banner

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 103 বার পঠিত

ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষন,অভিযোগ করলেও আমলে নেয়নি পুলিশ!

1402155849.

মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে মেয়েটি। সুমন নামে এক বখাটে তাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করত। দিয়েছিল অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকিও। মেয়েটির মা অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ তা আমলে নেয়নি। পরে তারা বাসা বদল করে অন্য পাড়ায় চলে যায়। সেই বাসা খুঁজে বের করে মেয়েটিকে কৌশলে তুলে নিয়ে গিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ধর্ষণ করে এবং লুকিয়ে রাখে বখাটে সুমন। পুলিশ নয়, পাঁচ দিন পর পরিবারই পাশের উপজেলা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। 
মেয়েটির গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায়। তারা থাকে শহরের একটি ভাড়া বাসায়। গত মঙ্গলবার তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগাড়া গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
পরে মেয়েটির মা বাদী হয়ে শনিবার রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের নিশ্চিন্তপুর মহল্লার মো. সুমন, বসিরপাড়ার সোহেল রানা ও বাজারপাড়ার নাদিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ রাতেই বসিরপাড়ার একটি মেস থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার রাতেই মেয়েটিকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে তার শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ খুরশীদ জাহান হক বলেন, মেয়েটির ওপর পাশবিক নির্যাতন হয়েছে। রক্তক্ষরণে শারীরিকভাবে দুর্বল ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে সে। গতকাল সোমবার দুপুরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
গতকাল বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক জুলফিকার আলী খান মেয়েটির জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। মেয়েটির (১৩) বর্ণনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার সুমন তার দুই সহযোগী সোহেল ও নাদিমকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে তাদের ভাড়া বাসার সামনে যায়। কৌশলে তাকে বাসার বাইরে ডেকে এনে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে বসিরপাড়ার একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেঁধে সুমন ও তার দুই সহযোগী তাকে ধর্ষণ করে।
অসুস্থ হয়ে পড়লে বখাটেরা বুধবার সকালে মেয়েটিকে পীরগঞ্জের লোহাগাড়ায় সুমনদের আত্মীয় জবেদ আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
মেয়েটির মা জানান, বখাটে সুমন তাঁর মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করত। সম্প্রতি সে তাঁর মেয়ের হাতে দুই হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে একটি মুঠোফোন সেট কিনে নিতে বলে। কিন্তু মেয়ে টাকা নিতে রাজি না হলে সুমন অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি দেয়।
এই মা জানান, মেয়ে বাসায় এসে বলার পর তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রথমে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে চান। কিন্তু পড়ালেখার কথা চিন্তা করে দ্রুত বাসা বদল করে অন্য পাড়ায় চলে যান। ঈদের ছুটির পর সুমন সেই বাসাও খুঁজে বের করে আবার উত্ত্যক্ত করা শুরু করে।
গত শনিবার রাতে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মান্নানের উপস্থিতিতে মেয়েটির মা দাবি করেন, মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি নিজেই আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে সন্ধানে নামেন। কারণ, এর আগে সুমনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ নিয়ে এলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মেয়েটির মা জানান, বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর একটা ঘটনার সূত্র ধরে তিনি শনিবার সন্ধ্যায় পীরগঞ্জের লোহাগাড়া গ্রাম থেকে মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং থানায় নিয়ে আসেন। সেখান থেকে নেওয়া হয় হাসপাতালে।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মেহেদী হাসান স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুচরিতা দেব জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁরা মেয়েটিকে সব ধরনের সহায়তা দেবেন।

Facebook Comments