নারী অধিকারের লড়াই দীর্ঘ এবং কঠিন হলেও, এর ইতিহাসে ফেব্রুয়ারি মাস এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ভাষার জন্য যেমন এই মাস তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি নারীদের আইনগত ও পেশাগত অধিকারের ক্ষেত্রেও এটি স্মরণীয়। নারী ভোটাধিকার থেকে শুরু করে আইন পেশায় নারীদের অংশগ্রহণের বৈপ্লবিক পরিবর্তন—ফেব্রুয়ারি এসব অর্জনের সাক্ষী।
নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের পথচলা
১৮৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিং প্রথমবারের মতো একটি আইন পাস করে, যেখানে নারীদের পূর্ণ ভোটাধিকার প্রদান করা হয়। এটি ছিল বিশ্বের জন্য এক নতুন দৃষ্টান্ত। এই আইন কার্যকরের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এস্টার হোবার্থ মোরিস। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সচেতন কর্মী এবং নারী অধিকারের অগ্রদূত। তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৮৭০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাকে ওয়াইওমিংয়ের প্রথম নারী পিস জাস্টিস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই সাফল্যের পর নারীদের ভোটাধিকার আরও সম্প্রসারিত হতে থাকে। ১৮৭১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা অঙ্গরাজ্যও নারীদের ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করে।
নারীদের আইন পেশায় প্রবেশ
নারীরা দীর্ঘদিন ধরে আইন পেশায় প্রবেশ করতে পারছিলেন না। তবে ১৮৭৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাদারফোর্ড বি. হেইজ একটি ঐতিহাসিক বিলে স্বাক্ষর করেন, যা নারীদের সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়। এটি নারীদের পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল।
ফেব্রুয়ারি: সংগ্রাম ও অর্জনের মাস
‘ফেব্রুয়ারি’ শুধু ক্যালেন্ডারের একটু মাসের নাম নয়; এটি নারী অধিকার আদায়ের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এস্টার হোবার্থ মোরিসের মতো নারীদের অবদানের ফলে আজ নারীরা ভোটাধিকার ও পেশায় প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম, ফেব্রুয়ারি তার অন্যতম প্রতীক।
এই মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, লড়াই আজও শেষ হয়নি। অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ, এবং ইতিহাস আমাদের শেখায় যে, প্রতিটি পরিবর্তন সম্ভব,যদি আমরা অবিচল থাকি।