banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1053 বার পঠিত

 

শিশুর আঘাত লাগলে অস্থির হওয়া সমাধান নয়

ইরা রহমান


প্রায়ই দেখি অনেক বোন পোস্ট দেয় বা আশেপাশেও দেখি অনেককেই তারা বলেন বাচ্চার আঘাত লাগলে বাচ্চার বাবা খারাপ ভাবে রিঅ্যাক্ট করে। অনেককে বলতে শুনেছি বাচ্চার মায়ের গায়ে পর্যন্ত হাত তোলে। খুব খারাপ লাগে শুনলে বিষয়টি।

একটা বাচ্চার সবচেয়ে আপন হল তার ‘মা’। কোন কোন ক্ষেত্রে বাবাও বাচ্চাদের ছেড়ে চলে যায় কিন্তু মা কোনও ভাবেই ছাড়তে পারেনা। হ্যাঁ ২/১ উদাহরণ আছে মা জাতির কলঙ্ক, তাদের কথা আলাদা। ব্যতিক্রম কখনওই উদাহরন নয়, হতেও পারে না। অনেক বাবা তো এমনও আছে যারা বাচ্চাকে ত্যাগ করতে গিয়ে বলে অমন বাচ্চা আরো পয়দা করতে পারব। ছিঃ, একরাশ ধিক্কার জানাই তাদের।

এখন আসি প্রসঙ্গে। কিছু কিছু বাবা আছেন যারা বাচ্চাদের অনেক ভালোবাসেন, খুবই ভালো কথা। কিন্তু সেই হারে বাচ্চার মা কে তোয়াক্কা করেন না।

বাচ্চা তাদের আপন আর বাচ্চার মা পরের মেয়ে (??) তাদের ধারণা বাচ্চার মা সারাদিন বাসায় বসেই কাটিয়ে দেয় তাহলে বাচ্চা পড়ে যাবে কেন বা আঘাত পাবে কেন? হায়রে হাস্যকর ভাবনা। একটা বাচ্চার পিছনে একজন মায়ের যে কি পরিমাণ শ্রম যায় তা যদি এই প্রজাতি বুঝত।

তবে এখানে পুরোপুরি বাচ্চার বাবাকেও দোষ দেয়া যায় না। বাচ্চার মায়েরও কিছু আচরণগত সমস্যা আছে। বাচ্চাকে আঘাত লাগতে দেখলেই মা ভয় পেয়ে যায় আর এটা মনে করে যে এই বুঝি বাচ্চার জন্য সে বকা খেল। তার আচরণ পালটে যায়। তার আচরণে অপরাধবোধ প্রবলভাবে দেখা যায়। যার সুযোগ নেয় বাচ্চার বাবা বা অন্য কেউ।

এই অবস্থা থেকে বের হবার জন্য প্রথমে বাচ্চার মা কে শক্ত হতে হবে। সে যদি নিজে না বদলায় তাহলে পরিস্থিতি বদলাবে না। একটা বাচ্চা যে নতুন হাঁটা বা দৌড়ানো শিখছে তাকে আঘাত লাগবেই। আঘাত লাগলেই কিছু কিছু মা আছে ‘ওরে বাবারে মারে’ শুরু করে দেয়। এটা ঠিক না।

বাচ্চার আঘাত লাগলে পরিচর্যা করতে হবে ঠিকই কিন্তু আপনাকে সেই বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে হবে। অস্থির হওয়া চলবে না। আপনি যখন আঘাত লাগাটা সহজ ভাবে নিবেন আর পরিবারকে এই বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হবেন, যে বাচ্চার আঘাত লাগাটা স্বাভাবিক ঘটনা তখন দেখবেন আপনাকে আর এর জন্য কথা শুনতে হবে না বা বকাও শুনতে হবেনা।

নিজেকে ভালো রাখতে হবে। অন্যকে ভালো রাখার চেয়েও নিজে ভালো থাকা বেশি জরুরী।

প্রধান শিক্ষিকা
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,বগুড়া।

Facebook Comments