banner

বুধবার, ০১ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 367 বার পঠিত

 

একজীবনে সফলতার প্রধান শর্ত সুপরিকল্পনা

সারা বিশ্বের রাজনৈতিক আলোচনায় এখন বাইডেন সর্বাধিক আলোচিত। আর তার নব্য ঘরানার প্রশাসন নিয়েও জল্পনা-কল্পনা অন্তহীন। তারই ধারাবাহিকতায় জেনিফার গ্রানহাম নামটি এখন আলোচনার শীর্ষে।

শুধু গ্রানহাম নামেই সারা বিশ্বে আলোচিত। পুরো নাম জেনিফার গ্রানহাম। জন্ম ১৯৫৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। জন্ম ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যানকোভারে। বর্তমানে রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, লেখক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে সুখ্যাত। ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল অবধি ছিলেন মিশিগানের গভর্নর। ২০১৭ সালে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনে রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে যুক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের মা।

মাত্র চার বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে কানাডা থেকে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রেও এসেছিলেন। আনাহিম, সান জোসে এবং সান কার্লোসে তিনি বেড়ে ওঠেন। ১৯৭৭ সালে সান কার্লোস হাইস্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার আগে ইদা প্রাইস জুনিয়র হাই এবং ডেল মার হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। মিস সান কার্লোস সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তিনি জয়ী হয়েছেন।

শৈশব থেকেই হলিউডে অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তেমন সফল হতে না পেরে অভিনয় ছেড়ে দেন। ১৯৭৮ সালে ট্যুর গাইড হিসেবে চাকরি করেন। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে পরিসেবা এবং রেডউড সিটিতে মেরিন ওয়ার্ল্ড আফ্রিকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম নারী ট্যুর গাইড হিসেবেও কাজ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন মন্ত্রিসভার জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে জেনিফার গ্রানহামের নাম ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে বাইডেন নিজে গ্রানহামকে সবার সামনে উপস্থিত করে তার যোগ্যতা সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দেন। মূলত এরপর থেকেই গ্রানহাম নামটি আরও বেশি গুরুত্ব পায়।

সাবেক গভর্নর জেনিফার গ্রানহাম সম্পর্কে জো বাইডেন বলেন, আমার ভালো বন্ধু তিনি। জ্বালানি ও পরিবেশ বিভাগের সদস্যরা মেধাবী, যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছেন। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে প্রশাসনে গ্রানহাম ভবিষ্যতে সুদক্ষতার সঙ্গে কাজ করে নিজেকে আরও যোগ্য প্রমাণ করবেন।

সম্ভাব্য নতুন মন্ত্রিসভার পরিচিতি অনুষ্ঠানে জ্বালানিমন্ত্রী করায় ও তার প্রতি আস্থা রাখায় শুরুতেই জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান গ্রানহাম।

সামনের সময়ে সব দেশ ও গাড়ি কোম্পানিগুলো বৈদ্যুতিক গাড়ি ও ব্যাটারি তৈরিতে ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে। সৃষ্টি হবে লাখ লাখ কর্মসংস্থান। সুতরাং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে অপার সম্ভাবনা সামাল দিতে পারা দেশগুলোই থাকবে করোনা অর্থনীতি জয়ী দেশগুলোর সামনের কাতারে। যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকবে না বলে জানান ৬১ বছর বয়সি গ্রানহাম।

বাইডেন প্রশাসন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নির্বাচনের আগে থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই জ্বালানির উৎস বিশেষ করে গ্যাস, কয়লা আর তেলের ব্যবহার কমিয়ে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে এমন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করবে বাইডেন প্রশাসন। এ ব্যাপারে গ্রানহাম এখন সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। অতীতে তিনি দেশের জ্বালানি শিল্পকে কীভাবে গ্যাস, তেল ও কয়লানির্ভরতা থেকে বায়ু ও সৌর জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা যায় তার ওপর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড্যান কামম্যান জেনিফার গ্রানহাম সম্পর্কে বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তিনি অসাধারণ ও অভাবনীয়। কারণ তিনি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি বোঝেন এবং জানেন। কীভাবে বড় দায়িত্ব পরিকল্পনার সঙ্গে এগিয়ে নিতে হয় তাও তার অজানা নয়। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামা নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়ার কথা আলোচনায় এসেছিল।

চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হবে। সফল হতে হলে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সুস্পষ্ট আর সম্যক ধারণা থাকাটা প্রথম শর্ত। সময় যেমনই আসুক ব্যবস্থাপনা আর সুপরিকল্পনা থাকলে তা থেকে উতরিয়ে যাওয়া কঠিন নয়। করোনা জয় করে জীবন একদিন স্বাভাবিক হবেই। বিশ্বাস নিয়ে একটু একটু করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিনের কাজেও সফলতা আর না পারা থাকে। তাই জয়-পরাজয় নিয়ে থমকে না থেকে শুধু কাজ করে গেলে সফলতার পথ আপনা থেকেই অনুকূলে আসে। নিজের কথাগুলো এভাবেই জানিয়েছেন জেনিফার গ্রানহাম।

Facebook Comments