অপরাজিতাবিডি ডটকম, রাঙামাটি : জীবতলি রিসোর্ট। রাঙামাটির অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত এ স্থানটি সহজেই মন কেড়ে নেয় ভ্রমণ পিয়াসীদের।
একপাশে কর্ণফুলী নদী আর একপাশে কাপ্তাই হ্রদ। মাঝখানে হচ্ছে কাপ্তাই উপজেলা। এলাকার নামেই নামকরণ হয়েছে রিসোর্টের। রাঙামাটি সদরের জীবতলি ইউনিয়নে রিসোর্টটির অবস্থান।
প্রকৃতি যেন আপন সৌন্দর্য্যকে মেলে ধরেছে এখানে। সকালের পূর্বাকাশে সুর্য উঁকি দিতেই সোনালী আলোকচ্ছটায় বর্ণিল হয়ে ওঠে লেকের পানি। পাহাড় আর হ্রদের সাথে যেন সুর্যালোকের আলোর দারুণ মিতালী। দুপুর হতেই রোদের প্রখরতা লেকের পানিকে আরো ঝলমল করে তোলে। পড়ন্ত বিকেলে আলোক রশ্মি আরো মোহনীয় করে তোলে পুরো পরিবেশ।
জীবতলি রিসোর্ট রাত দিনের যে কোন সময়েই উপভোগ করার মতো দর্শনীয়। নির্জনপ্রিয় মানুষের অবকাশ যাপনের কথা ভেবেই গড়ে তোলা হয়েছে এই রিসোর্ট। যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমী থেকে সওে এসে যারা প্রকৃতির খুব কাছাকাছি সময় কাটানোর জন্য পরিকল্পনা করেন এই রিসোর্ট তাদের জন্যই।
বাংলাদেশ সেনাবহিনীর অসংখ্য নান্দনিক স্থাপনার একটি ৩৫ একর জায়গা জুড়ে স্থাপিত এই জীবতলী রিসোর্ট।
জীবতলি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক সার্জেন্ট মানিক জানান, প্রকৃতির সাথে মিলমিশে একাকার হয়ে আছে এই রিসোর্ট। প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে রিসোর্ট, সেখানে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। আরো বেশি পর্যটক বান্ধব করতে নেয়া হয়েছে বিশাল কর্মপরিকল্পনা।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা পর্যটকদের জন্য তৈরি করেছি ৫টি কটেজ।এর মধ্যে ২ টি হচ্ছে মাটির, ১টি কাঠের, ১টি বাঁেশর তৈরি এবং একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মাটির কটেজ দেড় হাজার, বাঁশের কটেজ এক হাজার ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কটেজ সাড়ে তিন হাজার টাকা। এখানে পিকনিকের জন্যও রয়েছে ৪টি স্পট।
এ ছাড়াও কাপ্তাই লেকের পাশ ঘেঁষে পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হচ্ছে বেশ কিছু নতুন কটেজ। নতুনভাবে প্রাকৃতিক ছোঁয়ায় নির্মিত হচ্ছে এইসব কটেজ। মাটির দেয়াল আর পাহাড়ী ছনের ছাদ। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড় দেখে মনে অন্য জনপদের কাঁচা বাড়ীঘর। থাকবেনা বৈদ্যুতিক পাখা, ভিতরে জ্বলবে কুপি বাতি।
রূপালী চাঁদের আলোয় ঝলমল করবে এসব কটেজ। প্রকৃতির মৃদু বাতাস শীতল করবে শরীর। পাহাড়ের আকা বাঁকা পথ বেয়েই যেতে হবে এসব কটেজে। এসব কটেজের সামনে দাঁড়ালে দেখা মিলবে কাপ্তাই হ্রদের বিশালতা। পাহাড়ের বুক চিরে কাপ্তাই হ্রদের বয়ে চলা। এখানে লেকের মাঝে করা হয়েছে সুইমিং পুলের ব্যবস্থা।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে যে কোন যানবাহনে করে যাওয়া যায়। রাঙামাটি সদর থেকে নৌপথে রিসোর্টে যেতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা।
আর সড়ক পথে দুটো ভিন্ন পথ ধরে যাওয়া যায়। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ঘাগড়া হয়ে গেলে সময় লাগে বেশি। আর রাঙামাটি শহরের আসমাবস্তি সড়ক দিয়ে যেতে সময় তার চেয়ে কম লাগবে।
রাস্তার দুই পাহাড়ের মাঝখানে ছুটে চলা পথ দিয়ে যেতে নজরে পড়বে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবনচিত্র। পাহাড়ের উপর দিয়ে চলে যাওয়া ১৯ কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে গেলে কাপ্তাই লেকের বিশাল সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যাবে মনভরে। এ পথ দিয়ে যেতে ছোট-বড় ৮-৯ টি ব্রীজের দেখা মিলবে। লেকের কারণে ভাগ হয়ে যাওয়া দুই পাহাড়ের মিলনস্থলও এই ব্রীজ।
১৯ কিলোমিটার পথে মুগ্ধতায় যে কেউ বিমোহিত হবে।
যেহেতু পুরো এলাকাটি সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে সেহেতু নিরাপত্তার ব্যাপারে বাড়তি কোন টেনশনই নেই। দিন আর রাতের যে কোন সময় এখানে ঘুরে বেড়ানো যাবে অনায়াসে।
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/ ০৮ মে ২০১৪ই