banner

শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 299 বার পঠিত

 

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২১ পেলেন,কথা সাহিত্যিক জাহানারা নওশিন।

4_47328

অপরাজিতা ডেস্কঃ সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২১’ পেয়েছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিন। গত ২ই ডিসেম্বর জাতীয় যাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন,বরেণ্য সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক।

পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক ও দৈনিক ‘ইত্তেফাকে’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী ও কবি শামীম আজাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান কালে সৈয়দ শামসুল হক বলেন,অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারের ধারাবাহিক তালিকা দেখে বোঝা যায় নামের দিকে নয় গুণ বিবেচনায়ই এ পুরস্কার দেয়া হয়। অনন্যা অপরিচিত গুণসম্পন্ন নারী লেখকদের অনন্য সম্মাননা দিয়ে আমাদের সামনে নিয়ে আসে। নারী লেখকদের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করে। অনন্যা যেন নিজেকে বলে আমি দশজনের মধ্যে নই। আমি একাদশতম। সাহিত্যে নারীর আত্মপ্রকাশ ঐতিহ্যগতভাবে এক কুণ্ঠার বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে নারী সাহিত্যে নিজের নাম লেখাতে বড়ই কুণ্ঠাবোধ করে। তাদের কুণ্ঠা ভাঙতে সওগাত সম্পাদক নাসির উদ্দিন বেগম প্রকাশ করেছেন। সেই লেখাগুলো পড়লে মনে হতো বড়ই কাঁচা সাহিত্য। কিন্তু তার গভীরে ছিল তাদের জীবনের উপলব্ধি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ। আজ কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিনও সেই কুণ্ঠার কথা বললেন। কুণ্ঠার জন্যই তিনি বড় দেরি করে সাহিত্যের জগতে নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু তার লেখাগুলো মান বিচারে অসামান্য। তাই তিনি বেশি সময় ধরে নিজেকে তৈরি করেছেন। যারা অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই আমাদের সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অনন্যা প্রায় উপেক্ষিত ও আড়ালে থাকাদের সামনে এনে পুরস্কার দিয়ে সম্মাননা জানিয়ে আসছে।

কবি আসাদ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন,জাহানারা নওশিন বিনয় করে বললেন, তিনি লেখা প্রকাশ করতে লজ্জা পেতেন। তিনি আসলে নিজেকে তৈরি করেছেন। তার গদ্যের ডিটেলিং, প্রকৃতির বর্ণনা এসব ক্ষেত্রে অনেকের থেকে আলাদা। প্রেম ও পারিজাত-এ তিনি পুরুষ মনস্তত্বকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার দেশের নারী সাহিত্যিকদের দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মজা করে বলেন, এই পুরস্কারটি কেবল নারীদের দেয়ায় আমরা উপেক্ষিত থাকছি।

সভাপতির ভাষণে অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, আমরা সাহিত্যে অবদান রাখার ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকাটা তার উপলব্ধি থেকে দেখার চেষ্টা করি। ‘অনন্যা’ অন্য এক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় প্রতি বছর লোকচক্ষুর অন্তরালের নারী লেখকদের মনোনীত করে। যারা সাহিত্য জগেক সমৃদ্ধ করার জন্য সত্যিকার অর্থে কাজ করেন এমন একজনকে মনোনীত করতে পেরে  প্রতি বছরই এই সময় এমন ভাললাগা কাজ করে।
কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিন ৬ মার্চ ১৯৩২ সালে ভারতের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় শিক্ষক জাহানারা নওশিনের প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য মিলে এযাবত্ প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৯টি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ বৃক্ষে বৃক্ষে বিষকরবী, পিতামহীর পাখি, দুহিতা, প্রেম ও পারিজাত, হাড়িকাঠ, আহা ভূত বাহা ভূত ইত্যাদি। গত বছর তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান।

বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তন করা হয়েছে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর একজন কৃতী নারী, সাহিত্যিক অথবা সাহিত্য গবেষককে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে তরুণ কবিরা স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন।

Facebook Comments