প্রতি বছর ১লা ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব হিজাব দিবস। ২০১৩ সালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নারী নাজমা খান এই দিবসের সূচনা করেন। এর মূল লক্ষ্য ছিল হিজাব পরিধানকারী নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করা এবং তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো। বর্তমানে বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
২০২৫ সালের বিশ্ব হিজাব দিবসের প্রতিপাদ্য হলো “Progression, Not Oppression” (প্রগতি, নিপীড়ন নয়)
এবং হ্যাশট্যাগ #UnapologeticHijabi
এই বার্তার মাধ্যমে হিজাব পরিধানকারী নারীদের স্বাধীনতা,ক্ষমতায়ন, তাদের অর্জন এবং সমাজে তাদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।
হিজাবের তাৎপর্য ও গুরুত্ব
ইসলামে হিজাব কেবল একটি পোশাক নয়, বরং এটি নারীর আত্মপরিচয়, শালীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—
“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের এবং মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন নিজেদের চাদরের একাংশ নিজেদের (মুখের) উপর নামিয়ে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে এবং তাদের উত্যক্ত করা হবেনা।” (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৯)
হিজাব নারীকে সম্মানিত করে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এটি কেবল মুসলিম নারীদের জন্যই নয়, বরং বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির নারীরাও শালীন পোশাক পরিধান করে থাকে। বিশ্ব হিজাব দিবসের মাধ্যমে নারীদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিশ্ব হিজাব দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—
✅ গ্লোবাল ভার্চুয়াল কনফারেন্স
✅ সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন – #UnapologeticHijabi হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সচেতনতামূলক পোস্ট করা হবে।
✅ হিজাব চ্যালেঞ্জ – অমুসলিম নারীদের একদিনের জন্য হিজাব পরিধান করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করা হয়।
✅ আলোচনা সভা ও কর্মশালা – হিজাবের গুরুত্ব, নারীর অধিকার ও সমাজে হিজাব পরিধানকারী নারীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অনেকে মনে করেন হিজাব একটি বাধ্যবাধকতা, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি একজন নারীর স্বাধীন পছন্দের প্রতীক। বহু মুসলিম নারী-বিজ্ঞান, শিক্ষা, রাজনীতি, ক্রীড়া ও বিভিন্ন পেশায় হিজাব পরেই সফলতা অর্জন করছেন। তাই বিশ্ব হিজাব দিবস আমাদের শিক্ষা দেয় যে, নারী হিজাব পরিধান কখনো তার অগ্রগতির অন্তরাল হতে পারেনা।এবং হিজাব পরা বা না পরা এটি সম্পূর্ণ তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
বিশ্ব হিজাব দিবসের মূল বার্তা হলো— নারীর হিজাব পরার স্বাধীনতাকে সম্মান করুন। এটি কেবল ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং নারীর আত্মপরিচয়ের একটি অংশ। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য “Progression, Not Oppression” এর মাধ্যমে বিশ্বের সকল নারীর জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আসুন, আমরা একে অপরের সংস্কৃতি ও পোশাকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই এবং একটি সহনশীল সমাজ গড়ে তুলি।