অপরাজিতাবিডি ডটকম, রাঙ্গামাটি : রেশম চাষের জন্য বেশি জায়গা বা সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। সহজে বাড়ির উঠানে বা ঘরে চাষ করতে পারা যায়। সে সুবিধা কাজে লাগাচ্ছেন রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার অনেক নারী। তারা রেশম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের দেখাদেখি চাষ ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এ রেশম চাষ সহজ করে দিয়েছে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দানকারী প্রতিষ্ঠান রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্র ও রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়।
বেতছড়ির বাসিন্দা ফেরদৌসী বেগম দুই দশক আগে রেশম চাষ শুরু করেন বলে জানা যায়। তার সাফলতা মেয়ে ফরিদা পারভিনকেও রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করে। ফরিদা ৮ বছর ধরে রেশম চাষে যুক্ত আছেন। তিনি ছোট বোন শাহানা আক্তারসহ এলাকায় শতাধিক নারীকে রেশম চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বর্তমানে কাউখালীতে চার শতাধিক নারী রেশম চাষে যুক্ত আছেন।
চাষী শিরিনা বেগম, রোকসানা বেগম, বৈশাখী চাকমা, হাসিনা বেগম, লায়লা বেগম, গোলাপী বেগম, কুলসুমা বেগম, সুখী চাকমাসহ অনেকে জানান, তারা রেশম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। শিরিনা বেগম জানান, তার কাছে বর্তমানে ৫০ হাজার টাকা জমা আছে। যা রেশম চাষ থেকে আয় করেছেন। আরেকজন জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন রেশম চাষ করে। এ রকম অনেক নারী তাদের সফলতার কথা দ্য রিপোর্টকে জানান।
ফরিদা পারভীন জানান, বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩৩৬ জন রেশম চাষী আছেন। প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্র বিনামূল্যে রেশম পোকা সরবরাহ করে। এ ছাড়া চাষীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যে কোনো সমস্যায় তাদের পরামর্শও দিচ্ছে।
সম্প্রতি বেড়ছড়িতে অনুষ্ঠিত হলো একটি প্রশিক্ষণ। ২৪ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত চলা এ প্রশিক্ষণের বিষয় ছিল ‘বয়স্ক পুল পালন’। প্রশিক্ষণ শেষে চাষীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়। সনদ বিতরণে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যানী চাকমা কৃপা, জেলার কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক পরিচালক তপন কুমার পাল, আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক কামনাশীষ দাশ ও আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রাশিদুল হক। আয়োজকরা জানান, প্রশিক্ষণে নারীদের উপস্থিতিই বেশি ছিল।
চাষীরা মনে করেন কাউখালী উপকেন্দ্রে রেশম নিয়ে আরও পদক্ষেপ দেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আঞ্চলিক রেশম গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক কামনাশীষ দাশ বলেন, কাউখালীতে অনেক মহিলা রেশম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারা এলাকায় চাকী পলু পালন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রাশিদুল হক বলেন, কাউখালী, কাপ্তাই এবং রাজস্থলীতে চাকী পলু পালন কেন্দ্র গড়ে তোলা বিশেষ প্রয়োজন। এটা করা গেলে এলাকায় রেশম চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/২২ জুন ২০১৪ই.