banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 474 বার পঠিত

আইসোলেশনের জন্য নিজেকে তৈরি করবেন যেভাবে

এ এক কঠিন সময়। শতাব্দীর সবচেয়ে বড় দুঃসময় বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। কোনো নির্দিষ্ট দেশ কিংবা জাতি নয়, পুরো বিশ্বই এখন আক্রান্ত, আতঙ্কিত। তাই নিজেকে একা ভাবার দরকার নেই। এখন প্রত্যেকেই আপনার মতো উদ্বিগ্ন। যেহেতু ভাইরাসটি নতুন, এখনও আবিষ্কার হয়নি এর ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক, তাই ভয়টা বেশি। তবে ভয় দূর করতে চাইলে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মানেই কিন্তু মৃত্যু নয়। অনেকেই আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। খুব কম সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রেই এটি মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখুন। এটিও কিন্তু আপনাকে অসুখের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের রসদ জোগাবে।

করোনাভাইরাস আসার পরে আমরা কিছু নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। যেমন কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, পিপিই ইত্যাদি। এই শব্দগুলোর ব্যবহার আগে এতটা হতো না যতটা এখন হচ্ছে। এর মধ্যে কোয়ারেন্টাইন আর আইসোলেশনকে গুলিয়ে ফেলছেন অনেকে। কোয়ারেন্টাইন হলো আপনার ভেতর অসুখটা আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অন্তত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা। যদি এমন কোনো আশঙ্কা তৈরি হয় যে, আপনি এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন, তখনই কেবল আপনাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। দুই সপ্তাহ পর যদি পরীক্ষায় করোনাভাইরাস নেগেটিভ আসে, তবে আপনি সুস্থ। কোয়ারেন্টাইন থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন। আর যদি পজেটিভ হন, তবে যেতে হবে আইসোলেশনে।

কারো শরীরে যখন করোনাভাইরাস ধরা পড়ে তখন তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আইসোলেশনের সময় চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে থাকতে হবে রোগীকে। অন্য রোগীর কথা ভেবে হাসপাতালে আলাদা জায়গা তৈরি করা হয় তাদের জন্য। অন্তত দুই সপ্তাহের মেয়াদে আইসোলেশন চলে। অসুখের গতিপ্রকৃতি দেখে তা বাড়ানোও হয়। আইসোলেশনে থাকা রোগীর সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ করতে দেয়া হয় না। তাদের স্বজনদের সঙ্গেও এই সময় দেখা করতে দেয়া হয় না। একান্ত তা করতে দেয়া হলেও অনেক বিধিনিষেধ মানতে হয়।

যেহেতু এখনও এই অসুখের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে এ সময় কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিয়ে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় এমন কিছু ওষুধ ও পথ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। যাদের শরীরে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও করোনার প্রকোপ অল্প, তারা এই পদ্ধতিতে সুস্থও হন। যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও রোগের হানা বড়সড় রকমের, তাদের পক্ষে সেরে ওঠা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

খুব বেশি উদ্বেগজনক অবস্থা না হলে রোগীর বাড়িতেও আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি অনেকটা কোয়ারেন্টাইনের মতোই। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পথ্য চলতে পারে এই সময়। ভাইরাসটি এমনই সংক্রামক যে, সেবার জন্য কাউকে কাছে পাওয়ার আশা না করাই ভালো। তবে আইসোলেশন সেন্টারে থাকলে চিকিৎসক ও নার্সের দেখা পাবেন, বাড়িতে থাকলে আপনজনদের মধ্য থেকে কেউ দেখাশোনা করতে চাইলে তাই অবশ্যই সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে তবেই তা করতে হবে।

যদি আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। যেহেতু প্রতিষেধক নেই তাই মৃত্যুভয় আপনাকে আঁকড়ে ধরতেই পারে। এই অবস্থায় আপনাকে সাহায্য করতে পারে আপনার মনোবল। কিছুতেই মনোবল হারানো চলবে না। আইসোলেশন সেন্টার কিংবা বাড়িতে, যেখানেই আইসোলেশনে থাকুন না কেন আশা ধরে রাখতেই হবে।

ফিরতেই হবে- এমন মনোভাব ধরে রাখলে সহজে হারাবেন না। মনে রাখবেন, আমাদের শরীর কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই আমাদের মনের কথা শুনে চলে। তাই শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে মনের দিকটাও গুরুত্ব দিতে হবে। তাই জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তেও আশা বাঁচিয়ে রাখুন।

যা কিছু দরকারি জিনিস, তা হাতের কাছে রাখুন। কখন কোন ওষুধ খাওয়ার, তা জেনে নিন। যেন কেউ সাহায্য না করলেও নিজেই ওষুধ খেতে পারেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মানেই সব শেষ ধরে নেবেন না। হতে পারে এটাই নতুন করে শুরু। অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং তাদের আত্মবিশ্বাস আগের থেকে আরও বেড়েছে নিঃসন্দেহে। তাই যতটা সম্ভব খেয়াল রাখুন নিজের দিকে। যদি সুস্থ হয়ে ফেরেন তবে নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হবেন আপনি। মৃত্যুকে জয় করে আসা কম কথা নয়! সৌজন্যে: জাগোনিউজ

Facebook Comments