banner

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1138 বার পঠিত

বাহারি সব ভর্তা

 

top20140507211907

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম, ঢাকা :  উৎসবেই আয়োজনের পূর্ণতা পায় খাবার-দাবারে। অন্তত ভোজনরসিক বাঙালির ক্ষেত্রে। তাইতো প্রিয় কবির জন্মদিনের এই দিনটিতে আমরা অনায়াসেই টেবিল সাজাতে পারি বাঙালীর প্রিয় খাবার ভর্তা দিয়ে। বাঙালি সে যেখানকারই হোক না কেন ভর্তা খেতে ভালোবেসে না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই এবারের রবীন্দ্রজয়ন্তীতেই হোক না আপনার ঘরে ভর্তা উৎসব।

আলু ভর্তা :

downloadআলু ভর্তার সঙ্গে পরিচয় নেই এমন বাঙালী খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। আর আলু ভর্তা বানাতে পারে না এমন নারী অথবা পুরুষের সংখ্যাও অত্যন্ত নগন্য। তারপরেও এই জানা জিনিসটাকেও কিভাবে আরও সুস্বাদু করা যায় তারই কয়েকটা উপায় জানাচ্ছি। সাধারণভাবে আলু ভর্তা করার নিয়ম হচ্ছে প্রথমেই আলুটাকে সিদ্ধ করে নেয়া। আর পরিমাণ নির্ভর করবে কয়জন খাবে তার ওপর। সিদ্ধ করা আলুটাকে ভালো করে চটকে নিতে হবে। তারপরে কুঁচি করা পিয়াজ, কুঁচি করা মরিচ, লবণ আর পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে ভলো করে মাখিয়ে নিলেই তৈরী হয়ে যাবে আলু ভর্তা। আর যদি এরচেয়ে একটু ব্যতিক্রম করতে চান তবে পিয়াজ কুচি এবং কাঁচা মরিচ অথবা শুকনা মরিচ(যা আপনি ভালোবাসেন) ভেজে নিতে পারেন সরিষার তেলে। এই ভাজা পিয়াজ, মরিচ ও তেল চটকানো আলুর সঙ্গে মেশালে বদলে যাবে চিরচেনা আলু ভর্তার স্বাদ। আর এই ভাজা তেল-পিয়াজে ছেড়েও দিতে পারেন চটকানো আলু। তারপর কিছুক্ষণ ভেজে নিয়ে পরিবেশন করতে পারেন ভাজা আলু ভর্তা। আবার কাঁচা পিয়াজের স্বাদ যারা মিস করতে চান না তারা শুধু মরিচটাকে ভেজে নিলেই একটুতো আলাদা স্বাদ পাবেনই। আর সরিষার তেলের বদলে খাঁটি ঘি দিয়েও মাখাতে পারেন সব বাঙালীর প্রিয় এই আলু ভর্তা। আরও বিশেষ কিছু করতে চাইলে আলু সিদ্ধ না করে পুড়িয়েও নিতে পারেন আগুনের তাপে। ঝলসানো আলুর ধোঁয়াটে গন্ধ আর পিয়াজ, লঙ্কা, তেলে মিলেমিশে তৈরী হবে অনন্য এক স্বাদ।

বেগুন ভর্তা

download (1)
আলু ভর্তার মতো এতটা জনপ্রিয় না হলেও বাঙালীর কাছে বেগুন ভর্তার কদরও নিতান্ত কম নয়। সাধারণত বেগুনটাকে পুড়িয়েই নেয়া হয়। আবার অনেকে সিদ্ধ করেও করেন বেগুনের ভর্তা। ঝলসানো বেগুন বা সিদ্ধ বেগুন, যাই হোক না পিয়াজ কুঁচির সঙ্গে ঝলসানো লাল মরিচ চটকে, সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে খুব সহজেই করে নিতে পারেন বেগুন ভর্তা। আর অ্যাসিডিটি হওয়ার ভয় থাকলে শুকনা মরিচের বদলে তেলে ভেজে নিন কাঁচা মরিচ। স্বাদ নিয়েও চিন্তা থাকলো না। স্বাস্থ্যগত সমস্যা থেকেও দূরে থাকা গেলো।

টমেটো ভর্তা :

download (2)
টমেটোকে বেগুনের মতোই সিদ্ধ করে অথবা ঝলসে ভর্তা করা হয়। প্রণালীও প্রায় এক রকম।

কালোজিরার ভর্তা :

download (3)
কালোজিরা অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি মশলা। বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক এবং প্রতিষেধক এই কালোজিরা। কালোজিরার ভর্তাও অনেক ভোজনপ্রেমিকেরই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। কালোজিরা ভর্তা তৈরীর জন্য প্রথমেই এক টেবিল চামচ কালোজিরা ধুয়ে শুকিয়ে নিন। তারপর এই শুকানো কালোজিরার সাথে দুইটি ছোট রসুনের কোষ মৃদু আঁচে ভালো করে টেলে নিন। শুকনা মরিচ খেতে চাইলে কতটুকু ঝাল খেতে চান সেই অনুপাতে ২/৩টা মরিচ টেলে নিন। আর কাঁচা মরিচ খেতে চাইলে ২টা বা তিনটা কাঁচা মরিচ তেলে ভেজে নিন। এবার রসুনের খোসা ছাড়িয়ে কালোজিরা, রসুন, মরিচ ও পরিমানমতো লবণ একসাথে সামান্য পানি দিয়ে বেটে নিন। তৈরী হয়ে যাবে সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সমৃদ্ধ কালোজিরার ভর্তা।

লাউপাতা ভর্তা :

download (4)
লাউপাতা ভালো করে ধুয়ে ভাপে সিদ্ধ করে নিন। এবার পরিমান মতো রসুন, পিয়াজ, মরিচ দিয়ে বেটে নিন। বেটে নেয়া লাউপাতায় সরিষার তেল ও লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। তৈরি হয়ে যাবে মজাদার লাউপাতার ভর্তা।

ইলিশ মাছের ভর্তা :

download (5)

মাঝারি আকারের একটি ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ ছাড়া বাকি অংশ কেটে তিন/চার টুকরা করে নিন। ভালো করে ধুয়ে পনেরো থেকে বিশ ভাঁপে সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করা হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হওয়ার পরে সম্পূর্ণ মাছের কাঁটা বেছে নিন। এবার পেয়াজ কুঁচি(মাঝারি আকারের দু’টো), ৪/৫টা ভাজা শুকনো মরিচ(অথবা কাঁচা মরিচ), দুই টেবিল চামচ সরিষার তেল এবং পরিমানমতো লবণ বেছে নেয়া মাছের সাথে ভালো করে মাখিয়ে নিন। ঝটপট তৈরি হয়ে যাবে চমৎকার স্বাদের ইলিশ মাছের ভর্তা।

লক্ষ্য রাখুন : বিশেষ একটি বিষয় ভর্তা সম্পর্কে না বললেই নয়। ভর্তায় ব্যবহৃত সবকিছুরই পরিমান নির্ভর্ করে সাধারণত যে খায় তার রুচির ওপর। কেউ ঝাল কম পছন্দ করে, কেউ বেশি। এটা একেবারেই সাধারণ কথা। তবে ভর্তার আরও একটি প্রধান উপাদান তেল। এই তেলও কেউ কেউ ভর্তায় একটু বেশি খায়, আবার কেউ একটু কম খায়। পিয়াজের বেলায়ও বিষয়টি এমনই। তাই বাসায় যখনই আপনি ভর্তা তৈরি করবেন পরিবারের সদস্যদের রুচির বিষয়টি মাথায় রাখবেন।

এই ছয় রকমের ভর্তা পরিবেশন করুন ধোঁয়া ওঠানো ঝরঝরে গরম ভাত অথবা মুগ ডালের ঘ্রাণ ছড়ানো ভুনা খিচুরির সঙ্গে। সঙ্গে যদি থাকে ঘরে তৈরি আচার, তবেতো আর কথাই নেই। বিশেষ দিনকে উৎযাপন করুন সম্পূর্ণ বাঙালীয়ানায়।

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/০৮ মে ২০১৪ই.

Facebook Comments