banner

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 2719 বার পঠিত

 

আপনার শিশুকে চিনুন ৮ টি উপায়ে (পর্ব-১)

এ কে এম ওমর ফারুক


পাঁচ বছরের বর্ণকে নিয়ে বাবা-মার চিন্তার শেষ নেই যেন। বাবা চান মেয়ে হবে পাইলট বা ফ্যাশন ডিজাইনার আর মা চান ডাক্তার। আবার বাবা চান মেয়ে লেখাপড়া করবে ইংরেজী মাধ্যমে কিন্তু মা চান বাংলায় মেয়েকে পড়াতে। শুধু বাবা মা-ই নন, মামা-চাচারাও নেমেছেন এই যুদ্ধে। খালামণি চান বর্ণকে নাচ শেখাবেন, চাচুর ইচ্ছা বর্ণ হবে ক্রিকেটার। এ নিয়ে প্রত্যেকেই যাঁর যাঁর যুক্তি উপস্থাপন করছেন। কখনও বা রীতিমতো ঝগড়া লেগে যায়।

কিন্তু কেউই একবারও চিন্তা করছেন না যে, বর্ণর জন্য কোনটা উপযোগী? বর্ণ কি চায়? কোন বিষয়ের প্রতি বর্ণর আগ্রহ।
এটা শুধু একজন বর্ণর গল্পই নয়, আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটি শিশুর ক্ষেত্রেই ঘটে এমন বিড়ম্বনা।

পরিবারের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে হাজারো শিশুর শৈশব ও কৈশোর হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে চুরি করা হয় শিশুর শৈশব। পর্যাপ্ত মেধাশক্তি থাকা সত্ত্বেও শুধু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে শিশু বেড়ে ওঠে অন্তঃসার শূন্যভাবে। তৃতীয় বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই দেখা যায় এই একই চিত্র।

পরিবারই শিশুর প্রথম পাঠশালা। এরপরই শিশু যায় স্কুলে। পরিবার যেমন চাপিয়ে দিতে চায় তেমনি নির্দিষ্ট কারিকুলামে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য স্কুল বাধ্য করে ছোট শিশুদের। ফলে গতানুগতিক ধারায় অনেক শিশুই বাধ্য হয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু ভবিষ্যত হয়ে পড়ে দুর্বল। বাধাগ্রস্ত হয় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা-ছন্দময়তা।

শিশুর স্বাভাবিক ও সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রথমে বুঝতে হবে শিশুটি কোন মনোবৃত্তির। সে কিভাবে শিখতে চায়। কি জানতে চায় বা কি বলতে চায়।

মানুষের ওপর গবেষণা করে অজানা পৃথিবীকে জানার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কিত এক তত্ত্ব সর্বপ্রথম প্রদান করেন হাওয়ার্ড গার্ডনার। বহু বুদ্ধিমত্তা তত্ত্বের উদ্ভাবক হাওয়ার্ড গার্ডনার হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক।
তিনি অসংখ্য মানুষের জীবন পরিক্রমা ও মানসিক অবস্থার ওপর গবেষণা করে এ তত্ত্ব প্রদান করেন।

গার্ডনারের বহুবুদ্ধিমত্তা তত্ত্বের সকল মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে আটটি স্তরে ভাগ করা হয়। তাঁর মতে, পৃথিবীর সকল মানুষই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এই আটটি শিক্ষাগ্রহণ করে থাকেন। গার্ডনারের তত্ত্বগুলো নিম্নরূপ।

মৌখিক ও ভাষাবৃত্তীয় বুদ্ধিমত্তা :
শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষ করলে দেখা যাবে এই শ্রেণীর শিশুরা সাধারণত শুনতে পছন্দ করে, বলতে পছন্দ করে, পড়তে, লিখতে পছন্দ করে। সহজে বানান করে পড়ে। গল্প বলে, গল্প লেখে। স্বাবলিল ভাষায় বিষয়বস্তু উপস্থাপন করে। শব্দভান্ডার বেশি এবং সেগুলো যথাযথ ব্যবহার করে থাকে, গুছিয়ে কথা বলে। প্রখর স্মরণ শক্তির অধিকারী হয় এবং ভাল বক্তৃতা দিতে পারে।

যৌক্তিক ও গাণিতিক :
এই শ্রেণীর শিশুরা গুনতে আনন্দ পায়। বস্তুর সাহায্য ছাড়াই যে কোন বিষয়ে সহজে ধারণা পায়। সংক্ষিপ্ততা পছন্দ করে। যুক্তি দিয়ে বিচার করে। ধাঁধা ও অঙ্কের খেলা পছন্দ করে। সাজিয়ে ও গুছিয়ে বলতে পছন্দ করে। সমস্যা সমাধান করতে আনন্দ পায়। যুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত।

চলবে…

Facebook Comments