banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1689 বার পঠিত

 

বাসে মেয়েদের সিকিউরিটি

মুশফিকুর রহমান আশিক


গত কয়েকদিনে ফেইসবুকে যে ব্যাপারটা খুব বেশি চোখে পড়ছে সেটা হলো, লোকাল বাসে মেয়েদের সিকিউরিটি নিয়ে।  দুজনের লেখা ঘটনা পড়লাম, সকাল ১০-১১ টার মত সময়ে যখন লোকাল বাসে একটা মেয়েকে দরজা আটকে হ্যারাজ করার মত সাহস করা হয়, সেটা ভয়াবহ রকমের অ্যালার্মিং!

সকাল ৯ টায় এলিফ্যান্ট রোডের মত একটা ব্যস্ত এলাকায় শত শত মানুষের সামনে থেকে যেদিন আমার ফোন হাইজ্যাক করা হয়েছিল, সেদিনই বুঝে গেছিলাম এই দেশে আমাকে বা আপনাকে কেউ সিকিউরিটি দিবে না। নিজে সাবধান থেকে যতটুকু পারা যায়, ততটুকুই !

যেহেতু মেয়েদের বেলায় এই ব্যাপারটা বেশি হচ্ছে, যারা নিয়মিত বাসে যাতায়াত করেন, কয়েকটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেনঃ

১) বাসটা খালি কিনা
বাস যদি খালি হয়, অবশ্যই অবশ্যই উঠবেন না

২)অল্প কিছু যাত্রী
বাসে অল্প কিছু যাত্রী থাকলেও না উঠার চেষ্টা করবেন। যদি উঠতেই হয়, যাত্রীদের অবস্থা দেখে নিবেন।

এবার আসি যাত্রীদের অবস্থা দেখার বিষয় নিয়ে। দুটো ঘটনা পড়ে যেটা বুঝলাম, বাসওয়ালারা বেশ চালাক হয়ে গেছে। এরা বাস একদমই খালি না রেখে নিজেদেরই কিছু স্টাফ হেলপারকে যাত্রী সাজিয়ে বসিয়ে রাখে যাতে কেউ সন্দেহ না করে। তাই বাসে উঠার সময় যদি সন্দেহ হয় যে যাত্রীরা তাদেরই কেউ, দয়া করে উঠবেন না। এখানে নিজের Deduction Skill কাজে লাগান।

৩) গেটের কাছে বসুন
বাসে যদি উঠেই পড়েন, গেটের কাছে বসবেন। পেছনে যাবেন না। পেছনে গেলে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

যদি দেখেন কোন একটা স্টপেজে বাসের সব যাত্রী নেমে যাচ্ছে, এক মুহূর্ত দেরি না করে আপনিও নেমে যান। লাগলে ওখান থেকে অন্য উপায়ে বাসায় যাবেন। কিন্তু বাসে যেন একা পড়ে না থাকেন – এটা খেয়াল রাখবেন।

৪) বিপদে পড়ে গেছেন
কখনো যদি মনেই হয় বাসের ভেতর আটকে গেছেন, বিপদে পড়ে গেছেন, ফোন বের করে কোন বন্ধু বা কাউকে ফোন দিয়ে জোরে জোরে বাসের নাম, লোকেশন এগুলা জানিয়ে দিন। একটু হলেও সেটা বাসের ড্রাইভারকে ভীত করবে।

৫)999 ফোন দিন
আমি জানিনা বাংলাদেশে 999 এ ফোন দিলে ইমারজেন্সি পুলিশের হেল্প পাওয়া যায় কিনা। সেটাও ট্রাই করা যেতে পারে

৬)অ্যাথলেটিক হন
নরম বা দুর্বল হয়ে থাকার দিন এখন আর নাই। পারলে একটু অ্যাথলেটিক হন। আপনার কারাতে শেখার দরকার নাই। কিন্তু লাফিয়ে বাস থেকে নামতে পারার মত ক্যাপাবিলিটি যেন থাকে। এইটা নিশ্চিত করবেন !!

৭)বিকল্প চিন্তা করুন
রাতের দিকে যদি ট্রান্সপোর্ট না-ই পান, চেষ্টা করবেন UBER কিংবা Pathao তে আসার। ফাঁকা লোকাল বাসে উঠার চেয়ে UBER Pathao এর কার বা বাইকে উঠা ভালো। আনইজি লাগতে পারে। কিন্তু ঐখানে আপনার পুরা জার্নিটা ট্র্যাক করা হয়, ড্রাইভার/রাইডার এবং কার/বাইক এর ইনফরমেশনও থাকে। তাই সিকিউর বলা যায়। টাকা বেশি লাগুক। জীবনের মূল্যটা বেশি।

চোখ-কান খোলা রেখে চলবেন। নরমালি আপনি যে রাস্তায় নিয়মিত হাঁটেন, খেয়াল রাখবেন কেউ আপনাকে ফলো করছে কিনা। নিয়মিত এক রাস্তায় না চলে মাঝে মাঝে রুট চেঞ্জ করবেন। নিজের নিরাপত্তাটা নিজেরই নিশ্চিত করতে হবে। কারো ভরসায় থেকে লাভ নেই !

এই লেখাটা পারলে শেয়ার করেন। আমার ফ্রেন্ড আর ফলোয়ার লিস্ট মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের অর্ধেকের কাছেও যদি এটি পৌছায়, হয়তো অনেকের লাইফ সিকিউর হবে। প্রতিদিনই আমার আপনার মা-বোন-বান্ধবী কিংবা আপনজন বাইরে বের হচ্ছে। তাদেরকে সতর্ক করা আমাদের দায়িত্ব !!

আপনার বাসায় যারা আছেন, কাছের মানুষ যারা আছেন, তাদেরকে জানান, সতর্ক করেন। আমরা আসলে নিজেরা বিপদে পড়ার আগ পর্যন্ত টের পাই না যে কতটা সতর্ক থাকা দরকার ছিল !

“আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুক।”

KUET

Facebook Comments