banner

শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 270 বার পঠিত

বেকারত্ব ও জনসচেতনার অভাবে নারী নির্যাতন বাড়ছে

 

 

Nari

 

অপরাজিতা প্রতিবেদক : যুবকদের বেকারত্ব ও নারী-পুরুষ উভয়ের সচেতনার অভাবেই নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। এই নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। তা না হলে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।

 

বুধবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নারীদের প্রতি সহযোগিতা জোরদারে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব মতামত দেন।

 

বাংলাদেশ নারী সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

 

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়ক ডা. বিলকিস বেগম, খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী, সুফিয়া কামাল নারী ক্লাবের সদস্য আরাফাত বেগম, জাহানারা ইমাম নারী ক্লাবের সদস্য দুলহ বেগম প্রমুখ।

 

ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আর এই আন্দোলনে পুরুষদেরও সঙ্গী করে নিতে হবে। শুধু নারীরাই আন্দোলন করলে হবে না।

 

তিনি অনুষ্ঠানের উপস্থিত নারীদের প্রতি বলেন, আপনারা বা আপনাদের পরিচিত কেউ নির্যাতনের শিকার হলে প্রথমে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করবেন। আর সেখানে যদি কোনো অসহযোগিতা পান কিংবা থানায় যেতে না চান, তাহলে সরাসরি ঢাকার ডিসি কার্যালয়ে চলে আসবেন। আপনাদের সেবার জন্য সেখানে আলাদা একটি শাখা সার্বক্ষণিক চালু রাখা হয়েছে।

 

সুফিয়া কামাল নারী ক্লাবের সদস্য আরাফাত বেগম বলেন, বেকারত্বের কারণেই নারী নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, পড়া লেখা শেষে যুবকরা যখন বেকার থাকেন তখন তাদের মধ্যে কু-চিন্তাচেতনা কাজ করে। এর ফলে তারা এই নারী নির্যাতনের দিকে ধাবিত হয়। সুতরাং, নারী নির্যাতন বন্ধে সরকারকে আগে বেকারত্ব দূর করতে হবে।

 

নারী আন্দোলনের এই নেত্রী আরও বলেন, নারী নির্যাতনের আরেকটি কারণ হলো মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে বাবা-মার অসচেতনতা। তারা যখন মেয়েকে বিয়ে দেন তখন যদি জামাইয়ের চরিত্র ও তার পারিবারিক বন্ধন বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজ-খবর নেন তা হলে বিয়ের পরে এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা কম ঘটত।
একই সঙ্গে নির্যাতনের পর মামলা বা অভিযোগ দিতে গিয়ে পুলিশের কাছে তথ্য দেওয়ার নামে যেন দ্বিতীয় নির্যাতনের শিকার হতে না হয় সে জন্য আহ্বান জানান তিনি।

 

জাহানারা ইমাম নারী ক্লাবের সদস্য দুলহ বেগম বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে নারী-পুরুষ সবাইকেই সচেতন হতে হবে। নারী নির্যাতন যে শুধু পুরুষরাই করেন তা নয়। পরিবারে শাশুড়ি ও ননদসহ বিভিন্ন সম্পর্কের নারীরাও গৃহবধূকে নির্যাতন করে থাকে। তাই পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও এ ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

 

খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত আলী বলেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে থানায় আসার পরে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করি সহযোগিতা করার জন্য। তবে মামলা করতে এসে যেন কেউ থানার দারোয়ান বা অন্য কোনো নিম্ন পদস্থের সহযোগিতা না চান, সে বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আপনারা সরাসরি ওসি তদন্ত অথবা অপারেশন অফিসারের কক্ষে গিয়ে অভিযোগ দিবেন।

 

অনুষ্ঠানের সভাপতি নারী নেত্রী রোকেয়া কবীর বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে নারীদের সংঘবদ্ধ হতে হবে। এই সংঘবদ্ধ নারী প্রতিনিধিরা যদি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, তাহলেই এই সামজিক ব্যাধি প্রতিরোধ সম্ভব।

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/সেপ্টেম্বর ২০১৪ই.

Facebook Comments