banner

শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 146 বার পঠিত

বিয়ের ১৫দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য লাশ হতে হলো নববধূ কে!

856080307135211741

যৌতুকের টাকার জন্য বিয়ের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেলেন এক নববধূ। আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত ওই নববধূ সুবর্ণা আক্তার (১৮)। তিনি নরসিংদী সরকারি কলেজের ২০১৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাহেরচর গ্রামে তাঁদের বাড়ি। সুবর্ণার স্বামীর নাম মো. ইলিয়াস (২১)। তিনি বেকার ছিলেন। ইলিয়াসের বাড়ি নরসিংদী পৌরসভা এলাকায়।

গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে সুবর্ণাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা, চাচা ও অন্য স্বজনদের উপস্থিতিতে সুবর্ণা বলেন, গতকাল টেস্ট পরীক্ষা দিতে কলেজে যাওয়ার পথে ইলিয়াস তাঁকে ফোন করেন। ফোনে ইলিয়াস যৌতুক বাবদ দুই লাখ টাকা দাবি করেন। সুবর্ণা বলেন, তাঁর বাবা কৃষক। বাবার পক্ষে দ্রুত এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর বিকেলে বাসায় আসছি বলে ইলিয়াস মোবাইল কেটে দেন।

সুবর্ণার ভাষ্য, বাবার বাড়িতে একটি পৃথক ঘরে তিনি থাকতেন। বিকেল পাঁচটার দিকে পরীক্ষা দিয়ে কলেজ থেকে তিনি বাড়ি আসেন। ঘরে ঢোকা মাত্রই হাজির হন ইলিয়াস। ইলিয়াস তৎক্ষণাৎ টাকার কথা জানতে চান। জবাবে তিনি জানান, টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি আর বাবাকে তিনি টাকার কথা বলতে পারবেন না। ইলিয়াস তখন বলেন, টাকা না দিলে কিন্তু শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেব। সুবর্ণা বলেন, ‘ভালোবেসে বিয়ে করেছ, আবার পুড়িয়ে মারবে? তুমি চাইলে দাও।’ সঙ্গে সঙ্গেই ইলিয়াস একটি বোতলে করে নিয়ে আসা কেরোসিন সুবর্ণার গায়ে ঢেলে দেশলাই দিয়ে আগুন জ্বেলে দেন। এরপরই পালিয়ে যান।

সুবর্ণার বাবা আনোয়ার হোসেনের ভাষ্য, সুবর্ণার চিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসতে বললে রাত ১০টার দিকে সুবর্ণাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। তিনি আরও বলেন, কলেজে যাওয়ার পথে ইলিয়াস সুবর্ণাকে উত্ত্যক্ত করত। এতে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়েই দুই পরিবারের সমঝোতায় ৮ নভেম্বর সুবর্ণার সঙ্গে ইলিয়াসের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কথা ছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর সুবর্ণাকে তুলে দেওয়া হবে। বিয়ের সময় যৌতুকের ব্যাপারে কোনো কথা ছিল না।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা যায়, আগুনে সুবর্ণার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান। তাঁর মরদেহ বার্ন ইউনিটের লাশঘরে রাখা হয়েছে।

বাবা আমজাদ হোসেনের দাবি, এ ব্যাপারটি তিনি রায়পুরা থানায় অবহিত করেছেন এবং থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় তিনি একটি মামলা করবেন।

Facebook Comments