banner

শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: April 12, 2025

 

ধর্ষণ আইন সংশোধন: বলাৎকারও ধর্ষণের আওতায়, অর্থদণ্ড বাড়ানো হলো

 

সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে, যেখানে ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বলাৎকারকেও ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার বিধান করা হয়েছে।

নতুন আইনে বলাৎকারকেও ধর্ষণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যার ফলে নারী, শিশুর পাশাপাশি ছেলেশিশুর ক্ষেত্রেও এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। তবে, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলার তদন্ত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, যা পূর্বে ছিল ৬০ কার্যদিবস। প্রয়োজনে আরও ১৫ কার্যদিবস সময় নেওয়া যেতে পারে। বিচার কার্যক্রম অভিযোগ গঠনের তারিখ থেকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে।

ধর্ষণের শাস্তি পূর্বের মতোই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড থাকবে। তবে অর্থদণ্ডের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হলে আগে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হতো, যা বাড়িয়ে ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রেও অর্থদণ্ডের পরিমাণ ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দহনকারী, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে নারী বা শিশুকে হত্যা বা বিকৃত করার অপরাধে অর্থদণ্ড ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
ধর্ষণের উদ্দেশ্যে নারী বা শিশুকে মারাত্মক জখম করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়াও, কারো ক্ষতির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে ট্রাইব্যুনাল নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিতে পারবে এবং শাস্তি দিতে পারবে। এই অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে।
শিশু ধর্ষণের মামলার জন্য প্রতি জেলায় ও মহানগরে পৃথক শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে।

যৌতুকের মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আওতার বাইরে আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, নতুন আইনে বলাৎকারকে ধর্ষণের আওতায় আনা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “অর্থদণ্ড বাড়ানোর ফলে সাজা কার্যকর হওয়ার হার কমে যেতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচার শেষ না হলে কী হবে, সে বিষয়ে আইনে কিছু বলা হয়নি। এছাড়া জামিনের সুযোগ নিয়ে আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে, যা বিচারের কার্যকারিতা ব্যাহত করছে।”
এই সংশোধনী আইন বিচারপ্রক্রিয়াকে আরও কঠোর ও দ্রুত করার লক্ষ্য নিয়ে এসেছে। তবে আইনের যথাযথ বাস্তবায়নই এর সফলতা নিশ্চিত করবে।

 

তালবিনা: শরীর ও মনের প্রশান্তির এক পরিপূর্ণ খাবার

 

আধুনিক জীবনের ক্লান্তি, মানসিক চাপ আর শরীরের দুর্বলতার মাঝে আমরা অনেকেই খুঁজে ফিরি এমন কিছু—যা প্রাকৃতিক, পুষ্টিকর এবং একইসাথে আত্মার প্রশান্তিও দেয়। ঠিক এমন একটি উপকারী খাবার হচ্ছে তালবিনা। এটি এমন এক খাবার, যা শুধু শরীরকে নয়, মনের অস্থিরতাকেও প্রশমিত করে।
তালবিনা হল যবের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি একধরনের তরল খাবার, যা ইসলামী ঐতিহ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে এসেছে,
“তালবিনা রোগীর মনকে প্রশান্ত করে এবং তাকে শক্তি জোগায়।” — (সহীহ বুখারী)

এই একটি হাদীস থেকেই বোঝা যায় তালবিনার গুরুত্ব কতটা গভীর। তালবিনা এমন এক খাবার, যা শরীরকে দেয় প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি, আর মনকে দেয় প্রশান্তির ছোঁয়া। এটি হজমে সহায়ক, পেটের সমস্যা দূর করে এবং মানসিক ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে।

তালবিনা তৈরির সহজ রেসিপি
তালবিনা বানানোর ঘরোয়া ও সহজ রেসিপি:

উপকরণ
যবের গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ
দুধ – ১ কাপ (চাইলে পানি বা দুধ-পানির মিশ্রণ ব্যবহার করা যাবে)
মধু – ১ টেবিল চামচ (স্বাদমতো)
খেজুর কুচি – ২-৩টি (ঐচ্ছিক)
ছোট এলাচ – ১টি (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালি:
একটি হাঁড়িতে যবের গুঁড়া ও দুধ একসাথে মিশিয়ে নিয়ে
অল্প আঁচে রান্না করতে থাকুন। চামচ দিয়ে ঘনঘন নাড়তে থাকুন যেন নিচে লেগে না যায়।
মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে খেজুর কুচি ও এলাচ দিন।প্রাকৃতিক সুগন্ধ ও মিষ্টতা পেতে রান্না শেষে মধু মিশিয়ে দিন।

গরম অবস্থায় পরিবেশন করুন। চাইলে উপরে কিছু বাদাম কুচি বা কিশমিশ ছিটিয়ে নিতে পারেন।

কেন তালবিনা খাবেন?
তালবিনা শুধু অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নয়, বরং প্রতিদিনকার সুস্থ জীবনের জন্যও এক অসাধারণ খাবার। এটি শিশু, বয়স্ক, নারী বা পুরুষ—সবার জন্য উপযোগী। নিয়মিত খেলে হজমশক্তি বাড়ে, মন ভালো থাকে এবং শরীরের দুর্বলতা কেটে যায়।
আপনি কি আজ থেকেই তালবিনাকে আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করতে প্রস্তুত?