কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে। অনেকেই সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতে বুড়ো হয়ে যান। তবুও অধরায় থেকে যায় কোটিপতির জীবন।
তবে কেউ কেউ আবার মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পান। কোটিপতি কী, সেটা বুঝার বয়স হয়ে উঠার আগেই হয়ে উঠেন কোটিপতি। এই যেমন মালালা ইউসুফজাই। বয়স মাত্র ১৮ বছর, অথচ এর মধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের এই কিশোরী। সেটিও আবার স্রেফ বই বিক্রি আর বক্তৃতার পয়সায়!
নোবেল বিজয়ী মালালা মাত্র তিন বছরে এত বেশি সম্পদ আয় করেছেন যে ইচ্ছে করলেই তাকে মিলিওনিয়ারদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এ অর্থের বেশিরভাগই এসেছে তার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ বিক্রি থেকে। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল।
ডেইলি মেইল জানায়, সালার্জাই লিমিটেড কোম্পানি মালালার জীবনীগ্রন্থের স্বত্বটি দেখভাল করে। বই বিক্রি থেকে তাদের মোট মুনাফা এসেছে ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এই কোম্পানিতে মালালা ও তার বাবা-মায়ের যৌথ মালিকানা রয়েছে। পত্রিকাটি জানায়, গত বছর আগস্ট মাসে ব্যাংকে ওই কোম্পানির অর্থের পরিমাণ ছিল ২২ কোটি ৭৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
সালার্জাই কোম্পানিটি গঠিত হয়েছে ২০১৩ সালে। মালালার আত্মজীবনীমূলক বইটির স্বত্ব ছাড়াও এই কোম্পানিটি তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘মালালা ফান্ড’ এর তদারকি করে থাকে। গোটা বিশ্বের মেয়েদের নিরাপদ শিক্ষা নিশ্চিত করতেই এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে
তিন বছর আগে প্রকাশিত মালালার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ সারা বিশ্বে বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ ৭ হাজার কপি। এই জীবনীগ্রন্থ থেকেই মোট ২০ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকা
শুধু বই বিক্রিই তার আয়ের একমাত্র উৎস নয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েও তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেন। ২০১৪ সালে সবচাইতে কমবয়সি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার পর তার সম্মানি আরো বেড়েছে। এক একটি বক্তৃতা বাবদ তার আয় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ২৬০ টাকা। সমসাময়িক কোনো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে বক্তব্য রেখে এত বেশি আয় করতে দেখা যায়নি।
পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সাধারণ মেয়ে থেকে মালালার ধনকুবের হয়ে ওঠার কাহিনী যেন রূপকথাকেও হার মানায়। ২০১২ সালে তালেবান হামলায় গুরুতর আহত হন খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকার মেয়ে মালালা। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৪ বছরের মালালাকে তখন লন্ডন নিয়ে আসা হয়। সেখানকার এক হাসপাতালে মাথায় অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠেন মালালা।
এরপর আর মালালাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। লেখাপড়া করছেন লন্ডনের এডজবাস্টোন হাই স্কুলে।