banner

রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 44 বার পঠিত

 

নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার নতুন দিগন্ত খুলছে ‘সমৃদ্ধি’

 

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বিরাট গ্রামে নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে কাজ করছে প্রজেক্ট ‘সমৃদ্ধি’।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীর উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই প্রকল্প পুরোনো কাপড় ও পাট ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের। তাদের তৈরি ব্যাগ, টুপি, পাপোশ, জায়নামাজ ও নকশিকাঁথার মতো পণ্য বাজারজাত করে ‘সমৃদ্ধি’। এই উদ্যোগ শুধু নারীদের আয়ের পথ সুগম করছে না, বরং পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রার প্রচারেও ভূমিকা রাখছে।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিশাত জাহান নাদিরা, আবদুল খালেক সরকার, সুমাইয়া আফরিন অর্থি, আরাফাত বিন সোহেল, মো. সৌরভ হোসেন, মশিউর রহমান ও জারিন তাসনিম রিথি মিলে শুরু করেন ‘সমৃদ্ধি’। প্রথমে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে পণ্য বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে।

নারীদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে এই উদ্যোগ।
বিরাট গ্রামের শিমলা বেগমের মতো অনেক নারী এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। শিমলা আগে থেকেই সেলাই জানতেন, তবে কখনো ভাবেননি পুরোনো কাপড় থেকে নতুন কিছু তৈরি করে আয় করা সম্ভব। এখন তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে নিয়মিত ব্যাগ তৈরি করছেন, যা তার পরিবারের আয় বাড়াতে সহায়তা করছে।

শুধু নারীদের জন্য নয়, ‘সমৃদ্ধি’ শিশুদের জন্যও কাজ করছে। প্রকল্পের সদস্যরা স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ক্লাইমেট আইডল’ কর্মসূচি চালু করেছে, যেখানে শিশুদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে এবং সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
ভবিষ্যতে ‘সমৃদ্ধি’ আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চায়। উদ্যোক্তারা গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান, একটি মানসম্মত পাঠাগার স্থাপন এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণের পরিকল্পনা করছেন।

সহপ্রতিষ্ঠাতা নিশাত জাহান নাদিরা জানান, তাদের লক্ষ্য শুধু নারীদের স্বাবলম্বী করা নয়; বরং পুরো এলাকার জীবনমান উন্নত করা। তিনি বলেন, “আমরা চাই, ‘সমৃদ্ধি’ শুধু একটি উদ্যোগ হিসেবে সীমাবদ্ধ না থেকে অন্যদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক।”

নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ রক্ষা ও শিশুদের বিকাশ—এই তিনটি দিককে একত্রে নিয়ে কাজ করছে ‘সমৃদ্ধি’। এলাকাবাসীর আশা, এই উদ্যোগ আরও বড় হবে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

Facebook Comments