banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 166 বার পঠিত

 

রাজধানীতে বাসায় ঢুকে কলেজ শিক্ষিকাকে পুড়িয়ে হত্যা!

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর নামে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসায় ঢুকে বিআরটিএ কর্মকর্তা শীতাংসু শেখর বিশ্বাসের স্ত্রী কলেজ শিক্ষিকা কৃষ্ণা কাবেরী মণ্ডলকে (৩৫) কুপিয়ে ও গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করেছে এক ব্যক্তি। এ সময় শীতাংসু শেখর বিশ্বাস, বড়মেয়ে শ্রুতি বিশ্বাস (১৭) ও ছোট মেয়ে অত্রি বিশ্বাস (৯) আহত হন। তারা বর্তমানে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। শীতাংসু শেখর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উপ-পরিচালক এবং কৃষ্ণা কাবেরী মোহাম্মদপুর মিশন ইন্টারন্যাশনাল কলেজে শিক্ষকতা করতেন।

মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, বিআরটিএ কর্মকর্তা শীতাংসু শেখর বিশ্বাস পরিবার নিয়ে মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের ৩/১২ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন। গত সোমবার রাত ৯টায় জাকির নামে তার পরিচিত এক ব্যক্তি জন্মদিনের কেক নিয়ে ওই বাসায় প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি রড দিয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তা শীতাংসু শেখর বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করে। এ ঘটনা দেখে ফেলায় ওই ব্যক্তি বাসার সবাইকে পেটাতে ও কোপাতে থাকে। কৃষ্ণা কাবেররি মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের চিত্কারে প্রতিবেশীরা বাসার সবাইকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্যামলীর কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কৃষ্ণা কাবেরীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার ভোর তিনটার দিকে চিকিত্সাধীন কৃষ্ণা কাবেরি মারা যান।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানান, শীতাংসু ও তার দুই মেয়ে এবং পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে হাজী আহমেদ সিকিউরিটিজ নামের একটি ব্রোকার হাউসের ম্যানেজার জাকির একাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, ব্যবসায়িক বিরোধ এবং পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা প্রকৌশলী সাবের আহমেদ জানান, চিত্কার শুনে তিনি দরজা খুলে দেখেন শীতাংসু ও তার দুই মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাসার দরজার সামনে। তাদের তাড়াতাড়ি বাসার ভেতরে নিয়ে যান। এসময় এক মেয়ে তার মাকে বাঁচানোর অনুরোধ করলে তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, আগুন জ্বলছে। ধোঁয়ায় পুরো ঘর আচ্ছন্ন। পরে বাসা থেকে পানি এনে নেভানোর চেষ্টা করা হয় এবং পর্দার পাশে দগ্ধ ও রক্তাক্ত অবস্থায় কৃষ্ণা কাবেরি মণ্ডলকে পাওয়া যায়।

নিহতের পারিবারিক একটি সূত্রের দাবি, শীতাংসু শেখর বিশ্বাসের সঙ্গে খান জাকিরুল নামে এক ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচয় ছিল। গত সোমবার সন্ধ্যায় কেক, ফল ও জুস নিয়ে শীতাংসুর মোহাম্মদপুরের বাসায় যায় জাকিরুল। শীতাংসুর পরিবারের সদস্যরা ফল ও জুস খাওয়ার পর অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর জাকিরুল তাদের হাত বেঁধে সবাইকে পেটান। মারধরের পর সে ঘরের ভেতর আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল।

Facebook Comments