banner

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 231 বার পঠিত

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ধর্ষিতাকে বিয়ে করল ধর্ষক

 

গাজী হানিফ
অপরাজিতাবিডি ডটকম

marage

বর মো. আলমগীর মুন্সি ও কনে

 

 

নরসিংদী : প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবশেষে ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য হলেন ধর্ষক মো. আলমগীর মুন্সি।

 

সোমবার নরসিংদীর নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হলফ নামার মাধ্যমে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময় বর, কনে, তাদের নিযুক্ত আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম কামাল, নোটারী পাবলিক নরসিংদীর আইনজীবি এ.কে.এম রিয়াজুল করিমসহ উভয় পক্ষের লোকজন এবং সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

 

নরসিংদী সদর উপজেলার কোতালিরচর গ্রামের মৃত হাছেন আলীর মেয়েকে কলেজে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করত একই গ্রামের তমুজ উদ্দিনের ছেলে মো. আলমগীর মুন্সি (৪২)। ভয়ভীতি এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়েও যখন মেয়েটিকে বাগে আনতে পারেনি, তখন সে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।

 

মেয়েটিকে সে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নরসিংদী শহরের বন বিভাগের পাশে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আলমগীর। এরপর প্রায় ছয় মাস কেটে যাওয়ার পর মেয়েটি আলমগীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তবে নানা তালবাহানা করতে থাকে আলমগীর। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ে করবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

 

এলাকাবাসী এবং পুলিশের সহযোগীতা কামনা করেও ব্যর্থ হয় ওই মেয়ে। অবশেষে বাধ্য হয়ে মেয়েটি প্রধান মন্ত্রীর নজরে আনার জন্য একাকি ছুটে যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখানে অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে গত ৮ আগস্ট বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে সক্ষম হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আশু সমাধানের লক্ষ্যে তার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর পি এস-২ সাইফুজ্জামান শেখর নরসিংদীর পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানান।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোশারেফ হোসেন মেয়েটির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আলমগীর মুন্সিকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০১০(সংশোধনী/০৩)এর ৯(১) ধারা মোতাবেক গত ১১ আগস্ট মামলা নং ৩২ দায়ের করেন।

 

মামলার সাথে সাথে ঐদিনই আলমগীর মুন্সিকে মাধবদী বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করে। পরদিন ১২ আগস্ট মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ বর্ণিত আসামির কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহ করার নিমিত্তে তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির করাহয়। সেখানে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত তার অসুস্থতার কারণ বিবেচনা করে জেল গেটে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

 

এদিকে জেল-হাজতে থাকা আলমগীর তার ভুল বুঝতে পেরে লোক মারফত ওই মেয়েকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরপর গত ২৮ আগস্ট মেয়েটি জেল গেটে গিয়ে আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে। সেখানে তারা বিয়ের ব্যাপারে একমত পোষণ করে।

 

এরপর আলমগীরের জামিনের জন্য আদালতের শরনাপন্ন হয় মেয়েটি। সেখানে বিষয়টি আপোষে মিমাংসা করা হয়েছে মর্মে আবেদন জানালে আদালত গত ৩১ আগস্ট আলমগীরকে জামিন দেয়।

 

অতঃপর সোমবার উভয় পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

 

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ই.

Facebook Comments