banner

রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 575 বার পঠিত

 

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, শ্রমের মূল্যায়ন, নারীর কাজের স্বীকৃতি দেওয়া এখনো দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

11096847_907862292611132_366773060_o

বাংলাদেশে শিক্ষা, জাতীয় সংসদে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও নারী পরিবার বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন সূচকেই বাংলাদেশ এগিয়ে। অন্যদিকে নারী নির্যাতনের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, শ্রমের মূল্যায়ন, নারীর কাজের স্বীকৃতি দেওয়া এখনো দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাই নারীর অধিকার অর্জনে যেতে হবে বহুদূর। নিতে হবে বিভিন্ন কৌশল।
গতকাল রোববার জেন্ডার ও উন্নয়নবিষয়ক ‘জেন্ডার, ডাইভারসিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনের আলোচনায় আলোচকেরা এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, নারীর অধিকার আদায়ে শুধু নারী চিৎকার করলেই হবে না, এ ক্ষেত্রে পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সহায়তা করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ, ইউএসএআইডি, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, কেয়ারসহ বিভিন্ন সংস্থা।
সমাপনী অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘আমি পুরুষ। তবে আমি পুরুষের পক্ষে নই। আমি নারীর পক্ষে।’ এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান তানিয়া হক। সমাপনী অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো রওনক জাহান বলেন, কয়েক দিন আগেই জাতীয় সংসদের একজন পুরুষ সাংসদ পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে একটি আইন প্রণয়নের দাবি তুলেছেন। তার মানে নারীর অধিকার আদায়ে যেতে হবে আরও বহুদূর। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারীর শ্রমের কোনো মূল্য দেওয়া হয় না। নারীর কাজের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন নেই। আর এর ফলেই নারীর ওপর নির্যাতন কমছে না।

11086542_907862659277762_2052500801_o
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, সমাজে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য থাকলে একটি স্বাস্থ্যবান সমাজ গড়া সম্ভব নয়। একইভাবে তা কখনোই গণতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে দাবি করতে পারবে না। গোলটেবিল বৈঠকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, বাংলাদেশ ভালো ভালো নীতি ও আইন প্রণয়নের জন্য প্রশংসিত। তবে সেসব নীতি ও আইনের বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয় না। তিনি ১৯৯৭ সালের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিকে পরবর্তী ২০০৪ সালের সরকার কীভাবে গোপনে পরিবর্তন করে ফেলে, সে কথা উল্লেখ করেন। ১৯৯৭ সালের নীতিতে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীর সম-অধিকারের কথা উল্লেখ থাকলেও ২০১১ সালের নীতিতে সে বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন।
তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ফর উইমেনের আঞ্চলিক প্রোগ্রাম ডিরেক্টর চাঁদনি জোসি, আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাসকিয়া ই ওয়াইয়েরিঙ্গা, ভারতের জেন্ডারবিশেষজ্ঞ অমৃতা চাচসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নাজমা চৌধুরী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

Facebook Comments