মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক
(১) আত্মস্বার্থবাদী
যারা নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ-উদ্দেশ্যের বাইরে কোনো কিছুকে তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। এদের মধ্যে যারা স্বীয় ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে কোনো কিছু করতে পারে তাদেরকে আমরা সুবিধাবাদী বলি। আর যারা নিজের সুযোগ-সুবিধা চাইলেও অবৈধ ও অন্যায় পথে অগ্রসর হতে চায় না তাদেরকে আমরা নিরীহ নাগরিক হিসাবে সম্মান করি। তারা হলেন সাধারণ পর্যায়ের ভাল মানুষ।
(২) আদর্শবাদী
কিছু লোক আছে যারা কোনো না কোনো আদর্শের সাথে নিজেকে আইডেন্টিফাই করে। তারা নিজেদের আদর্শগত ভাল-মন্দের মাপকাঠি অনুসারে নিজেরা কোনোমতে চলে বটে। কিন্তু বাদবাকীদের ব্যাপারে, বিশেষ করে বিদ্যমান এস্টাবলিশমেন্টের নানা রকমের অন্যায়ের বিরুদ্ধে এরা উচ্চকণ্ঠ। আশেপাশে কার কার কী কী ভুল আছে তা তারা সোৎসাহে বলে বেড়াবে। এরা নিজেদেরকে বুদ্ধিজীবী হিসাবে উপস্থাপন করে। দেখবেন, আদর্শের মেশিগান হাতে ব্রাশ ফায়ার করার জন্য এরা সদা সর্বদা প্রস্তুত।
(৩) নেতৃত্বপ্রিয়
কিছু লোক আছে যারা সব সময়ে গণ মনোভাবের সাথে থাকে। পাবলিক যা বলে তারাও তা বলে। এতে করে তারা সামাজিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্ব অর্জন করে। ভাল-মন্দের ব্যাপারে এদের নিজস্ব বিবেচনাবোধ খুব দুর্বল। দৃশ্যত জনসেবায় নিয়োজিত হলেও আসলে একটা পক্ষ নিয়ে লিডারশীপ হাসিল করাই এদের লক্ষ্য।
(৪) সমাজকর্মী
এরা গণ চরিত্রসম্পন্ন। নিজের স্বার্থের চেয়ে এরা সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবতার কথা বেশি ভাবে। আদর্শকে চাপিয়ে দেয়ার পরিবর্তে তারা মানুষের মধ্যে গ্র্যাজুয়েল প্রসেসে সমাজ পরিবর্তনে আগ্রহী। তাই, মানুষের মন জয় করাকে তারা অগ্রাধিকার দেয়। এই ধরনের লোকেরা নেতৃত্বপ্রিয়দের মতো আপোষকামীও হয় না, আদর্শবাদীদের মতো নির্দয় সমালোচকও হয় না। তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মানুষের কাছে যায়। মানুষ তাদের কাছে হেদায়েতের জন্য আসবে, তখন তারা হক্ব কথাটা বলবে, মানুষ তাদেরকে নেতৃত্বের আসনে বসাবে তখন তারা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করবে, এজন্য তারা অপেক্ষা করে না।
আমি চতুর্থ ক্যাটাগরিতে নিজেকে দেখতে চাই।
আপনি?
সহযোগী অধ্যাপক,
দর্শন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়