banner

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 180 বার পঠিত

 

সমাজ বদলাতে পারে নারীরাই

নিলম বেহেঙ্গরা সমাজের একজন প্রগতিশীল নারী। তার স্বামী তার আগে ঘুম থেকে ওঠলে নিজেই চা বানিয়ে ফেলেন এবং স্ত্রীর সামনে চা নিয়ে হাজির হয়ে যান। কিন্তু কিছুদিন আগেও এমনটি মোটেও ছিল না। স্বামীর জন্য সকালের চা বানিয়ে তাকেই বরং হাজির হতে হতো। তাহলে এমন কি পরিবর্তন হলো যে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর চিন্তাধারা পাল্টে গেল। জানতে চাইলে ঝাড়খণ্ডের নিলাম তার রূপান্তরিত জীবনের গল্পটুকু টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিকের কাছে তুলে ধরেন। প্রতিবেদনটি বাংলামেইলের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

নিলমের জীবনের পরিবর্তনটা হয়েছিল ঠিক তখনই যখন তিনি আত্মনির্ভরশীল একটি সংস্থার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে যোগ দেয়ার পর থেকেই তার মন মানসিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন হল। যা পরে তার পরিবারকেও বদলে দিতে সাহায্য করেছিল। আত্মবিশ্বাসী নিলম এখন তার পরিবারের সবার শ্রদ্ধার পাত্রী হয়ে উঠেছেন। এমনকি তার ছোট ছেলেটিও বেশ গর্ব করে মায়ের এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে। ফসলের জন্য তার স্বামীও তাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি এনে দিয়েও সাহায্য করে।

নিলম বলেন, ‘আমার কাজ এবং আমার পরিবার আমাকে যে শুধু অনুপ্রাণিত করে তা কিন্তু নয় বরং আমাকে সমানে কাজ করার দৃঢ় মনবোল জোগায়। সমাজ পরিবর্তনে নারীর যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে আমি এটা সবাইকে জানাতে চাই। আর এই কারণে আমি গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করতে চাই এবং সমাজে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করতে চাই’। তবে নিলমের এই ঘটনাটি সবার দৃষ্টান্ত হবে বলে মনে করেন অনেকে। নারীর ক্ষমতায়ন শুধু নারীর উপর নির্ভর করে না এর জন্য পুরুষকে একযোগে কাজ করতে হয়। তিনি আরো বলেন, বাবা, ভাই, সন্তান এমনকি স্বামীর সহযোগীতা ছাড়া একা করো পক্ষে পরিবর্তন আনা সম্ভব না।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পরুষেরা সমাজের নানরকম নিয়মকানুন তোয়াক্কা না করে নারীর পাশে এসে দাঁড়ায়। যেমন একটি উদাহরন দিয়ে নিলম বলেন, ‘আমি অনেক গর্ভবতী নারীর সঙ্গে কথা বলেছি, গর্ভধারণের ওই সময়টাতে তাদের শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক ভারী হয়ে যায়। সেই সময় অনেক পুরুষই তাদের স্ত্রীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না এমনকি ঠিকমতো দেখাশোনাও করে না। পুরুষেরা অনেক ক্ষেত্রে পরিবার পরিকল্পনা মেনে চলে না। যার ফলে একের পর এক সন্তান জন্মে দেয়ার ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে নারী। তবে এক্ষেত্রে নারী যদি একটু সোচ্চার ও সচেতন হয় তাহলে এমন ঘটনা কখনোই সম্ভব না।

তার চেয়েও বড় কথা একটি নারী যখন স্বামীর পাশাপাশি পরিবারে অর্থ যোগান দিতে সক্ষম হয় তখন সেই পরিবারটিতে তার দাম বেড়ে যায় বহুগুন। এমনকি পরিবারের সদস্যদের চোখেও তার সম্মান বেড়ে যায় অনেক। তবে এমন পরিবর্তনের জন্য সবার আগে যেটা প্রয়োজন বলে সবাই মনে করেন তা হলো সচেতনতা। স্কুল কলেজগুলোতে যদি ছোটবেলা থেকে ছেলেমেয়েদের নারীর মূল্য এবং নারীর প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত এ নিয়ে যদি আলোচনা করা হয় তাহলে অনেক্ষেত্রে নারীরা সমাজে শোষিত কম হবে। শুধু নীলম নয় এমন অনেক সফল নারীর গল্প রয়েছে পুরো পৃথিবীর আনাচে কানাচে। তার মধ্যে বেশিরভাগই থেকে যায় আমাদের জানার বাইরে। সেইসব নারীদের আত্মবিশ্বাসী গল্প সবার মাঝে ছড়িয়ে দিত পারলে সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

Facebook Comments