অপরাজিতাবিডি ডটকম, ঢাকা: আজ ৪৩তম মহান স্বাধিনতা ও জাতীয় দিবস । আমাদের কাছে দিনটি অনন্য সাধারণ । তেতাল্লিশ বছর আগে যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল সেই যুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখ করার মতো।
নজরুলের ভাষায় বলতে হয় –
‘কোন কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারি
প্রেরণা দিয়াছে,শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষী নারী।
এদেশের স্বাধীনতার যে ইতিহাস রচিত হয়েছে সেই ইতিহাসে কি নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কথা আছে? দু:খজনক হলেও সত্য যে , এদেশের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কথা গুটি কয়েক লোক ছাড়া কেউ বলে না । স্বীকৃতি নেই তাদের অবদানের । এমন কি সরকারি উদ্যোগে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের ১৬ খন্ডের গ্রন্থে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কোন তথ্য নেই। বাংলাদেশে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হয়েছে কয়েকবার কিন্ত নারী মুক্তিযোদ্ধাদের কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা এ পর্যন্ত করা হয়নি। আমাদের নারীরা যেমন অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে তেমনি তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্নরক্ষার ক্ষেত্রে ভুমিকা রেখেছে, অস্ত্রের ভাণ্ডার পাহারা দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারের জোগান দিয়েছে, নিজের ছেলে স্বামীর হাতে রাইফেল তুলে দিয়েছে, সন্তান হারা স্বামী হারা হয়ে বেছে নিয়েছে সীমাহীন কষ্টের জীবন ! তাদের এ অবদানকে আমরা কি ভাবে অবমূল্যায়ন করতে পারি!
আরেকটি কথা স্বাধীনতা অর্জনে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিলো তার কতটা কাছাকাছি আমরা পৌছতে পেরেছি?
২০১০ সালের এক জরিপ অনুযায়ী ,র্বতমানে বাংলাদেশে র্কমক্ষেত্রে নিয়োজিত আছে ১কোটি ৬২লাখ নারী। ২০০৬ সালে এর সংখ্যা ছিলো- ১ কোটি ১৩ লাখ । অর্থাৎ এই চার বছরে ৪৯ লাখ নারী শ্রম বাজারে প্রবেশ করেছে । ২০০৬ সালে ২৯ এবং ২০১০ সালে ৩৬ শতাংশ হয়েছে ।
এ থেকে বুঝা যায় যে অর্থনীতিতে নারী অর্জন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিনিময়ে নারী কি পেয়েছে?
কমেছে কি নারী নির্যাতন?
পাক বাহিনী যে জঘন্য
পশুরুপে আমাদের নারীদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল সেই একই রুপ কেন দেখা যায় স্বাধীন দেশে?
কেন আজও নারীরা পথে, ঘাটে, বাসে, ট্রেনে ধর্ষিত হবে ?
যত দিন নারীরা নিজের সম্মান, মর্যাদা নিয়ে মাথা তুলে দাড়াতে না পারবে ততদিন যে সমস্ত নারী মুক্তিযুদ্ধে তাদের সম্ভ্রম বিলিয়ে দিয়েছে তার দায় শোধ হবে না।
যত দিন নারীদের অন্তঃনিহিত শক্তি, অদম্য ইচ্ছা আর আত্নসম্মান বোধ বিকশিত না হবে ততদিন স্বাধীনতার স্বাদ অপূর্ণৃই রয়ে যাবে।
অপরাজিতাবিডিডটকম/আরআই/এ/২৬মার্চ২০১৪