banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 459 বার পঠিত

 

জিনের ভয় দেখিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ : গ্রেফতার এক (মসজিদের ইমাম)

জিনের ভয় দেখিয়ে মেয়েদের ধর্ষণ : গ্রেফতার এক (মসজিদের ইমাম)


নারী সংবাদ 


মসজিদের ইমাম তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষকও। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে স্থানীয় অনেকের অসুস্থতায় তিনি ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজ দিতেন। ঝাড়ফুঁঁক নেয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে ঝাড়ফুঁঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে সুন্দরীদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিলেন তিনি। বাদ যায়নি মাদরাসা ও মসজিদে আসা শিশুরাও। এমন অভিযোগে গত রোববার রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। তার নাম ইমাম ইদ্রিস আহাম্মেদ (৪২)।

এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ সময় তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ার পর রোববার মধ্যরাতে র‌্যাব-১ এর একটি দল দক্ষিণখান সৈয়দনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার মোবাইল জব্দ করা হয়। ওই মোবাইলে ধর্ষণ ও বলাৎকারের অনেক ভিডিও ও ছবি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম। তিনি বলেন, দক্ষিণখানের স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি ও মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং দীর্ঘ দিন দক্ষিণখান এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিশেষ প্রভাব বলয় তৈরি করেন ইদ্রিস আহাম্মেদ। প্রভাবকে পুঁজি করে দীর্ঘ দিন ধরে কৌশলে ধর্ষণ ও বলাৎকারের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলেন তিনি। এ ব্যাপারে সম্প্রতি ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ছায়াতদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব-১। অনুসন্ধানের পর উঠে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, অভিযুক্ত ইদ্রিস আহাম্মেদের বাড়ি সিলেট জেলায়। তিনি সিলেটের একটি মাদরাসা থেকে ১৯৯৮ সালে টাইটেল পাস করেন। এরপর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০২ সালে ঢাকায় এসে দক্ষিণখানের ওই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় ঝাড়ফুঁঁক এবং তাবিজ-কবজ বিক্রি করেন। তার সাথে জিন আছে মর্মে প্রচার ও কুকর্মের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি সুন্দরী নারীদের মিথ্যা ঝাড়ফুঁঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে অনেক নারীই আত্মসম্মান এবং কুসংস্কারের কারণে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকে বলেননি।
তিনি বলেন, ইদ্রিস মসজিদে তার কক্ষে খেদমতের অজুহাতে কিশোরদের জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। এ ছাড়া তিনি যে মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন সেখানকার ছাত্রদের মসজিদে ডেকে এনে বলাৎকার করে কৌশলে মোবাইলে অপকর্মের ভিডিও ধারণ করেন। জিন ও তাবিজ করার ভয় দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে পুনরায় ভিকটিমকে ধর্ষণে বাধ্য করেন। কোনো ভিকটিম অনৈতিক কাজে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখানো হয়। এতে বাধ্য হয়ে ভিকটিম অনিচ্ছা সত্তে¡ও বারবার বলাৎকারের শিকার হয়েছে।
প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, মসজিদের একটি বিশেষ কক্ষে তিনি ঘুমাতেন। তার সব অপকর্ম ওই কক্ষেই সম্পন্ন হতো এবং তার এই অপকর্মের ভিডিওগুলো সে তার খাদেমদের দিয়ে ধারণ করাতে বাধ্য করতেন। এ পর্যন্ত ইদ্রিস একাধিক নারীর সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

Facebook Comments