এই বছর মে মাসের প্রথম দশকের শেষের দিকে রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত চার দিনব্যাপী ‘এসএমই নারী উদ্যোক্তা মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে এক গৌরবময় পরিণতির মাধ্যমে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্মাননা দিয়েছে ছয় জন অনন্য নারী উদ্যোক্তাকে, যাঁরা তাঁদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও কঠোর পরিশ্রমে নিজ নিজ এলাকায় গড়েছেন কর্মসংস্থানের পথ।
সম্মাননা পাওয়া ছয় উদ্যোক্তার মধ্যে রয়েছেন রাঙামাটির ছেনছেন রাখাইন, যিনি ২৫ বছর আগে মাত্র ৫ হাজার টাকা মূলধনে গড়ে তোলেন ‘মে রাখাইন বার্মিজ স্টোর’। আজ তাঁর প্রতিষ্ঠানটি পাহাড়ি তাঁতের পোশাক যেমন পিনন, খাদি, ব্লাউজ ও খামি উৎপাদন ও বিপণনে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম কুড়াচ্ছে।
বাগেরহাটের রোজি আহমেদের ‘মেসার্স অর্গানিক প্রোডাক্ট’ কোকো ফাইবার দিয়ে তৈরি করছে পরিবেশবান্ধব খেলনা ও পোষাপ্রাণির জন্য সামগ্রী, যা এখন ইউরোপের বাজারেও রপ্তানি হচ্ছে। ফরিদপুরের সাবেকুন নাহারের ‘লাম ক্রিয়েশন’ পাট ও কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করছে দৃষ্টিনন্দন ঝুড়ি, মাদুর ও ব্যাগ।
সিলেটের রোজিনা আলিম ‘মিনার কেমিক্যাল অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস’ নামের প্রতিষ্ঠান দিয়ে গড়ে তুলেছেন স্থানীয় রাসায়নিক পণ্যের এক নির্ভরযোগ্য উৎস। ঢাকার সাভারের আয়েশা বেগমের ‘মুসলিম জুয়েলারি ওয়ার্কশপ’ রুপা, পিতল ও তামার অলংকার রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।
পাবনার হোসনে আরা স্বামীর মৃত্যুর পর ‘আকলিমা সেবা ক্লিনিক ও নার্সিং হোম’ চালিয়ে নারীর স্বাস্থ্যসেবায় রেখেছেন অসামান্য অবদান। তাঁর প্রতিষ্ঠান পেয়েছে কবি সুফিয়া কামাল স্বর্ণপদকও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার বলেন, “দেশের উন্নয়নে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা অপরিহার্য। এ ধরনের উদ্যোগ নারীদের সাহস ও স্বপ্ন দেখার পথ প্রশস্ত করবে।”
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ৭৩ জন নারী উদ্যোক্তাকে সনদ প্রদান করা হয় এবং আয়োজকরা জানান, চার দিনে প্রায় ৬০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে।