banner

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1052 বার পঠিত

 

দৈনিক ১৮ মা ও ঘন্টায় ৮ শিশুর মৃত্যু হয়

নারী সংবাদ


দক্ষ হাতে প্রসব না হওয়ায় বাংলাদেশে দৈনিক ১৮ মা ও ৮ নবজাতক মারা যাচ্ছে। এভাবে বছরে মৃত্যু হয় ছয় হাজার ৫৬৯ জন মায়ের ও ৭৪ হাজারটি নবজাতকের। মা ও শিশু মৃত্যুর বেশি ঘটনা ঘটে বাড়িতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও অদক্ষ দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষ দাই অথবা চিকিৎসকের হাতে সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা নেয়া হলে মা ও শিশু উভয়ের মৃত্যু ঝুঁকি কমে যায়। গ্রামের মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক ওষুধ-পত্র পেয়ে থাকলেও প্রসবসেবা সেখান থেকে পান না। কাছের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সেবা প্রদানকারী থাকলেও পরিবেশ নেই। আবার পরিবেশ থাকলেও সেবা প্রদানকারীরা থাকেন না। সরকারি সহযোগিতায় ইউএস এআইডি’র প্রকল্প ‘মামণি এইচএসএস’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট করে কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে সপ্তাহের সাত দিনই ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা করায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সন্তান প্রসবের সংখ্যা বেড়েছে। এতে করে মা ও শিশু মৃত্যুও রোধ করা গেছে। নোয়াখালী, লক্ষীপুর, হবিগঞ্জ, ঝালোকাঠি জেলায় আগের ১১টি থেকে ‘মামণি এইচএসএস’ এখন ১০০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রসব পূর্ববতি ও প্রসব পরবর্তি সেবাদানে প্রস্তুত করে গত চার বছরে সাড়ে ১৫ হাজার নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন করেছে।

২০১৪ সালে এসব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেখানে ১ শতাংশ ডেলিভারি হতো ২০১৭ সালে সেখানে ৭ শতাংশ প্রসব হচ্ছে। এই চার উপজেলায় আগে যেখানে বাড়িতে ৭০ শতাংশ প্রসব হতো ২০১৭ সালে হয়েছে ৫৬ শতাংশ। গতকাল সোমবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র শক্তিশালী করে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বৃদ্ধি করা’ শীর্ষক সেমিনারে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উপরের চিত্রটি তুলে ধরেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা মেডিক্যাল অ্যাডুকেশন সচিব সিরাজুল হক খান, মেডিক্যাল অ্যাডুকেশন সচিব ফয়েজ আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পণা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. কাজী মুস্তাফা সারোয়ার, সেভ দ্য চিলড্রেন, বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ইশতিয়াক মান্নান প্রমুখ।

তারা বলেছেন, সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিশেষ করে ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্র সমূহকে শক্তিশালী করারমাধ্যমে দূর্গম ও সুবিধা বঞ্চিত জনপদে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটানো সম্ভব। পরিবার পরিকল্পণা অধিদপ্তর এই সেমিনারের আয়োজন করে।

মা মণি এইচএসএস’র সাথে স্থানীয় সরকার, পরিবার পরিকল্পণা বিভাগ ও স্থানীয় কমিউনিটি সম্মিলিতভাবে স্ব স্ব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উন্নয়নে এগিয়ে আসে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানা ঘাটতি (যেমন আয়া নিয়োগ, ওষুধ, আসবাপত্র ক্রয় করা) মেটাতে স্থানীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করে এবং নিবিড় তদারকির মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চত করে। অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ প্রয়োজন মাফিক লোকবল নিয়োগ দিয়ে,কখনো বা অবকাঠামো সারিয়ে তুলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সেবা প্রদানের জন্য তৈরি করেছে। সুত্র: নয়াদিগন্ত।
ছবি:ইন্টারনেট।

Facebook Comments