ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, এসএমই খাতের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের জন্যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর আওতায় নারী উদ্যোক্তারা এখন ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ
গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা গ্রুপ গঠন করে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি অংকের ঋণ নিতে পারছেন। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণসীমা যাতে ৫০ হাজার টাকার নিচে হয় সেজন্যে আমরা অচিরেই একটি নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছি।
বুধবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপে¬ামা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) আয়োজিত উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মশালা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তা খাতের উন্নয়নে পৃথক এসএমই বিভাগ গঠন, নারী উদ্যোক্তা সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। উদ্যোক্তাদের জন্যে আমরা নীতি সহায়তার পাশাপাশি কয়েকটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছি। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্যে ৬০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল রয়েছে। এ তহবিল থেকে নতুন উদ্যোক্তারা ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন।
গভর্নর আরও বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ কর্মক্ষম জনবল তৈরি হচ্ছে। এই জনবলকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে এটি আমাদের জন্যে আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। অবশ্য এদের কাজে লাগিয়েই গত দু’দশকে আমরা খাদ্য উৎপাদন, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছি।
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন সূচকে আমাদের অগ্রগতি
উৎসাহব্যঞ্জক। রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত রাখা গেলে আমাদের সাফল্য আরো বেশি হবে। বাংলাদেশের এই সাফল্যগাঁথা এদেশের কর্মঠ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তারাই রচনা করেছেন। কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে তাদের সফল পদচারণার কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি আমাদের জন্যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা চেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে আইডিইবি’র এক
হাজার নতুন শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টির এ প্রকল্প অন্যান্য সংগঠনের জন্যে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, আর্থিক খাতসহ যারা এসএমই ও নারী উদ্যোক্তা নিয়ে কাজ করছেন তাদের সকলকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ দেশটিকে সত্যিকারের সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে চাই। যেসব ডিপে¬ামা ইঞ্জিনিয়ার শিল্প উদ্যোক্তা হওয়ার বাসনা নিয়ে এখানে দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছেন
তাদের ক্ষুদে উদ্যোক্তা হওয়ার তাত্ত্বিক জ্ঞান রয়েছে। যে জ্ঞান সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের নেই। এই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এবং প্রাণশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এগিয়ে যাবেন। অর্থায়নের অভাব ও অন্য সকল বাধা-বিপত্তি যেন আপনাদের পথ আটকাতে না পারে সে বিষয়টি আইডিইবি, ডিসিসিআই ও বাংলাদেশ ব্যাংক দেখবে।
আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ম. হামিদ, এ্যান্ট্রিপ্রিনিউয়ারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’র চেয়ারম্যান সবুর খান।