banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1365 বার পঠিত

 

মেয়েটার সমস্যা কী?


ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস


দিন তিনেক আগে মেয়েটার টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মেয়েটার বয়স ১৬।
২০১৯ এর এসএসসি পরীক্ষার্থী।
টেস্ট পরীক্ষার হলে সে হঠাত মাথা ঘুরে পড়ে গেল। তাড়াতাড়ি তাকে হল থেকে বের করে মাথায় পানি ঢালা হল।

বাসায় আনা হল।

বাসায় আসার পর দুইবার এবং পরবর্তী তিন দিনে আরো ছয়বার খিচুনী হল।

১.হাত পা শক্ত হয়ে যায়,
২.চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
৩.দাঁতে দাত চাপ লেগে যায়।
৪.এরপর বাইরের পরিবেশের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৫.হাত পা শক্ত হয় মাত্র ২-৩ মিনিটের জন্য, কিন্তু চোখ বন্ধ থাকা আর অজ্ঞান হওয়া বজায় থাকে ২০ মিনিট।
৬.জিহ্বায় কামড়, পায়খানা প্রস্রাব করে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।
৭.ঘুমের মধ্যেও এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

কিন্তু টেস্ট পরীক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে টানা চারদিনে সাতবার এমন ঘটনায় পুরা পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে।

কী করবেন?
মুলত রোগটি হল, Conversion Disorder.

এই পয়েন্টগুলো ভালভাবে মনে রাখতে হবে আমাদেরকে।

১। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় জিহ্বায় কামড় পড়ে, রক্ত আসে, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম।

২। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় প্রস্রাব পায়াখানা হয়ে যায়, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম। প্রস্রাব হয়ে গেলেও পায়খানা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

৩। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় চোখ খোলা থাকে, চোখ উলটে যায় আর খোলা চোখ দেখে আশপাশের লোকজন ভয় পেয়ে যায়, নকল রোগীর ক্ষেত্রে এই চোখ খোলা থাকে না, পুরা সময়ই চোখ বন্ধ থাকে। এটি খুব ই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট।

৪। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি মানুষের সামনেও হয়, আবার একা একা থাকার সময়ও হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণত সব সময়ই খিঁচুনি মানুষের সামনেই হয়, একা অবস্থায় কখনোই হয় না।

৫। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি ঘুমন্ত জাগ্রত সব অবস্থায় ই হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে খিঁচুনি ঘুমন্ত অবস্থায় সাধারণত কখনোই হয় না।

৬। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময়কার কোন ঘটনাই মনে থাকে না। আসপাশে কে কী বলল সেটা শুনতে পায় না। নকল খিঁচুনির রোগী আশপাশের লোকজনের কথা শুনতে পায় এবং খিঁচুনির সময় কখন কীভাবে কী হল – এগুলি কিছু না কিছু বলতে পারে।

Facebook Comments