banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

রোজা রাখতে ডায়াবেটিক রোগীর প্রস্তুতি

রমজানে সৃষ্টিকর্তার অপরিমেয় রহমত থেকে বঞ্চিত হতে রাজি নন কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলিম। শত কষ্টের পরেও রোজা রাখার নিয়ত করেন আপন মনে। চরম বিপর্যস্ত বিপাকীয় তন্ত্রের অধিকারী ডায়াবেটিক রোগীরাও বাদ যান না সে নিয়ত থেকে। প্রচণ্ড ধর্মীয় আবেগ আর আগ্রহের কারণে তারা রোজা রাখতে চান। তবে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকলে শারীরিক কিছু সমস্যা হতে পারে। তাই রোজা রাখার কারণে সম্ভাব্য সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে আগেই জেনে নিতে হবে।

রক্তে গ্লুকোজ কমতে পারে

খাদ্য গ্রহণে দীর্ঘসময় বিরত থাকলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমতে থাকে। রোজা রাখা অবস্থায় টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা ৪.৭ গুণ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিকের ক্ষেত্রে ৭.৫ গুণ বেশি থাকে।

রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যেতে পারে

রোজা রাখার কারণে টাইপ-১ ও টাইপ-২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ারও কিছুটা ঝুঁকি থাকে। তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে তা মারাত্মক হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এ থেকে জীবননাশের ঘটনাও ঘটতে পারে।

ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস

টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে রক্তের গ্লুকোজ মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিক রোগীর ক্ষেত্রে এধরনের সমস্যা বেশি হয়।

পানিশূন্যতা

দীর্ঘ সময় পানি বা পানীয় খাদ্য গ্রহণে বিরত থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। গরম ও বেশি আদ্র আবহাওয়ায় পানিশূন্যতা আরও প্রকট হতে পারে। যাদের রোজা রেখে কঠোর শারীরিক শ্রম দিতে হয় তাদেরও পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া, রক্তে বেশি মাত্রায় গ্লুকোজ থাকলে শরীর থেকে পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যাওয়ার হার অনেক বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ুবিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রতিকারের উপায়

ঘন ঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। টাইপ ১ ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে রক্তের গ্লুকোজ লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রতিদিনের খাদ্যের পুষ্টিমান অন্যান্য সময়ের মতোই রাখার চেষ্টা করতে হবে। স্বাভাবিক দৈহিক ওজন ধরে রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। গবেষণায় দেখা যায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগীর দৈহিক ওজন কমে বা বাড়ে। ইফতারে চর্বি সমৃদ্ধ খাদ্য এবং তেলে ভাজা খাবার গ্রহণ করা হতে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। দ্রুত হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উপযোগী। ডায়াবেটিক রোগীর ইফতারের পর পরই খুব দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করতে হবে। ডায়াবেটিক রোগীর প্রচুর পানি পান করা এবং তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিৎ।

শারীরিক শ্রম বা ব্যায়াম স্বাভাবিক শারীরিক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে এ সময়। তবে খুব বেশি কঠোর শ্রম বা ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে করে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। বিকেল বেলায় একদমই কঠোর শ্রম করা যাবে না।

প্রতিটি ডায়বেটিক রোজাদারের শরীরে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কোনো লক্ষণ দিলেই দ্রুত গ্লুকোজ, চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বা শরবত খেয়ে নিতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা থাকলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ খুব সহজেই বোঝা যায়। যাদের তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি, তারা বুক বড়ধড়ফড়ানি, মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগা, ঘাম হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, চোখে অন্ধকার দেখা, মাথা ঘোরা ইত্যাদির এক বা একাধিক লক্ষণ দেখলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

যেসব ডায়াবেটিক রোগী সব ঝুঁকির কথা জেনেও রোজা রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তাদের রোজা শুরুর কমপক্ষে ১ মাস আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। এর মধ্যে আছে খালি পেটে ও খাবার ২ ঘণ্টা পর মোট ৬ বার রক্তের গ্লুকোজ, খালি পেটে রক্তের লিপিড, লিভার, কিডনি ও হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতার পরীক্ষা এবং এইচবিএ১ সি ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিতে হবে।

ডায়াবেটিক রোগী রোজা রাখার সময় খাবার দাবারে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

– সময় শেষ হওয়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে সেহরি খেতে হবে।

– ইফতারের সময় মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার পরিমিত খাওয়া ভালো।

– ডায়াবেটিক রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এতে তাদের দেহ পানিশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পান।

– ফলমূল, শাকসবজি, ডাল, ডাবের পানি ও টক দই খেতে পারেন। ভাজা পোড়া খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, পুরি, পরোটা কাবাব খেলেও খুব অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

– রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার খাবার খেতে হবে।

 

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

মাশরুম চাষ কিভাবে করা যায়, চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা,  এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

‘‘মাশরুম” ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে অনেক স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষকরা মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুর প্রভৃতি স্থানে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাশরুম চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। মাশরুম চাষ করতে আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না।

বাজার সম্ভাবনা
আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় মূলধন

মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।

ব্যাংকঃ
সোনালী ব্যাংকঃ http://www.sonalibank.com.bd/
জনতা ব্যাংকঃ http://www.janatabank-bd.com/
রূপালী ব্যাংকঃ http://www.rupalibank.org/rblnew/
অগ্রণী ব্যাংকঃ http://www.agranibank.org/
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকঃ www.krishibank.org.bd/

এনজিও
আশাঃ http://asa.org.bd/
গ্রামীণ ব্যাংকঃ http://www.grameen-info.org/
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
প্রশিকাঃ http://www.proshika.org/

আয়-ব্যয়
অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।

আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –

স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।

ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।

অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।

মাশরুম উৎপাদন কৌশল

চাষের উপযোগী স্থান
মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।

অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।

১ম পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।

২য় পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।
সাবধানতা
বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।

মাশরুমের উপকারিতা
মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-
রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
খাবারের উপযোগী মাশরুম

প্রশিক্ষণ
সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত ‘মাশরুম চাষ কেন্দ্র’ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নানা স্থানে “মাশরুম চাষ কেন্দ্রের” ১৬টি শাখা আছে। মাশরুম চাষ করে ব্যবসা করার জন্য এসব মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়া মাশরুম চাষ সম্পর্কে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ার মাধ্যমেও মাশরুম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে মাশরুম চাষের বিস্তারিত জেনে নিলে চাষ করতে সুবিধা হবে এবং উন্নতমানের মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।

প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা:
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরঃ www.dyd.gov.bd
বিসিকঃ http://www.bscic.gov.bd/
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরঃ http://www.dwa.gov.bd/

মাশরুম মূল্যবান সবজি। বিদেশে এর যথেষ্ট চাহিদা আছে। মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি গুণের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মাশরুম খাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। তাহলে সাধারণ বাজারেও এর চাহিদা বাড়বে। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য ঘাটতি আছে, মাশরুম কিছুটা হলেও তা পূরণ করতে পারে।

 

সুখী দাম্পত্য জীবনের ১০টি মূলনীতি

যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত। [৪:৩৫]

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দাম্পত্য বন্ধনের কিছু মূলনীতি একত্রিত করার চেষ্টা করেছি, যা আমাদের সবার কাজে লাগবে ইনশা’আল্লাহ।

১. বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন। চারপাশের পরিবেশে হারাম যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে বিবাহের মতো পবিত্র বন্ধন বরং মহামূল্যবান রত্নের ন্যায়। এটা এক হীরক টুকরো। স্বামী-স্ত্রী ও উভয়ের পরিবারের যথাসম্ভব চেষ্টা করা উচিৎ যেন এই হীরার টুকরোটিতে আঁচ না লাগে, বা ভেঙে না যায়। এ বন্ধন ভেঙে যাওয়া মানে উভয় পক্ষের জন্য হাজারো গোনাহের দরজা খুলে দেয়া, যা নিশ্চয় আমরা চাইব না।

২. আমরা আল্লাহর আবদ বা গোলাম। তাঁর সন্তুষ্টিই আমাদের সন্তুষ্টি। তাঁর তাকওয়া বা ভীতি আমাদের জীবন চলার পথের রসদ। কাজেই যা কিছুই করি না কেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বিধানের মাপকাঠিতে তাকে পরখ করে দেখতে হবে। আমরা এমন কিছু করছি না তো, যা তাঁকে অসন্তুষ্ট করে! সেজন্য নিজে পড়াশোনা করতে হবে, আলেমদের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

৩. শয়তান সর্বদা মানুষের পেছনে লেগে আছে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দূরত্ব তৈরি করার মাঝেই তার চূড়ান্ত সফলতা।

ক. রাসূল স. বলেন,

إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنِ ابْنِ آدَمَ مَجْرَى الدَّمِ

শয়তান মানুষের মাঝে রক্তের ন্যায় চলাচল করে। [সহীহ বুখারী: ৭১৭১]

খ. স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করা সৃষ্টি করা শয়তানের জন্য নতুন নয়। সুলায়মান আ. এর সময়কালে শয়তানদের কার্যক্রম বর্ণনায় আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা মানুষকে যাদুবিদ্যা শেখাত।

فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ

অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। [আল-কুরআন, ২:১০২]

গ. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ তৈরিকারী শয়তান-সরদার ইবলিসের কাছে বেশি প্রিয়।

عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ إِبْلِيسَ يَضَعُ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ ثُمَّ يَبْعَثُ سَرَايَاهُ فَأَدْنَاهُمْ مِنْهُ مَنْزِلَةً أَعْظَمُهُمْ فِتْنَةً يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ فَعَلْتُ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ مَا صَنَعْتَ شَيْئًا قَالَ ثُمَّ يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ مَا تَرَكْتُهُ حَتَّى فَرَّقْتُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ امْرَأَتِهِ – قَالَ – فَيُدْنِيهِ مِنْهُ وَيَقُولُ نِعْمَ أَنْتَ ”

জাবির রা. বর্ণনা করেন, রাসূল স. বলেছেন, নিশ্চয় ইবলিস পানির ওপর তার সিংহাসন বসায়, অতঃপর তার বাহিনীকে পাঠায় (মানুষকে বিপথগামী করার জন্য)। তাদের মধ্যে তার কাছে সবচেয়ে নিকটবর্তী সে-ই হয় যে সবচেয়ে বড় ফিতনা তৈরি করতে পারে। তো, কেউ এসে জানায়, আমি ওটা করেছি, সেটা করেছি; ইবলিস বলে, এটা তেমন কিছু করো নি। অতঃপর অন্য একজন এসে জানায়, আমি অমুককে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাড়ি নি, যতক্ষণ না তার ও তার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছি। ইবলিস তাকে কাছে টেনে নিয়ে বলে, হ্যাঁ তুমি বেশ করেছ।” [সহীহ মুসলিম: ২৮১৩]

৪. আমরা কেউই ১০০% পারফেক্ট নই। কিছু ভালো ও কিছু মন্দ দিক নিয়েই আমাদের জীবন চলা। ভালো দিকগুলো দেখে খারাপগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۚ فَإِن كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন। [আল-কুরআন, ৪:১৯]

وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ

পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়ত কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়ত কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুত: আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। [আল-কুরআন, ২:২১৬]

৫. ক. রাগ কোনো বীরত্ব নয়। বরং রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাই বীরত্ব।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ “.

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল স. বলেছেন, বীরত্ব শক্তির লড়াইয়ে জেতায় নয়, বরং প্রকৃত বীর সে-ই, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। [সহীহ বুখারী ৬১১৪]

খ. রাগ মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। আল্লাহ তায়ালা রাসূলের স. নম্র স্বভাবের প্রশংসা করে বলেন,

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللَّهِ لِنتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ

আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন। পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াককুল কারীদের ভালবাসেন। [আল-কুরআন, ৩:১৫৯]

এই আয়াতের আরো তিনটা শিক্ষা হলো: ক. ক্ষমা করা। খ. পরামর্শ করা। গ. কোনো বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প হলে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা

৬. স্ত্রীর সাথে নমনীয় ব্যবহার কাপুরুষতা নয়, বরং তা শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয়।

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لأَهْلِي

উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. বলেন, তোমাদের মাঝে সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম। এবং আমি আমার স্ত্রীদের কাছে সর্বোত্তম। [সুনান তিরমিযী ৪২৬৯]

৭. স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পরিচ্ছদ, সবক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী।

هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ

তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। [আল-কুরআন, ২: ১৮৭]

৮. স্বামীর হালাল নির্দেশ পরিপালন দাসত্ব নয়, বরং শরীয়তের নির্দেশ:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، وَلاَ تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، وَمَا أَنْفَقَتْ مِنْ نَفَقَةٍ عَنْ غَيْرِ أَمْرِهِ فَإِنَّهُ يُؤَدَّى إِلَيْهِ شَطْرُهُ “.

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল স. বলেন, স্বামী উপস্থিত থাকাবস্থায় তার অনুমতি গ্রহণ ছাড়া স্ত্রীর জন্য (নফল) রোজা রাখা হালাল নয়। অনুরূপভাবে স্বামীর ঘরে অন্য কাউকে তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশের অনুমতি দেয়া হালাল নয়। এবং নির্দেশ ছাড়া স্বামীর সম্পদ থেকে যা খরচ করবে (দান হিসেবে) তার অর্ধেক সওয়াব স্বামী পাবে। [সহীহ বুখারী ৫১৯৫]

৯. স্বামীর নেতৃত্ব তার মর্যাদার চূড়ান্ত স্বীকৃতি নয়, বরং সংসার নাম প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে
স্বামীর জন্য এ এক বিরাট দায়িত্ব, এবং এ দায়িত্ব সম্পর্কে সে জিজ্ঞাসিত হবে।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ، فَالإِمَامُ رَاعٍ وَهْوَ مَسْئُولٌ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وَهْىَ مَسْئُولَةٌ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ، أَلاَ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ “.

আব্দুল্লাহ বিন উমার রা. বর্ণনা করেন, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। নেতা দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার স্ত্রীর ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ির ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। গোলাম তার মুনিবের সম্পদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। মনে রেখো, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। [বুখারী ৫১৮৮]
চূড়ান্ত মর্যাদার নির্ণায়ক একমাত্র তাকওয়া বা আল্লাহভীতি।

إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ﴿الحجرات: ١٣﴾

নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [আল-কুরআন, ৪৯:১৩]

১০. সর্বোপরি আমাদের আদর্শ রাসূল স. তাঁর স্ত্রীদেরকে সময় দিয়েছেন, কথা শুনেছেন, হালাল বিনোদনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের সাথে পরামর্শ করেছেন। সীরাহ চর্চায় এমন বহু ঘটনার দেখা মেলে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে দুটো কথা:

১. ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যর্থ হলে পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা।

وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِّنْ أَهْلِهَا إِن يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا

যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত। [৪:৩৫]

২. অনেক ভেবেচিন্তে, ইস্তিখারা করে, পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারণ,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ ”

ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী স. বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে তালাক। [সুনান আবু দাউদ ২১৭৮]

আল্লাহ আমাদের হালাল বন্ধনকে মজবুত করে দিন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম করে দিন। আমীন।

মুফতি ইউসুফ সুলতান
গবেষণা সহকারী, ইসরা কনন্সালটেন্সি, কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া

 

নারীর রমজান প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত

আবার শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সম্মিলিত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন ধরনের সমস্যা। বউয়ের চাকরি-বাকরি করাকে এখনও অনেক পরিবারে সাধুবাদ জানানো হয় না। তাই চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে এ মাসে ঘর ও অফিসের কাজকে সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

জীবনে যে কোনো কাজে সফলতার জন্য প্রয়োজন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ। সর্বপ্রথম প্রস্তুতি নিতে হয় মানসিক, অর্থাৎ নিয়ত পোক্ত করা। নিয়ত পোক্ত না হলে গুরুত্বপূর্ণ কাজেও অবহেলা চলে আসে। এমন মহিমান্বিত মাসে অবহেলা মানে কতটা ক্ষতিকর, সচেতন মুসলমান মাত্রই তা বুঝতে পারে। তাই ইবাদতের এ মাসে নারীদের বাহ্যিক অতিরিক্ত কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এখানে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

১. পরিবারের সদস্যদের রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বোঝানো এবং আমলের প্রতি উৎসাহিত করা।
২. রমজান আসার আগেই ঘরদোর ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার করে নেওয়া। সোফার কাভার, জানালা-দরজার পর্দা ইত্যাদি ধুয়ে পরিপাটি করে রাখা। রমজানের জন্য ভারি কোনো কাজ ফেলে না রাখা। যাতে এসব করতে গিয়ে দুর্বলতা পেয়ে না বসে, আমলে কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটে।
৩. সংযমের এ মাসে প্রত্যেক গৃহিণীর উচিত সংসারের অতিরিক্ত খরচ কমানো, যা দরকার নেই তা বর্জন করা।
৪. ছোলা, চিনি, তেল, খেজুর, বেসন, ডালসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনো বাজারসদাই যথাসম্ভব আগেই কিনে সংরক্ষণ করা। এতে রমজানে জিনিসপত্রের আকাশচুম্বী দামও এড়ানো যাবে আবার বাজারের ঝামেলাও কমবে।
৫. কোনো অবস্থাতেই ঈদের কেনাকাটা রমজানের জন্য ফেলে রাখা ঠিক হবে না। এতে ইবাদতে বিশাল বিঘœ ঘটে।
৬. রোজার দিনগুলো কীভাবে পার করবে তার একটা খসড়া তৈরি করা। অর্থাৎ দিনের কোন সময়টাতে কোরআন তেলাওয়াত করবে, কোন সময়টাতে নফল নামাজ পড়বে এবং জিকির আজকার ও দোয়ায় কোন সময়টা কতটুকু ব্যয় করবেÑ এসব কিছু রুটিন করে রাখা উচিত। এমনকি ঘুমের সময়টুকুও নির্ধারণ করা উচিত।

চাকরিজীবী নারীর পরিকল্পনা : চাকরিজীবী নারীদের রোজার মাসে অফিসের পাশাপাশি অন্য সকল কাজ চালিয়ে যাবার লক্ষ্যে অবশ্যই আগে থেকে পরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে জীবনসঙ্গীর সহযোগিতা একান্ত কাম্য। কেননা একজন নারীকে যখন মা হিসেবে সন্তানের ঈদের নানা চাহিদা পূরণ, পরিবারের সকলের জন্য রোজার সেহেরি, ইফতারির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চাকরি চালিয়ে যেতে হয়- তখন তা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আবার শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সম্মিলিত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন ধরনের সমস্যা। বউয়ের চাকরি-বাকরি করাকে এখনও অনেক পরিবারে সাধুবাদ জানানো হয় না। তাই চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে এ মাসে ঘর ও অফিসের কাজকে সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

ফয়জুল আল আমীন

 

নারীদের সফলতার পেছনে রয়েছে এই ৩টি কারণ

আপনি পুরুষ হন বা নারী সফল হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। শ্রম, বুদ্ধিমত্তা, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা একজন সফল ব্যবসায়ীর মাঝে থাকে বলেই তারা এক সময় সফল হন। তবে আলাদাভাবে নারীর সফলতায় আমরা বেশী বিস্মিত হই কারণ আমাদের সমাজে নারীর চলার পথ পুরুষের তুলনায় অনেক দূর্গম।
একজন নারীর দায়িত্ব থাকে বহুমূখী। তাকে পরিবারের খুঁটিনাটি এত দিকে খেয়াল রাখতে হয় যে এর বাইরে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা হয়ে দাঁড়ায় খুবই কঠিন। তবু অনেক নারীই তাদের পেশায় সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বলা হয়, নারীরা মাল্টিটাস্কার। আসুন জেনে নিই, কোন ৩টি গুণ বিশেষভাবে সহযোগিতা করে একজন নারীকে সব প্রতিকূলতার মাঝেও মাথা তুলে দাঁড়াতে!
দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
সফল নারীরা কখনো প্রতিজ্ঞা থেকে সরে দাঁড়ান না। যত প্রতিকূলতাই আসুক তারা তাদের স্বপ্ন সফল করার কাজে একান্তভাবে মনোনিবেশ করেন। আজকের নারীরা বিয়ের পর শুধু শ্বশুর বাড়ির পরিবারের দায়িত্ব নেন না, তারা নিজের পরিবারের দায়িত্বও পালন করেন। এত কাজের মাঝেও যারা সফল হতে চান তারা কখনোই ক্যারিয়ারের স্বপ্ন ছেড়ে দেন না। তাদেরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় তাদের দৃঢ়তা।
Twyla Tharp, একজন নৃত্যশিল্পী। তার লেখা বইয়ের নাম “The Creative Habit”। তিনি বলেন, ‘প্যাশন ছাড়া পৃথিবীর কোন দক্ষতাই সৃষ্টিতে পরিণত হয় না’। আপনি যদি আপনার কাজের প্রতি প্যাশনেট থাকেন তাহলে দেরিতে হলেও তার ফল পাবেন। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে আপনাকে হাল ছাড়লে চলবে না, নিজেই নিজেকে উতসাহিত করতে হবে এবং পরিশ্রম করে যেতে হবে।
আত্মবিশ্বাস
সফল নারীরা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী হন। আপনি নিজে যদি নিজের উপর বিশ্বাস না করেন অন্যরা যতই আপনার প্রশংসা করে আপনাকে শক্তি দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, আপনি হেরে যেতে থাকবেন। বিপরীত দিকে আপনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা যতই প্রতিকূল থাকুক না কেন, আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে আপনি পারবেন, তাহলে অবশ্যই পারবেন। কারণ মানুষের শক্তি আসলে মানুষ নিজেই।
USA নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা কে কোপলোভিটয বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে যে, আপনি একান্তই আপনার মত করে ভাবতে পারেন এবং প্রত্যাশামত ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন। নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকতেই হবে এবং এটাই সফলতার ভিত্তি।
 
ঝুঁকি নিতে ভয় না পাওয়া
ঝুঁকি ছাড়া জীবনের কি কোন মানে আছে? ঝুঁকি না থাকলে সফলতাও ধরা দেয় না। পরিবর্তনের জন্য নতুন পথ বেছে নিতে হয়। আর নতুন পথে সবসময়ই আশঙ্কা থাকে, অনিশ্চয়তা থাকে। তবু আজকে যার সফল হয়েছেন, সফলতার এই শিখরে পৌছবার পথে ঝুঁকি নিতে পিছ পা হন নি কখনো। তবে অবশ্যই ঝুঁকি নেওয়ার ব্যাপারে আপনার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত হওয়া চাই।
আমাদের সমাজের বাস্তবতায় একজন নারীকে কখনো কখনো তার সংসার এবং ক্যারিয়ারের মাঝে যে কোন একটিকে বেছে নিতে হয়। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। পরিবারগুলো অনেক সাপোর্ট দেয়। কিন্তু শতকরার হিসেবে তা অতি নগন্য। এর মাঝেও যেসব নারীরা সফল তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

নুডলস দিয়ে ঝটপট তৈরি করুন স্প্রিং রোল

নুডলস খাবারটি ছোট বড় সবার বেশ পছন্দ। আর এই নুডলস দিয়ে তৈরি করা যায় নানা মজাদার খাবার। নুডলস কাটলেট, নুডলস চপ, নুডলস রোল আরও কত কি। এইবার নুডলস দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন স্প্রিং রোল। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সম্পূর্ণ রেসিপিটি।

উপকরণ:

১/৪ কাপ বাঁধাকপি কুচি

১/২ ক্যাপসিকাম চিকন করে কাটা

১টি পেঁয়াজ কলি চিকন করে কাটা

৪-৫টি বরবটি কুচি

ম্যাগি নুডলস এবং এর টেস্ট মেকার

১ কাপ টমেটো সস

১ টেবিল চামচ তেল

১/২ চা চামচ আদা মরিচের পেস্ট

১ চা চামচ চাট মশলা

লবণ

টাবাসকো সস

ময়দার পেস্ট

প্রণালী:

১। প্যানে তেল দিয়ে ক্যাপসিকাম এবং মটরশুঁটি দিয়ে ২ মিনিট ভাজুন।

২। এতে ম্যাগি নুডলস দিয়ে দিন। পানি এবং টেস্ট মেকার দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন।

৩। এবার এতে আদা কাঁচামরিচের পেস্ট, চাট মশলা, টমেটো কেচাপ, বাঁধাকপি কুচি এবং পেঁয়াজ কলি কুচি এবং লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিন।

৪। রোল শিট নিয়ে এতে নুডলসের মিশ্রণটি দিয়ে দিন। এবার শিট একপাশ থেকে রোল করে অন্যপাশে নিয়ে আসেন। ময়দা এবং পানির মিশ্রণ দিয়ে রোলের মুখ লাগিয়ে দিন।

৫। এবার তেল গরম হয়ে আসলে রোলগুলো দিয়ে দিন।

৬। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার নুডলস স্প্রিং রোল।

 

চলছে বাংলাদেশ ফ্যাশন কার্নিভ্যাল

রেড কার্পেট ৩৬৫ লি: আয়োজিত ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল ২০১৬ গুলশান ১ এর এমানূয়েল’স ব্যানকুট হল এ গত ২৫ মে থেকে ৫দিনের একটি আকর্ষণীয় আন্তর্জাতিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে ৬টি দেশ থেকে ৪৫টি কোম্পানি।

ঈদুল ফিতর- এর বিশাল বাণিজ্যিক সমাহারকে সামনে রেখে আয়োজিত এই মেলার স্লোগান হলো, “আমাদের সাথে করুন আপনার ঈদের কেনাকাটা’। এই মেলা সর্বসাধারন ও বাণিজ্যিক দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০ থেকে রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল এর সূত্র জানিয়েছে, দেশ ও বিদেশের উন্নত পোশাক ও ফ্যাশন দ্রব্য পরিদর্শকদের সামনে উপস্থাপনের জন্য এই আয়োজন। এই আন্তর্জাতিক ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল-এ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ গ্রহণ করে বিদেশি ও দেশি ক্রেতার সামনে উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে এই মেলায়।

প্রদর্শনে রয়েছে মহিলাদের কাপড়, শাড়ি, ফ্যাশন ওয়্যার, ফতুয়া, গৃহস্থালী টেক্সটাইল, কুর্তা, প্রিমিয়াম ক্লথ, রেডিমেড পোশাক, সালোয়ার কামিজ, থ্রিপিস, শাল, প্রসাধনী, সৌন্দর্য চর্চার উপকরণ, ফ্যাশন হাউজ, উপহার সামগ্রী, হিজাব, ও সৌন্দর্য সেবায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই মেলাতে বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, ইরান, ফিলিপাইন্স ও তুরস্ক থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে কোম্পানি আংশগ্রহন করছে।

 

এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রাম জিইসি মোড়ে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।রোববার সকাল ৭টার দিকে ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।তাঁর লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এসপির সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।জানা গেছে, এসপি বাবুল আক্তারের বাসা চট্টগ্রাম নগরের ওআর নিজাম রোডে। তাঁদের ছেলে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ে। সকালে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যান মা মাহমুদা খানম। বাসার কাছাকাছি ওয়েল ফুডের দোকানের সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজামউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি অনেক জঙ্গি ধরেছেন। এ কারণেই তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

বাবুল আক্তার সবশেষ নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে এসপি হন। গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন তিনি। তাঁর কর্মস্থল এখনো নির্ধারিত হয়নি।

 

স্বপ্নপূরণের পথে ৯৭ নারী

পুরুষের পাশাপাশি এবার থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পাহারা দেবে নারীরাও। সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি নারী ও শিশু পাচার এবং চোরাচালান বন্ধেও নারী সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেই আশা। তাই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৩২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সৈনিক পদে ৯৭ জন নারীকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। পার্সিং আউটের মাধ্যমে ওই নারীদের সেই স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে।

রোববার সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পার্সিং আউট অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে শনিবার সকালেই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদু্জ্জামান খাঁন কামাল ও বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এদিকে ৯৭ নারী সদস্যর পার্সিং আউট উপলক্ষে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজেছে বিজিবির পুরো ক্যাম্প। ভবন থেকে শুরু করে প্রতিটি গাছেও রয়েছে আলোকছটা। রাত জেগে তৈরি করা হচ্ছে পার্সিং আউট উপভোগের প্যান্ডেল।

শনিবার রাতে বিজিবির প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজিবির ডিজির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিজিবির ৮৮তম রিক্রুট ব্যাচের সদস্যরা অংশ নেয়।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, এদিন ৮৮তম রিক্রুট ব্যাচের ১ হাজার ১৪৪ নবীন সৈনিকের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাধন গ্রহণ করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় এই ব্যাচের সৈনিকদের মধ্য থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রথম স্থান অর্জনকারী ও সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিকের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্র আরো জানায়, নানা পেশায় পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবিতে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো নারী সৈনিক নিয়োগ দেয়া হয়। চট্টগ্রামে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে রোববার নারী সৈনিকদের প্রথম ব্যাচটি বিজিবির কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। এ বছর আরো ১০০ নারী সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের মৌলিক প্রশিক্ষণ জুলাই মাসেই শুরু হবে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, যোগদানের পরপরই তাদেরকে টেকনাফ ও বেনাপোলের মতো যেসব এলাকায় নারী পাচারকারীদের আনাগোনা সেখানে পোস্টিং দেয়া হবে। এছাড়াও বিজিবির গেটগুলোতেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে নারীরা।

তাছাড়া মাদক চোরাচালানের জন্য বেশিরভাগই নারীদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে নারীদের দেহ তল্লাশির ক্ষেত্রে নানা জটিলতায় পড়তে হয় বিজিবির পুরুষ সদস্যদের। এক্ষেত্রে নারী সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা রাখবে।