মা-বাবার মেসেজ গুলো সবসময় গুরুত্বপূর্ণ সন্তানদের জন্য
মো:আশরাফুল ইসলাম
সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে মা বাবা পরিপূর্ণতা লাভ করে। একটি বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই কান্নার মাধ্যমে তার অস্তিত্ব জানিয়ে দিচ্ছে। কান্নার পরপরই মা বাবা যখন তাকে জড়িয়ে ধরছে শিশুটির আরাম লাগছে এবং নিরাপদ অনুভব করছে। এরপর শিশুটি হামাগুড়ি দেওয়া, হাটতে শেখা, কথা বলতে শেখার মাধ্যমে বেড়ে উঠতে থাকে। শিশুটির বিকাশের ক্ষেত্রে তার মা বাবা এবং আশেপাশের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুটি একটু বড় হওয়ার সাথে সাথে মা বাবা থেকে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে, বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পেতে পারে যেমনঃ শিশুটি যখন ঠিকমতো কথা বলতেও শেখে নাই তখন মা বাবা বলছে – আমাদেরতো খুব ইচ্ছা তুমি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে অথবা বাবা তুমি পেটে থাকতেই আমরা বলেছি তোমাকে মাদ্রাসাই পড়াব। এই যে মা বাবা তাদের নীডগুলো সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া শুরু করেছে। আবার, অনেকক্ষেত্রে মা বাবা বাচ্চাকে বলছে তুমি একটা গাঁধা, অন্যরা পারে তুমি কেন পারো না, তোমার দ্বারা কিছুই সম্ভব না। আবার, বাচ্চাটি একটি কাজ করতে গেলে তাকে বলা হচ্ছে তুমি ছোট মানুষ তুমি পারবে না দাও আমি করে দেই। একটি কথা বলতে গেলে তাকে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে তুমি ছোট মানুষ তোমার এত কথা কিসের চুপ থাকো , বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছেলে বাচ্চাদের বলা হচ্ছে – ছেলে মানুষদের শক্ত হতে হবে বাবা কাদে না। মা বাবা যে মেসেজগুলো দিচ্ছে সন্তানরা কোন প্রকার চিন্তা ছাড়াই সেগুলোকে নিয়ে নিচ্ছে।
ফলাফল কি হচ্ছে?
মা বাবা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য সন্তানকে প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছে, সমালোচনা করছে, সবসময় শাসনের মধ্যে রাখছে এর ফলে পড়ালেখার প্রতি তার বিরক্তি চলে আসছে। আবার, যে বাচ্চাটিকে মাদ্রাসায় দেওয়া হল সে কয়দিন পর পরই মাদ্রাসা থেকে পালাচ্ছে। আবার, যে বাচ্চাটিকে বলা হল তুমি একটা গাঁধা, অন্যরা পারে তুমি কেন পারো না, তোমার দ্বারা কিছুই সম্ভব না সে বড় হয়ে হীনমন্যতাই ভুগছে। দেখা যাচ্ছে, বড় হবার পরও নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারছে না, যখনি কোন একটি কাজে পারছে না তখন চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে ভাবছে আমার দ্বারা সম্ভব না এবং বিষণ্ণতাই ভুগছে অথবা তার মধ্যে উদ্বিগ্নতা তৈরি হচ্ছে। আবার, ছোট বলে যে বাচ্চাকে থামিয়ে দেওয়া হল বড় হয়ে সেই বাচ্চাটি কোন কাজ করতে গেলে এবং অন্যদের সামনে কোন কথা বলতে গেলে ভিতর থেকে বাধা পাচ্ছে।
ছোটবেলা বাচ্চারা কোন প্রকার যৌক্তিক চিন্তা ছাড়াই মা বাবার মেসেজগুলো নিয়ে নেয়। এর ফলে বাচ্চারা তার নিজের সম্পর্কে script তৈরি করে এবং মা বাবার মেসেজগুলো সারাজীবন বয়ে বেড়ায়। লক্ষ্য করে দেখবেন অনেক মানুষ সফল হওয়া সত্ত্বেও সারাজীবন নিজেদের অসফল ভাবে শুধুমাএ ছোটবেলায় দেওয়া মেসেজগুলোর কারণে।
বাচ্চারা যে গুরুত্বপূর্ণ এটি কি আমরা তাদের অনুভব করাতে পারি না? কি এমন অসুবিধা হত যদি তাদের শৈশব কাটত আনন্দ আর খেলাধুলায়। আমরা কি তাদের জিজ্ঞেস করতে পারিনা তুমি কি হতে চাও। প্রতিটা বাচ্চার শৈশব খুব গুরুত্বপূর্ণ আর এ সময়ে মা বাবার মেসেজগুলোও খুব গুরুত্বপূর্ণ।