banner

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 376 বার পঠিত

 

শিক্ষকের সাথে ফোনালাপ এবং ফেসবুকিং

অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা। আমি আমার একজন শিক্ষককে মোবাইলে কল বা ফেসবুকে যোগাযোগ করার পূর্বে যে “১০টি বিষয়” মেনে চলি:

১/ অন্তত তিনবার চিন্তা করি যে কল করাটি আদৌ কতটুকু প্রয়োজনীয়। কল না করে অন্য কোন ব্যক্তি বা সহজলভ্য মাধ্যম কিংবা গুগলসার্চ করে দরকারি তথ্যটি পাওয়া কিংবা প্রয়োজন পূরণ কি সম্ভব? উত্তর যদি “হ্যা” হয়- তাহলে আর কল করিনা, বিকল্প মাধ্যমের সাহায্য নিই। উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে শিক্ষককে কল করার সিদ্ধান্ত নিই।

২/ চিন্তা করে দেখি এখন ঠিক কয়টা বাজে। রাত ১০ টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যে হলে কল না করার সিদ্ধান্ত নিই। এই সময়ে সাধারণত একজন শিক্ষক ব্যক্তিগত সময় কাটান, বিশ্রাম নেন, পরিবারকে সময় দেন, ডিনার সারেন, ঘুমের প্রস্তুতি নেন, ঘুমান, আর সকালে অফিসে বেরুনোর তাড়ায় থাকেন। কল করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় মনে করি সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০ টার মধ্যে।

৩/ নিশ্চিত হয়ে নিই মোবাইল একাউন্টে কথা বলার মত পর্যাপ্ত টাকা আছে কিনা, মোবাইলে কথা বলার মতো যথেষ্ট চার্জ আছে কিনা। ব্যালেন্স বা চার্জের অভাবে অর্ধ- কথায় ডিজকানেক্টেড হয়ে যাওয়াটা অসুন্দর মনে করি

৪/ একবার কল দিয়ে শিক্ষক রিসিভ না করলে তৎক্ষণাৎ ২য় বার কল দিইনা। রিসিভ না করার একটাই অর্থ- হয় শিক্ষক এই সময়ে ব্যস্ত আছেন- কথা বলার অবস্থায় নাই অথবা তিনি মোবাইল থেকে দূরে আছেন অথবা এই মুহূর্তে তিনি কথা বলতে চাচ্ছেন না অথবা অপরিচিত নাম্বার শিক্ষক রিসিভ করছেন না।

৫/ সেক্ষেত্রে শিক্ষকের মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠাই- পূর্ণ সালাম দিয়ে নিজের নাম, পরিচয়, যোগাযোগের উদ্দেশ্য লিখি এবং শিক্ষক কোন সময় কথা বলার জন্য ফ্রি থাকবেন সেটি জানতে চাই। ফেসবুকে/ইমেইলে মেসেজ পাঠাতে চাইলে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় কথাটি উপস্থাপন করি।

৬/ hi, hello, r u there? how r u? Busy Sir? Free Sir?, ki koren Sir?, kheyechen Sir? ইত্যাদি লিখে মেসেজ আরম্ভ করিনা। আর কল করলে শিক্ষককে ‘আপনি কে বলছেন?’, ‘স্যার আমাকে চিনছেন?’, ‘আমাকে ভুলে গেলেন?’ ইত্যাদি বাক্য দিয়ে কথোপকথন শুরু করিনা। শিক্ষকের সাথে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকলেও, এমনকি শিক্ষকের মোবাইলে আমার মোবাইল নাম্বার সেইভড করা থাকলেও শুরুতেই সালাম দিই, নিজের পূর্ণ পরিচয় প্রদান করি, অত:পর জানতে চাই- ‘স্যার/ম্যাম, আপনি কি ফ্রি আছেন? কথা বলা যাবে?’।

৭/ শিক্ষকের এবং আমার দু’জনেরই ভিডিও কলিং এপস্ থাকলেও কখনোই শিক্ষককে ভিডিও কল প্রদান করিনা। পরিবারের সদস্য, স্বামী- স্ত্রী, প্রেমিক- প্রেমিকা, খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া অন্য কাউকে পূর্বানুমতি ব্যতীত ভিডিও কলিং চরম অভদ্রতা বলে মনে করি।

৮/ শিক্ষকের সাথে ফেসবুকে যুক্ত থাকলে শিক্ষকের পরিবারের পূর্ব অপরিচিত সদস্যদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাইনা, তাদের ইনবক্সে নক করিনা। শিক্ষকের সাথেই আমার সম্পর্ক, উনার ফ্যামিলির সাথে নয়- এটি মনে রাখি।

৯/ নিজের টাইমলাইনের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ছবিতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে শিক্ষককে ট্যাগ বা মেনশন দেইনা।

১০/ শিক্ষকের সাথে সাক্ষাৎ প্রত্যাশী হলে পূর্ব এপয়েনমেন্ট নিয়ে শিক্ষকের অফিসে বা শিক্ষক কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে দেখা করি। শিক্ষক আর আমি একই বিল্ডিং এমনকি পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বাস করলেও শিক্ষকের বাসায় বিনানুমতিতে যাইনা এবং বাসায় সাক্ষাৎ করার আগ্রহ বা অনুরোধ জ্ঞাপন করিনা।

এভাবে আমি ভালো থাকি, আশা করি আমার শিক্ষকগণও ভালো থাকেন।
লেখক: সাঈদ আহসান খালিদ
আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
Courtesy:Taken from facebook wall of Mahadi Ul Morshed

Facebook Comments