আল্লাহ তাআলা এক ও একক। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনিই ইবাদাতের উপযুক্ত একমাত্র উপাসক। সমগ্র সৃষ্টিই তার দাসত্ব করবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাওহিদের এ বাণী প্রচার শুরু করেন, তখন কুরাইশরাসহ ইসলাম বিদ্বেষীরা তাঁর নিকট তাঁর রবের গুণাবলী এবং বংশধারা জানতে চায়। তখন আল্লাহ তাআলা কুরআনে তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলেন-
‘আর তোমাদের উপাস্য একমাত্র আল্লাহ তাআলাই; তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই; তিনিই পরম দয়াময়; অনন্ত অসীম করুণাময়।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৬৩)
পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা রিসালাতের প্রমাণ উপস্থাপন করছেন। সেখানে আলোচনা হয়েছে যে কারণে মানুষ অভিশপ্ত। রিসালাত অস্বীকার করলে তাঁর মৃত্যুও হবে কুফরি মৃত্যু। আল্লাহ তাআলা কুফরি অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীদেরকে অভিশপ্ত করেছেন। যা আগের আয়াতে আলোচিত হয়েছে।
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা কুরাইশদের ভ্রান্ত ও অমূলক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আয়াতটি নাজিলের কারণ উল্লেখ করে আল্লামা বাগভি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘কুরাইশ পৌত্তলিকরা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে বললো- ‘হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার প্রতিপালকের গুণাবলী বর্ণনা করুন।’ তখন তাদের এ প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত এবং সুরা ইখলাছ নাজিল করেন।
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা একত্ববাদের কথা সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন- হে মানব জাতি! তোমাদের মা’বুদ বা উপাস্য এক; তাঁর কোনো শরিক নেই; তিনিই তোমাদের স্রষ্টা, পালনকর্তা; তিনিই তোমাদের ভাগ্যনিয়ন্তা; তিনিই সত্ত্বাধিকারী; তিনি এক ও অদ্বিতীয়।
আল্লাহ তাআলার উপরোক্ত কথাগুলো মূলবিষয় হলো- শুধু তাঁর সমীপেই মাথা নত করে সিজদায় লুটিয়ে পড়বে। ইবাদাত করতে হবে শুধুমাত্র তারই। চাওয়া-পাওয়া, আশা-ভরসা করতে হবে তারই ওপর।
আল্লাহ তাআলা এতই দয়াবান এবং পরম করুণাময় যে, তিনি তাঁর অসংখ্য নিয়ামাত তাঁর আনুগত্যকারী, ইবাদাতকারী এবং তাঁরই ওপর ভরসাকারীর জন্য দিয়ে থাকেন।
পরিশেষে…
এ আয়াতের মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা বান্দার নিকট তাঁর পরিচয় এবং গুণের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, সৃষ্টি জগতের ঈমানদার, বেঈমান, মুশরিক, পৌত্তলিক, ইয়াহুদি এবং নাসারাসহ সকল ধর্মানুসারীর নিকট তিনি তাঁর পরিচয় ও গুণের বর্ণনা পেশ করেছেন। সুতরাং ইবাদাত করতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার। তবেই পরকালে চিরস্থায়ী জীবনের নাজাত লাভ সম্ভব।
আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের ওপর অটল ও অবিচল থেকে তাঁর পরিচয় ও গুণাবলী মানুষের নিকট পৌছে দেয়ার তাওফিক দান করুন। পরকালীন জীবনের সফলতা লাভ করার তাওফিক নসিব করুন। আমিন।