন্ধুর বাড়িতে। সেদিন সকালে ছিল প্রচণ্ড গরম। সবার জীবন তখন গরমে অতিষ্ঠ। এর মধ্যে একে একে সবাই আসতে থাকেন। প্রথমে আসেন দিলারা জামান, পরে শর্মিলী আন্টি, আফরোজা বানু আন্টিরা আসেন। তারমধ্যে আন্টিরা সবাই একত্রে মজা করছে একদম ইয়ং মেয়েদের মতো। একজন আর একজনকে বলছে কাকে ভালো লাগছে, আর কাকে পঁচা লাগছে। আবহটা ছিল অনেকটা পিকনিকের মতো।

এরমাঝে দুপুরের খাবার এর সময় হয়। হায়াত আন্টি তখনও আসেনি। জানতে পারলাম উনি আসতে চাচ্ছেন না। তাকে ফোন দেই। বলি তিনি না আসলে আমরাও খাবো না। পরে তিনি আসেন। আমাদের ছবি তোলার আসর জমে উঠে। সবাই মিলে দুপুরের খাবার খাই আমরা। আমাদের বিশ্বরঙ এর শুটিং সবাই নিজের মনে করেন। তাই সবাই তারকা ইমেজের বাইরেই থাকেন। এটা হয়েছে, কারণ সবাই আমাকে অনেক পছন্দ করেন, ভালোবাসেন।

পরে আমরা আরো একটা ছবি তুলি যেখানে হায়াত আন্টিকে আঙ্কেল ধরে আছেন। আর তার সব নায়িকারা কেমন করে যেন তাকিয়ে আছেন আমার কাছে মনে হচ্ছিলো যেনবা তারা বুঝি হিংসা করছেন। ছবিটা অনেক সুন্দর হয়েছিলো। পরে সময় করে সেই ছবিও একদিন দেখাবো। আর আমাদের এই ফটোশুট যখন চলছিলো, তখন হায়াত আন্টি দূর থেকে বলছিলো আরে ধরো ধরো, আমার স্বামীর হাত ধরো কোন সমস্যা নেই। কারণ তখন হায়াত আঙ্কেলের নায়িকারা আন্টির সামনে আঙ্কেলের হাত ধরতে একটু ইতস্ততঃ করছিলো। এরকমই অনেক ফান হয়েছিলো সেদিন।

এটি মূলত বিশ্বরঙ এর একটি আলাদা বিভাগ আছে ‘শ্রদ্ধা’ নামে। যেখানে বয়োজোষ্ঠদের জন্য সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। সেই শ্রদ্ধার জন্যই এই ফটোশুটটির আয়োজন করেছিলাম।

গল্পটি বলেছেন বিপ্লব সাহা। দেশিয় ফ্যাশন হাউজ ‘বিশ্বরঙ’ এর কর্ণধার। একাধারে ফ্যাশন ডিজাইনার ও গায়কও বটে। শখের বশে গান করে থাকেন। ভিন্ন ধারার ফ্যাশন হাউজ হিসেবে মিডিয়ায় বিশ্বিরঙ আজ একটি পরিচিত নাম। আর সেই সুবাদে তিনিও বেশ পরিচিত মুখ।

 

দুর্যোগ মোকাবেলায় সীমাবদ্ধতাই নারীর প্রধান সমস্যা

দুর্যোগ মোকাবেলায় নানা ক্ষেত্রে বিচরণে সীমাবদ্ধতার কারণে নারীরা পুরুষের তুলনায় ২৪ শতাংশ কম সক্ষমতাসম্পন্ন। আর অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নারীরা যথাযথভাবে অবদান রাখতে পারছে না।  ‘উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স : কমিউনিটি সিচুয়েশন’ বিষয়ক একশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত নতুন জরিপ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স গবেষণাটি পটুয়াখালী, বরগুনা ও ফরিদপুর জেলার ৪টি ইউনিয়নে পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেয় ২৬১ জন যাদের মধ্যে ১৩২ জন ছিল নারী। ৪টি বিভাগের ৪০টি নির্দেশকের মাধ্যম গবেষণার তথ্য-উপাত্ত উঠে আসে।  গবেষণার তথ্যানুসারে, অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সূচকসমূহে নারীর বিচরণের মান ৪০ যেখানে পুরুষের ৫৫।   সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মিজারিং রেসিলিয়েন্স: উইমেন’স পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।   গবেষণা প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বরিশালের কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘মূলত দুর্যোগ মোকাবেলায় গ্রামীণ পর্যায়ে নারীরা খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না। এর প্রধান কারণ এ বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই বললেই চলে। আর এটি উত্তরণে সর্বপ্রথম সামাজিক প্রতিবদ্ধকতা দূর করতে হবে। আর নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’  গবেষণা আর ‘সাউথ এশিয়ান উইমেন’স রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স’ অনুসারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নানা দুর্যোগের কারণে ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং ১৫ হাজার ৭১৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।   উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স প্রতিবেদনটি, অর্থনৈতিক সম্পদ, নির্ভযোগ্য অবকাঠামো, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ নীতি ও পরিকল্পনা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় রাষ্ট্রের ক্ষমতার উপর তৈরি করা হয়েছে। এবং সেখানে বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে এসব ক্ষেত্রে নারীর অভিজ্ঞতার উপর। জাপান একমাত্র উচ্চ আয়ের দেশ যেখানে দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির অধিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং তাদের স্কোর হলো ৮০.৪। আর বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, ভারত এবং মালদ্বীপের সামগ্রিক স্কোর হলো ৪০ থেকে ৪০.৬, যা দেশগুলোর দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে।   প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত স্কোর হলো ২২.৩, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় নারীরা দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিতে পারে না।   বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গবেষণাটির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে বিষয়টি বিষদভাবে দেখার জন্য নতুন গবেষণাটি করে একশনএইড বাংলাদেশ। যেখানে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলের এখনও শতকরা ৩৭ জন নারীর জীবিকা নির্বাহের জন্য বাজারে প্রবেশাধিকার নেই। আর যেসব নারী আয়ের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন তাদের ৯৪ শতাংশের দৈনিক আয় ১০০ টাকা বা তারও কম। তবে এসব নারীর শতকরা ৪৯ জনের নিজস্ব আয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ৭১ শতাংশ নারীই নিজ গ্রামের বাইরে যেতে ভয় পান। নিরাপত্তার অভাবে নানা দুর্যোগের সময়ও শতকার ৫৫ জন নারী আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে নিরাপদ মনে করেন না।   গবেষণায় আরো পাওয়া যায় যে, ৫১ শতাংশ নারী প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা পায় না। আর স্বাস্থ্য সেবা পেতে ৭১ শতাংশেরই অন্য কারো উপর নির্ভর থাকতে হচ্ছে। আর এসব কারণেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হচ্ছে না।   একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারীনেত্রী সালমা আক্তার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক ড. সালিমুল হক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াজেদ, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাশ্বতী বিপ্লব।